দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: আগের সপ্তাহের মতো বিদায়ী সপ্তাহও উত্থানে পার করেছে দেশে পুঁজিবাজার। সপ্তাহটিতে শেয়ারবাজারের সব সূচক বেড়েছে। একই সাথে বেড়েছে টাকার পরিমাণে লেনদেন এবং বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর। উত্থানের কারণে বিনিয়োগকারীরা সপ্তাহটিতে আরো ছয় হাজার কোটি টাকা ফিরে পেয়েছে।

জানা গেছে, সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস লেনদেন শুরুর আগে ডিএসইতে বাজার মূলধন ছিল ৫ লাখ ২ হাজার ৭৪৩ কোটি ৫০ লাখ ২৮ হাজার টাকায়। আর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস লেনদেন শেষে বাজার মূলধন দাঁড়ায় ৫ লাখ ৮ হাজার ৯৪৭ কোটি ৪৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বিনিয়োগকারীরা ছয় হাজার ২০৩ কোটি ৯৫ লাখ ৪৭ হাজার টাকা বাজার মূলধন ফিরে পেয়েছে।

বিদায়ী সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ১০ হাজার ২৫৮ কোটি ৬৫ লাখ ৬৯ হাজার ৫০৯ টাকার লেনদেন হয়েছে। আর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৭ হাজার ৬৮৩ কোটি ৭৮ লাখ ৭৩ হাজার ১১৫ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেন ২ হাজার ৫৭৪ কোটি ৮৬ লাখ ৯৬ হাজার ৩৯৪ টাকা বা ৩৩.৫১ শতাংশ বেড়েছে।

সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৬৭.৬১ পয়েন্ট বা ১.১৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৫৩.৪৩ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ৮.১৬ পয়েন্ট বা ০.৬৪ শতাংশ এবং ডিএসই-৩০ সূচক ১৩.৮৫ পয়েন্ট বা ০.৬৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়ে যথাক্রমে ১ হাজার ২৯৩.১৭ পয়েন্ট এবং ২ হাজার ২০৩.৫৯ পয়েন্টে।

বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৭১টি প্রতিষ্ঠান শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ১৯২টির বা ৫১.৭৫ শতাংশের, কমেছে ১৩০টির বা ৩৫.০৪ শতাংশের এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৯টির বা ১৩.২১ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ৩৭৮ কোটি ৩২ লাখ ৪২ হাজার ৭৩৫ টাকার। আর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৪৪৪ কোটি ১১ হাজার ৯৪৪ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে লেনদেন ৬৫ কোটি ৬৭ লাখ ৬৯ হাজার ২০৯ টাকা বা ১৪.৭৯ শতাংশ কমেছে।

সপ্তাহটিতে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৯৬.০৮ পয়েন্ট বা ১.১৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৫৪৩.৪৮ পয়েন্টে। সিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে সিএসসিএক্স ১১৯.৫৩ পয়েন্ট বা ১.১৪ শতাংশ, সিএসই-৩০ সূচক ৮৫.৮৬ পয়েন্ট বা ০.৬৬ শতাংশ, সিএসই-৫০ সূচক ১.৯৫ পয়েন্ট বা ০.১৫ শতাংশ এবং সিএসআই ৬.৮৬ পয়েন্ট বা ০.৬৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১০ হাজার ৫৭৪.০৬ পয়েন্ট, ১৩ হাজার ৯০.৮৮ পয়েন্টে, ১ হাজার ২৯৫.৭৭ পয়েন্টে এবং সিএসআই ১ হাজর ৫৫.৬৬ পয়েন্টে।

সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে ৩২৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১৭৭টির বা ৫৩.৮০ শতাংশের দর বেড়েছে, ১১৭টির বা ৩৫.৫৬ শতাংশের কমেছে এবং ৩৫টির বা ১০.৬৪ শতাংশের দর অপরিবর্তিত রয়েছে।

কালো টাকার সুযোগ আবারও থাকতে পারে ইঙ্গিত অর্থমন্ত্রীর: অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার পক্ষে বা বিপক্ষে উভয় ধরনের মতামত থাকার কথা জানিয়ে এমন সুযোগ আবারও থাকতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। আজ শুক্রবার ভার্চুয়াল মাধ্যমে বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী বলেন, অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার সুযোগ দেওয়া যদি লাভজনক হয়, তাহলে অব্যাহত রাখার জন্য আলোচনা করা হবে।

মুস্তফা কামাল বলেন, অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার সুযোগের কেউ পক্ষে আবার কেউ বিপক্ষে রয়েছে। তিনি বলেন, “অনেকে বলছেন এক্ষেত্রে সমাজের ইকুইটির জাস্টিস এনশিউর করা যাবে না যদি এটি অব্যাহত থাকে। তাই বিষয়টি বিবেচনা করে আমরা আরো একমাস এইটা দেখবো। তারপর আলোচনা হবে।”

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২১-২০২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে কালো টাকা সাদা বা বৈধ করার বিষয়ে কিছু বলেননি অর্থমন্ত্রী। আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের অর্থবিলেও এই বিষয়ে কিছু উল্লেখ করা হয়নি।

এর আগে গত ১৯ মে এক বৈঠকে শেষে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “ওটা কালো টাকা নয়, অপ্রদর্শিত টাকা। যতদিন প্রদর্শিত না হবে, ততদিন কন্টিনিউ করবে। আমাদের সিস্টেমের কারণে অনেক সময় অপ্রদর্শিত টাকা সিস্টেমে চলে আসে।

শুক্রবার কোথাও কোনো ঘোষণা বা প্রস্তাব বা কিছু উল্লেখ না থাকায় আগামী অর্থবছরে অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার বিদ্যমান অবাধ সুযোগ থাকছে কিনা একজন সাংবাদিক জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, “দুই সপ্তাহ আগে যখন আমরা এমন বলেছিলাম, তখন আমাদের কাছে পর্যাপ্ত তথ্য ছিল না।

মুস্তফা কামাল বলেন, “আমাদের প্রফিটেবলিটি যাচাই করতে হবে। যদি এটি প্রফটেবল হয়, তাহলে এটি অব্যাহত রাখার জন্য আমরা আলোচনা করবো। এখন এই মুহূর্তে এইটা নিয়ে মিশ্র ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া দুইটাই আছে।”

তিনি আরো বলেন, “কেউ বলে এইটা রাখতে, কেউ আবার না রাখতে বলেন। অনেকে বলছেন এক্ষেত্রে সমাজের ইকুইটির জাস্টিস এনশিউর করা যাবে না যদি এটি অব্যাহত থাকে। তাই বিষয়টি বিবেচনা করে আমরা আরো একমাস এইটা দেখবো। তারপর আলোচনা হবে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, “এর ভালো খারাপ দুইটি দিকই আছে। ভালো দিক হচ্ছে এই টাকাটা এই টাকাটা কোনো সিস্টেমে নাই, আমরা ব্যবহার করতে পারি না। যদি এটি প্রদর্শিত আয় হয়ে ঘুরে আসে তাহলে অর্থনীতিতে এর প্রভাব সুদূরপ্রসারী হবে।” অর্থমন্ত্রী অপর এক প্রশ্নে মুস্তফা কামাল বলেন, “কালো টাকা নিয়ে আমি কখনও কথা বলি নাই। আমাদের বাজেটে আমরা যে অ্যাপ্রুভেশনে গেছিলাম সেটা হল অপ্রদর্শিত আয়।

তিনি বলেন, “কালো টাকা দুর্নীতির মাধ্যমে সৃষ্টি হয়। আর অপ্রদর্শিত আয়ের টাকাটা সিস্টেম লসের কারণে সৃষ্টি হয়। আমরা এখন ট্যাক্স রেট করে রাখলাম ৫০%, ৫৫%, ৬০%। এটা অনেক অন্যায় করা হয়েছে এদেশের মানুষের সাথে, বিশেষ করে ব্যবসায়ীদের সাথে।”

বাজেটে অনেক সমস্যা সমাধান করা হয়েছে দাবি করে অর্থমন্ত্রী বলেন, “এখানে কোনো এক সময় ছিল ‘স্কয়ার ইনকাম ট্যাক্স’। যারা বেশি ইনকাম করবে, তাদেরকে আরও বেশি ট্যাক্স দিতে হবে। অথচ উল্টাটা হওয়ার কথা ছিল।

তিনি বলেন, “সীমিত সম্পদকে এক্সপ্লয়েট করে ম্যাক্সিমাম আয় যারা করবে, তাদেরকে আরও বেশি সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়ার দরকার ছিল। কিন্তু সেটা না করে যারা বেশি আয় করে, তাদের বেশি করে ট্যাক্স দেওয়া হল। এটা করা উচিত না।“ এ বিষয়গুলো বিবেচনা করা যেখানে অসুবিধা ছিল সেগুলো দূর করে এবং সহজ করার মাধ্যমে আরও সার্বজনীন করার চেষ্টা করা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

নতুন করে কালো টাকা সাদা করার ঘোষণা না দেওয়ায় সরকারকে ‘সতর্ক সাধুবাদ’ জানিয়েছে দুর্নীতি বিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবি। দেশের অর্থনীতির বিরাট অংকের অর্থ কালো টাকা হিসেবে রয়েছে বলে বিভিন্ন সময় গবেষক ও অর্থনীতি বিশ্লেষকরা দাবি করে আসছেন।

এসব অর্থই মূলস্রোতে আনার যুক্তি দেখিয়ে মাঝেমাঝেই ‘প্রশ্নহীনভাবে’ কালো টাকা সাদা করার সুযোগ করে দেয়া হয় বলে তাদের সমালোচনা। এতে সৎ করদাতারা নিরুসাহিত হন বলে তারা এই সুযোগ না দিতে বরাবরই সরকারকে আহ্বান জানিয়ে আসছেন।

সপ্তাহজুড়ে সাত কোম্পানির লভ্যাংশ ঘোষণা, নো ১টি: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৭ কোম্পানি বিদায়ী সপ্তাহে লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। তবে ৬ কোম্পানির লভ্যাংশ ঘোষণা করলেও ইউনিয়ন ক্যাপিটাল নো ডিভিডেন্ড ঘোষণা করছে। কোম্পানিগুলো ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ফনিক্স ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড: কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১৫ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় বা ইপিএস হয়েছে ২ টাকা ৩৩ পয়সা। আগের বছর ছিল ২ টাকা ৩১ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য ছিল ৩৯ টাকা ১০ পয়সা।

আগামী ১১ আগস্ট, বুধবার বেলা আড়াইটায় ডিজিটাল প্ল্যাটফরমের মাধ্যমে কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ জুন।

বাটা সু (বাংলাদেশ) লিমিটেড: কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ২৫ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ৯৬ টাকা ৯৪ পয়সা। আগের বছর ইপিএস ৩৬ টাকা ১১ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ২৬৭ টাকা ৯৪ পয়সা। আগামী ১২ আগস্ট সকাল ১১টায় ডিজিটাল প্ল্যাটফরমের মাধ্যমে কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ২২ জুন।

এশিয়া ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড: কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১২ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় বা ইপিএস হয়েছে ২ টাকা ৩৪ পয়সা, যা আগের বছর ১ টাকা ৬০ পয়সা ছিল।

আলোচিত বছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি ক্যাশ ফ্লো ছিল ৫ টাকা ৯৯ পয়সা, যা আগের বছর ২ টাকা ৭১ পয়সা ছিল। ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য ছিল ২০ টাকা ৬২ পয়সা। আগের বছর ছিল ১৯ টাকা ৫০ পয়সা।

আগামী ২ আগস্ট সোমবার বেলা ১২টায় ডিজিটাল প্ল্যাটফরমের মাধ্যমে কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ২২ জুন ।

গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড: কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে এক টাকা ৫৩ পয়সা। আগের বছর একই সময় যার পরিমাণ ছিল ৯৬ পয়সা (রিস্টেটেড)।

আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নেট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো (এনওসিএফপিএস) ৪ টাকা ৮৯ পয়সা। আগের বছর একই সময় যার পরিমাণ ছিল ৩ টাকা ৪৫ পয়সা (রিস্টেটেড)। এ সময়ে শেয়ার প্রতি সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ১২ টাকা ৭৫ পয়সা। আগের বছর একই সময় যার পরিমাণ ছিল ১১ টাকা ৬৯ পয়সা (রিস্টেটেড)।

আগামী ২৪ আগস্ট বেলা ১১টায় ডিজিটাল প্ল্যাটফরমের মাধ্যমে কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ২২ জুন।

প্রগতি ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড: কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ৩০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় বা ইপিএস হয়েছে ৪ টাকা ৭ পয়সা, যা আগের বছর ৩ টাকা ১৯ পয়সা ছিল।

আলোচিত বছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি ক্যাশ ফ্লো ছিল ৮ টাকা ৫৩ পয়সা, যা আগের বছর ৫ টাকা ৫৭ পয়সা ছিল। ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য ছিল ৫৩ টাকা ৫১ পয়সা। আগের বছর ছিল ৫০ টাকা ৬৩ পয়সা।

আগামী ২৬ আগস্ট সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় ডিজিটাল প্ল্যাটফরমের মাধ্যমে কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ জুন।

নর্দার্ন ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড: কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে এক টাকা ৭৪ পয়সা। আগের বছর একই সময় যার পরিমাণ ছিল এক টাকা ৭২ পয়সা।

আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নেট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো (এনওসিএফপিএস) ৬ টাকা ৫৩ পয়সা। আগের বছর একই সময় যার পরিমাণ ছিল ৩ টাকা ২৭ পয়সা (রিস্টেটেড)। এ সময়ে শেয়ার প্রতি সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ২০ টাকা ২৪ পয়সা। আগের বছর একই সময় যার পরিমাণ ছিল ১৯ টাকা ৪৯ পয়সা (রিস্টেটেড)। আগামী ৭ আগস্ট বেলা ১১টায় ডিজিটাল প্ল্যাটফরমের মাধ্যমে কোম্পানিটির ২১তম বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ২৩ জুন।

ইউনিয়ন ক্যাপিটাল লিমিটেড: কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ‘নো ডিভিডেন্ড’ ঘোষণা করেছে। সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় সমন্বিত লোকসান হয়েছে ৩ টাকা ৮ পয়সা। আগের বছর একই সময় লোকসান ৬ ছিল ১৩ পয়সা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নেট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো (এনওসিএফপিএস)৬৫ পয়সা (নেগেটিভ)। আগের বছর একই সময় ছিল ৪ টাকা ৯৩ পয়সা (নেগেটিভ)।

এ সময়ে শেয়ার প্রতি সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ৪ টাকা ১২ পয়সা)। আগের বছর একই সময় যার পরিমাণ ছিল ৭ টাকা ২১ পয়সা। আগামী ২৮ আগস্ট বেলা ১১টায় ডিজিটাল প্ল্যাটফরমের মাধ্যমে কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ২২ জুন।

সপ্তাহজুড়ে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের শীর্ষে ৫ কোম্পানি: বিদায়ী সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সাপ্তাহিক লেনদেনের শীর্ষে ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড, পাইওনিয়ার ইন্সুরেন্স, ইফাদ অটোস, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, ডাচবাংলা ব্যাংক, নর্দার্ন ইন্সুরেন্স, এবি ব্যাংক, কনফিডেন্স সিমেন্ট, লাফার্জ হোলসিম এবং গ্রিন ডেলটা ইন্সুরেন্স। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

আলোচ্য সপ্তাহে শীর্ষ লেনদেনের কোম্পানিগুলোর লেনদেন যেমন বেড়েছে, শেয়ার দরও তেমনি বেড়েছে। তবে দর বৃদ্ধিতে এগিয়ে ছিল পাইওনিয়ার ইন্সুরেন্স, ইফাদ অটোস, ডাচবাংলা ব্যাংক, নর্দার্ন ইন্সুরেন্স এবং গ্রিন ডেলটা ইন্সুরেন্স। শেয়ার কেনার চাপ থাকায় সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিগুলোর দর বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। সপ্তাহের শেষদিনও কোম্পানিগুলোর দর চাঙ্গা ছিল।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোম্পানিগুলোর শেয়ারে বড় বিনিয়োগকারীদের বাই প্রেসার বেশি ছিল। সে কারণে কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় ছিল। আগামী রোববার থেকে কোম্পানিগুলোর শেয়ারে যদি বড় বিনিয়োগকারীরা বাই মুডে থাকে, তাহলে দর বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। আর যদি সেল মুডে থাকে, তাহলে কোম্পানিগুলোর দর সংশোধনে ফিরবে।

পাইওনিয়ার ইন্সুরেন্স: গেল সপ্তাহে পাইওনিয়ার ইন্সুরেন্সের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৪৪ কোটি ৮ লাখ ৮ হাজার টাকার। সাপ্তাহিক লেনদেনের তালিকায় এই কোম্পানির অবস্থান ছিলো দ্বিতীয়। বিদায়ী সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে কোম্পানিটির উদ্বোধনী দর ছিল ১৩৬. টাকা ১০ পয়সা। আর শেষ কার্যদিবসে ক্লোজিং দর হয়েছে ১৫৭ টাকা ৩০ পয়সা। আগের সপ্তাহের চেয়ে এর দর বেড়েছে ২১ টাকা ২০ পয়সা বা ১৫.৫৭ শতাংশ। বর্তমানে কোম্পানিটির শেয়ার গত ১০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ রেকর্ড দরে লেনদেন হচ্ছে।

ইফাদ অটো: গেল সপ্তাহে ইফাদ অটোর শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৩৩ কোটি ২৪ লাখ ৪৯ হাজার টাকার। সাপ্তাহিক লেনদেনের তালিকায় এই কোম্পানির অবস্থান ছিলো তৃতীয়। বিদায়ী সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে কোম্পানিটির উদ্বোধনী দর ছিল ৫০ টাকা ৩০ পয়সা। আর শেষ কার্যদিবসে ক্লোজিং দর হয়েছে ৫৬ টাকা ৫০ পয়সা। আগের সপ্তাহের চেয়ে দর বেড়েছে ৬ টাকা ২০ পয়সা বা ১২.৩২ শতাংশ।

ডাচবাংলা ব্যাংক: গেল সপ্তাহে ডাচবাংলা ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৯৭ কোটি ৯ লাখ ৩ হাজার টাকার। সাপ্তাহিক লেনদেনের তালিকায় এই কোম্পানির অবস্থান ছিলো পঞ্চম। বিদায়ী সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে কোম্পানিটির উদ্বোধনী দর ছিল ৬৩ টাকা। আর শেষ কার্যদিবসে ক্লোজিং দর হয়েছে ৮৬ টাকা ৬০ পয়সা। আগের সপ্তাহের চেয়ে দর বেড়েছে ২৩ টাকা ৬০ পয়সা বা ৩৭.৪৬ শতাংশ। সাম্প্রতিক সময়ে এটিই কোম্পানিটির সাপ্তাহিক সর্বোচ্চ দর বৃদ্ধি।

নর্দার্ন ইন্সুরেন্স: গেল সপ্তাহে নর্দার্ন ইন্সুরেন্সের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৯৫ কোটি ৩৪ লাখ ৬ হাজার টাকার। সাপ্তাহিক লেনদেনের তালিকায় এই কোম্পানির অবস্থান ছিলো ৬ষ্ঠ। বিদায়ী সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে কোম্পানিটির উদ্বোধনী দর ছিল ৬০ টাকা ৬০ পয়সা। আর শেষ কার্যদিবসে ক্লোজিং দর হয়েছে ৬৯ টাকা ২০ পয়সা। আগের সপ্তাহের চেয়ে দর বেড়েছে ৯ টাকা বা ১৪.১৯ শতাংশ। বর্তমানে কোম্পানিটির শেয়ার গত ১০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ রেকর্ড দরে লেনদেন হচ্ছে।

গ্রিন ডেলটা ইন্সুরেন্স: গেল সপ্তাহে গ্রিন ডেলটা ইন্সুরেন্সের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৬৫ কোটি ৮৬ লাখ ৭৫ হাজার টাকার। সাপ্তাহিক লেনদেনের তালিকায় এই কোম্পানির অবস্থান ছিলো দশম। বিদায়ী সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে কোম্পানিটির উদ্বোধনী দর ছিল ৮৯ টাকা ৫০ পয়সা। আর শেষ কার্যদিবসে ক্লোজিং দর হয়েছে ১১০ টাকা ২০ পয়সা। আগের সপ্তাহের চেয়ে দর বেড়েছে ১৮ টাকা ৫০ পয়সা বা ২৩.১২ শতাংশ। বর্তমানে কোম্পানিটির শেয়ার গত ১০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ রেকর্ড দরে লেনদেন হচ্ছে।

পুঁজিবাজার থেকে ওটিসি মার্কেট উঠে যাওয়ার ইঙ্গিত: পুঁজিবাজারের লোকসানি ও বন্ধ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ওভার দ্য কাউন্টার মার্কেটে (ওটিসি) থাকছে না কোনো কোম্পানি। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমে এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি বলেন, ওটিসি বলে কিছু রাখা যাবে না। এটা হলে কোম্পানির গভর্নেন্স থাকে না। ইচ্ছামতো চালায়, বিক্রি করে দেয়। জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

জানা গেছে, বর্তমানে এ মার্কেটে তালিকাভুক্ত ৬৪টি কোম্পানি মধ্যে ৫০টিরও বেশি স্থানান্তর করা হবে ডিএসইর মূল মার্কেট, এসএমই বোর্ড ও অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ড- এটিবিতে। আর ১৩টি কোম্পানি তালিকাচ্যুতির আবেদন করেছে। এর মধ্যে চারটির তালিকাচ্যুতির কাজ এগিয়ে চলছে।

ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, উৎপাদন না থাকা, নিয়মিত বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) না করা, কাগজের শেয়ার রাখা, নিয়ম অনুযায়ী বিএসইসিতে আর্থিক প্রতিবেদন জমা না দেয়া, লভ্যাংশ প্রদান ও সিকিউরিটিজ আইন পরিপালন না করা প্রায় ৬৫টি বেশি কোম্পানিকে মূল মার্কেট থেকে সরিয়ে ওটিসি মার্কেটে নিয়ে যাওয়া হয়। এমন কোম্পানিগুলোকে নিয়ে ২০০৯ সালে এই ওটিসি মার্কেট গঠন করা হয়।

শর্তবিহীনভাবে পুঁজিবাজারে অপ্রদর্শিত টাকা বিনিয়োগের দাবি: ২০২১-২০২২ অর্থবছরের বাজেটে ৫ শতাংশ কর দিয়ে শর্তবিহীনভাবে পুঁজিবাজারে অপ্রদর্শিত টাকা বিনিয়োগের দাবি জানিয়েছেন এএফসি ক্যাপিটাল লিমিটেড এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুব এইচ মজুমদার। শুক্রবার (৪ জুন) ২০২১-২০২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের উপর প্রতিক্রিয়া জানিয়ে একটি অনলাইন পোর্টালকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এ দাবি জানান।

প্রস্তাবিত বাজেটের প্রশংসা করে মাহবুব এইচ মজুমদার বলেন, বর্তমানে যে প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে মহামারি করোনার কথা বিবেচনা করে এর থেকে আর ভালো বাজেট হতে পারে না।

মাহবুব এইচ মজুমদার বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট আমরা এখনো আশা করছি ৩০ জুন যখন বাজেট ফাইনাল হবে তখন যেন এটা খেয়াল রাখা হয়। অপরদিকে আনডিসক্লোস মানি বা যেটাকে সবাই অপ্রদর্শিত টাকা বলে, আমি বুঝিনা কেন এটাকে অপ্রদর্শিত টাকা বলে। দেশের সম্পদ কখনো কালো হতে পারে না। যারা অর্জন করে তারা কালো হতে পারে, পথটা কালো হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, সেই আনডিসক্লোস মানি যেন ক্যাপিটাল মার্কেটে কোনো শর্ত ছাড়া ৫% হারে বিনিয়োগ করার সুযোগ দেওয়া হয়। যেহেতু বাজেটটা এখনো প্রস্তাবিত সেহেতু আমরা আশা করব মাননীয় অর্থমন্ত্রী ব্যাপারটা বুঝবেন। দেশের প্রবৃদ্ধির খাতিরে এবং দেশের প্রবৃদ্ধির অর্থনীতিকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য অবশ্যই যে আনডিসক্লোস মানি সেটাকে ৫% হারে ক্যাপিটাল মার্কেটে বিনিয়োগ করার সুযোগ দিতে হবে।

তিনি বলেন, বর্তমান সিচুয়েশনে অর্গানাইজেশনগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। অর্গানাইজেশন যদি বাঁচে তবেই কর্মসংস্থান তৈরি হবে, বিনিয়োগ হবে। অর্গানাইজেশন থাকলেই উৎপাদন হবে, উৎপাদন বাড়বে এবং দেশে প্রবৃদ্ধি হবে। কাজেই করপোরেট ট্যাক্স যেগুলো কমানো হয়েছে একদম যথোপযুক্ত হয়েছে।

মাহবুব এইচ মজুমদার বলেন, ক্যাপিটাল মার্কেটে লিস্টেড কোম্পানিগুলো আর নন লিস্টেড এর সাথে ট্যাক্সের যে ডিফারেনশিয়ার ট্রেড সেটা কমপক্ষে ১৫% হওয়া উচিত। যদি তা না হয় কেউ নতুন করে কোম্পানি লিস্টেড হতে চাবে না। তার কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করে বলেন, লিস্টেড কোম্পানির ট্যাক্স দেওয়ার হার নন লিস্টেড থেকে অনেকগুণ বেশি।

দুই একটা কেস স্টাডি করে দেখা যেতে পারে। কারণ, লিস্টেড কোম্পানির অ্যাকাউন্টস আর যে সিস্টেম সবগুলো ১০০% ট্রান্সপারেন্ট বা শতভাগ স্বচ্ছ। অপরদিরকে নন লিস্টেড কোম্পানি ইচ্ছা করলেই কিন্তু তার অ্যাকাউন্টস বা তার ট্যাক্স ১০০% অস্বচ্ছ করতে পারে। তো সেইজন্য আমরা ট্যাক্স এবং ভ্যাটের যে ডিফারেন্সিয়াল রেটটা চাচ্ছিলাম সেটা আমরা বলছিলাম কমপক্ষে ১৫% ডিফারেন্ট হয়। সেটা কিন্তু এখনো হয় নাই।