দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা:  পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানী খাতের কোম্পানি খুলনা পাওয়ারের প্লান্টের লাইসেন্স নবায়নের মেয়াদ বাড়ানোর গুজবে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস (ডিএসই) শেয়ার দর বৃদ্ধির শীর্ষে উঠে এসেছে খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড।

ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। জানা গেছে, কোম্পানিটির শেয়ার দর বৃদ্ধি পেয়েছে ১০ শতাংশ। কোম্পানিটি ১ হাজার ৭৭১ বারে ১৭ লাখ ৩১ হাজার ২৯৪ টি শেয়ার লেনদেন করেছে। যার বাজার মূল্য ৬ কোটি ৬১ লাখ টাকা।

তালিকায় ২য় স্থানে থাকা ম্যাকসন্স স্পিনিংয়ের দর বৃদ্ধি পেয়েছে ১০ শতাংশ। কোম্পানিটি ১ হাজার ৯৯৬ বারে ১ কোটি ৭২ লাখ ৭৬ হাজার ৬৯৯ টি শেয়ার লেনদেন করেছে। যার বাজার মূল্য ২০ কোটি ৫১ লাখ টাকা। তালিকার ৩য় স্থানে থাকা মতিন স্পিনিংয়ের দর বৃদ্ধি পেয়েছে ৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ। কোম্পানিটি ৮০ বারে ৭৭ হাজার ৬২৪ টি শেয়ার লেনদেন করেছে। যার বাজার মূল্য ৩০ লাখ টাকা।

তালিকায় থাকা অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে- প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ, আর্গন ডেনিমসের ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ, মালেক স্পিনিংয়ের ৯ দশমিক ৮৫ শতাংশ, মোজাফফর হোসেন স্পিনিংয়ের ৯ দশমিক ৭৯ শতাংশ, ড্রাগন সোয়েটারের ৯ দশমিক ৭০ শতাংশ, মেট্রো স্পিনিংয়ের ৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ ও কুইন সাউথ টেক্সটাইলের ৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ শেয়ার দর বেড়েছে।

প্লান্টের লাইসেন্স নবায়নের মেয়াদ প্রসঙ্গে কেপিসিএলের প্রধান হিসাব কর্মকর্তা সোহরাব আলী খান একটি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘দুটি প্লান্টের লাইসেন্সের মেয়াদের বিষয়ে ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে আবেদন করা হয়েছে। আশা করি নবায়ন হবে।’ যদি না হয়, তাহলে কী করবেন- এমন প্রশ্নে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমি আশা করি হবে।’

বিএসইসি নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র রেজাউল করিম সংবাদ মাধ্যমে বলেন, ‘তাদের যে দুটি প্লান্টের মেয়াদ শেষ হয়েছে সেগুলোর লাইসেন্স হয়েছে কি না, আর হবে কি না, সেটি বলতে পারবে বিপিডিবি। তবে আমরা লাইসেন্স নবায়নের অনুরোধ করে সরকারের উচ্চপর্যায়ে যোগাযোগ করেছি। জ্বালানি, বিদ্যুৎ ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর চিঠি দেয়া হয়েছে। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থরক্ষায় কমিশন কাজ করছে।’

চিঠির পর কী হলো, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘অগ্রগতি কী, সেটি ডিএসইর নিউজে কোম্পানিটি জানাবে। তবে এ মুহুর্তে কোম্পানিটির অগ্রগতির কোনো তথ্য নেই।’

করোনার মধ্যে পুঁজিবাজারে চার মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) রোববার গত চার মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে। বেড়েছে সূচকসহ লেনদেন হওয়া বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের। করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় বর্তমানে চলছে সরকার ঘোষিত সর্বাত্মক লকডাউন। এ অবস্থায় গণপরিবহনসহ জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ফলে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির পরামর্শে গত ৫ এপ্রিল থেকে এখন পর্যন্ত বিনিয়োগকারীরা ব্রোকারেজ হাউজে না গিয়ে ডিজিটাল প্লাটফর্মে লেনদেন পরিচালনা করছেন।

লকডাউনে পুঁজিবাজারে লেনদেন মন্দাসহ শেয়ার দর কমে আসার ইতিহাস ছিল গত বছর। করোনার কারণে গত বছরের ২৫ মার্চ লেনদেন শেষে বন্ধ ঘোষণা করা হয় পুঁজিবাজারের কার্যক্রম। তার আগে লেনদেন ১৯ মার্চ ৪৯ কোটি টাকায় নেমে এসেছিল। এ ছাড়া, ১৫০ কোটি টাকা লেনদেন ছিল অহরহ।

এদিকে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর এবং টাকার পরিমাণে লেনদেন। ডিএসইতে লেনদেন তিন মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হয়েছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, ডিএসইতে ১ হাজার ৪০৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ডিএসইতে আজকের লেনদেন চার মাসের মধ্যে মধ্যে সবচেয়ে বেশি। এর আগে চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি আজকের চেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছিল। ওই দিন লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৫৮৫ কোটি টাকার।

দিনশেষে ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ৩৭ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৫১৭ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ২৫৫ পয়েন্টে এবং ডিএসই–৩০ সূচক ১২ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ২ হাজার ১২৩ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৬১ টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৮০ টির, দর কমেছে ১০৪ টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৭৭টির।

অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১২৮.২৫ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৯৭৩.০৫৫ পয়েন্টে। সিএসইতে ২৬৭টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৪৫টির দর বেড়েছে, কমেছে ৮২টির আর ৪০টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ৩১ কোটি ৭৭ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।

৭ কোম্পানির বোর্ড সভার তারিখ ঘোষণা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৭ কোম্পানির বোর্ড সভার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। কোম্পানিগুলো হলো : পূবালী ব্যাংক লিমিটেড, এসএস স্টিল লিমিটেড, সাউথইস্ট ব্যাংক লিমিটেড, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস, বিডি ফাইন্যান্স, স্কয়ার ফার্মা এবং স্কয়ার টেক্সটাইল লিমিটেড। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

পূবালী ব্যাংক লিমিটেড : এ কোম্পানির বোর্ড সভা আগামী ৬ মে দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে। সভায় ৩১ মার্চ, ২০২১ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরের প্রথম প্রান্তিকের অনীরিক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হবে। পর্ষদ আলোচিত প্রতিবেদন অনুমোদন করলে তা প্রকাশ করবে কোম্পানিটি।

বিডি ফিন্যান্স লিমিটেড : এ কোম্পানির বোর্ড সভা পর্ষদ আগামী ৫ মে সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে। সভায় ৩১ মার্চ, ২০২১ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরের প্রথম প্রান্তিকের অনীরিক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হবে। পর্ষদ আলোচিত প্রতিবেদন অনুমোদন করলে তা প্রকাশ করবে কোম্পানিটি।

সাউথইস্ট ব্যাংক লিমিটেড : এ কোম্পানির বোর্ড সভা আগামী ৯ মে দুপুর ১টায় অনুষ্ঠিত হবে। সভায় ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হবে। পর্ষদ আলোচিত প্রতিবেদন অনুমোদন করলে তা প্রকাশ করবে কোম্পানিটি। ২০১৯ সালে কোম্পানিটি ১০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছিল।

সেন্ট্রাল ফার্মাসিটিক্যালস লিমিটেড : এ কোম্পানির বোর্ড সভা আগামী ২৩ মে বিকাল ৪টায় অনুষ্ঠিত হবে। সভায় ৩১ মার্চ, ২০২১ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরের তৃতীয় প্রান্তিকের অনীরিক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হবে। পর্ষদ আলোচিত প্রতিবেদন অনুমোদন করলে তা প্রকাশ করবে কোম্পানিটি। আগের প্রান্তিকে কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি আয় করেছিল ০৮ পয়সা

এসএস স্টিল লিমিটেড : এ কোম্পানির বোর্ড সভা আগামী ৪ মে বিকাল ৩টা ৩০ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে। সভায় ৩১ মার্চ, ২০২১ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরের তৃতীয় প্রান্তিকের অনীরিক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হবে। পর্ষদ আলোচিত প্রতিবেদন অনুমোদন করলে তা প্রকাশ করবে কোম্পানিটি। আগের প্রান্তিকে কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি আয় করেছিল ১ টাকা ৪৪ পয়সা

স্কয়ার ফার্মা লিমিটেড : এ কোম্পানির বোর্ড সভা আগামী ৬ মে দুপুর ১টায় অনুষ্ঠিত হবে। সভায় ৩১ মার্চ, ২০২১ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরের তৃতীয় প্রান্তিকের অনীরিক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হবে। পর্ষদ আলোচিত প্রতিবেদন অনুমোদন করলে তা প্রকাশ করবে কোম্পানিটি।
আগের প্রান্তিকে কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি আয় করেছিল ৪ টাকা ১৮ পয়সা

স্কয়ার টেক্সটাইল লিমিটেড : এ কোম্পানির বোর্ড সভা আগামী ৬ মে দুপুর ১টায় ৩০ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে। সভায় ৩১ মার্চ, ২০২১ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরের তৃতীয় প্রান্তিকের অনীরিক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হবে। পর্ষদ আলোচিত প্রতিবেদন অনুমোদন করলে তা প্রকাশ করবে কোম্পানিটি।

নিয়াকো অ্যালুসের আইপিও আবেদন শুরু ১৬ মে: পুঁজিবাজারে আসার প্রক্রিয়ায় থাকা প্রথম এসএমই কোম্পানি নিয়াকো অ্যালুস লিমিটেডের প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। কোম্পানিটির আইপিও আবেদন শুরু হবে আগামী ১৬ মে (রোববার)। চলবে ২০ মে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, নিয়াকো অ্যালুস ১০ টাকা মূল্যে ৭৫ লাখ শেয়ার ইস্যু করে সাড়ে ৭ কোটি টাকা মুলধন সংগ্রহ করবে। কোয়ালিফাইড ইনভেস্টর অফারের মাধ্যমে কোম্পানিটি যোগ্য বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে এই টাকা সংগ্রহ করবে। সংগ্রহ করা টাকা দিয়ে কোম্পানিটি ভূমি উন্নয়ন, যন্ত্রপাতি ক্রয় ও আইপিও খরচ খাতে ব্যয় করবে।

এর আগে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন(বিএসইসি) নিয়াকো অ্যালুস লিমিটেডকে এসএমই সেক্টরে দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়নের লক্ষ্যে অনুমোদন দিয়েছে।

৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২০ অনুযায়ী কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হলো ৯১ পয়সা। এই সময় কোম্পানির শেয়ার প্রতি সম্পদ মূল্য (এনএভি) ছিল ১২ টাকা ৪৩ পয়সা। কোম্পানিটির ইস্যু ম্যানেজার হিসেবে কাজ করছে এমটিবি ক্যাপিটাল লিমিটেড।

করোনা মহামারীতে বেক্সিমকো দুই কোম্পানির মুনাফায় উল্লম্ফন: নভেল করোনাভাইরাসের ভয়াল থাবায় পর্যুদস্ত পুরো বিশ্ব। স্বাভাবিকভাবেই করোনার চিকিৎসায় ব্যবহূত ওষুধ, ভ্যাকসিন ও সুরক্ষাসামগ্রীর চাহিদা বর্তমানে তুঙ্গে। দেশের অন্যতম কনগ্লোমারেট বেক্সিমকো গ্রুপের দুই প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস ও বেক্সিমকো লিমিটেড করোনা প্রতিরোধে ব্যবহূত ওষুধ, ভ্যাকসিন ও পারসোনাল প্রোটেকটিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই) উৎপাদন করছে। আর এর সুবাদে কোম্পানি দুটির ব্যবসা ও মুনাফায় ঈর্ষণীয় উল্লম্ফন হয়েছে।

বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত সভায় বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস ও বেক্সিমকো লিমিটেডের চলতি ২০২০-২১ হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকের (জানুয়ারি-মার্চ) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন করেছে কোম্পানি দুটির পর্ষদ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানি দুটির ব্যবসা ও মুনাফায় উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

এর মধ্যে চলতি ২০২০-২১ হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের আয় প্রায় ৪১ শতাংশ এবং বেক্সিমকো লিমিটেডের আয় ৬৫ দশমিক ৬৬ শতাংশ বেড়েছে। আর এ সময়ে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের নিট মুনাফা ৬১ দশমিক ৫৪ শতাংশ এবং বেক্সিমকো লিমিটেডের নিট মুনাফা ২০ গুণ বেড়েছে।

এ বিষয় জানতে চাইলে বেক্সিমকো গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক ও কোম্পানি সচিব মোহাম্মদ আসাদ উল্লাহ বলেন, করোনার চিকিৎসায় ব্যবহূত বেশ কয়েকটি ওষুধ আমরা উৎপাদন করছি। দেশের পাশাপাশি বিদেশেও এসব ওষুধের ভালো চাহিদা রয়েছে। তাছাড়া অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনার ভ্যাকসিন থেকেও বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের কমিশন বাবদ কিছু আয় হয়েছে। আর বিশ্বব্যাপী পিপিইর চাহিদা বেড়ে যাওয়ার পাশপাশি গার্মেন্ট পণ্যের চাহিদা বাড়ার সুবাদে বেক্সিমকো লিমিটেডের আয় বেড়েছে।

তৃতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, চলতি হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের আয় হয়েছে ৭৩৬ কোটি টাকা। আগের বছর একই সময়ে আয় হয়েছিল ৬৬১ কোটি টাকা। এ সময়ে কোম্পানিটির আয় বেড়েছে ৭৫ কোটি টাকা। তৃতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ১৪৬ কোটি ৮৯ টাকা।

আগের বছরের একই সময়ে মুনাফা হয়েছিল ৯০ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির নিট মুনাফা বেড়েছে ৫৫ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৩ টাকা ২৮ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে ইপিএস ছিল ২ টাকা ২ পয়সা। এ বছরের ৩১ মার্চ শেষে কোম্পানিটির এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ৭৭ টাকা ৮৮ পয়সা।

এদিকে চলতি হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের আয় দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৭৬ কোটি টাকা। আগের বছরের একই সময়ে আয় হয়েছিল ১ হাজার ৯১০ কোটি টাকা। এ সময়ে কোম্পানিটির আয় বেড়েছে ২৬৫ কোটি টাকা। তিন প্রান্তিকে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা দাঁড়িয়েছে ৩৬৯ কোটি টাকা। আগের বছরের একই সময়ে মুনাফা ছিল ২৬২ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির নিট মুনাফা বেড়েছে ১০৭ কোটি টাকা।

চলতি হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে বেক্সিমকো লিমিটেডের আয় হয়েছে ১ হাজার ১৭৯ কোটি টাকা। আগের বছরের একই সময়ে আয় হয়েছিল ৭১২ কোটি টাকা। এ সময়ে কোম্পানিটির আয় বেড়েছে ৪৬৭ কোটি টাকা। তৃতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ২০৯ কোটি টাকা। আগের বছরের একই সময়ে মুনাফা হয়েছিল ১০ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির নিট মুনাফা বেড়েছে ১৯৮ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ২ টাকা ৩৮ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে ইপিএস ছিল ১২ পয়সা।

অন্যদিকে চলতি হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে বেক্সিমকো লিমিটেডের আয় দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৮৩৬ কোটি টাকা। আগের বছরের একই সময়ে আয় হয়েছিল ১ হাজার ৬৪৪ কোটি টাকা। এ সময়ে কোম্পানিটির আয় বেড়েছে ১ হাজার ১৯২ কোটি টাকা। তিন প্রান্তিকে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা দাঁড়িয়েছে ৩৭৬ কোটি টাকা। আগের বছরের একই সময়ে মুনাফা ছিল ৫৮ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির নিট মুনাফা বেড়েছে ৩১৮ কোটি টাকা। চলতি হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৪ টাকা ৩০ পয়সা।

বস্ত্র খাতের রিং সাইন ও আলহাজ্ব টেক্সটাইল উৎপাদনে ফিরছে: নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) পূণ:গঠিত পর্ষদ রিং সাইন ও আল-হাজ্ব টেক্সটাইলকে উৎপাদনে ফেরানোর উদ্যোগ নিয়েছে। যা বাস্তবায়নের মাধ্যমে কমিশনের মাইলফলক সফলতা অর্জন হতে যাচ্ছে। জানা গেছে কমিশন গত কয়েক মাসে আল-হাজ্ব টেক্সটাইল, রিং সাইন টেক্সটাইল, সিএন্ডএ টেক্সটাইল, এমারেল্ড অয়েল, ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ, বিডি ওয়েল্ডিং, ফ্যামিলিটেক্স, ফারইস্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, অগ্নি সিস্টেমস ও এপেক্স ওয়েভিং।

উৎপাদন শুরুর বিষয়ে রিং সাইন টেক্সটাইলের চেয়ারম্যান মেজবাহ উদ্দিন বলেন, এখনও আমাদের কিছু ক্রয় আদেশ আছে। তবে নতুন করে উৎপাদন শুরুর ক্ষেত্রে চলতি মূলধনের ঘাটতিসহ কিছু সমস্যা আছে। সমস্যা সমাধানে সক্রিয়ভাবে কাজ করছি। গত সপ্তাহেও পর্ষদ সভা হয়েছে। লকডাউন না থাকলে এরইমধ্যে উৎপাদন শুরু হয়ে যেত।

তবে চলতি মূলধনের ঘাটতি মেটাতে কোম্পানিটির ব্যাংক হিসেবে আইপিওর ১০০ কোটি টাকা রয়েছে। যা এখন কমিশন ফ্রিজ করে রেখেছে। তবে কোম্পানিটির উৎপাদন শুরুতে তা ব্যবহারের অনুমোদন দেবে কমিশন।

একই বিষয়ে আল-হাজ্ব টেক্সটাইলের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম জানান, কোম্পানিটির উৎপাদন শুরু করতে বেশ সমস্যায় পড়েছেন তারা। প্রথমত কোম্পানির যন্ত্রপাতির সিংহভাগই বেশ পুরোনো। অনেক যন্ত্রপাতি পরিবর্তন করতে হবে। এর ওপর চলতি মূলধনে ঘাটতি আছে। সমস্যার মধ্যেও সীমিত আকারে হলেও উৎপাদনে শুরুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। উৎপাদনে ফেরার পর বিএমআরই হবে।

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, জেড ক্যাটাগরিভুক্ত যেসব কোম্পানি থেকে বিনিয়োগকারী বহু বছর কোনো লভ্যাংশ পাচ্ছেন না, সেগুলোতে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দিয়ে পর্ষদ পুনর্গঠন করছে বিএসইসি। গত জানুয়ারি থেকে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি কোম্পানির পর্ষদ পুনর্গঠন হলেও করোনাভাইরাস মহামারির কারণে নতুন পর্ষদ তেমন কোনো কাজ করতে পারেনি। তবে তারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

খুলনা পাওয়ারের নবায়নের গুজবে ডিএসই’র দর বৃদ্ধির শীর্ষে: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানী খাতের কোম্পানি খুলনা পাওয়ারের প্লান্টের লাইসেন্স নবায়নের মেয়াদ বাড়ানোর গুজবে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস (ডিএসই) শেয়ার দর বৃদ্ধির শীর্ষে উঠে এসেছে খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড।

ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। জানা গেছে, কোম্পানিটির শেয়ার দর বৃদ্ধি পেয়েছে ১০ শতাংশ। কোম্পানিটি ১ হাজার ৭৭১ বারে ১৭ লাখ ৩১ হাজার ২৯৪ টি শেয়ার লেনদেন করেছে। যার বাজার মূল্য ৬ কোটি ৬১ লাখ টাকা। তালিকায় ২য় স্থানে থাকা ম্যাকসন্স স্পিনিংয়ের দর বৃদ্ধি পেয়েছে ১০ শতাংশ। কোম্পানিটি ১ হাজার ৯৯৬ বারে ১ কোটি ৭২ লাখ ৭৬ হাজার ৬৯৯ টি শেয়ার লেনদেন করেছে।

যার বাজার মূল্য ২০ কোটি ৫১ লাখ টাকা। তালিকার ৩য় স্থানে থাকা মতিন স্পিনিংয়ের দর বৃদ্ধি পেয়েছে ৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ। কোম্পানিটি ৮০ বারে ৭৭ হাজার ৬২৪ টি শেয়ার লেনদেন করেছে। যার বাজার মূল্য ৩০ লাখ টাকা।

তালিকায় থাকা অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে- প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ, আর্গন ডেনিমসের ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ, মালেক স্পিনিংয়ের ৯ দশমিক ৮৫ শতাংশ, মোজাফফর হোসেন স্পিনিংয়ের ৯ দশমিক ৭৯ শতাংশ, ড্রাগন সোয়েটারের ৯ দশমিক ৭০ শতাংশ, মেট্রো স্পিনিংয়ের ৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ ও কুইন সাউথ টেক্সটাইলের ৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ শেয়ার দর বেড়েছে।

প্লান্টের লাইসেন্স নবায়নের মেয়াদ প্রসঙ্গে কেপিসিএলের প্রধান হিসাব কর্মকর্তা সোহরাব আলী খান একটি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘দুটি প্লান্টের লাইসেন্সের মেয়াদের বিষয়ে ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে আবেদন করা হয়েছে। আশা করি নবায়ন হবে।’ যদি না হয়, তাহলে কী করবেন- এমন প্রশ্নে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমি আশা করি হবে।’

বিএসইসি নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র রেজাউল করিম সংবাদ মাধ্যমে বলেন, ‘তাদের যে দুটি প্লান্টের মেয়াদ শেষ হয়েছে সেগুলোর লাইসেন্স হয়েছে কি না, আর হবে কি না, সেটি বলতে পারবে বিপিডিবি। তবে আমরা লাইসেন্স নবায়নের অনুরোধ করে সরকারের উচ্চপর্যায়ে যোগাযোগ করেছি। জ্বালানি, বিদ্যুৎ ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর চিঠি দেয়া হয়েছে। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থরক্ষায় কমিশন কাজ করছে।’

চিঠির পর কী হলো, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘অগ্রগতি কী, সেটি ডিএসইর নিউজে কোম্পানিটি জানাবে। তবে এ মুহুর্তে কোম্পানিটির অগ্রগতির কোনো তথ্য নেই।’