দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: : নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) তৃতীয় ধাপে এসে পুঁজিবাজার থেকে পুরোপুরি ফ্লোর প্রাইস (দর পতনের সর্বনিম্ন সীমা) তুলে দিয়েছে। একইসঙ্গে ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়াসহ সব কোম্পানির দর উত্থান-পতনের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক সার্কিট ব্রেকার (সীমা) আরোপ করেছে বিএসইসি।

বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম সাক্ষরিত এই নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। এর আগে প্রথম দফায় চলতি বছরের ৭ এপ্রিল ৬৬টি কোম্পানি থেকে ফ্লোর প্রাইসের নির্দেশনা প্রত্যাহার করে নেয় কমিশন। এর পরে গত ৩ জুন ফ্লোর প্রাইসে থাকা বাকি ৩০ কোম্পানি থেকে নির্দেশনাটি তুলে নেয় বিএসইসি।

তবে ফ্লোর তুলে দেওয়া হলেও কোম্পানিগুলোর সার্কিট ব্রেকারে নতুন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। এই কোম্পানিগুলোর দর পতন হতে পারবে দিনে সর্বোচ্চ ২ শতাংশ পারবে বলে জানানো হয়। এটিও এবারের নির্দেশনায় তুলে নিয়েছে কমিশন। বিএসইসি এবারের নির্দেশনায় সিকিউরিটিজের ক্ষেত্রে দর উত্থান-পতনের নিম্নের সার্কিট ব্রেকার আরোপ করেছে।

উল্লেখ্য, গতবছর দেশে মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রকোপ শুরু হলো পুঁজিবাজারে ভয়াবহ ধস নামে।পুঁজিবাজারে পতন ঠেকাতে গত বছরের ১৯ মার্চ সে সময়ের কমিশন প্রতিটি কোম্পানির শেয়ারের সর্বনিম্ন দাম বেঁধে দিয়ে ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করে দেয়।

করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশের পুঁজিবাজারেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তবে সেটা ভয়াবহ রূপ ধারন করে গত বছরের ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাসে রোগী শনাক্ত হওয়ার পরে। এরপরই বিনিয়োগকারীরা যার যার অবস্থান থেকে শুধু বিক্রি করার চেষ্টাই করে গেছেন। বাজারে দেখা দেয় ক্রেতার ভয়াবহ সংকট। তবে এখন করোনাভাইরাস নিয়ে সেই আতঙ্ক নেই। এছাড়া নতুন কমিশনের বেশ পদক্ষেপ বাড়তি আস্থা যুগিয়েছে। যাতে করেপুঁজিবাজার এগিয়ে যাচ্ছে।

দেখা গেছে, গত বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচকটি ৪৭৬৮ পয়েন্টে ছিল। যেটা করোনা আতঙ্কে কমতে কমতে ৮ মার্চ এসে দাড়াঁয় ৪২৮৭ পয়েন্ট। আর ওইদিন দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পরে ৯ মার্চ একদিনেই ২৭৯ পয়েন্ট কমে যায়। যা ১৮ মার্চ করোনাভাইরাসে বাংলাদেশে ১ম রোগী মারা যাওয়ার দিন নেমে যায় ৩৬০৪ পয়েন্টে। আতঙ্কিত শেয়ারবাজারের এমন পতন ঠেকাতে ১৯ মার্চ চালু করা হয় ফ্লোর প্রাইস।

পুঁজিবাজারে হঠাৎ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সুবাতাস: বিমা খাত ও একক কোম্পানি বেক্সিমকোতে বুঁদ হয়ে থাকা পুঁজিবাজারে হঠাৎ করেই জ্বালানি খাতে আগ্রহ দেখা গেছে। শতকরা হিসাবে খুব একটা বেশি না হলেও বিশেষ করে সাতটি বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের শেয়ার আগের দিনের চেয়ে বেশি দামে কিনেছেন বিনিয়োগকারীরা। গত এক বছর ধরে বিমা খাতে অস্বাভাবিক উত্থানের মধ্যে যেসব খাত পুরোপুরি ঘুমিয়েছিল, তার একটি বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত। করোনাকালেও যেসব খাতের ব্যবসার ক্ষতি হয়নি, তার মধ্যে অন্যতম এই খাতের বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলো।

সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস সামগ্রিকভাবে পুঁজিবাজার গতি হারালেও এই খাত আশা দেখাচ্ছে শেয়ারধারীদের। গোটা খাতের ২২টি কোম্পানির মধ্যে ১৪টির দাম বেড়েছে। যে আটটির দাম কমেছে, তার মধ্যে চারটির দাম গত কয়েক দিনে বেশ বেড়েছিল। সেখান থেকে সংশোধন হয়েছে। তিনটির দাম দীর্ঘদিন ধরে একটি বৃত্তে ওঠানামা করছে। আর লোকসানি একটি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের পর থেকে প্রায় প্রতিদিন ২ শতাংশ করে কমছে।

একাধিক কোম্পানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া বা শেষ হতে চলা, কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করা হলেও সেগুলো ঝুলিয়ে রাখা, গণমাধ্যমে মেয়াদ বৃদ্ধির বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্তের সংবাদ প্রকাশ হলেও কোম্পানি বা সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য না আসাসহ নানা কারণেই এ অবস্থা হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। কেপিসিএলের তিনটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি বন্ধ হয়ে গেছে ২০১৮ সালেই। বাকি দুটি কেন্দ্র মে মাস শেষে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে চেষ্টা চলছে। আর বিএসইসির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘নো ইলেকট্রিসি, নো পেমেন্ট’ ভিত্তিতে মেয়াদ বাড়তে পারে। অর্থাৎ বিদ্যুৎ না কিনলে আগের মতো কেন্দ্র বসিয়ে রেখে ক্যাপাসিটি চার্জ দেবে না সরকার।
পুঁজিবাজারে বিমা খাতের শেয়ার দরের উত্থান নিয়ে নানা কথা থাকলেও বাস্তবে বিমার খাত লেনদেনের শীর্ষে।

মোট লেনদেনের ২৬ শতাংশ হয়েছে এই একটি খাতেই। টাকার অংকে ৪৮১ কোটি টাকা। তবে এদিন এই খাতের বেশিরভাগ শেয়ারের দর কমেছে। মোট ৩৭টি কোম্পানি দর হারিয়েছে, একটি কোম্পানির লেনদেন স্থগিত। বেড়েছে কেবল ১২টির। সবচেয়ে বেশি দর হারানো ১০টি কোম্পানির মধ্যে চারটিই ছিল বিমা খাতের। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কমেছে রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্সের দর।

৭.৬ শতাংশ কমে ১৩১ টাকা ৬০ পয়সার শেয়ার দাঁড়িয়েছে ১২১ টাকা ৬০ পয়সা। প্রভাতী ইন্স্যুরেন্সের দর ৫.৯১ শতাংশ কমে ২০১ টাকা ১০ পয়সা থেকে কমে ১৮৯ টাকা ২০ পয়সায় দাঁড়িয়েছে। ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্সের দর ৭২ টাকা থেকে কমে হয়েছে ৬৭ টাকা ৮০ পয়সা। গ্রিনডেল্টার দর ১৪৪ টাকা থেকে কমে হয়েছে ১৩৫ টাকা ৭০ পয়সা। এই খাতে এদিন সবচেয়ে বেশি বেড়েছে প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সের দর। ১৩৫ টাকা ৭০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ১৪৪ টাকা। শতকরা হিসেবে দাম বেড়েছে ৪.৭৪ শতাংশ।

কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্সের দর ৩.২৮ শতাংশ বেড়ে ৫১ টাকা ৮০ পয়সা থেকে হয়েছে ৫৩ টাকা ৫০ পয়সা। এ ছাড়া সন্ধানী ইন্স্যুরেন্সের ১.৮০ শতাংশ, মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্সের ১.৪০ শতাংশ, পিপলস ইন্স্যুরেন্সের দশমিক ৩৯ শতাংশ, এশিয়া ইন্স্যুরেন্সের দর বেড়েছে দশমিক ২৯ শতাংশ।

সপ্তাহের শেষ দিনেও আগের দুই দিনের মতো দর পতনের তালিকায় নাম লিখিয়েছে তালিকাভুক্ত ব্যাংক খাতের কোম্পানিগুলো। বেশ কিছু ব্যাংকের এদিন শেয়ার দর বাড়লেও বেশিরভাগ ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে। সবচেয়ে বেশি কমেছে এনআরবিসি ব্যাংকের দর। ৪.২৬ শতাংশ হারিয়ে ৩৫ টাকা ২০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ৩৩ টাকা ৭০ পয়সা।

রূপালী ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে ১.৮৫ শতাংশ। ৩৭ টাকা ৮০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ৩৭ টাকা ১০ পয়সা। সব মিলিয়ে কমেছে ১১টি ব্যাংকের দর। আর বেড়েছে মোট ১০টির দর। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ট্রাস্ট ব্যাংকের। ১.৭ শতাংশ। ৩৫ টাকা ৩০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৩৫ টাকা ৬০ পয়সা। বাকি ব্যাংকগুলোর মধ্যে ডাচবাংলার ৮০ পয়সা, ইসলামী ৩০ ও পূবালীর ৩০ পয়সা, মার্কেন্টাইল ২০ পয়সা এবং ঢাকা, ইবিএল, আইসিবি ইসলামী ও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের দর বেড়েছে ১০ পয়সা করে।

ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১ দশমিক ০১ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৫২ পয়েন্টে। শরিয়াহ ভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস ২ দশমিক ২৬ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৯০ পয়েন্টে। বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক ১৩ দশমিক ৭৯ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৯৭ পয়েন্টে।

ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১০৭টির, কমেছে ২৩৭টির। দর পাল্টায়নি ২৮টির। লেনদেন হয়েছে মোট ১ হাজার ৮৪৭ কোটি টাকা, যা আগের দিনের চেয়ে আড়াইশ কোটি টাকার মতো কম। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই আগের দিনের তুলনায় ৪০ দশমিক ৩৯ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৫৭০ পয়েন্টে। লেনদেন হয়েছে মোট ১০৪ কোটি টাকা।

২১ বীমা কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে আনতে বিএসইসির উদ্যোগ: অ-তালিকাভুক্ত ২১ বীমা কোম্পানিকে তালিকাভুক্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষকে (আইডিআরএ) অনুরোধ করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বিএসইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। গত বুধবার আইডিআরএ’র কাছে এ বিষয়ে চিঠি দিয়েছে বিএসইসি।

এর আগে ২২ নভেম্বর, ২০২০ সালে নির্দিষ্ট মূল্য পদ্ধতির আওতায় প্রাথমিক পাবলিক অফার বা আইপিও’তে আবেদনপত্র দাখিলের জন্য ২৬ টি কোম্পানিকে পাবলিক ইস্যু বিধি, ২০১৫ এর কিছু বিধান মেনে চলার ছাড় দিয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। এসব কোম্পানিগুলোর মধ্যে দুটি ইতিমধ্যে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে। এছাড়া আরও তিনটি কোম্পানি আইপিও’র জন্য বিএসইসি’র কাছে আবেদন করেছে।

বিমা আইন অনুযায়ী, কোনো কোম্পানি নিবন্ধিত হওয়ার তিন বছরের মধ্যে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ সময়ের মধ্যে কোনো কোম্পানি পুঁজিবাজারে আসতে না পারলে যুক্তিসঙ্গত কারণ দেখিয়ে আরও দুই বছর সময় নিতে পারে। এরপরেও তালিকাভুক্ত না হলে, প্রতিদিনের জন্য জরিমানা দিতে হয়। ২০১০ সাল পর্যন্ত জরিমানার পরিমাণ ছিল প্রতিদিন এক হাজার টাকা। ২০১১ সালের জানুয়ারি মাসে জরিমানার পরিমাণ বাড়িয়ে ৫ হাজার টাকা করা হয়।

বিমা কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজার আসতে না পারার কারণে ২০১৯ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে বিমা প্রতিষ্ঠানগুলোর চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। মতবিনিময়কালে অর্থমন্ত্রী ওই বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ২৭ বিমা কোম্পানিকে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত হওয়ার নির্দেশ দেন। মন্ত্রীর নির্দেশনার পর নতুন করে ইস্যু হিসেবে দাঁড়ায় পাবলিক ইস্যু রুলস ২০১৫। এই আইন শিথিল না হলে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া কঠিন বলে জানায় আইডিআরএ। পরে আইন শিথিল করার জন্য বিমা নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ বিএসইসিতে চিঠি লিখেন। পরে আইন শিথিল করা হয়।

আইন শিথিল: বিমা কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে আনতে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ৭৪১তম সভায় পাবলিক ইস্যু রুলস ২০১৫ বিমা কোম্পানির জন্য শিথিল করা হয়। আইনে ছিলো অভিহিত মূল্যে কোন কোম্পানি পুঁজিবাজারে আসতে হলে কমপক্ষে ৩০ কোটি টাকা তুলতে হবে। কিন্তু বিমা কোম্পানিগুলোর সেই সক্ষমতা নেই।

টাকা নিয়ে বিনিয়োগের কোন জায়গা নেই তাদের। বিষয়টি নিয়ে বিএসইসির দারস্থ হয় বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। বিমা কোম্পানিগুলোর নিয়ন্ত্রক সংস্থার আবেদনের প্রেক্ষিতে এই শর্তটি শিথিল করেছে বিএসইসি। ওই সময় বিএসইসি থেকে বলা হয়, বর্তমানে ২৬টি কোম্পানি অভিহিত মূল্যে পুঁজিবাজারে আসতে চায়। এই কোম্পানিগুলোর সর্বনিম্ম ১৫ কোটি টাকা তুললেই বাজারে আসতে পারবে।

এদিকে অর্থমন্ত্রী নির্দেশ দেওয়ার আগেই দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স, ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স এবং সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) জন্য আবেদন করে। এর মধ্যে সোনালী লাইফ বাদে বাকী তিনটি কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে। আর সোনালী লাইফের আইপিও আবেদন শেষ হয়েছে।

রাষ্ট্রায়ত্ব জীবন বিমা করপোরেশন, সাধারণ বিমা করপোরেশন এবং দুটি বিদেশি কোম্পানিসহ দেশে মোট ৭৮টি বিমা কোম্পানি রয়েছে দেশে। এর মধ্যে ৩২টি জীবন বিমা, ৪৬টি সাধারণ বিমা এবং দুটি বিদেশি বিমা কোম্পানি। বিদেশি বিমা কোম্পানি দু’টি হলো আমেরিকান লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি মেটলাইফ এবং লাইফ ইন্স্যুরেন্স করপোরেশন অব বাংলাদেশ।

বর্তমানে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত রয়েছে ৫০টি বিমা কোম্পানি। এর মধ্যে ৩৮টি সাধারণ বিমা ও ১২টি জীবন বিমা কোম্পানি। অন্যদিকে ২১টি কোম্পানিকে তালিকাভুক্তির বিষয়ে জানতে চেয়েছে বিএসইসি। এর মধ্যে ১৭টি জীবন বিমা ও ৪টি সাধারণ বিমা কোম্পানি।

পুঁজিবাজারের বাইরের কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে জীবন বীমা কোম্পানি হোমল্যান্ড লাইফ,গোল্ডেন লাইফ, সানফ্লাওয়ার লাইফ, বায়রা লাইফ, বেস্ট লাইফ,এনআরবি গ্লোবাল লাইফ, প্রোটেকটিভ ইসলামি লাইফ,জেনিথ ইসলামি লাইফ, আলফা ইসলামি লাইফ, ডায়মন্ড লাইফ,গার্ডিয়ান লাইফ, যমুনা লাইফ, মার্কেন্টাইল ইসলামি লাইফ, স্বদেশ লাইফ, ট্রাস্ট ইসলামি লাইফ, এলআইসি বাংলাদেশ। সাধারণ বিমা কোম্পানিগুলো হলো: মেঘনা ইন্স্যুরেন্স, সাউথ এশিয়া ইন্স্যুরেন্স, ইসলামি কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্স ও সিকদার ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড।

ডিএসই ছয় খাতের শেয়ারে লন্ডভন্ড: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে উত্থান প্রবণতায় পুঁজিবাজারের লেনদেন শেষ হয়েছে। আজ প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সব সূচক বেড়েছে। কিন্তু সব সূচকের বৃদ্ধির মধ্যেও ডিএসইতে আজ ছয় খাতের শেয়ার দরে ভরাডুবি হয়েছে। খাতগুলো হলো: সাধারণ বীমা, প্রকৌশল, বস্ত্র, ফার্মা, খাদ্য, ও আর্থিক খাত। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সাধারণ বীমা : সাধারণ বীমায় লেনদেন হওয়া ৩৭টি কোম্পানির মধ্যে দর কমেছে ৩১টির বা ৮৩.৭৮ শতাংশ কোম্পানির। দর বেড়েছে ৬টির বা ১৬.২২ শতাংশ কোম্পানির। এখাতে আজ দর বেশি কমেছে: রিলায়েন্স ইন্সুরেন্সের ৭.৫৯ শতাংশ, প্রভাতী ইন্সুরেন্সের ৫.৯১ শতাংশ, ক্রিস্টাল ইন্সুরেন্সের ৫.৮৩ শতাংশ, গ্রীনডেল্টা ইন্সুরেন্সের ৫.৭৬ শতাংশ, এশিয়া প্যাসিফিক ইন্সুরেন্সের ৪.৭১ শতাংশ, ঢাকা ইন্সুরেন্সের ৪.৫৯ শতাংশ, ফিনিক্স ইন্সুরেন্সের ৪.৪৫ শতাংশ, গ্লোবাল ইন্সুরেন্সের ৪.১৮ শতাংশ।ডিএসই ছয় খাতের শেয়ারে

প্রকৌশল: প্রকৌশল খাতে লেনদেন হওয়া ৪১টি কোম্পানির মধ্যে দর কমেছে ৩৫টির বা ৮৩.৩৩ শতাংশ কোম্পানির। দর বেড়েছে ৬টির বা ১৪.২৯ শতাংশ কোম্পানির। দর অপরিবর্তিত রয়েছে ১টির বা ২.৩৮ শতা্ংশ কোম্পানির।

এখাতে দর বেশি কমেছে রানার অটো ৬.৬১ শতাংশ, মীর আকখার ৫.১০ শতাংশ, গোল্ডেন সন ৪.২১ শতাংশ, বিএসআরএম ৪.০২ শতাংশ, কেডিএস ৩.৭৮ শতাংশ, অ্যাপেলো ইস্পাত ৩.৭০ শতাংশ, সাভার রিফেক্টরিজ ৩.১২ শতাংশ, বিডি থাই ৩.০৬ শতাংশ, জিপিএইচ ইস্পাত ২.৯৪ শতাংশ, কাশেম ইন্ডাষ্ট্রিজ ২.৭৩ শতাংশ, ইফাদ অটোসের ২.২৩ শতাংশ।

বস্ত্র : বস্ত্র খাতে খাতে লেনদেন হওয়া ৫৮টি কোম্পানির মধ্যে দর কমেছে ৪২টির বা ৭১.১৯ শতাংশ কোম্পানির। দর বেড়েছে ১৪টির বা ২৫.৪২ শতাংশ কোম্পানির। দর অপরিবর্তিত রয়েছে ১টির বা ৩.৩৯ শতাংশ কোম্পানির।

এ খাতের দর বেশি কমেছে-জাহিন টেক্সটাইলের ৪.১৬ শতাংশ, জেনারেশন নেক্সটের ৩.৫০ শতাংশ, নিউলাইনের ৩.০৬ শতাংশ, ফ্যামিলি টেক্সের ২.৮৫ শতাংশ, আলিফের ২.৭২ শতাংশ, আলহাজ্ব টেক্সটাইলের ২.৭১ শতাংশ, আনলিমা ইয়ার্নের ২.২৪ শতাংশ, আমান কটনের ২.১৪ শতাংশ।

ফার্মা ও রসায়ন: ফার্মা ও রসায়ন খাতে লেনদেন হওয়া ৩০টি কোম্পানির মধ্যে দর কমেছে ২০টির বা ৬৬.৬৭ শতাংশ কোম্পানির। দর বেড়েছে ৮টির বা ২৬.৬৭ শতাংশ কোম্পানির। দর অপরিবর্তিত রয়েছে ২টির বা ৬.৬৭ শতাংশ কোম্পানির।

এ খাতে দর বেশি কমেছে : কেয়া কসমেটিকসের ৫.২৬ শতাংশ, একটিভ ফাইনের ২.৩২ শতাংশ, ইন্দো-বাংলা ফার্মার ২.০১ শতাংশ, কোহিনূর কেমিক্যালের ১.৯৬ শতাংশ, সিভিও পেট্রোর ১.৯৬ শতাংশ, ওরিয়ন ইনফিউশনের ১,৯০ শতাংশ।

আর্থিক : আর্থিক খাতে লেনদেন হওয়া ২২টি কোম্পানির মধ্যে দর কমেছে ১৩টির বা ৫৯.০৯ শতাংশ কোম্পানির। দর বেড়েছে ৭টির বা ৩১.৮২ শতাংশ কোম্পানির। দর অপরিবর্তিত রয়েছে ২টির বা ৯.০৯ শতাংশ কোম্পানির। এখাতে দর বেশি কমেছে : ন্যাশনাল হাউজিংয়ের ৪.৮১ শতাংশ, আইডিএলসির ৪.২২ শতাংশ, ইউনিয়ন ক্যাপিটালের ২.৮১ শতাংশ, প্রাইম ফাইন্যান্সের ২.৪৩ শতাংশ।

খাদ্য ও আনুষঙ্গিক : খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের ২০টি কোম্পানির মধ্যে দর কমেছে ১২টির বা ৬০ শতাংশ কোম্পানির। দর বেড়েছে ৮টির বা ৪০ শতাংশ কোম্পানির। এ খাতে দর বেশি কমেছে: তৌফিকা ফুডের ৪.৮২ শতাংশ, রহিমা ফুডের ১.৯৬ শতাংশ, জেমিনি সী ফুডের ১.৯৫ শতাংশ, গেইলের ১.৯৩ শতাংশ।

ব্লক মার্কেটে ৪ কোম্পানি লেনদেনের শীর্ষে : পুঁজিবাজারে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ব্লক মার্কেটে ৪৪টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব কোম্পানির ৬১ কোটি ১২ লাখ ২২ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। কোম্পানিগুলোর ২ কোটি ৮৭ লাখ ৯৬ হাজার ১৩১টি শেয়ার ৬৬ বার হাত বদল হয়েছে। এর মাধ্যমে কোম্পানিগুলোর ৬১ কোটি ১২ লাখ ২২ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে।

কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৪ কোম্পানির বিশাল লেনদেন হয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি শেয়ার লেনদেন হয়েছে আইএফআইসি ব্যাংকের। কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৪ কোটি ২০ লাখ টাকার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে জেনেক্স ইনফোসিসের ৯ কোটি ৫৬ লাখ ৭৬ হাজার টাকার। তৃতীয় সর্বোচ্চ ৮ কোটি ৬৬ লাখ ৭২ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলের। চতুর্থ সর্বোচ্চ ৪ কোটি ৬ লাখ ৬০ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের।

এছাড়া সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের ২ কোটি ৮১ লাখ ৩৯ হাজার টাকার, ন্যাশনাল ফিড মিলের ২ কোটি ২৬ লাখ ৭৩ হাজার টাকার, ইন্ট্রাকো সিএনজির ১ কোটি ৯৯ লাখ ৫০ হাজার টাকার, ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকোর ১ কোটি ৫৯ লাখ ৯৬ হাজার টাকার, ঢাকা ডাইংয়ের ৬৮ লাখ ৮৫ হাজার টাকার, এসকে ট্রিমসের ৬১ লাখ ৫৮ হাজার টাকার, এনআরবিসি ব্যাংকের ৪৩ লাখ ২০ হাজার টাকার, ন্যাশনাল পলিমারের ৩২ লাখ ৮ হাজার টাকার, বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের ৩০ লাখ ৭৮ হাজার টাকার, লুব রেফের ২৫ লাখ ৪৭ হাজার টাকার,

ইনডেক্স এগ্ৰোর ২৪ লাখ টাকার, বিডি ফাইন্যান্সের ২১ লাখ ৬১ হাজার টাকার, এস আলমের ২১ লাখ ৩৩ হাজার টাকার, কাট্টালি টেক্সটাইলের ১৯ লাখ ৯২ হাজার টাকার, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকের ১৮ লাখ ৪৯ হাজার টাকার, প্রিমিয়ার লিজিংয়ের ১৭ লাখ ৮০ হাজার টাকার, রূপালী ব্যাংকের ১৫ লাখ ৯৫ হাজার টাকার, বিকনফার্মার ১৩ লাখ ২২ হাজার টাকার, ডোরিন পাওয়ারের ১৩ লাখ টাকার, প্রগতি ইন্স্যুরেন্সের ১৩ লাখ টাকার, ম্যাকসন্স স্পিনিংয়ের ১১ লাখ ৪ হাজার টাকার, সোনারবাংলা ইন্স্যুরেন্সের ১১ লাখ টাকার,

প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের ১০ লাখ ৮৮ হাজার টাকার, সাফকো স্পিনিংয়ের ১০ লাখ ৫১ হাজার টাকার, সিএপিএম আইবিবিএল মিউচুয়াল ফান্ডের ৯ লাখ ৫৫ হাজার টাকার, বেক্সিমকো লিমিটেডের ৯ লাখ ৫০ হাজার টাকার, গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্সের ৮ লাখ ১৮ হাজার টাকার, বার্জার পেইন্টসের ৭ লাখ ৭০ হাজার টাকার, কনফিডেন্স সিমেন্টের ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকার, গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্সের ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকার,

ই-জেনারেশনের ৭ লাখ ৪৬ হাজার টাকার, সাইফ পাওয়ারের ৭ লাখ ১৪ হাজার টাকার, সায়হাম কটনের ৭ লাখ টাকার, সী-পার্লের ৬ লাখ ৮৮ হাজার টাকার, এনার্জিপ্যাকের ৫ লাখ ৮০ হাজার টাকার, মার্কেনটাইল ইন্স্যুরেন্সের ৫ লাখ ৬৬ হাজার টাকার, পপুলার লাইফের ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকার, ডেলটা ব্রাক হাউজিংয়ের ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকার, ইসলামী ইন্সুরেন্সের ৫ লাখ ১৯ হাজার টাকার, রূপালি ইন্স্যুরেন্সের ৫ লাখ শেয়ার লেনদেন হয়েছে।

সমতা লেদারের বোর্ড সভার তারিখ ঘোষণা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি সমতা লেদার কমপ্লেক্স লিমিটেডের বোর্ড সভার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ২২ জুন বিকাল সাড়ে ৪টায় কোম্পানিটির বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হবে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। জানা যায়, সভায় কোম্পানিটির ৩১ ডিসেম্বর,২০২০ পর্যন্ত দ্বিতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে প্রকাশ করা হবে।

বিএসইসির আইন মানছে না সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্স: শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) গ্রাচ্যুইটি ফান্ড নিয়ে আইন মানছে না সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্স কর্তৃপক্ষ। কোম্পানিটির ২০২০ সালের আর্থিক হিসাব নিরীক্ষায় এই তথ্য জানিয়েছেন নিরীক্ষক।

নিরীক্ষক জানিয়েছেন, বিএসইসির রুলস অনুযায়ি প্রতিটি তালিকাভুক্ত কোম্পানির গ্র্যাচুইটি ফান্ড গঠন করা দরকার। কিন্তু নিরীক্ষায় সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্সে এ জাতীয় ফান্ড প্রতিষ্ঠা পাওয়া যায়নি। কোম্পানি কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন ধরে গ্রাচ্যুইটি ফান্ডের প্রভিশনিং অ্যামাউন্ট হিসাবে বয়ে বেড়াচ্ছে। যা কোম্পানি কর্তৃপক্ষের দ্রুত সমন্বয় করা দরকার।

সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্স কর্তৃপক্ষ ডেফার্ড ট্যাক্স গণনা করেছে বলে জানিয়েছেন নিরীক্ষক। তবে এই গণনার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক হিসাব মান (আইএএস)-১২ এর আলোকে প্রয়োজনীয় সবকিছু পরিপালন করা দরকার বলে জানিয়েছেন। শ্রম আইনের ২৩২ ধারা অুনযায়ি সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্স ওয়ার্কার্স প্রফিট পার্টিসিপেশন ফান্ড (ডব্লিউপিপিএফ) গঠনের যোগ্য। কিন্তু কোম্পানিটিতে এ জাতীয় ফান্ড গঠন করা হয় না বলে জানিয়েছেন নিরীক্ষক।

উল্লেখ্য, ১৯৯৫ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্সের পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ৪৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। এরমধ্যে শেয়ারবাজারের বিভিন্ন শ্রেণীর (উদ্যোক্তা/পরিচালক ব্যতিত) বিনিয়োগকারীদের মালিকানা ৬১ শতাংশ।