দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বীমা খাতের প্রতিষ্ঠান ফনিক্স ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড গত ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। আলোচিত বছরের জন্য কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের ১৫ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দেবে।

আজ বৃহস্পতিবার (৩ জুন) অনুষ্ঠিত কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে সর্বশেষ হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর ডিভিডেন্ড সংক্রান্ত এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কোম্পানি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

সর্বশেষ বছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় বা ইপিএস হয়েছে ২ টাকা ৩৩ পয়সা, যা আগের বছর ২ টাকা ৩১ পয়সা ছিল।গত ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য ছিল ৩৯ টাকা ১০ পয়সা। আগামী ১১ আগস্ট, বুধবার বেলা আড়াইটায় ডিজিটাল প্ল্যাটফরমের মাধ্যমে কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ জুন।

এদিকে ফনিক্স ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড গত ৩১ মার্চ, ২০২১ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরের প্রথম প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।আজ বৃহস্পতিবার (৩ জুন) অনুষ্ঠিত কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে সর্বশেষ হিসাববছরের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর তা প্রকাশ করা হয়। কোম্পানি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি’২১-মাচ’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ৬৯ পয়সা। আগের বছর শেয়ার প্রতি আয় ছিল ৫৫ পয়সা। আলোচিত প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি ক্যাশ ফ্লো ছিল ২৯ পয়সা, যা আগের বছর এই সময়ে ৩৫ পয়সা ছিল। গত ৩১ মার্চ, ২০২১ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ৩৭ টাকা ১৮ পয়সা।

পুঁজিবাজারে কালো টাকা বিনিয়োগে শক্তিশালী হয়েছে: পুঁজিবাজারে কালো টাকায় শক্তিশালী হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, এর ফলে পুঁজিবাজারে অর্থের প্রবাহও বৃদ্ধি পেয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (০৩ জুন) জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেট উত্থাপনের সময় অর্থমন্ত্রী এ কথা বলেন।

আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, পুঁজিবাজারকে গতিশীল করার লক্ষ্যে এক বছর লক-ইনসহ কতিপয় শর্ত সাপেক্ষে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতারা পুঁজিবাজারে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের আওতায় ফেব্রুয়ারি ২০২১ পর্যন্ত ৩১১ জন করদাতা পুঁজিবাজারে অর্থ বিনিয়োগপূর্বক ৪৩ কোটি ৫৪ লাখ ৫২ হাজার ৯৮ টাকা আয়কর পরিশোধ করেছেন। যার ফলে দেশের পুঁজিবাজারে অর্থের প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং পুঁজিবাজার শক্তিশালী হয়েছে। উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে পুঁজিবাজারে বড় ধরনের উল্লম্ফন ঘটেছে। ডিএসইর সূচক ৩৯ মাস পর ৬ হাজার পয়েন্ট ছাড়িয়ে গেছে।

বাজেটে কালো টাকা বিনিয়োগের সুনির্দিষ্ট দিক নির্দেশনা নেই: ২০২১-২০২২ অর্থবছরের বাজেটে অপ্রদর্শিত অর্থ বা কালো টাকা বৈধ করার সুযোগ আর থাকবে কি না সে বিষয়ে নতুন কোনো নির্দেশনা নেই। তবে ২০২০-২১ অর্থবছরে কি পরিমাণ কালো টাকা বিনিয়োগ হয়েছিল বাজেট বক্তৃতায় তার একটি বিবরণী উল্লেখ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল। বৃহস্পতিবার (৩ জুন) জাতীয় সংসদে ছয় লাখ তিন হাজার ৬৮১ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। প্রস্তাবিত বাজেটের মূল প্রতিপাদ্য ‘জীবন ও জীবিকার প্রাধান্য, আগামীর বাংলাদেশ’।

প্রসঙ্গত, চলতি বাজেটের ঘোষণা অনুযায়ী কালো টাকা বৈধ করার সুযোগ আগামী ৩০ জুন শেষ হওয়ার কথা। এ সময় তিনি বলেন, কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রেখেছে সরকার। ফলে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়ে ৯ হাজার ৬২৩ জন করদাতা কালো টাকা সাদা করেছেন। এই সময়ে তারা ১ হাজার ৩৮৬ কোটির বেশি কালো টাকা সাদা করেছেন।

তিনি বলেন, ‘অপ্রদর্শিত আয় রিটার্নে প্রদর্শনের সুযোগের আওতায় ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৯ হাজার ৬২৩ জন করদাতা অপ্রদর্শিত সম্পদ রিটার্নি প্রদর্শনপূর্বক ১ হাজার ৩৮৬ কোটি ১০ লাখ ২ হাজার ৭৯৫ টাকা আয়কর প্রদান করেছেন। যার ফলে করোনাকালীন সময়ে দেশের অর্থনীতিতে পুঁজি প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে।’

অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ‘পুঁজিবাজারকে গতিশীল করার লক্ষ্যে এক বছর লক-ইনসহ কতিপয় শর্তসাপেক্ষে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতারা পুঁজিবাজারে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের আওতায় ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৩১১ জন করদাতা পুঁজিবাজারে অর্থ বিনিয়োগ করে ৪৩ কোটি ৫৪ লাখ ৫২ হাজার ৯৮ টাকা আয়কর পরিশোধ করেছেন। যার ফলে দেশের পুঁজিবাজারে অর্থের প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং পুঁজিবাজার শক্তিশালী হয়েছে।’

২০২০-২০২১ অর্থ-বছরের বাজেটে পুঁজিবাজার ও আবাসন খাতে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। ওই বাজেট প্রস্তাবনায় পুঁজিবাজার ও আয়কর রিটার্নে প্রদর্শন হয়নি এমন জমি বা ফ্ল্যাট বৈধ করার সুযোগ সুযোগ ছিল। এতদিন অতিরিক্ত ১০ শতাংশ হারে কর দিয়ে একজন বিনিয়োগকারী তার অপ্রদর্শিত অর্থ বা কালো টাকা দিয়ে ফ্ল্যাট কিনতে পারতেন, যেখানে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার কোটি টাকা সাদা হয়েছে।

বর্তমানে বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও অপ্রদর্শিত অর্থ অর্থনীতির মূলধারায় আনতে শর্ত সাপেক্ষে ১০ শতাংশ কর দিয়ে শেয়ার, স্টক, মিউচুয়াল ফান্ড, বন্ড, ডিভেঞ্চারে বিনিয়োগ করা যায়। এছাড়া, অপ্রদর্শিত স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি, নগদ টাকা, ব্যাংক আমানত, সঞ্চয়পত্র রিটার্ন প্রদর্শনের মাধ্যমে বৈধ করার সুযোগ রয়েছে। এজন্য অর্থবিলের মাধ্যমে আয়কর অধ্যাদেশে এ সংক্রান্ত একটি ধারা যুক্ত করা হয়েছে।

বিকেলে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বাজেট অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মন্ত্রীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ প্রমুখ।‌

প্রস্তাবিত বাজেটে করপোরেট কর কমানোয় ডিএসইর অভিনন্দন: প্রস্তাবিত বাজেটে (২০২১-২০২২) করপোরেট কর কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ায় সরকার তথা অর্থমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেড।

ডিএসই’র পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জীবন-জীবিকায় প্রাধান্য দিয়ে সদঢ় আগামীর পথে বাংলাদেশ” শিরোনামে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যক্ষ দিক-নির্দেশনায় বিনিয়োগ বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সষ্টি এবং অর্থনীতিকে গতিশীল করতে যে সদরপ্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে মাননীয় অর্থমন্ত্রী জনাব আ হ ম মস্তফা কামাল, এফসিএ, এমপি মহান জাতীয় সংসদে ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৩ হাজার ৬ শত ৮১ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেছেন, তার জন্য ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেড (ডিএসই) আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছে।

উক্ত বাজেট স্বাধীন বাংলাদেশের ৫০ তম বাজেট এবং বর্তমান সরকারের ততীয় মেয়াদের ততীয় বাজেট ও আওয়ামী লীগ সরকারের টানা ১৩ তম বাজেট। এই বাজেট বর্তমান অর্থমন্ত্রীর ততীয় বাজেট। মাননীয় অর্থমন্ত্রীর বাজেট উপস্থাপনের পরপরই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালনা পর্ষদের সভায় প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে আলোচনা করা হয়। ডিএসই মনে করে, এই বাজেট ব্যবসাবান্ধব ও বাংলাদেশের পজিবাজারের উন্নয়নমখী বাজেট।

দেশের অর্থনীতিকে গতিশীল করতে প্রস্তাবিত বাজেটে সরকারের অর্জন ও উদ্ভত বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে টেকসই ও সমদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে ২০২১-২২ অর্থবছরে উন্নয়নমলক ও ব্যবসাবান্ধব যে স-পরিকল্পিত কর্মপন্থা ও ব্যবস্থাপনা কৌশল বাজেটে প্রস্তাব করা হয়েছে, সে জন্য ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ মাননীয় অর্থমন্ত্রীর নিকট কতজ্ঞ।

পুঁজিবাজারের উন্নয়ন এবং বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে কর্পোরেট করহার আরও কমিয়ে তালিকাভক্ত কোম্পানির জন্য ২৫% এর স্থলে ২২.৫০% করায় ডিএসই অভিনন্দন জানাচ্ছে। কর্পোরেট করহার কমানোর ফলে বাংলাদেশের বহৎ এবং স্বনামধন্য কোম্পানিগুলো পজিবাজারে তালিকাভক্ত হতে আগ্রহী হবে। এছাড়াও সরকার পজিবাজারকে আন্তর্জাতিককরণের লক্ষ্যে নানাবিধ সংস্কারমলক পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে।

বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা অনযায়ী প্রস্তাবিত বাজেটে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে আসার জন্য আধনিক পুঁজিবাজারের বিভিন্ন ইন্সট্রমেন্ট যথা: ট্রেজারি বন্ড, সকক, ডেরিভেটিভ, অপশন এর লেনদেন চাল করা, এসএমই ও এটিবি বোর্ড চাল করা, ইটিএফ চাল করা, ওপেন ইন্ড মিউচয়্যাল ফান্ড তালিকাভক্ত করা, পুঁজিবাজারের সহায়ক ইকোসিস্টেম ও সার্বিক সুযোগ সবিধার উন্নয়ন এবং

স্টক এক্সচেঞ্জকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার জন্য যে সদঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন এ জন্য ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ মাননীয় অর্থমন্ত্রীকে আবারো অভিনন্দন জানাচ্ছে। এছাড়াও, মাননীয় অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্ততায় স্বাস্থ্য ও কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলা, কষি, খাদ্য নিরাপত্তা, কর্মসংস্থান সষ্ট, দারিদ্র দরীকরণ, পল্লী উন্নয়ন, অন্যান্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ, ডিজিটাল বাংলাদেশ ও নারী ক্ষমতায়নের উপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছেন। দীর্ঘমেয়াদী মলধন সংগ্রহের অন্যতম মাধ্যম হলো দেশের পুঁজিবাজার।

তাই “জীবন-জীবিকায় প্রাধান্য দিয়ে সদঢ় আগামীর পথে বাংলাদেশ” শীর্ষক প্রস্তাবিত বাজেটে দেশের পজিবাজার সরকারের কাঙ্খিত লক্ষ্যে এগিয়ে যাবে এই প্রত্যাশায় ডিএসই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আবারও কৃতজ্ঞচিত্তে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছে।

পুঁজিবাজারে সিমেন্ট ও প্রকৌশলী খাতের বিনিয়োগকারীদের সুখবর: ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সিমেন্ট ও স্টিল শিল্পে আগাম কর প্রত্যাহারের প্রস্তাব করা হয়েছে। এর ফলে রড-সিমেন্টসহ বেশ কিছু নির্মাণসামগ্রীর দাম কমবে। বৃহস্পতিবার (৩ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এ প্রস্তাব করেন।

অর্থমন্ত্রীর বাজেট প্রস্তাবে বলা হয়, বাজেটে সিমেন্ট ও স্টিল শিল্পে আগাম কর প্রত্যাহার করার কারণে সিমেন্ট, স্টিল, রড ইত্যাদি নির্মাণসামগ্রীর দাম কমবে। পাশাপাশি লৌহজাত পণ্য প্রস্তুতে ব্যবহার্য কতিপয় কাঁচামাল, স্ক্র্যাপ ভেসেল ও পিভিসি, পিইটি রেইজিন উৎপাদনের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত ইথানল গ্লাইকোলসহ বিভিন্ন পণ্যে আগাম কর অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদ ভবনে বিশেষ বৈঠকে মন্ত্রিসভা নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়। করোনা সংক্রমণজনিত কারণে মন্ত্রিসভার সীমিত সংখ্যক সদস্য এ বিশেষ অধিবেশনে অংশ নেন। এরপর বিকেল ৩টায় জাতীয় সংসদের অধিবেশনে বাজেট বক্তৃতার মাধ্যমে প্রস্তাবিত বাজেট পেশ শুরু করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। অর্থমন্ত্রী হিসেবে এটি তার তৃতীয় বাজেট।

দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ঘাটতি বাজেট হতে যাচ্ছে ৫০তম এ বাজেট। ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার আলোচিত এই বাজেটে অনুদানসহ ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে ২ লাখ ১১ হাজার ১৯১ কোটি টাকা। যা জিডিপির ৬ দশমিক ১ শতাংশ। অনুদান বাদ দিলে ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়ায় ২ লাখ ১৪ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা।

৩০ কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস তুলে নিলো বিএসইসি: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আরও ৩০ কোম্পানি থেকে ফ্লোর প্রাইসের (পতনের সর্বনিম্ন সীমা) নির্দেশনা প্রত্যাহার করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। যা রোববার (৬ জুন) থেকে কার্যকর হবে।

আজ বৃহস্পতিবার (৩ জুন) বিএসইসি এই বিষয়ের একটি নির্দেশনা জারি করেছে। বিএসইসি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। এর আগে গত ৭ এপ্রিলে ৬৬টি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া হয়। করোনা পরিস্থিতিজনিত আতঙ্কের কারণে পুঁজিবাজারে ব্যাপক দরপতন শুরু হলে গতবছরের ১৯ মার্চ বিএসইসি ওই ফ্লোর প্রাইস আরোপ করেছিল।।

ফ্লোর প্রাইস তুলে নিলেও যাতে আলোচিত ৩০ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেশি কমতে না পারে, সে লক্ষ্যে সার্কিটব্রেকারে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। আলোচিত কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম ২ শতাংশের বেশি কমতে পারবে না। তবে দর বৃদ্ধির ক্ষেত্রে স্বাভাবিক সার্কিটব্রেকার (১০%) প্রযোজ্য থাকবে। ফ্লোর প্রাইসের নির্দেশনা প্রত্যাহার করে নেওয়া কোম্পানিগুলো হচ্ছে:

ব্লক মার্কেটে দুই কোম্পানির লেনদেনের চমক: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ব্লক মার্কেটে ৩৪টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব কোম্পানির ৭০ কোটি ৬৮ লাখ ৯০ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। কোম্পানিগুলোর ১ কোটি ৪২ লাখ ৪৬ হাজার ১৫১টি শেয়ার ৯৪ বার হাত বদল হয়েছে। এর মাধ্যমে কোম্পানিগুলোর ৭০ কোটি ৬৮ লাখ ৯০ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে।

কোম্পানিগুলোর মধ্যে ২ কোম্পানির বিশাল লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি শেয়ার লেনদেন হয়েছে প্রভাতী ইন্সুরেন্সের। কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩৬ কোটি ৩ লাখ ৮১ হাজার টাকার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ১৩ কোটি ৭৭ লাখ টাকার।

এছাড়া পাইওনিয়ার ইন্সুরেন্সের ৫ কোটি ৮১ লাখ ৬৬ হাজার টাকার, গ্রিন ডেলটা ইন্সুরেন্সের ৪ কোটি ১০ লাখ ১৪ হাজার টাকার, ইস্টার্ন ইন্সুরেন্সের ১ কোটি ৭ লাখ ২ হাজার টাকার, ন্যাশনাল হাউজিংয়ের ১ কোটি ৩ লাখ ১৪ হাজার টাকার, স্কয়ার ফার্মার ১ কোটি ১ লাখ ৯৮ হাজার টাকার, এনআরবিসি ব্যাংকের ৯১ লাখ ৮৬ হাজার টাকার, ন্যাশনাল পলিমারের ৮৬ লাখ ৭৩ হাজার টাকার, ন্যাশনাল ফিড মিলের ৮৬ লাখ ৫০ হাজার টাকার, ফরচুন সুজের ৬৬ লাখ ৫৭ হাজার টাকার, সাফকো স্পিনিংয়ের ৬৫ লাখ ২৮ হাজার টাকার, প্রাইম ইন্সুরেন্সের ৪৪ লাখ ১৮ হাজার টাকার,

স্টান্ডার্ড ইন্সুরেন্সের ৪১ লাখ ৩৫ হাজার টাকার, এসকে ট্রিমসের ৪০ লাখ ৮২ হাজার টাকার, প্রাইম ব্যাংকের ৩৭ লাখ ৬৫ হাজার টাকার, বীকন ফার্মার ৩২ লাখ ১০ হাজার টাকার, ক্রীস্টাল ইন্সুরেন্সের ২৬ লাখ টাকার, ডিবিএইচের ২১ লাখ ৩ হাজার টাকার, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল ১৮ লাখ ৩৪ হাজার টাকার, জেনেক্স ইনফোসিসের ১৬ লাখ ৮৭ হাজার টাকার, ঢাকা ইন্সুরেন্সের ১৬ লাখ ৫৬ হাজার টাকার,

সিএপিএমআইবিবিএল মিউচুয়াল ফান্ডের ১১ লাখ ৫০ হাজার টাকার, আরডি ফুডের ১০ লাখ ২২ হাজার টাকার, ওরিয়ন ইনফিউশনের ১০ লাখ টাকার, জিবিবি পাওয়ারের ৯ লাখ ২৮ হাজার টাকার, সিটি জেনারেল ইন্সুরেন্সের ৮ লাখ ৯৮ হাজার টাকার,

এবি ব্যাংকের ৭ লাখ ৪০ হাজার টাকার, এপেক্স ট্যানারী ৭ লাখ ৩৫ হাজার টাকার, ফার ইস্ট লাইফের ৬ লাখ ১৭ হাজার টাকার, এশিয়া ইন্সুরেন্সের ৫ লাখ ৮৩ হাজার টাকার, হাক্কানী পাল্পের ৫ লাখ ৩৪ হাজার টাকার, এডিএন টেলিকমের ৫ লাখ ১৭ হাজার টাকার এবং বিডি ফাইন্যান্সের ৫ লাখ ৭ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।

প্রস্তাবিত বাজেটে সিমেন্ট খাতের জন্য সুখবর: ২০২১-২২ সালের প্রস্তাবিত বাজেটে সিমেন্ট উৎপাদনে ব্যবহৃত কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে করহার ৩ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় সংসদে উপস্থাপিত বাজেটে এ প্রস্তাব দেন অর্থমন্ত্রী।

তিনি বলেন, যে কোনো ভৌত অবকাঠামো নির্মাণের অন্যতম উপকরণ সিমেন্ট, লোহা ও লোহাজাত পণ্য। এসব পণ্য উৎপাদনে নিয়োজিত শিল্প প্রতিষ্ঠানকে কর সুবিধা দেয়া হলে ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ সহজ ও সাশ্রয়ী হবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সিমেন্ট উৎপাদনে ব্যবহৃত কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে করহার ৩ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২ শতাংশ করার প্রস্তাব করেন তিনি।

একই সঙ্গে সিমেন্ট, লোহা ও লোহাজাত পণ্য সরবরাহের বিপরীতে উৎসে কর কর্তনের হারও ৩ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়। এর ফলে দেশে এসব শিল্পের আরো বিকাশ হবে বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী। পাশাপাশি এরা দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নেও অবদান রাখবে বলে তার প্রত্যাশা।

পুঁজিবাজারকে উজ্জীবিত করতে শীঘ্রই কিছু পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করা হবে: সরকার পুঁজিবাজারকে গতিশীল ও উজ্জীবিত করার লক্ষ্যে নানা সংস্কারমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেছে। এছাড়া যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আরও কিছু পদক্ষেপ শীঘ্রই বাস্তবায়ন করা হবে। বৃহস্পতিবার (০৩ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃত্বায় অর্থমন্ত্রী আ.হ.ম মুস্তফা কামাল এ কথা বলেছেন।

তিনি বলেন, শেয়ারবাজারে ট্রেজারি বন্ডের লেনদেন চালু করা হবে। এছাড়া আধুনিক শেয়ারবাজারের বিভিন্ন ইন্সট্রুমেন্টের মধ্যে সুকুক, ডেরিভেটিভস, অপশনসের লেনদেন চালু, ওটিসি বুলেটিন বোর্ড চালু, ইটিএফ চালু এবং ওপেন ইন্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ড তালিকাভুক্ত করা হবে। এছাড়া কর্পোরেট কর হার কমানোর বিষয়টি বিবেচনায় রয়েছে বলে জানান অর্থমন্ত্রী। যা বাস্তবায়নের মাধ্যমে ভালো কোম্পানি শেয়ারবাজারে আসবে।

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির কর হার কমানোর প্রস্তাব: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির (ব্যাংক, বীমা,এনবিএফআই, টেলিকম ও তামাকজাত ব্যতিত) কর হার কমানোর প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ.হ.ম মুস্তফা কামাল। বিদ্যমান ২৫ শতাংশের কর হার কমিয়ে ২২.৫০ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছেন। বৃহস্পতিবার (০৩ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে তিনি এই প্রস্তাব করেছেন।

বাজেটে তালিকাভুক্ত কোম্পানির পাশাপাশি অতালিকাভুক্ত কোম্পানির কর হার কমানোরও প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। এতে গতবারের ৩২.৫০ শতাংশ কর হার কমিয়ে ৩০ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছেন। এবারের বাজেটে তালিকাভুক্ত ব্যাংক, বীমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, মার্চেন্ট ব্যাংক, তামাকজাত পণ্য প্রস্তুতকারী কোম্পানি ও মোবাইল ফোন কোম্পানির কর হার অপরিবর্তিত রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।

বিভিন্ন বীমা চালুর উদ্যোগ গ্রহণ নেওয়া হয়েছে: বীমা সেবাকে জনবান্ধব ও কল্যাণমুখী করার জন্য বিভিন্ন বীমা চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (০৩ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আ.হ.ম মুস্তফা কামাল এ কথা বলেছেন।

তিনি বলেন, বীমা সেবাকে জনবান্ধব ও কল্যাণমুখী করার জন্য প্রবাসী বীমা, কৃষি বীমা, স্বাস্থ্য বীমা, গবাদিপশু বীমা, হাওড় এলাকার জন্য শস্য বীমা চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া দারিদ্র নিরসনে ক্ষুদ্র বীমা চালুর সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, দরিদ্র নারীদেরকে ক্ষুদ্র বীমারা আওতায় এনে নারীর ক্ষমতায়ন বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া বীমা খাতে অটোমেশনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে অভিন্ন ‘নো ইওর কাস্টমার (কেওয়াইসি) পদ্ধতি চালু করা হয়েছে।

প্রস্তাবিত বাজেটে করমুক্ত আয়সীমা তিন লাখ টাকা: ২০২১-২০২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে করমুক্ত আয়সীমা আগের মতোই থাকছে। আগামী বছর করমুক্ত আয়সীমা হবে তিন লাখ টাকা করা হয়েছে। তিন লাখ টাকা পর্যন্ত আয় হলো কোন কর দিতে হবে না।

বৃহস্পতিবার (৩ জুন) জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনে ২০২১-২০২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এ তথ্য জানান। অধিবেশনের সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২১-২২ অর্থবছরের যে বাজেট উপস্থাপন করেন, তাতে এই প্রস্তাব রয়েছে। করোনা মহামারি শুরুর পর প্রথম বাজেটে (২০২০-২১) করমুক্ত আয়সীমা ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ লাখ টাকা করেছিলেন অর্থমন্ত্রী।

এর আগে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে করমুক্ত আয়সীমা ২ লাখ ২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছিল। তারপর চার বছর করমুক্ত আয়সীমা আড়াই লাখ টাকাই ছিল। সাধারণত চার-পাঁচ বছর পরপর জীবনযাত্রার ব্যয় ও মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় এই সীমা বাড়ানো হয়।

বিদায়ী ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজটে নারী ও ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের করমুক্ত আয়সীমা ৩ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা করেছিলেন অর্থমন্ত্রী। এবারও সেটাই রেখেছেন তিনি।

বিদায়ী বাজেট অনুযায়ী, ৩ লাখ টাকা আয়কর দিতে হয় না। পরবর্তী ১ লাখ টাকা পর্যন্ত মোট আয়ে কর দিতে হয় ৫ শতাংশ হারে, তার পরবর্তী ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত মোট আয়ে কর দিতে হয় ১০ শতাংশ হারে, পরবর্তী ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত আয়ে কর দিতে হয় ১৫ শতাংশ হারে, তার পরবর্তী ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত আয়ে কর দিতে হয় ২০ শতাংশ হারে। এর চেয়ে বেশি আয়ের জন্য ২৫ শতাংশ হারে কর প্রযোজ্য হচ্ছে।

বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘২০২০-২১ অর্থবছরে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের করহার উল্লেখযোগ্যভাবে কমানোর কারণে ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য ব্যক্তিশ্রেণির করদাতার জন্য বিদ্যমান করহার অপরিবর্তিত রাখার প্রস্তাব করছি। ‘ব্যক্তিশ্রেণির করদাতার জন্য বিদ্যমান এই করহার তৃতীয় লিঙ্গের করদাতাদের জন্যও প্রযোজ্য ছিল। তৃতীয় লিঙ্গের করদাতাদের সামাজিক আত্তীকরণের লক্ষ্যে বিশেষ বিধান চালুর পাশাপাশি তাদের করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করছি।’

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান সরকার ব্যবসা সহজীকরণ ও ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। বিশেষ করে ব্যক্তিশ্রেণির ব্যবসায়ী করদাতাদের করদায় লাঘবে সরকার সদা তৎপর। এ লক্ষ্যে ব্যক্তি করদাতাদের ব্যবসায়িক টার্নওভার করহার হ্রাস করে ০.৫ শতাংশের পরিবর্তে ০.২৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করছি।’

লভ্যাংশ দেওয়ার সক্ষমতা বাড়ছে তালিকাভুক্ত কোম্পানির: ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে তালিকাভুক্ত কোম্পানির কর হার আড়াই শতাংশ কমানোর প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বৃহস্পতিবার (৩ জুন) জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনে ২০২১-২০২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট বক্তৃতায় এ প্রস্তাব করেন। অধিবেশনের সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। এই প্রস্তাব কার্যকর হলে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর লভ্যাংশ দেওয়ার সক্ষমতা বাড়বে বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোকে বর্তমানে ২৬ শতাংশ কর দিতে হবে। প্রস্তাবিত বাজেটে এটি করা হয়েছে ২২ দশমিক ৫০ শতাংশ। প্রস্তাব কার্যকর হলে আড়াই শতাংশ কর কমবে। ফলে কোম্পানির কর পরবর্তী আয় আগের তুলনায় বাড়বে। এতে করে লভ্যাংশ বাড়তি দেওয়ারও সক্ষমতা তৈরি হবে।

আইডিআরের লাইসেন্স ছাড়াই গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্সের এজেন্টস কাজ করছে: বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) লাইসেন্স ছাড়াই গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্সের কিছু প্রতিনিধি (এজেন্টস) কাজ করছে বলে জানিয়েছেন নিরীক্ষক। কোম্পানিটির ২০২০ সালের আর্থিক হিসাব নিরীক্ষায় এই তথ্য জানিয়েছেন নিরীক্ষক।

নিরীক্ষক জানিয়েছেন, গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্সে ১১৫ জন এজেন্টস কাজ করছে। এরমধ্যে ১০৫ জনের নবায়নকৃত লাইসেন্স ছিল। বাকি ১০ জন এখনো নবায়নকৃত লাইসেন্স পাননি। এদিকে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ কর্মীদের গ্রাচ্যুইটি ফান্ড ও শ্রমিক কল্যাণ ফান্ডের জন্য কোন সঞ্চিতি গঠন করেনি বলে জানিয়েছে নিরীক্ষক।

উল্লেখ্য ১ জুন কোম্পানিটির পর্ষদ ১০ শতাংশ বা শেয়ারপ্রতি ১ টাকা করে নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এই লভ্যাংশ ঘোষণার পরে শেয়ারটি টানা দর বৃদ্ধি পাচ্ছে। এরইমধ্যে ১ টাকার লভ্যাংশের জন্য ১৭ টাকা দর বেড়েছে। কোম্পানিটির লভ্যাংশ ঘোষণার সময় শেয়ার দর ছিল ৫৬.১০ টাকা। যে শেয়ারটি আজ দুপুর ১২.৫২ টায় ৭৩ টাকায় লেনদেন হচ্ছে।

সাত কোম্পানির শেয়ার বিক্রেতা উধাও: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত পাঁচ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট বিক্রেতা শুন্য হয়ে গেছে।। আজ লেনদেন চলাকালীন সময় কোম্পানিগুলোর শেয়ার বিক্রেতা শূন্য হয়ে পড়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্যজানা গেছে। কোম্পানিগুলোর হলো : সোনারবাংলা ইন্স্যুরেন্স, গ্লোবাল ইন্স্যুরন্স, ঢাকা ইন্স্যুরেন্স, রূপালী ইন্স্যুরেন্স এবং ফরচুন সুজ, ফেডারেল ইন্সুরেন্স ও গ্রীন ডেল্টা।

জানা গেছে, বুধবার সোনারবাংলা ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ৮৯.২০ টাকায়। আজ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে ৮৯.৬০ টাকায়। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৯৮.১০ টাকায়। অর্থাৎ আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর ৮.৯০ টাকা বা ৯.৯৭ শতাংশ বেড়েছে।

ঢাকা ইন্স্যুরেন্স : ঢাকা ইন্স্যুরেন্সের বুধবার শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ৮৬.৪০ টাকায়। আজ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে ৮৮.৪০ টাকায়। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৯৫ টাকায়। অর্থাৎ আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর ৮.৬০ টাকা বা ৯.৯৫ শতাংশ বেড়েছে।

গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্স : বুধবার গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ৬৬.৪০ টাকায়। আজ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে ৬৫.৬০ টাকায়। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৭৩ টাকায়। অর্থাৎ আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর ৬.৬০ টাকা বা ৯.৯৪ শতাংশ বেড়েছে।

রূপালী ইন্স্যুরেন্স: বুধবার রূপালী ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ৪৫.৮০ টাকায়। আজ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে ৫০.৩০ টাকায়। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৫০.৩০ টাকায়। অর্থাৎ আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর ৪.৫০ টাকা বা ৯.৮২ শতাংশ বেড়েছে।

ফরচুন সুজ : বুধবার ফরচুন সুজের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ২৩.৭০ টাকায়। আজ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে ২৬ টাকায়। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৬ টাকায়। অর্থাৎ আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর ২.৩০ টাকা বা ৯.৭০ শতাংশ বেড়েছে।

রোববার তিন কোম্পানির লেনদেন বন্ধ থাকবে: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত তিন কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট রবিবার (৬ জুন) লেনদেন বন্ধ থাকবে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জান গেছে। কোম্পানি তিনটি হলো : ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক এবং স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক। জানা গেছে, রেকর্ড ডেট সংক্রান্ত কারণে কোম্পানি তিনটির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন রবিবার বন্ধ থাকবে। আর রেকর্ড ডেটের পর ০৭ জুন (সোমবার) কোম্পানিগুলোর লেনদেন আবার যথানিয়মে শুরু হবে।

যমুনা ব্যাংকের উদ্যোক্তার ৩০ লাখ শেয়ার বিক্রির ঘোষণা: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত যমুনা ব্যাংকের এক উদ্যোক্তা ৩০ লাখ শেয়ার বিক্রির ঘোষণা দিয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। জানা গেছে, উদ্যোক্তা আরিফুর রহমানের কাছে কোম্পানিটির ৫৩ লাখ ৪৩ হাজার ৩৮২টি শেয়ার রয়েছে। এখান থেকে তিনি ৩০ লাখ শেয়ার বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে ঘোষণাকৃত শেয়ার বিক্রি সম্পন্ন করবেন কোম্পানিটির এই উদ্যোক্তা।

বোনাস শেয়ার ইস্যুতে আসছে নতুন বিধিনিষেধ: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির ৫ ক্ষেত্রে বোনাস শেয়ার ইস্যুতে বিধিনিষেধ দিতে যাচ্ছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। শিগগিরই এ সংক্রান্ত সার্কুলার জারি হতে পারে বলে জানা গেছে। বিএসইসির একটি সূত্র বিষয়টি জানিয়েছে।

সূত্রমতে, যে ৫টি ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আসছে তা হলো:

১. কোন কোম্পানি আইপিও থেকে সংগৃহীত অর্থ ব্যবহৃত না হওয়া পর্যন্ত বোনাস শেয়ার ইস্যু করতে পারবে না।

২. কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার ৩ বছরের মধ্যে কোন বোনাস শেয়ার ইস্যু করতে পারবে না।

৩. রাইট শেয়ার ইস্যু করার পর পরবর্তী ৩ বছরের মধ্যে কোন বোনাস শেয়ার ইস্যু করতে পারবে না।

৪. কোন কোম্পানির উৎপাদন বন্ধ থাকলে বোনাস শেয়ার ইস্যু করতে পারবে না।

৫. জেড ক্যাটাগরির কোম্পানি ও ওটিসি মার্কেটে বেচাকেনা হয় সেসব কোম্পানি, সেসব কোম্পানি বোনাস শেয়ার ইস্যু করতে পারবে না।