দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম এর নেতৃত্বাধীন নতুন কমিশনের বছর পূর্তিতে শুভেচ্ছা জানিয়েছে ডিএসই ব্রোকার্স অ‌্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ)। বুধবার (১৯ মে) আগারগাঁয়ে অবস্থিত বিএসইসির কার্যালয়ে ডিবিএ প্রেসিডেন্ট শরীফ আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে ডিবিএ’র পরিচালনা পর্ষদের একটি প্রতিনিধি দল কমিশনকে এই শুভেচ্ছা জানায়।

ডিবিএ থেকে জানানো হয়েছে, নতুন কমিশনের প্রথম বর্ষ অতিক্রম করেছে। এজন্য ডিবিএ পরিচালনা পর্ষদ এবং সব সদস্যদের (স্টক ব্রোকার) পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানানো হয়েছে।

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির করপোরেট ট্যাক্স কমানো হচ্ছে: করোনাভাইরাসের মধ্যেও অর্থনীতিকে চাঙা করতে ‘ব্যবসা বান্ধব’ বাজেট করতে চায় সরকার। এ জন্য আগামী বাজেটে করপোরেট ট্যাক্স আরও কমানো হচ্ছে।

অর্থমন্ত্রণালয় ও এনবিআর কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগামী বাজেটে দুটি স্তরে করপোরেট ট্যাক্স কমছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে নন-লিস্টটেড কোম্পানি যা পুঁজিবাজারের অন্তর্ভুক্ত নয়। অপরটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি। নন-লিস্টটেড কোম্পানির করপোরেট কর হার বর্তমানে সাড়ে ৩২ শতাংশ। আসন্ন বাজেটে এই হার কমিয়ে ৩০ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করা হচ্ছে।

অপরদিকে, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির করপোরেট ট্যাক্স বর্তমানে সাড়ে ২৫ শতাংশ। নতুন বাজেটে তা কমিয়ে করা হচ্ছে সাড়ে ২২ শতাংশ। অর্থাৎ উভয়ক্ষেত্রে করপোরেট ট্যাক্স আড়াই শতাংশ কমানো হচ্ছে নতুন বাজেটে।

অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, করপোরেট ট্যাক্স কমানো হলে স্থানীয় উদ্যোক্তাদের উৎপাদন খরচ কমবে এবং তারা পুনরায় বিনিয়োগ করতে উৎসাহী হবেন। এটি অর্থনীতির জন্যও ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে।

ব্যবসায়ীরা বলেছেন, করপোরেট ট্যাক্স কমানোর খবর তাদের জন্য বড় সুখবর। প্রতিবেশীসহ অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশে করপোরেট ট্যাক্স বেশি। এ কারণে ব্যবসায় খরচ বেশি হচ্ছে, প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে।

ঢাকা চেম্বারে সাবেক সভাপতি আবুল কাসেম খান বলেন, ‘অনেকদিন ধরে বলা হচ্ছে করপোরেট করহার কমানোর জন্য। আমরা একটি বিনিয়োগবান্ধব ট্যাক্স নীতি চাই। করপোরেট কর কমানো হলে বিনিয়োগ এবং প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বাড়বে। করপোরেট ট্যাক্স মানে, প্রতিষ্ঠান বছর শেষে মুনাফার ওপর যে কর দেয় সেটা। বাংলাদেশে বর্তমানে পাঁচটি স্তরে করপোরেট ট্যাক্স আদায় করা হয়। সবোর্চ্চ কর হার ৪৫ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন ২৫ শতাংশ।

এনবিআরের নীতি নির্ধারক পযায়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সরকারের উদ্দেশ্য হচ্ছে করোনাকালীন বিপযস্ত অর্থনীতিকে চাঙা করা। সে লক্ষ্যকে সামনে রেখে আগামীতে বিনিয়োগ-বান্ধব বাজেটে করা হচ্ছে।

জানা গেছে, ভারতে করপোরেট কর হার দুটি। বড় কোম্পানির জন্য ৩০ শতাংশ এবং স্থানীয় কোম্পানির ক্ষেত্রে ২৬ শতাংশ। শ্রীলংকা ও পাকিস্তানে করপোরেট কর হার যথাক্রমে ২৮ ও ৩০ শতাংশ। সিঙ্গাপুরে একটিমাত্র করপোরেট কর হার এবং তা মাত্র ১৩ শতাংশ।

বিএসইসি চেয়ারম্যানের কারিশম্যাটিক নেতৃত্বে চাঙ্গা পুঁজিবাজার: দেশের পুঁজিবাজারে গত দশ বছরের আস্থার সংকট দূর হয়েছে মাত্র এক বছরে। বিএসইসি চেয়ারম্যানের কারিশম্যাটিক নেতৃতে বাজারের স্বার্থে দ্রুত গতিতে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়ে চমক দেখিয়েছে। যা বিগত দিনে দেশের পুঁজিবাজারে কল্পনাও করেনি কেউ। যদিও গত বছরের শুরুটা মোটেও ভালো ছিল না পুঁজিবাজারের জন্য। বিনিয়োগকারীদের আস্থা ও তারল্য সঙ্কটে ভুগতে থাকা পুঁজিবাজার মহামারি করোনাভাইরাসের ছোবলে অনেকটাই মাটির সঙ্গে মিশে যায়। পুঁজি হারানোর শঙ্কায় ভুগতে থাকেন বিনিয়োগকারীরা। তবে অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম দায়িত্ব নেওয়ার পর কমিশনের সময়োপযোগী সিদ্ধান্তের কারণে বর্তমানে পুঁজিবাজারে সুদিন ফিরে এসেছে।

তবে ৫ ডিসেম্বর ২০১০। এ দিন দেশের পুঁজিবাজারের সাধারণ মূল্যসূচক ওঠে সর্বোচ্চে। রেকর্ড গড়ে লেনদেনেও। কিন্তু পরদিন থেকেই শুরু পতনের, এক পর্যায়ে যা রূপ নেয় মহাধসে। পুঁজি হারিয়ে রাজপথে নেমে আসেন বিনিয়োগকারীরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে নানা উদ্যোগ নেয় সরকার। কিন্তু ১০ বছরে পুঁজিবাজার স্থিতিশীল হয়নি। বরং দিন দিন পুঁজি হারিয়ে বিনিয়োগকারীরা নি:স্ব হতে থাকেন।

বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার অভিযোগ এনে ভেঙে দেয়া হয় কমিশন। দায়িত্ব দেয়া হয় নতুন নেতৃত্বকে। অধ্যাপক ড. শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নেতৃত্বধীন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এক বছর পার করলো। নতুন এই কমিশনের উদ্যোগী কর্মকাণ্ড ও কর্ম তৎপরতায় এক বছরের ব্যবধানে পুঁজিবাজারে আস্থা ও গতি ফিরে এসেছে। একইসঙ্গে হারোনো আস্থা ফিরে পেয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। ফলে নতুন কমিশন তাদের যোগ্যতা প্রমাণ করেছে। নতুন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে তাদের শক্তিশালী অবস্থানের কারণে বাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরেছে। আস্থা ফিরে পাওয়ায় বাজারে তারল্যও বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

পুঁজিবাজারের ধারাবাহিক পতনে সাধারণ বিনিয়োগকারী যখন দিশেহারা ঠিক তখনই শুরু হয় করোনা মহামারি। দেশ লকডাউনের কবলে পড়লে বন্ধ হয়ে যায় বাজার। ফলে কার্যত অচল হয়ে পড়ে দেশের অর্থনীতি। তবে এর মাঝেই পুনর্গঠন করা হয় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

সংস্থাটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেয়া হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামকে। তিনি ১৭ মার্চ দায়িত্ব নেন। এরপর করোনার ছুটি কাটিয়ে ৩১ মে ফের পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু হয়। তারপর থেকেই নতুন নতুন চমক দেখতে পায় বাজার সংশ্লিষ্টরা। বিএসইসি চেয়ারম্যানের কারিশম্যাটিক নেতৃত্বে চাঙ্গা হয় পুঁজিবাজার। তার ফলশ্রুতিতে গত এক বছরে পুঁজিবাজারে চাঙা ভাব বিরাজ করছে।

একাধিক বিনিয়োগকারী, স্টেকহোল্ডার অর্থনীতিবিদ দেশ প্রতিক্ষণের সঙ্গে আলাপকালে এমনটি জানিয়েছেন। গত এক দশকে আগের কমিশন একাধিক পদক্ষেপ নিলেও বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে সক্ষম হননি। শুধু তাই নয় খাইরুল কমিশন বাজার মনিটরিংয়ে ব্যর্থ হয়েছিলেন। তাদের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ছিল না।

তবে নতুন কমিশন শুরু থেকেই বাজার স্থিতিশীলতায় শক্তিশালী অবস্থান নেওয়ায় বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরতে শুরু করেছে। এতে করে প্রতিনিয়ত বাজারে তারল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষক ও বিনিয়োগকারীরা। তবে উন্নয়নের এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে বর্তমান কমিশনের আমলেই দেশের পুঁজিবাজার সারা বিশ্বে সুপ্রতিষ্ঠিত হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। চেয়ারম্যান হিসেবে বিএসইসিতে কাজে যোগদানের পর থেকেই তিনি সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়ে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা, পুঁজিবাজারের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন।

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের মধ্যে গত বছরে ১৭ মে বিএসইসি তথা পুঁজিবাজারের হাল ধরেন অধ্যাপক ড. শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। তার সঙ্গে কমিশনার হিসেবে বিএসইসিতে কাজ যোগদান করেন সাবেক শিল্প সচিব আব্দুল হালিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দীন আহমেদ ও একই বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন্স সিস্টেমস বিভাগের অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান। এছাড়া তৎকালীন কমিশনার হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন খোন্দকার কামালুজ্জামান।

পুঁজিবাজারের আমূল পরিবর্তনের লক্ষ্যে প্রায় দেড়শতাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়ে যাত্রা শুরু করে নতুন কমিশন। তবে করোনা পরিস্থিতির ধারাবাহিক অবনতি ও বিভিন্ন পারিপার্শিক কারণে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রণে কিছুটা বেগ পেতে হয়েছে নতুন কমিশনকে। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, অর্থ মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বোচ্চ সহযোগীতায় শেয়ারবাজারকে স্থিতিশীল পর্যায়ে আনতে সক্ষম হয়েছে বলে মনে করে কমিশন।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা ও শেয়ারবাজারের উন্নয়নে গত এক বছরে নতুন কমিশন বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ ও সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর মধ্যে: করোনা পরিস্থিতে সরকার ঘোষিত লকডাউনে শেয়ারবাজার খোলা রাখা, ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড গঠন, তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর করপোরেট কর হারের ব্যবধান ১৫ শতাংশ রাখার প্রস্তাব, প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) আসা কোম্পানির শেয়ার আনুপাতিক সমবন্টন, আইপিও প্রক্রিয়া সহজীকরণ, স্বচ্ছতা নিশ্চিতে একাধিক আইপিও বাতিল,

সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ ও এককভাবে ন্যূনতম ২ শতাংশ শেয়ার ধারণ না থাকা কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন, জেড ক্যাটাগরি ও ওভার দ্য কাউন্টার মার্কেটের (ওটিসি) কোম্পানির জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ, ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার ও সার্কিট ব্রেকার আরোপ, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশ প্রদানের সক্ষমতা বৃদ্ধির সুপারিশ, লভ্যাংশ না দেওয়া ও নামমাত্র লভ্যাংশ দেওয়া কোম্পানিগুলোর জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ,

সকল তফসিলি ব্যাংকের শেয়ারবাজারে বিনিযোগ বৃদ্ধির উদ্যোগ, বিনিয়োগ বাড়াতে বিদেশে ও দেশের অভ্যন্তরে ব্রোকার হাউজের শাখা হিসেবে ডিজিটাল বুথ স্থাপনের উদ্যোগ, শেয়ারবাজারের ব্র্যান্ডিং ও বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে বিভিন্ন দেশে রোড শো আয়োজন, বিএসইসিসহ স্টক এক্সচেঞ্জদ্বয়কে ডিজিটালাইজেশনের উদ্যোগ, বন্ড মার্কেট শক্তিশালীকরণ, ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশকে (আইসিবি) শক্তিশালীকরণ,

ব্রোকারেজ হাউজের সংখ্যা বাড়াতে নতুন ট্রেক ইস্যুকরণ, করোনা পরিস্থিতিতে ভার্চুয়ালি এজিএম বা ইজিএম বা পর্ষদ সভা করার উদ্যোগ, স্মল ক্যাপ বোর্ডে নতুন কোম্পানির অনুমোদন, বাজার মধ্যস্থতাকারীদের কাজে উৎসাহ বাড়াতে পুরস্কার প্রদানের উদ্যোগ এবং শেয়ারবাজারে সুশাসন নিশ্চিতে বিভিন্ন আইন সংস্কার ও অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়া উল্লেখযোগ্য।

বাজার বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, নতুন কমিশনের গত এক বছরের মেয়াদে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সকল সূচক, লেনদেন ও বাজার মূলধন বেড়েছে। মঙ্গলবার (১৮ মে) লেনদেন শেষে ডিএসইএক্স সূচক অবস্থান করছে ৫ হাজার ৮২৯ পয়েন্টে। আর গত বছরের ১৭ মে ডিএসইএক্স সূচক ছিল ৪ হাজার ৬০ পয়েন্টে। এই হিসেবে জানাচ্ছে এক বছরের ব্যবধানে ডিএসইএক্স সূচক বেড়েছে ১ হাজার ৭৬৯ পয়েন্ট বা ৪৩ শতাংশ।

এ সময় শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস অবস্থান করছে ১ হাজার ২৮১ পয়েন্টে। গত বছরের ১৭ মে ডিএসইএস সূচক ছিল ৯৫১ পয়েন্টে। এক বছরের ব্যবধানে ডিএসইএস সূচক বেড়েছে ৩৩০ পয়েন্ট বা ৩৫ শতাংশ। একই সঙ্গে ব্ল চিপ নামে খ্যাত সূচক ডিএস৩০ অবস্থান করছে ২ হাজার ১৯৪ পয়েন্টে। আর গত বছরের ১৭ মে ডিএস৩০ সূচক ছিল ১ হাজার ৩৬৫ পয়েন্টে। এক বছরের ব্যবধানে ডিএস৩০ সূচক বেড়েছে ৮২৯ পয়েন্ট বা ৬১ শতাংশ।

বর্তমান কমিশনের ১ বছরের কাজের সফলতা সম্পর্কে জানতে চাইলে অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, যে কোন কাজ করতে গেলে সফলতা ব্যর্থতা থাকবে। তবে নতুন এ কমিশন কাজে যোগদানের পর থেকে যথেষ্ট ভালো কাজ করেছে। তারা যথেষ্ট উদ্যোগী ও তৎপর। কিছু কিছু বিষয় কমিশনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকলেও, তাদের উদ্দেশ্য ভালো ছিলো। বিশেষ করে তারা পাবলিক ইস্যু রুলসে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) সমবন্টন সংক্রান্ত যে বিধান পরিবর্তন করেছে, যা পুঁজিবাজারের জন্য ইতিবাচক।

বিএসইসির কাজের মূল্যায়ন সম্পর্কে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি সায়েদুর রহমান বলেন, ‘এক কথায় এক্সিলেন্ট। শেয়ারবাজারকে ভালো রাখার জন্য কমিশন গত এক বছরে তাদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। কাজে যোগদানের শুরু থেকেই তাদের উদ্দেশ্য ছিল, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা ও তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা। এ কমিশন সেই পরীক্ষায় সফলও হয়েছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক রকিবুর রহমান বলেন, বর্তমান কমিশনের ১ বছরের কার্যক্রমে অব্যশই সফল। পুঁজিবাজারের গতি ও আস্থা ফেরানোর চ্যালেঞ্জে সফল। কারন ২০১৬-১৭ সালে অনেক বিনিয়োগকারী বাজারে এসেছিল কিন্তু তারা ধোকা খেয়েছে। সে সময় কিছু দুর্বল কোম্পানি বাজারে আসায় তারা সেগুলোতে বিনিয়োগ করে ব্যাপক ক্ষতির শিকার হন।

এতে করে আস্থার সংকট দেখা দেয় যেটা চলমান ছিল। তবে নতুন কমিশনের দৃশ্যমান পদক্ষেপ বিশেষ করে বড় কোম্পানিকে জরিমানা, ব্রোকারেজ হাউজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া, পরিচালকদের দুই শতাংশ শেয়ার ধারণের টাইম দিয়ে দেওয়া এবং দুষ্ট চক্রের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেওয়ায় বাজারে বিনিয়োগকারীরা আসছেন। একই সঙ্গে তারল্য বাড়ছে। আশা করি বর্তমান কমিশনের নেতৃত্বে বিনিয়োগকারীরা ক্ষত কাটিয়ে উঠতে পারবে।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ও বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘ধসের পর পুঁজিবাজারের অনেক কিছুরই উন্নতি হয়েছে। তবে এ সময়ে ওয়ালটন, রবির মতো বড় কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ইতিবাচক দিক। এ ছাড়াও, বেশ কিছু নতুন কোম্পানি তালিকাভুক্ত হয়েছে, এটা ভালো।‘ ‘আগের কমিশন বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে পারেনি। তবে নতুন কমিশন আস্থা ফেরাতে যেভাবে বাজার পর্যবেক্ষণ করছেন তাতে আমি আশাবাদী।’

এক বছরে এতো কাজ করার পর সন্তুষ্ট নয় বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। তিনি বলেন, আমার যা ইচ্ছে ছিলো তার মাত্র ২০ শতাংশ কাজ করতে পেরেছি। আরও ৮০ শতাংশ কাজ করতে পারিনি। বিএসইসির জনবল সংকট, করোনার প্রভাব গতি থামিয়ে দিয়েছে। তবে তিনি পুঁজিবাজারকে একটি নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চান।

তিনি বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে সব ধরণের সহযোগিতা পাচ্ছি। জনবল সংকটের সমাধান হচ্ছে। আগামীতে আরও অনেক গতিতীতে পুঁজিবাজার এগিয়ে যাবে। অর্থনীতির প্রতিচ্ছবি হবে দেশের পুঁজিবাজার।

জেড ক্যাটাগরি: নতুন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর জেড ক্যাটাগরির কোম্পানিগুলোকে পুনর্গঠন করার সিদ্ধান্ত নেন। দায়িত্ব নেওয়ার সময় ৫৩টি কোম্পানি এই তালিকায় ছিলো। বর্তমানে এই তালিকায় আছে মাত্র ৩১টি কোম্পানি। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে এই তালিকায় থাকা ১০ টি কোম্পানির পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়েছে। অনেক কোম্পানি লভ্যাংশ দিয়ে ক্যাটাগরি পরিবর্তন করেছে।

৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ: কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর ৬১টি কোম্পানির পরিচালকদের সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ছিলো না। পরে কমিশন আইন পরিপালন করার উদ্যোগ নেয়। বর্তমানে মাত্র ১৮টি কোম্পানি এই আইন পরিপালনে ব্যর্থ। বাকীগুলো আইন পরিপালন করেছে। অন্যদিকে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে চারটি কোম্পানির পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়েছে। আরও তিন থেকে চারটি কোম্পানি তালিকায় আছে।

দুই শতাংশ শেয়ার ধারণ: নতুন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর ২০২০ সালের ২ জুলাই ২২ কোম্পানির ৬১জন পরিচালককে নূন্যতম শেয়ার ধারণ নিয়ে আল্টিমেটাম দেয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নূন্যতম শেয়ার ধারণ না করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়। বিএসইসির নির্দেশনা মেনে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শতভাগ পরিচারখ আইনটি পরিপালন করেন।

উল্লেখ,২০০৯-১০ সালে শেয়ার কারসাজির পর ভয়াবহ দরপতনের প্রেক্ষাপটে ২০১১ সালের ২২ নভেম্বর পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি তালিকাভুক্ত কোম্পানির পরিচালকদের এককভাবে ও সম্মিলিতভাবে নূন্যতম শেয়ার ধারণের শর্ত আরোপ করেছিল। উদ্দেশ্য ছিল, কোম্পানি পরিচালনায় জবাবদিহিতা এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে যথাযথ প্রতিনিধিত্বশীল পর্ষদ গঠন করা।

মিউচ্যুয়াল ফান্ড: পুঁজিবাজারে সুশাসন নিশ্চিতে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের বিষয়ে কঠিন নির্দেশনা দিয়েছে বিএসইসি। মিউচ্যুয়াল ফান্ডে সুসাশন নিশ্চিতে আগামীতে কমিশন যে ধরণের তথ্য চাবে তা অ্যাসেট ম্যানেজার, ট্র্যাষ্টি,কাস্টডিয়ান ও উদ্যোক্তাদের সকল তথ্য কমিশনের নিকট দিতে বাধ্য থাকবে।
জানা গেছে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পুঁজিবাজারের উন্নতির জন্য মিউচ্যুয়াল ফান্ড ভূমিকা রাখছে।

কিন্তু বাংলাদেশে মিউচ্যুয়াল ফান্ড অনেকটা বিপরীত অবস্থানে। যার কারণে মিউচ্যুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগে আগ্রহী হচ্ছেন না বিনিয়োগকারীরা। এবার এই খাতে সুসাশন ফেরাতে চায় নতুন কমিশন। নির্দেশনাগুলো হলো:

১. মিউচ্যুয়াল ফান্ডে সুসাশন নিশ্চিত করার জন্য অ্যাসেট ম্যানেজার, ট্র্যাষ্টি,কাস্টডিয়ান ও উদ্যোক্তাদের সকল তথ্য কমিশনের নিকট দিতে বাধ্য থাকবে।

২ এর (এ). কমিশন তথ্য না চাইলেও সঠিক সময়ে নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন ও ফান্ডের ফিন্যান্সিয়াল অবস্থা, ফান্ডের অবস্থা,বাজারের বিনিয়োগের অবস্থা, ক্যাসফ্লোর অবস্থা বছর শেষ হওয়ার তিন মাসের মধ্যে জানাতে হবে।

২ এর (বি). ফান্ডের ৬ মাস মেয়াদ শেষ হলো ৪৫ দিনের মধ্যে বিএসইসিতে সব তথ্যসহ জমা দিতে হবে। একই সাথে গত বছরের একই সময়ের অবস্থান জানাতে হবে।

২ এর (সি).ফান্ডের ৩ মাস মেয়াদ শেষ হলো ৩০ দিনের মধ্যে বিএসইসিতে সব তথ্যসহ জমা দিতে হবে। একই সাথে গত বছরের একই সময়ের অবস্থান জানাতে হবে।

৩. প্রতি প্রান্তিক শেষ হওয়ার পর ইউনিটহোল্ডারদেরকে ফান্ডের অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে হবে।

৪. প্রতি প্রান্তিকের প্রতিবেদন অ্যাসেট ম্যানেজারের ওয়েবসাইডে প্রকাশ করতে হবে। একই সাথে আর্ধ বার্ষিকী প্রতিবেদন ৪৫ দিনের মধ্যে অ্যাসেট ম্যানেজারের ওয়েবসাইডে প্রকাশ করতে হবে।

অবন্টিত ২১ হাজার কোটি টাকার লভ্যাংশ: পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত কোম্পানি ও মিউচুয়্যাল ফান্ডের ব্যবস্থাপকদের কাছে অলস পড়ে আছে প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা। অলস এই টাকা বিনিয়োগে নীতিমালা করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত বিএসইসিতে ২০ হাজার ৯৪২ কোটি ৩৯ লাখ টাকার তথ্য একত্রিত করা হয়েছে।

এর মধ্যে নগদ ৯৫৬ কোটি ১০ লাখ টাকা এবং ২০২০ সালের ২ ডিসেম্বরের বাজার দর অনুযায়ী বোনাস শেয়ারের মূল্য দাঁড়ায় ১৯ হাজার ৯৮৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা। এই টাকা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য একটি নীতিমালা করছে বিএসইসি। আজ বৃহস্পতিবার এই সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি হতে পারে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ১৫ হাজার কোটি টাকা ফান্ড আবেদন: পুঁজিবাজারের মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বল্প সুদে ঋণ দিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ১৫ হাজার কোটি টাকার ফান্ড চেয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। ২০২০ সালের ১২ নভেম্বর বিএসইসির চেয়ারম্যান স্বাক্ষরিত এই চিঠি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে পাঠানো হয়েছে।

এই টাকা দিয়ে মার্চেন্ট ব্যাংক এবং ব্রোকারেজ হাউজগুলোর মার্জিন ঋণ সংক্রান্ত সমস্যা সমাধান এবং ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)কে শক্তিশালী করতে বিএসইসি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে এই ফান্ড চেয়েছে। পুঁজিবাজারকে সাপোর্ট দেওয়ার জন্য স্বল্প সুদে আইসিবিকে ৫ হাজার কোটি টাকা এবং ঋণে জর্জরিত ব্রোকারেজহাউজ এবং মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর জন্য ১০ হাজার কোটি টাকার ফান্ড গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

সুত্র জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংকে উল্লেখিত তহবিলে ৩ শতাংশ থেকে ৪ শতাংশ সুদে ১০ বছর মেয়াদী ঋণ প্রদান করবে। এ ফান্ডের বিনিয়োগের সুদের হার হবে ৪ শতাংশ যার ১ শতাংশ সিংকিং ফান্ডে জমা থাকবে। ফান্ডের মাধ্যমে উত্তেলিত অর্থ মার্চেন্ট ব্যাংকার, স্টক ব্রোকারস ও স্টক ডিলার কতৃক ইস্যুকৃত কর্পোরেট বন্ড/ ডেট সিকিউরিটিজে (যার কুপন হার হবে ৬ থেকে ৭ শতাংশ) বিনিয়োগ করা হবে। এ ফান্ড গঠন ও বিনিয়োগের মাধ্যমে তারল্য ও লেনদেনের পরিমাণ বৃদ্ধির মাধ্যমে পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতা রক্ষায় সহায়ক ভূমিকা পালনের পাশাপাশি সরকারের রজস্ব আহরণ কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাবে।

বন্ড পেতে লাগবে ২০০ কোটি টাকার তহবিল: পুঁজিবাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগের মাধ্যমে পুঁজিবাজারে টানা দরপতন সামাল দিতে ২০২০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারিতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর জন্য বিশেষ তহবিল গঠন করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তহবিলের নীতিমালা অনুযায়ী, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর জন্য বিশেষ সুবিধায় প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠনের সুযোগ হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুত্রে জানা গেছে, তহবিল গঠন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারির পর গত ১০ মাসে ২১টি ব্যাংক বিশেষ তহবিল গঠন করেছে, যার পরিমাণ ২ হাজার ৫০ কোটি টাকা। আর ওই তহবিল থেকে ব্যাংকগুলো বিনিয়োগ করেছে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা।

বিশেষ সুবিধায় ৬০টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য তহবিল গঠনের সুযোগ থাকলেও এখন পর্যন্ত মাত্র ২১টি ব্যাংক এই তহবিল গঠন করেছে। এর মধ্যে সোনালী, জনতা, অগ্রণী, ওয়ান, ইউসিবি, এনসিসিবিএল ও মার্কেন্টাইল ব্যাংক ২০০ কোটি টাকা করে বিশেষ তহবিল গঠন করেছে। এ ছাড়া এক্সিম ব্যাংক ৮০ কোটি টাকার তহবিল গঠন করেছে।

সিটি ব্যাংক পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য ৫০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠন করেছে। এর বাইরে রূপালী, ইসলামী, পূবালীসহ আরও ১২টি বাণিজ্যিক ব্যাংক ৫২০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠন করেছে। বেশিরভাগ ব্যাংকই নিজস্ব উৎস থেকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের তহবিল গঠন করেছে।

ব্যাংকগুলোর ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠনের সুযোগ থাকলেও অধিকাংশ ব্যাংক তা না করায় হতাশ হয়ে পড়ে কমিশন। বাংলাদেশ ব্যাংক পরামর্শ দিলেও তা উপেক্ষা করে ব্যাংকগুলো। এমন পরিস্থিতিতে বিশেষ কৌশল অবলম্বন করে কমিশন। ব্যাংকগুলোর ব্যাসেল সংক্রান্ত শর্ত পরিপালনের জন্য ব্যাংকগুলোকে বন্ড ইস্যু করতে হয়। এক্ষেত্রে এসইসির অনুমোদনের প্রয়োজন হয়।

এখন এই বন্ড অনুমোদনের ক্ষেত্রে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ গত ১০ ফেব্রুয়ারি ব্যাংকের জারি করা বিশেষ তহবিল সংক্রান্ত নির্দেশনা পরিপালনের শর্ত জুড়ে দিচ্ছে এসইসি। বিশেষ তহবিল গঠন না করলে ব্যাংকগুলো বন্ডের চাঁদা সংগ্রহ করতে পারবে না। সম্প্রতি ৫-৬টি ব্যাংকের পার্পিচ্যুয়াল বন্ডের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যেগুলোতে এমন শর্তারোপ করা হয়েছে।

তফসিলি ব্যাংকগুলো ট্রেজারি বিল ও বন্ড রেপোর মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সর্বোচ্চ ২০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য বিশেষ তহবিল গঠন করতে পারে। ব্যাংকগুলো চাইলে নিজস্ব উৎস থেকেও এমন তহবিল গঠন করতে পারে। ওই বিশেষ তহবিলের সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ সংশ্লিষ্ট ব্যাংক নিজস্ব পোর্টফোলিওতে ব্যবহার করতে পারবে। পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে গঠন করা বিশেষ তহবিল ২০২৫ সাল পর্যন্ত ব্যবহার করতে পারবে ব্যাংক, যা পুঁজিবাজারে ব্যাংক কোম্পানি আইনের বর্ণিত বিনিয়োগ গণনার বাইরে থাকবে।

আইপিওতে আবেদন করতে ২০ হাজার টাকা বিনিয়োগ: পুঁজিবাজারে তারল্য বাড়াতে একটি অভিনভ উদ্যোগ নিয়েছে বিএসইসি। প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) আবেদনকারীদের সেকেন্ডারি বাজারে ন্যূনতম বিনিয়োগ ২০ হাজার টাকা রাখার বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়। এর মাধ্যমে পুঁজিবাজারে আসবে প্রায় ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ।

বীমা কোম্পানির থাকতে হবে ২০ শতাংশ বিনিয়োগ: বীমা কোম্পানিগুলোকে বাজার আনার জন্য অনেক আইনে ছাড় দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। তবে একটি শর্ত দিয়েছে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের। বীমা কোম্পানির তালিকাভুক্তির ক্ষেত্রেও আইপিওর (প্রাথমিক গণপ্রস্তাব) মাধ্যমে উত্তোলিত অর্থের অন্তত ২০ শতাংশ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে হবে। এছাড়া ব্রেআকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকে দাবীহিন টাকা বিএসইসির গঠন প্রক্রিয়ায় নিতে চায়।

আইপিও বাতিল: পুঁজিবাজারে আসার অপেক্ষায় থাকা সাতটি কোম্পানির প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) আবেদন বাতিল করেছে নতুন কমিশন। নতুন কমিশন আসার পর বাতিল হওয়া কোম্পানিগুলো হলো-জেএমআই হসপিটাল রিক্যুইজিট ম্যানুফেক্চারিং, বি ব্রাদার্স গার্মেন্টস,বিডি পেইন্টস, বেকা গার্মেন্টস অ্যান্ড টেক্সটাইল, এসএফ টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিজ,আল ফারুক ব্যাগস,ইনফিনিটি টেকনোলজি ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড।

সূত্র মতে, সিকিউরিটিজ আইন লংঘন এবং আর্থিক প্রতিবেদনে অংসগতি থাকায় আইপিওগুলো বাতিল করা হয়েছে। তবে কোম্পানিগুলো বাজারে আসতে চাইলে আর্থিক প্রতিবেদন ঠিক করে এবং সিকিউরিটিজ আইন পরিপালন করে আবারও বিএসইসিতে আবেদন করতে পারবে।

চার কোম্পানির বোর্ড সভার তারিখ ঘোষণা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত চার কোম্পানির বোর্ড সভার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। কোম্পানিগুলো হলো: ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, জি কিউ বলপেন ইন্ডাষ্ট্রিজ, লিগ্যাসি ফুটওয়্যার ও ইস্টার্ন হাউজিং।

ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের কোম্পানি ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের বোর্ড সভা আগামী ২৫ মে অনুষ্ঠিত হবে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। জানা গেছে, ওইদিন কোম্পানিটির বোর্ড সভা বিকেল ৫টায় অনুষ্ঠিত হবে। সভায় ৩১ মার্চ, ২০২১ পর্যন্ত কোম্পানির প্রথম প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে।

জি কিউ বলপেন ইন্ডাষ্ট্রিজ: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিবিধ খাতের জি কিউ বলপেন ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের বোর্ড সভা আগামী ২৫ মে অনুষ্ঠিত হবে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, ওইদিন কোম্পানিটির বোর্ড সভা বেলা সাড়ে ৩টায় অনুষ্ঠিত হবে। সভায় ৩১ মার্চ, ২০২১ পর্যন্ত কোম্পানির তৃতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে।

লিগ্যাসি ফুটওয়্যার: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ট্যানারি খাতের কোম্পানি লিগ্যাসি ফুটওয়্যার লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের বোর্ড সভা আগামী ২৪মে অনুষ্ঠিত হবে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, ওইদিন কোম্পানিটির বোর্ড সভা বেলা ৩টায় অনুষ্ঠিত হবে। সভায় ৩১ মার্চ, ২০২১ পর্যন্ত কোম্পানির তৃতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে।

ইস্টার্ন হাউজিং: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ইস্টার্ন হাউজিংয়ের বোর্ড সভার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ২৭ মে বিকাল সাড়ে ৩টায় এ কোম্পানির বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হবে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। জানা যায়, সভায় ৩১ মার্চ ২০২১ পর্যন্ত কোম্পানির তৃতীয় প্রান্তিকের অনিরিক্ষীত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে।

ব্যাংক খাতের বড় পতনে সূচকে ভাটা: পুঁজিবাজারে ব্যাংক খাতের ভর করে সূচক ও লেনদেনে যে উত্থান ছিল সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে তা ভাটা লাগছে। ব্যাংকসহ বিমার মূল্য সংশোধন আর অতিমূল্যায়িত হওয়ার শেয়ারে পর্যবেক্ষণ সময় নিচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। এমন অবস্থায় সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের বড় পতন হয়েছে। আগের দিনের তুলনায় কমেছে লেনদেনও।

ঈদের ছুটির পর পুঁজিবাজারে পাঁচ কার্যদিবসে তিনদিনই কমেছে সূচক। বৃহস্পতিবার হাজার কোটি টাকা লেনদেন হলেও আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় ৪৪৭ কোটি টাকা কমেছে। লেনদেন কমলেও টানা ১৪ দিনের মতো হাজার কোটি টাকা লেনদেন ধরে রেখেছে পুঁজিাবাজারে। এর আগের ১২ ডিসেম্বর থেকে ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত টানা ২৪ দিন লেনদেন ছিল হাজার কোটি টাকা। এরপর ২৯ এপ্রিল থেকে বাড়তে থাকা লেনদেন এখনও হাজার কোটি টাকার ঘরে আছে।

এদিকে বুধবার বড় উত্থান হলেও বৃহস্পতিবার বড় পতন হয়েছে পুঁজিবাজারে। এদিন পুঁজিবাজারের সব সূচক কমেছে। একই সাথে টাকার পরিমাণে লেনদেন এবং বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর কমেছে।

আজ ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৬০.০৬ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৮১৩.০৬ পয়েন্টে। ডিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ৯.৫৯ পয়েন্ট এবং ডিএসই-৩০ সূচক ২২.৫৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ২৭২.৮১ পয়েন্টে এবং ২ হাজার ১৭৮.৪৭ পয়েন্টে।

আজ ডিএসইতে ১ হাজার ৬৫২ কোটি ৭৮ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের দিন থেকে ৪৪৬ কোটি ২৭ লাখ টাকা কম। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৯৯ কোটি ৫ লাখ টাকার। ডিএসইতে আজ ৩৫৯টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে ৬৮টির বা ১৮.৯৪ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে। শেয়ার দর কমেছে ২৩৪৬টির বা ৬৫.১৮ শতাংশের এবং বাকি ৫৭টির বা ১৫.৮৮ তাংশের দর অপরিবর্তিত রয়েছে।

অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২১৪.৮০ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৮৩৭.৬৪ পয়েন্টে। সিএসইতে আজ ২৮২টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪২টির দর বেড়েছে, কমেছে ১৯৯টির আর ৪১টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ৯৯ কোটি ১০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।

নতুন ৩০ ব্রোকার হাউজের অনুমোদন দিল বিএসইসি: পুঁজিবাজারে শেয়ার কেনা-বেচার করা জন্য নতুন ৩০টি নতুন ব্রোকারেজ হাউজ বা ট্রেকের (ট্রেডিং রাইট এনটাইটেলমেন্ট সার্টিফিকেট) অনুমোদন দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রস্তাবিত মোট ৫৪টি ট্রেকের মধ্যে প্রাথমিক অবস্থায় ৩০টি ট্রেকের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর ফলে ডিএসইর সদস্যভুক্ত মোট ব্রোকারেজ হাউজ বা ট্রেকের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮০টিতে। সম্প্রতি নতুন ট্রেক অনুমোদন সংক্রান্ত চিঠি ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর পাঠানো হয়েছে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে। নতুন ট্রেক অনুমোদনের বিষয়টি ডিএসইর চেয়ারম্যানকেও অবহিত করা হয়েছে।

নতুন ট্রেক অনুমোদন পাওয়া ৩০টি প্রতিষ্ঠান হলো- কবির সিকিউরিটিজ, মোনার্ক হোল্ডিংস, সোহেল সিকিউরিটিজ, আরএকে ক্যাপিটাল, যমুনা ব্যাংক সিকিউরিটিজ, স্নিগ্ধা ইক্যুইটিস, ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটিজ কোম্পানি, সাউথ এশিয়া সিকিউরিটজ, ট্রিস্টার সিকিউরিটিজ, ৩ আই সিকিউরিটিজ, সোনালী সিকিউরিটিজ, কেডিএস শেয়ার অ্যান্ড সিকিউরিটিজ, আল হারমাইন সিকিউরিটিজ, মির সিকিউরিটিজ,

টিকে শেয়ার অ্যান্ড সিকিউরিটজ, এনআরবি ব্যাংক সিকিউরিটিজ, এসবিএসি ব্যাংক ইনভেস্টমেন্ট, আমায়া সিকিউরিটিজ, প্রুডেন্সিয়াল ক্যাপিটাল, তাকাফুল ইসলামী সিকিউরিটিজ, বিএনবি সিকিউরিটিজ, অগ্রনী ইন্স্যুরেন্স সিকিউরিটিজ, মাহিদ সিকিউরিটজ, বারাকা সিকিউরিটিজ, এএনসি সিকিউরিটিজ, এসএফআইএল সিকিউরিটিজ, তাসিয়া সিকিউরিটিজ, ডাইনেস্টি সিকিউরিটিজ, ক্লিসটাল সিকিউরিটিজ ও ট্রেড এক্স সিকিউরিটিজ।

ট্রেক অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকা ২৪টি প্রতিষ্ঠান হলো- আমার সিকিউরিটজ, ব্যাঙ্গ জিন (বিজে) জিও টেক্সটাইল, উইংস ফিন, মিনহার সিকিউরিটজ, বিপ্লব হোল্ডিংস, অ্যাসোসিয়েট ক্যাপিটাল সিকিউরিটিজ, বি রিচ, ফারইস্ট শেয়ার অ্যান্ড সিকিউরিটিজ, কলম্বিয়া শেয়ার অ্যান্ড সিকিউরিটজ, রাহমান ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট, ট্রাস্ট রিজোনাল ইক্যুইটি, এনসি সিকিউরিটিজ, এমকেএম সিকিউরিটিজ,

এইচএসবি সিকিউরিটিজ, স্মার্ট শেয়ার অ্যান্ড সিকিউরিটিজ, ইনোভা সিকিউরিটিজ, বিএনবি সিকিউরিটিজ, বিনিময় সিকিউরিটিজ, রিলিফ এক্সচেঞ্জ, ইম্পেরোর সিকিউরিটিজ অ্যান্ড ওয়েলথ ম্যানেজমেন্ট, মিরপুর সিকিউরিটিজ, ডিপি৭, এনওয়াই ট্রেডিং, বি অ্যান্ড বিএসএস ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল ও ব্রিজ স্টক অ্যান্ড ব্রোকারেজ।

ট্রেক আবেদন বাতিল হওয়া ১২টি প্রতিষ্ঠান হলো- অ্যাসুরেন্স সিকিউরিটিজ অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট, টিএ মার্চেন্টডাইজিং, ফারিহা নিট টেক্স, ম্যাটরিক্স সিকিউরিটিজ, এসএমই ইনফরমেটিকস, বাংলাদেশ এসএমই কর্পোরেশন, বেসিক ব্যাংক সিকিউরিটিজ, গিবসন সিকিউরিটিজ, সিভিসি ফাইন্যান্স, এসকিউ ওয়্যার অ্যান্ড কেবল কোং, ইসলামিক ফাইন্যান্স ইনভেস্টমেন্ট ও জাপান সোলারটেক (বাংলাদেশ)।

জানা গেছে, পুঁজিবাজারের পরিধি বাড়াতে নতুন ট্রেক বাড়ানো সিদ্ধান্ত নেয় অধ্যাপক ড. শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নেতৃতত্বাধীন কমিশন। এরই ধারাবাহিকতায় নতুন ট্রেক ইস্যুর বিষয়ে ২০২০ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর চুড়ান্ত অনুমোদন দেয় কমিশন। পরবর্তীতে ২০২১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ৯৯০তম পরিচালনা পর্ষদের সভায় সংশ্লিষ্ট বিধিমালা পরিপালন ও যোগ্যতার ভিত্তিতে নতুন ট্রেক অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ডিএসই। এরপর ডিএসইর ওয়েবসাইট ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে নতুন ট্রেকের জন্য আবেদন জমা দেওয়ার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।

প্রথম দফায় নতুন ট্রেকের জন্য আবেদন জমা দেওয়ার মেয়াদ ১৮ মার্চ পর্যন্ত রাখা হয়। তবে ওই সময়ের মধ্যে পর্যাপ্ত সাড়া না পাওয়ায় দ্বিতীয় দফায় আবেদন গ্রহণের মেয়াদ ২৮ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এ সময়ে মোট ৬৬টি প্রতিষ্ঠানের ট্রেক সার্টিফিকেট নেওয়ার জন্য আবেদন করে। যাচাই-বাচাই শেষে প্রথম ধাপে বিভিন্ন কারণে ১৫টি প্রতিষ্ঠানের আবেদন বাতিল হয়।

ফলে ট্রেক সার্টিফিকেট প্রদানের যোগ্য এমন ৫১টি প্রতিষ্ঠানের তালিকা বিএসইসিতে পাঠায় ডিএসই। পরবর্তীতে বিএসইসির নির্দেশে আরো ৩টি প্রতিষ্ঠানের নাম তালিকায় যুক্ত করে ডিএসই। সব মিলিয়ে ডিএসইর প্রস্তাবিত ট্রেকের আবেদনের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা দাঁড়ায় ৫৪টি।

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, ডিএসইর প্রস্তাবিত ট্রেক অনুমোদনের ক্ষেত্রে কোনো তদবির গ্রহণ করা হয়নি। প্রকৃতপক্ষে যোগ্য প্রতিষ্ঠানগুলোকেই ট্রেক অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক অবস্থায় ৩০টি ট্রেকের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

অবশিষ্ট ২৪টি প্রতিষ্ঠানের আবেদন অধিকতর যাচাই-বাছাই করে পর্যায়ক্রমে অনুমোদন দেবে কমিশন। তবে ট্রেকের জন্য আবেদন করা ৬৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১২টি কি কি অযোগ্যতার কারণে বাদ পড়েছে তা ডিএসইর কাছে জানতে চেয়েছে কমিশন।

মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের পরিচালকের শেয়ার বিক্রির ঘোষণা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক খাতের মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের কর্পোরেট পরিচালক শেয়ার বিক্রির ঘোষণা করেছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, এ কোম্পানির করপোরেট পরিচালক এসোসিয়েট বিল্ডার্স করপোরেশন লিমিটেডের কাছে থাকা মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ২ কোটি ৯২ লাখ ৬৩ হাজার ৩১৬টি শেয়ারের মধ্যে ৮২ লাখ ৯৮ হাজার ৭৬০টি শেয়ার আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে বিক্রির করবে।

যেখানে এসোসিয়েট বিল্ডার্সের পরিচালক নাশিদ ইসলাম ২০ লাখ ৭৪ হাজার ৬৯০টি শেয়ার, সুভাষ চন্দ্র ঘোষ ৪১ লাখ ৪৯ হাজার ৩৮০টি শেয়ার এবং মুস্তাকুর রহমান ২০ লাখ ৭৪ হাজার ৬৯০টি শেয়ার ক্রয় করবেন।