দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৩ কোম্পানির আয় বৃদ্ধি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। কারন করোনার বছর কোম্পানিগুলোর হঠাৎ এ মুনাফার বাড়ার কারন কি? বস্ত্র খাতের কোম্পানি ম্যাকসন্স স্পিনিং ও মেট্রো স্পিনিং এবং সিমেন্ট খাতের এমআই সিমেন্ট। এর মধ্যে ম্যাকসন্স স্পিনিং ও মেট্রো স্পিনিং কারসাজি করে শেয়ারের দর বাড়িয়ে অস্বাভাবিক ইপিএস দেখাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলছেন বিনিয়োগকারীরা।

কারন ম্যাকসন্স স্পিনিং ও মেট্রো স্পিনিং গত ১০ বছর ধরে নামমাত্রা লভ্যাংশ ঘোষণা করে কোম্পানি দুটোর ক্যাটাগরি ধরে রাখছে। গত ১০ বছরে কোম্পানিটির মুনাফয় উল্লস্ফন না হলে করোনার বছর এত মুনাফার কারন কি? বিষয়টি নিয়ন্ত্রক সংস্থার খতিয়ে দেখা উচিত। বিগত দিনের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, কোম্পানি গুলো কারসাজি করে যখন শেয়ারের দর কয়েক গুন বাড়িয়ে ফেলে তখনই কোম্পানির অস্বাভাবিক ইপিএস দেখানো হয়। এর আগে কোম্পানি ইপিএস ও থাকে না।

বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, করোনার নেতিবাচক প্রভাবে প্রায় প্রতিটি ব্যবসায় মন্দা পরিস্থিতি চলছে। কোম্পানিগুলো থেকে বেতন-ভাতা কমানোসহ কর্মী ছাঁটাই করা হচ্ছে, সেখানে কিভাবে কোম্পানিগুলোর আয় বাড়ে।

ম্যাকসন স্পিনিং: চলতি হিসাববছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৬৪ পয়সা। গত বছর একই সময়ে কোম্পানিটির ইপিএস ছিল ৩ পয়সা। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় কোম্পানিটির আয় বেড়েছে ৬১ পয়সা বা ২০৩৩ শতাংশ। করোনার আগে যে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় হয় ৩ পয়সা, সেখানে করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও কিভাবে আয় ৬৪ পয়সা হয় বা ২০৩৩ গুণ বাড়ে?

অন্যদিকে, চলতি হিসাববছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জুলাই’২০-মার্চ’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ১ টাকা ১৫ পয়সা। গত বছর একই সময়ে কোম্পানিটির ইপিএস ছিল ৫ পয়সা। অর্থাৎ গত বছরের একই সময়ের তুলনায় আয় বেড়েছে ১ টাকা ১০ পয়সা বা ২২০০ শতাংশ।

এর আগে কোম্পানিটির প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর‘২০) শেয়ারপ্রতি আয় দেখিয়েছে ১১ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে কোম্পানিটির লোকসান ছিল ২ পয়সা। করোনার আগে কোম্পানিটি লোকসান দেখিয়ে করোনার মধ্যে কিভাবে আয় দেখিয়েছে। কারণ করোনার আগে গত বছর ২৭ মার্চ থেকে লকডাউনে প্রায় ৩ মাস কল কারখানা বন্ধ ছিল।

এর মধ্যে কিভাবে কোম্পানিটি লোকসান কাটিয়ে মুনাফায় ফিরে আসে। এরপর দ্বিতীয় প্রান্তিকেও কোম্পানিটি মুনাফা বৃদ্ধি দেখিয়েছে আগের বছরের তুলনায়। দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর’২০) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ৪০ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৪ পয়সা। অর্থাৎ আগের বছরের তুলনায় আয় বেড়েছে ৩৬ পয়সা বা ৯০০ শতাংশ।

মেট্রো স্পিনিং : চলতি হিসাববছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ৪২ পয়সা। গত বছর একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান ছিল ২০ পয়সা। অর্থাৎ করোনার আগে কোম্পানিটি লোকসান দেখিয়ে করোনার নেতিবাচক পরিস্থিতিতে কিভাবে মুনাফা এভাবে বাড়ে, সেটাই অবাক করার মতো।

চলতি হিসাববছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জুলাই’২০-মার্চ’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ৬২ পয়সা। গত বছর একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান ছিল ১৭ পয়সা। করোনার আগে যেখানে কোম্পানিটি লোকসান দেখিয়েছে, করোনার পরিস্থিতিতে মন্দা ব্যবসা পরিস্থিতিতেও কোম্পানিটি এতো বড় মুনাফা দেখিয়েছে, যা সন্দেহজনক হিসেবে দেখছে বাজার সংশ্লিষ্টরা।

এর আগে কোম্পানিটির প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই‘২০-সেপ্টেম্বর‘২০) শেয়ারপ্রতি আয় দেখিয়েছে ৫ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান দেখিয়েছে ৪ পয়সা। দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর’২০) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ১৫ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৭ পয়সা। অর্থাৎ আগের বছরের তুলনায় আয় বেড়েছে ৮ পয়সা বা ১১৪.২৮ শতাংশ।

এম আই সিমেন্ট (ক্রাউন সিমেন্ট) : চলতি হিসাববছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২ টাকা ৭০ পয়সা। গত বছর একই সময়ে কোম্পানিটির ইপিএস ছিল ২৯ পয়সা। আয় বেড়েছে ২ টাকা ৪১ পয়সা বা ৮৩১ শতাংশ। করোনার আগে এতো কম আয়ের কোম্পানি করনোর নেতিবাচক পরিস্থিতিতে মুনাফায় এতো বড় উল্লম্ফন কীভাবে সম্ভব?

এতো আলাদিনের চেরাগকেও হার মানায়। চলতি হিসাববছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে অর্থাৎ ৯ মাসে (জুলাই’২০-মার্চ’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ৪ টাকা ৭৩ পয়সা। অথচ করোনার আগে গত বছর একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান ছিল ১ টাকা ৬০ পয়সা। মুনাফায় এতো ফারাক মহামারির মধ্যে

কী কখনো সম্ভব: করোনার আগে কোম্পানিগুলো যেখানে মুনাফা দেখাতে হিমশিম খেয়েছে, সেখানে করোনার নেতিবাচক পরিস্থিতিতে কিভাবে এত বেশি আয় দেখিয়েছে। নিশ্চয়ই আর্থিক প্রতিবেদনে ঘাপলা আছে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহম্মেদ বলেন, করোনার পরিস্থিতির কারণে যেখানে প্রতিটি ব্যবসায় মন্দাবস্থা বিরাজ করছে, সেখানে কোম্পানি ৩টির এত বেশি মুনাফা অস্বাভাবিক বলে মনে হচ্ছে। আসলে এসব প্রতিবেদন স্বচ্ছ্ব কিনা তা খতিয়ে দেখা দরকার। কোম্পানিগুলো কি এমন যাদুর চেরাগ পেয়েছে যে, করোনার মধ্যেও তাদের ঘরে মুনাফার ঝলক নেমেছে।

বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি নবায়ন হচ্ছে ১০ বিদ্যুৎ কোম্পানির: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের খুলনা পাওয়ারসহ ১০টি কোম্পানির সঙ্গে শর্ত সাপেক্ষে সরকারের বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির (পিপিএ) মেয়াদ নবায়ন করা হচ্ছে। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অনুরোধে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের নির্দেশে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।

পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের এ সিদ্ধান্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সরকারের কাছে বিদ্যমান বিদ্যুৎ বিক্রির চুক্তি পুনরায় নবায়ন না হলে কোম্পানিগুলোর ব্যবসায়িক কার্যক্রমে বড় ধরনের প্রভাব পড়তো। ফলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতো কোম্পানিগুলো। যার ফলে ভুগতে হতো বিনিয়োগকারীদের।

সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের এমন সিদ্ধান্তে কোম্পানিগুলো নতুন জীবন পেতে যাচ্ছে। এই কোম্পানিগুলো হলো- ডেসকো, পাওয়ার গ্রিড, বারাকা পাওয়ার, ডরিন পাওয়ার, এনার্জিপ্যাক পাওয়ার, জিবিবি পাওয়ার, খুলনা পাওয়ার, শাহজিবাজার পাওয়ার, সামিট পাওয়ার ও ইউনাইটেড পাওয়ার কোম্পানি লিমিডেট।

সরকারের সঙ্গে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ১০টি কোম্পানির বিদ্যুৎ বিক্রির চুক্তির মেয়াদ নবায়নের জন্য বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব হাবিবুর রহমানের কাছে প্রস্তাব পাঠায় বিএসইসি। তবে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে তেমন গুরুত্ব মেলেনি। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।

এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউসের সঙ্গে আলোচনা করেন বিএসইসি চেয়ারম্যান। ওই আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে শর্ত সাপেক্ষে পুঁজিবাজারে জ্বালানি খাতের ১০টি কোম্পানি থেকে বিদ্যুৎ কিনবে সরকার। অর্থাৎ সরকার তার প্রয়োজন মতো কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে বিদ্যুৎ কিনবে। আর সেই অনুযায়ী টাকা পরিশোধ করবে।

এর আগে চুক্তির মেয়াদ অনুযায়ী অগ্রিম টাকা দিয়ে একবারে বিদ্যুৎ কিনতো সরকার। এখন সেই সিদ্ধান্তে বদল এসেছে। এখন প্রয়োজন মতো যতটুকু বিদুৎ কিনবে, ততটুকুর জন্য সরকার টাকা দেবে। আর ওই কোম্পানিগুলোর মধ্যে যেসব বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন সক্ষমতা বেশি রয়েছে, সেগুলোর সঙ্গে চুক্তি নবায়নের বিষয়টি অগ্রাধিকার পাবে বলে জানা গেছে।

এদিকে, গত ১৫ এপ্রিল বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগের সচিবের কাছে বিএসইসির পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, বিভিন্ন ধরনের পাওয়ার কোম্পানিসমূহ পুঁজিবাজার থেকে মূলধন সংগ্রহের মাধ্যমে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে।

এ সব কোম্পানিতে বাংলাদেশের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীসহ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ রয়েছে। এর মধ্যে খুলনা পাওয়ার কোম্পানির মালিকানাধীন দুটি কোম্পানি খুলনা পাওয়ার কোম্পানি ইউনিট-২ ও খানজাহান আলী পাওয়ার কোম্পানির সঙ্গে সরকার বা বিউবোর পিপিএ বাড়ানোর মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে। যার মেয়াদ পর্যায়ক্রমে চলতি বছরের ৩১ মে এবং ২৮ মে তারিখে শেষ হবে।

এ পরিস্থিতিতে খুলনা পাওয়ার কোম্পানিতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের অর্থ লভ্যাংশ থেকে এখন পর্যন্ত সম্পূর্ণ ফেরত আসেনি। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় এ কোম্পানির ভবিষ্যৎ সম্পর্কে কমিশন উদ্বিগ্ন। তাই খুলনা পাওয়ারসহ অন্যান্য তালিকাভুক্ত কোম্পানির পিপিএ চুক্তি বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে নবায়নের সুযোগ রয়েছে কি না, তা জানানোর জন্য অনুরোধ করেছে কমিশন। তবে এ বিষয়ে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) বা বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কোন কর্মকর্তা কিছু বলতে রাজি হননি।

চাঙা পুঁজিবাজারে তিন খাতের শেয়ার কেনার ধুম: হঠাৎ করে পুঁজিবাজারে শেয়ার বিক্রয়ের চেয়ে ক্রয়ের প্রবনতা বেশি লক্ষ্য করা গেছে। সম্প্রতি বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে তিন খাতের শেয়ার বিক্রয়ের চেয়ে ক্রয়ের প্রবনতা বেশি। মুলত নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রতি আস্থার ফলে নতুন ও পুরাতন বিনিয়োগকারীর সমন্বয়ে শক্তিশালী হচ্ছে পুঁজিবাজার।

বড় বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা শেয়ার ক্রয়ের দিকে ঝুঁকছেন। গত রোববার থেকে ব্যাংক-বীমা ও আর্থিক খাতের শেয়ারের দিকে একচেটিয়া ঝোঁক বিনিয়োগকারীদের। মুলত তিন কার্যদিবসে তিন খাতের নেতৃত্বে ভর করে পুঁজিবাজারে লেনদেন বেড়েছে।

এর মধ্যে দর সংশোধনে দুই দিন লেনদেন কিছুটা কমলেও আবার শেয়ার দর বাড়তে থাকায় লেনদেন বেড়েছে। এ দুদিন থেকেই বিপুল পরিমাণ শেয়ার কিনেছেন বিনিয়োগকারীরা। ঈদের পর দ্বিতীয়বারের মতো দুই হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই)। একই সঙ্গে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো বাড়ল ব্যাংক, বিমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার দর।

বিমা খাতের শেয়ারের দর বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা থাকলেও কোনোভাবেই থামানো যায়নি এ খাতের শেয়ারের দর বৃদ্ধি। তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলো অন্য খাতের তুলনায় ঈর্ষণীয় লভ্যাংশ দেয়ার পরও দর বৃদ্ধি না পাওয়ায় হতাশা ছিল বিনিয়োগকারীদের। সেই হতাশা এখন অনেকটাই কেটে গেছে ব্যাংকের শেয়ারের দর বৃদ্ধিতে। ইউনিটপ্রতি আয়ে এখনও লোভনীয় স্থানে মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলো। আর শেয়ারপ্রতি আয় প্রকাশে আগ্রহের তালিকায় পিছিয়ে নেই নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার।

মঙ্গলবার সব খাতের শেয়ারের দর বৃদ্ধিতে উৎফুল্ল ছিল বিনিয়োগকারীরা। মাঝে দুদিন মূল্য সংশোধনে সূচকের পতন হলেও ঢালাও শেয়ার বিক্রি করেননি বিনিয়োগকারীরা। আগে টানা সূচক বাড়ার পর বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক থাকত, এখন সূচকের পতন হবে। আর যখনই সূচকের পতন হতো, তখন টানা অব্যাহত থাকত সেই পতন। এমন অবস্থা থেকে বের হয়ে এখন বিনিয়োগকারীরা খাতওয়ারি বিনিয়োগে আগ্রহী হচ্ছেন। কোনো একটি খাত থেকে মুনাফার বিপরীতে শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়লেও সেদিনই অন্য একটি খাতের উত্থান হয়। ফলে সূচকে বড় ধরনের কোনো প্রভাব দেখা যায় না।

বিমার শেয়ার কেনার ধুম: তিন মাসের বেশি সময় ধরে চলছে পুঁজিবাজারে বিমার শেয়ার কেনার ধুম। ঈদের ছুটির আগে ও পরে চার কার্যদিবসে ঢালাওভাবে বিমার শেয়ারের দরপতন দেখা গেছে। কিন্তু তারপর আর এমন পতন দেখা যায়নি। দিনের সর্বোচ্চ দর বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানির তালিকায় থাকছে এ খাতের শেয়ার। ফলে বিমার শেয়ার কিনতে পিছুপা হচ্ছেন না বিনিয়োগকারীরা।

যদিও বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, বিমার শেয়ারের দর বৃদ্ধিতে যৌক্তিক কোনো কারণ নেই। বিমা কোম্পানির শেয়ারের দর যেভাবে বাড়ছে তার সঙ্গে পুরো বিমা খাতের আয়ের কোনো সম্পর্ক নেই। মঙ্গলবার লেনদেন শেষে দিনের সর্বোচ্চ দর বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানির তালিকায় ছিল ইস্টল্যান্ড ইন্স্যুরেন্স, যার শেয়ার প্রতি দর ৩৫ টাকা থেকে ১০ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৩৮ টাকা ৫০ পয়সা।

গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারের দরও বেড়েছে একই হারে। এদিন কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি দর ৪৯ টাকা থেকে ১০ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৫৩ টাকা ৯০ পয়সা। নর্দান ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর বেড়েছে ৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ। শেয়ার প্রতি দর ৫০ টাকা ১০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫৫ টাকা ১০ পয়সা।
গ্রিন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির শেয়ার প্রতি দর বেড়েছে ৯ দশমিক ৮৫ শতাংশ।

পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার প্রতি দর ১১৩ টাকা ১০ পয়সা থেকে ৯ দশমিক ৪৬ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ১২৩ টাকা ৮০ পয়সা। ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির শেয়ার প্রতি দর বেড়েছে ৭ দশমিক ৫৯ শতাংশ। রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স, প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে যথাক্রমে ৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ এবং ৬ দশমিক ৪৯ শতাংশ।

প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার প্রতি দর বেড়েছে ৬ দশমিক ১৭ মতাংশ। এ ছাড়া এদিন ফেডারেল ইন্স্যুরেন্স, পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ইসলামী ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর বেড়েছে পাঁচ শতাংশের বেশি।

ব্র্যাক ইপিএল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের সাবেক প্রধান গবেষণা কর্মকর্তা দেবব্রত কুমার সরকার বলেন, ‘শেয়ারের দর বাড়ছে এ জন্য সূচক বাড়ছে। শেয়ারের দর কমলে সূচক কমবে। কিন্তু এ দুটির মধ্যে প্রধান হচ্ছে লেনদেন কেমন হচ্ছে। যদি লেনদেন ঠিক থাকে তাহলে ধরে নিতে হবে পুঁজিবাজার সঠিক পথেই এগোচ্ছে।’ তিনি বলেন, খাতওয়ারী লেনদেনে ব্যাংক, নন ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান, মিউচ্যুয়াল ফান্ডের প্রধান্য বাড়ছে। এটিও পুঁজিবাজারের জন্য ভালো দিক।

ব্যাংক খাত: ব্যাংক খাতের কোম্পানি এবি ব্যাংক ২০২০ সালের জন্য তাদের শেয়ারধারীদের ৫ শতাংশ বোনাস ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। পাশাপাশি রাইট ইস্যুর মাধ্যমে প্রতি ৬টি শেয়ারের বিপরীতে একটি শেয়ার প্রদান করবে।

ব্যাংকটি এমন ঘোষণা করে গত ২৮ এপ্রিল। তখন কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি দর ছিল ৯ টাকা ৬০ পয়সা। রাইট ইস্যুতে প্রতিটি শেয়ারের অভিহিত মূল্য ধরা হয় ১০ টাকা। কিন্তু দ্বিধা ছিল যে, শেয়ারের মার্কেট প্রাইস ৯ টাকার কিছু বেশি সেটি ১০ টাকায় কীভাবে ইস্যু হবে। সে অবস্থা থেকে পুরোপুরে ঘুরে দাঁড়িয়েছে ব্যাংকটি। মঙ্গলবার দিনের সর্বোচ্চ দর বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানির তালিকায় ছিল এবি ব্যাংক।

আর গত ১৪ কার্যদিবসে ব্যাংকটির শেয়ার দর বেড়েছে ৩৫ শতাংশ। এ দিন ব্যাংকটির শেয়ার দর ১৩ টাকা থেকে ১০ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ১৪ টাকা ৩০ পয়সা। ২০২০ সালের জন্য তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলো তার শেয়ারধারীদের ভালো ডিভিডেন্ড দেয়ার পরও এ খাতের শেয়ারের কাঙ্খিত দর বৃদ্ধি না পাওয়ায় হতাশা ছিল বিনিয়োগকারীদের। এখন সেই হতাশা বড় ভরসায় টার্ন নিয়েছে।

মঙ্গলবার দর বৃদ্ধি পাওয়া ব্যাংক খাতের কোম্পানির মধ্যে ছিল এনআরবিসি ব্যাংক, যার শেয়ার প্রতি দর বেড়েছে ৯ দশমিক ১৭ শতাংশ। ওয়ান ব্যাংকের শেয়ার প্রতি দর বেড়েছে ৯ দশমিক ০১ শতাংশ। ইউসিবি ব্যাংকের শেয়ার প্রতি দর ১৬ টাকা ৯০ পয়সা থেকে ৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ১৮ টাকা ২০ পয়সা। ট্রাস্ট ব্যাংকের শেয়ার প্রতি দর বেড়েছে ৬ দশমিক ১৯ শতাংশ। আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার প্রতি দর বেড়েছে ৫ দশমিক ২৬ শতাংশ। সাউথ ইস্ট ব্যাংকের শেয়ার প্রতি দর বেড়েছে ৪ দশমিক ৭৩ শতাংশ।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান: মঙ্গলবার নন ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের জিএসপি ফিন্যান্সের শেয়ার প্রতি দর বেড়েছে ১০ শতাংশ বা দিনের সর্বোচ্চ। এ দিন প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার দর ১৯ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ২০ টাকা ৮০ পয়সা। ইসলামী ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের শেয়ার প্রতি দর বেড়েছে ৯ দশমিক ৪৭ শতাংশ।

মাইডাস ফিন্যান্সের শেয়ার প্রতি দর ২০ টাকা ৪০ পয়সা থেকে ৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ২২ টাকা ১০ পয়সা। তবে এখাতে আজ ভিন্ন চেহারায় ছিল ন্যাশনাল হাউজিং এন্ড ফাইন্যান্স। চাঙ্গা বাজারেও আজ কোম্পানিটির শেয়ার দরে ছিল নেতিবাচক প্রবণতা। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত কয়েকদিন যাবত ফাইন্যান্সের লেনদেনে নতুন গতি দেখা গেছে। ফাইন্যান্স খাতের শেয়ারে বড় বিনিয়োগকারীদের নজর পড়ায় এমনটি হচ্ছে বলে তারা মনে করছেন।

আর্থিক খাতে প্রথম প্রান্তিকে মুনাফায় চমক ৬ কোম্পানির: পুঁজিবাজারে গত কয়েক কার্যদিবস ধরে আর্থিক খাতে সুবাতাস বইছে। দীর্ঘদিন ধরে আর্থিক খাতের অনাগ্রহ থাকলেও হঠাৎ আর্থিক খাতের কোম্পানিগুলোর লভ্যাংশের চমকে এ খাতে আগ্রহ বাড়ছে। পাশাপাশি কোম্পানিগুলো প্রথম প্রান্তিকে মুনাফায় চমক দেখিয়েছে। কোম্পানিগুলোর প্রথম প্রান্তিকের এ ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী বছর লভ্যাংশ ও মুনাফায় চমক দেখাবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশোধন করা লভ্যাংশের মধ্যেই কোনো কোনো কোনো আর্থিক খাতের কোম্পানি সর্বোচ্চ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে।

এদিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ২৩টি নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এ পর্যন্ত ৭টি কোম্পানি চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের (জানুয়ারি-মার্চ’২১) আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এর মধ্যে ৬টি কোম্পানির মুনাফায় ঊর্ধ্বগতি রয়েছে। যদিও ১টি কোম্পানি মুনাফার ঊর্ধ্বগতি ধরে রাখতে পারেনি। মুনাফায় ঊর্ধ্বগতিতে থাকা ৬টি কোম্পানি হল: আইডিএলসি ফাইন্যান্স, ন্যাশনাল হাউজিং এন্ড ফাইন্যান্স, ডিবিএইচ, বিডি ফাইন্যান্স, আইপিডিসি ও ইসলামিক ফাইন্যান্স।

অন্যদিকে ইউনাইটেড ফাইন্যান্স মুনাফার প্রবৃদ্ধি দেখাতে পারেনি। কোম্পাগুলোর মধ্যে ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরে বেশি মুনাফা করেছে আইডিএলসি, ন্যাশনাল হাউজিং এন্ড ফাইন্যান্স, ডিবিএইচ, বিডি ফাইন্যান্স, আইপিডিসি ও ইসলামিক ফাইন্যান্স। তবে ইউনাইটেড ফাইন্যানেন্সের মুনাফা কমেছে।

কিন্তু মুনাফার প্রবৃদ্ধির থাকার পরও ন্যাশনাল হাউজিং এন্ড ফাইন্যান্স এবং বিডি ফাইন্যান্স এবছর আগের বছরের তুলনায় বেশি ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। ইসলামিক ফাইন্যান্স আগের বছরের সমপরিমাণ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছ। তবে আইডিএলসি ফাইন্যান্স, ডিবিএইচ ও আইপিডিসি আগের বছরের কম ডিভিডেন্ড দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন সার্কুলারের কারণে কোম্পানি ৩টি আগের বছরের থেকে কম ডিভিডেন্ড দিতে বাধ্য হয়েছে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বছরজুড়ে সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল আর্থিক খাত। অনিয়ম, দুর্নীতি আর অব্যবস্থাপনায় খাতটি নাজুক অবস্থায় রয়েছে। তারপর রয়েছে মহামারি করোনার ছোবল। এতদসত্বেও কোম্পানিগুলো সমাপ্ত অর্থবছরে এবং চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে মুনাফার প্রবৃদ্ধি দেখিয়েছে। এটি গোটা আর্থিক খাতের জন্য একটি ইতিবাচক দৃষ্টান্ত।

তাঁরা বলছেন, ব্যাংক ও আর্থিক খাতের কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন ব্যক্তি মালিকানাধীন কোম্পানিগুলোর ন্যায় খেয়াল খুশী মতো করা যায় না। আর্থিক খাতের কোম্পানিগুলোর প্রতিবেদনের উপর বাংলাদেশ ব্যাংকের কড়া নজর থাকে। যে কারণে ব্যাংক ও আর্থিক খাতের কোম্পানিগুলোর আর্থিক প্রতিবেদনে বিশ্বাসযোগ্যতা থাকে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আর্থিক খাতের এই কোম্পানিগুলো ভালো পারফরমেন্স দেখিয়ে পুঁজিাবাজারে আলো ছড়িয়েছে। এ খাতের কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর সর্বোচ্চ তলানিতে এসে নিভু নিভু করছিল। এমনি সময়ে কোম্পানিগুলোর ভালো পারফরমেন্সের খবরে খাতটি জেগে উঠেছে। খাতটির শেয়ারদর ও লেনদেনে ফের চাঙ্গাভাব দেখা দিয়েছে। যদিও অন্যান্য খাতের তুলানায় আর্থিক খাতের শেয়ারদর এখনো অনেক পিছিয়ে আছে। এখাতের বেশিরভাগ শেয়ার এখনো নিরাপদ বিনিয়োগ উপযোগি অবস্থায় পড়ে রয়েছে।

প্রথম প্রান্তিকে কার কত ইপিএস: চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে ডিবিএইচ-এর শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ২ টাকা ১ পয়সা, আইডিএলসির ১ টাকা ২৫ পয়সা, ন্যশনাল হাউজিং এন্ড ফাইন্যান্সের ৭২ পয়সা, আইপিডিসির ৫৫ পয়সা, বিডি ফাইন্যান্সের ৫০ পয়সা, ইসলামিক ফাইন্যান্সের ৪১ পয়সা এবং ইউনাইটেড ফাইন্যান্সের ১২ পয়সা।

আগের বছরের প্রথম প্রান্তিকে ডিবিএইচ-এর ইপিএস ছিল ১ টাকা ৬৮ পয়সা, আইডিএলসির ৭৮ পয়সা, ন্যশনাল হাউজিং এন্ড ফাইন্যান্সের ৪৮ পয়সা, আইপিডিসির ৪০ পয়সা, বিডি ফাইন্যান্সের ৩৫ পয়সা, ইসলামিক ফাইন্যান্সের ৩৮ পয়সা এবং ইউনাইটেড ফাইন্যান্সের ১৬ পয়সা। প্রথম প্রান্তিকে মুনাফায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে আইডিএলসির ৬০.২৫ শতাংশ, ন্যশনাল হাউজিং এন্ড ফাইন্যান্সের ৫০ শতাংশ, বিডি ফাইন্যান্সের ৪২.৮৫ শতাংশ, ডিবিএইচ-এর ১৯.৬৪ শতাংশ, আইপিডিসির ১৪.৬০ শতাংশ এবং ইসলামিক ফাইন্যান্সের ৭.৮৯ শতাংশ। তবে ইউনাইটেড ফাইন্যান্সের মুনাফা কমেছে ২৫ শতাংশ।

২০২০ সালে কার কত ইপিএস: ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০ অর্থবছরে আইডিএলসির ইপিএস হয়েছে ৬ টাকা ৭৪ পয়সা, ডিবিএইচ-এর ৫ টাকা ৭৮ পয়সা, ন্যশনাল হাউজিং এন্ড ফাইন্যান্সের ২ টাকা ৭৫ পয়সা, আইপিডিসির ১ টাকা ৯০ পয়সা, বিডি ফাইন্যান্সের ১ টাকা ৮০ পয়সা, ইসলামিক ফাইন্যান্সের ১ টাকা ৫৪ পয়সা এবং ইউনাইটেড ফাইন্যান্সের ১ টাকা ১৩ পয়সা।

আগের বছর আইডিএলসির ইপিএস ছিল ৪ টাকা ৫১ পয়সা, ডিবিএইচ-এর ৮ টাকা ০৪ পয়সা, ন্যশনাল হাউজিং এন্ড ফাইন্যান্সের ২ টাকা ২ পয়সা, আইপিডিসির ১ টাকা ৮২ পয়সা, বিডি ফাইন্যান্সের ১ টাকা ১২ পয়সা, ইসলামিক ফাইন্যান্সের ১ টাকা ৩৯ পয়সা এবং ইউনাইটেড ফাইন্যান্সের ১ টাকা ৩১ পয়সা। মুনাফায় প্রবৃদ্ধি ছিল বিডি ফাইন্যান্সের ৬০.৭১ শতাংশ,

আইডিএলসির ৪৯.৪৪ শতাংশ, ন্যশনাল হাউজিং এন্ড ফাইন্যান্সের ৩৬.১৪ শতাংশ, আইপিডিসির ৪.৩৯ শতাংশ এবং ইসলামিক ফাইন্যান্সের ১০.৭৯ শতাংশ। অন্যদিকে, ডিবিএইচ-এর মুনাফা কমেছে ২৮.৪৮ শতাংশ এবং ইউনাইটেড ফাইন্যান্সের মুনাফা কমেছে ১৩.৭৪ শতাংশ।

সমাপ্ত অর্থবছর কে কত ডিভিডেন্ড দিল: ডিবিএইচ ডিভিডেন্ড দিয়েছে ১৫ শতাংশ ক্যাশ ও ১৫ শতাংশ স্টক, আইডিএলসি ১৫ শতাংশ ক্যাশ ও ৫ শতাংশ স্টক, ন্যশনাল হাউজিং এন্ড ফাইন্যান্স ১৫ শতাংশ ক্যাশ, আইপিডিসি ১২ শতাংশ ক্যাশ, বিডি ফাইন্যান্স ৬ শতাংশ ক্যাশ ও ৬ শতাংশ স্টক, ইসলামিক ফাইন্যান্স ১০ শতাংশ ক্যাশ ও ইউনাইটেড ফাইন্যান্স ১০ শতাংশ ক্যাশ।

আগের বছর ডিবিএইচ ডিভিডেন্ড দিয়েছিল ২০ শতাংশ ক্যাশ ও ১৫ শতাংশ স্টক, আইডিএলসি ৩৫ শতাংশ ক্যাশ, ন্যশনাল হাউজিং এন্ড ফাইন্যান্স ১০ শতাংশ ক্যাশ, আইপিডিসি ১০ শতাংশ ক্যাশ ৫ শতাংশ স্টক, বিডি ফাইন্যান্স ১০ শতাংশ ক্যাশ, ইসলামিক ফাইন্যান্স ১০ শতাংশ ক্যাশ ও ইউনাইটেড ফাইন্যান্স ১০ শতাংশ ক্যাশ।

এবছর ডিভিডেন্ড বেড়েছে ন্যশনাল হাউজিং এন্ড ফাইন্যানন্সের ৫০ শতাংশ এবং বিডি ফাইন্যান্সের ২০ শতাংশ। অন্যদিকে, ডিভিন্ডে কমেছে ডিবিএইচ-এর ১৪.২৮ শতাংশ, আইডিএলসি ৪২.৮৫ শতাংশ এবং আইপিডিসির ২০ শতাংশ। ডিভিডেন্ড অপরিবর্তিত রয়েছে ইসলামিক ফাইন্যান্সের ও ইউনাইটেড ফাইন্যান্সের।

এদিকে, লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্সও সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। যদিও কোম্পানিটি চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের ইপিএস এখনো প্রকাশ করেনি। সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ১ টাক ৮১ পয়সা। যা আগের বছর ছিল ৯৮ পয়সা। এবছর কোম্পানিটি ডিভিডেন্ড দিয়েছে ১২ শতাংশ ক্যাশ। যা আগের বছর ছিল ৭ শতাংশ ক্যাশ ও ৫ শতাংশ স্টক।