দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা : বিএসইসি নতুন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই পুঁজিবাজারের প্রতি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি, তারল্য সংকট দূর করা ও বাজার সম্প্রসারণ করতে কাজ করছে। পুঁজিবাজারে টাকার প্রভাহ বাড়াতে দেশে ও দেশের বাহিরে পুঁজিবাজারকে ছড়িয়ে দিতে কাজ চলছে। পুঁজিবাজারের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে অবদান বাড়াতে চায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের কমিশন।

জানা গেছে, পুঁজিবাজারকে আরও প্রসারিত করতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ডিজিটাল বুথের অনুমোদন ও শাখা অনুমোদনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি। পুঁজিবাজার সম্প্রসারণের অংশ হিসেবে প্রাথমিক পর্যায়ে ৩০টি ট্রেকের অনুমোদন দিয়েছে বিএসইসি। দ্বিতীয় পর্যায়ে আজ আরও ১৬টি ট্রেকের অনুমোদন দিয়েছে বিএসইসি। ট্রেক হলো পুঁজিবাজারে লেনদেনের মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠান। যার মাধ্যমে বিনিয়োগকারীরা শেয়ার লেনদেন করবেন।

অন্যদিকে নতুন ট্রেডিং রাইট এনটাইটেলমেন্ট সার্টিফিকেট (ট্রেক) ইস্যু করতে চায় ডিএসই। এরই অংশ হিসেবে চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি ডিএসইর ৯৯০তম পরিচালনা পর্ষদের সভায় ডিএসই সংশ্লিষ্ট আইনসমূহ, স্কীম, বিধিমালা ও প্রবিধানমালার বিধানাবলী মোতাবেক যোগ্যতার ভিত্তিতে ট্রেক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এর পর প্রত্রিকায় ও ডিএসইর সাইটে আবেদন জমা দেওয়ার বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়।

প্রথম ধাপে এর মেয়াদ দেওয়া হয় ১৮ মার্চ পর্যন্ত। ওই সময়ে কাঙ্খিত আবেদন জমা না পড়ায় ২৮ মার্চ পর্যন্ত আবেদন গ্রহনের সময় বাড়ানো হয়। এই সময়ে মোট ৬৬টি প্রতিষ্ঠান ট্রেকের জন্য আবেদন করেছে। এর মধ্যে বিভিন্ন কারণে ১৫টি প্রতিষ্ঠানের আবেদন অযোগ্য বলে বাতিল করা হয়।

যোগ্য ৫১টি প্রতিষ্ঠানের তালিকা ইতোমধ্যে বিএসইসিতে জমা দেয় ডিএসই। ডিএসইর পাঠানো তালিকা থেকে ৩০টি ট্রেকের অনুমোদন দিয়েছে বিএসইসি। এর আগে ২০২০ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর ট্রেক সংক্রান্ত আইনটি চুড়ান্ত করে কমিশন।

পুঁজিবাজারের যে কোন প্রয়োজনে পাশে থাকবে এফবিসিসিআই: পুঁজিবাজারের যে কোন প্রয়োজনে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। সংগঠনটির নন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মো. জসিম উদ্দিনের সাথে সৌজন্য সাক্ষাত করতে গেলে এই আশ্বাস দেন পুঁজিবাজারের ব্রোকারদের শীর্ষ সংগঠন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ব্রোকার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশকে (ডিবিএ)।

সংগঠনটির কার্যালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সোমবার ২১ জুন,প্রেসিডেন্ট শরীফ আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে ডিবিএ পরিচালনা পর্ষদের একটি প্রতিনিধি দল এফবিসিসিআইর প্রেসিডেন্ট মো. জসিম উদ্দিনের সাথে তার কার্যালয়ে সাক্ষাত করে। সভায় ডিবিএর পক্ষ থেকে এফবিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্টকে ফুলেল শুভেচ্ছাসহ অভিনন্দন জানানো হয়।

বৈঠকে উভয় সংগঠনের প্রতিনিধিদের মধ্যে দেশের শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্যের বর্তমান পরিস্থিতির পাশাপাশি পুঁজিবাজার পরিস্থিতি নিয়ে দীর্ঘ আলাপ ও মতবিনিময় হয়। শরীফ তার বক্তব্যে দেশের শিল্প অর্থনৈতিক বিকাশে পুঁজিবাজারের গুরুত্ব ও ভূমিকার কথা তুলে ধরেন এবং এর উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে তার এবং তার সংগঠনের সার্বিক সহযোগীতা কামনা করেন।

তিনি আরও বলেন, পুঁজিবাজারের পাশাপাশি দেশের শিল্প ও ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়ন সাধনে ডিবিএ অতীতের ন্যয় ভবিষ্যতেও এফবিসিসিআইর সাথে একযোগে কাজ করে যাবে। জসিম উদ্দিন ডিবিএর প্রেসিডেন্টসহ সকল প্রতিনিধিদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান এবং পুঁজিবাজারের যে কোন প্রয়োজনে তার এবং তার সংগঠনের পক্ষ থেকে সকল প্রকার সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দেন।

আরামিট সিমেন্টের রিজার্ভ নিয়ে ডিএসই ভুল তথ্য: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সিমেন্ট খাতের কোম্পানি আরামিট সিমেন্টের রিজার্ভ নিয়ে ডিএসই ভুল তথ্য উপস্থাপন করছে। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। বিষয়টি দ্রুত ঢাকা স্টক একচেঞ্জের ওয়েবসাইটে সংশোধন করা উচিত বলে মনে করছেন বিনিয়োগকারী ও বাজার বিশ্লেষকরা। মুলত অপর স্টক এক্সচেঞ্জ চট্টগ্রাম স্টক একচেঞ্জ লিমিটেডে রিজার্ভ ও সারপ্লাস ৪৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা দেখানে হলে ও ঢাকা স্টক একচেঞ্জে লোকসান ৬২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা দেখানে হয়েছে।

বিনিয়োগকারীদের প্রশ্ন কোনটি সঠিক ঢাকা স্টক একচেঞ্জ না চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ। এ নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মাঝে দ্রুমজাল সৃষ্টি হয়েছে। ঢাকা স্টক একচেঞ্জ (ডিএসই) Other Comprehensive Income সব ধরে রিজার্ভেও পরিমান দাঁড়ায় ৪৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। কিন্তু ঢাকা স্টক একচেঞ্জ (ডিএসই) ওয়েবসাইটে নেতিবাচক দেখানো হলেও প্রকৃতপক্ষে রিজার্ভ হবে ৪৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা।

এ বিষয় কোম্পানির সচিব সৈয়দ কামরুজ্জামান (এফসিএম) বলেন, আমাদের কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ দেওয়া হলেও চট্টগ্রাম স্টক একচেঞ্জ আপডেট করলেও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ আপডেট করেনি। এখানে কোম্পানির কোন দায়বদ্ধতা নেই। এ বিষয় ঢাকা স্টক একচেঞ্জের পরিচালক রকিবুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। বিষয়টি দেখছি।

দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা : পুঁজিবাজারে ৬ হাজার সূচকের লড়াইয়ে অবশেষে ব্যাংক খাতের হাত ধরে উত্থান হয়েছে। তবে সোয়া তিন বছর পর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক ছয় হাজার পয়েন্ট ছোঁয়ার পর সেখানে টিকে থাকা নিয়ে তিন সপ্তাহ ধরে যে লড়াই চলছিল, তাতে আপাতত জয় হলো। ব্যাংক খাতে ৫টি ছাড়া সব কয়েকটি কোম্পানির দাম বৃদ্ধিতে ৫৬ পয়েন্ট সূচক বেড়ে ৬ হাজার ১০০ পয়েন্ট ছাড়িয়ে যায়।

গত ৩০ মে ৩৯ মাসের মধ্যে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স প্রথমবারের মতো ছয় হাজার পয়েন্ট অতিক্রম করে। এরপর কখনও ছয় হাজারের নিচে, আবার ছয় হাজার ছাড়িয়েছে। কিন্তু ছয় হাজার পয়েন্টে টিকে থাকার মনস্তাত্ত্বিক যে লড়াই ছিল সেটার অবসান হচ্ছিল না। ফলে সূচক এখানে টিকে থাকা নিয়ে সংশয় থেকেই যায়।

এদিকে পুঁজিবাজারে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে সূচক বেড়েছিল ১৬ পয়েন্ট। লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৮৩৫ কোটি টাকা। আজ সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক বেড়েছে ৬৬ পয়েন্ট। লেনদেন ছাড়িয়েছে দুই হাজার ৪১ কোটি টাকা। আজ পুঁজিবাজারের সূচক ও লেনদেনে বড় লাফ দেখা গেছে। এছাড়া, আজ ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স প্রায় সাড়ে তিন বছর পর ৬ হাজার ১০০ পয়েন্ট অতিক্রম করেছে। এটিও পুঁজিবাজারের নতুন মাইলফলক।

এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫৬ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ১২৫.৪১ পয়েন্টে। ডিএসইতে এই সূচকটি তিন বছর চার মাস সাত দিন বা ৪০ মাস বা ৭৭০ কার্যদিবস পর ৬ হাজার ১০০ পয়েন্ট অতিক্রম করল। এর আগে ২০১৮ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি সূচকটি ৬ হাজার ১০২ পয়েন্টে অবস্থান করছিল। আজ ডিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ৮.৯৭ পয়েন্ট এবং ডিএসই-৩০ সূচক ১৩.৫৯ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ৩০৫.৫৭ পয়েন্টে এবং ২ হাজার ২২০.৮৯ পয়েন্টে।

আজ ডিএসইতে টাকার পরিমাণে লেনদেন ২ হাজার ৪৩ কোটি ৪৮ লাখ টাকা টাকার। যা আগের দিন থেকে ২০৮ কোটি ২৩ লাখ টাকা বেশি। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৮৩৫ কোটি ২৫ লাখ টাকার।

ডিএসইতে আজ ৩৭২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ২২৪টির বা ৬০.২২ শতাংশের, শেয়ার দর কমেছে ১১৯টির বা ৩১.৯৯ শতাংশের এবং ২৯টির বা ৭.৭৯ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে।

অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৭৮.৭১ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৭৬২.৫৩ পয়েন্টে। সিএসইতে আজ ৩০৯টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৯৫টির দর বেড়েছে, কমেছে ৯৬টির আর ১৮টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ৭৯ কোটি ৩৭ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।

সিমেন্ট খাতের ৬ কোম্পানির মুনাফায় বড় উল্লম্ফন : করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও দেশের সিমেন্ট শিল্পের মুনাফায় ব্যাপক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সিমেন্ট খাতের কোম্পানিগুলো চলতি বছরে ভালো ব্যবসা করেছে। মূলত করোনাকালীন সময়ে সরকারি-বেসরকারি খাত থেকে সিমেন্টের ভালো চাহিদা থাকার পাশাপাশি ব্যাংক ঋণে সুদের হার কমে যাওয়ায় কোম্পানিগুলোর ব্যবসায় উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এ সময়ে তালিকাভুক্ত সাতটি সিমেন্ট কোম্পানির মুনাফায় উল্লস্ফল হয়েছে। পাশাপাশি কোম্পানিগুলো বিগত কয়েক বছরের তুলনায় ব্যবসায় চমক দেখিয়েছে।

মুলত জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে দেশীয় সিমেন্ট কোম্পানিগুলোর মধ্যে নিট মুনাফায় সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে এমআই সিমেন্টের। তাদের এ সময়ে নিট মুনাফা বেড়েছে গত বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় ৮৩১ শতাংশ বেশি।

মেঘনা সিমেন্ট: জানুয়ারি-মার্চ সময়ে মেঘনা সিমেন্ট মিলসের রাজস্ব আয় হয়েছে ২৮২ কোটি টাকা। যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে রাজস্ব আয় ছিল ২২৫ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির রাজস্ব আয় বেড়েছে ২৫ শতাংশ। এ সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৬৬ শতাংশ। আর গত বছরের জুলাই থেকে এ বছরের মার্চ পর্যন্ত নয় মাসে কোম্পানিটির রাজস্ব আয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৮ শতাংশ বেড়ে ৭৩৯ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। এ সময়ে আগের বছরের তুলনায় কোম্পানিটির নিট মুনাফা বেড়েছে প্রায় ৫৩ শতাংশ।

এমআই সিমেন্ট: জানুয়ারি-মার্চ সময়ে এমআই সিমেন্ট ফ্যাক্টরির রাজস্ব আয় হয়েছে ৫১১ কোটি টাকা। যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে রাজস্ব আয় ছিল ৪৪৯ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির রাজস্ব আয় বেড়েছে প্রায় ১৪ শতাংশ। এ সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা বেড়েছে ৯ গুণেরও বেশি।

গত বছরের জুলাই থেকে এ বছরের মার্চ পর্যন্ত সময়ে কোম্পানিটির রাজস্ব আয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৭ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ২২০ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। আর এ সময়ে কোম্পানিটি গত বছরের লোকসান কাটিয়ে ৭০ কোটি টাকা নিট মুনাফা করতে সক্ষম হয়েছে।

প্রিমিয়ার সিমেন্ট: জানুয়ারি-মার্চ সময়ে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রিমিয়ার সিমেন্টের আয় ১৪ শতাংশ বেড়ে ৩৬৩ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। এ সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে আট গুণেরও বেশি। গত বছরের জুলাই থেকে এ বছরের মার্চ পর্যন্ত নয় মাসে কোম্পানিটির রাজস্ব আয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৩ শতাংশ বেড়ে ৯৫৮ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। এ সময়ে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কোম্পানিটির নিট মুনাফা বেড়েছে তিন গুণ।

আরামিট সিমেন্ট: জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত এই তিন মাসে আরামিট সিমেন্টের রাজস্ব আয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৫ শতাংশ কমে ৫৯ কোটি ৬৩ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে। অবশ্য এ সময়ে কোম্পানিটি আগের বছরের লোকসান কাটিয়ে ২ কোটি ৪৩ লাখ টাকা কর-পরবর্তী নিট মুনাফা করতে সক্ষম হয়েছে। এদিকে গত বছরের জুলাই থেকে এ বছরের মার্চ পর্যন্ত নয় মাসে কোম্পানিটির রাজস্ব আয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩ দশমিক ৬১ শতাংশ কমে ১৫৫ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। এ সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ১ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।

হাইডেলবার্গ সিমেন্ট: চলতি বছরের জানুয়ারি-মার্চ সময়ে হাইডেলবার্গ সিমেন্টের বিক্রি হয়েছে ৫৫০ কোটি টাকা। যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে বিক্রি ছিল ৩৮২ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির বিক্রি বেড়েছে প্রায় ৪৪ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ৪৬ কোটি টাকা। যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে বিক্রি ছিল ৪ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির নিট মুনাফা বেড়েছে ১০ গুণের বেশি।

লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ: জানুয়ারি-মার্চ সময়ে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশের রাজস্ব আয় ২৩ শতাংশ বেড়ে ৬৩১ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। এ সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ১০৩ কোটি টাকা। যেখানে আগের বছরের একই সময়ে নিট মুনাফা হয়েছিল ৫২ কোটি টাকা। সে হিসাবে কোম্পানিটির নিট মুনাফা বেড়েছে ৯৮ শতাংশ।

মূলত বাজারে নতুন সিমেন্ট আনার পাশাপাশি চুনাপাথর চিপের ব্যবসা থেকে আয় যোগ হওয়ার কারণে কোম্পানিটির বিক্রি বেড়েছে। এছাড়া প্রচলিত সিমেন্টের ব্যবসায়ও প্রবৃদ্ধি হয়েছে কোম্পানিটির।

কনফিডেন্স সিমেন্ট: কনফিডেন্স সিমেন্টের পরিচালনা পর্ষদ প্রথম প্রান্তিকের (জুলাই–সেপ্টেম্বর, ২০২০) অনিরীক্ষিত প্রতিবেদন অনুযায়ী কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) আগের হিসাব বছরের চেয়ে বেড়েছে। এ সময়ে পণ্য বিক্রি ১৫ শতাংশ বাড়লেও সুদ ব্যয় উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাওয়ায় কনফিডেন্স সিমেন্টের নিট মুনাফা বেড়েছে ২৪৬ শতাংশ।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ বছরের প্রথম তিন মাসে বাজারে সিমেন্টের চাহিদা বেশ ভালো ছিল। পাশাপাশি ব্যাংকের সুদের হার কমে যাওয়ার কারণে কোম্পানিগুলোর আর্থিক ব্যয় আগের তুলনায় বেশ কমে গেছে। ফলে ব্যবসা বাড়ার পাশাপাশি ব্যয় কমে যাওয়ার কারণে এ সময়ে কোম্পানিগুলোর মুনাফায় উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

ডিএসই ৭ কোম্পানির শেয়ার বিক্রেতা উধাও: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে লেনদেন শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। লেনদেন চলাকালীন সময়ে ৭ কোম্পানির শেয়ার দর বিক্রেতা উধাও হয়ে যায়। ফলে এসব কোম্পানির শেয়ার বিক্রেতা সংকটে পড়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

যেসব কোম্পানির শেয়ার বিক্রেতা সংকটে পড়েছে সেগুলো মধ্যে ৩টি প্রতিষ্ঠান সদ্য ওভার দ্যা কাউন্টার মার্কেট থেকে মূল মার্কেটে ফিরে আসা। কোম্পানিগুলো হলো- তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল, মুন্নু ফেব্রিক্স এবং বাংলাদেশ মনোস্পুল পেপার। এছাড়া আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, ইন্ট্রাকো, খান ব্রাদার্স এবং তুংহাই নিটিংয়ের শেয়ারও বিক্রেতা সংকটে পড়েছে।

জানা গেছে, রোববার তমিজউদ্দিন টেক্সটাইলের শেয়ার দর ছিল ২১ টাকা। সোমবার কোম্পানির শেয়ার দর বেড়ে সর্বশেষ ২৩.১০ টাকায় লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিটির শেয়ার দর ২.১০ টাকা বা ১০ শতাংশ বেড়েছে।

বাংলাদেশ মনোস্পুল পেপার: আগের কার্যদিবসে কোম্পানির দর ছিল ৮৮.৪০ টাকা। আজ দর বেড়ে কোম্পানিটির শেয়ার সর্বশেষ ৯৭.২০ টাকায় বেচাকেনা হয়েছে। কোম্পানিটির শেয়ার দর ৮.৮০ টাকা বা ৯.৯৫ শতাংশ বেড়েছে।

মুন্নু ফেব্রিক্স: আগের কার্যদিবসে কোম্পানির দর ছিল ১৭.৬০ টাকা। আজ দর বেড়ে কোম্পানিটির শেয়ার সর্বশেষ ১৯.৩০ টাকায় লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিটির শেয়ার দর ১.৭০ টাকা বা ৯.৬৫ শতাংশ বেড়েছে।

আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ: আগের কার্যদিবসে কোম্পানির দর ছিল ৩৬.৩০ টাকায়। আজ দর বেড়ে কোম্পানিটির শেয়ার সর্বশেষ ৩৯.৯ টাকায় লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিটির শেয়ার দর ৩.৬০ টাকা বা ৯.৯১ শতাংশ বেড়েছে।

ইন্ট্রাকো: আগের কার্যদিবসে কোম্পানির দর ছিল ২০.২০ টাকা। আজ দর বেড়ে কোম্পানিটির শেয়ার সর্বশেষ ২২.২০ টাকায় বেচাকেনা হয়েছে। কোম্পানিটির শেয়ার দর ২ টাকা বা ৯.৯০ শতাংশ বেড়েছে।

খান ব্রাদার্স: আগের কার্যদিবসে কোম্পানির দর ছিল ১১.৮০ টাকা। আজ দর বেড়ে কোম্পানিটির শেয়ার সর্বশেষ ১২.৯০ টাকায় বেচাকেনা হয়েছে। কোম্পানিটির শেয়ার দর ১.১০ টাকা বা ৯.৩২ শতাংশ বেড়েছে।

তুংহাই নিটিং: আগের কার্যদিবসে কোম্পানির দর ছিল ৪.৩০ টাকা। আজ দর বেড়ে কোম্পানিটির শেয়ার সর্বশেষ ৪.৭০ টাকায় লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিটির শেয়ার দর ০.৪০ টাকা বা ৯.৩০ শতাংশ বেড়েছে।

কারণ ছাড়াই বাড়ছে দুই কোম্পানির শেয়ার দর: কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়া বাড়ছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত দুই কোম্পানির শেয়ার দর। কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে এমনটিই জানানো হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। যেসব কোম্পানির দর কারণ ছাড়াই অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে সেগুলো হলো- মুন্নু ফেব্রিক্স এবং খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ।

তথ্য মতে, আলোচ্য কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর বেশ কিছুদিন ধরেই অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে। এ কারণে দর বাড়ার বিষয়টি ব্যাখ্যা দিতে কোম্পানিগুলোকে নোটিশ দেয় ডিএসই। নোটিশের জবাবে কোম্পানিগুলো জানায়, দর বাড়ার অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই। কারণ ছাড়াই কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে।

শেয়ার দর পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত ১৩ জুন মুন্নু ফেব্রিক্সের শেয়ার দর ছিল ১১ টাকা। রোববার কোম্পানির শেয়ার দর বেড়ে ১৭.৬০ টাকায় লেনদেন হয়েছে। আলোচ্য সময়ে কোম্পানির শেয়ার দর ৬.৬০ টাকা বা ৬০ শতাংশ বেড়েছে। আজও কোম্পানির শেয়ার দর বেড়ে ১৯.৩০ টাকায় লেনদেন হয়েছে।

অপরদিকে, তৃতীয় প্রান্তিকে লোকসান বৃদ্ধি পাওয়া খান ব্রাদার্সের শেয়ার দরও টানা বাড়ছে। গত ৮ জুন কোম্পানিটির শেয়ার দর ছিল ৮.৯০ টাকা। গতকাল কোম্পানির শেয়ার দর বেড়ে ১১.৮০ টাকায় লেনদেন হয়েছে।

আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার দর ২.৯০ টাকা বা ৩৩ শতাংশ বেড়েছে। আজও কোম্পানির শেয়ার দর বেড়ে ১২.৯০ টাকায় লেনদেন হয়েছে। বিষয়টি আস্বাভাবিক মনে করে নোটিশ দেয় ডিএসই। নোটিশের জবাবে কোম্পানিগুলো জানায় দর বাড়ার কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য তাদের কাছে নেই।

ডিএসই’র ৫ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকার মূলধনের রেকর্ড: পুঁজিবাজার ধীরে ধীরে আস্থার সংকট কেটে নতুন উচ্চতায় উঠছে। দিন যতই যাচ্ছে বিনিয়োগকারীদের মাঝে আস্থা ততই বাড়ছে। ফলে পুঁজিবাজারে নতুন নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করছে। সূচক, লেনদেন ও বাজার মূলধনে ইতিহাস সৃষ্টি হচ্ছে। সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে বাজার মূলধন ৫ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা অতিক্রম করে রেকর্ড গড়েছে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শেয়ারবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) নানামুখী ইতিবাচক উদ্যোগ নেওয়ায় শেয়ারবাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা দিন দিন বাড়ছে। ফলে, দীর্ঘদিন শেয়ারবাজারের বাইরে থাকা বিনিয়োগকারীরা বাজারে আসছেন। বাজারে লেনদেন বাড়ছে। একই সঙ্গে বাজার মূলধনের পরিমাণ দিন দিন বেড়ে রেকর্ড সৃষ্টি হচ্ছে।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ডিএসইতে সোমবার বাজার মূলধন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ১৩ হাজার ৮৭ কোটি ২১ লাখ টাকায়। এর মাধ্যমে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছে ডিএসই। এর আগে কখনো বাজার মূলধন এতটা বাড়েনি। এর আগে চলতি বছরের শুরুতে বাজার মূলধন ৫ লাখ কোটি টাকা অতিক্রম করলেও পরে তা বেশি দূর এগোতে পারেনি। বেশকিছু দিন ধরে বাজারে ইতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকায় লেনদেন, সূচক এবং বাজার মূলধন ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। এর ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার বাজার মূলধনে নতুন রেকর্ড গড়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ।

এদিকে, সোমবার ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৬ হাজার ১২৫ পয়েন্টে পৌঁছেছে। ডিএসইতে এ সূচকটি ৩ বছর ৪ মাস ৭ দিন বা ৭৭০ কার্যদিবস পর ৬ হাজার ১০০ পয়েন্ট অতিক্রম করল। এর আগে ২০১৮ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি সূচকটি ৬ হাজার ১০২ পয়েন্টে অবস্থান করছিল।

বিনিয়োগকারীরা বলছেন, বর্তমান কমিশন বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার চেষ্টা করছে। ফলে বিনিয়োগকারীরাও বাজারে বিনিয়োগ করতে আস্হা পাচ্ছেন। তাতে দিন দিন ইতিবাচক ধারায় এগিয়ে যাচ্ছে শেয়ারবাজার। যদি এ ধারা অব্যাহত থাকে, তাহলে বাজার মূলধনের মতো সূচক ও লেনদেনেও নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হবে।

ব্লক মার্কেটে ১০ কোম্পানির লেনদেনের চমক: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ব্লক মার্কেটে ৫১টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব কোম্পানির ১১৬ কোটি ৯৪ লাখ ৩৭ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

কোম্পানিগুলোর ১ কোটি ৫৯ লাখ ৯৪ হাজার ৬৯টি শেয়ার ১১২ বার হাত বদল হয়েছে। এর মাধ্যমে কোম্পানিগুলোর ১১৬ কোটি ৯৪ লাখ ৩৭ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৯ কোম্পানির বিশাল লেনদেন হয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি শেয়ার লেনদেন হয়েছে ফরচুন সুজের। কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৯ কোটি ৪৮ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেক্সিমকো ফার্মার ১৬ কোটি ৩৯ হাজার টাকার, তৃতীয় সর্বোচ্চ বিডি ফাইন্যান্সের ১৪ কোটি ৪০ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকার, চতুর্থ সর্বোচ্চ প্রভাতী ইন্স্যুরেন্সের ১০ কোটি ৫১ লক্ষ ৩৪ হাজার টাকার, পঞ্চম সর্বোচ্চ বেক্সিমকোর ৭ কোটি ৭২ লক্ষ টাকার, ষষ্ঠ সর্বোচ্চ ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর ৭ কোটি ২৮ লক্ষ টাকার, সপ্তম সর্বোচ্চ জেনেক্স ইনফোসিসের ৬ কোটি ৫৯ লক্ষ ২৮ হাজার টাকার, অষ্টম সর্বোচ্চ ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্সের ৬ কোটি ২৫ লক্ষ ৬ হাজার টাকার, নবম সর্বোচ্চ রেনাটার ৬ কোটি ৩ লক্ষ ৫৭ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দশম সর্বোচ্চ স্কয়ার ফার্মার ৪ কোটি ৫০ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকার।

এছাড়া ন্যাশনাল ফিড মিলের ৪ কোটি ১০ লক্ষ ৭৩ হাজার টাকার, পপুলার লাইফের ১ কোটি ৯২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার, ব্র্যাক ব্যাংকের ১ কোটি ৬৬ লক্ষ ১৮ হাজার টাকার, হামিদ ফেব্রিক্সের ১ কোটি ৫৬ লক্ষ ৪৩ হাজার টাকার, নিউ লাইনের ১ কোটি ২৫ লক্ষ টাকার, এনআরবিসি ব্যাংকের ১ কোটি ১৫ লক্ষ ১৪ হাজার টাকার, এসিআই এর ৮৮ লক্ষ ২২ হাজার টাকার, কাট্টলি টেক্সটাইলের ৫৫ লক্ষ ৬ হাজার টাকার,

এসকে ট্রিমসের ৪৯ লক্ষ ৭০ হাজার টাকার, প্রাইম লাইফের ৩৬ লক্ষ ৬০ হাজার টাকার, মালেক স্পিনিংয়ের ৩৩ লক্ষ ৮৬ হাজার টাকার, মেঘনা পেট্রোলিয়ামের ৩০ লক্ষ ৩ হাজার টাকার, তৌফিকার ২৯ লক্ষ ৯৯ হাজার টাকার, প্রাইম ব্যাংকের ২৯ লক্ষ ১৫ হাজার টাকার, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের ২৭ লক্ষ ২৫ হাজার টাকার, সালভো কেমিক্যালের ২৬ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকার, লুব-রেফের ২০ লক্ষ ৬৩ হাজার টাকার,

আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের ১৭ লক্ষ ৮২ হাজার টাকার, ড্রাগন সোয়েটারের ১৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার, ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাইয়ের ১৬ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকার, ম্যাকসন স্পিনিংয়ের ১২ লক্ষ ২৫ হাজার টাকার, রূপালী ব্যাংকের ১২ লক্ষ টাকার, সামিট পাওয়ারের ১১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলের ১১ লক্ষ ২৯ হাজার টাকার, মারিকোর ১১ লক্ষ ৭ হাজার টাকার, জিবিবি পাওয়ারের ১০ লক্ষ ৫ হাজার টাকার, ইবিএলএনআরবি মিউচুয়াল ফান্ডের ৯ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকার, বিবিএস ক্যাবলের ৯ লক্ষ ৫৭ হাজার টাকার,

কর্ণফুলীর ৯ লক্ষ ২৮ হাজার টাকার, কেয়া কসমেটিকের ৮ লক্ষ ৭১ হাজার টাকার, ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্সের ৭ লক্ষ ২০ হাজার টাকার, নর্দান ইন্সুরেন্সের ৭ লক্ষ ৯ হাজার টাকার, লংকাবাংলা ফাইন্যান্সের ৬ লক্ষ ৪২ হাজার টাকার, ই-জেনারেশনের ৬ লক্ষ ২৭ হাজার টাকার, মার্কেনটাইল ইন্স্যুরেন্সের ৫ লক্ষ ৯০ হাজার টাকার, ওরিয়ন ফার্মার ৫ লক্ষ ৭০ হাজার টাকার, সিটি ব্যাংকের ৫ লক্ষ ৬৩ হাজার টাকার, আরামিট সিমেন্টের ৫ লক্ষ ২৮ হাজার টাকার, গ্রীন ডেল্টার ৫ লক্ষ ২৮ হাজার টাকার, আরডি ফুডের ৫ লক্ষ ১ হাজার টাকার, পাওয়ার গ্রীডের ৫ লক্ষ টাকার লেনদেন হয়েছে।

জিপিএইচ ইস্পাতের নতুন প্রকল্পে উৎপাদন শুরু করবে: সম্প্রসারিত নতুন প্রকল্পে আজ বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করবে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রকৌশল খাতের কোম্পানি জিপিএইচ ইস্পাত লিমিটেড। ইতোমধ্যে জিপিএইচ ইস্পাতের নতুন প্রকল্পে যন্ত্রপাতি আংশিক সংস্থাপন করে পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হয়েছে। পরীক্ষামূলক উৎপাদন সন্তুষজনক হওয়ায় কোম্পানিটি বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ডিএসই সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, কোম্পানিটির সম্প্রসারিত নতুন প্রকল্পের মেশিনারিজ সংস্থাপন ও বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরুর বিষয়টি করোনাভাইরাস অতিমারির কারণে বিলম্বিত হয়েছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রকল্পের প্ল্যান্ট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান প্রাইমেটাল টেকনোলজিসের প্রকৌশলী ও টেকনিশিয়ানরা বাংলাদেশে আসতে পারেন নি। করোনা পরিস্থিতির তেমন উন্নতি না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত অনলাইনে প্রাইমেটালের প্রকৌশলীদের সহযোগিতা নিয়ে জিপিএইচ ইস্পাতের নিজস্ব টেকনিশিয়ানরা যন্ত্রপাতি সংস্থাপন শুরু করেন এবং তা সফলভাবে সম্পন্ন করতে সক্ষম হন।

জিপিএইচ ইস্পাতের সম্প্রসারিত নতুন প্রকল্পে বছরে ৮ লাখ ৪০ হাজার টন এমএস বিলেট এবং ৬ লাখ ৪০ হাজার টন এমএস রড, মিডিয়াম সেকশন প্রোডাক্টস (স্টিল বিম, এঙ্গেল, চ্যানেল, ফ্ল্যাটবার ইত্যাদি) উৎপাদন করা সম্ভব। তবে পূর্ণ উৎপাদনক্ষমতা ব্যবহারের জন্য বেশ কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে।

জিপিএইচ ইস্পাতের সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন অনুসারে, কোম্পানিটির বিদ্যমান প্রকল্পের বার্ষিক উৎপাদনক্ষমতা হচ্ছে-১ লাখ ৬৮ হাজার টন এমএস বিলেট এবং ১ লাখ ২০ হাজার টন এমএস রড। নতুন প্রকল্প পূর্ণক্ষমতায় চালু হলে এই প্রকল্পের উৎপাদন ক্ষমতা বেড়ে দাঁড়াবে ১০ লাখ ৮ হাজার টন এমএস বিলেট এবং ৭ লাখ ৬০ হাজার টন এমএস রড ও মিডিয়াম সেকশন প্রোডাক্টস।

ডিএসইর সফটওয়্যার ফের ত্রুটি, ভোগান্তিতে বিনিয়োগকারীরা: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সফটওয়্যার ত্রুটির কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন বিনিয়োগকারীরা। এতে করে ক্ষতির মুখেও পড়তে হচ্ছে তাদের।

জানা গেছে, লেনদেনের শেষ ১৫ মিনিট ডিএসইর সফটওয়্যারে ত্রুটি দেখা দেয়। এই সময় অনেক বিনিয়োগকারীর শেয়ারের ক্রয় ও বিক্রয় আদেশ কার্যকর হয়নি। এতে করে শেয়ার বিক্রি করে মুনাফা তুলতে পারেনি তারা। একইভাবে সাধ্যের মধ্যে ক্রয়ের আদেশ দেয়া শেয়ার পায়নি অনেক বিনিয়োগকারী। এতে উভয় পক্ষের অর্থাৎ শেয়ারের ক্রয় এবং বিক্রয় আদেশ দেয়া বিনিয়োগকারীর ক্ষতির মুখে পড়ে।

ব্র্যাক ইপিএল ব্রোকারেজ হাউজের এক বিনিয়োগকারী অভিযোগ করে বলেন, গত কয়েকদিন ধরে শেষের ১০-১৫ মিনিট লেনদেনের ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। ওইসময়টুকুতে ঠিকমতো ক্রয় ও বিক্রয় আদেশ কার্যকর হচ্ছে না।

তবে ডিএসইর সফটওয়্যার ত্রুটি দীর্ঘদিনের। এ নিয়ে কয়েক দফায় কমিশন থেকেও ডিএসইকে ডাকা হয়েছে। এমনকি সমস্যা অনুসন্ধানে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) একটি তদন্ত কমিটি পর্যন্ত গঠন করেছিল।

ডেল্টা লাইফ ইন্সুরেন্সে নতুন প্রশাসক নিয়োগ: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের নতুন প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব মো. রফিকুল ইসলামকে প্রতিষ্ঠানটির প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত মো. রফিকুল ইসলাম প্রতিষ্ঠানটির প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করবেন। ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের প্রশাসক সুলতান-উল- আবেদিন মোল্লার নিয়োগ বাতিল করে অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব মো. রফিকুল ইসলামকে প্রতিষ্ঠানটির নতুন প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয়।

বিএসইসি হার্ডলাইনে, পিছু হটল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ : ডিএসই-মোবাইল অ্যাপ ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে অ্যাপের জন্য মাসিক ফি না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষ। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলামের নির্দেশের প্রেক্ষিতে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

সূত্রটি জানিয়েছে, সম্প্রতি ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয় আগামী জুলাই থেকে ডিএসই-মোবাইল অ্যাপ ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে মাসে ১০০ টাকা করে ফি নেয়া হবে। গত বুধবার (১৬ জুন) বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম আপাতত এই ফি না নেয়ার জন্য বলেন। এর প্রেক্ষিতে ডিএসই কর্তৃপক্ষ ফি নেয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে।

এদিকে ডিএসই-মোবাইল অ্যাপ ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে মাসে ১০০ টাকা করে ফি নেয়া হবে এমন সিদ্ধান্ত ছড়িয়ে পড়লে এ নিয়ে বিনিয়োগকারীরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে এর কঠোর সমালোচনা করা হয়।

বিনিয়োগকারীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ তোলা হয়, ডিএসই-মোবাইল অ্যাপে নানা রকম জটিলতা রয়েছে। অ্যাপ ব্যবহার করতে গিয়ে বিনিয়োগকারীরা নানা ধরনের সমস্যায় পড়ছেন। আবার দীর্ঘদিন ধরে মোবাইল অ্যাপের নতুন নিবন্ধন দেয়া বন্ধ রয়েছে। এসব সমস্যার সমাধান না করে ডিএসই চার্জ ধার্য করছে।

মো. আব্দুর রাজ্জাক নামে এক বিনিয়োগকারী বলেন, ডিএসইর মোবাইল অ্যাপ দিয়ে ঠিকমতো প্রবেশ করা যায় না। লেনদেনের ক্ষেত্রে জটিলতা দেখা দেয়। অ্যাপে নানা সমস্যা থাকলেও তার সমাধান না করে চার্জ আরোপের সিদ্ধান্ত বিনিয়োগকারীদের ওপর জুলুম।

মো. আব্দুর রাজ্জাকের মতো এমন অনেক বিনিয়োগকারী মোবাইল অ্যাপে চার্জ বসানোর বিরোধিতা করেন। তারা চার্জ না বসিয়ে আগে মোবাইল অ্যাপের সমস্যা সমাধানের দাবি জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে অ্যাপে নতুন নিবন্ধন দেয়ার দাবিও জানিয়েছেন।

ডিএসইর দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, পরিচালনা পর্ষদ মোবাইল অ্যাপ ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে মাসে ১০০ টাকা করে চার্জ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, যা আগামী ১ জুলাই থেকে কার্যকর করার কথা ছিল। কিন্তু বিএসইসির চেয়ারম্যান এতে কিছুটা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি কঠোরভাবে বলে দিয়েছেন এখন মোবাইল অ্যাপের জন্য কোন ধরনের চার্জ নেয়া যাবে না।

এদিকে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, বিএসইসি আইটিবান্ধব শেয়ারবাজার করতে চাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে মোবাইল অ্যাপে চার্জ বসানো এক ধরনের প্রতিবন্ধকতা হিসেবে দেখছে বিএসইসি। এ কারণে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থের কথা চিন্তা করে বিএসইসির চেয়ারম্যান মোবাইল অ্যাপে আপাতত চার্জ না নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

যোগাযোগ করা হলে বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম বলেন, এখন মোবাইল অ্যাপে কোনো ধরনের চার্জ নেয়া যাবে না। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থের কথা চিন্তা করে এ বিষয়ে ডিএসইকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা শেয়ারবাজারকে আইটিবান্ধব করতে চাচ্ছি। সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। ডিএসইর আইটিতে যত সমস্যা আছে, ছয় মাসের মধ্যে তার সমাধান করতেও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যদি ভবিষ্যতে আমরা বড় কিছু করতে পারি তখন মোবাইল অ্যাপে চার্জ নেয়া যায় কি-না ভেবে দেখা হবে। আপাতত মোবাইল অ্যাপে কোনো ধরনের চার্জ নেয়া যাবে না।

ডিএসইর পরিচালক মো. রকিবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মোবাইল অ্যাপ ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে মাসে ১০০ টাকা করে চার্জ নেয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তবে আমরা আপাতত মোবাইল অ্যাপে চার্জ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। মোবাইল অ্যাপ ব্যবহারকারীদের আপাতত কোনো চার্জ দিতে হবে না।

এ সময় ফ্লোর প্রাইস (সর্বনিম্ন দাম) উঠিয়ে দেয়ার বিষয়েও কথা বলেন ডিএসইর এই পরিচালক। তিনি বলেন, ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে দিয়ে বিএসইসি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর মাধ্যমে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদের চয়েস বাড়বে। এর ফলে লেনদেনের গতি যেমন বাড়বে, তেমনি বাজারেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।