দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে কিছুটা কারেকশন হয়েছে। আজ ডিএসই প্রধান সূচক কমেছে ১৭.৭০ পয়েন্ট। কমেছে বেশিরভাগ শেয়ারদরও। তবে পাঁচ মেগা কোম্পানির বদৌলতে পুঁজিবাজার আজ বড় পতনের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। আজ এসব কোম্পানি বাজারের জন্য আর্শীবাদ ভুমিকা রেখেছে।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, পতনের দিনেও আজ ৫ বড় মূলধনী কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে। কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর বাড়াতে বাজার বড় পতন থেকে রক্ষা পেয়েছে। কোম্পানিগুলো হলো- ডাচবাংলা ব্যাংক, লাফার্জ হোলসিম সিমেন্ট, রবি আজিয়াটা, ইউনাইটেড পাওয়ার এবং ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ(আইসিবি)।

কোম্পানিগুলোর মধ্যে ডাচবাংলা ব্যাংকের দর বেড়েছে ৯.৯৬ শতাংশ, লাফার্জ হোলসিমের দর বেড়েছে ৫.৪২ শতাংশ, রবি আজিয়াটার দর বেড়েছে ১.২৭ শতাংশ, ইউনাইটেড পাওয়ারের দর বেড়েছে ১.৯৬ শতাংশ এবং ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) দর বেড়েছে ২.২৩ শতাংশ।

দর বাড়াতে ডিএসইতে বড় মূলধনী এই ৫ কোম্পানির পয়েন্ট যোগ হয়েছে ১০৭ পয়েন্টের বেশি। এরমধ্যে ডাচবাংলা ব্যাংকের ২৯.০৫, লাফার্জ হোলসিমের ২৪.৭৪, রবি আজিয়াটার ২০.৯২, ইউনাইটেড পাওয়ারের ২০.৮৪ এবং আইসিবির ১২.৩৪ পয়েন্ট। কোম্পানিগুলোর দর যদি না বাড়তো তাহলে আজ ডিএসইর প্রধান সূচক আরও কমতো ১০৭ পয়েন্টের বেশি।

পুলিশের সাবেক আইজিপি শহীদুল হক ফারইস্ট স্টকস অ্যান্ড বন্ডসের চেয়ারম্যান: সিকিউরিটিজ আইন পরিপালন না করায় ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্যভুক্ত প্রতিষ্ঠান (ব্রোকারেজ হাউজ) ফারইস্ট স্টকস অ্যান্ড বন্ডসের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। ব্রোকারেজ হাউজটির পুনর্গঠিত পর্ষদে ৪ জন স্বতন্ত্র পরিচালক ও ৪ জন শেয়ারহোল্ডার পরিচালককে মনোয়ন দিয়েছে বিএসইসি। প্রতিষ্ঠানটিতে নতুন মনোয়ন দেওয়া ৪ জন স্বতন্ত্র পরিচালকের মধ্যে একজন বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) রয়েছেন।

ফারইস্ট স্টকস অ্যান্ড বন্ডসের পুনর্গঠিত পর্ষদের সদস্যরা হলেন: বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. রুমানা ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মো. নাজমুল হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ শাহীন মিয়া, শেয়ারহোল্ডার পরিচালক ওয়াহিদ মুরাদ জামিল, আশরাফুজ্জামান চৌধুরী, মোত্তাসেম বেলাল ও ফারইস্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

ফারইস্ট স্টকস অ্যান্ড বন্ডসের পুনর্গঠিত পর্ষদে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক। এই পুনর্গঠিত পর্ষদ কমিশনের অনুমোদন ছাড়া প্রতিষ্ঠানটির কোনো সম্পদ বিক্রি, হস্তান্তর বা নিষ্পত্তি করতে পারবে না। আর আলোচ্য বিষয়গুলো পরিপালন সাপেক্ষে পুনর্গঠিত পর্ষদ প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে বিএসইসিতে দাখিল করবে। পুনর্গঠিত পর্ষদের কার্যক্রম এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারির পর থেকে কার্যকর হয়েছে।

এ বিষয়টি ফারইস্ট ফাইনান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালককে অবহিত করা হয়েছে। একইসঙ্গে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ফারইস্ট স্টকস ও বন্ডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে জানানো হয়েছে।

রোববার (৩০ মে) বিএসইসির ৭৭৫তম কমিশন সভার সিদ্ধান্তের আলোকে প্রতিষ্ঠানটির পর্ষদ পুনর্গঠিত হয়েছে। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিএসইসি জানিয়েছে, কমিশনের দেওয়া নির্দেশনা পরিপালনে ব্যর্থ হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। তাছাড়া শেয়ারবাজারের শৃঙ্খলা রক্ষা এবং বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায়ও ব্যর্থ হয়েছে ফারইস্ট স্টকস অ্যান্ড বন্ডস। বাজারের শৃঙ্খলা স্থিতি এবং বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা করতে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯ এর সেকশন ২০-এ প্রদত্ত ক্ষমতা বলে কমিশন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

শেয়ারবাজারে বিএসইসি এই প্রথমবারের মতো ব্রোকারেজ হাউজের পর্ষদ পুনর্গঠন করেছে। মূলত ফারইস্ট স্টকস অ্যান্ড বন্ডসের আর্থিক অবস্থার উন্নয়ন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিএসইসি কর্তৃক মনোনীত স্বতন্ত্র পরিচালকসহ শেয়ারহোল্ডার পরিচালকরা প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক অবস্থার উন্নয়নে কাজ করবেন।

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, ফারইস্ট স্টকস অ্যান্ড বন্ডসের ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পরীক্ষা করে দেখা গেছে, গ্রাহকদের কনসোলিডেটেড কাস্টমার্স অ্যাকাউন্টে ১০ কোটি ৫৬ লাখ ৪৭ হাজার ৩৬৯ টাকা ঘাটতি পাওয়া গেছে। পরবর্তীতে বিএসইসি ওই ঘাটতির সমন্বয়ের জন্য নির্দেশ দিলেও প্রতিষ্ঠানটি তা পালন করেনি।

এছাড়া নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান হুদা ভাসি চৌধুরী অ্যান্ড কোং চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস দ্বারা পরিচালিত বিশেষ নিরীক্ষায় ফারইস্ট স্টকস অ্যান্ড বন্ডসের আর্থিক হিসাবে অনিয়ম পাওয়া গেছে। ফারইস্ট ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের দলিলপত্র ও শ্রেণীকৃত ঋণ বিবরণী অনুসারে এর সহযোগী কোম্পানি ফারইস্ট স্টকস অ্যান্ড বন্ডসকে ২৭৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ঋণ দিয়েছে।

কিন্তু ফারইস্ট স্টকস অ্যান্ড বন্ডসের নিরীক্ষকের মতামত অনুসারে এ ঋণের পরিমাণ ২৫২ কোটি ২২ লাখ টাকা। এক্ষেত্রে পার্থক্যের পরিমাণ ২৩ কোটি ২৪ লাখ টাকা। এতে ঋণের অর্থ পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে সন্দেহ তৈরি হতে পারে ও প্রতিষ্ঠানটির অর্থ হারানোর সম্ভাবনাও রয়েছে বলে জানিয়েছে নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান।

নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠানটিে আরো জানিয়েছে, ফারইস্ট স্টকস অ্যান্ড বন্ডস বিভিন্ন ক্লায়ন্টের কোডগুলোতে ৩৬ কোটি ৩৬ লাখ ৪১ হাজার ১২৫ টাকা জাল লেনদেন করেছে, যা গ্রাহকদের কনসোলিডেটেড কাস্টমার্স অ্যাকাউন্টে সঠিকভাবে জমা হয়নি।

বিএসইসি সূত্রে আরো জানা গেছে, ২০১২ সালে আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক ফারইস্ট স্টকস অ্যান্ড বন্ডসের ৪১ কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুর করে। যা কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক অনুমোন হয়েছিল। তবে ওই ঋণটি তৎকালীন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক এ এম খালেকসহ ফারইস্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ও অন্যান্যদের দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফারইস্ট স্টকস অ্যান্ড বন্ডসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বিএসইসি ফারইস্ট স্টকস অ্যান্ড বন্ডসের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করেছে। বিএসইসি থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করার পর থেকে নতুন পর্ষদ কার্যকর হয়েছে। নতুন পর্ষদে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক বলেন, ‘বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে কমিশন আমাকে একটি দায়িত্ব দিয়েছে। আমি চেষ্টা করব, প্রতিষ্ঠানটির উন্নয়ন ঘটিয়ে বিনিয়োগকারীদের যেন স্বার্থ রক্ষা হয়।’

লংকাবাংলা ফাইন্যান্সের প্রথম প্রান্তিক প্রকাশ: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠান লংকাবাংলা ফাইন্যান্স লিমিটেড গত ৩১ মার্চ, ২০২১ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরের প্রথম প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। আজ সোমবার (৩১ মে) অনুষ্ঠিত কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে সর্বশেষ হিসাববছরের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর তা প্রকাশ করা হয়। কোম্পানি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি’২১-মাচ’২১) কোম্পানিটির সমন্বিত শেয়ার প্রতি আয় (Consolidated EPS) হয়েছে ৪১ পয়সা। আগের বছর সমন্বিতভাবে শেয়ার প্রতি আয় ছিল ১৩ পয়সা (রিস্টেটেড)। অন্যদিকে আলোচিত প্রান্তিকে এককভাবে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (Solo EPS) হয়েছে ৮ পয়সা। আগের বছর সমন্বিতভাবে শেয়ার প্রতি আয় ছিল ১৮ পয়সা (রিস্টেটেড)। গত ৩১ মার্চ, ২০২১ তারিখে সমন্বিতভাবে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ১৯ টাকা ১৫ পয়সা।

প্রগতি ইন্স্যুরেন্সের ৩০ শতাংশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বীমা খাতের কোম্পানি সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীদের জন্য ৩০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। আজ সোমবার অনুষ্ঠিত সভায় ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ পর্যন্ত সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে এ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করা হয়। কোম্পানি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, ঘোষিত ডিভিডেন্ড সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীদের সম্মতিতে অনুমোদনের জন্য আগামী ২৬ আগস্ট বেলা সাড়ে ১১টায় ডিজিটাল প্ল্যাটফরমের মাধ্যমে কোম্পানিটির ৩৫তম বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ জুন।সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৪ টাকা ৭ পয়সা। আগের বছর একই সময় যার পরিমাণ ছিল ৩ টাকা ১৯ পয়সা।

শেয়ার প্রতি নেট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো (এনওসিএফপিএস) ৮ টাকা ৫৩ পয়সা। আগের বছর একই সময় যার পরিমাণ ছিল ৫ টাকা ৫৭ পয়সা। শেয়ার প্রতি সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ৫৩ টাকা ৫১ পয়সা। আগের বছর একই সময় যার পরিমাণ ছিল ৫০ টাকা ৬৩ পয়সা।

নর্দার্ণ ইসলামি ইন্স্যুরেন্সের লভ্যাংশ ঘোষণা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বীমা খাতের কোম্পানি নর্দার্ণ ইসলামি ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে এ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। কোম্পানি সূত্রে এ তথ্য জানো গেছে।

জানা গেছে, এ সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ৭৪ পয়সা। গত বছর একই সময়ে ছিলো ১ টাকা ৭২ পয়সা। একই সময়ে শেয়ার প্রতি সম্পদ মূল্য (এনএভি) হয়েছে ২০ টাকা ২৪ পয়সা। এই লভ্যাংশ অনুমোদনের জন্য আগামী ৭ আগস্ট বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) করবে কোম্পানিটি। এর জন্য রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ২৩ জুন।

জাহিন স্পিনিংয়ের তৃতীয় প্রান্তিক প্রকাশ: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পানি জাহিন স্পিনিং লিমিটেড ৩১ মার্চ, ২০২১ সমাপ্ত তৃতীয় প্রান্তিকের (জানুয়ারি-মার্চ’২১) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

কোম্পানি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় লোকসান হয়েছে ১ টাকা ৩৯ পয়সা। গত বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি আয় হয়েছিল ২ পয়সা।

অন্যদিকে চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জুলাই’২০-মার্চ’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ১ টাকা ৩৭ পয়সা। গত বছর একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান ছিল ৭৬ পয়সা। ৩১ মার্চ, ২০২১ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ৭ টাকা ৪০ পয়সা।

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের ভুল সিদ্ধান্তের দায় বিএসইসির নয়: বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেছেন, বিএসইসি বা স্টক এক্সচেঞ্জ কারো পোর্টফোলিও পরিচালনা করে না। তাই কোনো বিনিয়োগকারীর বিনিয়োগের ভুল সিদ্ধান্তের দায় বিএসইসির নয়।

তিনি বলেন, পুঁজিবাজারে অনেক বিনিয়োকারী না জেনে বা না বুঝে বিনিয়োগ করতে গিয়ে নানা সময়ে ভুল করে বসেন। পরে ওই ভুলের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হলে নিয়ন্ত্রক সংস্থাসহ স্টক এক্সচেঞ্জকে দায়ী করেন। কিন্তু বিএসইসি বা স্টক এক্সচেঞ্জকে দায়ী করার সুযোগ নেই। কে কোন শেয়ার কিনবে বা বেচবে তা আমরা নির্ধারণ করি না। আজ সোমবার (৩১ মে) দুপুরে রাজধানীর দিলকুশায় জীবন বীমা টাওয়ারে বাংলাদেশ একাডেমি ফর সিকিউরিটিজ মার্কেটসের (বিএএসএম) ক্যাম্পাস ও ওয়েবসাইট উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান, আব্দুল হালিম, আইসিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. কিসমাতুল আহসান, শান্তা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের ভাইস চেয়ারম্যান ও বিএসইসির সাবেক কমিশনার মোঃ আরিফ খান, বিএএসএমের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরীসহ ঊর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, বাজারে নিয়ন্ত্রক সংস্থার মনিটরিং বা সুপারভিশনে কিছু ভুল থাকতে পারে। কোনো ধরনের ম্যানপুলেশন বা অপরাধ সংঘটিত হলে, তার দায়িত্ব আমাদের। কিন্তু কারো ব্যক্তিগত পোর্টফোলিও ম্যানেজ করার দায়িত্ব আমাদের নয়।’

তিনি আরও বলেন, আমরা চাই একজন বিনিয়োগকারী তার সঠিক জ্ঞানের মাধ্যমে বিনিয়োগ করবে। যার মাধ্যমে তিনি তার কষ্টের অর্থের ভালো রিটার্ন অর্জন করবেন। আর বিনিয়োগকারীদের এই জ্ঞান অর্জনের জন্য আমরা পুঁজিবাজার নিয়ে ট্রেনিং প্রোগ্রাম করি। এছাড়াও যারা বিনিয়োগকারীদের লেনদেনের সঙ্গে সম্পৃক্ত, সেইসব ডিলারদেরও শিক্ষার দরকার আছে।

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ডিলারদের ট্রেনিং দিতে হবে। তা না হলে তিনি ঠিকমতো কাজ করতে পারবেন না। এ ছাড়া তাদের ভুলের কারণে বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তিনি না বুঝে বিনিয়োগকারীদের এমন একটা বিষয় বললেন, যা মুহূর্তেই বাজারে প্যানিক তৈরি করতে পারে। তাই ডিলারদেরও শিক্ষা অর্জন করতে হবে।

একাডেমি ফর সিকিউরিটিজ মার্কেটস প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আজকে আমাদের এই একাডেমির অফিসটি উদ্বোধন করা হলো। এখানে জনবল নিয়োগ হয়েছে এবং চলছে। ভালো শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।’ এখানে স্থায়ী নিয়োগের পাশাপাশি অভিজ্ঞদের এনে ট্রেনিং দেওয়া হবে জানিয়ে শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, প্রথম দফায় আমরা অথোরাইজড ডিলারদের ট্রেনিং দেওয়ার প্রোগ্রাম হাতে নিয়েছি।

ব্লক মার্কেটে লেনদেনের হিড়িক, চমক ৩ কোম্পানির: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) হঠাৎ লেনদেনের হিড়িক পড়ছে। এর মধ্যে চমক দেখিয়েছে ৩ কোম্পানি। সোমবার ব্লক মার্কেটে মোট ৩৯ কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মোট ১ কোটি ৬৭ লাখ ২৪ হাজার ৪৭১টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার আর্থিক মূল্য ১০০ কোটি ২৬ লাখ টাকা।ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ব্লক মার্কেটে সবচেয়ে বেশি টাকার লেনদেন হয়েছে আইডিএলসি ফিন্যান্স লিমিটেডের শেয়ার। কোম্পানিটি ৪৮ কোটি ৩০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন করেছে। জেনেক্স ইনফোসিস ১৩ কোটি ২৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন করে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। পাইওনিয়র ইন্স্যুরেন্স ৯ কোটি ৪৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন করে তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে।

ব্লক মার্কেটে লেনদেন করা অন্য কোম্পানিগুলো হচ্ছে- আমান ফিড, বিবিএস কেবলস, বিডি অটোকার্স, বীকন ফার্মা, বেক্সিমকো, ব্রাক ব্যাংক, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল, কনফিডেন্স সিমেন্ট, ডিবিএইচ, দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, ঢাকা ইন্স্যুরেন্স, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স, ইস্টার্ন ক্যাবলস, জিপিএইচ ইস্পাত, লংকাবাংলা ফিন্যান্স, ম্যাকসন্স স্পিনিং, ম্যারিকো, মেট্রো স্পিনিং,

ন্যাশনাল ফিড মিল, ন্যাশনাল হাউজিং, নর্দার্ন ইন্স্যুরেন্স, ন্যাশনাল পলিমার, ন্যাশনাল টিউবস, ওয়াইম্যাক্স ইলেকটোডস, ওরিয়ন ই্নফিউশন, ওরিয়ন ফার্মা, প্রগতি ইন্স্যুরেন্স, প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স, প্রভাতি ইন্স্যুরেন্স,প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, স্যালভো কেমিক্যাল, সিলকো ফার্মা, স্কয়ার ফার্মা ও ইউননাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড।

বিবিএস কেবলসের জরিমানা মওকুফ করছে বিএসইসি: পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত প্রকৌশল খাতের কোম্পানি বিবিএস কেবলস লিমিটেডকে সকল দায় থেকে মুক্ত করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। কোম্পানির পক্ষ থেকে বিএসইসিতে জরিমানা মওকুফের আবেদনের প্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি।

কোম্পানি সূত্র মতে, তালিকাভুক্তির পর পরই সিকিউরিটিজ আইন সম্বন্ধে স্বচ্ছ ধারণা না থাকার কারণে কিছু সমস্যা হয়। ফলে কোম্পানির পরিচালকসহ কয়েকজনকে জরিমানা করে বিএসইসি। পরবর্তীতে কোম্পানি জরিমানা মওকুফের জন্য বিএসইসিতে আবেদন করে। কোম্পানির শুনানি শেষে বিষয়টি সমাধান করে বিএসইসি। এখন সকল ধরণের অভিযোগ থেকে মুক্ত বিবিএস ক্যাবল লিমিটেড।

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির আগ থেকেই ভালো ব্যবসা করে আসছে বিবিএস কেবলস। তালিকাভুক্তির পরও সেই ধারাবাহীকতা ঠিক রাখতে পেরেছে কোম্পানিটি। ফলে বরাবরই শেয়ারহোল্ডারদের ভালো লভ্যাংশও দিচ্ছে।

সর্বশেষ ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের ব্যবসায় শেয়ারহোল্ডারদের ২০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে। এর মধ্যে ১০ শতাংশ নগদ ও ১০ শতাংশ বোনাস। ওই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছিলো ৬ টাকা ৬৬ পয়সা। আর বর্তমান অর্থবছরের সর্বশেষ নয় মাসে (জুলাই ২০২০-মার্চ ২০২১) কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৪ টাকা ১০ পয়সা।

বিবিএস কেবলসের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আবু নোমান হাওলাদার বলেন, তালিকাভুক্তির শুরুতে সিকিউরিটিজ আইন নিয়ে আমাদের ধারণা পরিস্কার ছিলো না এবং জ্ঞ্যানের পরিধিও কম ছিলো। ফলে শুরুতেই সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের আইনগত বিষয়াবলী প্রতিপালনে কিছুটা সমস্যা হয়েছিলো।

মূলত আমাদেরকে জরিমানা করা হয় মূল্য সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশ না করার জন্য। কিন্তু সেটি আসলে মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছিলো না। বিষয়টি আমরা বিএসইসিকে অবহিত ও ব্যাখ্যা প্রদান করেছি। যার পরিপ্রেক্ষিতে কমিশন আমাদের উপর আরোপিত জরিমানা মওকুফ করেছে। এছাড়া অন্যান্যদের উপর আরোপিত জরিমানার বিষয়টিও সমাধান হয়েছে। এখন আর কোন অমীমাংসিত বিষয় নেই।

তিনি বলেন, বিবিএস কেবলস তালিকাভুক্তির পর থেকেই প্রতি বছর ভালো প্রতিবেদনের জন্য কর্পোরেট গভর্নেন্স অ্যাওয়ার্ড পেয়ে আসছে। বিএসইসি আমাদের বিষয়গুলো খুব অল্প সময়ের মধ্যে সুন্দরভাবে সমাধান করে দিয়েছে। ফলে এর সাথে সম্পৃক্ত বিএসইসির চেয়ারম্যান, কমিশনারসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। আশা করি আগামী দিনেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে শেয়ারবাজারে বিবিএস কেবলসের লেনদেন শুরু হয়। তালিকাভুক্তির বছরই কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের ২০ শতাংশ লভ্যাংশ দেয়। এর মধ্যে ৫ শতাংশ নগদ ও ১৫ শতাংশ বোনাস। ২০১৮ সালে ২৫ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে। এর মধ্যে ১০ শতাংশ নগদ ও ১৫ শতাংশ বোনাস। ২০১৯ ও ২০২০ সালে যথাক্রমে ২০ শতাংশ করে লভ্যাংশ দিয়েছে। এর মধ্যে যথাক্রমে ১০ শতাংশ নগদ ও ১০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ছিলো।