দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি কেয়া কসমেটিকস লিমিটেড। তবে দরবৃদ্ধিও কোন কারন নেই বলে ডিএসই’র তদন্ত নোটিশের জবাবে কোম্পানিটি এমনটিই জানিয়েছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, সম্প্রতি কেয়া কসমেটিকসের শেয়ার দর অস্বাভাবিকভাবে বাড়ার কারণে ডিএসই নোটিস পাঠায়। এর জবাবে কোম্পানিটি জানায় কোনো অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই শেয়ার দর বাড়ছে।

বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, ডিএসইতে গত ৭ জুন কোম্পানিটির শেয়ার দর ছিল ৬ টাকা ১০ পয়সা । ৫ জুলাই কোম্পানিটির শেয়ার দর ৯ টাকা ৪০ পয়সায় উন্নীত হয়। কোম্পানিটির এই দর বাড়াকে অস্বাভাবিক বলে মনে করছে ডিএসই কতৃপক্ষ।

১২০ কোটি টাকা নিয়ে ভারতে চম্পট আগারওয়ালা দম্পতি : পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সাউথইস্ট ব্যাংকে ক্রমেই স্বৈরাচারী হয়ে উঠছেন ব্যাংকটির চেয়ারম্যান আলমগীর কবির। যিনি কাউকে এবং কোন নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে ব্যক্তিস্বার্থে অযোগ্য প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দেন বলে অভিযোগ আছে। যার কারনে অযোগ্য হয়েও ব্যাংকটি থেকে আগারওয়ালা দম্পত্তি ১২০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে ভারতে পালিয়েছেন। এরা হলেন গোপাল আগরওয়ালা ও তার স্ত্রী দীপা আগরওয়ালা। উভয়ই সাউথইস্ট ব্যাংকের নওগাঁ শাখার গ্রাহক।

এ বিষয়ে ব্যাংকটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও বর্তমান পরিচালক এমএ কাশেম বলেন, ব্যাংকে এসব ঘটনা ঘটার কারণ হলো বর্তমান চেয়ারম্যান নিজের লোককে ম্যানেজার হিসাবে বসিয়েছিলেন। কোনো নিয়মকানুনের তোয়াক্কা নেই, চরম স্বেচ্ছাচারিতা চলছে। এসব ঘটনার প্রতিবাদে সম্প্রতি ব্যাংকের বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) আমরা যোগ দেইনি। ৫ জন শেয়ারহোল্ডার পরিচালক ছাড়াই এজিএম হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ব্যাংক যে ঋণ দেয়, তা উদ্যোক্তাদের টাকা নয়। এগুলো গ্রাহকের আমানতের টাকা। আর গ্রাহকের স্বার্থ রক্ষায় সবাইকে কাজ করতে হবে।

আগারওয়ালা দম্পতির জেএন ইন্ডাস্ট্রিজ এবং শুভ ফিড প্রসেসিং নামে তাদের নামসর্বস্ব দুটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তারা ২০১৯ সালের ৭ জুলাই চিরতরে ভারতে চলে গেছেন। যাদের বাংলাদেশে সব সম্পত্তির মোট মূল্য সর্বোচ্চ ৩০ কোটি টাকা হতে পারে। বর্তমানে তারা পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি সেবক রোডে বসবাস করেন।

এ দম্পতির ছেলে রাজেন আগরওয়ালা এবং মেয়ে উমা আগরওয়ালা আগে থেকে ভারতে স্থায়ীভাবে বসবাস করতেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় ব্যাংকের টাকা আদায়ে দম্পতিকে বাধ্য করা যেতে পারে। অর্থনীতিবিদরা বললেন, ব্যাংকের সুশাসনের অভাবে এ অবস্থা। আর ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বলছে, টাকা নেওয়ার সময় ওই গ্রাহকের রেকর্ড ভালো ছিল।

এ বিষয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ব্যাংক খাতে এ ধরনের ঘটনার কারণ হলো সুশাসনের অভাব। সুশাসন না থাকায় ব্যাংকের ভেতরের লোকজনের সঙ্গে যোগসাজশে এসব ঋণ দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে যে যোগ্য নয়, সেও ঋণ পায়, আবার যে পরিমাণ পাওয়ার যোগ্য তার চেয়ে বহুগুণ দেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত বিদেশে টাকা পাচার, পালিয়ে যাওয়া বা টাকা মেরে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, ব্যাংকের টাকা খেয়ে ফেললেও বর্তমানে কোনো শাস্তি নেই। উলটো পুরস্কার দেওয়া হয়।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, গোপাল আগরওয়ালা (৫৬), পিতা মৃত : জগন্নাথ আগারওয়ালা, মাতা : মৃত সীতা দেবী এবং স্ত্রী দীপা আগরওয়ালা। এই দম্পতি নওগাঁ সদরের লিটন ব্রিজ মোড়ের, মেইন রোডে ৩২০ নং বাড়ি জগন্নাথ ভবনে থাকতেন। গোপাল আগারওয়ালা বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার জগন্নাথ নগরে জেএন ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড নামে অটোরাইস মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। স্ত্রী দীপা আগারওয়ালা একই স্থানে ‘মেসার্স শুভ ফিড প্রসেসিং’ নামের একটি নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের মালিক।

২০১৬ সালের ৫ সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ১৮ মার্চ পর্যন্ত নিজ নামে সাউথ ইস্ট ব্যাংকের নওগাঁ শাখা থেকে ৩ কিস্তিতে ৭৫ কোটি টাকা এবং দীপা আগারওয়ালা ২ কিস্তিতে ২৫ কোটি টাকা ঋণ নেয়। গোপালের নিজ নামে নেওয়া ৭৫ কোটি টাকার মধ্যে ওডি (ওভার ড্রাফট) ঋণ ৫০ কোটি, মেয়াদি ঋণ ১০ কোটি এবং টাইম লোন ১৫ কোটি টাকা। আবার স্ত্রীর নামে নেওয়া ২৫ কোটি টাকার মধ্যে ওডি ২০ কোটি এবং টাইম লোন ৫ কোটি টাকা। ঋণ নেওয়ার সময় বগুড়ায় ৪৩৪ শতক ও দিনাজপুরে ৪০১ দশমিক ৫০ শতক জমি বন্ধক দিয়েছেন। বর্তমানে সুদসহ তা ১২০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।

উল্লেখ্য, এর আগেও সাউথইস্ট ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের কিছু সদস্যের বিরুদ্ধে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শক টিম। পরিদর্শন টিমের পরিচালিত এক পরিবেদনে এমন অসন্তোষের কথা উঠে এসেছে। ব্যাংকের বিরুদ্ধে পারটেক্স গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া ঋণ সংক্রান্ত অনিয়মের বিষয়টিও উঠে আসে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সাউথইস্ট ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর এক চিঠি অনুযায়ী পারটেক্স গ্রুপভুক্ত পারটেক্স পেপার মিলস লিমিটেডের ১৭টি ফোর্সড লোনকে একটি টার্ম লোন-এ রূপান্তর করা হয় এবং তা পুনঃতফসিলি করা হয়। যা আইন পরিপন্থী।

সর্বশেষ পরিদর্শন টিমের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ব্যাংকের পরিচালক পর্ষদের সভায় কতিপয় পরিচালকের উপস্থিতির হার সন্তোষজনক নয় এবং ব্যাংকটিতে অনুষ্ঠিত ১০টি সভার মধ্যে মাত্র পাঁচটিতে উপস্থিত ছিলেন পরিচালক মো. আকিকুর রহমান। আকিকুর রহমান ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি থেকে একই বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে অনুষ্ঠিত ২৯টি সভার মধ্যে মাত্র একটিতে উপস্থিত ছিলেন।

ব্যাংকটির পরিচালক এমএ কাশেম বলেন, শুধু নওগাঁ নয়, আরও কয়েকটি ব্রাঞ্চে এরকম ঘটনা রয়েছে। এর মধ্যে পাবনা এবং চট্টগ্রাম অন্যতম। তিনি বলেন, ঘটনা আমরাও কিছুটা জানি। এখন বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করছে।

এ বিষয়ে সাউথ ইস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম. কামাল হোসেন বলেন, ব্যাংকের ঋণ জামানত দিয়ে হয় না। এটি ব্যাংক ও গ্রাহকের সম্পর্কের ওপর নির্ভর করে। আর সম্পদের মূল্য বিবেচনায় ঋণ দেওয়া হলে ব্যাংকিং ব্যবসা চলে না। তিনি বলেন, নওগাঁর এ লোকটি তিন পুরুষ থেকে ব্যবসা করেন। এর আগে প্রাইম ব্যাংক এবং মার্কেন্টাইল ব্যাংক থেকে ঋণ দিয়েছে।

তার রেকর্ড ভালো ছিল। কিন্তু এ লোকটি হঠাৎ পালিয়ে যাবে, তা কে জানত। তিনি আরও বলেন, আমরা ভালো গ্রাহক বেছে বেছে ঋণ দিয়ে থাকি। পুরো খাতেই ভালো গ্রাহক নিয়ে টানাটানি হয়। সে ক্ষেত্রে ওই লোকের ব্যাকগ্রাউন্ড ভালো ছিল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এ দম্পতি নওগাঁর বড় কোনো ব্যবসায়ী নন। এরপর সাউথ ইস্ট ব্যাংক কর্তৃপক্ষ অযৌক্তিকভাবে স্থাবর সম্পদের চেয়ে বহুগুণ বেশি অর্থ ঋণ দিয়েছে। আর এ ঋণের টাকা ভারতে পাচার করা হয়েছে। তারা নিজেরাও এখন ভারতে। এক্ষেত্রে দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় ব্যাংকের টাকা আদায়ে দম্পতিকে বাধ্য করা যেতে পারে।

হঠাৎ প্রফিট টেকিং মুডে বিনিয়োগকারীরা: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে শেয়ার কেনার চেয়ে শেয়ার বিক্রি করছেন বেশি বিনিয়োগকারীরা। ফলে দিনের শুরুতেই সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় লেনদেন হলেও লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় সূচক পতন শুরু হয়েছে। এদিন ব্যাংক-বিমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করছেন।

সোমবারের মতই মঙ্গলবার সকাল ১০টায় লেনদেন শুরু হয়। শুরু থেকেই ব্যাংক, বিমা এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সব শেয়ারের দাম বাড়ে। আর তাতে লেনদেনের প্রথম ১০ মিনিটে সূচক বাড়ে ২২ পয়েন্ট। এরপর শুরু হয় শেয়ার বিক্রির চাপ, তাতে সূচক কমতে শুরু করে।

ফলে লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় অর্থাৎ বেলা ১১টায় দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক কমেছে ১২ পয়েন্ট। সূচকের পাশাপাশি লেনদেনেও ধীরগতি লক্ষ্য করা গেছে।

এ সময় ডিএসইতে মোট ৩৬৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ১৯৬টির, কমেছে ১৪৭টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৬টির। তাতে লেনদেন হয়েছে ৫৭৮ কোটি ৫৮লা খ ৮১ হাজার টাকা।

বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ায় তিন সূচকের মধ্যে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৪ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ২০৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। প্রধান সূচকের পাশাপাশি ডিএসইর অন্য সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ২ পয়েন্ট কমে ১৩২৪ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৩ পয়েন্ট কমে ২২২ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

তবে অপরদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৩৬ পয়েন্ট বেড়ে ১৮ হাজার ৭১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২২৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ১০৩টির, কমেছে ৭৪টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৭টির শেয়ারের দাম। সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৯ ২৩ কোটি ৯৯লাখ ৪৭ হাজার টাকা।

ব্যাংক খাতের ৭০ শতাংশ কোম্পানির মুনাফা বেড়েছে: চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৭০ শতাংশ ব্যাংকের মুনাফায় চমক দেখিয়েছে। ব্যাংকগুলো মুনাফার বিবেচনায় আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ভালো করেছে। শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে প্রাইম ব্যাংকের। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৩১টি ব্যাংকের মধ্যে ৩০টির প্রথম প্রান্তিকের আর্থিক হিসাব প্রকাশ করা হয়েছে। এখনো রূপালি ব্যাংকের পর্ষদ সভা হয়নি এবং করার জন্য তারিখও নির্ধারন করা হয়নি।

তবে ২০২১ সালের প্রথম প্রান্তিকের (জানুয়ারি-মার্চ) ব্যবসায় ৭০ শতাংশ ব্যাংকের শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) বেড়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে প্রাইম ব্যাংক। আর পতনের শীর্ষে ন্যাশনাল ব্যাংক। ব্যাংকগুলোর চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকের সমন্বিত আর্থিক হিসাব থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

মুনাফা বাড়ার বিষয়ে ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সভাপতি ও ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের (ইবিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী রেজা ইফতেখার বলেন, “ব্যাংকগুলো আগের বছরের তুলনায় খরচ অনেক কমিয়েছে। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল খরচ কমানো, সেটা আমরা পেরেছি।” আমানতের উপর সুদের হারও আমরা কমিয়ে দিয়েছি। এটার একটা বড় প্রভাব পড়েছে অনিরীক্ষিত মুনাফার হিসাবে। এর বাইরে বেতন খরচ ছাড়া অন্যান্য অপারেটিং খরচ কমিয়ে এনেছি।”

শান্তা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমরান হাসান বলেন, “করোনাভাইরাস মহামারীতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ছাড়ের কারণে ব্যাংকগুলোকে প্রভিশন রাখতে হয়নি। এটিও মুনাফা বাড়ার একটি কারণ।”

এদিকে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ৩১টি ব্যাংকের মধ্যে ৩০টির ব্যাংকের মধ্যে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২০২১ সালের প্রথম প্রান্তিকে ২১টি বা ৭০ শতাংশ ব্যাংকের ইপিএস বেড়েছে। আর ৯টি বা ৩০ শতাংশ ব্যাংকের ইপিএস কমেছে। এরমধ্যে ১টি ব্যাংকের লোকসান বেড়েছে। ২০২১ সালের প্রথম প্রান্তিকে সবচেয়ে বেশি হারে ইপিএস বেড়েছে প্রাইম ব্যাংকের। আগের বছরের তুলনায় ব্যাংকটির ইপিএস বেড়েছে ১৯১ শতাংশ। এরপরে ১০০ শতাংশ বেড়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে এবি ব্যাংক। আর ৫২ শতাংশ বেড়ে তৃতীয় স্থানে এনআরবিসি ব্যাংক।

এদিকে গত কয়েক বছর ধরে প্রতি প্রান্তিকে ডাচ-বাংলা ব্যাংক ইপিএসে শীর্ষে থাকলেও ২০২০ সালের ১ম প্রান্তিকে তার পরিবর্তন ঘটে। তবে ২০২১ সালের ১ম প্রান্তিকে সেই স্থান পূণ:রুদ্ধার করেছে ব্যাংকটি। আগের বছরের থেকে ২০ শতাংশ বেড়ে ডাচ-বাংলা ব্যাংকটির ইপিএস হয়েছে ১.৬৫ টাকা। এরপরে ১৩ শতাংশ বেড়ে যমুনা ব্যাংকের ২য় সর্বোচ্চ ১.৬০ টাকা ইপিএস হয়েছে। আর ১৯১ শতাংশ বেড়ে ৩য় সর্বোচ্চ ১.৩৪ টাকা ইপিএস হয়েছে প্রাইম ব্যাংকের। নিম্নে ইপিএস বৃদ্ধি পাওয়া ব্যাংকগুলোর আর্থিক অবস্থা তুলে ধরা হল:

প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের ২১ কোটি টাকা লোকসানের তদন্তে আইডিআরএ: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বীমা খাতের কোম্পানি প্রাইম ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের সাড়ে ২১ কোটি টাকা লোকসান গোপনের অভিযোগ তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। বীমা আইন ২০১০ এর ৪৮ ধারা অনুসারে হিসাব বিশেষজ্ঞের দ্বারা এই তদন্ত করবে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। গত ২০ জুন এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

কোম্পানিটির সাড়ে ২১ কোটি টাকা লোকসান গোপনের বিষয়টি নিরীক্ষা করে ৪৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য অডিট ফার্ম হাওলাদার ইউনুস এন্ড কো. কে নিয়োগ দিয়েছে আইডিআরএ।

এর আগে ২০১৯ সালের ১২ মে নন-লাইফ বীমা কোম্পানি প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে সাড়ে ২১ কোটি টাকার লোকসান গোপন করার সংবাদটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। একই বছরের ১৭ ডিসেম্বর বীমা কোম্পানিটিতে নিয়োজিত বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের তদন্ত দল তাদের প্রতিবেদনে প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের লোকসান গোপনের এই অভিযোগ হিসাব বিশেষজ্ঞকে সাথে নিয়ে তদন্তের সুপারিশ করে।

পরবর্তীতে ২০২০ সালের ২২ অক্টোবর প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের পরিচালনা পর্ষদের সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত শুনানীতে লোকসান গোপনের এই অভিযোগ নিরীক্ষণের জন্য কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বীমা আইন ২০১০ এর ৪৮ ধারা অনুযায়ী তদন্তকারী নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

‘দরপতন পুঁজিবাজারে আগ্রহ মিউচ্যুয়াল ফান্ডে’: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে সূজকের দরপতনের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। তবে এদিন ব্যাংক, বিমা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, প্রকৌশলের মতো দাপটে খাতগুলোকে পেছনে ফেলে দর বৃদ্ধির সামনের কাতারে ছিল মিউচ্যুয়াল ফান্ড। ইউনিট প্রতি দর খুব বেশি না বাড়লেও যেকোনো খাতের তুলনায় আগ্রহের শীর্ষে ছিল পিছিয়ে থাকা এই খাত।

তালিকাভুক্ত ৩৭টি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে পাঁচটির অর্থবছর বছরের বিভিন্ন সময়ে শেষ হলেও ৩০ জুন শেষ হয়েছে বাকি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের অর্থবছর। জুন ক্লোজিংয়ের মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোর ইউনিটি প্রতি সম্পদ মূল্য গত ৫ জুলাই প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে দেখা গেছে গত বছরের জুনের তুলনায় চলতি বছরের জুনে ফান্ডগুলোর সম্পদ মূল্য সর্বনিম্ম বেড়েছে ১৩ শতাংশ আর সর্বোচ্চ বেড়েছে ৬৫ শতাংশ পর্যন্ত।

করোনাভাইরাস পরিস্থিতে চলমান শাটডাউনের মধ্যে দ্বিতীয় দিনের লেনদেন শেষ হয়েছে মঙ্গলবার। চলমান সাত দিনের শাটডাউনের সময়সীমা বাড়িয়ে আরও সাত দিন করেছে সরকার। এই সময়ে পুঁজিবাজারের লেনদেনের সময় সীমা ব্যাংকের সঙ্গে সমন্বয় করে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত করা হয়েছে। আগামী সপ্তায়ও একইভাবে লেনদেন চলবে নাকি তা পরিবর্তন হবে তা বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনার ওপর নির্ভর করছে বলে জানিয়েছেন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র রেজাউল করিম।

মঙ্গলবার লেনদেনের শুরুতে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৬ হাজার ২১৯ পয়েন্ট থেকে বেড়ে হয় ৬ হাজার ২৪১ পয়েন্ট। সেখান থেকে ১০টাকা ৯ মিনিট পর্যন্ত খুব বেশি উত্থান পতন ছিল না সূচকে। তারপর থেকে ১০টা ২২ মিনিট পর্যন্ত সূচক টানা কমে, নেমে আসে ৬ হাজার ২০৩ পয়েন্টে। তারপর আবার উত্থানে সূচক ওঠে ৬ হাজার ২৩৪ পয়েন্টে। এভাবেই সূচকের ওঠা নামায় চলে লেনদেন। দিন শেষে আর ফেরেনি শুরুর সেই উত্থান। পতনেই শেষ হয়েছে দিনের কার্যক্রম। তবে আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক রকিবুর রহমান বলেন, মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোর সম্পদ মূল্যের বিপরীতে যে দর থাকা উচিত বর্তমান বাজার দর অনেক কম। তবে আগের তুলনায় অনেক দর বেড়েছে। অনেক ৫ টাকা ৬ টাকার ফান্ড এখন দশ টাকার কাছাকাছি বা দশ টাকার বেশি। ফলে আগ্রহ নেই এটা বলা ঠিক হবে না।

তিনি বলেন, মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোর সঙ্গে বাজারের সরাসরি সম্পৃক্ত। পুঁজিবাজারে শেয়ারের দর বাড়লে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের সম্পদ মূল্য বাড়বে। শেয়ার দর কমলে সম্পদ মূল্য কমবে। আর গত এক বছরে পুঁজিবাজারের যে একটি ভালো জায়গায় পৌছেছে তার কারণেই মিউচ্যুয়াল ফান্ডের সম্পদ মূল্য বেড়েছে। ‘আমি বলব, যাদের পুঁজিবাজার সম্পর্কে ভালো ধারণা নেই তারা যেন তাদের বিনিয়োগের অর্ধেক অন্তত মিউচ্যুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করে।’

বিশ্লেষকরা বলছেন, মিউচ্যুয়াল ফান্ডের সম্পদে মূল্যের চেয়ে ফান্ডগুলোর ইউনিট প্রতি দর কম থাকে তাহলে বিনিয়োগ উপযোগী আর ফান্ডগুলোর সম্পদ মূল্যের চেয়ে ইউনিট প্রতি দর বেশি থাকলে বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে যাচাই বাছাই করা উচিত।

বিধবার টাকাও মেরে দিয়েছে পদ্মা ইসলামী লাইফ: এক দিন রাস্তায় বের না হলে চাল কেনার টাকা থাকে না ভ্যানচালক মো. রুবেলের। তার চেয়ে খারাপ অবস্থায় দিন কাটছে বিধবা ছাহেরার। অন্যের বাড়িতে কাজ না করলে ভাত জোটে না। অভুক্ত থাকে সন্তানরা। এমন অনেক বিধবা নারী ও দিনমজুরসহ প্রায় তিন হাজার দরিদ্র মানুষের বিমা দাবির টাকা পরিশোধ করছে না পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড।

অথচ বিমা করলে দ্বিগুণ লাভ পাবেন গ্রামের অসহায় মানুষকে এমন স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন প্রাইম ইসলামী লাইফের কর্মকর্তারা। সরল বিশ্বাসে সেই স্বপ্নের বাস্তব রূপ পেতে প্রতিষ্ঠানটিতে ক্ষুদ্র সঞ্চয় ও একক বিমা করেন তিন হাজার দরিদ্র মানুষ। বিমাগুলোর মেয়াদ শেষ হয়েছে পাঁচ বছর আগে। এখন লাভ তো দূরের কথা, আসল টাকাও পাওয়া যাচ্ছে না। শুধু তা-ই নয়, কোম্পানির অফিসও হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে। নীলফামারী জেলার সৈয়দপুরে এমন ঘটনা ঘটেছে।

জানা গেছে, ২০১৬ সাল থেকে বিমা দাবির টাকা পেতে কোম্পানির পেছনে ঘুরছেন ভুক্তভোগী এসব গ্রাহক। টাকা উদ্ধারের আশায় প্রথমে তারা নীলফামারী জেলা অফিস, এরপর রংপুর বিভাগ এবং সর্বশেষ কোম্পানির প্রধান অফিসে ধরনা দেন। কাগজপত্রও জমা দেন, কিন্তু টাকা পাননি। শেষ ভরসা হিসেবে তারা এখন বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) দ্বারস্থ হয়েছেন। ভুক্তভোগী এসব গ্রাহকের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন কোম্পানিটিতে এজেন্ট হিসেবে কাজ করা ব্যক্তিরাও। কারণ, পাওনাদার গ্রাহকরা এজেন্টদের বাড়িতে প্রতিনিয়ত হানা দিচ্ছেন।

বিমা আইন অনুসারে, পলিসির মেয়াদ শেষ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে গ্রাহকের দাবি পরিশোধ করতে হবে। যদি কোনো কোম্পানি নির্ধারিত সময়ে টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হয় তাহলে বর্তমান ব্যাংকের সুদের চেয়ে বেশি হারে বিমা দাবির সুদ দিতে হয়। কিন্তু পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোনো কিছুর তোয়াক্কা করছে না।

প্রতিষ্ঠানটির সৈয়দপুর অফিসের এজেন্ট মমিনুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ২০০৫ সালের শেষের দিকে কোম্পানিটির একটি সভা হয় সৈয়দপুরে। সভায় বিমা করলে দিগুণ লাভ পাওয়া যাবে বলে লোভ দেখানো হয়। এজেন্ট হিসেবে কাজ করলে অনেক টাকা উপার্জন করা যাবে, অল্পদিনে বাড়ি-গাড়ি করা যাবে বলেও স্বপ্ন দেখানো হয়। তাদের কথায় প্রথমে ১০ বছর মেয়াদি একটি ক্ষুদ্র বিমা করি। এরপর তাদের সঙ্গে এজেন্ট হিসেবে কাজ করা শুরু করি। প্রায় ৩০০ পলিসি করিয়েছি।

তিনি অভিযোগ করেন, প্রথম সাত-আট বছর অফিসার ফরিদ আহমেদ, মুকসেদ আলী এবং ঢাকা থেকে আসা অফিসার জাকির হোসেন ভালো ব্যবহার করেন। কিন্তু যখন আমাদের বিমাগুলো ম্যাচিউরিটির কাছাকাছি আসতে শুরু করে, তখন থেকে নতুন করে বিমা আনার জন্য চাপ দিতে থাকেন। আমরা কয়েকজন এজেন্ট রাত-দিন পরিশ্রম করে বিমা করিয়েছি। কিন্তু মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ২০১৬ সাল থেকে যখন বিমা দাবি পরিশোধের জন্য বলি, তখন তারা টালবাহানা শুরু করেন।

একবার বলেন, কাগজপত্র ঢাকা অফিসে পাঠিয়েছি। আরেকবার বলেন, কোম্পানির অবস্থা ভালো না, এখন টাকা দেওয়া যাবে না। ‘২০১৭ সালে ঢাকা থেকে আসা অফিসার জাকির হোসেন আমাকে বলেন, নতুন করে পলিসি আনলে পুরাতন দাবিগুলো দিয়ে দেব। তার কথা বিশ্বাস করে ২০১৭ সালে ১০-১২ জনকে ১২ হাজার টাকার একক বিমা করিয়েছি। এ বিমার প্রিমিয়াম নেওয়ার পর আজ পর্যন্ত আমাদের কোনো বিমা দাবির টাকা পরিশোধ করা হয়নি।’

এজেন্ট মমিনুল ইসলাম আরও বলেন, ‘প্রায় ৩০০ মানুষকে বিমা করিয়েছি। এখন সবাই আমার কাছে এসে টাকা চান। তাদের কারণে বাড়ি থাকতে পারছি না।’ তিনি কোম্পানির বগুড়া এবং রংপুর অঞ্চলের প্রধান ফরিদ আহমেদ ও মুকসেদ আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, ‘ঢাকা অফিস থেকে এরই মধ্যে ১২ গ্রাহক বিমা দাবির চেক নিয়ে এসেছেন। কিন্তু ওই দুজনের কারণে আমরা টাকা পাচ্ছি না। তারা টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে কোম্পানিও কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।’

এ বিষয়ে ফরিদ আহমেদ ও মুকসেদ আলীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু তারা ফোন রিসিভ করেননি।
বিমা দাবির টাকা না পাওয়া সৈয়দপুরের বিস্কুট বেকারির কর্মচারী মজিবর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, একসঙ্গে মুনাফাসহ আসল পাব এ আশায় প্রতি মাসে ২০০ টাকা কিস্তির ক্ষুদ্র সঞ্চয় বিমা করি পদ্মা লাইফে। ২০১৭ সালে বিমার মেয়াদ শেষ হয়।

পরে টাকার জন্য রংপুর, ঢাকা, নীলফামারী তিন অফিসের স্যারদের পেছনে দৌড়াচ্ছি, কিন্তু টাকা পাচ্ছি না। তিন সন্তান আর আমরা দুজন; পাঁচজনের সংসারে আশা করেছিলাম জমানো টাকা দিয়ে কিছু একটা করব। কিন্তু তারা টাকা দিচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, আমার পরিচিত সবাই এ কোম্পানিতে বিমা করেছেন। কিন্তু মেয়াদ শেষ হওয়ার পর এখন আর টাকা পাচ্ছেন না। আমাদের মতো গরিবের টাকা মেরে খাচ্ছেন তারা।

একই এলাকার বিধবা নারী ছাহেরা বলেন, আমি মানুষের বাড়ি বাড়ি কাজ করি। সেখান থেকে কিছু টাকা জমিয়ে বিমা করি। যাতে শেষ বয়সে কিছু টাকা হাতে আসে। সন্তানদের নিয়ে চলতে পারি। কিন্তু টাকা তো পাচ্ছি না, এখন অফিসও হাওয়া হয়ে গেছে। আমার পক্ষে তো ঢাকা, রংপুর যাওয়া সম্ভব না। আপনারা আমার টাকার ব্যবস্থা করে দেন।

এ বিষয়ে পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরিফুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, আমি প্রতিষ্ঠানটিতে নতুন যোগ দিয়েছি। বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেব। পাওনা টাকা পেতে গত ১৯ মে নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ’র কাছে ভুক্তভোগী ৮১ গ্রাহকের পক্ষে মতি চন্দ্র, মজিবর রহমান, মমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ দেওয়া হয়। সেখানে আইডিআরএ চেয়ারম্যানের কাছে পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের প্রতিকার চাওয়া হয়।

চিঠিতে বলা হয়, ‘আমরা নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর উপজেলার গ্রাহক। আমরা গরিব অসহায় দিনমজুর, রিকশা ও ভ্যানচালক। ভবিষ্যৎ সঞ্চয়ের আশায় বিমা কোম্পানির চটকদার অফার ও মিষ্টি কথায় প্রলুব্ধ হয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছি। বিমার মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর গচ্ছিত টাকা আদায়ে দ্বারে দ্বারে ধরনা দিয়ে বেড়াচ্ছি। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। কিছু বিমা কোম্পানির জন্য আমাদের সবার দুর্নাম হচ্ছে। আমাদের কাছে এ ধরনের কোনো অভিযোগ আসেনি। তবে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের কাছে যেহেতু অভিযোগ এসেছে, অবশ্যই তারা যথাযথ ব্যবস্থা নেবে বলে আশা করছি

চিঠিতে বলা হয়, পদ্মা ইসলামী লাইফের নীলফামারী জেলার বিমাগ্রাহকের সংখ্যা প্রায় তিন হাজারেরও বেশি। ২০১৬ সাল থেকে অধিকাংশ বিমার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে। কিছু বিমার মেয়াদ প্রায় শেষের দিকে। এর মধ্যে পদ্মা লাইফ নীলফামারীর সব শাখার অফিস রাতারাতি বন্ধ করে পঞ্চগড় রিজিওনাল অফিসের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়। এতে নীলফামারী জেলার বিমাগ্রাহকরা ভোগান্তিতে পড়েন।

‘পাওনা টাকা আদায়ে পঞ্চগড়ে যোগাযোগ করলে তারা রংপুরে যেতে বলেন। রংপুরে গেলে প্রধান কার্যালয় ঢাকায় যোগাযোগ করতে বলেন। এভাবে সময়ক্ষেপণ করছেন তারা। টাকার শোকে অনেক বিমাগ্রাহক মারা গেছেন, অনেকে আবার চরম হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন। পদ্মা ইসলামী লাইফের প্রধান কার্যালয় পর্যন্ত ধরনা দিতে দিতে আমরা হতাশ হয়ে আপনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

আপনি ইতোমধ্যে বিমার অনেক নতুন-পুরাতন জঞ্জাল পরিষ্কার করেছেন। এ সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে বদ্ধপরিকর। অনেক বিমা কোম্পানিকে জবাবদিহিতার মুখোমুখি করেছেন। আমরা প্রতারিত প্রায় তিন হাজার বিমাগ্রাহক আশা করি,পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির কর্ণধারদের নীলফামারী জেলার মেয়াদোত্তীর্ণ গ্রাহকদের বিমার টাকা আদায়ে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবেন।’

এ বিষয়ে আইডিআরএ চেয়ারম্যান ড. মোশাররফ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে। হতদরিদ্র মানুষের বিমা দাবি যাতে দ্রুত পরিশোধ হয় সেই ব্যবস্থা নেব।’

বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক বলে মনে করেন বিমা মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইএ) প্রেসিডেন্ট শেখ কবির। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। কিছু বিমা কোম্পানির জন্য আমাদের সবার দুর্নাম হচ্ছে। আমাদের কাছে এ ধরনের কোনো অভিযোগ আসেনি। তবে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের কাছে যেহেতু অভিযোগ এসেছে, অবশ্যই তারা যথাযথ ব্যবস্থা নেবে বলে আশা করছি।’

ইন্টারন্যাশনাল লিজিং ৫ পরিচালক নিয়োগ দিলেন হাইকোর্ট: ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিসেস লিমিটেডের অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় পরিচালনা বোর্ডে মামলায় অভিযুক্তদের বাদ দিয়ে নতুন পাঁচ জনকে স্বাধীন পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

তারা হলেন: অগ্রণী ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক এবং সাউথ ইস্ট ব্যাংকের সাবেক ডিরেক্টর জেনারেল ও সিইও সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ, অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ ও দুদকের সাবেক পরিচালক শফিকুল ইসলাম, অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মিটফুল করিম, ব্যারিস্টার আশরাফ আলী এবং এনামুল হাসান। এসব পরিচালকদের নামের তালিকা বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠাতে এবং প্রত্যেক বোর্ড মিটিংয়ে যোগদানের জন্য তাদের সম্মানী হিসেবে ২৫ হাজার টাকা করে দিতে ইন্টারন্যাশনাল লিজিংকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

এ আর্থিক কোম্পানিটির চেয়ারম্যান (আদালত নিযুক্ত) এন আই খান ছাড়া বাকি পরিচালকরা মামলায় অভিযুক্ত। তাই নতুন করে এ পাঁচজন ব্যক্তিকে স্বাধীন পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন আদালত।

হাইকোর্টের বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের নেতৃত্বাধীন একক বেঞ্চের সাক্ষরিত লিখিত আদেশ থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। এর আগে গত ১৬ জুন বিচারপতির সাক্ষরের পর মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে এ আদেশ প্রকাশিত হয়েছে। আদালতে মামলায় কোম্পানিটির পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার আইনজীবী মাহফুজুর রহমান মিলন। দুদকের পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান।

দুদকের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান বলেন, আদালত কিছু ব্যক্তির নাম দিয়ে জানতে চেয়েছিলেন তাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা বা গ্রেফতারি পরোয়ানা আছে কি-না। পরে সেটা দুদকে জমা দেয়া হয়েছিল। দুদক দেখতে পায় যে, তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা আছে। কোনো উপযুক্ত আদালত থেকে জামিন না নেয়ার আগ পর্যন্ত তারা আইনের দৃষ্টিতে পলাতক। এ অবস্থায় তারা কোম্পানি চালাবে কীভাবে? এরপর আদালত কয়েকজন স্বাধীন পরিচালক নিয়োগ দেন।

প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার ওপরে লুটপাট করে বিদেশে পালিয়ে যাওয়া প্রশান্ত কুমার (পিকে) হালদার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থাকার সময়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিসেস লিমিটেডের অবসায়নে হাইকোর্টে একটি আবেদন করা হয়। হাইকোর্ট ২০২০ সালের ১৯ জানুয়ারি কয়েকটি নির্দেশনাসহ আদেশ দেন। এমনকি পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানটি অবসায়ন না এর পুনর্গঠনে নতুন করে পরিচালক নিয়োগ দিলেন হাইকোর্ট।

ঈদে ব্যাংক-পুঁজিবাজার বন্ধ ৬ দিন: আসন্ন ঈদুল আজহার ৩ দিনের ছুটির শেষ দিন বৃহস্পতিবার (২২ জুলাই)। এর পরের তিন দিন শুক্র, শনি ও রোববার ছুটি হওয়ায় ব্যাংক-পুঁজিবাজারে ঈদের ছুটি মিলবে ৬ দিন। তবে অন্যান্য ক্ষেত্রে রোববার বাদে ঈদের ছুটি হবে ৫ দিন।

মন্ত্রিসভার অনুমোদিত ২০২১ সালের সরকারি ছুটির তালিকা অনুযায়ী, এবার ২১ জুলাই ঈদুল আজহা হিসেব করে ২০, ২১ ও ২২ জুলাই ঈদুল আজহার ছুটি। ২২ জুলাই বৃহস্পতিবার। ২৩, ২৪ ও ২৫ জুলাই যথাক্রমে শুক্র, শনি ও রোববার হওয়ায় বর্তমান নিয়ম অনুযায়ি সাপ্তাহিক ছুটি।

সেক্ষেত্রে ঈদের ছুটি তিন দিন ও সাপ্তাহিক ছুটি তিন দিন মিলিয়ে ঈদের মোট ছুটি হবে ৬ দিন। তবে অন্যান্য ক্ষেত্রে রোববার বাদে ঈদের ছুটি হবে ৫ দিন। এদিকে, দেশে করোনার ছোবলে প্রতিদিনই মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। সংক্রমণের হার যেভাবে বাড়ছে, এবার ঈদুল আজহার সময় সর্বাত্মক লকডাউন থাকছে কি না- তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।

যদি চলমান লকডাউন অব্যাহত থাকে, তাহলে সাপ্তাহিক ছুটি শুক্র ও শনিবারে সঙ্গে রোববারও ছুটি যোগ হবে। আর যদি লকডাউন অব্যাহত না থাকে, তাহলে সাপ্তাহিক ছুটি শুক্র ও শনিবারে সঙ্গে রোববার ছুটি নাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে ঈদের ছুটি তিন দিনের সঙ্গে সাপ্তাহিক ছুটি দুই দিন (শুক্র ও শনি) যোগ হয়ে ৫ দিন ছুটি হবে। সে অনুযায়ি, ব্যাংক ও পুঁজিবাজারে ঈদের ছুটি হবে ৫ দিন।

মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় দুই উৎসবের মধ্যে একটি হচ্ছে পবিত্র ঈদুল আজহা। চাঁদ দেখার ওপর নির্ভরশীল এ ঈদ। আরবি বর্ষপঞ্জিতে ঈদুল আজহা জিলহজ মাসের ১০ তারিখে পড়ে। চলতি জিলকদ মাস ২৯ দিনে হলে ঈদুল আজহা ২০ জুলাই। আর জিলকদ মাস ৩০ দিনে হলে ঈদ হবে ২১ জুলাই চলতি ১৪৪২ হিজরি সন অনুযায়ী, যদি চলতি জিলকদ মাস ২৯ দিনে সম্পন্ন হয় তাহলে এবারের ঈদুল আজহা অনুষ্ঠিত হবে ২০ জুলাই। আর ৩০ দিনে সম্পন্ন হলে ঈদ একদিন পিছিয়ে হবে ২১ জুলাই।

আগামী ১০ জুলাই (২৯ জিলকদ) সন্ধ্যায় পবিত্র হজের মাস জিলহজ গণনা শুরু ও পবিত্র ঈদুল আজহার তারিখ নির্ধারণ করতে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে বৈঠক বসবে। এদিন যদি বাংলাদেশের আকাশে জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা যায় তবে ১১ জুলাই পবিত্র জিলহজ মাস গণনা শুরু হবে। ২০ জুলাই পালিত হবে পবিত্র ঈদুল আজহা। যদি ২৯ জুলাই সন্ধ্যায় পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা না যায় তবে ১২ জুলাই পবিত্র জিলহজ মাস শুরু হবে এবং ২১ জুলাই যথাযোগ্য মর্যাদায় দেশব্যাপী পবিত্র ঈদুল আজহা পালিত হবে।

মন্ত্রিসভার অনুমোদিত ২০২১ সালের সরকারি ছুটির তালিকা অনুযায়ী, এবার ২১ জুলাই ঈদুল আজহা হিসেব করে ২০, ২১ ও ২২ জুলাই ঈদুল আজহার ছুটি। ২২ জুলাই বৃহস্পতিবার। ২৩ ও ২৪ জুলাই যথাক্রমে শুক্র ও শনিবার হওয়ায় সাপ্তাহিক ছুটি। ঈদ আর সাপ্তাহিক মিলিয়ে তাই মোট ৫ দিনের ছুটি।

নিয়মানুযায়ী, ঈদের আগের দিন, ঈদের দিন ও পরের দিন সবমিলিয়ে মোট ৩ দিন ঈদের ছুটি থাকে। তবে সর্বশেষ পবিত্র ঈদুল ফিতরে সে নিয়ম অনুসরণ করা হয়নি। করোনা সংক্রমণের কারণে মানুষের ঈদযাত্রা ঠেকাতে ঈদের দিন থেকে ৩ দিনের ছুটি ঘোষণা করা হয়।
এবারের ঈদে কী সিদ্ধান্ত আসছে, তা নিয়েই প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ বিষয়ে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক  বলেন, ঈদের ছুটি গতবারের মতো ঈদের দিন থেকে নাকি আগের দিন থেকে, তা এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি।

তিনি আরও বলেন, সংক্রমণ পরিস্থিতি যেহারে বাড়ছে, ঈদের আগে সন্তোষজনকহারে না কমলে বিধিনিষেধ থাকবে। কিছু শর্ত হয়তো শিথিল করা হতে পারে। সেক্ষেত্রে ঈদের ছুটি কম- বেশি হতে পারে।

আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের বোর্ড সভা ১৩ জুলাই: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক খাতের কোম্পানি আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের বোর্ড সভা আগামী ১৩ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, ওইদিন কোম্পানিটির বোর্ড সভা দুপুর ২ টা ৩৫ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে। সভায় ৩০ জুন, ২০২১ পর্যন্ত কোম্পানির দ্বিতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে।

ব্লক মার্কেটে লেনদেনের শীর্ষে ৪ কোম্পানি: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ব্লক মার্কেটে ৪৪টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব কোম্পানির ৯৬ কোটি ২৯ লাখ ৬২ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
কোম্পানিগুলোর ১ কোটি ২১ লাখ ৪১ হাজার ১৭০টি শেয়ার ৬৩ বার হাত বদল হয়েছে।

এর মাধ্যমে কোম্পানিগুলোর ৯৬ কোটি ২৯ লাখ ৬২ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৪ কোম্পানির বিশাল লেনদেন হয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি শেয়ার লেনদেন হয়েছে রেনাটার লিমিটেডের। কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৫২ কোটি ৬৭ লক্ষ ৬০ হাজার টাকার।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে প্রাইম ব্যাংকের ১০ কোটি ৩৮ লক্ষ টাকার টাকার, তৃতীয় সর্বোচ্চ লিন্ডি বিডির ৫ কোটি ৭০ লক্ষ ২৯ হাজার টাকার এবং চতুর্থ সর্বোচ্চ ফরচুন সুজের ৪ কোটি ৮৪ লক্ষ ১০ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। তাছাড়া, ঢাকা ডাইংয়ের ৩ কোটি ৬২ লক্ষ ২ হাজার টাকার, বেক্সিমকোর ৩ কোটি ৫৮ লক্ষ টাকার, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর ১ কোটি ৯২ লক্ষ ৬৪ হাজার টাকার,

জিবিবি পাওয়ারের ১ কোটি ৬১ লক্ষ টাকার, এনআরবিসি ব্যাংকের ১ কোটি ৩০ লক্ষ ৭৬ হাজার টাকার, স্কয়ার ফার্মার ১ কোটি ৯ লক্ষ টাকার, আমান কটনের ৯৪ লক্ষ টাকার, সিলকো ফার্মার ৮৭ লক্ষ ৩৬ হাজার টাকার, এবি ব্যাংকের ৭৫ লক্ষ ৮৪ হাজার টাকার, মালেক স্পিনিংয়ের ৬৮ লক্ষ ৬০ হাজার টাকার, গ্রীন ডেল্টার ৬৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার, রিপাবলিকের ৪৮ লক্ষ ৫৬ হাজার টাকার,

সিঙ্গার বিডির ৪৪ লক্ষ ১২ হাজার টাকার, ডেল্টা লাইফের ৪৩ লক্ষ ৬৬ হাজার টাকার, ক্রিস্টাল ইন্সুরেন্সের ৩৯ লক্ষ ৫৩ হাজার টাকার, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের ৩৬ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকার, ম্যাকসন স্পিনিংয়ের ৩৬ লক্ষ ৩৪ হাজার টাকার, স্ট্যান্ডার্ড ইন্সুরেন্সের ৩৩ লক্ষ ৯ হাজার টাকার, সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্সের ৩১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকার, অ্যাডভেন্টের ২৭ লক্ষ ৮৩ হাজার টাকার, সফকো স্পিনিংয়ের ২৫ লক্ষ ৩০ হাজার টাকার, সালভো কেমিক্যালের ২৪ লক্ষ ৭ হাজার টাকার, ফনিক্স ফাইন্যান্স ১ম মিউচুয়াল ফান্ডের ১৭ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকার,

ন্যাশনাল ব্যাংকের ১৬ লক্ষ টাকার, ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্সের ১৫ লক্ষ ৬৮ হাজার টাকার, কেয়া কসমেটিকের ১৫ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকার, হামিদ ফেব্রিক্সে ১৫ লক্ষ ৪০ হাজার টাকার, এম পেট্রোলিয়ামের ৯ লক্ষ ৪০ হাজার টাকার, সোনারগাঁও টেক্সটাইলের ৯ লক্ষ ১৭ হাজার টাকার, ইস্টার্ন হাউজিংয়ের ৮ লক্ষ ৬৩ হাজার টাকার, আইএফআইসি ব্যাংকের ৮ লক্ষ ৫৩ হাজার টাকার, ইউনিয়ন ক্যাপিটালের ৮ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার,

প্রগ্রেসিভ লাইফের ৭ লক্ষ ৬৪ হাজার টাকার, পূরবী জেনারেলের ৭ লক্ষ ৩৭ হাজার টাকার, অগ্রাণী ইন্স্যুরেন্সের ৬ লক্ষ ৭২ হাজার টাকার, ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের ৬ লক্ষ ৬০ হাজার টাকার, আমান ফিডের ৬ লক্ষ ১৬ হাজার টাকার, এসকে ট্রিমসের ৬ লক্ষ ১৫ হাজার টাকার, এনার্জিপ্যাকের ৫ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার, গ্রামীণ-২ এর ৫ লক্ষ ৪০ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে।

ডিএসই ১১ কোম্পানির শেয়ার বিক্রেতা সংকটে: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে সূচকের উত্থান-পতনে লেনদেন চলছে। এমন পরিস্থিতিতে ১১টি কোম্পানির শেয়ার দর বেড়ে যাওয়ায় পর বিক্রেতারা সেগুলো বিক্রি করতে আগ্রহ হারিয়েছে। শেষ পর্যন্ত লেনদেন চলাকালীন সময়ে এসব কোম্পানির শেয়ার বিক্রেতা সংকটেই পড়েছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। যেসব কোম্পানির শেয়ার দর বেড়ে বিক্রেতা সংকটে পড়েছে সেগুলো হচ্ছে, ফারইস্ট ফাইন্যান্স, পেপার প্রসেসিং, সোনালী লাইফ, এফএএস ফাইন্যান্স, তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল, এপোলো ইস্পাত, প্রিমিয়ার লিজিং, তুংহাই নিটিং, আইসিবি ইসলামকি ব্যাংক, বিআইএফসি এবং তাল্লু স্পিনিং লিমিটেড।

জানা গেছে, সোমবার ফারইস্ট ফাইন্যান্সের শেয়ার দর ছিল ৫ টাকা। আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়ে সর্বশেষ ৫.৫০ টাকায় লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিটির শেয়ার দর ০.৫০ টাকা বা ১০ শতাংশ বেড়েছে।

পেপার প্রসেসিং: গতকাল কোম্পানিটির শেয়ার দর ছিল ৬৫.৫০ টাকা। আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়ে সর্বশেষ ৭২ টাকায় বেচাকেনা হয়েছে। কোম্পানিটির শেয়ার দর ৬.৫০ টাকা বা ৯.৯২ শতাংশ বেড়েছে।

সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স: গতকাল কোম্পানিটির শেয়ার দর ছিল ১২.১০ টাকা। আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়ে সর্বশেষ ১৩.৩০ টাকায় লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিটির শেয়ার দর ১.২০ টাকা বা ৯.৯১ শতাংশ বেড়েছে।

এফএএস ফাইন্যান্স: গতকাল কোম্পানিটির শেয়ার দর ছিল ৭.১০ টাকা। আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়ে সর্বশেষ ৭.৮০ টাকায় বেচাকেনা হয়েছে। কোম্পানিটির শেয়ার দর ০.৭০ টাকা বা ৯.৮৫ শতাংশ বেড়েছে।

তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল: গতকাল কোম্পানিটির শেয়ার দর ছিল ৪৮.৯০ টাকা। আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়ে সর্বশেষ ৫৩.৭০ টাকায় লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিটির শেয়ার দর ৪.৮০ টাকা বা ৯.৮১ শতাংশ বেড়েছে।

এপোলো ইস্পাত: গতকাল কোম্পানিটির শেয়ার দর ছিল ৯.২০ টাকা। আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়ে সর্বশেষ ১০.১০ টাকায় বেচাকেনা হয়েছে। কোম্পানিটির শেয়ার দর ০.৯০ টাকা বা ৯.৭৮ শতাংশ বেড়েছে।

প্রিমিয়ার লিজিং: গতকাল কোম্পানিটির শেয়ার দর ছিল ৯.২০ টাকা। আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়ে সর্বশেষ ১০.১০ টাকায় লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিটির শেয়ার দর ০.৯০ টাকা বা ৯.৭৮ শতাংশ বেড়েছে।

তুংহাই নিটিং: গতকাল কোম্পানিটির শেয়ার দর ছিল ৫.৩০ টাকা। আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়ে সর্বশেষ ৫.৮০ টাকায় বেচাকেনা হয়েছে। কোম্পানিটির শেয়ার দর ০.৫০ টাকা বা ৯.৪৩ শতাংশ বেড়েছে।

আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক: গতকাল কোম্পানিটির শেয়ার দর ছিল ৪.৩০ টাকা। আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়ে সর্বশেষ ৪.৭০ টাকায় লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিটির শেয়ার দর ০.৪০ টাকা বা ৯.৩০ শতাংশ বেড়েছে।

বিআইএফসি: গতকাল কোম্পানিটির শেয়ার দর ছিল ৫.৫০ টাকা। আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়ে সর্বশেষ ৬ টাকায় বেচাকেনা হয়েছে। কোম্পানিটির শেয়ার দর ০.৫০ টাকা বা ৯.০৯ শতাংশ বেড়েছে।

তাল্লু স্পিনিং: গতকাল কোম্পানিটির শেয়ার দর ছিল ৭.৭০ টাকা। আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়ে সর্বশেষ ৮.৪০ টাকায় লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিটির শেয়ার দর ০.৭০ টাকা বা ৯.০৯ শতাংশ বেড়েছে। কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর বাড়ার এক পর্যায়ে বিক্রেতা সংকটে পড়েছে।

২৫ লাখ শেয়ার কিনলেন স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্সের ৩ পরিচালক: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিমা খাতের কোম্পানি স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের তিন পরিচালক কোম্পানিটির সাড়ে ২৫ লাখ শেয়ার কিনেছেন। পরিচালকরা হলেন: ইঞ্জিনিয়ার এ কে এম মোশাররফ হোসেন, হাসনাত মোশাররফ এবং ফারিয়া রহমান। গতকাল দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েবসাইটে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

ডিএসইর তথ্য মতে, স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্সের পরিচালকদের মধ্যে এ কে এম মোশাররফ হোসেন কোম্পানিটির ৬ লাখ ৫ হাজার ৫৭৪টি শেয়ার গত ২১ জুন বাজার দর অনুসারে কেনা সম্পন্ন করেছেন। অপর দুই পরিচালকের মধ্যে হাসনাত মোশাররফ গত ১৬ এবং ১৭ জুন বাজার দর অনুসারে ১২ লাখ ৮ হাজার শেয়ার কিনেছেন। আর ফারিয়া রহমান গত ২১ জুন কোম্পানির ৭ লাখ ৫৫ হাজার শেয়ার কিনেছেন। সব মিলে এই তিন পরিচালক ২৫ লাখ ৬৮ হাজার ৫৭৪টি শেয়ার কিনেছেন বাজার দর অনুসারে।

কোম্পানির মোট শেয়ার সংখ্যা ৪ কোটি ৩২ লাখ ৯৬ হাজার ৫৯৩টি। এর মধ্যে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে রয়েছে ৫১ দশমিক ৩৬ শতাংশ শেয়ার, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ৪১ শতাংশ শেয়ার এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে ৬ দশমিক ৯০ শতাংশ শেয়ার। ২০০৮ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিটি ২০১৯ সালে শেয়াহোল্ডারদের সর্বশেষ ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল।