দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা:গত বছর ২৭ মার্চ থেকে করোনার মহামারীর কারণে সারাদেশে সর্বাত্বক লকডাউন ঘোষণা করা হয়। লকডাউনের কারণে বন্ধ থাকে সব রকম ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং শিল্পকারখানা। মহামারী করোনার কারণে আন্তর্জাতিক অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। ব্যবসা বাণিজ্যে এক ধরণের স্থবিরতা নেমে আসে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো বেতন কমানোসহ কর্মী ছাঁটাই পর্যন্ত করতে বাধ্য হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে কনফিডেন্ট সিমেন্ট মুনাফার ঊর্ধ্বগতি বিনিয়োগকারীদের বিস্মিত করেছে।

জানা যায়, চলতি অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৭ টাকা ৮০ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে কোম্পানিটির ইপিএস ছিল ২ টাকা ৫ পয়সা। অন্যদিকে চলতি হিসাববছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জুলাই’২০-মার্চ’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ১৪ টাকা ১৬ পয়সা। গত বছর একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় ছিল ৬ টাকা ২৫ পয়সা।

গত বছরের ২৭ মার্চের আগে সব কিছুই স্বাভাবিক থাকা সত্বেও ওই সময় কোম্পানিটির আয় ছিল ২ টাকা ৫ পয়সা। সেখানে কিভাবে করোনার মধ্যে ৭ টাকা ৮০ পয়সা হয়। অর্থাৎ আগের বছরের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি আয় দেখানো হয়েছে। এছাড়া ৯ মাসের হিসাব অনুযায়ী গত বছরের তুলনায় কোম্পানিটির আয় বেড়েছে দিগুণেরও বেশি।

যখন দেশে রিয়েল এস্টেট কোম্পানিগুলোর ব্যবসা চাঙ্গা থাকে, তখন সিমেন্ট শিল্পের অবস্থাও রমরমা থাকে। কারণ হাউজ ডেভেলপার কোম্পানির উপর নির্ভর করে সিমেন্ট শিল্পের লাভ লোকসান।

করোনার কারণে দেশের অধিকাংশ হাউজ ডেভেলপার কোম্পানির কাজ প্রায় বন্ধ। এমতাবস্থায় কনফিডেন্ট সিমেন্টের অস্বাভাবিক মুনাফায় অবাক হওয়ারই কথা। এ আয় যদি করোনার আগে দেখানো হতো, তবে এটাকে স্বাভাবিক বলে ধরে নেয়া হতো। বর্তমান পরিস্থিতিতে এমন আয় সত্যিই বিস্ময়কর এবং সন্দেহজনক বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টসহ বিনিয়োগকারীরা।

পুঁজিবাজারে লুটপাট করতে আসছে সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স: প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে উত্তোলিত ফান্ড অপব্যবহারে জরিমানার কবলে পড়া ড্রাগণ সোয়েটার পরিচালকদের সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স এবার পুঁজিবাজার থেকে টাকা সংগ্রহ করতে যাচ্ছে। মুলত পুঁজিবাজারের টাকা নিয়ে ব্যবসা করা মুখ্য উদ্দেশ্য নয়, বরং লুটপাট করা টার্গেট। এছাড়া বীমা কোম্পানিটিতে রয়েছে আইপিও ফান্ড প্রাপ্তির পরে ব্যবসায় নিম্নমূখী হওয়া গোল্ডেন হার্ভেষ্ট অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ রাজিব সামদানি। যে কোম্পানিটির জন্য ঋণ পরিশোধের লক্ষ্যে শেয়ারবাজার থেকে দুই দফায় অর্থ সংগ্রহ করে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে।

শেয়ারবাজার থেকে সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স ১৯ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে। এলক্ষ্যে আগামি ৩০ মে থেকে ৩ জুন পর্যন্ত আইপিওতে আবেদনের সময় নির্ধারন করে দেওয়া হয়েছে। এর আগে ২০১৬ সালে সোনালী লাইফের পরিচালক ও উদ্যোক্তারা শেয়ারবাজারে আনে ড্রাগণ সোয়েটার। এই কোম্পানিটি শেয়ারবাজার থেকে ওইবছর ৪০ কোটি টাকা সংগ্রহ করে। যা ব্যবহারে অনিয়মের কারনে কোম্পানিটির প্রত্যেক পরিচালককে ৫ লাখ টাকা করে জরিমানা করে কমিশন। যে কোম্পানিটি নিয়ে কিছুদিন আগে শ্রমিক অসন্তোষ এবং আন্দোলন হয়েছে।

অপরদিকে ২০১৩ সালে উচ্চ দরে (প্রতিটি শেয়ার ২৫ টাকা) শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে ৭৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করে সোনালী লাইফের পরিচালক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ রাজিব সামদানির গোল্ডেন হার্ভেষ্ট অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ। ব্যবসায় উন্নতি করতে এই টাকা নিলেও ক্রমানয়ে তলানিতে কোম্পানিটি। যাতে আইপিওতে ২৫ টাকা ইস্যু মূল্যের শেয়ারটি এখন ১৪.৬০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।

দফায় দফায় ঋণ পরিশোধ করতে শেয়ারবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ করা এই গোল্ডেন হার্ভেষ্ট থেকে পরিচালকদের ব্যক্তিগত কোম্পানিতে নিয়মিত বিনাসুদে অর্থ সরবরাহ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রকৃতপক্ষে সুদের উপর ঋণ নিয়ে পরিচালকদের ব্যক্তিগত কোম্পানি বিনাসুদে ঋণ দেওয়া হয়েছে। যে কারনে পরিচালকদের কোম্পানির সুদজনিত ব্যয় না হলেও তালিকাভুক্ত গোল্ডেন হার্ভেষ্টের হয়েছে। যার দায়ভার বহন করতে হচ্ছে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির সকল শেয়ারহোল্ডারদেরকে।

গোল্ডেন হার্ভেষ্ট শেয়ারবাজার থেকে প্রথম দফায় ২০১৩ সালে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) অর্থ সংগ্রহ করে। আর দ্বিতীয় দফায় ২০১৯ সালে রাইট শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করে। এই অর্থ সংগ্রহের ১ বছর পার না হতেই কোম্পানিটির পর্ষদ ২০১৯-২০ অর্থবছরের ব্যবসায় শেয়ারহোল্ডারদের কোন লভ্যাংশ না দেওয়ার ঘোষণা দেয়। এ বিষয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড কমিশন (বিএসইসি) ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠিও দেয়।

ড্রাগণ সোয়েটার ও গোল্ডেন হার্ভেস্টের এমন ব্যর্থতার পরেও কোম্পানি দুটির পরিচালকদের সোনালী লাইফকে শেয়ারবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই কোম্পানিটির উদ্যোক্তা হিসেবে রয়েছেন ড্রাগণ সোয়েটার অ্যান্ড স্পিনিংয়ের পরিচালক সাফিয়া সোবহান চৌধুরী, ফৌজিয়া কামরুন তানিয়া ও গোল্ডেন হার্ভেষ্ট অ্যাগ্রোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ রাজিব সামদানি।

এছাড়া শেয়ারহোল্ডার হিসেবে রয়েছেন ড্রাগন সোয়েটারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস, চেয়ারম্যান মোস্তফা কামরুস সোবহান ও পরিচালক তাসনিয়া কামরুন অনিকা। এমনকি ড্রাগণ সোয়েটারের পরিচালক তাসনিয়া কামরুন অনিকার স্বামী মীর রাশেদ বিন আমান সোনালি লাইফের প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

এমনকি সোনালী লাইফের হেড অফিস ড্রাগণ সোয়েটারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের মালিবাগের ভবনে। যার ৮৩০০ স্কয়ার ফিটের অফিসের ভাড়া গুণতে হয় মাসিক ৪০ লাখ ৫৬ হাজার ৫০০ টাকা।

শেয়ারবাজার থেকে টাকা সংগ্রহ করতে যাওয়া সোনালী লাইফে শেয়ারধারনেও এগিয়ে রয়েছে ড্রাগণ সোয়েটারের পরিচালকেরা। বীমা কোম্পানিটিতে ড্রাগণ সোয়েটারের ফৌজিয়া কামরুন তানিয়ার শেয়ারধারন রয়েছে ৯.৯৪ শতাংশ। এছাড়া মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের ৯.৪০ শতাংশ, সাফিয়া সোবহান চৌধুরীরর ৭.৪৭ শতাংশ, তাসনিয়া কামরুন অনিকার ৪.২১ শতাংশ, আহমেদ রাজীব সামদানির ৩.৬১ শতাংশ ও মোস্তফা কামরুস সোবহানের ১.০৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও কোম্পানির সচিবের সাথে বার বার টেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব নয়। তবে কোম্পানির সচিব একবার ফোন রিসিভ করলেও বলেন যা বলার থাকে ইমেল করেন। কিন্তু ইমেইলে কোন মতামত পাওয়া যায়নি।

ইউনিয়ন ক্যাপিটালের ‘নো ডিভিডেন্ড’ ও প্রথম প্রান্তিক প্রকাশ: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠান ইউনিয়ন ক্যাপিটাল লিমিটেড ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য ‘নো ডিভিডেন্ড’ ঘোষণা করেছে। কোম্পানি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটির সমন্বিত শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ৩ টাকা ৮ পয়সা।

আগের বছর সমন্বিতভাবে শেয়ার প্রতি লোকসান ছিল ৬ টাকা ১৩ পয়সা। সর্বশেষ বছরে এককভাবে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ২ টাকা ৮৯ পয়সা। আগের বছর সমন্বিতভাবে শেয়ার প্রতি লোকসান ছিল ৫ টাকা ৭৩ পয়সা।

এদিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠান ইউনিয়ন ক্যাপিটাল লিমিটেড গত ৩১ মার্চ, ২০২১ পর্যন্ত প্রথম প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে । আজ রোববার (৩০ মে) অনুষ্ঠিত কোম্পানির বোর্ড সভায় অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদন করা হয়।কোম্পানি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

জানা যায, প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি’২১-মাচ’২১) কোম্পানিটির সমন্বিত শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ৫৯ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১৩ পয়সা। অন্যদিকে, আলোচিত প্রান্তিকে এককভাবে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ৭২ পয়সা, যা আগের বছর ্একই সময়ে ছিল ৬ পয়সা। গত ৩১ মার্চ, ২০২১ তারিখে সমন্বিতভাবে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ৩ টাকা ৫৪ পয়সা।

৯ কোম্পানি স্মলক্যাপ প্লাটফর্মে ১১০ কোটি টাকা তুলতে চায়: দেশের স্বল্প মূলধনী কোম্পানিগুলোকে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। সম্প্রতি নিয়ালকো অ্যালয়সকে কোয়ালিফাইড ইনভেস্টর অফারের (কিউআইও) মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহের মাধ্যমে শেয়ারবাজারের স্মলক্যাপ প্লাটফর্মে (এসএমই বোর্ড) তালিকাভুক্তর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া, প্লাটফর্মটিতে তালিকাভুক্তির প্রক্রিয়ার জন্য পাইপলাইনে রয়েছে আরও ৯ কোম্পানি। কোম্পানিগুলো তালিকাভুক্তির অনুমোদন পেলেই কিউআইওর মাধ্যমে ১১০ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে। স্মলক্যাপ প্লাটফর্মে তালিকাভুক্তির জন্য পাইপলাইনে থাকা কোম্পানিগুলো হলো, সুব্রা সিস্টেমস, মাস্টার ফিড এগ্রোটেক, অরিজা এগ্রো, মোস্তফা মেটালস, মামুন এগ্রো ও কৃষি বিড সিড।

এসব কোম্পানিগুলো শেয়ারবাজারের মূল মার্কেটে তালিকাভুক্তর জন্য বিএসইসির কাছে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) আবেদন করেছিল। তবে বিভিন্ন কারণে কোম্পানিগুলো আইপিওতে আসতে না পেরে কিউআইওর মাধ্যমে স্মলক্যাপ প্লাটফর্মে আবেদন করেছে।

এছাড়া এগ্রো অর্গানিকা, আসিয়া সি ফুড ও বিডি পেইন্টস কিউআইওর মাধ্যমে স্মলক্যাপ প্লাটফর্মে তালিকাভুক্তির জন্য সংশ্লিষ্ট বিধিমালার কিছু বিধি থেকে অব্যাহতি চেয়ে বিএসইসির কাছে আবেদন করেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সার্বিক দিক বিবেচনা করে কোম্পানিগুলোকে স্মলক্যাপে তালিকাভুক্তি অনুমোদন দেবে বিএসইসি।

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, কিউআইওর মাধ্যমে সুব্রা সিস্টেমস শেয়ারবাজার থেকে ১২ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে। এ জন্য কোম্পানিটি ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে ১ কোটি ২০ লাখ শেয়ার ছাড়বে।

মাস্টার ফিড অ্যাগ্রোটেক শেয়ারবাজার থেকে ১০ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে। এ জন্য কোম্পানিটি ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে ১ কোটি শেয়ার ছাড়বে।ওরিজা অ্যাগ্রো শেয়ারবাজার থেকে ১০ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে। এ জন্য কোম্পানিটি ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে ১ কোটি শেয়ার ছাড়বে।

মোস্তফা মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ শেয়ারবাজার থেকে ১১ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে। ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে ১ কোটি ১০ লাখ শেয়ার ছেড়ে কোম্পানিটি এই অর্থ সংগ্রহ করবে। মামুন এগ্রো শেয়ারবাজার থেকে ১০ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে। ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে ১ কোটি শেয়ার ছেড়ে কোম্পানিটি এই অর্থ সংগ্রহ করবে।

কৃষি বিড ফিড শেয়ারবাজার থেকে ২২ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে। ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে ২ কোটি ২০ লাখ শেয়ার ছেড়ে কোম্পানিটি এই অর্থ সংগ্রহ করবে। এগ্রো অর্গানিকা শেয়ারবাজার থেকে ১০ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে। ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে ১ কোটি শেয়ার ছেড়ে কোম্পানিটি এই অর্থ সংগ্রহ করবে।

আসিয়া শেয়ারবাজার থেকে ১৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে। ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে ১ কোটি ৫০ লাখ শেয়ার ছেড়ে কোম্পানিটি এই অর্থ সংগ্রহ করবে। বিডি পেইন্টস শেয়ারবাজার থেকে ১০ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে। ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে ১ কোটি শেয়ার ছেড়ে কোম্পানিটি এই অর্থ সংগ্রহ করবে।

তথ্য মতে, ২০১৬ সালে তৎকালীন বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম খায়রুল হোসেনের নেতৃত্বে স্মলক্যাপ প্লাটফর্ম বা বোর্ড গঠনে এ সংক্রান্ত ‘কোয়ালিফাইড ইনভেস্টর অফার বাই স্মল ক্যাপিটাল কোম্পানিজ রুলস’ প্রণয়ন করা হয়। পরবর্তীতে ২০২০ সালে ২৯ এপ্রিল বিধিমালাটি পুনরায় সংশোধন করে চূড়ান্ত করা হয়।

চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল ওই বিধিমালার আলোকে স্মলক্যাপ প্লাটফর্মের জন্য প্রথমবারের মতো নতুন কোম্পানি হিসেবে নিয়ালকো অ্যালয়সকে তালিকাভুক্তির অনুমোদন দিয়েছে বর্তমান বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নেতৃত্বাধীন কমিশন।

এদিকে, প্রথমবারের মতো দেশের শেয়ারবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহকারী স্মলক্যাপ কোম্পানি হিসেবে নিয়ালকো অ্যালয়সের কিউআইওতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের প্রায় ১৮ গুণ আবেদন জমা পড়েছে। গত ১৬ থেকে ২০ মে পর্যন্ত কোম্পানিটির কিউআইওতে আবেদন গ্রহণ করা হয়। কোম্পানিটির ৭ কোটি ৫০ লাখ টাকার চাহিদার বিপরীতে ১৩৪ কোটি ৩৯ লাখ টাকার আবেদন জমা পড়েছে, যা ১৭.৯১ গুণ বেশি। এর ফলে স্মলক্যাপ কোম্পানির কিউআইওতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি স্মলক্যাপ প্লাটফর্মে তালিকাভুক্তির প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে কর্ণফুলী মাস্টারব্যাচ অ্যান্ড প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজ (কেএমপিআই), এশিয়াটিক এ্যালুমিনিয়াম ও মিরা অ্যাগ্রো ইনপুটস ইস্যু ব্যবস্থাপকের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এছাড়া, স্মলক্যাপ প্লাটফর্মে তালিকাভুক্ত হতে আগ্রহ রয়েছে দেশীয় ১২ কোম্পানির। ইতিমধ্যে কোম্পানিগুলো গত ২ মার্চ শেয়ারবাজারের নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিএসইসির সঙ্গে বৈঠক করেছে।

কোম্পানিগুলো হলো, সেবা ডট এক্সওয়াইজেড, চালডাল, যান্ত্রিক, ল্যান্ডনক, হ্যালো টাস্ক, বনডেস্টিন টেকনোলোজিস, ব্রোইনস্টেশন২৩, ই-কুরিয়ার, কাশ ফুড, সেমড, ডিভাইন আইটি ও এনানোভাস আইটি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘কোয়ালিফাইড ইনভেস্টস অফারিংয়ের জন্য বেশ কিছু কোম্পানির আবেদন জমা পড়েছে। আরও কিছু আবেদন জমা পড়ার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এছাড়া, কিছু কোম্পানি কিউআইওর কিছু শর্ত থেবে অব্যাহতির জন্য আবেদন করেছে।’

এদিকে, স্মলক্যাপ প্ল্যাটফর্মের প্রথম কোম্পানি হিসেবে অনুমোদন পাওয়া নিয়ালকো অ্যালয়সের পরামর্শক মো. আজিজ উদ্দিন বলেন, ‘স্মলক্যাপ প্লাটফর্ম সম্ভাবময়ী প্রোডাক্ট। এ প্লাটফর্মে নিয়ালকো অ্যালয়স তালিকাভুক্ত হয়ে ইতিহাস গড়তে যাচ্ছে। কোম্পানিটির কিউআইওতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের প্রায় ১৮ গুণ আবেদন পড়েছে। করোনা পরিস্থিতি না থাকলে এ আবেদন আরও অনেক গুণ বেশি পড়তো। মেটাল রপ্তানিকারক নিয়ালকো অ্যালয়সের সুনামের কারণে কিউআইওতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের যথেষ্ট আগ্রহ লক্ষ্য করা গেছে।

স্টক অ্যান্ড বন্ডের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করার সিদ্ধান্ত: ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্য প্রতিষ্ঠান ফারইস্ট স্টক অ্যান্ড বন্ডের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্রান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

আজ রোববার (৩০ মে) অনুষ্ঠিত বিএসইসির ৭৭৫তম কমিশন বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বিএসইসি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, কমিশনের দেয়া নির্দেশনা পরিপালনে ব্যর্থতা, পুঁজিবাজারের শৃঙ্খলা রক্ষা এবং বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে দ্যা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন অর্ডন্যান্স, ১৯৬৯ এর সেকশন ২০-এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে কমিশন পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

পাঁচ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ভিন্ন ভিন্ন খাতের ৯ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন ও ১ কোম্পানির লভ্যাংশ ঘোষনা করবে। এর মধ্যে দেশ প্রতিক্ষণের পাঠকদের জন্য পাঁচ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হলো: কোম্পানিগুলো হলো: কনফিডেন্স সিমেন্ট, তাওফিকা ফুডস ও হাওয়েল টেক্সটাইলস।

কনফিডেন্স সিমেন্ট: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সিমেন্ট খাতের কোম্পানি কনফিডেন্স সিমেন্ট লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ তৃতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। কোম্পানি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি -মার্চ’২১) কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৭ টাকা ৮০ পয়সা। গত অর্থবছরের একই সময়ে শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) ছিল ২ টাকা ২৫ পয়সা।

এদিকে গত ৯ মাসে (জুলাই,২০২০ -মার্চ’২০২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১৪ টাকা ১৬ পয়সা। গত অর্থবছরের একই সময়ে শেয়ার প্রতি আয় ছিল (ইপিএস) ৬ টাকা ২৫ পয়সা। একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদ (এনএভি) হয়েছে ৭৪ টাকা ৪৬ পয়সা।

তাওফিকা ফুডস: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের কোম্পানি লাভেলো ব্র্যান্ডের আইসক্রিম বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান তাওফিকা ফুডস এন্ড এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড চলতি অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিকের (জানুয়ারী-মার্চ’২১) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। কোম্পানি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। আজ রোববার (৩০ মে) অনুষ্ঠিত কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের সভায় চলতি অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিকের (জানুয়ারী-মার্চ’২১) আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদন করা হয়।

তৃতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ১ কোটি ৯২ লাখ ৩৯ হাজার ৬৩৫ টাকা, যা আগের বছর একই সময় ছিল ৭৫ লাখ ৬৪ হাজার ২৬২ টাকা। সে হিসাবে কোম্পানিটির মুনাফা বেড়েছে ১ কোটি ১৬ লাখ ৭৫ হাজার ৩৭২ টাকা বা ১৫৪ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২৬ পয়সা, যা আগের বছর একই সময় ছিল ১৪ পয়সা। শেয়ার প্রতি আয় বেড়েছে ৮৫.৭১ শতাংশ।

অন্যদিকে চলতি হিসাব বছরের নয় মাসে (জুলাই’২০-মার্চ’২১) কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ৪ কোটি ৬৬ লাখ ৩৫ হাজার ১০ টাকা, যা আগের বছর একই সময় ছিল ৩ কোটি ৯৬ লাখ ৫০ হাজার ৫০৮ টাকা। সে হিসাবে আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির মুনাফা বেড়েছে ৬৯ লাখ ৮৪ হাজার ৫০১ টাকা বা ১৭ দশমিক ৬২ শতাংশ।

নয় মাসে কোম্পানটির ইপিএস হয়েছে ৭৬ পয়সা, যা আগের বছর একই সময় ছিল ৭২ পয়সা। ৩১ মার্চ ২০২১ শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১২ টাকা ০৫ পয়সা।

হাওয়েল টেক্সটাইলস: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পানি হাওয়েল টেক্সটাইলস লিমিটেড ৩১ মার্চ, ২০২১ সমাপ্ত তৃতীয় প্রান্তিকের (জানুয়ারি-মার্চ’২১) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। কোম্পানি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৬১ পয়সা। গত বছর একই সময়ে কোম্পানিটির ইপিএস ছিল ৪৮ পয়সা। অন্যদিকে চলতি হিসাববছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জুলাই’২০-মার্চ’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ১ টাকা ৯১ পয়সা। গত বছর একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় ছিল ১ টাকা ৯০ পয়সা।

আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি ক্যাশ ফ্লো ছিল ৪ টাকা ৮২ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে তা ছিল ৫ টাকা ৪৪ পয়সা। ৩১ মার্চ, ২০২১ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) হয়েছে ৩০ টাকা ৪৫ পয়সা।

কেয়া কসমেটিকসের মালিকানা পরিবর্তন নিয়ে নানা গুঞ্জন: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানি কেয়া কসমেটিকস মালিকানা পরিবর্তন নিয়ে বাজারে নানা গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ছে। আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে না কেয়া কসমেটিকস, বাজারে নানা গুঞ্জন এক এক করে তিন প্রান্তিক পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত চলতি হিসাব বছরের (২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুন) কোনো প্রান্তিকের আর্থিক তথ্য প্রকাশ করেনি।

ফলে কোম্পানিটির আর্থিক চিত্র নিয়ে এক প্রকার অন্ধকারে রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। এর মধ্যেই শেয়ারবাজারে গুঞ্জন ছড়িয়েছে কোম্পানিটির মালিকানা পরিবর্তন হতে পারে। এর সঙ্গে আরও গুঞ্জন ছড়িয়েছে চলতি হিসাব বছরের ব্যবসায় কোম্পানিটি ভালো মুনাফা করেছে।

কী কারণে কোম্পানিটির মুনাফা বাড়তে পারে, সে বিষয়েও একটি গুঞ্জন ছড়িয়েছে শেয়ারবাজারে। এ ক্ষেত্রে বলা হচ্ছে, কেয়া কসমেটিকস ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানি হিসেবে তালিকাভুক্ত হলেও প্রতিষ্ঠানটির ব্যবসার বড় অংশ টেক্সটাইল (বস্ত্র) সংশ্লিষ্ট। সম্প্রতি টেক্সটাইল খাতের যেসব প্রতিষ্ঠান আর্থিক তথ্য প্রকাশ করেছে, তার বেশিরভাগের মুনাফা বেড়েছে।

বাজারে ছড়ানো গুঞ্জনের বিষয়ে কেয়া কসমেটিকস’র দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের সুস্পষ্ট কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। কোম্পানিটির সচিব মো. নূর হুসাইন জাগো নিউজকে জানিয়েছেন, শিগগিরই চলতি হিসাব বছরের তিন প্রান্তিকের (২০২০ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত) আর্থিক প্রতিবেদন একসঙ্গে প্রকাশ করা হবে।

২০০১ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত এই কোম্পানিটির শেয়ারের বড় অংশই রয়েছে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের হাতে। কোম্পানিটির মোট শেয়ারের ৪৬ দশমিক ২৭ শতাংশই রয়েছে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে। বাকি শেয়ারের মধ্যে ৪৫ দশমিক ৪২ শতাংশ রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে আছে ৮ দশমিক ৩১ শতাংশ।

তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, এপ্রিল মাসে কোম্পানিটির বেশকিছু শেয়ার কিনেছেন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। মার্চে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে কোম্পানিটির ৭ দশমিক ৫৮ শতাংশ শেয়ার ছিল। অর্থাৎ এপ্রিলে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা কোম্পানিটির প্রায় ১ শতাংশ শেয়ার কিনেছেন। প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বাড়ার বিপরীতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ার সংখ্যা কমেছে। মার্চে কোম্পানিটির ৪৬ দশমিক ১৫ শতাংশ শেয়ার ছিল সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে। উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের শেয়ারের পরিমাণ অপরিবর্তিত রয়েছে।

কোম্পানিটির লভ্যাংশের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০২০ সালে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের ১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়। ২০১৯ সালে কোনো লভ্যাংশ দেয়নি। তার আগে ২০১৮ সালে ১০ শতাংশ, ২০১৭ সালে ২০, ২০১৬ সালে ১৮, ২০১৫ ও ২০১৪ সালে ২০ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দেয় কোম্পানিটি। এদিকে মালিকানা পরিবর্তন ও মুনাফা বাড়তে পারে এমন গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ায় বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ সম্প্রতি নতুন করে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার কিনেছে। প্রকৃত অবস্থা কী, তা নিয়ে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রয়েছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। কারণ কেয়া কসমেটিকসের পক্ষ থেকে কোনো বিষয়েই তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।

এ বিষয়ে একটি ব্রোকারেজ হাউসের লেনদেন কার্যক্রম পরিচালনা করা এক কর্মকর্তা জানান, ওষুধ ও রসায়ন খাতের প্রতিষ্ঠান হলেও কেয়া কসমেটিকসের ব্যবসার বড় অংশ টেক্সটাইল সংশ্লিষ্ট। সম্প্রতি টেক্সটাইল খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো ভালো মুনাফা করেছে। যে কারণে কেয়া কসমেটিকসের মুনাফা বাড়তে পারে বলে একটি গোষ্ঠী বাজারে গুঞ্জন ছড়িয়েছে। এর সঙ্গে মালিকানা পরিবর্তনের গুঞ্জনও ছাড়িয়েছে বাজারে। এসব কারণে বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ হঠাৎ করেই কোম্পানিটির শেয়ার কিনছে।

তিনি বলেন, ‘বিনিয়োগকারীরা কোম্পানিটির শেয়ার কিনলেও সবাই অন্ধকারে রয়েছেন। কারণ কেয়া কসমেটিকস এখন পর্যন্ত চলতি বছরের তিন প্রান্তিকের কোনো প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে শেয়ারবাজারের নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) উচিত কোম্পানিটি কেন আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে না- তা দ্রুত ক্ষতিয়ে দেখা। সেই সঙ্গে কোম্পানিটি যাতে দ্রুত প্রকৃত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে তার ব্যবস্থা করা।’

এদিকে, কেয়া কসমেটিকসের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, কসমেটিকসের পাশাপাশি কোম্পানিটির নিট কম্পোজিট, কটন, ইয়াং ও স্পিনিং মিলসের ব্যবসা রয়েছে। তবে কোন খাতের ব্যবসা কত শতাংশ সে বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায়নি।

কেয়া কসমেটিকস নিয়ে শেয়ারবাজারে ছড়ানো গুঞ্জনের বিষয়ে জানতে কোম্পানিটির সচিব মো. নূর হুসাইনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কসমেটিকসের পাশাপাশি আমাদের কটন, ইয়াং, নিটিং ও স্পিনিং মিলের ব্যবসা আছে। মালিকানা পরিবর্তনের বিষয়টি প্রাইস সেনসেটিভ। সুতরাং এ ধরনের কিছু থাকলে আমরা তথ্য প্রকাশ করবো।

আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ না করার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘করোনার কারণে একটু সমস্যা হয়েছে। তাছাড়া আমাদের স্যার দেশের বাইরে ছিলেন। তিনি এখন দেশে এসেছেন। আর্থিক প্রতিবেদন তৈরির কাছ চলছে। শিগগিরই তিন প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন একসঙ্গে প্রকাশ করা হবে।’

ফারইস্ট স্টক অ্যান্ড বন্ডের পর্ষদ পুনর্গঠন করবে বিএসইসি: ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্য প্রতিষ্ঠান ফারইস্ট স্টক অ্যান্ড বন্ডের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্রান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

আজ রোববার (৩০ মে) অনুষ্ঠিত বিএসইসির ৭৭৫তম কমিশন বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বিএসইসি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, কমিশনের দেয়া নির্দেশনা পরিপালনে ব্যর্থতা, পুঁজিবাজারের শৃঙ্খলা রক্ষা এবং বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে দ্যা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন অর্ডন্যান্স, ১৯৬৯ এর সেকশন ২০-এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে কমিশন পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ব্লক মার্কেটে ৩ কোম্পানির লেনদেনের চমক: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার (৩০ মে) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ব্লক মার্কেটে ৩৯টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব কোম্পানির ৭১ কোটি ৩৬ লাখ ৮৪ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

কোম্পানিগুলোর ২ কোটি ১২ লাখ ৩২ হাজার ৬৯৪টি শেয়ার ১২৪ বার হাত বদল হয়েছে। এর মাধ্যমে কোম্পানিগুলোর ৭১ কোটি ৩৬ লাখ ৮৪ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে বিশাল লেনদেন হয়েছে তিন কোম্পানির। কোম্পানিগুলো হলো-এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক ও পাইওনিয়ার ইন্সুরেন্স।

কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের লেনদেন হয়েছে ১৯ কোটি ৮০ লাখ ৫৫ হাজার টাকার শেয়ার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৯ কোটি ১২ লাখ ২২ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের শেয়ার। তৃতীয় সর্বোচ্চ ৮ কোটি ৬১ লাখ ৬৫ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে পাইওনিয়ার ইন্সুরেন্সের।

এছাড়া গ্রীন ডেলটা ইন্সুরেন্সের ৪ কোটি ৯৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকার, ন্যাশনাল পলিমারের ৩ কোটি ৩৮ লাখ ৪৬ হাজার টাকার, জেনেক্স ইনফোসিসের ২ কোটি ৩৩ লাখ ৫ হাজার টাকার, প্রভাতী ইন্সুরেন্সের ২ কোটি ৩২ লাখ ৪৫ হাজার টাকার, বিডি ফাইনান্সের ১ কোটি ৭৪ লাখ ৫০ হাজার টাকার, আরডি ফুডের ১ কোটি ৩০ লাখ ৬ হাজার টাকার, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর ১ কোটি ১৮ লাখ ২৫ হাজার টাকার, ইফাদ অটোসের ৯০ লাখ ৩২ হাজার টাকার, ন্যাশনাল ফিড মিলের ৮৯ লাখ ৪১ হাজার টাকার,

ডেলটা স্পিনিংয়ের ৬৪ লাখ ৪১ হাজার টাকার, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্সুরেন্সের ৬১ লাখ ৫০ হাজার টাকার, অ্যাডভেন্ট ফার্মার ৪৫ লাখ ২০ হাজার টাকার, প্রাইম লাইফের ৩৪ লাখ ৩১ হাজার টাকার, নর্দার্ন ইন্সুরেন্সের ৩০ লাখ ২০ হাজার টাকার, এশিয়া ইন্সুরেন্সের ১৯ লাখ ৮০ হাজার টাকার, সিটি জেনারেল ইন্সুরেন্সের ১৯ লাখ ৪৫ হাজার টাকার, ডিবিএইচের ১৮ লাখ ৩৯ হাজার টাকার,

সাবমেরিন ক্যাবলের ১৮ লাখ টাকার, কোহিনূর কেমিক্যালের ১৫ লাখ ৫৬ হাজার টাকার, প্রাইম আইসিবিএ-১ম মিউচুয়াল ফান্ডের ১৫ লাখ ৪০ হাজার টাকার, মুন্নু সিরামিকের ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকার, ওয়ান ব্যাংকের ১৩ লাখ ২০ হাজার টাকার, ইস্টার্ন ইন্সুরেন্সের ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকার, বীকন ফার্মার ১০ লাখ ৮৮ হাজার টাকার, বিবিএস ক্যাবলের ১০ লাখ ২০ হাজার টাকার,

নিউ লাইনের ৯ লাখ ৬০ হাজার টাকার, ক্রীস্টাল ইন্সুরেন্সের ৯ লাখ ৪৫ হাজার টাকার, আমান কটনের ৯ লাখ ৩৬ হাজার টাকার, এলআর গ্লোবাল-১ম মিউচুয়াল ফান্ডের ৮ লাখ ৪৩ হাজার টাকার, এমএল ডাইংয়ের ৬ লাখ ৬৪ হাজার টাকার, কাট্টালী টেক্সটাইলের ৬ লাখ ৫৪ হাজার টাকার, ইসলামী ইন্সুরেন্সের ৬ লাখ ১৮ হাজার টাকার, প্রগ্রেসিফ লাইফের ৬ লাখ টাকার, ফনিক্স ফাইনান্স-১ম মিউচুয়াল ফান্ডের ৫ লাখ ৫৭ হাজার টাকার, উত্তরা ব্যাংকের ৫ লাখ ২৮ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে।

তিন বছর পর ৬ হাজার পয়েন্ট ছাড়াল ডিএসইর সূচক: আগের কার্যদিবসের মতো রোববারও (৩০ মে) উত্থানে শেষ হয়েছে পুঁজিবাজারের লেনদেন। এদিন উভয় পুঁজিবাজারের সব সূচক বেড়েছে। এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়ে ছয় হাজার পয়েন্ট অতিক্রম করেছে। যা গত তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। আজ সূচক বাড়লেও টাকার পরিমাণে লেনদেন এবং বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর কমেছে।

আজ ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২২.৮৭ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৮.৬৯ পয়েন্টে। আজ ডিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ০.৮৬ পয়েন্ট এবং ডিএসই-৩০ সূচক ১৮.৫৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ২৮৫.৮৮ পয়েন্টে এবং ২ হাজার ২০৮.২৮ পয়েন্টে।

ডিএসইতে আজ ২ হাজার ১৪৯ কোটি ২১ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের দিন থেকে ২১৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকা কম। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৩৬৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকার।

ডিএসইতে আজ ৩৬৪টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে ১৪৪টির বা ৩৯.৫৬ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে। শেয়ার দর কমেছে ১৭৪টির বা ৪৭.৮০ শতাংশের এবং বাকি ৪৬টির বা ১২.৬৪ তাংশের দর অপরিবর্তিত রয়েছে।

অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৩১.৯৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৩৭৯.৩৫ পয়েন্টে। সিএসইতে আজ ৩০৩টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১২১টির দর বেড়েছে, কমেছে ১৪৩টির আর ৩৯টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ১০৯ কোটি ২ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।