দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: ডিএসই ৩ খাতের শেয়ারে উত্থানে চাঙ্গা ভাব বিরাজ করছে পুঁজিবাজারে। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে বস্ত্র-ব্যাংক ও ওষুধ খাতের শেয়ারে চাঙ্গা ভাব বিরাজ ছিল। শাটডাউনের প্রথম দিনে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের মাঝে অঁটুট আস্থা লক্ষ্য করা গেছে। আতঙ্কিত হয়ে শেয়ার বিক্রির ধুম দেখা যায়নি।

দিনশেষে বস্ত্র ওষুধ ও রসায়ন এবং ব্যাংক খাতের লেনদেনের প্রভাবে ডিএসই প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ৬৯ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ২১৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে। যা গত সাড়ে ৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে ২০১৮ সালের ৭ জানুয়ারি ডিএসইএক্স সূচকের অবস্থান ছিল ৬ হাজার ২৬৮ পয়েন্ট।

নতুন অর্থ বছরের প্রথম কার্যদিবস সোমবার লেনদেনে সবার শীর্ষে উঠে এসেছে বস্ত্র খাত। দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে ফার্মা খাত। তারপরেই অবস্থান করছে ব্যাংক ও বিমা খাত। সোমবার ডিএসইর মোট লেনদেনের ২৪ শতাংশ বা ৩৬৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে বস্ত্র খাতে। ফার্মা খাতে লেনদেন হয়েছে ১০ শতাংশ বা ১৫৪ কোটি টাকা। আর ব্যাংকে লেনদেন হয়েছে ১৪৯ কোটি টাকা বা মোট লেনদেনের সাড়ে ১০ শতাংশ। বস্ত্র ফার্মা এবং ব্যাংক খাতের এমন প্রভাবে বড় উত্থান হয়েছে পুঁজিবাজারে। ডিএসই এবং সিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, দিনটিতে বস্ত্র খাতের ৫৯টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ৫৭ কোম্পানির। কমেছে দুইটি কোম্পানির শেয়ারের, আজ ফার্মা খাতের শেয়ার দর বেড়েছে ১৮টি কোম্পানির। কমেছে ১০টির, অপরিবর্তিত রয়েছে দুইটি কোম্পানির শেয়ার দর।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ব্যাংক-বিমা এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ বেশির ভাগ খাতের কোম্পানির দাম বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে দিনের লেনদেন শুরু হয়। তিন ঘণ্টার লেনদেনের প্রথম আধা ঘণ্টায় দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক বাড়ে ৭৩ পয়েন্ট। এরপর হঠাৎ বিমা কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি শুরু করেন। তাতে সূচকের উঠানামা শুরু হয়। যা দিনের শেষ সময় পর্যন্ত অব্যাহত ছিল।

দিন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক আগের দিনের চেয়ে বেড়েছে ৬৯ পয়েন্ট। অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক বেড়েছে ২৪০ পয়েন্ট। সূচকের পাশাপাশি বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম ও লেনদেন। ফলে ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম কার্যদিবসে পুঁজিবাজারে উত্থান হলো। সোমবার (৫ জুলাই) ডিএসইতে মোট ৩৭৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার লেনদেন হয়েছে।

এর মধ্যে দাম বেড়েছে ২৪৩টির, কমেছে ১১৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১১টির। এদিন মোট লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৫৫১ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৪০৭ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। অর্থাৎ আগের দিনের চেয়ে লেনদেন বেড়েছে।

বেশির ভাগ শেয়ারের দাম বাড়ায় এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৬৯ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ২১৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। প্রধান সূচকের পাশাপাশি ডিএসইর অন্য সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ১১ দশমিক ৯৬ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩২৬ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ১৬ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ২২৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে লেনদেনের শীর্ষে ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড। এরপর বেশি লেনদেন হয়েছে এমএল ডাইং লিমিটেডের শেয়ার। এরপর ক্রমান্বয়ে রয়েছে কেয়া কসমেটিকস, সন্ধানী লাইফ, ম্যাক্সন স্পিনিং, ন্যাশনাল ফিডস মিলস, ডেল্টা লাইফ ইনস্যুরেন্স, মালেক স্পিনিং, জেনারেশন নেক্সট এবং আইএফআইসি ব্যাংক লিমিটেড।

অপরদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২৪০ পয়েন্ট বেড়ে ১৮ হাজার ৩৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। সিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩০৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেড়েছে ২১৫টির, কমেছে ৭১টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৮টির শেয়ারের দাম। সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৫২ কোটি ৬২ লাখ ৫২ হাজার টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৭৮ কোটি ৮২ লাখ ৫০ হাজার ২৫১ টাকা।

চাঙা পুঁজিবাজারে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আচরণ সন্দেহজনক: বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের উপযোগী অবস্থান হলেও চাঙা পুঁজিবাজার টানতে পারছে না বিদেশিদের। বরং বেশ কিছুদিন ধরে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে নতুন বিনিয়োগ করছেন না; উল্টো আগে যে বিনিয়োগ করেছিলেন ভালো মুনাফা পাওয়ায় তার একটি বড় অংশ তুলে নিয়ে গেছেন। তারপরও চড়ছে বাজার। করেনাভাইরাস মহামারির মধ্যেও ফরফুরে মেজাজে আছেন দেশি বিনিয়োগকারীরা।

‘বাজার আরও ভালো হবে’ বলে আশ্বাস দিয়েছেন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। এরই মধ্যে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা নতুন বিনিয়োগ নিয়ে ফিরে আসবেন বলে প্রত্যাশা করছেন বাজার বিশ্লেষকরা।

বাংলাদেশ ব্যাংক গত বৃহস্পতিবার পুঁজিাবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ সংক্রান্ত যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায়, সদ্য বিদায়ী ২০২০-২১ অর্থবছরের ১১ মাসে (জুলাই-মে) পুঁজিবাজারে যে পরিমাণ বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে, চলে গেছে তার চেয়ে বেশি। এই ১১ মাসে পুঁজিবাজারে মোট যে বিনিয়োগ হয়েছে, তার চেয়ে ২৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার (বর্তমান বাজারদরে ২ হাজার ১০৩ কোটি টাকা) দেশে নিয়ে গেছেন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। অর্থাৎ, নিট এফডিআই দাঁড়িয়েছে ২৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার ঋণাত্মক।

২০১৯-২০ অর্থবছরের জুলাই-মে সময়ে ২ কোটি ১০ লাখ ডলারের নিট বিদেশি বিনিয়োগ এসেছিল পুঁজিবাজারে; পুরো বছরে এসেছিল ৪ কোটি ৪০ লাখ ডলার। তার আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এসেছিল ১৭ কোটি ১০ লাখ ডলার।

চাঙ্গা পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগের এই করুণ দশা নিয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাবেক সভাপতি ও বর্তমান পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, বেশকিছুদিন ধরে আমাদের বাজার ভালো যাচ্ছে। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা ফিরে এসেছে; তারা ভালো মুনাফা পাচ্ছেন। বেশিরভাগ শেয়ারের দাম এখন চড়া। এই চড়া বাজারে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা নতুন বিনিয়োগ করছেন না। বরং মুনাফা তুলে নিতে হাতে থাকা শেয়ারগুলোই বিক্রি করে দিচ্ছেন। সে কারণে নিট বিনিয়োগ নেগেটিভ হয়েছে।

আন্তর্জাতিক বড় বড় বাজারের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘বিদেশি বিনিয়োগকারীরা আসলে অনেক কিছু চিন্তা করে বিভিন্ন দেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করে। তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর অডিটসহ স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা, রাজনৈতিক পরিস্থিতি, স্টক এক্সচেঞ্জের পারফর্মমেন্স ইত্যাদি। করোনার কারণে গত বছর আমাদের পুঁজিবাজার দুই মাসের বেশি বন্ধ ছিল। এটা বিদেশি বিনিয়োগকারীরা পছন্দ করেনি। ‘মূলত সে সময়ের পর থেকেই বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। নতুন করে কেউ বিনিয়োগ করেনি।’

তবে, এখনও কয়েকটি ভালো কোম্পানিতে বিদেশিদের বিনিয়োগ আছে বলে জানান শাকিল রিজভী স্টক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাকিল রিজভী। তিনি বলেন, ‘আশার কথা হচ্ছে, আমাদের বাজার আস্তে আস্তে স্থিতিশীল বাজারে পরিণত হচ্ছে। বাজারের প্রতি দেশি-বিদেশি উভয় বিনিয়োগারীর আস্থা বেড়েছে। এই বাজারে অবশ্যই বিদেশি বিনিয়োগকারী আসবে।

তারা এখন অপেক্ষা করছে; নিবিঢ়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। আমার বিশ্বাস, খুব শিগগিরই বাজারে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বড় অঙ্কের বিনিয়োগ নিয়ে আসবেন। তখন বাজার আরও ভালো হবে।’

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা-বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ২০০৭-০৮ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘যে কোনো পুঁজিবাজারে ৪ থেকে ৫ শতাংশ বিদেশি বিনিয়োগ থাকা ভালো। ২০০৯-১০ সালে বাজারে বড় ধসের পর ৪/৫ বছর বিদেশি বিনিয়োগ ছিল না বললেই চলে। ২০১৫ সাল থেকে কিছুটা আসতে শুরু করে। মাঝে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে ভালোই বিনিয়োগ করেছিল তারা।

২০২০ সালে বাজারে যে একটা ধস হয়েছে সে আতঙ্কে অনেকে চলে গেছে। আর আসেনি। এখন সামান্য যে বিদেশি বিনিয়োগ আছে, সেটা আগে বিনিয়োগ করা।’ বাজার সুস্থ-স্বাভাবিক থাকলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা অব্শ্যই আসবে বলে আশার কথা শোনান মির্জ্জা আজিজ। ২০১০ সালের মহাধসের এক দশক পর গত বছর করোনা পরিস্থিতির কঠিন সময়ে শিবলী রুবাইয়াতকে প্রধান করে বিএসইসি পুনর্গঠন করা হয়।

২০২০ সালের ১৭ মে গঠন করা নতুন কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন সাবেক শিল্পসচিব আব্দুল হালিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দীন আহমেদ ও একই বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন্স সিস্টেমস বিভাগের অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান। তারা যখন দায়িত্ব গ্রহণ করেন, তখন করোনাভাইরাসের কারণে সাধারণ পুঁজিবাজারও ছিল বন্ধ। ছুটি শেষে ৫ জুলাই থেকে চালু হয় পুঁজিবাজার। এরপর এক বছরে পুঁজিবাজারে ভেঙেছে একের পর এক রেকর্ড।

এই এক বছরে পুঁজিবাজারে সূচক বেড়েছে ২ হাজার ১৬৯ পয়েন্ট। আর লেনদেন বেড়েছে বহুগুণ। সাধারণ ছুটি শেষে ২০২০ সালের ৫ জুন প্রথম কর্মদিবসে লেনদেন ছিল ৭৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা। অন্যদিকে অর্থবছরের শেষ দিন গত ৩০ জুন লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৪০৭ কোটি টাকা।
তবে কেবল দুই দিনের লেনদেনের পার্থক্যই পুরো কথাটা বলে না।

মাঝে লেনদেন এক দিন ছাড়িয়েছে ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি টাকার আশপাশে লেনদেন হয়েছে একাধিক দিন। টানা দুই হাজার কোটি টাকার ঘরে লেনদেন হয়েছে নিয়মিতই। শাটডাউনকে ঘিরে গত সপ্তাহে সেটি দুই হাজার কোটি টাকার নিচে নেমেছে।

তবে এই এক বছরেও অস্থিরতা যে হয়নি, তা নয়। গত জানুয়ারিতে মার্জিন ঋণের সর্বোচ্চ সুদহার ১২ শতাংশ নির্ধারণকে কেন্দ্র করে টানা কয়েক মাস পুঁজিবাজার ছিল টালমাটাল। এর মধ্যে আবার গত ৫ এপ্রিল লকডাউন দেয়াকে কেন্দ্র করে তৈরি হয় আতঙ্ক। ধস নামে পুঁজিবাজারে।

তবে আগের কমিশনের মতো বর্তমান কমিশন করোনায় পুঁজিবাজার বন্ধ রাখার পক্ষে না। আর লকডাউনে ব্যাংক খোলা রাখার পর পুঁজিবাজারেও লেনদেন চালু রাখার ঘোষণা দেয় তারা। ঘুরে দাঁড়ায় বাজার। বিধিনিষেধের দুই মাসে পুঁজিবাজার ওঠে নতুন উচ্চতায়। সূচক বাড়ে এক হাজার পয়েন্টের বেশি, যেটি এখন ৪০ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থানে।

পুঁজিবাজারের অবস্থান এখন ২০১৭ সালের ৮ অক্টোবরের পর সর্বোচ্চ। সেদিন বাজারের অবস্থান ছিল ৬ হাজার ২০৫ পয়েন্ট। বাজারের এই উত্তাল পরিস্থিতিতে শনিবার বিনিয়োগকারীদের প্রতি নতুন বার্তা দিয়েছেন বিএসইসির চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। ‘বাজার আরও ভালো হবে’- এই আশ্বাস দিয়ে তিনি লোকসানে শেয়ার বিক্রি না করার পরামর্শ দিয়েছেন।

বলেছেন, নানা সময় আতঙ্কিত হয়ে শেয়ার বিক্রি করার কারণেই বাজারে পতন দেখা দেয়। ‘সম্মানিত বিনিয়োগকারীদের এখানে বুঝতে হবে যে আমি যখন পেনিকড হয়ে শেয়ার বিক্রি করি তার ক্রেতাটা কে? ক্রেতা যেহেতু আছে, তাহলে আমি কেন বিক্রি করছি লস করে? আমাকে তো লস করে এক্ষুনি বিক্রি করার দরকার নেই। এখানে কিন্তু ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। ইনশাল্লাহ, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মার্কেট অনেক সুস্থ হবে ও অনেক ভালো হবে।’

পুঁজিবাজারে হঠাৎ সুবাতাস বস্ত্র খাতে, বীমা খাতে সংশোধন: পুঁজিবাজারে হঠাৎ বস্ত্র খাতের শেয়ারে সুবাতাস বইতে শুরু করছে। তবে বীমা খাতে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস কিছুটা কারেশন মুডে ছিল। বীমা খাতে কারেকশন হলেও বস্ত্র খাতের পাশাপাশি ব্যাংক খাতের শেয়ারে চাঙ্গা বিরাজ করছে। এদিকে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পনিগুলোর অর্থবছর শেষ হয়েছে।

এর মধ্যে বেশির ভাগ কোম্পানি তাদের তৃতীয় প্রান্তিক প্রকাশ করেছে। আগামী এক থেকে দুই মাসের মধ্যে আসতে থাকবে এ খাতের কোম্পানিগুলোর চূড়ান্ত আর্থিক প্রতিবেদন; পাশাপাশি লভ্যাংশ ঘোষণার সিদ্ধান্ত। ভাল লভ্যাংশের আশায় এ খাতে নতুন করে ঝুঁকে পড়ছেন বিনিয়োগকারীরা। এমন অবস্থায় সোমবার বস্ত্র খাতের শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহী ছিল সবচেয়ে বেশি।

পাশাপাশি ব্যাংক খাতের শেয়ারের দরও বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। গত বছরের জুলাই থেকে এক দফা আর ৫ এপ্রিল লকডাউনের শুরু থেকে আরেক দফা উত্থানে সাধারণ বিমা খাতের শেয়ারগুলো দৌড়াতে থাকে পাগলা ঘোড়ার মতো। যাচাই-বাছাই ছাড়াই দাম বাড়তে থাকে। গত এক বছরে বিমা খাতের কোনো কোম্পানির শেয়ারের দাম ৬ গুণ, কোনোটির ৭ গুণ, কোনোটির আবার ১০ গুণ হয়েছে। অস্বাভাবিক উত্থান নিয়ে বারবার আলোচনা হচ্ছিল।
অন্যদিকে বাজেটে অর্থমন্ত্রী করপোরেট কর আড়াই শতাংশ কমানোর প্রস্তাব করার পর থেকে বস্ত্র খাতে আগ্রহ দেখা গেছে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আবারও গত বৃহস্পতিবার থেকে সারা দেশে শুরু হয়েছে কঠোর লকডাউন, যা পরিচিতি পেয়েছে শাটডাউন হিসেবে। এই শাটডাউনের মধ্যে সোমবার প্রথম লেনদেন শুরু হয় পুঁজিবাজারে।

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি গত বুধবার দেয়া এক নির্দেশনায় জানিয়েছে, গণপরিবহন বন্ধ থাকায় বিনিয়োগকারীদের মোবাইলের মাধ্যমে লেনদেন করতে হবে। বিশেষ প্রয়োজনে ব্রোকারেজ হাউসে যেতে হলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। সোমবার লেনদেনে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে দিনের কার্যক্রম। বেড়েছে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন। ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শাটডাউন নিয়ে যে আতঙ্ক ছিল, সেটি নেই বললেই চলে। যদিও শাটডাউনের আগে সূচকের বড় পতন হয়েছিল।

চলমান শাটডাউনে লেনদেন সময়সীমাও কমিয়ে আনা হয়েছে। ব্যাংকের কার্যক্রমের সঙ্গে সমন্বয় রেখে নির্ধারণ করা হয়েছে পুঁজিবাজারের লেনদেন। এর আগের গত ৫ এপ্রিল লকডাউনে ব্যাংকের সময়ের সঙ্গে সমন্বয় করে কমিয়ে আনা হয় পুঁজিবাজারের লেনদেন। এরপর দ্বিতীয় দফায় গত বৃহস্পতিবার থেকে শাটডাউনের পর সোমবার লেনদেনেও লেনদেন সময়সীমা কমিয়ে আনা হয়েছে।

সোমবার থেকে বুধবার পুঁজিবাজারে লেনদেন হবে দুপুর একটা পর্যন্ত। আগের স্বাভাবিক লেনদেন হতো বেলা আড়াইটা পর্যন্ত। বিপরীত অবস্থায় ব্যাংকের লেনদেন চলবে দেড়টা পর্যন্ত। সোমবার বস্ত্র খাতের মোট লেনদেন হয়েছে ৩৫৯ কোটি টাকা। এ খাতে তালিকাভুক্ত ৫৮টি কোম্পানির মধ্যে মাত্র একটি কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে। বাকি ৫৭টি কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে।

তালিকাভুক্ত ব্যাংক খাতের কোম্পানিগুলো ইতোমধ্যে তাদের শেয়ারধারীদেরর সর্বশেষ অর্থবছরের লভ্যাংশ ঘোষণা শেষ করেছে। ফলে লভ্যাংশ প্রাপ্তির বিপরীতে শেয়ার লেনদেন মুনাফার প্রত্যাশায় সোমবারও এ খাতের শেয়ার দর বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৩১টি ব্যাংকের মধ্যে আটটি ব্যাংকের শেয়ারদর কমেছে। পাঁচটির দর পাল্টায়নি। বাকি ১৮টি ব্যাংকের শেয়ারদর বেড়েছে।

সোমবার এ খাতের মোট লেনদেন হয়েছে ১৫০ কোটি ৯০ লাখ টাকা। লেনদেনে সবচেয়ে বেশি দর হারিয়েছে তালিকাভুক্ত বিমা খাতের শেয়ার। ৫১টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে মাত্র ১০টির। দর পাল্টায়নি দুটির। বাকি ৩৯টি কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে। শতকরা হিসেবে দর বৃদ্ধির শীর্ষ পর্যায়ে ছিল বস্ত্র খাতের জাহিন স্পিনিং, তাল্লু স্পিনিং লিমিটেডের। এদিন কোম্পানি দুটির শেয়ার দর বেড়েছে দিনের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ।

১৯ কোম্পানির শেয়ার যেন সোনার হরিণ: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে তালিকাভুক্ত ১৯ কোম্পানির শেয়ার বিক্রি করার মতো কোনো বিনিয়োগকারী নেই। লেনদেনের দুই ঘন্টার মধ্যে কোম্পানিগুলোর শেয়ার বিক্রেতা শূন্য হয়ে হল্টেড হয়ে গেছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্যজানা গেছে।

হল্টেড হওয়া কোম্পানিগুলো হলো: ইয়াকিন পলিমার, জাহিন স্পিরিং, সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, তাল্লু স্পিনিং, ফনিক্স ইন্স্যুরেন্স, এমএল ডাইং, পেপার প্রসেসিং, তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল, অলটেক্স, ম্যাকসন্স স্পিনিং, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড, আরএন স্পিনিং, আইএলএফএসএল, এপোলো ইস্পাত, অলিম্পিক এক্সেসরিজ, মিথুন নিটিং, আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং, ফার কেমিক্যাল এবং সিএনএ টেক্সটাইল।

ইয়াকিন পলিমার : বৃহস্পতিবার ইয়াকিন পলিমারের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ১৩ টাকায়। আজ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে ১৩.৩০ টাকায়। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৪.৩০ টাকায়। অর্থাৎ আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর ১.৩০ টাকা বা ১০ শতাংশ বেড়েছে।

তাল্লু স্পিনিং : তাল্লু স্পিনিংয়ের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ৭ টাকায়। আজ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে ৭.৭০ টাকায়। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৭.৭০ টাকায়। অর্থাৎ আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর ০.৭০ টাকা বা ১০ শতাংশ বেড়েছে।

জাহিন স্পিনিং : বৃহস্পতিবার জাহিন স্পিনিংয়ের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ৯ টাকায়। আজ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে ৯.৪০ টাকায়। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৯.৯০ টাকায়। অর্থাৎ আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর ০.৯০ টাকা বা ১০ শতাংশ বেড়েছে।

সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স : বৃহস্পতিবার সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ১১ টাকায়। আজ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে ১২.১০ টাকায়। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১২.১০ টাকায়। অর্থাৎ আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর ১.১০ টাকা বা ১০ শতাংশ বেড়েছে।

এমএল ডাইং : বৃহস্পতিবার এমএল ডাইংয়ের ক্লোজিং দর ছিল ২৯.১০ টাকায়। আজ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে ৩২ টাকায়। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩২ টাকায়। অর্থাৎ আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর ২.৯০ টাকা বা ৯.৯৬ শতাংশ বেড়েছে।

ফনিক্স ইন্স্যুরেন্স : বৃহস্পতিবার ফনিক্স ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ৫৯.২০ টাকায়। আজ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে ৬৩.৩০ টাকায়। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৬৫.২০ টাকায়। অর্থাৎ আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর ৫.৯০ টাকা বা ৯.৯৬ শতাংশ বেড়েছে।

পেপার প্রসেসিং : বৃহস্পতিবার পেপার প্রসেসিংয়ের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ৫৯.৬০ টাকায়। আজ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে ৬৫.৫০ টাকায়। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৬৫.৫০ টাকায়। অর্থাৎ আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর ৫.৯০ টাকা বা ৯.৮৯ শতাংশ বেড়েছে।

তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল : বৃহস্পতিবার তমিজউদ্দিন টেক্সটাইলের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ৪৪.৫০ টাকায়। আজ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে ৪৮.৯০ টাকায়। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৪৮.৯০ টাকায়। অর্থাৎ আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর ৪.৪০ টাকা বা ৯.৮৮ শতাংশ বেড়েছে।

অলটেক্স: বৃহস্পতিবার অলটেক্সের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ১২.৩০ টাকায়। আজ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে ১২.৮০ টাকায়। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৩.৫০ টাকায়। অর্থাৎ আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর ১.২০ টাকা বা ৯.৭৫ শতাংশ বেড়েছে।

ম্যাকসন্স স্পিনিং: বৃহস্পতিবার ম্যাকসন্স স্পিনিংয়ের ক্লোজিং দর ছিল ১৯.৬০ টাকায়। আজ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে ২০.৫০ টাকায়। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২১.৫০ টাকায়। অর্থাৎ আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর ১.৯০ টাকা বা ৯.৬৯ শতাংশ বেড়েছে।

ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড : বৃহস্পতিবার ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ১২.৪০ টাকায়। আজ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে ১২.৬০ টাকায়। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৩.৬০ টাকায়। অর্থাৎ আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর ১.২০ টাকা বা ৯.৬৭ শতাংশ বেড়েছে।

আইএলএফএসএল : বৃহস্পতিবার আইএলএফএসএলের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ৬.৩০ টাকায়। আজ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে ৬.৬০ টাকায়। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৬.৯০ টাকায়। অর্থাৎ আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর ০.৬০ টাকা বা ৯.৫২শতাংশ বেড়েছে।

আরএন স্পিনিং : বৃহস্পতিবার আরএন স্পিনিংয়ের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ৫.২০ টাকায়। আজ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে ৫.৪০ টাকায়। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৫.৭০ টাকায়। অর্থাৎ আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর ০.৫০ টাকা বা ৯.৬১ শতাংশ বেড়েছে।

এপোলো ইস্পাত : বৃহস্পতিবার এপোলো ইস্পাতের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ৮.৪০ টাকায়। আজ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে ৮.৬০ টাকায়। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৯.২০ টাকায়। অর্থাৎ আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর ০.৮০ টাকা বা ৯.৫২ শতাংশ বেড়েছে।

অলিম্পিক এক্সেসরিজ : বৃহস্পতিবার অলিম্পিক এক্সেসরিজের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ১৪.৯০ টাকায়। আজ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে ১৬.৩০ টাকায়। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৬.৩০ টাকায়। অর্থাৎ আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর ১.৪০ টাকা বা ৯.৩৯ শতাংশ বেড়েছে।

মিথুন নিটিং : বৃহস্পতিবার মিথুন নিটিংয়ের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ১২.৯০ টাকায়। আজ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে ১৩.৫০ টাকায়। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৪.১০ টাকায়। অর্থাৎ আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর ১.২০ টাকা বা ৯.৩০ শতাংশ বেড়েছে।

আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং : বৃহস্পতিবার আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের ক্লোজিং দর ছিল ১১.৯০ টাকায়। আজ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে ১২.২০ টাকায়। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৩ টাকায়। অর্থাৎ আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর ১.১০ টাকা বা ৯.২৪ শতাংশ বেড়েছে।

সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইল : বৃহস্পতিবার সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ৪.৪০ টাকায়। আজ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে ৪.৪০ টাকায়। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৪.৮০ টাকায়। অর্থাৎ আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর ০.৪০ টাকা বা ৯.০৯ শতাংশ বেড়েছে।

ফার কেমিক্যাল : বৃহস্পতিবার ফার কেমিক্যালের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ১১.৯০ টাকায়। আজ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে ১২.৬০ টাকায়। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৩ টাকায়। অর্থাৎ আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর ১.১০ টাকা বা ৯.২৪ শতাংশ বেড়েছে।

৩ মাসের ব্যবধানে লোকসানী খান ব্রাদার্সের শেয়ারের দর বাড়ছে ১২০ শতাংশ: পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত বিবিধ খাতের কোম্পানি খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের শেয়ার দর বাড়ছে হু হু করে। কিন্তু কোম্পানিটির ক্রমাগতভাবে বেড়ে চলেছে লোকসানের পরিমান। শেয়ার দর বৃদ্ধির কোন সংবেধনশীল তথ্যও নেই কোম্পানিটির কাছে।

ক্রমাগত এমন লোকসান বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানিটির শেয়ারের এমন অস্বাভাবিক শেয়ার দর বৃদ্ধি অবাক করে দিচ্ছে বিনিয়োগকারীদের। গত তিন মাসে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ১২০ শতাংশ বা ৮.৪০ টাকা। ডিএসই সূত্রে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, তিন মাস আগে কোম্পানিটির শেয়ার দর ছিলো ৭ টাকা। আর তিন মাস পর কোম্পানিটির শেয়ার দর ৮.৪০ টাকা বেড়ে অবস্থান করছে ১৫.৪০ টাকা। সোমবার কোম্পানিটির শেয়ার দর সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। কোম্পানিটির এমন দর বৃদ্ধির কারণ জানতে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কোম্পানিটির কাছে জহানতে চায়।

জবাবে কোম্পানিটি থেকে ডিএসইকে জানানো হয় কোম্পানিটির শেয়ার দর বৃদ্ধির কোন সংবেধনশীল তথ্য কোম্পানিটির কাছে নেই। তবুও কেন হু হু করে শেয়ার দর বাড়ছে, এবিষয়ে কোম্পানিটির সচিব তপন কুমার সরকারের ফোনে কয়েকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেনি। কোম্পানিটির সর্বশেষ আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, গত অর্থবছরের নয় মাসে (জুলাই’২০-মার্চ’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ১২ পয়সা। কোম্পানিটির টার্নওভার ছিলো ১৬ কোটি ৯৩ লাখ ২০ হাজার টাকা।

আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির নিট প্রফিট লোকসান হয়েছে এক কোটি ১৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা। বর্তমানে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদ মূল্য (এনএভি) দ্বাড়িয়েছে ১২.৩০ টাকা।

তবুও কোম্পানিটির শেয়ার দর এমন ভাবে বাড়ছে কেন? এ বিষয়ে আমজাদ নামে এক বিনিয়োগকারী বলেন, এমন লোকসানে থাকা কোম্পানিটির শেয়ার দর হু হু করে বৃদ্ধি পাওয়ার পিছনে কোন খারাপ উদ্দ্যেশ্য রয়েছে। কারণ কোম্পানিটি ক্রমাগত লোকসান করছে তবুও এই শেয়ারের দাম বেড়েই চলছে। কার কারণ কি? কোম্পানিটি কি বিনিয়োগকারীদের কে কিছু দিতে পারবে। পারবে না।

কারণ কোম্পানিটির আয়ই তো নাই। তবুও কেন এই শেয়ারের পিছনে বিনিয়োগকারীরা লেগে আছে। বিনিয়োগকারীরা লেগে আছে বলেই মেয়ারটির দর হুহু করে বেড়ে চলেছে। এই কোম্পানিটির মেয়ার এখনই লাগাম টেনে না ধরলে কোম্পানিতে যারা বিনিয়োগ করছে তারা অনেক বেশি ক্ষতির মুখে পড়তে পড়েতে পারে।

২০২০ সালে জুন শেষে খান ব্রাদার্সের মালিকানায় সাধারণ বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ ছিল ৪৫.৬২ শতাংশ। চলতি বছরের মে শেষে তা গিয়ে দাঁড়ায় ৪৪.৯৫ শতাংশে। খান ব্রাদার্সের স্পন্সরদের মালিকানায় রয়েছে কোম্পানিটির ৩০.১৩ শতাংশ। কোম্পানিটিতে নেই কোন বিদেশি বিনিয়োগ। তবে কোম্পানিটিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের মালিকানা বেড়েছে।

২০২০ সালে শেষে কোম্পানিটির মালিকানা ২৪.২৫ শতাংশ ছিলো প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োকারীদের কাছে। বর্তমানে তা অবস্থান করছে ২৪.৯২ শতাংশে। ১৫০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের এই কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ৯৮ কোটি টাকা।

২০১৪ সালে তালিকাভুক্ত এই কোম্পানিটির বর্তমানে শেয়ার সংখ্যা ৯ কোটি ৮০ লাখ ৭৯ হাজার ৮৭৮টি। বর্তমানে ওআইসি ব্যতীত কোম্পানিটির রিজার্ভ রয়েছে ২৫ কোটি টাকা। সবশেষ ২০২০ সালে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের জন্য দুই শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে।

এশিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ মুনাফা বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে: মহামারি করোনাভাইরাস সংক্রমণের মধ্যেও এশিয়ার পুঁজিবাজারে সর্বোচ্চ মুনাফা দিয়েছে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার। বাংলাদেশের পুঁজিবাজার এখন অনেকটা লোকচক্ষুর আড়ালে থাকা মণিমুক্তার মতো। এইচএসবিসি ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এমনটাই বলা হয়েছে। তবে ব্যাংকটি বলেছে, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের হাতে টাকার অভাব না থাকলেও বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের আকর্ষণীয় সুযোগ কম। এজন্য লাল ফিতার দৌরাত্ম্যকে দায়ি করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

ব্যাংকটি বলেছে, এই সমস্যার সমাধানে এগিয়ে এসেছে লন্ডনভিত্তিক বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ডন গ্লোবাল। গত মাসে তারা এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড (ইটিএফ) প্রতিষ্ঠা করেছে। এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম প্রভৃতি উদীয়মান দেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করার সুযোগ করে দেবে, যদিও ঐতিহাসিকভাবে এই বাজারে বিনিয়োগ করা কঠিন।

ডন গ্লোবালের এই বিনিয়োগ উইন্ডোর নাম এশিয়ান গ্রোথ কাবস ইটিএফ। এর মাধ্যমে মার্কিন বিনিয়োগকারীরা এই প্রথম বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ পাবেন। বাংলাদেশ নিয়ে এই আগ্রহের কারণ হলো, ২০২০ সালে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার এশিয়ার সমপর্যায়ের বাজারগুলোর মধ্যে সর্বাধিক মুনাফা দিয়েছে ২১ দশমিক ৩ শতাংশ।

লঙ্কাবাংলা সিকিউরিটিজের তথ্যানুসারে, এশিয়ার বিভিন্ন দেশের পুঁজিবাজার থেকে প্রাপ্ত ডিভিডেন্ডের হার নিম্নরূপ-পাকিস্তান ৫ দশমিক ২ শতাংশ, ভারত ১৫ দশমিক ৫ শতাংশ, শ্রীলঙ্কা ৯ দশমিক ৫ শতাংশ, থাইল্যান্ড মাইনাস ৭ দশমিক ১ শতাংশ, ভিয়েতনাম ১৪ দশমিক ৬ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়া ৫ দশমিক ২ শতাংশ, মালয়েশিয়া ৩ দশমিক ৫ শতাংশ, ফিলিপাইন মাইনাস ৮ দশমিক ৬ শতাংশ। কাবস ইটিএফের ১৭ শতাংশই বাংলাদেশের বাজারের জন্য নির্দিষ্ট।

বর্তমানে বাংলাদেশের আটটি কোম্পানিতে কাবস ইটিএফের বিনিয়োগ আছে। সেগুলো হলো ব্র্যাক ব্যাংক, গ্রামীণফোন, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, রেনাটা ফার্মাসিউটিক্যালস, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, সামিট পাওয়ার, ম্যারিকো ও বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস। প্রতিবেদনে বলা হয়, এই আটটি স্টকের মধ্যে গত বছর এক গ্রামীণফোন ছাড়া বাকি সব কোম্পানির শেয়ারের দাম অন্তত ২৫ শতাংশ বেড়েছে।

এর মধ্যে বেক্সিমকো ও বিকনের শেয়ারের দাম দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। অধিকাংশ বিনিয়োগকারী এশিয়ার পুঁজিবাজার বলতে ভারত ও চীনের পুঁজিবাজার বুঝে থাকেন। তবে বাংলাদেশসহ উল্লিখিত এই পাঁচটি পুঁজিবাজারও প্রতিবছর বড় হচ্ছে। এই দেশগুলোতে মধ্যবিত্ত শ্রেণি বিকশিত হচ্ছে। জনসংখ্যার বড় একটি অংশ তরুণ।

ফলে বিনিয়োগের ভবিষ্যৎ ভালো বলেই মনে করছে এইচএসবিসি। বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে বিদেশিদের বিনিয়োগ করতে কী কী করতে হয়, তা একবার দেখে নেওয়া যাক। প্রথমে তাঁদের এক কাস্টডিয়ান ব্যাংকের বিশেষ নগদ হিসাব ও বিদেশি মুদ্রার হিসাব খুলতে হয়।

দেশে রেমিট্যান্স আনতে বা দেশ থেকে রেমিট্যান্স বাইরে নিয়ে যেতেও তা করতে হয়। এরপর তো বিও হিসাব আছেই। ব্যাপারটা হলো, দেশের বাইরে থেকে একজন মানুষের পক্ষে এত কিছু করা ঠিক সহজ কম্ম নয়। এইচএসবিসি বলছে, অথচ সরকারের সাবেক অর্থমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের অনেকেই সময়-সময় বলছেন, এখন ব্যাংকনির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসার সময় হয়েছে। বাজার চাঙা করতে বিদেশি বিনিয়োগের চেয়ে ভালো কিছু হয় না।

বিভিন্ন সমীক্ষা থেকে দেখা গেছে, স্টক মার্কেটে তারল্য বাড়লে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির পথ সুগম হয়। তবে দেশ যত উন্নতির দিকে যায়, সেই বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্তির হার ধাপে ধাপে কমতে থাকে। সে জন্য বলা যায়, বাংলাদেশ এখন পুঁজিবাজার থেকে লাভবান হওয়ার মতো আদর্শ অবস্থানে।
কিন্তু দেশের পুঁজিবাজারে তারল্যের পরিমাণ সমপর্যায়ের দেশগুলোর তুলনায় অনেকটাই কম। দেশে যেখানে গড়ে দিনে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার সমমূল্যের শেয়ার হাতবদল হয়, ভিয়েতনামে তার পরিমাণ ৭১ কোটি ৪০ লাখ ডলার।

বর্ধিত লকডাউনেও একই নিয়মেই চলবে ব্যাংক-পুঁজিবাজার: করোনাভাইরাস পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় সরকার চলমান কঠোর লকডাউন আরও সাতদিন বাড়িয়েছে। নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী আগামী ১৪ জুলাই পর্যন্ত জারি থাকবে চলমান লকডাউন। আজ সোমবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাঠ প্রশাসন সমন্বয় অধিশাখা থেকে এই সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

এর আগে গত বুধবার ৭ জুলাই পর্যন্ত বিধিনিষেধ ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি হয়। বর্ধিত লকডাউনের সময়েও ব্যাংক ও পুঁজিবাজারের লেনদেন একই নিয়মেই চলবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম জানান, ০১ জুলাই থেকে ০৭ জুলাই পর্যন্ত সরকারের কঠোর লকডাউন চলমান রয়েছে। এই সময়ে আমরা সীমিত আকারে ব্যাংক খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়ে গত ৩০ জুন একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছি। এতে ৭ জুলাই পর্যন্ত ব্যাংক লেনদেনের নির্দেশনা দেয়া হয়। তবে যেহেতু সরকার আরো এক সপ্তাহ কঠোর বিধিনিষেধ অরোপ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। সেহেতু পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত ব্যাংকের লেনদেন চলমান নিয়মেই অর্থাৎ ৩০ জুনের নির্দেশনা অনুযায়ী চলবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গত ৩০ জুনের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, লকডাউন চলাকালে ব্যাংকের লেনদেন সকাল ১০টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত চলবে। এবং পরবর্তী আনুষঙ্গিক কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য বিকাল ৩টা পর্যন্ত ব্যাংক খোলা থাকবে। বিধি-নিষেধ চলাকালে গ্রাহকদের হিসাবে নগদ/চেকের মাধ্যমে অর্থ জমা ও উত্তোলন, ডিমান্ড ড্রাফট/পে-অর্ডার ইস্যু ও জমা গ্রহণ, বৈদেশিক রেমিট্যান্সের অর্থ পরিশোধ, সরকারের বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমের আওতায় প্রদত্ত ভাতা/অনুদান বিতরণ করা যাবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ০১ জুলাই (বৃহস্পতিবার) ব্যাংক হলিডে এবং ২ ও ৩ জুলাই সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় ব্যাংক বন্ধ থাকবে। বিধি-নিষেধ চলাকালে শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটিসহ প্রতি রবিবার ব্যাংক বন্ধ থাকবে। তবে, এক্ষেত্রে অনুচ্ছেদ নং ৩(ঙ) এবং ৩(চ) এর নির্দেশনা পরিপালন করতে হবে।

ছুটির দিন ও রোববার ব্যতীত সপ্তাহের অন্যান্য দিনে সীমিত পরিসরে ব্যাংক ব্যবস্থা পরিচালনার সময়ে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের অত্যাবশ্যকীয় বিভাগসমূহ যথাসম্ভব সীমিত লোকবলের মাধ্যমে খোলা রাখতে হবে। ব্যাংকের প্রিন্সিপাল/প্রধান শাখা এবং সকল বৈদেশিক বাণিজ্য শাখা (এডি শাখা) সীমিতসংখ্যক অত্যাবশ্যীয় লোকবলের মাধ্যমে খোলা রাখতে হবে।

এদিকে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মুহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, সরকার ঘোষিত প্রজ্ঞাপনে ব্যাংকিং সেবা নিশ্চিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংক খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আমরাও পুঁজিবাজার খোলা রেখেছি। লকডাউন চলাকালে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত পুঁজিবাজারে লেনদেন চলবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

তিনি বলেন, সরকার আরও এক সপ্তাহ কঠোর বিধিনিষেধ অরোপ করেছে। এই সময়ে ব্যাংক যদি তাদের লেনদেনের সময়সূচি পরিবর্তন না করে তবে আমরাও পরিবর্তন করবো না। চলমান নিয়মেই পুঁজিবাজারে লেনদেন বলবে। ব্যাংক যদি তাদের লেনদেনের সময় পরিবর্তন করে তবে তখন আমরাও নতুন সিদ্ধান্ত নেবে।

ব্লক মার্কেটে লেনদেনের চমক চার কোম্পানির: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ব্লক মার্কেটে ২৮টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব কোম্পানির ২৭ কোটি ৪৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। কোম্পানিগুলোর ৭৫ লাখ ২৬ হাজার ৬৪১টি শেয়ার ৫৫ বার হাত বদল হয়েছে। এর মাধ্যমে কোম্পানিগুলোর ২৭ কোটি ৪৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে।

সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে ব্র্যাক ব্যাংকের ৫ কোটি ৩৯ লক্ষ ৮৩ হাজার টাকার, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে বিডি ফাইন্যান্সের ৫ কোটি ২৮ লক্ষ টাকার, তৃতীয় সর্বোচ্চ ফনিক্স ফাইন্যান্সের ৩ কোটি ৫৫ লক্ষ ৯৪ হাজার টাকার এবং চতুর্থ সর্বোচ্চ কাট্টালি টেক্সটাইলের ৩ কোটি ১০ লক্ষ ৪৪ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে।

তাছাড়া বেক্সিমকোর ১ কোটি ৮৭ লক্ষ ৩৬ হাজার টাকার, জেনেক্স ইনফোসিস ১ কোটি ৮৫ লক্ষ ২৯ হাজার টাকার, ই-স্কয়ার নিটিংয়ের ৮৭ লক্ষ ৭২ হাজার টাকার, ডেল্টা লাইফের ৭৭ লক্ষ ১৫ হাজার টাকার, ম্যাকসন স্পিনিংয়ের ৭৫ লক্ষ ৬৮ হাজার টাকার, পিএইচপি ১ম মিউচুয়াল ফান্ড ৪৬ লক্ষ ৮০ হাজার টাকার, ফরচুন সুজের ৪৫ লক্ষ ৭৯ হাজার টাকার, ন্যাশনাল ফিড মিলের ৪১ লক্ষ ৯০ হাজার টাকার,

ঢাকা ডাইংয়ের ৩৯ লক্ষ ৭০ হাজার টাকার, কেয়া কসমেটিকসের ৩৫ লক্ষ ১৫ হাজার টাকার, আরডি ফুডের ৩৪ লক্ষ ৬০ হাজার টাকার, মালেক স্পিনিংয়ের ৩৪ লক্ষ ৩০ হাজার টাকার, সিলকো ফার্মার ৩৪ লক্ষ ৮ হাজার টাকার, আর্গন ডেনিমের ১৮ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকার, ইন্ডেক্স এগ্রোর ৯ লক্ষ ৯৯ হাজার টাকার, সোনালী পেপারের ৮ লক্ষ ৯৬ হাজার টাকার, পাওয়ার গ্রীডের ৭ লক্ষ ২০ হাজার টাকার,

বিকন ফার্মার ৬ লক্ষ ৮৩ হাজার টাকার, ফাস ফাইন্যান্সের ৬ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার, অ্যাপোলো ইস্পাতের ৬ লক্ষ ৯ হাজার টাকার, প্রভাতী ইন্স্যুরেন্সের ৫ লক্ষ ৭০ হাজার টাকার, জেনারেশন নেক্সটের ৫ লক্ষ ১৩ হাজার টাকার, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের ৫ লক্ষ ৬ হাজার টাকার, রূপালী লাইফের ৫ লক্ষ ১ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে।

তথ্য ছাড়াই বাড়ছে অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের দর: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের শেয়ার দও মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে। কোম্পানির শেয়ারে অস্বাভাবিক দর বাড়ার কারণ ডিএসই জানতে চাইলে কোম্পানিটি এমনটিই জানায় ডিএসইকে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, সম্প্রতি অলটেক্স ইন্ডাস্টিজের শেয়ার দর অস্বাভাবিকভাবে বাড়ার কারণে সিএসই নোটিস পাঠায়। এর জবাবে কোম্পানিটি জানায় কোনো অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই শেয়ার দর বাড়ছে।

বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, ডিএসইতে গত ২৭ জুন কোম্পানিটির শেয়ার দর ছিল ১০ টাকা ১০ পয়সা । ৩০ জুন কোম্পানিটির শেয়ার দর ১২ টাকা ৩০ পয়সায় উন্নীত হয়। কোম্পানিটির এই দর বাড়াকে অস্বাভাবিক বলে মনে করছে সিএসই কতৃপক্ষ।

জমি কেনার সিদ্ধান্ত অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজের: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালনা পর্ষদ ৪৮ ডেসিমেল জমি কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।  জানা যায়, কোম্পানিটি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার কাঁচপুরে নুডলস, স্নাকস কার্গোটেড কার্টুন এবং ব্যাটারি ফ্যাক্টরির বাউন্ডারি ওয়ালের জন্য জমি কিনবে। এই জমি কিনতে কোম্পানিটির মোট ৭ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয় হবে। এছাড়া কোম্পানিটি ৭৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা রেজিস্ট্রেশন ও অন্যান্য খরচ বাবদ ব্যয় করবে।