দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: বর্তমানে দেশের জিডিপিতে পুঁজিবাজারের অবদান প্রায় ২০ শতাংশ। আগামী ২০২৪ সালের মধ্যে এটিকে ৫০ শতাংশে উন্নীত করতে চায় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি)। এমনটাই আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বিএসইসির কমিশনার ও সাবেক সচিব মো. আব্দুল হালিম।

আজ বুধবার ডিএসই ট্রেনিং একাডেমিতে সাত দিন ব্যাপি এক প্রশিক্ষণ কর্মশালার সমাপনী দিনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হবে। সেক্ষেত্রে পুঁজিবাজারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেড ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ দর্শনের সাথে সঙ্গতি রেখে তালিকাভুক্ত কোম্পানীসমূহের সিকিউরিটিজ আইনের বিভিন্ন কমপ্লায়েন্সের স্বচ্ছতা ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এরই লক্ষ্যে সমন্বিত অনলাইন ডেটা সংগ্রহ, যাবতীয় তথ্য-উপাত্ত জমা, মূল্যসংবেদনশীল তথ্য এবং আর্থিক হিসাব সরাসরি প্রদানে জন্য একটি প্লাটফর্ম তৈরী করেছে। এই সফটওয়্যারটি ডিএসই’র নিজস্ব কর্মী দিয়ে তৈরী করা হয়।

এই সফটওয়্যারের প্রাসঙ্গিক আইনগুলোর মৌলিক কার্যকারিতা তালিকাভুক্ত কোম্পানির প্রতিনিধিদের কাছে সহজ করার জন্য ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেড গত ৯ থেকে বুধবার (২৩ জুন) পর্যন্ত ডিএসই ট্রেনিং একাডেমিতে ‘ডিজিটাল সাবমিশন অ্যান্ড ডেসিমিনেশন প্লাটফর্ম অব ডিএসই শীর্ষক এক প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করে। প্রশিক্ষণ কর্মশালাটি মোট সাত দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএসইসি’র নির্বাহী পরিচালক মো. সাইফুর রহমান।

প্রশিক্ষণ কর্মশালার সমাপনী দিনে উপস্থিত প্রশিক্ষণার্থীদের স্বাগত জানিয়ে বিএসইসি’র কমিশনার মো. আব্দুল হালিম বলেন, কর্মক্ষেত্রের বিষয়গুলো বাস্তবে রূপ দেয়ার জন্য প্রয়োজন প্রশিক্ষণ। একটি সময় সব ধরনের কাজ ম্যানুয়াল ছিল। বর্তমান যা ভাবাই যায় না। প্রযুক্তির ক্রমবিকাশ আমাদের কর্মকাণ্ডকে সহজ করেছে। এই সফটওয়্যারও আমাদের কাজকে স্বচ্ছ ও কার্যকরী করে দিবে।

বিএসইসি’র নির্বাহী পরিচালক মো. সাইফুর রহমান বলেন, ডিএসই’র ডিজিটাল সাবমিশন অ্যান্ড ডেসিমিশন প্লাটফর্ম একটি স্বপ্ন ছিল। আর এই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য ডিএসই’র দক্ষ কর্মী বাহিনী অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে। এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে ডেটা ইনপুট ও সাবমিশন অতি সহজে ও কম সময়ে করা যাবে। আর এর ফলে পুঁজিবাজারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতা বৃদ্ধি পাবে।

ডিএসই’র প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা ও ঢীম লিডার মো. জিয়াউল করিম প্রারম্ভিক বক্তব্য রাখেন এবং ধন্যবাদ বক্তব্য দেন ডিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ইনচার্জ) আবদুল মতিন পাটওয়ারী। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএসই’র মহাব্যবস্থাপক মো. ছামিউল ইসলাম, উপ-মহাব্যবস্থাপক ও সিআরও (চলতি দায়িত্ব) মো. আব্দুল লতিফ এবং সিনিয়র ম্যানেজার মুহাম্মদ রনি ইসলাম।

প্রশিক্ষণ কর্মশালায় বিভিন্ন টেকনিক্যাল বিষয়ে আলোচনা করেন মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, যুগ্ম পরিচালক, বিএসইসি; সাইয়িদ মাহমুদ জুবায়ের, উপ-মহাব্যবস্থাপক, মার্কেট অপারেশন; মো. রবিউল ইসলাম, সিনিয়র ম্যানেজার, লিস্টিং অ্যাফেয়ার্স ডিপার্টমেন্ট এবং নাজমুস সাকিব, সফটওয়্যার আর্কিটেক্ট, ডিএসই।

ধসের পুঁজিবাজারে চার খাতে সুবাতাস: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে পুঁজিবাজারে বড় পতন হয়েছে। এদিন পুঁজিবাজারের সব সূচক কমেছে। একই সঙ্গ কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর।

আজ ডিএসইতে ৩৭২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৩৩টির বা ৩৫.৭৫ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের, দর কমেছে ২১৭টির বা ৫৮.৩৫ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ২২টির বা ৫.৯২ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের। আজ ডিএসইর প্রধান সূচক কমেছে ৭০ পয়েন্টের কাছাকাছি। বড় পতনের মধ্যেও আজ ফুরফুরে মেজাজে রয়েছে চার খাতের বিনিয়োগকারীরা। খাত চারটি হলো- মিউচুয়াল ফান্ড, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক, তথ্য প্রযুক্তি এবং ফার্মা ও রসায়ন।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মিউচুয়াল ফান্ড খাতের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান সমাপ্ত হতে যাওয়া অর্থবছরের ৯ মাসে ভালো আয় করেছে।। সামনে ফান্ডগুলোর ডিভিডেন্ট ঘোষণা রয়েছে। এছাড়া, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক, তথ্য প্রযুক্তি এবং ফার্মা ও রসায়ন খাতও জুন ক্লোজিং হওয়ায় সামনে ডিভিডেন্ড মওসুম রয়েছে। এসব মিলিয়ে বিনিয়োগকারীরা খাতগুলোরে দিকে আগ্রহী ছিলেন বিধায় খাতগুলোর শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে।

মিউচুয়াল ফান্ড : মিউচুয়াল ফান্ডে লেনদেন হওয়া ৩৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দর বেড়েছে ৩৫টির বা ৯৭.২২ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের। কমেছে ১টির বা ২.৭৮ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের। অপরিবর্তিত রয়েছে ৩টির বা ৮.৩৩ প্রতিষ্ঠানের।

দর বেশি বৃদ্ধি পাওয়া ফান্ডগুলো হলো- আইসিবিএএমসিএল-২য় মিউচুয়াল ফান্ড ৯.৭০ শতাংশ, এক্সিম ব্যাংক-১ম মিউচুয়াল ফান্ড ৮.২১ শতাংশ, আইসিবিএ¤øয়িজ-১ম মিউচুয়াল ফান্ড ৯.৭০ শতাংশ, এসইএমলেকচার মিউচুয়াল ফান্ড ৬.৪২ শতাংশ, মার্কেন্টাইল ব্যাংক-১ম মিউচুয়াল ফান্ড ৬.৪২ শতাংশ, ফিনিক্স ফাইন্যান্স মিউচুয়াল ফান্ড ৫.৭০ শতাংশ, এসইএমএলএফবিএসএল গ্রোথ ফান্ড ৫.০৫ শতাংশ, এনসিসি-১ম মিউচুয়াল ফান্ড ৫ শতাংশ।

খাদ্য ও আনুষঙ্গিক : খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে লেনদেন হওয়া ২০টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৫টির বা ৭৫ শতাংশ কোম্পানির। কমেছে ৫টির বা ২৫ শতাংশ কোম্পানির। অপরিবর্তিত রয়েছে ৩টির বা ১৫ শতাংশ কোম্পানির। দর বেশি বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানিগুলো হলো- ফু-ওয়াং ফুড ৬.৪৫ শতাংশ, রহিমা ফুড ৪.৬৬ শতাংশ, বঙ্গজ ৩.৪৮ শতাংশ, এমারল্ড ওয়েল ৩.৩০ শতাংশ, ফাইন ফুডের ৩.০৯ শতাংশ।

তথ্যপ্রযুক্তি : তথ্যপ্রযুক্তি খাতে লেনদেন হওয়া ১১টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৮টির বা ৭২.৭৩ শতাংশ কোম্পানির। কমেছে ২টির বা ১৮.১৮ শতাংশ কোম্পানির। অপরিবর্তিত রয়েছে ১টির বা ৯.০৯ শতাংশ কোম্পানির দর। দর বেশি বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানিগুলো হলো-বিডি কম ৪.২৬ শতাংশ, ইনফরমেশন সার্ভিসেস ২.৭৫ শতাংশ, অগ্নি সিস্টেম ২.৫০ শতাংশ, ড্যাফোডিল কম্পিউটার ২.২৯ শতাংশ, ইনটেক ২ শতাংশ, এডিএন টেলিকম ১.২০ শতাংশ।

ওষুধ ও রসায়ন : ওষুধ ও রসায়ন খাতে লেনদেন হওয়া ৩০টি কোম্পানির মধ্যে আজ দর বেড়েছে ১৫টির বা ৫০ শতাংশ কোম্পানির। কমেছে ১৪টির বা ৪৬.৬৭ শতাংশ কোম্পানির। অপরিবর্তিত রয়েছে ১টির বা ৩.৩৩ শতাংশ কোম্পানির দর। দর বেশি বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানিগুলো হলো- ফার কেমিক্যাল ৭.৮৪ শতাংশ, সেন্ট্রাল ফার্মা ৭.০৯ শতাংশ, একটিভ ফাইনের ৫.৫২ শতাংশ, ইন্দোবাংলা ফার্মা ৪.৫৯ শতাংশ, সিলভা ফার্মা ৪.০৬ শতাংশ, সিলকো ফার্মা ৩.১০ শতাংশ।

৩ ইস্যুতে পুঁজিবাজারে সূচকের বড়পতন: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের বড় দরপতনে আতঙ্কি হয়ে পড়ছেন বিনিয়োগকারীরা। দীর্ঘদিন পর হঠাৎ বড় ধরনের দরপতনে মুলত আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আজ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সূচকের ওঠানামায় লেনদেন হয় পুঁজিবাজারে। এরপর হঠাৎ করে ব্যাংক-বিমার পাশাপাশি প্রকৌশল এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের শেয়ার বিক্রির হিড়িক পড়ে। আর তাতে লেনদেনের শেষ ঘণ্টায় বড়পতন হয়। আর এ দরপতনের পেছনে ৩ ইস্যু কাজ করে।

প্রথমত, বীমা খাতের বিক্রির হিড়িক, দ্বিতীয়ত করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়ায় নতুন করে আবারও লকডাউন হতে পারে এমন শঙ্কায়। নগদ টাকার হাতে নিচ্ছেন শেয়ার বিক্রি করে।এছাড়া তৃতীয়ত কালো টাকা বিনিয়োগের সুবিধা নিয়ে নানা গুজব রয়েছে।

এদিন দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ৬৯ পয়েন্ট। অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক কমেছে ১৯৫ পয়েন্ট। সূচকের পাশাপাশি কমেছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দামও।

অন্যটি হচ্ছে- পুঁজিবাজার কালো টাকা বিনিয়োগের সুবিধার নিয়ে সৃষ্ট গুজব। দিনের প্রথম দিকে খবর আসে ২০২১-২২ অর্থবছরে কালো টাকার সুবিধা রাখা হচ্ছে। এরপর শেষ বিকেলে খবর আসে কালো টাকার সুযোগ রাখা হচ্ছে না। এই খবরে শেষ ঘণ্টায় ডিএসইর প্রধান সূচক ৬ হাজার ১১৮ পয়েন্ট থেকে ৮৩ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৩৫ পয়েন্ট দাঁড়িয়েছে। এদিন ব্যাংক-বিমায় শেয়ার বিক্রির হিড়িক পড়লেও মিউচ্যুয়াল ফান্ড এবং খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের শেয়ারের দাম বেড়েছে। আর তাতে আরও বড় দরপতন থেকে রক্ষা পেয়েছে পুঁজিবাজার।

বড় দরপতনের বিষয়ে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছায়েদুর রহমান বলেন, করোনার বাড়ার শঙ্কা ও কালো টাকা বিনিয়োগের সুবিধা নিয়ে নানা গুজব বাজারে রয়েছে। এছাড়াও জু্ন ক্লোজিংয়ের কারণে কিছু কারেকশন হয়েছে। তবে শিগিরই মার্কেট ভালো হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

ডিএসইর তথ্য মতে, বুধবার (২৩ জুন) ডিএসইতে মোট ৩৬২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ১৩৩টির, কমেছে ২১৭টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২২টির। তাতে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২০৩০ কোটি ৩ লাখ ৬৭ হাজার টাকা। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ২০১৭ কোটি ৫৬ লাখ ৭৯ হাজার টাকা। অর্থাৎ আগের দিনের চেয়ে লেনদেন বেড়েছে।

প্রায় সব কোম্পানির শেয়ারের দাম কমায় এদিন আগের দিনের চেয়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৬৯ দশমিক ৮৯ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৩৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। প্রধান সূচকের পাশাপাশি ডিএসইর অন্য সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ছয় দশমিক ৯১ পয়েন্ট কমে ১২৯৭ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ১৬ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১৮৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে।এদিন বাজারে লেনদেনের শীর্ষে ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড।

এরপর বেশি লেনদেন হয়েছে ন্যাশনাল ফিড মিলসের শেয়ারের। এরপর ক্রমান্বয়ে রয়েছে ম্যাক্সন স্পিনিং, ড্রাগন সোয়েটার অ্যান্ড স্পিনিং মিলস, কাট্টালী টেক্সটাইল, এসএস স্টিল, সি পার্ল রিসোট, ওরিয়ন ফার্মা, কুইন সাউথ টেক্সটাইল এবং কেয়া কসমেটিকস লিমিটেড।

অপরদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৯৫ পয়েন্ট কমে ১৭ হাজার ৫৭০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। সিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩১৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেড়েছে ১১৮টির, কমেছে ১৭৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২১টির শেয়ারের দাম। সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১৩৬ কোটি ৩৬ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬৯ টাকা। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১০২ কোটি ৫৯ লাখ ৬০ হাজার ৮ টাকা।

সাইফ পাওয়ারটেকের তৃতীয় প্রান্তিক প্রকাশ: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সেবা ও আবাসন খাতের কোম্পানি সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেডের তৃতীয় প্রান্তিকের (জানুয়ারি-মার্চ’২১) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। কোম্পানি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ০৯ পয়সা। গত অর্থবছরের একই সময়ে শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) ছিল ১৪ পয়সা।

সর্বশেষ ৯ মাসে (জুলাই,২০-মার্চ’২১) কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৭৫ পয়সা। গত অর্থবছরের একই সময়ে শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) ছিল ১ টাকা ০৪ পয়সা। একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদ (এনএভি) হয়েছে ১৬ টাকা ১১ পয়সা।

পুঁজিবাজারে থাকছে কালো টাকা বিনিয়োগ, সংশোধনী আসছে বাজেটে: অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ বা কালোটাকা মূলধারার অর্থনীতিতে আনতে চায় সরকার। তাই বাজেটে বিশেষ সুযোগ দেওয়া হয় এই অর্থ বিনিয়োগের জন্য। আগামী অর্থ বছরেও পুঁজিবাজার ও আবাসন খাতে কালোটাকা বিনিয়োগের সুযোগ থাকছে। তবে এর জন্য নিয়মিত করের অতিরিক্ত ১০ শতাংশ কর দিতে হবে।

পুঁজিবাজার ও আবাস খাতে টাকা বিনিয়োগ করলে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বা অন্য কোনো সংস্থা প্রশ্ন করবে না। এ জন্য আয়কর অধ্যাদেশে সংশোধনী আনা হচ্ছে। অর্থ মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) দায়িত্বশীল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

কালোটাকা মূলধারার অর্থনীতিতে আনতে চলতি বাজেটে বিশেষ সুযোগ দেওয়া হয়। ১০ শতাংশ কর দিয়ে পুঁজিবাজার বা আবাসন খাতে বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া হয়, যা ৩০ জুন পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। তবে ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে এ সুযোগের মেয়াদ না বাড়ানোয় আইনগতভাবে তা বাতিল হয়ে যাচ্ছে।

এ সুযোগ বাতিল করার কারণ হচ্ছে- দেশে ব্যক্তিশ্রেণির সর্বোচ্চ কর হার ২৫ শতাংশ। এ সুযোগ অব্যাহত রাখা হলে করদাতারা নিয়মিত কর না দিয়ে তা লুকিয়ে রেখে পরে ১০ শতাংশ হারে কর দিয়ে টাকা বৈধ করার চেষ্টা করতে পারেন। এতে রাজস্ব আদায় কমার পাশাপাশি সৎ ও নিয়মিত করদাতাদের নিরুৎসাহিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

তাই পুঁজিবাজার ও আবাসন খাতকে চাঙা করতে কালোটাকা বিনিয়োগের নতুন বিধান করা হচ্ছে। এ দুই খাতে কালোটাকা সাদা করার ক্ষেত্রে করদাতা যে হারে কর দেবেন, তাকে এর অতিরিক্ত আরও ১০ শতাংশ জরিমানা দিতে হবে। এতে দুদক বা অন্য কোনো সংস্থা প্রশ্ন করবে না।

চলতি বাজেটে আয়কর অধ্যাদেশে নতুন দুটি ধারা যুক্ত করা হয়। ১৯এএএএ ধারায় ১০ শতাংশ কর দিয়ে পুঁজিবাজারে অপ্রদর্শিত বিনিয়োগ রিটার্নে দেখানোর সুযোগ দেওয়া হয়। সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) অনুমোদিত ও তালিকাভুক্ত কোম্পানির স্টক, শেয়ার, মিউচ্যুয়াল ফান্ড, বন্ড, ডিবেঞ্চার ও অন্য সিকিউরিটিজ এবং শেয়ারবাজারে ক্রয়-বিক্রয়যোগ্য সব সরকারি সিকিউরিটিজ ও বন্ডে এ সুযোগ দেওয়া হয়।

এক্ষেত্রে শর্ত দেওয়া হয়, ঘোষণা দেওয়ার পর এক বছর বিনিয়োগকৃত অর্থ পুঁজিবাজার থেকে ওঠানো যাবে না। একইভাবে একই হারে কর দিয়ে ১৯এএএএএ ধারায় জমি-ফ্ল্যাট ও নগদ অর্থ প্রদর্শনের সুযোগ দেওয়া হয়। ১০ শতাংশ কর দিয়ে টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়ায় একে ‘বিশেষ সুবিধা’ বলা হচ্ছে।

এর বাইরেও আরও ৩ পদ্ধতিতে অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ (কালোটাকা সাদা) করা যায়। আয়কর অধ্যাদেশের ১৯(ই) ধারা অনুযায়ী, নির্ধারিত করের অতিরিক্ত ১০ শতাংশ জরিমানা দিয়ে যে কোনো খাতেই কালোটাকা বিনিয়োগ করা যায়। শুধু আবাসন খাতের জন্য ১৯বিবিবিবিবি নামে আয়কর অধ্যাদেশে আলাদা একটি ধারা আছে।

এ ধারা অনুযায়ী, এলাকাভিত্তিক নির্ধারিত হারে কর পরিশোধের মাধ্যমে কালোটাকা বা অপ্রদর্শিত অর্থ দিয়ে ফ্ল্যাট কেনা যায়। ১৯ডিডি ধারা অনুযায়ী, ১০ শতাংশ কর দিয়ে অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্কে বিনিয়োগ করা যায়।

সূত্রগুলো জানিয়েছে, আগামী অর্থবছরে বিশেষ সুবিধা বাতিল হচ্ছে। কিন্তু আগের ৩ পদ্ধতিতে টাকা সাদা করা যাবে। এ জন্য কোনো সংস্থা যাতে আয়ের উৎস সম্পর্কে জানতে চাইতে না পারে সে জন্য আয়কর অধ্যাদেশে প্রভিশন রাখা হচ্ছে। অর্থাৎ নির্ধারিত করের অতিরিক্ত ১০ শতাংশ জরিমানা দিয়ে কালোটাকা পুঁজিবাজার বা আবাসন খাতে বিনিয়োগ করলে কোনো সংস্থা প্রশ্ন করবে না।

কালোটাকার ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, স্বাধীনতার পর থেকে নানাভাবেই কালোটাকা বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া হয়। মূলত কালোটাকাকে অর্থনীতির মূল ধারায় আনতে এ সুযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের একাংশ এর বিরোধিতা করে আসছে। ’৭১-৭৫ সাল পর্যন্ত ২ কোটি ২৫ লাখ টাকা সাদা করা হয়েছে।

তৎকালীন সময়ে এ থেকে সরকার মাত্র ১৯ লাখ টাকা আয়কর পায়। পরে এ সুবিধা বহাল থাকায় প্রতি বছরই কালোটাকা সাদা করার পরিমাণ বাড়তে থাকে। ’৭৬-৮০ সাল পর্যন্ত ৫০ কোটি ৭৬ লাখ টাকা সাদা করা হয়, সরকার আয়কর পায় ৮১ লাখ টাকা। ’৮১-৯০ পর্যন্ত ৪৫ কোটি টাকা সাদা হয়, সরকার আয়কর পায় ৪ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। ’৯১-৯৬ পর্যন্ত ১৫০ কোটি টাকা সাদা হয়, আয়কর আদায় হয় ১৫ কোটি টাকা।

এরপর ধারাবাহিকভাবে কালোটাকার পরিমাণ বাড়তে থাকে। ১৯৯৭-২০০০ পর্যন্ত এক লাফে ৯৫০ কোটি টাকা সাদা হয়, আয়কর আদায় হয় ১৪১ কোটি টাকা। পরের ৭ বছর অর্থাৎ ২০০১-০৭ পর্যন্ত ৮২৭ কোটি টাকা, ২০০৭-০৯ পর্যন্ত এক হাজার ৬৮২ কোটি টাকা, ২০০৯-১৩ পর্যন্ত এক হাজার ৮০৫ কোটি টাকা ও ২০১৩-২০ পর্যন্ত ১১ হাজার ১০৭ কোটি টাকা মূল ধারার অর্থনীতিতে প্রবেশ করে। এ থেকে সরকার রাজস্ব পায় যথাক্রমে ১০২ কোটি, ৯১১ কোটি, ২৩০ কোটি ও এক হাজার ৭৩ কোটি টাকা।

কালো টাকা সাদা করার সুযোগ জানতে ধৈর্য ধরুন: অর্থমন্ত্রী: কালো টাকা সাদা করার সুযোগ অব্যাহত রাখা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। বাজেটের আগে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছিলেন, যতদিন অর্থনীতিতে অপ্রদর্শিত অর্থ থাকবে ততদিন কালো টাকা বৈধ করার সুযোগ দেয়া হবে।

মন্ত্রীর এমন বক্তব্যে ধারণা করা হয়েছিল, প্রস্তাবিত বাজেটে কালো টাকা সাদা করার বিদ্যমান সুযোগটি অব্যাহত থাকবে। কিন্তু গত ৩ জুন ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণায় এ বিষয়ে কিছুই বলা হয়নি। এমন কি অর্থবিলেও দেখা যায়নি। বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচানার পরিপ্রেক্ষিতে বাজেটপরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এর ব্যাখাও দেন অর্থমন্ত্রী। চলমান সুযোগটি বহাল রাখার আভাস দিলেও পরিস্কার করে কিছু বলেননি তিনি।

আজ বুধবার (২৩ জুন) কালো টাকা সাদা করার সুযোগের বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সাংবাদিকদের বলেন, কালো টাকা সাদা করার বর্তমান সুযোগ বহাল রাখা হবে কি হবে না, তা জানার জন্য আরও কিছু দিন অপেক্ষা করতে হবে। অর্থমন্ত্রী বলেন, আগামী ২৯ জুন অর্থবিল পাশ হবে। ওই দিন পর্যন্ত ধৈর্য ধরতে হবে।

উল্লেখ্য, যে অর্থবছরটি শেষ হতে হচ্ছে তাতে নগদ টাকা, ব্যাংকে গচ্ছিত টাকা, জমি সঞ্চয়পত্রসহ বিভিন্ন খাতে ঢালাও ভাবে ১০ শতাংশ কর দিয়ে কোনো প্রশ্নে ছাড়াই কালো টাকার সাদা করার সুযোগ দেয়া হয়। যার মেয়াদ শেষ হচ্ছে চলতি বছরের ৩০ জুন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনবিআরের এক কর্মকর্তা সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, এটি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক সিদ্বান্ত। এ জন্য সরকারের শীর্ষ মহলের সবুজ সংকেত লাগবে।

এনবিআর কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলতি বছরের মে পর্যন্ত সরকারের দেয়া এ সুযোগটি গহণ করে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা সাদা হয়েছে। এর বিপরীতে সরকার কর পেয়েছে দেড় হাজার কোটি টাকা।

নতুন বাজেট বাস্তবায়নে অর্থনীতিতে কোনো চ্যালেঞ্জ দেখছেন কি-না—এমন এক প্রশ্নের জবাবে মুস্তফা কামাল বলেন, ‘অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তবে আমি শঙ্কিত নই। কারণ, চ্যালেঞ্জগুলোকে সম্ভাবনায় রূপান্তর করা যাবে।’ এ জন্য অনেক কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। বাজেট ঘাটতি নিয়ে উদ্ধিগ্ন নন অর্থমন্ত্রী। তিনি মনে করেন, ঘাটতি বেশি হলেও তাতে কোনো সমস্যা নেই। কারণ করোনাকালে আমরা বিদেশ থেকে অনেক অর্থ পাবো বলে আশা করছি।

তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ এবং বিকেএমইএ সম্প্রতি করোনা মহামারির ক্ষতি কাঠিয়ে উঠতে সরকারের কাছ থেকে নেয়া ২০ হাজার কোটি টাকা সহজ শর্তে ঋণ পরিশোধের সময় আরও বাড়ানোর আবেদন করেছে। সরকারের কাছ থেকে আপনি এ চিঠি পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি এখনও পাই নি। পেলে বিষয়টি দেখব।’ অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী দেখভাল করছেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্বান্ত নেয়া হবে।

ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্সের আইপিও অনুমোদন দিয়েছে বিএসইসি: ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডডের প্রাথমিক গণ প্রস্তাব (আইপিও) অনুমোদন দিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি)। বুধবার বিএসইসির ৭৭৯তম কমিশন সভায় এ অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্সের প্রতিটি ১০ টাকা ইস্যু মূল্যের ১,৯৩,৬০,৯০৪ টি সাধারণ শেয়ার আইপিওর মাধ্যমে ইস্যু করার প্রস্তাবে কমিশন অনুমোদন প্রদান করেছে। এই আইপিও এর মাধ্যমে কোম্পানিটি ১৯,৩৬,০৯,০৪০ টাকা পুঁজি উত্তোলন করে ফিক্সড ডিপোজিট, পুঁজি বাজারে বিনিয়োগ, ফ্লোর ক্রয় এবং প্রাথমিক গণ প্রস্তাবের খরচ খাতে ব্যয় করবে । কোম্পানিটির ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২০ তারিখের নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী অনুযায়ী ছাড়া নেট গ্যাসেট ভ্যালু ১৬.০২ টাকা (সম্পদ পুনপমূল্যায়নসহ) এবং ইপিএস .৯৩ টাকা । কোম্পানিটির ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িতে নিয়োজিত রয়েছে সোনার বাংলা ক্যাপিটাল ম্যনেজমেন্ট লিমিটেড।

উল্লেখ্য যে, ইলেকট্রনিক সাবসক্রিপশন সিস্টেম এর মাধ্যমে কোম্পানিটির সাধারণ শেয়ারের চাঁদা গ্রহন শুরুর দিন হতে পূর্ববর্তী পঞ্চম কার্য দিবস শেষে চাঁদা প্রদানে ইচ্ছুক যোগ্য বিনিয়োগকারী গণের মধ্যে স্বীকৃত পেনশন ফাল্ড এবং স্বীকৃত প্রভিডেন্ড ফান্ড এর ক্ষেত্রে তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজে বাজার মূল্যে ন্যুনতম ৫০ লক্ষ টাকা এবং যোগ্য বিনিয়োগকারী গণের তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজে বাজার মূল্যে ন্যুনতম ১ কোটি টাকা বিনিয়োগ থাকতে হবে মর্মে সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহীত হয়।

বেক্সিমকোর ৩ হাজার কোটি টাকার সুকুক বন্ডের অনুমোদন: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বাংলাদেশ এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট কোম্পানি (বেক্সিমকো) লিমিটেডকে শরিয়াহভিত্তিক সুকুক বন্ড ছেড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার তহবিল সংগ্রহের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন(বিএসইসি) বুধবার ৭৭৯তম কমিশন সভায় শর্তসাপেক্ষে এ অনুমোদন প্রদান করেছে। বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, তিন হাজার কোটি টাকার সুকুক বন্ডের মেয়াদ ৫ বছর। বেক্সিমকো অভিপ্রায় পত্র পাওয়ার পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে সুকুকের প্রস্তাবিত ট্রাস্টির নিবন্ধন সনদ এবং কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত ট্রাস্ট ডেড সহ চূড়ান্ত সাবস্ক্রিপশন এগ্রিমেন্ট জমা দেয়া সাপেক্ষে সম্মতি পত্র ইস্যু করা হবে। প্রস্তাবিত গ্রীন সুকুকটি ২২.৫০ বিলিয়ন প্রাইভেট প্লেসমেন্ট (৭.৫০ বিলিয়ন বিদ্যমান শেয়ারহোল্ডারদের নিকট হতে এবং ১৫.০০ বিলিয়ন বিদ্যমান শেয়ারহোল্ডারদের ব্যতীত অন্যান্য বিনিয়োগকারীদের নিকট হতে) এর মাধ্যমে এবং ৭.৫০ বিলিয়ন প্রাথমিক গণ প্রস্তাব (আইপিও) এর মাধ্যমে ইস্যু করা হবে।

উল্লেখ্য, এই সুকুক ইস্যুর মাধ্যমে অর্থ উত্তোলন করে বেক্সিমকো লিমিটেডের টেক্সটাইল ইউনিটের কার্যক্রম বর্ধিতকরণ এবং বেক্সিমকো লিমিটেড দু’টি সরকার অনুমোদিত সাবসিডিয়ারি নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পের (তিস্তা সোলার লি: এবং করতোয়া সোলার লি:) বাস্তবায়নের পাশাপাশি পরিবেশ উন্নয়ন এবং সংরক্ষণ নিশ্চিত করবে। এই সুকুকের প্রতি ইউনিটের অভিহিত মূল্য ১০০ টাকা। সুকুকটির

ন্যুনতম সাবস্ক্রিপশন ৫,০০০ টাকা, ন্যুনতম লট ৫০ টি। সুকুকটির সর্বনিম্ন পিরিয়ডিক ডিসট্রিবিউশন রেড ৯ শতাংশ। এই সুকুকটির ট্রাস্টি হিসাবে ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ এবং ইস্যু ম্যানেজার হিসেবে যথাক্রমে সিটি ব্যাংক ক্যাপিটাল রিসোর্সেস লিমিটেড ও অগ্রণী ইকুইটি এন্ড ইনভেস্টমেন্ট কাজ করছে। বাংলাদেশে এই প্রথমবার কমিশন কর্তৃক গ্রীন সুকুকের সম্মতি প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লেনদেন শুরু ৩ জুলাইয়ের মধ্যে: সদ্য সমাপ্ত হওয়া প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লেনদেন আগামী ৩ জুলাইয়ের মধ্যে শুরু করতে হবে। আইনি বাধ্যবাধকতা থেকেই এটি করতে হবে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র মতে, আইন অনুযায়ী প্রাথমিক গণ প্রস্তাবের (আইপিও) আবেদন শেষ হওয়ার ২০ কার্য দিবসের মধ্যে লেনদেন শুরু করতে হবে। সোনালী লাইফের আবেদেন শেষ হয়েছে ৩ জুন। সেই অনুযায়অ ২০ কার্যদিবস শেষ হবে ৩ জুলাই। তাই আইন অনুযায়ী ওই সময়ের মধ্যে লেনদেন শুরু করতে হবে। ইতোমধ্যে আনুপাতিক হারে বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাবে শেয়ার বরাদ্দ দিয়েছে ডিএসই। এখর সিডিবিএলের মাধ্যমে শেয়ার ক্রেডিট হওয়ার পরই লেনদেন শুরু করবে দুই স্টক এক্সচেঞ্জ।

সোনালী লাইফের আইপিওতে ১০ হাজার টাকার আবেদনকারী প্রত্যেক বিনিয়োগকারী ১৭টি শেয়ার পেয়াছে। বাকী টাকা আজ বুধবারেই বিনিয়োগকারীদের হিসাবে চলে আসবে।

ডিএসই সূত্র মতে, প্রত্যেকটি শেয়ারের মূল্য ১০ টাকা করে। ফলে ১৭টি শেয়ারের বাজার মূল্য ১৭০ টাকা। সোমবার (২১ জুন) নতুন পদ্ধতিতে সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের আইপিও শেয়ার বিনিয়োগকারীদের বরাদ্দ দেওয়া হয়। ফলে বাড়তি টাকা আজকেই (মঙ্গলবার) ডিএসই ট্রেকহোল্ডারদের ব্যাংক হিসেবে দিয়ে দিবে। আর আগামীকাল বুধবারের মধ্যে আইপিও আবেদনকারীদের বিও হিসেবে চলে যাবে।

সোমবার ইলেক্ট্রনিক সাবস্ক্রিপশন সিস্টেমের (ইএসএস) মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্সের শেয়ার প্রো-রাটা ভিত্তিতে বরাদ্দ দেয়ার জন্য ডিএসই কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

এদিকে একইভাবে প্রবাসী (এনআরবি) বিনিয়োগকারীরা ৩৩টি এবং ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা ২২টি করে শেয়ার পেয়েছেন। র্যানডম পদ্ধতিতে বিনিয়োগকারীদের এভাবে শেয়ার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে কিছু সাধারণ বিনিয়োগকারী ১৮টি এবং কিছু প্রবাসী বিনিয়োগকারী ৩৪টি করে শেয়ার পেয়েছেন।

যেসব দেশীয় সাধারণ বিনিয়োগকারী আইপিওতে ২০ হাজার টাকা আবেদন করেছেন তাদের ৩৪টি শেয়ার, যারা ৩০ হাজার টাকার আবেদন করেছেন তাদের ৫১টি, যারা ৪০ হাজার টাকার আবেদন করেছেন তাদের ৬৮টি এবং যারা ৫০ হাজার টাকার আবেদন করেছেন তাদের ৮৫টি শেয়ার দেয়া হয়েছে।

একইভাবে যেসব প্রবাসী বিনিয়োগকারী আইপিওতে ২০ হাজার টাকার আবেদন করেছেন তাদের ৬৬টি শেয়ার, যারা ৩০ হাজার টাকার আবেদন করেছেন তাদের ৯৯টি, যারা ৪০ হাজার টাকার আবেদন করেছেন তাদের ১৩২টি এবং যারা ৫০ হাজার টাকার আবেদন করেছেন তাদের ১৬৫টি শেয়ার দেয়া হয়েছে।

অপরদিকে যেসব ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী আইপিওতে ২০ হাজার টাকার আবেদন করেছেন তাদের ৪৪টি শেয়ার, যারা ৩০ হাজার টাকার আবেদন করেছেন তাদের ৬৬টি, যারা ৪০ হাজার টাকার আবেদন করেছেন তাদের ৮৮টি এবং যারা ৫০ হাজার টাকার আবেদন করেছেন তাদের ১১০টি শেয়ার দেয়া হয়েছে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, সোনালী লাইফের আইপিওতে ৩৬ দশমিক ৪৫ গুণ বেশি আবেদন পড়েছে। আইপিওতে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার পেতে মোট তিন লাখ ৬৭ হাজার ২৫০ জন বিনিয়োগকারী আবেদন করেন। এর মধ্যে ২৫ হাজার ৩৮৯টি আবেদন বাতিল হয়েছে। সে হিসাবে বৈধ আবেদন পড়ে তিন লাখ ৪১ হাজার ৮৬১টি।

এসব বৈধ বিনিয়োগকারীরা ৬৯ কোটি ২৪ লাখ ৭৮ হাজার ৪০০টি শেয়ারের জন্য মোট ৬৯২ কোটি ৪৭ লাখ ৮৪ হাজার টাকার আবেদন করেছেন। এর মধ্যে দুই লাখ ৭৩ হাজার ৩৬ জন সাধারণ বিনিয়োগকারী ৪৪ কোটি ৩৮ লাখ ৮৬ হাজারটি শেয়ারের জন্য ৪৪৩ কোটি ৮৮ লাখ ৬০ হাজার টাকার আবেদন করেছেন।

ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী কোটায় ৪৯ হাজার ৯৯২ জন বিনিয়োগকারী আট কোটি ৪৩ লাখ ৮৯ হাজারটি শেয়ারের জন্য ৮৪ কোটি ৩৮ লাখ ৯০ হাজার টাকার আবেদন করেন। প্রবাসী (এনআরবি) কোটায় আবেদন করেন ১৮ হাজার ১২২ জন। এসব বিনিয়োগকারীরা পাঁচ কোটি ৬৬ লাখ ৭৮ হাজারটি শেয়ারের জন্য ৫৬ কোটি ৬৭ লাখ ৮০ হাজার টাকার আবেদন করেন।

ব্লক মার্কেটে ৭ কোম্পানির লেনদেনের শীর্ষে: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ব্লক মার্কেটে ৫৩টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব কোম্পানির ১১৪ কোটি ২২ লাখ ৮২ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। কোম্পানিগুলোর ১ কোটি ৭০ লাখ ৮৪ হাজার ৮৮২টি শেয়ার ১২০ বার হাত বদল হয়েছে। এর মাধ্যমে কোম্পানিগুলোর ১১৪ কোটি ২২ লাখ ৮২ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে।

কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৭ কোম্পানির বড় লেনদেন হয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি শেয়ার লেনদেন হয়েছে এসিআইয়ের। কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩০ কোটি ৩৪ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকার।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মালেক স্পিনিংয়ের ১৬ কোটি ৩১ লক্ষ ২৮ হাজার টাকার, তৃতীয় সর্বোচ্চ বিডি ফাইন্যান্সের ৯ কোটি ৯১ লক্ষ ৮২ হাজার টাকার, চতুর্থ সর্বোচ্চ স্ট্যান্ডার ইন্স্যুরেন্সের ৯ কোটি ৪৮ লক্ষ ২৮ হাজার টাকার, পঞ্চম সর্বোচ্চ ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো ৮ কোটি ১০ লক্ষ টাকার, ষষ্ঠ সর্বোচ্চ রেনাটার ৫ কোটি ৭৪ লক্ষ ১৪ হাজার টাকার, সপ্তম সর্বোচ্চ সালভো কেমিকেলের ৫ কোটি ৫০ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।

তাছাড়া, বেক্সিমকোর ৪ কোটি ১৩ লক্ষ ২৮ হাজার টাকার, বেক্সিমকো ফার্মার ৩ কোটি ২৪ লক্ষ ৬০ হাজার টাকার, লংকা বাংলা ফাইন্যান্সের ২ কোটি ৬৪ লক্ষ ৮২ হাজার টাকার, মারিকোর ১ কোটি ৫৮ লক্ষ ৪০ হাজার টাকার, ফিনিক্স ফাইন্যান্সের ১ কোটি ৪৬ লক্ষ ৭৪ হাজার টাকার, ব্র্যাক ব্যাংকের ১ কোটি ৪৪ লক্ষ টাকার, এশিয়া ইন্স্যুরেন্সের ১ কোটি ৩৭ লক্ষ ৯৭ হাজার টাকার, স্কয়ার ফার্মার ১ কোটি ৭ লক্ষ টাকার,

কুইন সাউথের ৯৮ লক্ষ ৫১ হাজার টাকার, ডেল্টা লাইফের ৮৫ লক্ষ ৮৩ হাজার টাকার, ইফাদ অটোর ৮০ লক্ষ ২৫ হাজার টাকার, কাট্টালী টেক্সটাইলের ৭৪ লক্ষ ৭০ হাজার টাকার, উত্তরা ব্যাংকের ৭৩ লক্ষ ৪০ হাজার টাকার, ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্সের ৬৭ লক্ষ ৮৩ হাজার টাকার, অলিম্পিকের ৫৮ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকার, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের ৫৮ লক্ষ ২৯ হাজার টাকার, গ্রীন ডেল্টার ৫৭ লক্ষ ৪৪ হাজার টাকার, ইস্টার্ন হাউজিংয়ের ৫৩ লক্ষ টাকার, রূপালি ইন্স্যুরেন্সের ৪৯ লক্ষ ৮১ হাজার টাকার, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্সের ৩৭ লক্ষ ৭২ হাজার টাকার,

জেনেক্স ইনফোসিসের ৩৭ লক্ষ ৬০ হাজার টাকার, ম্যাকসন স্পিনিংয়ের ৩৭ লক্ষ ১০ হাজার টাকার, এনআরবিসি ব্যাংকের ৩৫ লক্ষ ১২ হাজার টাকার, ইন্ডেক্স এগ্রোর ৩১ লক্ষ ৪৮ হাজার টাকার, ফরচুন সুজের ২৭ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকার, অ্যাডভেন্টের ১৯ লক্ষ ৭৪ হাজার টাকার, সাইফ পাওয়ারের ১৮ লক্ষ ৩৬ হাজার টাকার, এস আলমের ১৭ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকার, মেট্রো স্পিনিংয়ের ১৭ লক্ষ ১৩ হাজার টাকার, ঢাকা ডাইংয়ের ১৭ লক্ষ টাকার, ইবিএলএনআরবি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ১৫ লক্ষ ২৮ হাজার টাকার, রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্সের ১৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার,

নিউ লাইনের ১২ লক্ষ ৬০ হাজার টাকার, আইসিবি এএমসিএল সেকেন্ড মিউচুয়াল ফান্ডের ১০ লক্ষ ৩০ হাজার টাকার, ওয়ান ব্যাংকের ১০ লক্ষ ১ হাজার টাকার, কেডিএস লিমিটেডের ৯ লক্ষ ৪০ হাজার টাকার, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ৭ লক্ষ ৫৯ হাজার টাকার, লাফার্জ হোলসিমের ৬ লক্ষ ১৯ হাজার টাকার, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের ৬ লক্ষ ৯ হাজার টাকার, আমান ফিডের ৫ লক্ষ ৯০ হাজার টাকার,

ঢাকা ইন্সুরেন্স ৫ লক্ষ ৭৯ হাজার টাকার, পূরবী জেনারেলের ৫ লক্ষ ৭৪ হাজার টাকার, ভিএফএস থ্রেডের ৫ লক্ষ ৬৪ হাজার টাকার, শাশা ডেনিমের ৫ লক্ষ ৬০ হাজার টাকার, এসিএম লেকচার মিউচুয়াল ফান্ডের ৫ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকার, কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্সের ৫ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।