দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: সদ্য প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) আবেদনের শেষ হওয়া বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ারের শেয়ার বরাদ্দ হবে আগামী সোমবার। ওই দিন দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান কার্যালয় নিকুঞ্জে শেয়ার বরাদ্দ দেওয়া হবে। কোম্পানি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, এর আগে কোম্পানিটির কাট-অফ প্রাইস নির্ধারণে ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিডিং (নিলাম) অনুষ্ঠিত হয়। বিডিংয়ে কোম্পানিটির কাট-অফ প্রাইস নির্ধারণ করা হয় ৩২ টাকা। পরে ১০ শতাংশ মূল্য ছাড়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে টাকা উত্তোলনের জন্য অনুমোদন দেয় বিএসইসি।

গত ৫ জানুয়ারি পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ৭৫৫তম সভায় কোম্পানিটিকে বিডিংয়ের অনুমোদন দেয়। সাধারণ বিনিয়োগকারীরা আবেদন করে ২৯ টাকায়। গত ১৩ জুন, রোববার থেকে ১৭ জুন বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ারের প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) আবেদন গ্রহণ করা হয়।

বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে ২২৫ কোটি টাকা উত্তোলন করবে। যা তার সাবসিডিয়ারি কর্ণফুলী পাওয়ার ও বারাকা শিকলবাহা পাওয়ারে বিনিয়োগ, আংশিক দীর্ঘমেয়াদি ঋণ পরিশোধ এবং আইপিওজনিত ব্যয়ে ব্যবহার করা হবে। কোম্পানিটির ২০১৯-২০ অর্থবছরে সমন্বিতভাবে শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ৪.৩৭ টাকা।

আর বিগত পাঁচটি আর্থিক বিবরণী অনুযায়ী ভারিত গড় হারে শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ৩.৩০ টাকা। ২০২০ সালের ৩০ জুন কোম্পানিটির সমন্বিতভাবে শেয়ারপ্রতি নিট সম্পত্তি মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ২৩ টাকায়। কোম্পানিটির ইস্যু ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে রয়েছে লংকা বাংলা ইনভেস্টমেন্টস।

বিচ হ্যাচারি মাত্র ৩ লাখ টাকা পুঁজি নিয়ে ফের উৎপাদনে: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের কোম্পানি বিচ হ্যাচারি লিমিটেড ৫ বছরেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর পুনরায় উৎপাদনে ফেরার ঘোষণা দিয়েছে। গত সোমবার (২৮ জুন) ডিএসইর ওয়েবসাইটের মাধ্যমে কোম্পানিটি উৎপাদনে ফেরার কথা জানায়।

সর্বশেষ ৩১ মার্চ’২১ সময়ের তৃতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোম্পানিটির ক্যাশ ও ব্যাংকে জমা মিলে মোট টাকা রয়েছে ৩ লাখ ২৭ হাজার ৪৩৯ টাকা। কোম্পানিটি উৎপাদন পুনরায় শুরু করার জন্য অন্য কোন সূত্র থেকে অর্থ প্রাপ্তি বা যোগানের কথা শেয়ারহোল্ডারদের জানায়নি। সামান্য এই অর্থ নিয়ে কী করে কোম্পানিটি পুনরায় ব্যবসা কার্যক্রম শুরু করলো- এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে শেয়ারহোল্ডারসহ পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টদের মধ্যে। এর নেপথ্যে শেয়ার কারসাজির উদ্দেশ্য থাকতে পারে বলেও সন্দেহ তাদের।

উৎপাদনে ফেরার ঘোষণার তিন দিন আগে গত ২২ জুন থেকে হঠাৎ দর বৃদ্ধিতে রকেট গতি পায় কোম্পানিটির শেয়ার। মাত্র ৬ দিনে ৩১ শতাংশের বেশি দর বেড়ে ১৮ টাকার বেশি দরে উঠে যায়। তবে বুধবার (৩০ জুন) শেয়ারটির দর কিছুটা সংশোধন হয়ে স্থির হয়েছে ১৭ টাকা ২০ পয়সায়।

এক মাসের লেনদেন চিত্র: গত সোমবার (২৮ জুন) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে কোম্পানিটির প্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্যে বলা হয়েছে, ওইদিন থেকেই কোম্পানিটি উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করেছে।

কোম্পানিটির উৎপাদন পরিকল্পনা: কংক্রিট নির্মিত ছোট ১৫টি চৌবাচ্চায় তেলাপিয়া, কৈ, পাঙ্গাস এবং পাবদা মাছ চাষ করার মাধ্যমে এ উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করেছে। বছরে মাত্র ১০৫ টন মাছ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের কথা জানিয়েছে কোম্পানিটি।

কিন্তু এত অল্প পরিমাণ চাষের কৈ, পাবদা ও পাঙ্গাস মাছ বিক্রি করে কোম্পানিটি কত টাকা মুনাফা করবে, আর পরিচালন খরচ শেষে নিট মুনাফা থাকবে কি-না, বা বিনিয়োগকারীদের ডিভিডেন্ড দিতে পারবে কি-না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

কোম্পানিটির অবস্থান: কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভ নির্মাণের সময় সাগরতীরে অবস্থিত কোম্পানিটির স্থাপনার একটি অংশ অধিগ্রহণ করেছিল সরকার। এর পর ২০১৬ সালের ২৪ এপ্রিল কোম্পানিটির উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। বন্ধ হওয়ার আগে কোম্পানিটির ব্যবসা ছিল চিংড়ির রেণু পোনা উৎপাদন।

বিচ হ্যাচারির কোম্পানি সচিব মোহাম্মদ নূর ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সংবাদ মাধ্যমকে শুধু কোম্পানিটির উৎপাদন কার্যক্রমে ফেরার তথ্যটি নিশ্চিত করেন। এর বাইরে অন্য কোনো তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কোম্পানিটিরে এক কর্মকর্তা জানান, কোম্পানিটির সিইও রাবীদ ইসলাম হঠাৎ করেই পুনরায় ব্যবসা কার্যক্রম শুরুর উদ্যোগ নেন। ব্যবসা শুরুর জন্য তিনিই অর্থ সংগ্রহ করেছেন। এরই মধ্যে মাত্র ৫৫ হাজার লিটার ধারণ ক্ষমতার ১৫টি কংক্রিটের চৌবাচ্চায় তেলাপিয়া, পাঙ্গাস মাছের পোনা ছাড়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

সর্বশেষ ডিভিডেন্ড চিত্র: আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, কোম্পানিটি ২০১৩ সালে বিনিয়োগকারীদের ১৫ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড এবং ২০১৪ সালে ৫ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড দিয়েছিল। ২০১৫ সাল থেকে আর কোন ডিভিডেন্ড দেয়নি এবং আর্থিক প্রতিবেদন সম্পর্কে বিনিয়োগকারীদের কোন তথ্যও দেয়নি।

তবে চলতি অর্থবছরের সর্বশেষ দুই প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন জানিয়েছে কোম্পানিটি। সর্বশেষ প্রতিবেদন (৩১ মার্চ’২১) অনুযায়ী কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি লোকসানে রয়েছে ২৫ পয়সা। যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৩২ পয়সা। কোম্পানিটি বর্তমানে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে লেনদেন হচ্ছে। লোকসানি কোম্পানি হিসাবে এর পিই রেশিও নেগেটিভ।

প্রকৌশল খাতের ২৭ কোম্পানিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগের হিড়িক: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রকৌশলী খাতের ২৭ কোম্পানিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগের হিড়িক পড়ছে। এপ্রিল মাসের তুলনায় মে মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বেড়েছে প্রকৌশল খাতের ২৭ কোম্পানিতে। কোম্পানিগুলো হলো: আফতাব অটোমোবাইলস, আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, এ্যাপোলো ইস্পাত কমপ্লেক্স, বিবিএস কেবলস,বেঙ্গল উইন্ডসর থার্মোপ্লাস্টিকস, বিএসআরএম স্টিলস, কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ, ডমিনেজ স্টিল বিল্ডিং সিস্টেমস, ইস্টার্ন কেবলস, গোল্ডেন সন,

জিপিএইচ ইস্পাত, ইফাদ অটোস, কে অ্যান্ড কিউ, কেডিএস এক্সেসরিজ, মীর আক্তার হোসেন, নাহি অ্যালুমিনিয়াম কম্পোজিট প্যানেল, ন্যাশনাল পলিমার, ন্যাশনাল টিউবস, কাশেম ইন্ডাস্ট্রিজ, রেনউইক যজ্ঞেশ্বর, রানার অটোমোবাইলস, এস.আলম কোল্ড রোল্ড স্টিল, সিঙ্গার বাংলাদেশ, এসএস স্টিল, ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ, ইয়াকিন পলিমার এবং অলিম্পিক এক্সেসরিজ। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বেড়েছে রেনউইক যজ্ঞেশ্বরে। এপ্রিল মাসে এ কোম্পানির প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ১৭.৫৩ শতাংশ। মে মাসে ৩.৫৭ শতাংশ বেড়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ২১.১০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাওয়া অপর ২৬টি কোম্পানি হলো:  আফতাব অটোমোবাইলস : এপ্রিল মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ৩৫.২৪ শতাংশ। মে মাসে ১.৫৫ শতাংশ বেড়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ৩৬.৭৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

আনোয়ার গ্যালভানাইজিং : এপ্রিল মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ১৫.০৫ শতাংশ। মে মাসে ১.৬৩ শতাংশ বেড়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ১৬.৬৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এ্যাপোলো ইস্পাত কমপ্লেক্স : এপ্রিল মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ২১.৮৬ শতাংশ। মে মাসে ০.৪৬ শতাংশ বেড়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ২২.৩২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

বিবিএস কেবলস : এপ্রিল মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ১৯.১২ শতাংশ। মে মাসে ০.৯ শতাংশ বেড়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ২০.০২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। বেঙ্গল উইন্ডসর থার্মোপ্লাস্টিকস : এপ্রিল মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ২৯.৫৪ শতাংশ। মে মাসে ০.০৮ শতাংশ বেড়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ২৯.৬২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। সাধারণ বিনিয়োগ ছিল ১৭.২৩ শতাংশ মে মাসে ০.০৮ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৫৬.৮৮ শতাংশ।

বিএসআরএম স্টিলস : এপ্রিল মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ১৭.৫৯ শতাংশ। মে মাসে ০.০৪ শতাংশ বেড়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ১৭.৬৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ : এপ্রিল মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ১৩.৩২ শতাংশ। মে মাসে ০.৮২ শতাংশ বেড়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ১৪.১৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। সাধারণ বিনিয়োগ ছিল ৫৬.৬১ শতাংশ মে মাসে ০.৮২ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৫৫.৭৯ শতাংশ।

ডমিনেজ স্টিল বিল্ডিং সিস্টেমস :এপ্রিল মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ২২.৩৮ শতাংশ। মে মাসে ০.১৭ শতাংশ বেড়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ২২.৫৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। ইস্টার্ন কেবলস : এপ্রিল মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ১৭.৬০ শতাংশ। মে মাসে.শুন্য ০.০৫ শতাংশ বেড়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ১৭.৬৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

গোল্ডেন সন : এপ্রিল মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ১৭.২৫ শতাংশ। মে মাসে ০.২৫ শতাংশ বেড়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ১৭.৫০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। জিপিএইচ ইস্পাত : এপ্রিল মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ১৭.৩৪ শতাংশ। মে মাসে ১.৪৭ শতাংশ বেড়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ১৮.৮১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

ইফাদ অটোস : এপ্রিল মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ২৮.১৭ শতাংশ। মে মাসে ০.০৮ শতাংশ বেড়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ২৮.২৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। সাধারণ বিনিয়োগ ছিল ১৬.১৩ শতাংশ মে মাসে ০.০৮ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৬.০৫ শতাংশ।

কে অ্যান্ড কিউ : এপ্রিল মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ৭.৭০ শতাংশ। মে মাসে ০.১১ শতাংশ বেড়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ৭.৮১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। কেডিএস এক্সেসরিজ : এপ্রিল মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ৮.২৭ শতাংশ। মে মাসে ০.৮৭ শতাংশ বেড়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ৯.১৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

মীর আক্তার হোসেন : এপ্রিল মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ৪.৪৭ শতাংশ। মে মাসে ০.৪৮ শতাংশ বেড়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ৪.৯৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। নাহি অ্যালুমিনিয়াম কম্পোজিট প্যানেল : এপ্রিল মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ৮.৭৮ শতাংশ। মে মাসে ০.৫ শতাংশ বেড়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ৯.২৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

ন্যাশনাল পলিমার : এপ্রিল মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ১৮.১৩ শতাংশ। মে মাসে ০.০১ শতাংশ বেড়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ১৮.১৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। ন্যাশনাল টিউবস : এপ্রিল মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ৯.৪৬ শতাংশ। মে মাসে ০.০২ শতাংশ বেড়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ৯.৪৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

কাশেম ইন্ডাস্ট্রিজ :এপ্রিল মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ২৬.৩৩ শতাংশ। মে মাসে ২.১৭ শতাংশ বেড়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ২৮.৫০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। রানার অটোমোবাইলস : এপ্রিল মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ২৯.৩৭ শতাংশ। মে মাসে ০.৯১ শতাংশ বেড়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ৩০.২৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

এস.আলম কোল্ড রোল্ড স্টিল : এপ্রিল মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ২৬.৩৫ শতাংশ। মে মাসে ১.৩৮ শতাংশ বেড়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ২৭.৭৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। সিঙ্গার বাংলাদেশ : এপ্রিল মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ২২.৯৬ শতাংশ। মে মাসে.৪৫ শতাংশ বেড়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ২৩.৪১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

এসএস স্টিল :এপ্রিল মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ১৮.৮১ শতাংশ। মে মাসে ০.১০ শতাংশ বেড়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ১৮.৯১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ : এপ্রিল মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল.৪৪ শতাংশ। মে মাসে ০.০১ শতাংশ বেড়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ০.৪৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

ইয়াকিন পলিমার :এপ্রিল মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ১০.৬৪ শতাংশ। মে মাসে ০.৮৯ শতাংশ বেড়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ১১.৫৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। অলিম্পিক এক্সেসরিজ :এপ্রিল মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ১৯.৩১ শতাংশ। মে মাসে ০.৫৪ শতাংশ বেড়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ১৯.৮৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কমেছে যে প্রতিষ্ঠানগুলোর সেগুলো হলো: এটলাস বাংলাদেশ:এপ্রিল মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ১৬.৬৩ শতাংশ। মে মাসে ০.০১ শতাংশ কমে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ১৬.৬২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেমস :এপ্রিল মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ৩৮.৪০ শতাংশ। মে মাসে ০.০৪ শতাংশ কমে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ৩৮.৩৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ ল্যাম্পস :এপ্রিল মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ১০.৫৫ শতাংশ। মে মাসে ০.০৪ শতাংশ কমে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ১০.৫১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

বিডি থাই অ্যালুমিনিয়াম :এপ্রিল মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ২৫.৭০ শতাংশ। মে মাসে ৫.৯৯ শতাংশ কমে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ১৯.৭১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।  বাংলাদেশ স্টিল রি-রোলিং মিলস :এপ্রিল মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ১৯.২৫ শতাংশ। মে মাসে ০.২০ শতাংশ কমে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ১৯.০৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

দেশবন্ধু পলিমার : এপ্রিল মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ৭.২৪ শতাংশ। মে মাসে ০.১৬ শতাংশ কমে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ৭.শুন্য ৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। নাভানা সিএনজি :এপ্রিল মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ২৮.৫৪ শতাংশ। মে মাসে ১.০১ শতাংশ কমে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ২৭.৫৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোড :এপ্রিল মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ৩৮.২৪ শতাংশ। মে মাসে ০.৮২ শতাংশ কমে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ৩৭.৪২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। রংপুর ফাউন্ড্রি :এপ্রিল মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ১৬.৪৯ শতাংশ। মে মাসে ০.০১ শতাংশ কমে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ১৬.৪৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। সাধারণ বিনিয়োগ ছিল ৩৩.৬৩ শতাংশ মে মাসে ০.০১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৩.৬৩ শতাংশ।

রতনপুর স্টিল রি–রোলিং মিলস :এপ্রিল মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ১৯.৫৭ শতাংশ। মে মাসে ০.৪১ শতাংশ কমে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ১৯.১৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ : এপ্রিল মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ১৮.৯৫ শতাংশ। মে মাসে ০.৮০ শতাংশ কমে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ১৮.১৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড : এপ্রিল মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ১৭.৩৬ শতাংশ। মে মাসে ০.৩৭ শতাংশ কমে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ১৬.৯৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

১১ কোম্পানির মধ্যে ৩ কোম্পানির নো ডিভিডেন্ড: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ১১ কোম্পানি বিদায়ী সপ্তাহে ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে ৮ কোম্পানির ডিভিডেন্ড ঘোষণা করলে ও ৩ কোম্পানি নো ডিভিডেন্ড ঘোষণা করছে। কোম্পানিগুলো হলো: ফনিক্স ফাইন্যান্স, পপুলার লাইফ, পাইওনিয়ার ইন্সুরেন্স, রূপালী ব্যাংক, প্রাইম লাইফ ইন্সুরেন্স, ঢাকা ডাইং, প্রগতি লাইফ ইন্সুরেন্স, পূরবী ইন্স্যুরেন্স, ন্যাশনাল ব্যাংক, গ্রিন ডেল্টা মিউচুয়াল ফান্ড, ডিবিএইচ ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড।

ফনিক্স ফাইন্যান্স : ফনিক্স ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেড ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য ১২ শতাংশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে ৬ শতাংশ ক্যাশ এবং ৬ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড। সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ৩৬ পয়সা। আগের বছর ইপিএস ছিল ১ টাকা ৭৯ পয়সা। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ২৯ জুলাই।

পপুলার লাইফ ইন্সুরেন্স : পপুলার লাইফ ইন্সুরেন্স লিমিটেড ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০ অর্থবছরের জন্য ৪০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৩ টাকা ৭৭ পয়সা। আগের বছর কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় ছিল ৩ টাকা ৮২ পয়সা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১০৮ টাকা ৯০ পয়সা। আগামী ২৪ আগষ্ট ব্যাংকের বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬ জুলাই।

পাইওনিয়ার ইন্সুরেন্স:পাইওনিয়ার ইন্সুরেন্স ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০ অর্থবছরের জন্য ৩০ শতাংশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে ২০ শতাংশ ক্যাশ ও ১০ শতাংশ স্টক। সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ৭ টাকা ৬১ পয়সা। আগের বছর কোম্পানিটির ইপিএস ছিল ৪ টাকা ৮৯ পয়সা।

আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদ মূল্য হয়েছে ৪৯ টাকা ৭৫ টাকা। আগের বছর যা ছিল ৪৪ টাকা ৯ পয়সা। আগামী ২৫ আগস্ট কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮ জুলাই।

রূপালী ব্যাংক লিমিটেড :কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১০ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ৪৯ পয়সা। আগের বছর কোম্পানিটির ইপিএস ছিল ১ টাকা ৩৮ পয়সা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদ মূল্য হয়েছে ৪৪ টাকা ১০ টাকা। আগের বছর যা ছিল ৪১ টাকা ১৪ পয়সা।

এ সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি ক্যাশ ফ্লো হয়েছে ২০৬ টাকা ৫৩ পয়সা। আগের বছর যা ছিল ৭৫ টাকা ৩১ পয়সা (নেগেটিভ)। আগামী ১৮ আগস্ট কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪ জুলাই।

প্রাইম ইসলামি লাইফ ইন্সুরেন্স : কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ‘নো ডিভিডেন্ড’ ঘোষণা করেছে। কোম্পানিটি সমাপ্ত অর্থবছরের আয় সম্পর্কিত অন্য কোন তথ্য ডিএসইতে প্রকাশ করেনি। আগামী ২৩ আগস্ট কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ জুলাই।

ঢাকা ডাইং লিমিটেড :কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। ৩০ জুন, ২০২০ অর্থবছরের জন্য এই ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে কোম্পানিটি। তবে কোম্পানিটি ২০১৯ ও ২০১৮ বছরের জন্য কোন ভিভিডেন্ড দেয়নি। সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ১৩ পয়সা। আগের বছর কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান ছিল ৪ টাকা ২৫ পয়সা।

আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদ মূল্য হয়েছে ৮ টাকা ৩৬ টাকা। আগের বছর যা ছিল ৮ টাকা ২১ পয়সা। আগামী ৩০ জুলাই কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ জুলাই।

প্রগতি লাইফ ইন্সুরেন্স: প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০ অর্থবছরের জন্য ১২ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে।কোম্পানিটি সমাপ্ত অর্থবছরের আয় সম্পর্কিত অন্য কোন তথ্য ডিএসইতে প্রকাশ করেনি।

ঘোষিত ডিভিডেন্ড শেয়ারহোল্ডারদের সম্মতিক্রমে অনুমোদনের জন্য কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) আগামী ১২ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ১৯ জুলাই।

পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্স: পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্স ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০ মধ্যে ৫ শতাংশ ক্যাশ ও ৫ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড। সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ১৬ পয়সা। আগের বছর শেয়ার প্রতি আয় হয়েছিল ১ টাকা ১ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদ (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১৩ টাকা ৯ পয়সা। কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। এর রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ২৭ জুলাই।

ন্যাশনাল ব্যাংক: ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০ অর্থবছরের জন্য ৫ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। জানা গেছে, সমাপ্ত অর্থবছরে ব্যাংকটি চূড়ান্ত মুনাফা করেছে ৩৬১ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। আগের বছর চুড়ান্ত মুনাফা করেছিল ৩৯১ কোটি ৩৩ লাখ টাকা।
সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ১৮ পয়সা।

আগের বছর শেয়ার প্রতি ইপিএস ছিল ১ টাকা ৩৪ পয়সা। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর সকাল ১১ টায় ডিজিটাল প্ল্যাটফরমের মাধ্যমে ব্যাংকটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ১৭ আগস্ট।

গ্রিন ডেল্টা মিউচুয়াল ফান্ড: গ্রিন ডেল্টা মিউচুয়াল ফান্ডের ট্রাস্টি বোর্ড ৩০ জুন ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে ইউনিট হোল্ডারদেরডিভিডেন্ড না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিদায়ী বছরে প্রতিষ্ঠানের ফান্ডটির ইউনিট প্রতি লোকসান দেখানো হয়েছে ৯৯ পয়সা। এর ফলে ২০২০ সালের ৩০ জুন ফান্ডটির ইউনিটপ্রতি সম্পদ (এনএভিপিইউ) বাজার মূল্য অনুযায়ী দাঁড়িয়েছে ৯ টাকা ৭ পয়সা।

ডিবিএইচ ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড: ডিবিএইচ ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ট্রাস্টি বোর্ড ৩০ জুন ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে ইউনিটহোল্ডারদের ডিভিডেন্ড না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক হিসাব শেষে ফান্ডটির ইউনিট প্রতি লোকসান হয়েছে ১ টাকা ৮ পয়সা। ২০২০ সালের ৩০ জুন ফান্ডটির ইউনিটপ্রতি সম্পদ (এনএভিপিইউ) মূল্য দাঁড়িয়েছে ৯ টাকা ৮ পয়সায়।

করোনা মহামারিতেও বেশির ভাগ ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা বেড়েছে : চলতি বছরের প্রথমার্ধ করোনাভাইরাসের থাবায় গোটা বিশ্বের অর্থনীতি কঠিন সংকটের মধ্যে পড়েছে। এই মহামারি থেকে বাংলাদেশও নিস্তার পায়নি। অতিমারির কারণে আমদানি-রফতানিতে গতি নেই। অভ্যন্তরীন ভোগও কমছে। এতে নতুন বিনিয়োগ অনেকটাই স্থবির।

এ কারণে ব্যাংকগুলোর ঋণে নেই আশানুরূপ প্রবৃদ্ধি। অনেক ব্যাংকে অলস টাকার পাহাড় গড়েছে। তবে এসবের মধ্যেও ভাল পারফর্ম করছে দেশের ব্যাংকিং খাত। চলতি অর্থবছরের (জানুয়ারি-জুন, ২০২১) প্রথমার্ধে দেশের বেশির ভাগ ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে।

ব্যাংকখাত সংশ্লিষ্টদের মতে, করোনা পরিস্থিতি থাকলেও আগের অর্থবছরের (২০১৯-২০) শেষ ভাগের মতো আতঙ্ক নেই। আগের বছর দুই মাসেরও বেশী সময় টানা লকডাউনে সব বন্ধ ছিল। কিন্তু গত অর্থবছরে এমন অচলাবস্থার মধ্যে পড়তে হয়নি তেমন। বরং এ সময়ে অর্থনীতিতে পুনরুদ্ধারের একটি ধারা ছিল। আর এরই ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে ব্যাংকের পরিচালন মুনাফায়।

তবে ব্যাংকের মুনাফা কাগজে-কলমে দেখানো হয়। এতে দেখা যায়, মন্দ ঋণেরও সুদ মুনাফায় যোগ হয়। অথচ যেখানে আসলও হয়তো উঠে আসবে না। সে কারণে পরিচালন মুনাফা বাড়লেই যে নিট মুনাফা বাড়বে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। কারণ পরিচালন মুনাফা থেকে প্রয়োজনীয় সঞ্চিতি রাখা এবং আয়কর পরিশোধের পরই কেবল নিট মুনাফা নির্ধারিত হবে।

তাই কোনো ব্যাংকের পরিচালনা মুনাফা বাড়লেও যদি সঞ্চিতির প্রয়োজনীয়তা তারচেয়ে বেশি হারে বেড়ে থাকে তাহলে ওই ব্যাংকের নিট মুনাফা গত বছরের চেয়েও কম হতে পারে। আবার সঞ্চিতির প্রয়োজন কম হলে কম পরিচালন মুনাফা থেকেও গত বছরের চেয়ে নিট মুনাফা বাড়তে পারে। তাই পরিচালনা মুনাফার তথ্যের উপর ভিত্তি করে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ সংক্রান্ত কোনো সিদ্ধান্ত না নেওয়া-ই ভাল।

চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে (জানুয়ারি-মার্চ, ২০২১) পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৩১টি ব্যাংকের মধ্যে গত (০১ জুলাই) পর্যন্ত ১৪টি ব্যাংকের পরিচালন মুনাফার তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে প্রতি বছরের মতো এবারও সবচেয়ে বেশি পরিচালন মুনাফা করেছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড। চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ব্যাংকটির পরিচালন মুনাফা হয়েছে ১ হাজার ২০ কোটি টাকা। গত বছর ছিল ১ হাজার ৭ কোটি টাকা।

মুনাফা বেড়েছে ১৩ কোটি টাকা। পরিচালন মুনাফায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে সাউথইস্ট ব্যাংক। ৬ মাসে ব্যাংকটির পরিচালন মুনাফা হয়েছে ৪৭২ কোটি টাকা। গত বছরের প্রথম ছয় মাসে ব্যাংকটির পরিচালন মুনাফা ছিল ৩৪২ কোটি টাকা। এ হিসেবে ব্যাংকটির পরিচালন মুনাফা বেড়েছে ১৩০ কোটি টাকা। সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের (এসআইবিএল) ২০২১ সালের পরিচালন মুনাফা হয়েছে ২২৭ কোটি টাকা।

গত বছর ছিল ১৭৫ কোটি টাকা। এ বছর প্রথম ছয় মাসে প্রিমিয়ার ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা হয়েছে ৪০৮ কোটি টাকা। গত বছর একই সময়ে ছিল ৩৪৬ কোটি টাকা। এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা হয়েছে ১৫০ কোটি টাকা। যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ৯১ কোটি টাকা। ব্যাংকটির মুনাফা বেড়েছে ৫৯ কোটি টাকা। মার্কেন্টাইল ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা হয়েছে ৩৫৮ কোটি টাকা।

গত বছর ছিল ২৪৩ কোটি টাকা। আল-আরাফা ইসলামী ব্যাংকের মুনাফা হয়েছে ৩১০ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে ব্যাংকটির মুনাফা ছিল ৩০৫ কোটি টাকা। এক্সিম ব্যাংকের মুনাফা হয়েছে ৩৪০ কোটি টাকা। যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ৩১৭ কোটি টাকা। ব্যাংক এশিয়ার পরিচালন মুনাফা হয়েছে ৪৮৩ কোটি টাকা। গত বছর একই সময়ে ছিল ৩৫৩ কোটি টাকা।

এ বছর ঢাকা ব্যাংকের মুনাফা হয়েছে ৩১০ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে ব্যাংকটির মুনাফার পরিমাণ ছিল ২৬৩ কোটি টাকা। ওয়ান ব্যাংকে মুনাফা হয়েছে ২২০ কোটি টাকা। আগের বছর মুনাফা ছিল ১৬৩ কোটি টাকা। ডাচ বাংলা ব্যাংক এ বছর মুনাফা করেছে ৫০৪ কোটি টাকা। আগের বছর মুনাফা করেছিল ৪০১ কোটি টাকা। যমুনা ব্যাংক মুনাফা করেছে ৩০১ কোটি টাকা। গতবার ব্যাংকটি মুনাফা করেছিল ২৬২ কোটি টাকা।

এনসিসি ব্যাংকের এ বছর প্রথম ছয় মাসে ৩১৫ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা করেছে। গত বছর যা ছিল ২৯০ কোটি টাকা। এছাড়া পূবালী ব্যাংকের ৫০৫ কোটি টাক পরিচালন মুনাফা হয়েছে। ২০২০ সালের ষাণ্মাসিকে যা ছিল ৪০০ কোটি টাকা। এছাড়া, পুঁজিবাজারে আসার প্রক্রিয়ায় থাকা সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স (এসবিএসি) ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা হয়েছে ৮০ কোটি টাকা। আগের বছরে ব্যাংকটির মুনাফা ছিল ৭০ কোটি টাকা। সে হিসাবে ছয় মাসে ব্যাংকটির পরিচালন মুনাফা বেড়েছে ১০ কোটি টাকা।

প্রাইম লাইফ ইন্স্যুরেন্সের সম্পদ ও মুনাফা নিয়ে কারসাজি: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত জীবন বীমা খাতের কোম্পানি প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরে আর্থিক প্রতিবেদনে ২০৩ কোটি টাকার সম্পদ ও মুনাফা বাড়িয়ে দেখিয়েছে। কোম্পানিটির নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান সাইফুল সামসুল আলম অ্যান্ড কোম্পানি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস কোম্পানিটির বিরুদ্ধে সম্পদ ও মুনাফা বৃদ্ধির এই অভিযোগ তুলেছে।

কোম্পানিটির সর্বশেষ ২০২০ অর্থবছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে মন্দ বিনিয়োগের বিপরীতে সঞ্চিতি সংরক্ষণ না করেই সম্পদ ও মুনাফা অতিরঞ্জিত করেছে। কোম্পানিটির সাবেক চেয়ারম্যান এমএ খালেক ও পরিচালনা পর্ষদের মদদে এ মন্দ বিনিয়োগ করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ২০২০ সালে আর্থিক প্রতিবেদন প্রত্যয়ন করেছেন নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান সাইফুল সামসুল আলম অ্যান্ড কোম্পানি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসের ম্যানেজিং পার্টনার মো. সাইফুল ইসলাম। তিনি কোম্পানিটির আর্থিক প্রতিবেদনে প্রদত্ত কোয়ালিফায়েড অপিনিয়নে উল্লেখ করেছেন, প্রাইম ফাইন্যান্স ইনভেস্টমেন্ট (পিএফআই) সিকিউরিটিজ লিমিটেডে ১৬৭ কোটি ৮০ লাখ টাকার স্বল্পমেয়াদি বিনিয়োগ রয়েছে প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের। পাশাপাশি পিএফআই সিকিউরিটিজের কাছে কোম্পানিটির ১৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে।

দীর্ঘদিন ধরেই এ অর্থ অনাদায়ী অবস্থায় রয়েছে। আবার পিএফআই সিকিউরিটিজের আর্থিক অবস্থাও দুর্বল। এ অবস্থায় এই অর্থ আদায় করা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। এ অর্থের বিপরীতে প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোনো ধরনের সঞ্চিতি সংরক্ষণ করেনি। এর মাধ্যমে কোম্পানিটি আর্থিক প্রতিবেদনে ১৮৩ কোটি ১৭ লাখ টাকার সম্পদ ও মুনাফার অতিরঞ্জিত তথ্য দেখিয়েছে। যদিও এ পাওনা অর্থ আদায়ের জন্য গত বছর উচ্চ আদালতে পিএফআই সিকিউরিটিজের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে কোম্পানিটি, যা বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে।

একইভাবে স্টার্লিং গ্রুপের চারটি প্রতিষ্ঠানে ১৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স। এ বিনিয়োগটিও দীর্ঘদিন ধরেই অনাদায়ী রয়েছে। এ বিনিয়োগের বিপরীতে কোনো চুক্তি নেই। যে কারণে আদৌ এ অর্থ আদায় হবে কিনা, সে বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন নিরীক্ষক।

নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান বলছে, এই বিনিয়োগের বিপরীতে এখন পর্যন্ত কোনো মুনাফা করতে পারেনি কোম্পানিটি। আবার এর বিপরীতে কোনো ধরনের সঞ্চিতিও রাখা হয়নি। এতে আর্থিক প্রতিবেদনে ১৫ কোটি টাকার সম্পদ ও মুনাফা বাড়িয়ে দেখিয়েছে প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স। যদিও এ অর্থ আদায়ে উচ্চ আদালতে স্টার্লিং গ্রুপের বিরুদ্ধে গত বছর মামলা দায়ের করেছে কোম্পানিটি, যা বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে।

এদিকে, প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের প্রায় ৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ রয়েছে বাংলালায়নের জিরো কুপন বন্ডে। বাংলালায়নের আর্থিক অবস্থা ভালো না হওয়ার পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে এটি অনাদায়ী রয়েছে। ফলে এ বিনিয়োগ ফেরত পাওয়ার বিষয়ে নিরীক্ষক সন্দেহ পোষণ করেছেন। তাছাড়া এ বিনিয়োগের বিপরীতে কোম্পানিটি কোনো ধরনের সঞ্চিতিও সংরক্ষণ করেনি। অবশ্য গত বছর এ অর্থ আদায়ের জন্য প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স আরবিট্রেশন ট্রাইব্যুনালের দ্বারস্থ হয়েছে।

নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানটি কোয়ালিফাইড অপিনিয়নে তুলে ধরেছে, ২০১২ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সময়ে এ বিনিয়োগগুলো করা হয়েছে। প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের তৎকালীন চেয়ারম্যান এমএ খালেক ও পর্ষদ সদস্যরা সে সময় তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে এসব অর্থ বিনিয়োগ করেছিলেন। পিএফআই সিকিউরিটিজে যখন বিনিয়োগ করা হয়, তখন সিকিউরিটিজটির পর্ষদের কয়েকজন পরিচালক জীবন বীমা কোম্পানিটিরও পর্ষদে ছিলেন। পিএফআই সিকিউরিটিজের জন্য ব্যাংক থেকে নেয়া ঋণের বিপরীতে জামানত হিসেবে প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের এফডিআর করা অর্থ দেখানো হয়।

পরবর্তী সময়ে যখন পিএফআই সিকিউরিটিজ ব্যাংকের অর্থ পরিশোধে ব্যর্থ হয়, তখন ব্যাংক তাদের কাছে জামানত হিসেবে থাকা প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের এফডিআর অর্থ বাজেয়াপ্ত করা হয়। এর মাধ্যমে তাদের ঋণ সমন্বয় করে নেয়া হয়। এমনকি পিএফআই সিকিউরিটিজে থাকা প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বিও হিসাবের ১৫ কোটি টাকাও সিকিউরিটিজটির কর্মকর্তারা আত্মসাৎ করেন।

কোম্পানির কর্মকর্তারা বলছেন, স্টার্লিং গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএ খালেকের আত্মীয়। এ কারণে চুক্তি ছাড়াই স্টার্লিং গ্রুপের চারটি প্রতিষ্ঠানে প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের অর্থ বিনিয়োগ করা হয়েছে। অন্যদিকে বাংলালায়নের বন্ডে বিনিয়োগের বিপরীতে এখন পর্যন্ত কোনো অর্থই ফেরত আসেনি। এরই মধ্যে বন্ডটির মেয়াদও শেষ হয়ে গেছে।

এদিকে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ২০১৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত চার বছরের আর্থিক প্রতিবেদন বিশেষ নিরীক্ষার উদ্যোগ নিয়েছে।

প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স ২০০৭ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর শেষে কোম্পানিটির সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯৬৭ কোটি ৫২ লাখ টাকায়। এ সময়ে কোম্পানিটির জীবন বীমা তহবিলের পরিমাণ ছিল ৮৩৬ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। অন্যদিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক-বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের সহযোগী কোম্পানি হচ্ছে পিএফআই সিকিউরিটিজ। প্রতিষ্ঠানটির ৪৬ দশমিক ১৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে প্রাইম ফাইন্যান্সের কাছে।

ডিএসইতে মার্কেট মুভারে নতুন ৫ কোম্পানি: সপ্তাহজুড়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মার্কেট মুভারের ভূমিকায় উঠে এসেছে নতুন নতুন কোম্পানি। পুরাতন কোম্পানিকে পেছনে ফেলে নতুন ৫ কোম্পানি যুক্ত হয়েছে। কোম্পনি পাঁচটি হলো: ডেলটা লাইফ ইন্সুরেন্স, স্কয়ার ফার্মা, ডাচবাংলা ব্যাংক, ম্যাকসন্স স্পিনিং ও কেয়া কসমেটিকস। এছাড়া মার্কেট লিডারের ভুমিকায় ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড, ডেল্টা লাইফ ইন্সুরেন্স, মালেক স্পিনিং, স্কয়ার ফার্মা, কুইনসাউথ টেক্সটাইল, ডাচ বাংলা ব্যাংক, ম্যাকসন্স স্পিনিং, ড্রাগন স্যুয়েটার, কেয়া কসমেটিকস ও কাট্টলী টেক্সটাইল লিমিটেড।

ডেলটা লাইফ ইন্সুরেন্স : সাপ্তাহিক মার্কেট মোভারের তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ডেলটা লাইফ ইন্সুরেন্স। কোম্পানিটির ১ কোটি ৭১ লাখ ৯২ হাজার ১৮৮টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ২২৯ কোটি ৬ লাখ ১৬ হাজার টাকা। ডিএসইর মোট লেনদেনে কোম্পানিটির অংশগ্রহণ ছিল ৪.০৭ শতাংশ।

স্কয়ার ফার্মা : স্কয়ার ফার্মা সাপ্তাহিক মার্কেট মোভারের তালিকার চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছে। দীর্ঘদিন পর কোম্পানিটি মার্কেট মোভারের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির ৫৪ লাখ ৫৮ হাজার ৭৩০টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ১৭১ কোটি ১০ লাখ ৬৩ হাজার টাকা। ডিএসইর মোট লেনদেনে কোম্পানিটির অংশগ্রহণ ছিল ২.০৮ শতাংশ।

ডাচবাংলা ব্যাংক : ডাচবাংলা ব্যাংক মার্কেট মোভারের তালিকায় ষষ্ঠ স্থানে উঠে এসেছে। চলতি বছরে কোম্পানিটি মার্কেট মোভারের তালিকায় প্রায় নিয়মিত ছিল। কিন্তু জুন মাসে অনিয়মিত হয়ে পড়ে। বিদায়ী সপ্তাহে আবারও সরব হয়েছে। বিদায়ী সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির ১ কোটি ৭ লাখ ৯৩ হাজার ৬৮টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ৯৮ কোটি ৫৩ লাখ ৪৮ হাজার টাকা। ডিএসইর মোট লেনদেনে কোম্পানিটির অংশগ্রহণ ছিল ১.৭৫ শতাংশ।

ম্যাকসন্স স্পিনিং: ম্যাকসন্স স্পিনিং মার্কেট মোভারের তালিকায় সপ্তম স্থানে উঠে এসেছে। গত দুই মাসে কোম্পানিটি কয়েকবার মার্কেট মোভারের তালিকায় থাকলেও জুন মাসে প্রায় অনুপস্থিত ছিল। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির ৩ কোটি ৭৪ লাখ ৬৩ হাজার ৮৪২টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ৭৪ কোটি ৫১ লাখ ৯৫ হাজার টাকা। ডিএসইর মোট লেনদেনে কোম্পানিটির অংশগ্রহণ ছিল ১.৩২ শতাংশ।

কেয়া কসমেটিকস : কেয়া কসমেটিকস মার্কেট মোভারের তালিকায় নবম স্থানে উঠে এসেছে। কোম্পানিটি চলতি বছরে কদাচিত মার্কেট মোভারের তালিকায় থেকেছে। তবে গত তিন মাসে কোম্পানিটির উপস্থিতি তেমন ছিল না। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির ১ কোটি ২২ লাখ ১৬ হাজার ৮১৮টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ৭০ কোটি ৪ লাখ ৭৭ হাজার টাকা। ডিএসইর মোট লেনদেনে কোম্পানিটির অংশগ্রহণ ছিল ১.২৫ শতাংশ।

ব্যাংক-বিমা-বস্ত্র খাত অগ্রগামী, রির্টান বাড়ছে জীবন বীমা খাতে: বিদায়ী সপ্তাহে পুঁজিবাজারে বাজার মূলধন বেড়েছে। বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর। তবে কমেছে লেনদেনের পরিমান। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সপ্তাহটিতে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত ২০ খাতের মধ্যে টার্নওভারে এগিয়ে রয়েছে বস্ত্র, ব্যাংক ও বিমা খাত। অন্যদিকে রিটার্নে এগিয়ে রয়েছে বিমা, পেপার অ্যান্ড প্রিন্টিং ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাত। তবে রিটার্ন বেশি এসেছে জীবন বিমা খাত থেকে।

সাপ্তাহিক রিটার্ন : সপ্তাহটিতে জীবন বিমা খাতের রিটার্ন বেড়েছে ১০.৪০ শতাংশ। পেপার অ্যান্ড প্রিন্টিং খাতের রিটার্ন বেড়েছে ৪.৬০ শতাংশ। আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের রিটার্ন বেড়েছে ৩.৪০ শতাংশ। সিমেন্ট খাতের রিটার্ন বেড়েছে ২ শতাংশ। পাট খাতের রিটার্ন বেড়েছে ১.৬০ শতাংশ। ব্যাংক খাতের রিটার্ন বেড়েছে ১.১০ শতাংশ এবং সাধারণ বিমা খাতের রিটার্ন বেড়েছে ০.৯০ শতাংশ। ওষুধ এবং রসায়ন খাতে রিটার্ণ ছিলো ০.৮০ শতাংশ। প্রকৌশল খাতের রিটার্ন ছিলো ০.৭০ শতাংশ। টেলিকমিনিউকেশন খাতের রিটার্ন ছিলো ০.৬০ শতাংশ। খাদ্য এবং আনুষাঙ্গিক খাতের ছিলো ০.৩০ শতাংশ। বস্ত্র খাতে ছিলো ০.২০ শতাংশ এবং সিরামিক খাতের রিটার্ন ছিলো অপরিবর্তিত।

অন্যদিকে রিটার্ন কমা খাতের মধ্যে আইটি খাতের রিটার্ন কমেছে ০.৪০ শতাংশ। চামড়া খাতের রিটার্ন কমেছে ১.১০ শতাংশ। মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতের রিটার্ন কমেছে ১.১০ শতাংশ। বিবিধ খাতের রিটার্ন কমেছে ১.৬০ শতাংশ। সেবা ও আবাসন খাতের রিটার্ন কমেছে ১.৭০ শতাংশ এবং ভ্রমণ খাতে রিটার্ন কমেছে ৪.২০ শতাংশ ।

সাপ্তাহিক লেনদেন : বিদায়ী সপ্তাহে সবচেযে বেশি লেনদেন হয়েছে বস্ত্র খাতে। সপ্তাহটিতে এই খাতে লেনদেন হয়েছে মোট লেনদেনের ২৪ শতাংশ। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ব্যাংক খাত। এই খাতটি লেনদেন করেছে মোট লেনদেনের ১০.৮০ শতাংশ। সাধারণ বিমা খাত তৃতীয় স্থান দখল করে আছে। এই খাতটিতে লেনদেন হয়েছে মোট লেনদেনের ৯.৮০ শতাংশ।

এছাড়াও, প্রকৌশল খাতে লেনদেন হয়েছে ৮.৩০ শতাংশ, ঔষধ এবং রসায়ন খাতে লেনদেন হয়েছে ৮.৯০ শতাংশ, বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি খাতে লেনদেন হয়েছে ৪ শতাংশ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে লেনদেন হয়েছে ৪.৮০ শতাংশ, খাদ্য এবং আনুষাঙ্গিক খাতে লেনদেন হয়েছে ২.৭০ শতাংশ, জীবন বিমা খাতে লেনদেন হয়েছে ৬ শতাংশ, মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতে লেনদেন হয়েছে ২.৪০ শতাংশ,

সিমেন্ট খাতে লেনদেন হয়েছে ১.৬০ শতাংশ, চামড়া খাতে লেনদেন হয়েছে ১.২০ শতাংশ, টেলিকমিনিউকেশন খাতে লেনদেন হয়েছে ১.৫০ শতাংশ, আইটি খাতে লেনদেন হয়েছে ১.৪০ শতাংশ, সেবা ও আবাসন খাতে লেনদেন হয়েছে ১.৪০ শতাংশ, সিরামিক খাতে খাতে লেনদেন হয়েছে ০.৯০ শতাংশ, ভ্রমণ খাতে লেনদেন হয়েছে ০.৬০ শতাংশ, পেপার অ্যান্ড প্রিন্টিং খাতে লেনদেন হয়েছে ০.৯০ শতাংশ এবং পাট খাতে লেনদেন হয়েছে ০.১০ শতাংশ।

পোশাক খাতে বিপুল বিনিয়োগ: টেক্সটাইল খাতের বিনিয়োগকারীদের জন্য সুখবর: করোনা মহামারির মধ্যেও উৎপাদনক্ষমতা বাড়াতে ও নতুন প্রযুক্তির জন্য পোশাক খাতে বিপুল বিনিয়োগ করেছেন টেক্সটাইল উদ্যোক্তারা। দেশের পোশাক খাতের ক্রমবর্ধমান রপ্তানি চাহিদা মেটাবার জন্যই বাড়ছে বিনিয়োগ। শিল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এ খাতে ৪২০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ হচ্ছে, যা গত এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। এ বিনিয়োগের উদ্দেশ্য আন্তর্জাতিক বাজারের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাবার জন্য উৎপাদন মান বাড়ানো ও উৎপাদন ব্যবস্থার আধুনিকায়ন করা। আন্তর্জাতিক বাজারে কৃত্রিম তন্তুর চাহিদা বেশি বলেই জানিয়েছেন তারা।

ব্যাপক টিকাদান কর্মসূচির কারণে বাংলাদেশের পোশাকের সবচেয়ে বড় দুই বাজার ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে মহামারি প্রকোপ কমে গেছে। ফলে এই বাজারগুলোতে তৈরি পোশাকের চাহিদা এখন আবার প্রায় কোভিডপূর্ব সময়ের সমান বলে জানিয়েছেন শিল্প সংশ্লিষ্টরা। অনেক কারখানা মালিক এত বেশি অর্ডার পেয়েছেন যে বর্তমান সক্ষমতা নিয়ে সময়মতো অর্ডার ডেলিভারি দিতে পারবেন না। এছাড়া চীন-আমেরিকার বাণিজ্যযুদ্ধও দেশের উদ্যোক্তাদের তন্তু এবং ফ্যাব্রিকে বিনিয়োগে উৎসাহিত করেছে।

শিল্প সংশ্লিষ্টদের বরাতে আরও জানা যায়, ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ হিসেবে দেশের পোশাক খাত পলিয়েস্টার, সিন্থেটিক, ভিসকোস লিক্রা-র (কৃত্রিম তন্তু হিসেবে পরিচিত) মতো মিশ্র তন্তু ও ফ্যাব্রিক উৎপাদনে পিছিয়ে আছে। ক্রেতাদের চাহিদা মেটাবার জন্য দেশের উদ্যোক্তাদের এখনও এ জাতীয় তন্তু ও ফ্যাব্রিক আমদানি করে আনতে হয়।

বাংলাদেশের প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলো ইতোমধ্যে এসব পণ্য উৎপাদনের জন্য তাদের প্রযুক্তির উন্নতি ঘটিয়েছে। এ কারণেও দেশের উদ্যোক্তারা কারখানার আধুনিকীকরণ ও উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ব্যাপক বিনিয়োগ করছেন। স্টেকহোল্ডারদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, নতুন বিনিয়োগের ফলে প্রায় ৬,০০০ লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে বলে আশা করা যায়।

বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, প্রায় প্রতিটি কারখানা এখন বিএমআরই (ব্যালেন্সিং, মডার্নাইজেশন, রিহ্যাবিলিটেশন, এক্সপেনশন)—অর্থাৎ ভারসাম্যকরণ, আধুনিকায়ন, পুনর্বাসন ও সম্প্রসারণে বিনিয়োগ করছে। তিনি আরও জানান, গত দশ বছরে যেসব কারখানা এসব খাতে বিনিয়োগ করেনি, তারা এখন ব্যবসা থেকে ছিটকে পড়েছে।

সুতি ও কৃত্রিম ফ্যব্রিকসহ টেক্সটাইল পণ্যের চাহিদা বেড়েছে জানিয়ে মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, ‘বর্তমানে আমার কারখানায় প্রতিদিন ১০০ টন কাপড়ের রপ্তানি অর্ডার রয়েছে। কিন্তু আমাদের উৎপাদন ক্ষমতা মাত্র ৬০ টন।’ স্থানীয় উদ্যোক্তা ছাড়াও বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও কৃত্রিম ফ্যাব্রিক উৎপাদনের জন্য দেশে কারখানা স্থাপনের জন্য এগিয়ে আসছেন। কোরিয়ান এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোনের মালিক, বিখ্যাত কোরিয়ান শিল্প গ্রুপ ইয়ংগোন কোরিয়ান এ বছরের প্রথম দিকে ঘোষণা দিয়েছিল যে তারা কৃত্রিম ফ্যাব্রিক উৎপাদনে ২০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে।

বিটিএমএর তথ্যানুসারে, ২০২০ সালে বাংলাদেশে ৪৩৩টিরও বেশি স্পিনিং মিল চালু ছিল। এ কারখানাগুলো বছরে সম্মিলিতভাবে ৩২৭০ টন কেজি তন্তু উৎপাদনে সক্ষম। স্থানীয় উৎপাদকরা নিটওয়্যারের জন্য প্রয়োজনীয় তন্তু ও ফ্যাব্রিকের প্রায় ৮৫-৮৯ শতাংশ সরবরাহ করতে সক্ষম। বিটিএমএ-র তথ্যানুযায়ী, বোনা কাপড়ের খাতে যে পরিমাণ তন্তুর চাহিদা আছে, স্থানীয় তাঁতিরা তার ৪০ শতাংশের কম সরবরাহ করতে পারে। এ কারণে কারণে বোনা পোশাক শিল্প বিদেশি ফ্যাব্রিকের ওপর নির্ভরশীল।

সুইজারল্যান্ডভিত্তিক আন্তর্জাতিক পোশাক নির্মাতাদের সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল ম্যানুফ্যাকচারার ফেডারেশন-এর (আইটিএমএফ) তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী উৎপাদিত মোট পোশাকের ৭৮ শতাংশই কৃত্রিম তন্তু থেকে তৈরি হয়। বাকি ২২ শতাংশ তৈরি হয় তুলার তন্তু থেকে। কিন্তু কৃত্রিম তন্তু তৈরি প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে আছে। বিটিএমএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন বলেছেন, ‘এ কারণেই আমরা এই পণ্যগুলোর জন্য আমদানির ওপর নির্ভরশীল।’

দেশের শীর্ষ দশ স্পিনিং মিলগুলোর একটি, ম্যাকসনস গ্রুপ ঘোষণা দিয়েছে যে তারা মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে তিনটি নতুন স্পিনিং ইউনিটে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে। গ্রুপটির সহপ্রতিষ্ঠান মেট্রো স্পিনিং লিমিটেড একটি ইউনিটে ৩৩০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে। ম্যাকসনস স্পিনিং মিলস আরও দুটি ইউনিটে ২৫৪ কোটি ও ৩৪৮ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে জানিয়েছে কোম্পানির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা।

ম্যাকসনস গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খোকন বলেছেন, ‘আমরা উচ্চমূল্যের বৈচিত্র্যময় পণ্য উৎপাদনের জন্য বড় বিনিয়োগের যাচ্ছি, আমরা বাজারের প্রতিযোগিতায় ভালোমতো টিকে থাকতে পারি।’ ম্যাকসনস গ্রুপের মতো এনভয় গ্রুপ, নিউ এশিয়া গ্রুপ, ডিবিএল গ্রুপ, প্রাইড গ্রুপ, শাশা গ্রুপও মহামারিকালে বিপুল বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এনভয় টেক্সটাইলসের চেয়ারম্যান কুতুবউদ্দিন আহমেদ বলেন, মিশ্র তন্তু উৎপাদনের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য তাদের প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ করছে। তারা আশা করছেন, এর ফলে ওভার-রেট খরচ কমে আসবে। কুতুবউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘পুরনো কারখানা হিসেবে আমাদেরকে নতুনদের চেয়ে তুলনামূলকভাবে কম বিনিয়োগ করতে হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ইউরোপ ও আমেরিকায় কাপড়ের চাহিদা শিগগিরই মহামারিপূর্ব সময়ের চেয়েও বেড়ে যেতে পারে ধারণা করে তাদের কোম্পানির সক্ষমতা অগ্রাধিকার ঠিক করা হচ্ছে। বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সাবেক সভাপতি কুতুবউদ্দীন আহমদ আরও বলেন, বিক্রির জন্য যাতে কোনো মার্কেটিং করতে না হয়, সেজন্য তার প্রতিষ্ঠান উন্নতমানের ফ্যাব্রিক তৈরি করে।
তিনি বলেন, ‘চীন-মার্কিন বাণিজ্যযুদ্ধের কারণেও আমাদের মিশ্র তন্তু উৎপাদনের ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে।

আগে এ তন্তু চীন থেকে আমদানি করা হতো। পোশাক খাতের আরেক বড় রপ্তানিকারক ডিবিএল গ্রুপ সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ৫৬২ কোটি টাকা বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শিল্প গ্রুপটি তাদের হামজা টেক্সটাইল মিল—ইউনিট ২-এর ডাইং ও ফিনিশিং সক্ষমতা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ উদ্দেশ্যে ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশন ৩৭৬ কোটি টাকার বরাদ্দ দিয়েছে।

শিল্প গ্রুপটি কৃত্রিম তন্তুসহ বিশেষ ধরনের তন্তু উৎপাদনের জন্য মতিন স্পিনিং মিলস-এ একটি নতুন ইউনিটও স্থাপন করেছে। এই নতুন উদ্যোগের জন্য প্রায় ১৮৬ কোটি টাকা প্রয়োজন। ডিবিএলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আশা করছেন, নতুন ইউনিটগুলো এ বছরের শেষ নাগাদ উৎপাদনে যেতে পারবে। এর ফলে প্রায় ২ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে। নিউ এশিয়া গ্রুপ তাদের উৎপাদনক্ষমতা বৃদ্ধি ও প্রযুক্তি আধুনিকায়নের জন্য ২১৩ কোটি টাকা বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ মতিন চৌধুরী বলেছেন, ‘তারা যে যে সুতা উৎপাপন করে, ক্রেতাদের কাছে তার ভালো চাহিদা আছে। কারণ আমরা আমেরিকা থেকে তুলা আমদানি করে আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে সুতা তৈরি করি।’ তিনি আরও বলেন, ‘গোটা বিশ্বেই প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে তন্তুর মানও বদলে গেছে। সেজন্য আমরা আরও উন্নত মানের সুতা উৎপাদনের জন্য ব্যাপক বিনিয়োগ করছি।’
কোভিড মহামারির কারণে ব্যবসা এখন খারাপ অবস্থায় আছে উল্লেখ করে তিনি আশা প্রকাশ করেন যে এ পরিস্থিতি বেশিদিন থাকবে না।

তিনি বলেন, ‘এর (মহামারি) কারণে ব্যবসা বন্ধ থাকবে না। সেজন্য আমরা তুলাভিত্তিক তন্তুর ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণের জন্য তৈরি হচ্ছি।’ প্রাইড গ্রুপের অঙ্গসংগঠন এইচআর টেক্সটাইল তাদের সক্ষমতা বাড়াতে ৮০ কোটি টাকা বিনিয়োগের পরিকল্পনা নিয়েছে।

শিল্প গ্রুপটির পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেছেন, ‘টেকসই পণ্য উৎপাদনের জন্য আমরা আমাদের সক্ষমতা বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছি। কারণ বিশ্বজুড়ে ক্রেতারা শক্তি, রাসায়নিক দ্রব্য ও পানি খরচের দিক থেকে আরও পরিবেশবান্ধব পণ্যের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই প্রেক্ষাপটে পরিবেশবান্ধব করার লক্ষ্যে আমাদের পোশাক কারখানার বিদ্যমান রাসায়নিক এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টকে (ইটিপি) বায়োলজিক্যাল ইটিপিতে রূপান্তরিত করার পরিকল্পনা আছে আমাদের।’

প্রতিষ্ঠানটিকে আরও দক্ষ ও উৎপাদনকেন্দ্রিক করে তুলতে কিছু সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও যন্ত্র স্থাপনের পরিকল্পনাও নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন অধ্যাপক আবদুল মোমেন। তিনি বলেন, ‘গ্রীষ্ম ও শীতকালের জন্য আমরা উচ্চমানের পণ্য উৎপাদন করছি। এ কারণে সারা বছর ধরেই আমাদের কাছে অর্ডার আসতে থাকে।’

তিনি আরও বলেন, বর্ধিত সক্ষমতার কারণে তাদের কোম্পানি বিদ্যমান ক্রেতাদেরকে বাড়তি কিছু বৈচিত্র্যময় পণ্য সরবরাহ করতে পারবেন। ফলে কোম্পানির টার্নওভারও বাড়বে। টেকসই পণ্য উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে শাশা ডেনিম জমি কেনার জন্য ইতোমধ্যে ৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামস মাহমুদ জানিয়েছেন, তারা বিদ্যমান সক্ষমতা ব্যবহার করে আরও বেশি উচ্চমান সম্পন্ন পণ্য উৎপাদনের পরিকল্পনা করছেন।

এছাড়াও সুতা কাটা রিসাইকেলিংয়ের জন্য একটি নতুন প্ল্যান্ট ও পরিবেশবান্ধব ওয়াশিং প্ল্যান্ট স্থাপনের কাজও চালিয়ে যাচ্ছে কোম্পানিটি। নতুন প্রকল্পটিতে প্রায় ৫ কোটি মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হবে বলে জানান শামস মাহমুদ। গত বছর ডেনিম মিলটি ইতালিয়ান টেক্সটাইল মিল ইওএস টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডের একটি অংশও কিনে নেয়।

রপ্তানি পরিস্থিতি: ২০১৮-১৯ অর্থবছর পর্যন্ত এক দশকে তৈরি পোশাকের রপ্তানি ১৭৬ শতাংশ বেড়ে পেয়ে ৩৪.১৩ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। এই সময়ে ওভেন পোশাকের রপ্তানি ১৯৮ শতাংশ বেড়ে ১৬.৬৩ বিলিয়ন ডলার এবং নিট পোশাকের রপ্তানি ১৬৫ শতাংশ বেড়ে ১৬.৫ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে তৈরি পোশাক রপ্তানি করে দেশ ২৮.৫ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো-র (ইপিবি) তথ্যানুযায়ী, মোট রপ্তানির এই পরিমাণ গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১১.১ শতাংশ বেশি, কিন্তু ২০১৮-১৯ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১০ শতাংশ কম। পোশাক রপ্তানিকারকরা আশা করছেন, এই অর্থবছরে পোশাক রপ্তানি ৩৪ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে।

ন্যাশনাল ব্যাংকের প্রথম প্রান্তিক প্রকাশ: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড (এনবিএল) গত ৩১ মার্চ, ২০২১ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরের প্রথম প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। গত বুধবার (৩০ জুন) অনুষ্ঠিত ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে সর্বশেষ হিসাববছরের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর তা প্রকাশ করা হয়।

ন্যাশনাল ব্যাংক সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি’২১-মাচ’২১) ব্যাংকটির সমন্বিত শেয়ার প্রতি আয় (ঈড়হংড়ষরফধঃবফ ঊচঝ) হয়েছে ১৩ পয়সা। আগের বছর সমন্বিতভাবে শেয়ার প্রতি আয় ছিল ৩০ পয়সা ।

আলোচিত প্রান্তিকে ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি ক্যাশ ফ্লো ছিল মাইনাস ১ টাকা ৭৫ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ক্যাশ ফ্লো ছিল মাইনাস ৩ টাকা ৪২ পয়সা। গত ৩১ মার্চ, ২০২১ তারিখে সমন্বিতভাবে ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ১৭ টাকা ৮ পয়সা।

জুন মাসে পুঁজিবাজারে লেনদেনের রেকর্ড: চলতি বছরের জুন মাসে দেশের পুঁজিবাজারে রেকর্ড লেনদেন হয়েছে। জুন মাসজুড়ে প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন হয়েছে ৪৩ হাজার কোটি টাকার ওপরে। দেশের পুঁজিবাজারের ইতিহাসে এর আগে কখনো জুন মাসে এত লেনদেন হয়নি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের জুন মাসে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২২ দিন।

এই ২২ দিনে বাজারটিতে মোট লেনদেন হয়েছে ৪৩ হাজার ৫০৯ কোটি টাকা। সে হিসেবে জুন মাসের প্রতি কার্যদিবসে গড়া লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৯৭৮ কোটি টাকা। এর আগে ২০১০ সালের জুন মাসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন হয় ৩৮ হাজার ৭৭৪ কোটি টাকা। চলতি বছরের আগে এতদিন এটাই ছিল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে জুন মাসের সর্বোচ্চ লেনদেন। ২০১০ সালের জুন মাসেও শেয়ারবাজারে ২২ দিন লেনদেন হয়।

জুন মাসের সর্বোচ্চ লেনদেনের তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে ২০০৯ সাল। ওই বছরের জুন মাসজুড়ে ডিএসইতে লেনদেন হয় ১৫ হাজার ৭৭ কোটি টাকা। সে হিসেবে ২০০৯ সালের জুন মাসের তুলনায় চলতি বছরের জুন প্রায় তিনগুণ বেশি লেনদেন হয়েছে। ২০০৯ ও ২০১০ সালে দেশের শেয়ারবাজার বেশ রমরমা হয়ে ওঠে। তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারে ও ইউনিটের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে অতিমূল্যায়িত হয়ে পড়ে। মূল্য সূচক যেমন হু হু করে বাড়ে, তেমনি বাড়ে লেনদেনের গতি। কিন্তু অস্বাভাবিক ফুলে-ফেঁপে ওঠায় ২০১০ সালেই ভয়াবহ ধস নামে শেয়ারবাজারে।

সে সময় শেয়ারবাজারের ধস এতটাই ভয়াবহ ছিল বিনিয়োগ করা পুঁজি হারান লাখ লাখ বিনিয়োগকারী। দরপতনের প্রতিবাদে দিনের পর দিন মতিঝিলের রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেন বিনিয়োগকারীরা। পুঁজি হারানোর ধকল সইতে না পেরে বিনিয়োগকারীর আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটে। এই ধকল থেকে শেয়ারবাজারকে বের করে আনতে সরকারের পক্ষ থেকে নানা ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হয়। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়। পুনর্গঠন করা হয় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে। এমনকি নিয়ন্ত্রক সংস্থার নাম পরিবর্তনও করা হয়।

পুঁজিবাজারে স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠা করতে বিভিন্ন ধরনের আইন কানুন করার পাশাপাশি কিছু নীতিমালাতেও পরিবর্তন আনা হয়। এরপরও শেয়ারবাজারের গতি ফির ছিল না। তবে গত বছর নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান হিসেবে অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলামকে নিয়োগ দিয়ে কমিশন পুনর্গঠনের পর বাজার যেন কিছুটা গতি ফিরে পাই। ধীরে ধীরে মূল্য সূচক বাড়ার পাশাপাশি গতি ফিরতে থাকে লেনদেনে। পতন ভুলে মুনাফা তুলে নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন বিনিয়োগকারীরা।

প্রায় এক বছরের বেশি সময় ধরে শেয়ারবাজারে এমন ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রয়েছে। তবে সদ্য সমাপ্ত জুন মাসে লেনদেনের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা পেয়েছে। এ মাসে লেনদেন হওয়া ২২ দিনের মধ্যে ১২ দিনই দুই হাজার কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হয়েছে। সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ৯ জুন। ওই দিন ২৭’শ কোটি টাকার লেনদেন হয়, যা ২০১০ সালের ৬ ডিসেম্বরের পর একদিনে সর্বোচ্চ লেনদেনের রেকর্ড।

এদিকে তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, জুন মাসে সর্বোচ্চ লেনদেনের তালিকায় চতুর্থ স্থানে রয়েছে ২০১১সাল। ওই বছরের জুন মাসে ডিএসইতে ১৩ হাজার ৪৬৫ কোটি টাকার লেনদেন হয়। এছাড়া ২০১৩ সালের জুনে ১৩ হাজার ২৩৬ কোটি টাকা, ২০১৭ সালের জুনে ১০ হাজার ১৫৬ কোটি টাকা, ২০১৫ সালের জুনে ১০ হাজার ৬১ কোটি টাকা, ২০১৮ সালের জুনে ৯ হাজার ৬৩৫ কোটি,

২০১৬ সালের জুনে ৮ হাজার ১৩৮ কোটি টাকা, ২০১৪ সালের জুনে ৭ হাজার ৭৩৫ কোটি টাকা, ২০১৯ সালের জুনে ৭ হাজার ৬৫০ কোটি টাকা, ২০০৮ সালের জুনে ৬ হাজার ৯৯৫ কোটি টাকা, ২০১২ সালের জুনে ৩ হাজার ৯৩৬ কোটি টাকা, ২০০৭ সালের জুনে ৩ হাজার ৯১ কোটি টাকা এবং ২০০৫ সালের জুনে ৫৮৩ কোটি টাকার লেনদেন হয়।

বিদেশি বিনিয়োগ উঠানামার শীর্ষ দুই কোম্পানি: গত দুই মাসজুড়ে পুঁজিবাজারে চাঙ্গাভাব বিরাজ করেছে। মে-জুনে প্রধান পুঁজিবাজারের সব সূচক বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। এ সময়ে তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে। বাজার মূলধন বেড়েছে চোখে পড়ার মতো। গত দুই মাসে ফুরফুরে অবস্থায় ছিল দেশের পুঁজিবাজার। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বাজার এমন গতিতে ছুটলেও এর পেছনে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অবদান ছিল না বললেই চলে। বরং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আচার-আচরণ দেখলে মনে হবে, তারা বাজারকে পেছনে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে। মূলত দেশি বিনিয়োগকারীদের ওপর ভর করেই পুঁজিবাজার এমন চাঙ্গা হয়ে উঠেছে।

অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নেতৃত্বে নতুন কমিশনের অধীনে পুঁজিবাজারে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন কর্মসূচি আসছে এবং সেসব কর্মসূচির সঠিক প্রতিফলনও ঘটছে। এতে বাজার অব্যাহতভাবে সামনে অগ্রসর হচ্ছে। পুঁজিবাজারে স্বচ্চতা, জবাবদিহিতা, করপোরেট গর্ভনেন্স বাস্তবায়ন এখন অনেক দৃশ্যমান। এরফলে বিনিয়োগকারীদের আস্থা যেমন বাড়ছে, তাদের অংশগ্রহণও বাড়ছে। বাজারে ফিরছেন বাজার থেকে বেরিয়ে যাওয়া ও নিষ্ক্রিয় হয়ে যাওয়া বিনিয়োগকারীরাও।

কিন্তু বিদেশি বিনিয়োগকারীদের তেমন সক্রিয়তা লক্ষ্যণীয় হচ্ছে না। বরং তারা শেয়ার বিক্রি করে দিয়ে ক্রমাগত তাদের বিনিয়োগ তুলে নিয়ে যাচ্ছেন। চলতি বছরে বিদেশিরা ঠিক কত টাকার শেয়ার কিনেছেন বা বিক্রি করেছেন সে সংক্রান্ত তথ্য ডিএসই থেকে পাওয়া যায়নি। তবে ডিএসইর দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বাজারের চিত্র ভালো থাকলেও গত তিন মাসে (এপ্রিল-জুন) বিদেশিরা যে টাকার শেয়ার কিনেছেন, বিক্রি করেছেন তার চেয়ে বেশি।

বিদেশিদের শেয়ার কেনার চেয়ে বিক্রি বেশি করার এই চিত্র দীর্ঘদিন ধরে অব্যাহত রয়েছে। বর্তমানে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৩৭৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮০টি কোম্পানিতে বিদেশিদের বিনিয়োগ রয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলোর মোট শেয়ারের এক শতাংশের বেশি।

এর মধ্যে ১৫টি প্রতিষ্ঠানে বিদেশিদের বিনিয়োগ রয়েছে ১৫ শতাংশের বেশি। কোম্পানিগুলো হলো-আমরা নেট, ব্র্যাক ব্যাংক, বিএসআরএম, বেক্সিমকো ফার্মা, ডিবিএইচফাস্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড, আইডিএলসি, ইসলামী ব্যাংক, এমএল ডাইং, অলিম্পিক ইন্ডাষ্ট্রিজ, কুইনসাউথ টেক্সটাইল, রেনেটা, শেফার্ড ইন্ডাষ্ট্রিজ, স্কয়ার ফার্মা ও ভিএফএস থ্রেড লিমিটেড।

তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণের শীর্ষ কোম্পানিগুলোতে মে, ২০২১ সময়ে তেমন পরিবর্তন হয়নি। তবে এপ্রিল মাসের তুলনায় মে মাসে একটি কোম্পানিতে বিদেশিদের বিনিয়োগ বেড়েছে এবং একটি কোম্পানিতে বিদেশিদের বিনিয়োগ কমেছে। মে মাসে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে বহুজাতিক কোম্পানি ম্যারিকো বাংলাদেশে।

কোম্পানিটিতে ৩০ এপ্রিল বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ১১.৪৬ শতাংশ। যা ৩১ মে এসে দাঁড়িয়েছে ১১.৭৮ শতাংশে। অন্যদিকে, মে মাসে বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে আরেক বহুজাতিক কোম্পানি বৃটিশ অ্যামেরিকান ট্যোবাকোতে। কোম্পানিটিতে ৩০ এপ্রিল বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ৯,৮৭ শতাংশ। যা ৩১ মে এসে দাঁড়িয়েছে ৯.৩০ শতাংশে।

ডিএসইতে সাপ্তাহিক লেনদেনের শীর্ষে বেক্সিমকো: পুঁজিবাজারে সপ্তাহজুড়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানি ( বেক্সিমকো) লিমিটেড। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির ২ কোটি ৯৭ লাখ ৯৩ হাজার ৫৬৬ টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে । যার বাজার মূল্য ২৬৫ কোটি ৯৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা। তালিকার দ্বিতীয় স্থানে থাকা ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ১ কোটি ৭১ লাখ ৯২ হাজার ১৮৮ টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ২২৯ কোটি ৬ লাখ ১৬ হাজার টাকা।

তৃতীয় স্থানে থাকা মালেক স্পিনিংয়ের ৩ কোটি ৬৬ লাখ ৩৬ হাজার ৪১৯ টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ১২০ কোটি ৫৪ লাখ ২৩ হাজার টাকা। লেনদেনের তালিকায় থাকা অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে: স্কয়ার ফার্মার ১১৭ কোটি ১০ লাখ ৬৩ হাজার টাকার, কুইন সাউথের ১০৩ কোটি ৯৮ লাখ ৩৩ হাজার টাকার, ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ৯৮ কোটি ৫৩ লাখ ৪৮ হাজার টাকার,

ম্যাকসন স্পিনিংয়ের ৭৪ কোটি ৫১ লাখ ৯৫ হাজার টাকার, ড্রাগন সোয়েটারের ৭১ কোটি ৫১ লাখ ২৫ হাজার টাকার, কেয়া কসমেটিকসের ৭০ কোটি ৪ লাখ ৭৭ হাজার টাকার ও কাট্টালি টেক্সটাইলের ৬৩ কোটি ৩১ লাখ ৮১ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।

ডিএসইতে দর পতনের শীর্ষে সাফকো স্পিনিং: পুঁজিবাজারে সপ্তাহজুড়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) শেয়ার দর পতনের শীর্ষে উঠে এসেছে সাফকো স্পিনিং লিমিটেড। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। জানা গেছে, সপ্তাহজুড়ে কোম্পানির দর কমেছে ১৮ দশমিক ০৯ শতাংশ। কোম্পানিটি সর্বমোট ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৬ হাজার টাকা লেনদেন করে। যা গড়ে প্রতিদিন ২ কোটি ৯৯ লাখ ১ হাজার ৫০০ টাকা।

তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা প্রগতি ইন্স্যুরেন্সের দর কমেছে ১০ দশমিক ৫০ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটি সর্বমোট ১০ কোটি ৫২ লাখ ৭০ হাজার টাকা লেনদেন করে। যা গড়ে প্রতিদিন ২ কোটি ৬৩ লাখ ১৭ হাজার ৫০০ টাকা। তালিকায় তৃতীয় স্থানে থাকা মালেক স্পিনিংয়ের দর কমেছে ১০ দশমিক ০৯ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে শেয়ারটি সর্বমোট ১২০ কোটি ৫৪ লাখ ২৩ হাজার টাকা লেনদেন করে।

যা গড়ে প্রতিদিন ৩০ কোটি ১৩ লাখ ৫৫ হাজার ৭৫০ টাকা। তালিকায় থাকা অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে-ফনিক্স ইন্স্যুরেন্সের ৯.৩৪ শতাংশ, সী পার্লের ৮.৩৭ শতাংশ, আরামিট সিমেন্টের ৮.১৮ শতাংশ, ওয়াইম্যাক্সের ৬.৫৯ শতাংশ, রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্সের ৬.৫৮ শতাংশ, কাট্টালি টেক্সটাইলের ৬.৩৪ শতাংশ এবং পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর কমেছে ৬.০৩ শতাংশ।

‘পুঁজিবাজারে ২১ হাজার কোটি টাকার ফান্ড গঠনে বাধা নেই’: পুঁজিবাজারের উন্নয়নের জন্য প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকার ফান্ড গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। ফান্ড গঠনের টাকা আসবে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিভিন্ন কোম্পানি ও মিউচুয়্যাল ফান্ডের বিতরণ না হওয়া লভ্যাংশ থেকে। ফান্ডরে নাম হবে ‘ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড রুলস, ২০২১’’।

বিএসইসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সম্প্রতি এর গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। ফলে এ তহবিল গঠন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে আর কোনো বাধা থাকলো না। এদিকে, প্রায় ২১ হাজার কোটির টাকার এ তহবিলের মধ্যে নগদ লভ্যাংশের পরিমাণ প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা। আর বোনাস স্টক লভ্যাংশের বাজার মূল্য প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা। এ তহবিলটি পরিচালনা করবে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান।

পুঁজিবাজারকে সাপোর্ট দিতে এই ফান্ড গঠন করা হয়। তহবিলটি ব্যবস্থাপনায় ১১ সদস্যের বোর্ড অব গভর্নস থাকবে। যার মধ্যে একজন চেয়ারম্যান ও ৩ জন সদস্য থাকবেন, যারা বিএসইসি কর্তৃক মনোনীত হবে। এছাড়াও বোর্ড অব গভর্নসে বিএসইসি থেকে ৪ জন, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই), সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল),

সেন্ট্রাল কাউন্টারপার্টি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিসিবিএল), বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজ (বিএপিএলসি) থেকে একজন করে মনোনীত সদস্য থাকবেন। আর একজন প্রফেশনার চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টস বা কস্ট ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টেন্টস বা চার্টার্ড সেক্রেটারি বা চার্টার্ড ফাইন্যান্সিয়াল অ্যানালিস্ট এবং একজন চিফ অব অপারেশন (সিওও) থাকবেন।

বিভিন্ন কোম্পানির সকল অবণ্টিত লভ্যাংশ এবং ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকের কাছে তিন বছরের অধিক সময় পড়ে থাকা অর্থ-শেয়ার এই তহবিলে স্থানান্তর করা হবে। তিন বছরের হিসাব হবে লভ্যাংশ ঘোষণা বা অনুমোদনের দিন বা রেকর্ড ডেট থেকে। এক্ষেত্রে নগদ লভ্যাংশ বা অর্থ ব্যাংক হিসাবে জমা থাকায় কোনো সুদ অর্জিত হলে, তাও এ তহবিলে দিতে হবে।

তহবিলে শেয়ার বা টাকা হস্তান্তরের পরও তা দাবি করতে পারবেন সংশ্নিষ্ট বিনিয়োগকারী। নিজের দাবির প্রমাণসহ সংশ্নিষ্ট কোম্পানি বা সম্পদ ব্যবস্থাপক কোম্পানি বা ব্রোকারেজ হাউস বা মার্চেন্ট ব্যাংকের কাছে আবেদন করতে হবে।

আবেদনের এক মাসের মধ্যে ওই বিনিয়োগকারীর শেয়ার বা টাকা ফেরত দেওয়া হবে। তহবিল থেকে বাজারের তারল্যপ্রবাহ এবং গভীরতা বাড়াতে শেয়ার কেনাবেচা বা ধার প্রদান বা ধার গ্রহণ করা হবে। শেয়ার কেনাবেচা করতে গিয়ে তহবিলের কোনো লোকসান না হয়, তার জন্য সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন করা হবে, থাকবে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ও অডিট কমিটি।

সপ্তাহ জুড়ে মূলধন ফিরেছে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা: বিদায়ী সপ্তাহটিতে পুঁজিবাজারের সব সূচক বেড়েছে। একই সাথে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে। তবে টাকার পরিমাণে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন প্রায় চার হাজার কোটি টাকা কম হয়েছে। লেনদেন কমলেও বাজার মূলধন সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা ফিরেছে।

জানা গেছে, সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস লেনদেন শুরুর আগে ডিএসইতে বাজার মূলধন ছিল ৫ লাখ ১০ হাজার ৬৩৮ কোটি ৭৬ লাখ ১৮ হাজার টাকায়। আর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস লেনদেন শেষে বাজার মূলধন দাঁড়ায় ৫ লাখ ১৪ হাজার ২৮২ কোটি ১৩ লাখ ৪ হাজার টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বিনিয়োগকারীরা ৩ হাজার ৬৪৩ কোটি ৩৬ লাখ ৮৬ হাজার টাকা বাজার মূলধন ফিরেছে।

বিদায়ী সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৫ হাজার ৬২৪ কোটি ৬৬ লাখ ২৫ হাজার ৬৩৩ টাকার লেনদেন হয়েছে। আর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৯ হাজার ৫২৪ কোটি ২৯ লাখ ১৮ হাজার ৮১৭ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেন ৩ হাজার ৮৯৯ কোটি ৬২ লাখ ৯৩ হাজার ১৮৪ টাকা বা ৪১ শতাংশ কমেছে।

সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫৭ পয়েন্ট বা ০.৯৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ১৫০ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ১২ পয়েন্ট বা ০.৯৯ শতাংশ এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৮ পয়েন্ট বা ০.৪০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়ে যথাক্রমে ১ হাজার ৩১৪ পয়েন্ট এবং ২ হাজার ২০৮ পয়েন্টে।

বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৭৬টি প্রতিষ্ঠান শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ১৯৭টির বা ৫২.৩৯ শতাংশের, কমেছে ১৬২টির বা ৪৩.০৯ শতাংশের এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৭টির বা ৪.৫২ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর।

অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ৩৮৬ কোটি ১১ লাখ ৮৬ হাজার ২৩৪ টাকার। আর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৫৬০ কোটি ৮৭ লাখ ৬২ হাজার ৮৯০ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে লেনদেন ১৭৪ কোটি ৭৫ লাখ ৭৬ হাজার ৬৫৫ টাকা বা ৩১ শতাংশ কম হয়েছে।

সপ্তাহটিতে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৩৭ পয়েন্ট বা ০.৭৮ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৭৯৫ পয়েন্টে। সিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে সিএসসিএক্স ৭২ পয়েন্ট বা ০.৬৮ শতাংশ, সিএসই-৩০ সূচক ২৭৬ পয়েন্ট বা ২.১০ শতাংশ, সিএসই-৫০ সূচক ৬ পয়েন্ট বা ০.৪৯ শতাংশ এবং সিএসআই ৮ পয়েন্ট বা ০.৭৮ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১০ হাজার ৬৯৫ পয়েন্ট, ১৩ হাজার ৩৮২ পয়েন্টে, ১ হাজার ২৮৭ পয়েন্টে এবং সিএসআই ১ হাজর ৯১ পয়েন্টে।

সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে ৩৩৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১৫৪টির বা ৪৫.৫৬ শতাংশের দর বেড়েছে, ১৭১টির বা ৫০.৫৯ শতাংশের কমেছে এবং ১৩টির বা ৩.৮৫ শতাংশের দর অপরিবর্তিত রয়েছে।

ডিএসইতে পিই রেশিও বেড়েছে দশমিক ৮২ শতাংশ: বিদায়ী সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক মূল্য ০.৮২ শতাংশ বেড়েছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। জানা গেছে, গত সপ্তাহের শুরুতে ডিএসইর পিই ছিল ১৮.৩৫ পয়েন্টে। যা সপ্তাহ শেষেও ১৮.৫০ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে পিই রেশিও ০.১৫ পয়েন্ট বা ০.৮২ শতাংশ বেড়েছে।

সপ্তাহ শেষে ব্যাংক খাতের পিই রেশিও অবস্থান করছে ৭.৯৬ পয়েন্টে। এছাড়া তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ২১.১৪ পয়েন্টে, বস্ত্র খাতের ৩৬.৪০ পয়েন্টে, ওষুধ ও রসায়ন খাতের ১৯.৭৯ পয়েন্টে, প্রকৌশল খাতের ১৩.৬২ পয়েন্টে, বীমা খাতের ২৫.৭৯ পয়েন্টে, বিবিধ খাতের ৫৮.৪০ পয়েন্টে, খাদ্য খাতের ২০.০৩ পয়েন্টে, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ১১.৭৯ শতাংশ, চামড়া খাতের ৮৬.৬২ পয়েন্টে,

সিমেন্ট খাতের ১৪.৭২ পয়েন্টে, আর্থিক খাতের ৪৩.৭৮ পয়েন্টে, ভ্রমণ ও অবকাশ খাতের ৪৭.৬৮ পয়েন্টে, পেপার খাতের ৯৭.৯১ পয়েন্টে, টেলিযোগাযোগ খাতের ১১.৪০ পয়েন্টে, সেবা ও আবাসন খাতের ২২.৪০ পয়েন্টে, সিরামিক খাতের ২৭.২৬ পয়েন্টে এবং পাট খাতের পিই ঋণাত্বক ৩৬.৫৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

সপ্তাহজুড়ে অলিম্পিক এক্সেসরিজ ৪৫ শতাংশ দরবৃদ্ধি: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সাপ্তাহিক শেয়ার দর বৃদ্ধির শীর্ষে উঠে এসেছে অলিম্পিক এক্সেসরিজ লিমিটেড। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। গত সপ্তাহে কোম্পানির দর বেড়েছে ৪৪ দশমিক ৬৬ শতাংশ। শেয়ারটি সর্বমোট ২৫ কোটি ৭৩ লাখ ১৯ হাজার টাকা লেনদেন করে। যা গড়ে প্রতিদিন ৬ কোটি ৪৩ লাখ ২৯ হাজার ৭৫০ টাকা।

তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের দর বেড়েছে ৪৩ দশমিক ৯৪ শতাংশ। শেয়ারটি সর্বমোট ২২৯ কোটি ৬ লাখ ১৬ হাজার টাকা লেনদেন করে। যা গড়ে প্রতিদিন ৫৭ কোটি ২৬ লাখ ৫৪ হাজার টাকা।

তালিকায় তৃতীয় স্থানে থাকা কেঅ্যান্ডকিউয়ের বেড়েছে ২৪ দশমিক ৫০ শতাংশ। শেয়ারটি সর্বমোট ৬ কোটি ৯২ লাখ ২৯ হাজার টাকা লেনদেন করে। যা গড়ে প্রতিদিন ১ কোটি ৭৩ লাখ ৭ হাজার ২৫০ টাকা।

তালিকায় উঠে আসা অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে: ন্যাশনাল টি’র ২০.৩৯ শতাংশ, ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের ১৮.৮৭ শতাংশ, খুলনা প্রিন্টিংয়ের ১৮.৫২ শতাংশ, এটলাস বাংলাদেশের ১৫.০৯ শতাংশ, ফাস ফাইন্যান্সের ১৪.০৪ শতাংশ, আনোয়ার গ্যালভানাইজিংয়ের ১১.৫২ শতাংশ এবং মতিন স্পিনিংয়ের শেয়ার দর ১১.৫১ শতাংশ বেড়ছে।