দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: বহুজাতিক কোম্পানি রবি আজিয়াটা, গ্রামীণ ফোন, রেনেটা, রেকিট বেনকিজার, ইউনিলিভার কেয়ার, বার্জার পেইন্টস এবং লিন্ডে বিডির শেয়ারের দাম বেড়েছে। ফলে সূচকের উত্থানের মধ্যদিয়ে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার দেশের পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়েছে। দিনভর সূচক উঠানামা শেষে এদিন দেশের দুই পুঁজিবাজারে লেনদেনের পাশাপাশি বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।

এ নিয়ে টানা তিন কার্যদিবস পুঁজিবাজারে উত্থান হল। তবে বৃহস্পতিবার ব্যাংক-বিমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম কমেছে। তবে বস্ত্র খাত, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি এবং খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের শেয়ারের পাশাপাশি মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের শেয়ারে দাম বেড়েছে।

এসব খাতের কোম্পানির শেয়ারের দাম বৃদ্ধির কারণে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচক বেড়েছে ১৭ পয়েন্ট। অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান সূচক বেড়েছে ৪৯ পয়েন্ট।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে অলস পড়ে থাকা বিনিয়োগকারীদের ২১ হাজার কোটি টাকার ফান্ড শিগগিরই পুঁজিবাজারে আসছে। পাশাপাশি এখন থেকে বন্ডে বিদেশিরাও বিনিয়োগ করতে পারবেন, এ দুটি সুখবরে বুধবারের মতোই বৃহস্পতিবারও সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় লেনদেন হয়েছে।

ডিএসইর তথ্য মতে, বৃহস্পতিবার বাজারের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১৭ দশমিক ১৮ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৬০৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। শরিয়াহভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস সূচক ২ দশমিক ২৫ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৫২পয়েন্টে এবং বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক ৫ দশমিক ১৭ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৩৭ পয়েন্টে।

লেনদেন হওয়া কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৮০টির, কমেছে ১২০টির, অপরিবর্তিত রয়েছে ৬০টির। মোট লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৪৮৬ কোটি ২৬ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৩৯৮ কোটি ৫১ লাখ ১১ হাজার টাকা। অর্থাৎ আগের দিনের চেয়ে লেনদেন বেড়েছে।

আজ ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে ছিল- বেক্সিমকো, অরিয়ন ফার্মা, বেক্সিমকো ফার্মা, ন্যাশনাল ফিড মিলস, লঙ্কা বাংলা ফাইন্যান্স, লাফার্জহোলসিম, রবি আজিয়াটা, ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো, ম্যাকসন স্পিনিং এবং কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড। দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই ৪৯ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ১৯৪ পয়েন্টে।

লেনদেন হওয়া কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৬৫টির, কমেছে ৮৪টির, আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৯টির। লেনদেন হয়েছে মোট ৫৬ কোটি ৯৪ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৪৩ কোটি ৯৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

১০ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ : পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ১০ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে। এক নজরে ১০ কোম্পানির প্রতিবেদন তুলে ধরা হলো: ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড, আজিজ পাইপস, ডেল্টা ব্র্যাক হাউজিং লিমিটেড, ফার ইস্ট নিটিং অ্যান্ড ডাইয়িং ইন্ডাস্ট্রিজ, কোহিনুর কেমিক্যাল বাংলাদেশ লিমিটেড, স্কয়ার টেক্সটাইল লিমিটেড, পূবালী ব্যাংক লিমিটেড, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, কুইন সাউথ টেক্সটাইল, দুলামিয়া কটন ও সিটি ব্যাংক।

ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বীমা খাতের কোম্পানি ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড প্রথম প্রান্তিকের (জানুয়ারি’২১-মার্চ’২১) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। আজ বৃহস্পতিবার (৬ মে) অনুষ্ঠিত কোম্পানির বোর্ড সভায় প্রথম প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদন করা হয়। কোম্পানি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি’২১-মার্চ’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ২৮ পয়সা, যা গত বছর একই সময়ে ২৪ পয়সা ছিল।আলোচিত প্রান্তিকে শেয়ার প্রতি ক্যাশ ফ্লো ছিল মাইনাস ৮৯ পয়সা, যা গত বছর একই সময়ে ছিল এক টাকা এক পয়সা। গত ৩১ মার্চ, ২০২১ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য ছিল ৩০ টাকা ৯০ পয়সা। যা গত বছর ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ পর্যন্ত ছিল ৩৩ টাকা ৪ পয়সা।

আজিজ পাইপস: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রকৌশল খাতের কোম্পানি আজিজ পাইপস লিমিটেড তৃতীয় প্রান্তিক (জানুয়ারি’২১-মার্চ’২১) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। কোম্পানি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি’২১-মার্চ’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ৩৬ পয়সা। গত বছর একই সময়ে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছিল ৫ পয়সা। অন্যদিকে, প্রথম তিন প্রান্তিক মিলিয়ে (জুলাই’২০-মার্চ’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান (ইপিএস) হয়েছে ৪৭ পয়সা। গত বছর একই সময়ে কোম্পানিটির ইপিএস ছিল ২৬ পয়সা। গত ৩১ মার্চ, ২০২১ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য নেগেটিভ (এনএভি) ১৪ টাকা ৭৬ পয়সা।

ডেল্টা ব্র্যাক হাউজিং লিমিটেড : পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক খাতের কোম্পানি ডেল্টা ব্র্যাক হাউজিং লিমিটেড চলতি হিসাববছরের প্রথম প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। কোম্পানি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। চলতি হিসাববছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ২ টাকা ১ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে ইপিএস ছিল ১ টাকা ৬৮ পয়সা।

প্রথম প্রান্তিকে শেয়ার প্রতি ক্যাশ ফ্লো ছিল ২৩ টাকা ২২ পয়সা। আগের হিসাববছরের একই সময়ে ছিল মাইনাস ৫ টাকা ৬২ পয়সা। ৩১ মার্চ, ২০২১ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য ছিল ৪৩ টাকা ৭৪ পয়সা।

ফার ইস্ট নিটিং অ্যান্ড ডাইয়িং ইন্ডাস্ট্রিজ: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পানি ফার ইস্ট নিটিং অ্যান্ড ডাইয়িং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড চলতি হিসাববছরের তৃতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। কোম্পানি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। চলতি হিসাববছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ২০ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে ইপিএস ছিল ২২ পয়সা।

অন্যদিকে চলতি হিসাববছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জুলাই’২০-মার্চ’২১) কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৩৩ পয়সা। আগের হিসাববছরের একই সময়ে ইপিএস ছিল ৩৪ পয়সা। ৩১ মার্চ, ২০২১ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য ছিল ১৯ টাকা ২ পয়সা।

কোহিনুর কেমিক্যাল বাংলাদেশ লিমিটেড: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানি কোহিনুর কেমিক্যাল বাংলাদেশ লিমিটেড তৃতীয় প্রান্তিকের (জানুয়ারি’২১-মার্চ’২১) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে । আজ বৃহস্পতিবার (৬ মে) অনুষ্ঠিত কোম্পানির বোর্ড সভায় চলতি হিসাববছরের তৃতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদন করা হয়। কোম্পানি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি’২১-মার্চ’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (কনসোলিডেটেড ইপিএস) হয়েছে ২ টাকা ৬৯ পয়সা, যা গত বছর একই সময়ে ৫৪ পয়সা ছিল। অন্যদিকে, তিন প্রান্তিক মিলিয়ে এক সাথে ৯ মাসে (জুলাই’২০-মার্চ’২১) কোম্পানিটির সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ৮ টাকা ১৮ পয়সা, যা গত বছর একই সময়ে ছিল ৫ টাকা ২৪ পয়সা। গত ৩১ মার্চ, ২০২১ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য ছিল ৫২ টাকা ২১ পয়সা।

স্কয়ার টেক্সটাইল লিমিটেড : পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পানি স্কয়ার টেক্সটাইল লিমিটেড গত ৩১ মার্চ, ২০২১ তারিখে সমাপ্ত তৃতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। কোম্পানি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। চলতি হিসাববছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ’২১) কোম্পানিটির সমন্বিত ‌শেয়ার প্রতি আয় (Consolidated EPS) হয়েছে ১ টাকা ৫ পয়সা। আগের হিসাববছরের একই সময়ে ইপিএস হয়েছিল ৩৫ পয়সা।

অন্যদিকে চলতি হিসাববছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জুলাই’২০-মার্চ’২১) কোম্পানিটির সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ৮৪ পয়সা। গত বছর একই সময়ে কোম্পানিটির সমন্বিত ইপিএস ছিল ১ টাকা ১৯ পয়সা। ৩১ মার্চ, ২০২১ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য ছিল ৩৭ টাকা ১৩ পয়সা।

পূবালী ব্যাংক লিমিটেড : পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক খাতের কোম্পানি পূবালী ব্যাংক লিমিটেড চলতি হিসাববছরের প্রথম প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ডিএসই সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। চলতি হিসাববছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ’২১) ব্যাংকটির ‌শেয়ার প্রতি কনসুলেটেড আয় হয়েছে ৯৮ পয়সা। আগের হিসাবছরের একই সময়ে ৮৬ পয়সা ছিল। ৩১ মার্চ, ২০২১ তারিখে ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি কনসুলেটেড নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ৩৮ টাকা ৬৫ পয়সা।

স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড চলতি অর্থবছরের ৯ মাসে (জুলাই’২০-মার্চ’২১) শেয়ারপ্রতি মুনাফা ১১ শতাংশ বেড়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

কোম্পানিটির চলতি অর্থবছরের ৯ মাসে (জুলাই’২০-মার্চ’২১) সমন্বিত শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ১৩ টাকা ১২ পয়সা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে ইপিএস হয়েছিল ১১ টাকা ৮৫ পয়সা। এহিসেবে কোম্পানিটির মুনাফা ১.২৭ টাকা বা ১১ শতাংশ বেড়েছে।

এদিকে কোম্পানিটির চলতি অর্থবছরের ৩ মাসে (জানুয়ারি-মার্চ’২১) সমন্বিত শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ৪ টাকা ৩৬ পয়সা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে ইপিএস হয়েছিল ৪ টাকা ৮ পয়সা। এহিসেবে কোম্পানিটির মুনাফা ০.২৮ টাকা বা ৭ শতাংশ বেড়েছে। ২০২১ সালের ৩১ মার্চ কোম্পানিটির সমন্বিত শেয়ারপ্রতি সম্পদ (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৯৬ টাকা ৪৩ পয়সায়।

পুঁজিবাজারে প্রচুর বিদেশী বিনিয়োগে আগ্রহী:  প্রচুর বিদেশী বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী। বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতিনিয়ত বিনিয়োগের জন্য আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। এ তালিকায় সিঙ্গাপুর ও দুবাই রয়েছে। এমনকি আমেরিকা থেকেও বিনিয়োগের জন্য যোগাযোগ করছে। তাই অর্থ কোন সমস্যা হবে না। বৃহস্পতিবার প্রাক বাজেট আলোচনার অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। আর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন বিএসইসির সাবেক কমিশনার আরিফ খান। অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে আয়োজন করে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল অ্যান্ড প্রাইভেট ইক্যুইটিজ এসোসিয়েশন ও ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ)।

শিবলী রুবাইয়াত বলেন, বর্তমান কমিশন ব্যবসাবান্ধব। আমরা ব্যবসাকে সহজ করে দেওয়ার জন্য কাজ করছি। এরইমধ্যে আমরা দেশের ব্যবসাকে এগিয়ে নিতে এসএমই বোর্ডে ১টি কোম্পানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আগামি ১ মাসের মধ্যে আরও ৪-৫টি কোম্পানির অনুমোদন দেওয়া হবে। এই বোর্ড আস্তে আস্তে বড় হবে এবং পরবর্তীতে এখান থেকে বিভিন্ন কোম্পানি মূল বোর্ডে চলে যাবে।

তিনি বলেন, আমরা অর্থনীতিতে অনেক পিছিয়ে রয়েছি। স্বাধীনতার সময় আমাদের যে লক্ষ্য ছিল, তা পূরন হয়নি। আমাদেরকে গতি বাড়াতে হবে। ১৫ বছর আগের ভিয়েতনামের দিকে তাকালেও আমরা কোথায় আছি, সেটা বুঝতে পারব। কিছু দুষ্টলোকের কারনে আমাদের এই অবস্থা।

বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, স্টার্টআপকে এগিয়ে নিতে কমিশন ১টি ভ্যাঞ্চার কোম্পানির লাইসেন্স দিয়েছে। আর ২টি কোম্পানির আবেদন জমা রয়েছে। তবে এই খাতকে এগিয়ে নিতে সুশাসনের দিকে নজড় দিতে হবে। কারন দু-একটি দুষ্টলোকের কারনে পুরো খাতটি হুমকির মূখে পড়তে পারে। তাই শুরু থেকেই এই খাতের সংগঠনকে সুশাসনে নজড় দিতে হবে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, স্টার্টআপ কোম্পানিগুলো ভালোই করছে। এই খাতের সহযোগিতায় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় আছে। একইসঙ্গে আজকের আলোচনার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাজেটকে কেন্দ্র করে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানান তিনি।

ডিএসই’র ২৩৬ ব্রোকারেজ হাউজের কর্মকাণ্ড খতিয়ে দেখবে বিএসইসি: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সদস্যভুক্ত ট্রেকহোল্ডারদের (ব্রোকারেজ হাউজ) অধিকাংশ যথাযথ দায়িত্ব পালন করছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। ওই অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করতে ২৩৬টি ট্রোকেহোল্ডারদের কর্মকান্ড যাচাই করবে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি এই ২৩৬টি ব্রোকারেজ হাউজের কাছে বিগত ৩ বছরের কার্মকাণ্ডের তথ্য চেয়েছে। মূলত নিস্ক্রিয় ট্রেকহোল্ডার চিহ্নিত করে তারদেরকে সক্রিয় করতে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। সম্প্রতি ডিএসইর ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বরাবরে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠিয়েছে বিএসইসি। ওই চিঠি পাওয়ার ৭ দিনের মধ্যে এ সংক্রান্ত তথ্য কমিশনে দাখিল করতে বলা হয়েছে।

বর্তমানে ডিএসইতে সদস্যভুক্ত মোট ট্রেকহোল্ডারদের সংখ্যা ২৫০টি। এর মধ্যে ৪টি ট্রেকহোল্ডার শুরু থেকেই নিস্ক্রিয়। আর ১০টি ট্রেকহোল্ডার শেয়ারবোজারে লেনদেন করে না। বাকি ২৩৬টি ট্রেকহোল্ডারদের মধ্যে পুঁজিবাজারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে ২০টি। এছাড়া, বাকি ২১৬টি ট্রেকেহোল্ডারদের মধ্যে অনেকেই যাথাযথ দায়িত্ব পরিপালন করছে না।

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, যেসব ট্রেকহোল্ডার সঠিকভাবে কাজ করছে না, তাদের বুঝিয়ে কাজে ফেরানো হবে। না হলে তাদেরকে বিকল্প চিন্তা করার কথা বলা হবে। তাই সব ট্রেকহোল্ডার কী কাজ করছে তা জানতেই, বিগত ৩ বছরের কর্মকাণ্ডের তথ্য চাওয়া হয়েছে। এছাড়া, ডিএসইতে নতুন ট্রেকের জন্য অনেক প্রতিষ্ঠানের আবেদন পড়েছে। তাই নতুনদের ট্রেডিং রাইট এনটাইটেলমেন্ট সার্টিফিকেট বা ট্রেক সার্টিফিকেট দেওয়ার আগে পুরানোগুলোর কার্যক্রমের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হবে। তারপরই নতুন ট্রেকহোল্ডার অনুমোদন দেওয়া হবে।

এসব কার্যক্রম আগে করা হতো না। কিন্তু এখন কে কী করছে তা দেখার জন্য কমিশন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে এটা নিয়মিত কাজের অংশ বলে জানিয়েছে বিএসইসি। বিশেষ করে গত তিন বছরে সংশ্লিষ্ট ট্রেকহোল্ডার কী পরিমাণ শেয়ার কেনা-বেচা করেছে, এভারেজ ট্রেড ভলিউমের পরিমাণ কতসহ বিভিন্ন ফান্ডামেন্টাল ইনফরমেশন যাচাই করবে কমিশন।

৪ বীমা কোম্পানির দর কারণ ছাড়াই বেড়েছে: কোনো কারণ ছাড়াই পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বীমা খাতের চার কোম্পানি শেয়ার দর অস্বাভাবিক বাড়ছে বলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে (ডিএসই) জানিয়েছে কোম্পানিগুলো। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা যায়। কোম্পানি চারটি হলো : সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স এবং সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্স।

জানা গেছে, শেয়ার দর অস্বাভাবিক বাড়ার কারণ জানতে চেয়ে সম্প্রতি ডিএসই কোম্পানিগুলোকে নোটিশ পাঠায়। এর জবাবে কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে ৫ মে জানানো হয়, কোনো রকম অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই তাদের শেয়ার দর এভাবে বেড়েছে।

উল্লেখ্য, গত ২৭ এপ্রিল সানলাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারের দর ছিল ২৩.১০ টাকায়। আর ০৫ মে কোম্পানিটির শেয়ারের দর বেড়ে দাঁড়ায় ২৮.৬০ টাকায়। অর্থাৎ এই ৬ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দর ৫.৫০ টাকা বা ২৪ শতাংশ বেড়েছে।

রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর গত ২৫ এপ্রিল ছিল ৫৫.২০ টাকায়। আর ০৫ মে কোম্পানিটির শেয়ারের দর বেড়ে দাঁড়ায় ৬৯.৬০ টাকায়। অর্থাৎ এই ১৩ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দর ১৪.৪০ টাকা বা ২৬ শতাংশ বেড়েছে।

মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর গত ১৮ এপ্রিল ছিল ৫৬ টাকায়। আর ০৫ মে কোম্পানিটির শেয়ারের দর বেড়ে দাঁড়ায় ৭৩.২০ টাকায়। অর্থাৎ এই ১৩ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দর ১৭.২০ টাকা বা ৩১ শতাংশ বেড়েছে।

সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর গত ১৮ এপ্রিল ছিল ২৫ টাকায়। আর ০৫ মে কোম্পানিটির শেয়ারের দর বেড়ে দাঁড়ায় ৩৩.৪০ টাকায়। অর্থাৎ এই ১৩ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দর ৮.৪০ টাকা বা ৩৪ শতাংশ বেড়েছে।