দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে চায় দেশের চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড। কোম্পানিটি পুঁজিবাজার থেকে ১৫ কোটি টাকার মূলধন সংগ্রহ করতে চায়। এজন্য প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিও’র মাধ্যমে এই তহবিল সংগ্রহে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে সম্প্রতি কোম্পানিটি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) এরই মধ্যে আবেদন করেছে।

প্রতিষ্ঠানটি ১০ টাকা মূল্য হিসাবে এক কোটি ৫০ লাখ সাধারণ শেয়ার বিক্রি করবে। আর ১৫ কোটি টাকার মধ্যে কোম্পানিটি সরকারি ট্রেজারি বন্ডে ছয় কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে চায়। এছাড়া পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজে চার কোটি টাকা ও এফডিআরে তিন কোটি ৯০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করবে। বাকি টাকা দিয়ে আইপিও-সংক্রান্ত ব্যয় ও অন্যান্য ব্যয় মেটাবে চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড।

সূত্রমতে, স্বল্প ও মাঝারি শিল্পের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির নতুন আইনি সুবিধার মাধ্যমে বিমা কোম্পানিগুলো প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের জন্য বিএসইসিতে সর্বনিম্ন পাঁচ কোটি থেকে সর্বোচ্চ ৩০ কোটি টাকা পর্যন্ত পুঁজিবাজার থেকে মূলধন উত্তোলন করতে আবেদন করতে পারবে। সেই সুযোগটাই নিতে চাচ্ছে বিমা খাতের প্রতিষ্ঠান চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স। এর আগে আইপিওর মাধ্যমে মূলধন সংগ্রহে বিমা কোম্পানিগুলোর জন্য সর্বনিম্ন সীমা ছিল ১৫ কোটি টাকা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসএম জিয়াউল হক জানান, আইডিআরএ ও বিএসইসির আইন অনুযায়ী তালিকাভুক্তির আবেদন করা হয়েছে। বিএসইসি যাচাই-বাছাই করছে। সর্বোচ্চ ৩০ কোটি টাকা উত্তোলনের সুযোগ থাকলেও কোম্পানির সক্ষমতা বিবেচনায় ১৫ কোটি টাকা সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, আইডিআরএ গঠিত হওয়ার পরে ১৭টি বিমা কোম্পানি কার্যক্রম শুরু করে। এর মধ্যে চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড দ্বিতীয় কোম্পানি হিসেবে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির জন্য আবেদন করেছে। এর আগে ২০১৮ সালে সোনালি লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি প্রথম হিসেবে তালিকাভুক্তির আবেদন করে বিএসইসিতে। কোম্পানিটি খুব শিগগিরই আইপিওতে আসবে বলে জানা যায়।

বিএসইসি নতুন আইনে বলেছে, যেসব বিমা কোম্পানির ৩০ কোটি টাকার বেশি পরিশোধিত মূলধন রয়েছে, এসব কোম্পানি তালিকাভুক্ত হতে চাইলে তাদের ইক্যুইটির কমপক্ষে ২০ শতাংশ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে হবে।

এদিকে চার্টার্ড ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিওতে আসতে যৌথভাবে ইস্যু ম্যানেজার হিসেবে কাজ করছে এবি ইনভেস্টমেন্ট, এএএ ফিনান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড এবং ট্রাস্ট ব্যাংক ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড।

প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ২৯ জুলাই যাত্রা শুরু করে চতুর্থ প্রজšে§র জীবন বিমা খাতের প্রতিষ্ঠান চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড। কোম্পানিটি তাদের গ্রাহকদের বিভিন্ন জীবন ও স্বাস্থ্য বিমা নীতিমালা, হাসপাতালে ভর্তি কভারেজ, প্রসূতি এবং বহিরাগত রোগীদের কভারেজ প্রদান করে, যা কোম্পানিটির বর্তমান এবং সম্ভাব্য গ্রাহকদের চাহিদা ও প্রয়োজনীয়তা পূরণ করে।

গত বছরে নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোম্পানিটির মোট প্রিমিয়াম ছিল ৩১ কোটি ১৩ লাখ টাকা ও নেট প্রিমিয়াম আয় ছিল ৩০ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। আলোচিত সময়ে চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্সের জীবন বিমা তহবিলের পরিমাণ ছিল ২১ কোটি ৬০ লাখ টাকা। একই সময়ে এর মোট সম্পদ ছিল ৪৭ কোটি ৫৫ লাখ টাকা এবং বিনিয়োগ ছিল ৩২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী কোম্পানিটির ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত শেয়ারপ্রতি নেট সম্পদের মূল্য ছিল ১৩ টাকা ৩৯ পয়সা।

বিমা নিয়ন্ত্রক সংস্থার তথ্যমতে, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের বিমা খাতে ৭৮টি কোম্পানি রয়েছে। এর মধ্যে ৩২টি জীবন বিমা এবং ৪৬টি নন-লাইফ বিমা। আর ৭৮টি বিমা কোম্পানির মধ্যে পাঁচটি বিমা কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আছে।

পুঁজিবাজারে ৩ ইস্যুতে সূচক ও লেনদেনে উল্লম্ফন: তিন ইস্যুতে নতুন প্রত্যাশায় পুঁজিবাজারে আসছেন বিনিয়োগকারীরা। ফলে করোনা মহামারির মধ্যে ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশের দুই পুঁজিবাজার। মুলত লকডাউনের মধ্যে ও পুঁজিবাজারের মূলধন বেড়েছে ৩৩ হাজার কোটি টাকা। নিয়ন্ত্রক সংস্থার একের পর এক পুঁজিবাজার ইস্যুতে চমকপদ সিদ্ধান্তে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা ফিরে এসেছে। মুলত নিয়ন্ত্রক সংস্থার বাজারবান্ধব সিদ্ধান্তের ফলে নতুন ও পুরাতন বিনিয়োগকারীদের সমন্বয়ে চাঙ্গা হচ্ছে পুঁজিবাজার।

মুলত তিন ইস্যুতে পুঁজিবাজারে আরো চাঙ্গা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মুলত বাধ্যতামূলক বিমা করার ঘোষণা, আগামী বাজেটে করপোরেট করহারে আরও ছাড়, কালোটাকা সাদা করার সুযোগ অব্যাহত রাখা প্রভৃতি ছিল গত সপ্তাহে অর্থনীতির ক্ষেত্রে আলোচিত বিষয়। এসব ঘোষণা কার্যকর হবেই বলে ধরে নিয়ে বিনিয়োগকারীরা সক্রিয় হন। এর প্রভাবে সপ্তাহের ব্যবধানে পুঁজিবাজারে লেনদেন দ্বিগুণ বৃদ্ধি পায়। কয়েকটি খাতের শেয়ারদর বৃদ্ধি পায় ত্বরিত গতিতে। এর মধ্যে রয়েছে আলোচনায় থাকা বিমা খাত।

করোনাকালেও মুনাফা অব্যাহত থাকায় নতুন করে আলোচনায় আসে ব্যাংক খাতের শেয়ার। এতে গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের সর্বোচ্চ অবদান রাখে সাধারণ বিমা খাত ও ব্যাংক খাত। এছাড়া স্বাস্থ্য ও করপোরেট প্রতিষ্ঠানের শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ থাকায় খাত দুটিতেও লেনদেন হয়েছে বেশি। দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাপ্তাহিক লেনদেন চিত্র বিশ্লেষণ ও বাজার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এসব। অবশ্য গত সপ্তাহে লেনদেন বৃদ্ধি পেলেও সব খাতের শেয়ারদর সেভাবে বাড়েনি, যার ফলে প্রধান সূচকের উল্লম্ফন ঘটলেও অপর দুই সূচকের পতন হয়।

তবে বিশ্লেষক বলেছেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থার পুঁজিবাজার ইস্যুতে একের পর এক চ্যালেঞ্জ গ্রহন করতে হবে। বাজারে গুজব রয়েছে ৬ হাজার পয়েন্ট সূচক আসলে পুঁজিবাজার ধ্বস নেমে। এ ৬ হাজার পয়েন্ট সূচকের বেড়িয়েন্ট ভেঙ্গে দিতে হবে। তা হলে বিনিয়োগকারীদের মাঝে আস্থা আরো বাড়বে। অন্যদিকে ব্রোকারেজ হাউজগুলোতে বাড়ছে লেনদেনের পরিমাণ। ফলে দীর্ঘ সময় ধরে আস্থা ও তারল্য সংকটে থাকা পুঁজিবাজার এখন স্থিতিশীল হওয়ার পথে।

তবে বিনিয়োগকারীদের এখন জেনে বুঝে বিনিয়োগের পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্লেষকরা। কারণ এখন বিনিয়োগে ঝুঁকি বেশি। এক্ষেত্রে কমিশনকে কারসাজি রোধ এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে জোর দিয়েছেন তারা।

ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, কমিশন পুঁজিবাজারকে স্থিতিশীল রাখার জন্য নতুন নতুন ফান্ড আনার চেষ্টা করছে। ডিমান্ড-সাপ্লালাইয়ের দিক খেয়াল রাখছেন। ফলে নতুন করে বিনিয়োগকারীরাও আসছেন। এভাবে চললে পুঁজিবাজার ভালো থাকবে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় সরকার লকডাউন আরোপ করেছে। এই লকডাউনের মধ্যে বেশ চাঙ্গা হয়ে উঠেছে দেশের পুঁজিবাজার। গেল সপ্তাহে প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন দুই হাজার কোটি টাকার ওপরে বেড়েছে। এতে লকডাউনের ছয় সপ্তাহে বাজার মূলধন বেড়েছে ৩৩ হাজার কোটি টাকার ওপরে।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গেল সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তিন কার্যদিবস পুঁজিবাজার ঊর্ধ্বমুখী থাকে। এতে সপ্তাহজুড়ে দাম বেড়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। সেই সঙ্গে বেড়েছে প্রধান মূল্য সূচক। পাশাপাশি বেড়েছে লেনদেনের গতিও। বিদায়ী সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৯২ হাজার ২৯২ কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৪ লাখ ৮৯ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ২ হাজার ৩৫২ কোটি টাকা।

আগের পাঁচ সপ্তাহেও বড় অঙ্কের মূলধন বাড়ে বাজারটিতে। আগের পাঁচ সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বাড়ে ৩০ হাজার ৭০১ কোটি টাকা। এ হিসাবে লকডাউনের ছয় সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বাড়ল ৩৩ হাজার ৫৩ কোটি টাকা। বাজার মূলধন বাড়া বা কমার অর্থ তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের দাম সম্মিলিতভাবে ওই পরিমাণ বেড়েছে বা কমেছে।

এদিকে গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৬২ দশমিক ৫৭ পয়েন্ট বা ১ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। আগের পাঁচ সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৪৯৫ দশমিক ৭২ পয়েন্ট। অর্থাৎ টানা ছয় সপ্তাহের উত্থানে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক বাড়ল ৫৫৮ দশমিক ২৯ পয়েন্ট। অবশ্য তার আগের চার সপ্তাহ টানা এই সূচকটি কমে। আগের চার সপ্তাহের টানা পতনে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক কমে ৩১৪ দশমিক শূন্য ৯ পয়েন্ট।
প্রধান মূল্য সূচকের বড় উত্থান হলেও গত সপ্তাহজুড়ে কমেছে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক।

গেল সপ্তাহে এই সূচকটি কমেছে ৮ দশমিক ৪০ পয়েন্ট বা দশমিক ৩৮ শতাংশ। তবে আগের পাঁচ সপ্তাহে এ সূচকটি বাড়ে ১৯৬ দশমিক ৪৭ পয়েন্ট। অপরদিকে ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ সূচকও টানা পাঁচ সপ্তাহ বড়ার পর গত সপ্তাহে কিছুটা কমেছে। গত সপ্তাহে সূচকটি কমেছে ২ দশমিক ৩৩ পয়েন্ট বা দশমিক ১৮ শতাংশ। আগের পাঁচ সপ্তাহের টানা উত্থানে সূচকটি বাড়ে ৭৭ দশমিক ৪৯ পয়েন্ট।

প্রধান মূল্য সূচকের উত্থানের পাশাপাশি গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন অংশ নেয়া বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১৬৯টি প্রতিষ্ঠান। বিপরীতে দাম কমেছে ১৪৯টির। আর ৫৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৬৮৪ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ১ হাজার ৪০২ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ৪৮১ কোটি ৯১ লাখ টাকা বা ২০ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ।
আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৮ হাজার ৪২৪ কোটি ৪৬ লাখ টাকা।

আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ৪ হাজার ২০৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন বেড়েছে ৪ হাজার ২১৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা বা ১০০ দশমিক ১৬ শতাংশ। মোট লেনদেন বেশি হারে বাড়ার কারণ গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে দুই কার্যদিবস কম লেনদেন হয়। গত সপ্তাহে ডিএসইর মূল বাজারে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া ১০ কোম্পানির মধ্যে রয়েছে: বেক্সিমকো, প্রাইম ব্যাংক, সাইফ পাওয়ার, ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, রবি, ন্যাশনাল ফিড, আইএফআইসি ব্যাংক, জিনেক্স ইনফোসিস এবং ম্যাকসন স্পিনিং।

এক ব্যক্তির কোম্পানির জন্য বড় সুখবর: আগামী বাজেটে এক ব্যক্তির কোম্পানির (ওপিসি) ক্ষেত্রে বিশেষ কর ছাড়ের সুবিধা দিতে যাচ্ছে সরকার। ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য এক ব্যক্তির কোম্পানির কর কমিয়ে ২৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হবে। উল্লেখ্য, কোম্পানি আইন অনুযায়ী অতালিকাভুক্ত প্রাইভেট কোম্পানিগুলো গড়ে ওঠায় বর্তমানে এ ধরনের কোম্পানির জন্য করের হার ৩২.৫ শতাংশ।

এক ব্যক্তির কোম্পানির কর ছাড়ের সুবিধার উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী নেতারা। পাশাপাশি ক্ষুদ্র ও নতুন স্টার্টআপের আরও বেশি সংখ্যক উদ্যোক্তা আকর্ষণে পরিশোধিত মূলধনের ন্যূনতম পরিমাণ ২৫ লাখ টাকার আবশ্যিক শর্ত শিথিল করার আহ্বান জানিয়েছেন তারা। অন্যথায়, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের আনুষ্ঠানিক অর্থনৈতিক খাতে অঙ্গীভূতকরণে এই কর ছাড়ের সুবিধা প্রভাব রাখতে পারবে না বলে জানিয়েছেন তারা।

২০২০ সালে কোম্পানি আইন সংশোধনের মাধ্যমে দেশে এক ব্যক্তির কোম্পানি (ওপিসি) খোলার সুযোগ তৈরি হয়, এ প্রক্রিয়ায় জড়িত ছিলেন এই অর্থনীতিবিদ। তিনি এব্যাপারে বলেন, উদ্যোক্তার সংখ্যা বাড়ানো, বিনিয়োগ বৃদ্ধি, ট্রেড লাইসেন্স ভিত্তিক অনানুষ্ঠানিক বা আধা-আনুষ্ঠানিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পরিবর্তে আনুষ্ঠানিক প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বৃদ্ধিই ২০২০ সালে কোম্পানি আইন সংশোধনের মূল লক্ষ্য ছিল। তবে ন্যূনতম পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ২৫ লাখ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া মৌলিক ভুল ছিল, কারণ ছোট ব্যবসা বা স্টার্টআপের ক্ষেত্রে এ পরিমাণ অর্থ যোগাড় সহজ কাজ নয়।

পলিসি এক্সচেঞ্জ অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এম মাশরুর রিয়াজ এব্যাপারে বলেন, “বাংলাদেশে করপোরেট করের হার অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি। ওপিসি’র ক্ষেত্রে কর কমানোর জন্য সরকারের এ উদ্যোগ প্রশংসাজনক,” “আমাদের অনানুষ্ঠানিক অর্থনীতির আকার বিশাল, কিন্তু এই খাতকে আনুষ্ঠানিক খাতে রূপান্তর করতে না পারায় আমরা এর সুফল পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। কর কমানোর এ উদ্যোগ ছোট কোম্পানিগুলোর আনুষ্ঠানিক খাতে প্রবেশের পথ সহজ করবে।”

তবে পরিশোধিত মূলধনের ন্যূনতম পরিমাণের বিধান ওপিসি’র উদ্দীপনা ও উদ্দেশ্যের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করছেন ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স করপোরেশনের সাবেক এই অর্থনীতিবিদ। তিনি বলেন, এর ফলে এই আইনের মর্ম একেবারে উল্টে গেছে। বড় কোম্পানিরগুলোর জন্য নয়, বরং ছোট কোম্পানির জন্য আইনের বিধান সহজ হওয়া উচিৎ বলে মন্তব্য করেন তিনি।

উদাহরণস্বরূপ, ইউনিলিভারের মতো বড় কোম্পানিগুলো ন্যূনতম ১০ হাজার টাকা পরিশোধিত মূলধন নিয়েই নতুন কোম্পানি খুলতে পারবে। কিন্তু নতুন স্টার্টআপের ক্ষেত্রে আইন অনুযায়ী প্রয়োজন হবে ন্যূনতম ২৫ লাখ টাকা। এ ব্যাপারটিই ছোট কোম্পানি ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, ওপিসি উদ্যোক্তাদেরই ন্যূনতম মূলধনের পরিমাণ নির্ধারণ করা উচিৎ, তারা নিজেদের ব্যবসার প্রকৃতি ও কৌশল বিবেচনায় রেখে এ পরিমাণ নির্ধারণ করবেন। ব্যাংকিং এর মতো কিছু খাতে নতুন উদ্যোগের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৪০০ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধনের বিধান রয়েছে, তবে তা জরুরি বলে জানান মাশরুর রিয়াজ।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, “আমি মনে করি, একজন ব্যক্তির জন্য এ করের হার সর্বোচ্চ হওয়ার কারণেই ওপিসি’র ক্ষেত্রে করপোরেট করের হার কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। অন্যান্য করের হারও শিথিল করা উচিৎ এবং তালিকাভুক্ত বা অতালিকাভুক্ত যে কোনো কোম্পানির করের হারই ২৫ শতাংশের বেশি হওয়া উচিৎ নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি। ২০২০ সালের ১৮ নভেম্বর এক ব্যক্তির মালিকানাধীন কোম্পানি খোলার সুযোগ রেখে সংসদে ‘কোম্পানি (দ্বিতীয় সংশোধন) বিল- ২০২০’ পাস হয়।

বিনিয়োগ আকর্ষণে, ইজ-অব-ডুয়িং-বিজনেস সূচকে উন্নতির লক্ষ্যে ও অনানুষ্ঠানিক ব্যবসা খাতকে আনুষ্ঠানিক খাতে অঙ্গীভূতকরণের লক্ষ্যে এ সংশোধনী আনা হয়। বর্তমানে অনলাইনে নিবন্ধনের মাধ্যমেই একজন ব্যক্তি ওপিসি খুলতে পারবেন। বিল অনুযায়ী, এক ব্যক্তি কোম্পানির পরিশোধিত শেয়ার মূলধন হবে অন্যূন ২৫ লাখ টাকা এবং অনধিক ৫ কোটি টাকা।

এ ধরনের কোম্পানির ক্ষেত্রে অব্যবহিত পূর্ববর্তী অর্থবছরের বার্ষিক টার্নওভার ১ কোটি থেকে ৫০ কোটি টাকা হতে হবে। পরিশোধিত শেয়ার মূলধন এবং বার্ষিক টার্নওভার এর বেশি হলে শর্তপূরণ সাপেক্ষে এক ব্যক্তির কোম্পানিকে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি বা ক্ষেত্র বিশেষে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তর করা যাবে। এক ব্যক্তির কোম্পানিকে বছরে কমপক্ষে একটি পরিচালক সভার আয়োজন করতে হবে। কোম্পানির পরিচালক

এবং প্রধান ব্যক্তি একজন হলে এ ধরনের কোম্পানি পর্ষদ সভা করা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ার নিয়মের ক্ষেত্রে ছাড় পাবে। একমাত্র সদস্য মারা গেলে তার মনোনীত ব্যক্তি সকল শেয়ারের অধিকারী হবে বলে আইনে বলা হয়েছে। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, সিঙ্গাপুর, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, নেপাল ও শ্রীলঙ্কায় বহু বছর ধরেই ওপিসি’র ধারণা আইনিভাবে স্বীকৃত।

বেশিরভাগ দেশেই এক্ষেত্রে ন্যূনতম পরিশোধিত মূলধনের কোনো বিধান নেই। ভারত, পাকিস্তান ও নেপালে এ পরিমাণ এক লাখ রূপি। যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের নিবন্ধকের কার্যালয় (আরজেএসসি) গত মার্চে ওপিসির অনলাইন নিবন্ধনের শুরু করতে সফটওয়্যার তৈরির কাজ শুরু করে, তবে মহামারির কারণে এ প্রক্রিয়া থমকে আছে।

এক দশকে সর্বোচ্চ উচ্চতায় এনআরবিসি: গত ৪ মার্চ শেয়ারটির দর ছিল ১২ টাকা ৪০ পয়সা। এরপর টানা উত্থান। নয় কার্যদিবসই মূল্য বৃদ্ধির সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করেছে। এরপর পৌঁছে যায় ২৮ টাকা ৪০ পয়সায়। ১০ম কার্যদিবস বৃহস্পতিবার (২০ মে) দর ৩০ টাকা ৩০ পয়সা ছুঁলেও টিকতে পারেনি। নেমে আসে ২৭ টাকা ৫০ পয়সায়। দিনশেষে ক্লোজিং দর হয় ২৮ টাকায়। গত এক দশকে এনআরবিসির মতো অন্য কোনো ব্যাংকের শেয়ার দর এত দ্রুত এই পরিমাণ বাড়তে দেখা যায়নি।

এটি পুঁজিবাজারে ব্যাংক খাতে এক দশকে দ্রুত সময়ে সর্বোচ্চ উচ্চতায় পৌঁছার কোম্পানি। গত বৃহস্পতিবার কোম্পানিটি চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের আয় প্রকাশ করেছে। প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির আয় হয়েছে ৪৪ পয়সা, যা অন্যান্য ব্যাংকগুলোর তুলনায় বেশ কম। তারপরও আগের বছরের চেয়ে কোম্পানিটির আয় বেড়েছে ১৬ পয়সা।

আগের বছর আয় ছিল ২৮ পয়সা। কোম্পানিটি পুঁজিবাজারে এসেই বিনিয়োগকারীদের ভালো ডিভিডেন্ড দিয়েছে। প্রথম বছরে ডিভিডেন্ড দিয়েছে ৭.৫০ শতাংশ ও ৫ শতাংশ স্টক। এটিও কোম্পানিটির সফলতার বড় দিক বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

তবে যতো সমালোচনা সবই হলো কোম্পানিটির টানা শেয়ারদর বৃদ্ধি নিয়ে। এক মাসে দর বেড়ে হয়েছে প্রায় দেড়গুণ। ১১ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ২৮ টাকায়। এভাবে ঊর্ধ্বশ্বাসে বড় মূলধনী কোন কোম্পানির দর বাড়তে দেখা যায়নি। স্পষ্ঠতই বুঝা যায়, শেয়ারটির পেছনে বড় হাত রয়েছে।

সেই যাই হোক, এটা সত্য পুঁজিবাজারে ব্যাংক খাতে সাম্প্রতিক যে উত্থান দেখা গেছে, তাতে নেতৃত্ব দিয়েছে এনআরবিসি ব্যাংক। নতুন ব্যাংক হিসাবে এটিও কোম্পানিটির বড় সফলতা। সর্বশেষ দর ও প্রথম প্রান্তিকের হিসাব অনুযায়ী ব্যাংকটির মূল্য আয় অনুপাত বা পি রেশিও দাঁড়িয়েছে ১৫.৯। তবে ২০২০ সালের আয়ের ভিত্তিতে পি রেশিও ১১.৮১।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুঁজিবাজারে এমন ব্যাংকও আছে যেগুলোর পিই রেশিও পাঁচ এর নিচে। যেমন-যমুনা ব্যাংকের পি রেশিও ৩.৬, সাউথইস্ট ব্যাংকের ৩.০৬, ওয়ান ব্যাংকের ৩.৫৭, ব্যাংক এশিয়ার ৪.১৭, প্রাইম ব্যাংকের পি রেশিও ৪.৫, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ৪.৮৮। এ ছাড়া প্রিমিয়ার ব্যাংকের ৫.১১, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ৬.৬, ইস্টার্ন ব্যাংকের ৬.৬৬, সিটি ব্যাংকের ৬.৭১, আইএফআইসি ব্যাংকের ৬.৯৬, এনসিসি ব্যাংকের ৭.৭, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের ৭.৯২, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ৮.৫২।

চলতি সপ্তাহে ৬ কোম্পানির রেকর্ড ডেট: চলতি সপ্তাহে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৬ কোম্পানির রেকর্ড ডেটের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। কোম্পানিগুলো হলো-সিটি জেনারেল ইন্সুরেন্স, হাইডেলবার্গ সিমেন্ট, ইস্টার্ন ইন্সুরেন্স, ম্যারিকো, রেকিট বেনকিজার ও পদ্মা লাইফ ইন্সুরেন্স।

সিটি জেনারেল ইন্সুরেন্স: কোম্পনিটি ২০২০ অর্থবছরের জন্য ১০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ৭৭ পয়সা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে ইপিএস ছিল ১ টাকা ১ পয়সা। আলোচ্য অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদ (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১৬ টাকা ৮৮ পয়সায়। আগের অর্থবছরের একই সময়ে এনএভিপিএস ১৫ টাকা ৬৮ পয়সা। কোম্পানিটির ডিভিডেন্ড মালিকানা নির্ধারণের জন্য রেকর্ড ডেট রয়েছে ২৪ মে। এজিএম অনুষ্ঠিত হবে ৩০ জুন, ২০২১।

হাইডেলবার্গ সিমেন্ট: কোম্পনিটি ২০২০ অর্থবছরের জন্য ২০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ১ টাকা ৪৩ পয়সা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল ৩ টাকা ৩০ পয়সা। আলোচ্য অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদ (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৬৮ টাকা ১০ পয়সায়। আগের অর্থবছরের একই সময়ে এনএভিপিএস ৭১ টাকা ৮৮ পয়সা। কোম্পানিটির ডিভিডেন্ড মালিকানা নির্ধারণের জন্য রেকর্ড ডেট ২৫ মে। কোম্পানিটির এজিএম অনুষ্ঠিত হবে ২৮ জুন, ২০২১।

ইস্টার্ন ইন্সুরেন্স: কোম্পনিটি ২০২০ অর্থবছরের জন্য ২০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ৩ টাকা ৩৩ পয়সা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে ইপিএস ছিল ৩ টাকা ৬৫ পয়সা। আলোচ্য অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদ (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৪৭ টাকা ৩০ পয়সায়। আগের অর্থবছরের একই সময়ে এনএভিপিএস ৪৪ টাকা ৫৪ পয়সা। কোম্পানিটির ডিভিডেন্ড মালিকানা নির্ধারণের জন্য রেকর্ড ডেট ২৫ রয়েছে মে। কোম্পানিটির এজিএম অনুষ্ঠিত হবে ২৯ জুলাই, ২০২১।

ম্যারিকো: কোম্পনিটি ২০২০ অর্থবছরের জন্য ২০০ শতাংশ চুড়ান্ত ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে। এর আগে কোম্পানিটি ৭০০ শতাংশ অর্ন্তবর্তী ডিভিডেন্ড দিয়েছিল। সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটি ৯০০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে। সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ৯৮ টাকা ৬৯ পয়সা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে ইপিএস ছিল ৮৪ টাকা ১ পয়সা।

আলোচ্য অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদ (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৫১ টাকা ৯৫ পয়সায়। আগের অর্থবছরের একই সময়ে এনএভিপিএস ৪৪ টাকা ৫ পয়সা। কোম্পানিটির ডিভিডেন্ড মালিকানা নির্ধারণের জন্য রেকর্ড ডেট ২৭ মে। কোম্পানিটির এজিএম অনুষ্ঠিত হবে ২৬ জুলাই, ২০২১।

রেকিট বেনকিজার: কোম্পনিটি ২০২০ অর্থবছরের জন্য ১৪০০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ১৫৬ টাকা ৩৮ পয়সা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে ইপিএস ছিল ১৩১ টাকা ৬ পয়সা। আলোচ্য অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদ (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১৭০ টাকা ৯৫ পয়সায়। আগের অর্থবছরের একই সময়ে এনএভিপিএস ১৪২ টাকা ৬৪ পয়সা। কোম্পানিটির ডিভিডেন্ড মালিকানা নির্ধারণের জন্য রেকর্ড ডেট ২৭ মে। কোম্পানিটির এজিএম অনুষ্ঠিত হবে ২২ জুন, ২০২১।

পদ্মা লাইফ ইন্সুরেন্স: কোম্পনিটি চলতি ২০২১ অর্থবছরের জন্য ২ শতাংশ অর্ন্তবর্তী ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। কোম্পানিটির ডিভিডেন্ড মালিকানা নির্ধারণের জন্য রেকর্ড ডেট করা হয়েছে ২৭ মে।

মার্কেট মুভারের ভূমিকায় নতুন চার কোম্পানি: গত সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) মার্কেট মুভারের তালিকায় নতুন চার কোম্পানির আবির্ভাব হয়েছে। কোম্পনিগুলো হলো: প্রাইম ব্যাংক, সাইফ পাওয়ার, আইএফআইসি ব্যাংক ও জেনেক্স ইনফোসিস লিমিটেড। আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানিগুলোর শেয়ারের লেনদেন যেমন বেড়েছে. দর বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও বেশ এগিয়েছে। যদিও কোম্পানিগুলোর মধ্যে কয়েকটি সপ্তাহের শেষদিন সংশোধনে ফিরেছে। তবে আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানি চারটি ডিএসই’র লেনদেন ও সূচক গতিশীল রাখতে যথেষ্ট ভূমিকা রেখেছে।

প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড: গেল সপ্তাহে প্রাইম ব্যাংকের ১০ কোটি ১১ লাখ ১৪ হাজার ৫১২টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ২৫৫ কোটি ২ লাখ ৪ হাজার টাকা। ডিএসইর মোট লেনদেনে কোম্পানিটির অবদান ছিল ৩.০৩ শতাংশ। কোম্পানিটি ডিএসই’র লেনদেনের শীর্ষ তালিকায় কোম্পানিটি ২য় স্থানে ছিল। বিদায়ী সপ্তাহের কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২১ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ২৮ টাকার মধ্যে। সপ্তাহের শেষদিন বৃহস্পতিবার দর ক্লোজিং হয়েছে ২৪ টাকা ১০ পয়সা। সপ্তাহের ব্যবধানে দর বেড়েছে ২ টাকা ৬০ পয়সা বা ১২.০৯ শতাংশ।

সাইফ পাওয়ার লিমিটেড: সাইফ পাওয়ারের ৯ কোটি ৬৫ লাখ ৯৯ হাজার ৪৭২টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ২৪৮ কোটি ২৫ লাখ ৪৮ হাজার টাকা।ডিএসইর মোট লেনদেনে এই কোম্পানির অংশগ্রহণ ছিল ২.৯৫ শতাংশ। বিদায়ী সপ্তাহের কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২২ টাকা ৮০ পয়সা থেকে ২৭ টাকার মধ্যে। সপ্তাহের শেষদিন বৃহস্পতিবার দর ক্লোজিং হয়েছে ২৫ টাকা ৩০ পয়সা। সপ্তাহের ব্যবধানে দর বেড়েছে ২ টাকা ৫০ পয়সা বা ১০.৯৬ শতাংশ।

আইএফআইসি ব্যাংক: আইএফআইসি ব্যাংকের ১১ কোটি ৭৬ লাখ ৪ হাজার ১০৫টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ছিল ১৫৪ কোটি ৫৭ লাখ ৩১ হাজার টাকা।ডিএসইর মোট লেনদেনে এই কোম্পানির অংশগ্রহণ ছিল ১.৮৩ শতাংশ। বিদায়ী সপ্তাহের কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১২ টাকা থেকে ১৩ টাকা ৮০ পয়সার মধ্যে। সপ্তাহের শেষদিন বৃহস্পতিবার ক্লোজিং দর হয়েছে ১২ টাকা ৮০ পয়সা। সপ্তাহের ব্যবধানে দর বেড়েছে ৮০ পয়সা বা ৬.৬৬ শতাংশ।

জেনেক্স ইনফোসিস: জেনেক্স ইনফোসিসের ১ কোটি ৯৯ লাখ ৩৮ হাজার ৯৮৮টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ছিল ১৩১ কোটি ৪ লাখ ৬৫ হাজার টাকা।ডিএসইর মোট লেনদেনে এই কোম্পানির অংশগ্রহণ ছিল ১.৫৬ শতাংশ। কোম্পানিটি দীর্ঘদিন যাবত ফ্লোর প্রাইসে বন্দী ছিল।বিদায়ী সপ্তাহে ফ্লোর প্রাইস ভেঙ্গে তুঙ্গে উঠেছে।

আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ফ্লোর প্রাইস ৫৪ টাকা ৭০ পয়সা থেকে ৭৮ টাকা ৩০ পয়সার মধ্যে। সপ্তাহের শেষদিন বৃহস্পতিবার ক্লোজিং দর হয়েছে ৭৬ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে দর বেড়েছে ২১ টাকা ৩০ পয়সা বা ৩৮.৯৩ শতাংশ।

তিন খাতের বিনিয়োগকারীরা ফুরফুরে মেজাজে: বিদায়ী সপ্তাহে পুঁজিবাজারে উত্থান হয়েছে। বেড়েছে সূচক, বেড়েছে লেনদেন, বেড়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর। তবে তিন খাতের বিনিয়োগকারীরা ফুরফুরে মেজাজে ছিলেন। ইবিএল সিকিউরিটিজের সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় এ তথ্য পাওয়া গেছে।

গত সপ্তাহে ডিএসইর ২০ খাতের মধ্যে ৯ খাতের শেয়ারে চাঙ্গাভাব ছিল। খাতগুলোর শেয়ারদর বেড়েছে। শেয়ারদর বাড়াতে এই ৯ খাতের বিনিয়োগকারীরা সাপ্তাহিক রির্টানে ভালো মুনাফা পেয়েছে। তারমধ্যে তিন খাতের বিনিয়োগকারীরা সর্বোচ্চ মুনাফা পেয়েছে। এ তিন খাতের বিনিয়োগকারীরা ফুরফুরে মেজাজে রয়েছে। খাত ৩টি হলে- তথ্য প্রযুক্তি, ব্যাংক এবং লাইফ ইন্সুরেন্স খাত। এই তিন খাতের বিনিয়োগকারীরা মুনাফা পেয়েছে ৩.১০ শতাংশ থেকে ১০.১ শতাংশ পর্যন্ত। গত সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি মুনাফা পেয়েছে তথ্য প্রযুক্তি খাতের বিনিয়োগকারীরা।

এ খাতের বিনিয়োগকারীরা মুনাফা পেয়েছে ৩৮.৯৪ শতাংশ। এ খাতে জেনেক্স ইনফোসিসের বিনিয়োগকারীরা মুনাফা পেয়েছে ৩৮.৯৪ শতাংশ।
এরপর ব্যাংক খাতের বিনিয়োগকারীরা মুনাফা পেয়েছে ৪.৮০ শতাংশ। বিনিয়োগকারীরা এ খাতে সবচেয়ে বেশি মুনাফা পেয়েছে এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের ৪২.৮৬ শতাংশ, এনসিসি ব্যাংকের ১৪.৭৭ শতাংশ, ওয়ান ব্যাংকের ১৪.২৯ শতাংশ।

সর্বোচ্চ মুনাফা পাওয়ার তৃতীয় স্থানে রয়েছে জীবন বিমা খাতের বিনিয়োগকারীরা। এখাতের বিনিয়োগকারীরা মুনাফা পেয়েছে ৩.১০ শতাংশ। এ খাতে বিনিয়োগকারীরা বেশি মুনাফা পেয়েছে রূপালী লাইফের ১৩.৭০ শতাংশ, মেঘনা লাইফের ১৩.৩১ শতাংশ, সান লাইফের ৮.৯৮ শতাংশ, সন্ধানী লাইফের ৭.৮৪ শতাংশ, প্রাইম লাইফের ৭.৩৮ শতাংশ।

এছাড়া, রিয়েল এস্টেট ও সার্ভিসেস খাতের বিনিয়োগকারীরা মুনাফা পেয়েছে ২.৪০ শতাংশ, জেনারেল ইন্সুরেন্স খাতের বিনিয়োগকারীরা মুনাফা পেয়েছে ২.২ শতাংশ, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের বিনিয়োগকারীরা মুনাফা পেয়েছে ২ শতাংশ, মিউচুয়াল ফান্ড খাতের বিনিয়োগকারীরা মুনাফা পেয়েছে .৭ শতাংশ, বিবিধ খাতের বিনিয়োগকারীরা মুনাফা পেয়েছে .৬ শতাংশ এবং আর্থিক খাতের বিনিয়োগকারীরা মুনাফা পেয়েছে .৬ শতাংশ।

সপ্তাহজুড়ে বেক্সিমকোর লেনদেন ৭০০ কোটি টাকার: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সাপ্তাহিক লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানি (বেক্সিমকো) লিমিটেড। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। জানা গেছে, সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির ৭ কোটি ৯৬ লাখ ২৯ হাজার ১৯৮ টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে । যার বাজার মূল্য ৭০০ কোটি ৬৭ লাখ ৪৭ হাজার টাকা। তালিকার দ্বিতীয় স্থানে থাকা প্রাইম ব্যাংকের ১০ কোটি ১১ লাখ ১৪ হাজার ৫১২ টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ২৫৫ কোটি ২ লাখ ৪ হাজার টাকা।

তৃতীয় স্থানে থাকা সাইফ পাওয়ারটেকের ৯ কোটি ৬৫ লাখ ৯৯ হাজার ৪৭২ টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ২৪৮ কোটি ২৫ লাখ ৪৮ হাজার টাকা। লেনদেনের তালিকায় থাকা অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে- ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর ২০০ কোটি ৯ লাখ ৫৩ হাজার টাকার, লংকাবাংলা ফাইন্যান্সের ১৯১ কোটি ২৫ লাখ ২ হাজার টাকার,

রবি আজিয়াটার ১৮৯ কোটি ৯৫ লাখ ১১ হাজার টাকার, ন্যাশনাল ফিডের ১৮৪ কোটি ৪৯ লাখ ৮৭ হাজার টাকার, আইএফআইসি ব্যাংকের ১৫৪ কোটি ৫৭ লাখ ৩১ হাজার টাকার, জেনেক্স ইনফোসিসের ১৩১ কোটি ৪ লাখ ৬৫ হাজার টাকার ও ম্যাকসন স্পিনিংয়ের ১২৫ কোটি ৫২ লাখ ৭৪ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।

সপ্তাহজুড়ে দরপতনের শীর্ষে গোল্ডেন সন: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সাপ্তাহিক শেয়ার দর পতনের শীর্ষে উঠে এসেছে গোল্ডেন সন লিমিটেড। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। জানা গেছে, সপ্তাহজুড়ে কোম্পানির দর কমেছে ১০ দশমিক ৮৩ শতাংশ। কোম্পানিটি সর্বমোট ১৪ কোটি ১১ লাখ ৬ হাজার টাকা লেনদেন করে। যা গড়ে প্রতিদিন ২ কোটি ৮২ লাখ ২১ হাজার ২০০ টাকা।

তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা ফারইষ্ট নিটিংয়ের দর কমেছে ১০ দশমিক ২৬ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটি সর্বমোট ৯ লাখ ৩৭ লাখ ৪ হাজার টাকা লেনদেন করে। যা গড়ে প্রতিদিন ১ কোটি ৮৭ লাখ ৪০ হাজার ৮০০ টাকা। তালিকায় তৃতীয় স্থানে থাকা মালেক স্পিনিংয়ের দর কমেছে ১০ দশমিক ১০ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে শেয়ারটি সর্বমোট ১৯ কোটি ৯০ লাখ ৯৯ হাজার টাকা লেনদেন করে।

যা গড়ে প্রতিদিন ৩ কোটি ৯৮ লাখ ১৯ হাজার ৮০০ টাকা। তালিকায় থাকা অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে-বিডি থাই অ্যালুমেনিয়ামের ৮ দশমিক ৯৮ শতাংশ, ফরচুন সুজের ৮ দশমিক ৭৯ শতাংশ, সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ, নিউ লাইফ ক্লোথিংয়ের ৮ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সের ৭ দশমিক ৭৪ শতংশ, এমারেল্ড অয়েলের ৭ দশমিক ২৭ শতাংশ এবং অগ্রণী ইন্স্যুরেন্সের ৭ দশমিক ১৮ শতাংশ দাম কমেছে।

১১ কোটি টাকার মুনাফায় শেয়ারহোল্ডারা পাবে ২ কোটি ৯৬ লাখ: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বীমা খাতের কোম্পানি সেন্ট্রাল ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড মুনাফার পৌনে ১১ কোটি টাকার মধ্যে শেয়ারহোল্ডারদের মাত্র ২ কোটি ৯৬ লাখ টাকা লভ্যাংশ হিসেবে দেবে। ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০ সালের সমাপ্ত বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিচালনা পর্ষদ।

বিষয়টি করেছেন কোম্পানি সচিব জাফর আলী। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার (২০ মে) বিকেলে কোম্পানির বোর্ড সভা ছিল। সভায় ২০২০ সালের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য সাড়ে ১৩ শতাংশ লভ্যাংশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এর মধ্যে ৬ শতাংশ নগদ এবং সাড়ে ৭ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দেওয়া হবে। সে হিসেবে প্রতিষ্ঠানটির ৪ কোটি ৯৪ লাখ ৩৭ হাজার ৪৫টি শেয়ারহোল্ডারদের শেয়ার প্রতি ৬০ পয়সা করে মোট ২ কোটি ৯৬ লাখ ৬২ হাজার ২২৭ টাকার লভ্যাংশ দেবে কোম্পানিটি।

১৯৯৫ সালে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদনের জন্য কোম্পানির বার্ষিক কোম্পানি বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) আগামী ২৯ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ১৭ জুন।

২০২০ সালে সাড়ে ১৩ শতাংশ লভ্যাংশ দেওয়া কোম্পানির কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) দাঁড়িয়েছে ২ টাকা ১৮ পয়সা। আগের বছর ইপিএস হয়েছিল ২ টাকা ১৪ পয়সা। তারপরও শেয়ারহোল্ডারদের নগদ লভ্যাংশ কম দিয়েছে কোম্পানিটি।

এর আগের বছর প্রতিষ্ঠানটি শেয়ারহোল্ডারদের শেয়ার প্রতি ৭০ পয়সা অর্থাৎ সাত শতাংশ নগদ আর ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দিয়েছিল। ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ সালে শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য ছিল ২৫ টাকা ০২ পয়সা। কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বৃহস্পতিবার সর্বশেষ ছিল ৫৯ টাকা ৮০ পয়সা।

প্রাইম ব্যাংকের এজিএমে ১৫ শতাংশ লভ্যাংশ অনুমোদন: প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড এর ২৬তম বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) ২০ মে গতকাল সকাল ১১ টায় ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৯৯ জন শেয়ারহোল্ডার, পরিচালনা পর্ষদের সদস্যবৃন্দ, স্বতন্ত্র বিশ্লেষক (ওহফবঢ়বহফবহঃ ঝপৎঁঃরহরুবৎ), নিরীক্ষক, পর্যবেক্ষক এবং ব্যাংকের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উক্ত বার্ষিক সাধারণ সভায় উপস্থিত ছিলেন।

প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড এর চেয়ারম্যান তানজিল চৌধুরী সভায় সভাপতিত্ব করেন। অন্যান্যের মধ্যে নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান জাইম আহমেদ, অডিট কমিটির চেয়ারম্যান শামসুদ্দীন আহমেদ পিএইচ.ডি, এনআরসি ও রিক্স ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান ড. জি এম খুরশিদ আলম, সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএপিএলসি এর প্রেসিডেন্ট আজম জে চৌধুরী এবং ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হাসান ও.

রশীদ সভায় উপস্থিত ছিলেন। শেয়ারহোল্ডারবৃন্দ ২০২০ সালের জন্য ১৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ, একই সাথে পরিচালকবৃন্দের প্রতিবেদন, নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণ, পরিচালকবৃন্দের নিয়োগ ও পুনর্নিয়োগ, বিধিবদ্ধ নিয়ম অনুযায়ী নিরীক্ষক এবং কমপ্লায়েন্স নিরীক্ষক নিয়োগ অনুমোদন করেন।

১২ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ: চলতি অর্থবছরের জানুয়ারি-মার্চ’ ২১ প্রান্তিকে অনিরিক্ষীত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ১২ কোম্পানি। কোম্পানিগুলো হলো: এনআরবিসি ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, এস্কয়ার নিট, সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্স, সায়হাম টেক্সটাইল ও জিল বাংলা সুগার মিল, কাশেম ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, আইটি কনসালটেন্টস লিমিটেড, ফু-ওয়াং ফুডস লিমিটেড, স্টাইলক্রাফট লিমিটেড ও ইস্টার্ন কেবলস লিমিটেড।

এনআরবিসি ব্যাংক: প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ’২১) সহযোগী প্রতিষ্ঠানের আয়সহ ব্যাংকটির সমন্বিত শেয়ার প্রতি আয় (ঈড়হংড়ষরফধঃবফ ঊচঝ) হয়েছে ৪৪ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে সমন্বিত ইপিএস ছিল ২৮ পয়সা। প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ’২১) এককভাবে ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি আয় (ঝড়ষড় ঊচঝ) হয়েছে ৪১ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে সমন্বিত ইপিএস ছিল ২৭ পয়সা। ৩১ মার্চ, ২০২১ তারিখে সমন্বিতভাবে ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য ছিল ১৫ টাকা ৮২ পয়সা

এক্সিম ব্যাংক: প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ’২১) সহযোগী প্রতিষ্ঠানের আয়সহ ব্যাংকটির সমন্বিত শেয়ার প্রতি আয় (ঈড়হংড়ষরফধঃবফ ঊচঝ) হয়েছে ৫ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ব্যাংকটির সমন্বিত ইপিএস হয়েছিল ৪ পয়সা। ৩১ মার্চ, ২০২১ তারিখে সমন্বিতভাবে ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য ছিল ২১ টাকা ৭১ পয়সা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি ক্যাশ ফ্লো হয়েছে নেগেটিভ ১ টাকা ১৯ পয়সা।

এস্কয়ার নিট: তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ’২১) কোম্পানিটির সমন্বিতভাবে শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৬৯ পয়সা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে ইপিএস ছিল ৮৬ পয়সা। এককভাবে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৬৯ পয়সা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে ইপিএস ছিল ৮৬ পয়সা। আর ৯ মাসে (জুলাই’২০-মার্চ,২১) কোম্পানিটির সমন্বিতভাবে ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ৮৩ পয়সা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে ইপিএস ২ টাকা ৪০ পয়সা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সমন্বিত সম্পদ (এনএভি) হয়েছে ৫০ টাকা ৯৩ পয়সা।

সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্স: প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ’২১) কোম্পানিটির কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৭২ পয়সা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৫৬ পয়সা। আলোচ্য সময়ে শেয়ার প্রতি নিট অ্যাসেট ভ্যালু হয়েছে (এনএভিপিএস) হয়েছে ২৫ টাকা ৭৪ পয়সা।

সায়হাম টেক্সটাইলস: তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ৩২ পয়সা। গত বছর একই সময়ে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছিল ১৩ পয়সা। অন্যদিকে চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জুলাই’২০-মার্চ’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি হয়েছে ৬৪ পয়সা। গত বছর একই সময়ে কোম্পানিটির ইপিএস ছিল ৭০ পয়সা।

জিল বাংলা সুগার: তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ১০ টাকা ২৭ পয়সা। গত বছর একই সময়ে লোকসান হয়েছিল ৯ টাকা ২২ পয়সা। অন্যদিকে চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জুলাই’২০-মার্চ’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ৪৭ টাকা ৮ পয়সা। গত বছর একই সময়ে লোকসান ছিল ৪৪ টাকা ৭৩ পয়সা। ৩১ মার্চ, ২০২১ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য ছিল ঋণাত্মক ৭৪৮ টাকা ৫৩ পয়সা।

কাশেম ইন্ডাষ্ট্রিজ: তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ’২১) কাশেম ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ১৫ পয়সা। এর আগের অর্থবছরের একই সময়ে ইপিএস ছিল ৯ পয়সা। অর্থাৎ করোনার এই সময়ে মুনাফা বেড়েছে ৬ পয়সা বা ৬৭ শতাংশ। চলতি বছরের তিন প্রান্তিকে (জুলাই’২০-মার্চ’২১) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ২৬ পয়সা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে ইপিএস হয়েছিল ৭০ পয়সা। ৩১ মার্চ কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদ (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৩০ টাকা ২৮ পয়সা।

আইটি কনসালটেন্টস: তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ’২১) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ৩৮ পয়সা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে হয়েছিল ২৯ পয়সা। গত নয় মাসে কোম্পানির ইপিএস দাঁড়িয়েছে ১ টাকা ১৬ পয়সা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে হয়েছিল ৯৯ পয়সা। ৩১ মার্চ কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদ (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১৬ টাকা ১০ পয়সা।

ফু-ওয়াং ফুডস:তৃতীয় প্রান্তিকের (জানুয়ারি-মার্চ’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ৯ পয়সা। গত অর্থবছরের একই সময়ে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছিল ১০ পয়সা। অর্থাৎ ১ পয়সা কমেছে। চলতি হিসাব বছরের তিন প্রান্তিকে (জুলাই ২০-মার্চ’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ২৬ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ইপিএস ছিল ৫৩ পয়সা।

স্টাইলক্রাফট: তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ৫২ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছিল ৬৯ পয়সা (রিস্টেটেড)। চলতি হিসাব বছরের তিন প্রান্তিকে (জুলাই ২০-মার্চ’২১) প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ৫৬ পয়সা। গত বছরের একই সময়ে কোম্পানিটির ইপিএস ছিল ১ টাকা ১৪ পয়সা।

ইস্টার্ন কেবলস: তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ১ টাকা ২২ পয়সা। এর আগের অর্থবছরের একই সময়ে ইপিএস হয়েছিল ১ টাকা ৫৩ পয়সা। কোম্পানিটির চলতি অর্থবছরের ৯ মাসে (জুলাই ২০-মার্চ’২১) শেয়ারপ্রতি লোকসান দাঁড়িয়েছে ৪ টাকা ৫১ পয়সা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে লোকসান হয়েছিল ৪ টাকা ৫৩ পয়সা।