দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পানি জাহিন স্পিনিং লিমিটেড ৩১ মার্চ, ২০২১ সমাপ্ত তৃতীয় প্রান্তিকের (জানুয়ারি-মার্চ’২১) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

কোম্পানি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় লোকসান হয়েছে ১ টাকা ৩৯ পয়সা। গত বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি আয় হয়েছিল ২ পয়সা।

অন্যদিকে চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জুলাই’২০-মার্চ’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ১ টাকা ৩৭ পয়সা। গত বছর একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান ছিল ৭৬ পয়সা। ৩১ মার্চ, ২০২১ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ৭ টাকা ৪০ পয়সা।

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের ভুল সিদ্ধান্তের দায় বিএসইসির নয়: বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেছেন, বিএসইসি বা স্টক এক্সচেঞ্জ কারো পোর্টফোলিও পরিচালনা করে না। তাই কোনো বিনিয়োগকারীর বিনিয়োগের ভুল সিদ্ধান্তের দায় বিএসইসির নয়।

তিনি বলেন, পুঁজিবাজারে অনেক বিনিয়োকারী না জেনে বা না বুঝে বিনিয়োগ করতে গিয়ে নানা সময়ে ভুল করে বসেন। পরে ওই ভুলের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হলে নিয়ন্ত্রক সংস্থাসহ স্টক এক্সচেঞ্জকে দায়ী করেন। কিন্তু বিএসইসি বা স্টক এক্সচেঞ্জকে দায়ী করার সুযোগ নেই। কে কোন শেয়ার কিনবে বা বেচবে তা আমরা নির্ধারণ করি না। আজ সোমবার (৩১ মে) দুপুরে রাজধানীর দিলকুশায় জীবন বীমা টাওয়ারে বাংলাদেশ একাডেমি ফর সিকিউরিটিজ মার্কেটসের (বিএএসএম) ক্যাম্পাস ও ওয়েবসাইট উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান, আব্দুল হালিম, আইসিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. কিসমাতুল আহসান, শান্তা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের ভাইস চেয়ারম্যান ও বিএসইসির সাবেক কমিশনার মোঃ আরিফ খান, বিএএসএমের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরীসহ ঊর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, বাজারে নিয়ন্ত্রক সংস্থার মনিটরিং বা সুপারভিশনে কিছু ভুল থাকতে পারে। কোনো ধরনের ম্যানপুলেশন বা অপরাধ সংঘটিত হলে, তার দায়িত্ব আমাদের। কিন্তু কারো ব্যক্তিগত পোর্টফোলিও ম্যানেজ করার দায়িত্ব আমাদের নয়।’

তিনি আরও বলেন, আমরা চাই একজন বিনিয়োগকারী তার সঠিক জ্ঞানের মাধ্যমে বিনিয়োগ করবে। যার মাধ্যমে তিনি তার কষ্টের অর্থের ভালো রিটার্ন অর্জন করবেন। আর বিনিয়োগকারীদের এই জ্ঞান অর্জনের জন্য আমরা পুঁজিবাজার নিয়ে ট্রেনিং প্রোগ্রাম করি। এছাড়াও যারা বিনিয়োগকারীদের লেনদেনের সঙ্গে সম্পৃক্ত, সেইসব ডিলারদেরও শিক্ষার দরকার আছে।

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ডিলারদের ট্রেনিং দিতে হবে। তা না হলে তিনি ঠিকমতো কাজ করতে পারবেন না। এ ছাড়া তাদের ভুলের কারণে বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তিনি না বুঝে বিনিয়োগকারীদের এমন একটা বিষয় বললেন, যা মুহূর্তেই বাজারে প্যানিক তৈরি করতে পারে। তাই ডিলারদেরও শিক্ষা অর্জন করতে হবে।

একাডেমি ফর সিকিউরিটিজ মার্কেটস প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আজকে আমাদের এই একাডেমির অফিসটি উদ্বোধন করা হলো। এখানে জনবল নিয়োগ হয়েছে এবং চলছে। ভালো শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।’ এখানে স্থায়ী নিয়োগের পাশাপাশি অভিজ্ঞদের এনে ট্রেনিং দেওয়া হবে জানিয়ে শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, প্রথম দফায় আমরা অথোরাইজড ডিলারদের ট্রেনিং দেওয়ার প্রোগ্রাম হাতে নিয়েছি।

ব্লক মার্কেটে লেনদেনের হিড়িক, চমক ৩ কোম্পানির: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) হঠাৎ লেনদেনের হিড়িক পড়ছে। এর মধ্যে চমক দেখিয়েছে ৩ কোম্পানি। সোমবার ব্লক মার্কেটে মোট ৩৯ কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মোট ১ কোটি ৬৭ লাখ ২৪ হাজার ৪৭১টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার আর্থিক মূল্য ১০০ কোটি ২৬ লাখ টাকা।ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ব্লক মার্কেটে সবচেয়ে বেশি টাকার লেনদেন হয়েছে আইডিএলসি ফিন্যান্স লিমিটেডের শেয়ার। কোম্পানিটি ৪৮ কোটি ৩০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন করেছে। জেনেক্স ইনফোসিস ১৩ কোটি ২৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন করে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। পাইওনিয়র ইন্স্যুরেন্স ৯ কোটি ৪৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন করে তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে।

ব্লক মার্কেটে লেনদেন করা অন্য কোম্পানিগুলো হচ্ছে- আমান ফিড, বিবিএস কেবলস, বিডি অটোকার্স, বীকন ফার্মা, বেক্সিমকো, ব্রাক ব্যাংক, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল, কনফিডেন্স সিমেন্ট, ডিবিএইচ, দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, ঢাকা ইন্স্যুরেন্স, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স, ইস্টার্ন ক্যাবলস, জিপিএইচ ইস্পাত, লংকাবাংলা ফিন্যান্স, ম্যাকসন্স স্পিনিং, ম্যারিকো, মেট্রো স্পিনিং,

ন্যাশনাল ফিড মিল, ন্যাশনাল হাউজিং, নর্দার্ন ইন্স্যুরেন্স, ন্যাশনাল পলিমার, ন্যাশনাল টিউবস, ওয়াইম্যাক্স ইলেকটোডস, ওরিয়ন ই্নফিউশন, ওরিয়ন ফার্মা, প্রগতি ইন্স্যুরেন্স, প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স, প্রভাতি ইন্স্যুরেন্স,প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, স্যালভো কেমিক্যাল, সিলকো ফার্মা, স্কয়ার ফার্মা ও ইউননাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড।

বিবিএস কেবলসের জরিমানা মওকুফ করছে বিএসইসি: পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত প্রকৌশল খাতের কোম্পানি বিবিএস কেবলস লিমিটেডকে সকল দায় থেকে মুক্ত করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। কোম্পানির পক্ষ থেকে বিএসইসিতে জরিমানা মওকুফের আবেদনের প্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি।

কোম্পানি সূত্র মতে, তালিকাভুক্তির পর পরই সিকিউরিটিজ আইন সম্বন্ধে স্বচ্ছ ধারণা না থাকার কারণে কিছু সমস্যা হয়। ফলে কোম্পানির পরিচালকসহ কয়েকজনকে জরিমানা করে বিএসইসি। পরবর্তীতে কোম্পানি জরিমানা মওকুফের জন্য বিএসইসিতে আবেদন করে। কোম্পানির শুনানি শেষে বিষয়টি সমাধান করে বিএসইসি। এখন সকল ধরণের অভিযোগ থেকে মুক্ত বিবিএস ক্যাবল লিমিটেড।

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির আগ থেকেই ভালো ব্যবসা করে আসছে বিবিএস কেবলস। তালিকাভুক্তির পরও সেই ধারাবাহীকতা ঠিক রাখতে পেরেছে কোম্পানিটি। ফলে বরাবরই শেয়ারহোল্ডারদের ভালো লভ্যাংশও দিচ্ছে।

সর্বশেষ ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের ব্যবসায় শেয়ারহোল্ডারদের ২০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে। এর মধ্যে ১০ শতাংশ নগদ ও ১০ শতাংশ বোনাস। ওই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছিলো ৬ টাকা ৬৬ পয়সা। আর বর্তমান অর্থবছরের সর্বশেষ নয় মাসে (জুলাই ২০২০-মার্চ ২০২১) কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৪ টাকা ১০ পয়সা।

বিবিএস কেবলসের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আবু নোমান হাওলাদার বলেন, তালিকাভুক্তির শুরুতে সিকিউরিটিজ আইন নিয়ে আমাদের ধারণা পরিস্কার ছিলো না এবং জ্ঞ্যানের পরিধিও কম ছিলো। ফলে শুরুতেই সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের আইনগত বিষয়াবলী প্রতিপালনে কিছুটা সমস্যা হয়েছিলো।

মূলত আমাদেরকে জরিমানা করা হয় মূল্য সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশ না করার জন্য। কিন্তু সেটি আসলে মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছিলো না। বিষয়টি আমরা বিএসইসিকে অবহিত ও ব্যাখ্যা প্রদান করেছি। যার পরিপ্রেক্ষিতে কমিশন আমাদের উপর আরোপিত জরিমানা মওকুফ করেছে। এছাড়া অন্যান্যদের উপর আরোপিত জরিমানার বিষয়টিও সমাধান হয়েছে। এখন আর কোন অমীমাংসিত বিষয় নেই।

তিনি বলেন, বিবিএস কেবলস তালিকাভুক্তির পর থেকেই প্রতি বছর ভালো প্রতিবেদনের জন্য কর্পোরেট গভর্নেন্স অ্যাওয়ার্ড পেয়ে আসছে। বিএসইসি আমাদের বিষয়গুলো খুব অল্প সময়ের মধ্যে সুন্দরভাবে সমাধান করে দিয়েছে। ফলে এর সাথে সম্পৃক্ত বিএসইসির চেয়ারম্যান, কমিশনারসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। আশা করি আগামী দিনেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে শেয়ারবাজারে বিবিএস কেবলসের লেনদেন শুরু হয়। তালিকাভুক্তির বছরই কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের ২০ শতাংশ লভ্যাংশ দেয়। এর মধ্যে ৫ শতাংশ নগদ ও ১৫ শতাংশ বোনাস। ২০১৮ সালে ২৫ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে। এর মধ্যে ১০ শতাংশ নগদ ও ১৫ শতাংশ বোনাস। ২০১৯ ও ২০২০ সালে যথাক্রমে ২০ শতাংশ করে লভ্যাংশ দিয়েছে। এর মধ্যে যথাক্রমে ১০ শতাংশ নগদ ও ১০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ছিলো।