দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ঢাকা ডাইং অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানির আর্থিক হিসাবে আপত্তি জানিয়েছেন নিরীক্ষক। কোম্পানিটির ২০১৭-১৮, ২০১৮-১৯ ও ২০১৯-২০ অর্থবছরের আর্থিক হিসাব নিরীক্ষায় এই আপত্তি জানিয়েছেন।

নিরীক্ষক জানিয়েছেন, ঢাকা ডাইং কর্তৃপক্ষ ২০১০ সাল স্থায়ী সম্পদ পূণমূল্যায়ন করে। কিন্তু আন্তর্জাতিক হিসাব মান (আইএএস)-১৬ অনুযায়ি, স্থায়ী সম্পদের হিসাব বহির দর ও বাজার দরের মধ্যে যখন উল্লেখযোগ্য পার্থক্য বা ব্যবধান হয়, তখন পূণ:মূল্যায়ন (রিভ্যালুয়েশন) করতে হয়। কিন্তু ঢাকা ডাইংয়ে এ জাতীয় পার্থক্য হওয়া সত্ত্বেও পূণমূল্যায়ন করা হয়নি। এই কোম্পানিটিতেই স্থায়ী সম্পদের রেজিস্টার ঠিকমতো রক্ষনাবেক্ষন করা হয় না বলে জানিয়েছেন নিরীক্ষক।

উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া ঢাকা ডাইংয়ের পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ৮৭ কোটি ১৫ লাখ টাকা। এরমধ্যে শেয়ারবাজারের বিভিন্ন শ্রেণীর (উদ্যোক্তা/পরিচালক ব্যতিত) বিনিয়োগকারীদের মালিকানা ৬৯.৫৫ শতাংশ।

ব্যাংক-আর্থিক খাতে ভর করে পুঁজিবাজারে বড় উত্থান: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে পুঁজিবাজারে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখিয়েছে ব্যাংক ও আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো। এতে প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মূল্য সূচকের বড় উত্থান হয়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।

এদিন লেনদেনের শুরু থেকেই বেশিরভাগ ব্যাংকের শেয়ার দাম বাড়ার প্রবণতা দেখা যায়, যা অব্যাহত থাকে লেনদেনের শেষ পর্যন্ত। ব্যাংকের মতো বেশিরভাগ অব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা লিজিং কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার প্রবণতা লেনদেনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।

দিনের লেনদেন শেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভূক্ত ৩১টি ব্যাংকের মধ্যে ২৪টির শেয়ার দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখায়। বিপরীতে দাম কমে মাত্র একটির। আর ৫টির দাম অপরিবর্তীত থাকে এবং একটির শেয়ার লেনদেন হয়নি। অপরদিকে তালিকাভুক্ত ২৩টি অব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৮টির শেয়ারের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪টির। বাকি একটির শেয়ার লেনদেন হয়নি।

প্রায় সবকটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার ইতিবাচক প্রভাব পড়ে সার্বিক শেয়ারবাজারে। ফলে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে ২১২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১২৯টির। আর ৩২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ায় দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৫৭ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ২৬৬ পয়েন্টে উঠে এসেছে। যা ২০১৮ সালের ৭ জানুয়ারির পর সর্বোচ্চ। ২০১৮ সালের ৭ জানুয়ারি সূচকটি ছিল ৬ হাজার ২৬৮ পয়েন্টে।

প্রধান মূল্য সূচকের বড় উত্থানের পাশাপাশি বেড়েছে ডিএসইর অপর দুই সূচক। এর মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ১৪ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ২৭৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসইর শরিয়াহ্ সূচক ৭ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৫৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

সূচকের এই দিনে ডিএসইতে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণও। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৬৬৮ কোটি ৫১ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১ হাজার ৫৯৯ কোটি ২১ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ৬৯ কোটি ৩০ লাখ টাকা।

টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ১৮১ কোটি ১৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা পাওয়ার গ্রিডের ৫৭ কোটি ৭৩ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৪৭ কোটি ৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে লাফার্জহোলসিম।

এ ছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- সাউথইস্ট ব্যাংক, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, ফরচুন সুজ, অ্যাডভেন্ট ফার্মা, কেয়া কমমেটিকস এবং আমান ফিড। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্য সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১৭৯ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৫৭ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ৩১০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৬৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৬৫টির এবং ২৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

ব্লক মার্কেটে ৭ কোম্পানির লেনদেনের শীর্ষে: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ব্লক মার্কেটে ৩৯টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব কোম্পানির ১৯ কোটি ৩১ লাখ ৫৩ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

কোম্পানিগুলোর ৪০ লাখ ৫৮ হাজার ৬১৭টি শেয়ার ৭৫ বার হাত বদল হয়েছে। এর মাধ্যমে কোম্পানিগুলোর ১৯ কোটি ৩১ লাখ ৫৩ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৭ কোম্পানির বড় লেনদেন হয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি শেয়ার লেনদেন হয়েছে ঢাকা ডাইংয়ের। কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩ কোটি ১৪ লক্ষ ৫৪ হাজার টাকার।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এসিআই ফর্মুলার ২ কোটি ৪ লক্ষ ৩১ হাজার টাকার, তৃতীয় সর্বোচ্চ ফরচুন সুজের ১ কোটি ৩২ লক্ষ ৮৭ হাজার টাকার, চতুর্থ সর্বোচ্চ আইডিএলসির ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকার, পঞ্চম সর্বোচ্চ বেক্সিমকোর ১ কোটি ১৯ লক্ষ ৭৬ হাজার টাকার, ষষ্ঠ সর্বোচ্চ আনোয়ার গ্যালভানাইজিংয়ের ১ কোটি ১৮ লক্ষ ৬৩ হাজার টাকার, সপ্তম সর্বোচ্চ জেনেক্স ইনফোসিসের ১ কোটি ৪ লক্ষ ৪০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।

তাছাড়া, ফাইন ফুডসের ৮১ লক্ষ ৩৪ হাজার টাকার, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর ৬৬ লক্ষ ৪৩ হাজার টাকার, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের ৬৫ লক্ষ ৩১ হাজার টাকার, মেঘনা লাইফের ৫১ লক্ষ টাকার, ইনফরমেশন টেকনোলজির ৪৮ লক্ষ ৩০ হাজার টাকার, জিবিবি পাওয়ারের ৪৭ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকার, বিকন ফার্মার ৪১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকার, আর ডি ফুডের ৪১ লক্ষ ৭ হাজার টাকার,

আমান ফিডের ৩০ লক্ষ ৩৮ হাজার টাকার, ই-জেনারেশনের ৩০ লক্ষ ৩৭ হাজার টাকার, এমারেল্ড অয়েলের ২৭ লক্ষ ২০ হাজার টাকার, ব্রাক ব্যাংকের ২৭ লক্ষ ১৫ হাজার টাকার, সোনালী পেপারের ২৫ লক্ষ ৮০ হাজার টাকার, এইচআর টেক্সটাইলের ২৫ লক্ষ ৪৮ হাজার টাকার, এনআরবিসি ব্যাংকের ২৪ লক্ষ ৬৩ হাজার টাকার, কে এন্ড কিউয়ের ২৪ লক্ষ ৩৩ হাজার টাকার, মারিকোর ২২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকার, ইস্টার্ন ব্যাংকের ১৭ লক্ষ টাকার, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের ১২ লক্ষ ৮৩ হাজার টাকার, এসইএমএল লেকচার মিউচুয়াল ফান্ডের ১২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকার,

অ্যাডভেন্ট ফার্মার ১১ লক্ষ ৭২ হাজার টাকার, লক্ষ হাজার টাকার, ফুয়াং ফুডের ১০ লক্ষ ৯৫ হাজার টাকার, বাক্সিমকো ফার্মার ৯ লক্ষ ৯২ হাজার টাকার, মীর আক্তারের ৮ লক্ষ ৬৯ হাজার টাকার, বিডি ফাইন্যান্সের ৮ লক্ষ ১৩ হাজার টাকার, লঙ্কা বাংলা ফাইন্যান্সের ৭ লক্ষ ৮৮ হাজার টাকার, ডেল্টা লাইফের ৬ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকার,

নিউ লাইনের ৬ লক্ষ ৩৪ হাজার টাকার, আমান কটনের ৬ লক্ষ ১ হাজার টাকার, নেশনাল ফিড মিলের ৫ লক্ষ ৮৭ হাজার টাকার, কেয়া কসমেটিকসের ৫ লক্ষ ৮২ হাজার টাকার, এসইএমএলআইবিবিএল শরিয়া ফান্ডের ৫ লক্ষ ৩৮ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।

ডিএসইতে ১০ কোম্পানির শেয়ারে বিক্রেতা উধাও: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ১০ কোম্পানির শেয়ার সর্বোচ্চ দরেও বিনিয়োগকারীরা কিনতে পারছেন না। কারণ সর্বোচ্চ দরে কোম্পানিগুলোর শেয়ার আজ লেনদেনের দেড় ঘন্টার মধ্যে বিক্রেতা শূন্য হয়ে পড়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। কোম্পানিগুলোর হলো : আরএনএস টেক্সটাইল, জিলবাংলা সুগার, তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল, পেপার প্রসেসিং, ফাইন ফুড, এনআরবিসি ব্যাংক, ফারইস্ট ফাইন্যান্স, ফরচুন সুজ, তুংহাই নিটিং ও সিএন্ডএ টেক্সটাইল।

আরএনএস টেক্সটাইল : সোমবার কোম্পানিটির ক্লোজিং দর ছিল ৭ টাকা। আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর হয়েছে ৭ টাকা ১০ পয়সা। দরে বেড়েছে ১০ শতাংশ।

জিলবাংলা সুগার : সোমবার কোম্পানিটির ক্লোজিং দর ছিল ১৩২ টাকা ৩০ পয়সা। আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর হয়েছে ১৪৫ টাকা ৫০ পয়সা। দরে বেড়েছে ৯.৯৭ শতাংশ।

তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল : সোমবার কোম্পানিটির ক্লোজিং দর ছিল ৯৫ টাকা ৮০ পয়সা। আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর হয়েছে ৭১ টাকা ৩০ পয়সা। দরে বেড়েছে ৯.৯৭ শতাংশ।

পেপার প্রসেসিং : সোমবার কোম্পানিটির ক্লোজিং দর ছিল ৭১ টাকা ৩০ পয়সা। আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর হয়েছে ১০৫ টাকা ৩০ পয়সা। দরে বেড়েছে ৯.৯২ শতাংশ।

ফাইন ফুড : সোমবার কোম্পানিটির ক্লোজিং দর ছিল ৪৮ টাকা ৬০ পয়সা। আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর হয়েছে ৫৩ টাকা ৪০ পয়সা। দরে বেড়েছে ৯.৮৭ শতাংশ।

এনআরবিসি ব্যাংক : সোমবার কোম্পানিটির ক্লোজিং দর ছিল ২৬ টাকা ৯০ পয়সা। আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর হয়েছে ২৯ টাকা ৫০ পয়সা। দরে বেড়েছে ৯.৬৬ শতাংশ।

ফারইস্ট ফাইন্যান্স : সোমবার কোম্পানিটির ক্লোজিং দর ছিল ৬ টাকা ৩০ পয়সা। আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর হয়েছে ৬ টাকা ৯০ পয়সা। দরে বেড়েছে ৯.৫২ শতাংশ।

ফরচুন সুজ : সোমবার কোম্পানিটির ক্লোজিং দর ছিল ৪৫ টাকা ৯০ পয়সা। আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর হয়েছে ৫০ টাকা ১০ পয়সা। দরে বেড়েছে ৯.১৫ শতাংশ।

তুংহাই নিটিং : সোমবার কোম্পানিটির ক্লোজিং দর ছিল ৬ টাকা ৬০ পয়সা। আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর হয়েছে ৭ টাকা ২০ পয়সা। দরে বেড়েছে ৮.৯৩ শতাংশ।

সিএন্ডএ টেক্সটাইল : সোমবার কোম্পানিটির ক্লোজিং দর ছিল ৫ টাকা ৬০ পয়সা। আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর হয়েছে ৬ টাকা ১০ পয়সা। দরে বেড়েছে ৮.৮৩ শতাংশ।

পিপলস লিজিংকে পুনরুজ্জীবিত করতে ১০ সদস্যের বোর্ড: অস্তিত্ব বিলীনের পথে থাকা পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক খাতের কোম্পানি পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডকে বাচাঁতে ১০ সদস্য বিশিষ্ট একটি বোর্ড গঠন করে দিয়েছে হাইকোর্ট।

বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ বোর্ড গঠন করে দেয়। বোর্ড গঠনের বিষয়টি মঙ্গলবার জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির সাময়িক অবাসায়ক (প্রবেশনাল লিক্যুডেটর) মো. আসাদুজ্জামানের পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার মেজবাহুর রহমান। তিনি বলেন, পিপলস লিজিংকে পুনরুজ্জীবিত করতে আদালত ১০ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছে। বোর্ডের চেয়ারম্যান করা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কামাল উল আলমকে।

বোর্ডের অন্য সদস্যরা হলেন- সাবেক সচিব আনোয়ারুল ইসলাম সিকদার, সাবেক সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ হাসান শাহীদ ফেরদৌস, পূবালী ব্যাংকের সাবেক এমডি আব্দুল হালিম চৌধুরী, বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) কাজী তৌফিকুল ইসলাম, নুর-এ-খোদা আব্দুল মবিন, মওলা মোহাম্মদ, সঞ্চয়কারীদের প্রতিনিধি ড. নাশিদ কামাল, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের চেয়ারম্যান ড. নুরুল কবির এবং এমডি হিসেবে থাকবেন আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকের সাবেক এমডি মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন। এর আগে ২৮ জুন পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইনান্সিয়াল সার্ভিস লিমিটেডকে (পিএলএফএসএল) পুনরুজ্জীবিত করার আদেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট।

তার আগে ২১ জুন ২০১ জন আমানতকারী পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড পুনর্গঠন চেয়ে আবেদন করেন। পরে আদালত তাদের বক্তব্য শোনে। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষের আইনজীবী তানজীব উল আলম আদালতকে বলেন, এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের বক্তব্য রয়েছে। তখন আদালত ২৮ জুন দিন ঠিক করে দিয়েছিলেন। হাইকোর্টে আমাতকারীদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আহসানুল করিম।

পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিনান্সিয়াল সার্ভিস লিমিটেড (পিএলএফএসএল) এর সাময়িক অবাসায়ক (প্রবেশনাল লিক্যুডেটর) মো. আসাদুজ্জামানের পক্ষে ছিলেন মেজবাহুর রহমান। আর্থিক প্রতিষ্ঠান পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড থেকে ঋণ গ্রহীতাদের তলব করে ২১ জানুয়ারি আদেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট।

এরপর কয়েক দফায় ঋণখেলাপিরা আদালতে হাজির হয়ে হলফনামা দাখিল করেন এবং ঋণপরিশোধের কথা জানান। পরে প্রতিষ্ঠানটিকে বাঁচাতে গত ৯ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ও সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যানের বক্তব্য শুনে হাইকোর্ট। আদালতের নির্দেশে হাজির না হওয়ায় ওই দিনই ১২২ জনের দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয় হাইকোর্ট।

১৬৬৮ কোটি মধ্যে ১৮১ কোটি টাকার লেনদেন বেক্সিমকোর: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানি (বেক্সিমকো) লিমিটেড। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, আজ ডিএসইতে ১৬৬৮ কোটির টাকার মধ্যে কোম্পানিটির ১৮১ কোটি ১৬ লাখ ৬২ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেনের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসা পাওয়ার গ্রিডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৫৭ কোটি ৭৩ লাখ ৩৬ হাজার টাকার। ৪৭ কোটি ৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেড।

লেনদেনের তালিকায় থাকা অন্যান্য কোম্পানি গুলোর মধ্যে রয়েছে -সাউথইস্ট ব্যাংক,লংকা বাংলা ফাইন্যান্স, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, ফরচুন সুজ, অ্যাডভেন্ট, কেয়া কসমেটিক ও আমান ফিড লিমিটেড।

ছয় কোম্পানির বোর্ড সভার তারিখ ঘোষণা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৬ কোম্পানির বোর্ড সভার তারিখ ঘোষণা করছে। কোম্পানিগুলো হলো: পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সিটি ব্যাংক লিমিটেড, ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্স, উত্তরা ব্যাংক লিমিটেড, ডিবিএইচ ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড ও গ্রীণডেল্টা মিউচ্যুয়াল ফান্ড। কোম্পানিগুলো বোর্ড সভার তারিখ ঘোষণা করা হলো:

পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বীমা খাতের প্রতিষ্ঠান পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের বোর্ড সভা আগামী ২৭ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। জানা গেছে, ওইদিন কোম্পানিটির বোর্ড সভা বেলা ৩ টায় অনুষ্ঠিত হবে। সভায় ৩০ জুন, ২০২১ পর্যন্ত কোম্পানির দ্বিতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে।

সিটি ব্যাংক লিমিটেড: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি সিটি ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের সভার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। কোম্পানিটির পরবর্তী পর্ষদ সভা আগামী ১৯ জুলাই দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, সভায় কোম্পানিটির ৩০ জুন,২০২১ সমাপ্ত দ্বিতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হবে। পর্ষদ আলোচিত প্রতিবেদন অনুমোদন করলে তা প্রকাশ করবে কোম্পানিটি। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে ব্যাংকটির সমন্বিত শেয়ার প্রতি আয় হয়েছিল ৯৪ পয়সা। আর আগের বছরের একই সময়ে ব্যাংকটির সমন্বিত ইপিএস হয়েছিল ৩০ পয়সা।

ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্স : পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্স লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের সভার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। কোম্পানিটির পরবর্তী পর্ষদ সভা আগামী ১৮ জুলাই বিকাল ৪টায় অনুষ্ঠিত হবে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, সভায় কোম্পানিটির ৩০ জুন,২০২১ সমাপ্ত দ্বিতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হবে। পর্ষদ আলোচিত প্রতিবেদন অনুমোদন করলে তা প্রকাশ করবে কোম্পানিটি। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে ব্যাংকটির সমন্বিত শেয়ার প্রতি আয় হয়েছিল ৭২ পয়সা। আর আগের বছরের একই সময়ে ব্যাংকটির সমন্বিত ইপিএস হয়েছিল ৩২ পয়সা।

উত্তরা ব্যাংক লিমিটেড: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি উত্তরা ব্যাংক লিমিটেডের বোর্ড সভার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। কোম্পানিটির বোর্ড সভা আগামী ১৮ জুলাই দুপুর ২টা ৩৫ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, সভায় ৩০ জুন,২০২১ পর্যন্ত কোম্পানিটির দ্বিতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে প্রকাশ করবে কোম্পানিটি।আগের প্রান্তিকে কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি আয় করেছিল ৮৪ পয়সা।

২ মিউচ্যুয়াল ফান্ড ট্রাস্টি কমিটির সভা: ২ মিউচ্যুয়াল ফান্ড ট্রাস্টি কমিটির সভার তারিখ ঘোষণা করেছে। ফান্ডগুলোর সভায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রান্তিকের সমাপ্ত সময়ের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও প্রকাশ করা হবে।ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ফান্ডগুলো হচ্ছে: ডিবিএইচ ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ট্রাস্টি কমিটির সভা আগামী ১৫ জুলাই দুপুর ২টা ৫ মিনিট থেকে ২টা ২৫ মিনিট পর‌যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। গ্রীণডেল্টা মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ট্রাস্টি কমিটির সভা ১৫ জুলাই দুপুর ২টা ১০ মিনিট থেকে আড়াইটা পরযন্ত অনুষ্ঠিত হবে।

পিপলস লিজিংয়ের নতুন চেয়ারম্যান কামাল উল আলম: অবসায়নের প্রক্রিয়ায় থাকা নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিন্যানশিয়াল সার্ভিসেস (পিএলএফএস) লিমিটেড পরিচালনার জন্য একটি পরিচালনা পর্ষদ গঠন করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।

সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার কামাল-উল আলমকে চেয়ারম্যান এবং আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকের সাবেক এমডি মোহাম্মদ জালাল উদ্দিনকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) করে ১০ সদস্যের এই বোর্ড গঠন করা হয়েছে।

বোর্ডের অপর আট সদস্য হলেন সাবেক সচিব আনোয়ারুল ইসলাম সিকদার, সাবেক জ্যেষ্ঠ জেলা ও দায়রা জজ হাসান শাহীদ ফেরদৌস, পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আব্দুল হালিম চৌধুরী, বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) কাজী তৌফিকুল ইসলাম, নূর-এ-খোদা আব্দুল মবিন এফসিএ, মওলা মোহাম্মদ এফসিএ, সঞ্চয়কারীদের প্রতিনিধি ড. নাশিদ কামাল এবং নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের চেয়ারম্যান ড. নুরুল কবির।

পিপলস্ লিজিং যাতে আবারো কার্যকর হয়ে ওঠে সেজন্য পুনর্গঠিত বোর্ড চেয়ারম্যান ও সদস্য, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, দুর্নীতি দমন কমিশন, পিপলস লিজিং-এর ঋণগ্রহীতাসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি কয়েক দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে আগামী ২২ আগস্ট পরবর্তী আদেশের জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে। বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের হাইকোর্টের কম্পানি বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ দিয়েছেন।

এর আগে গত ২৮ জুন এ আদালত পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত জানিয়েছিলেন। পিপলস লিজিং-এ আমানতকারীদের আবেদনে এ আদেশ দেন হাইকোর্ট। আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার তানজিব-উল আলম। পিপলস লিজিং এর সাময়িক অবসায়কের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার মেজবাহুর রহমান।

অবসায়নের লক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১৯ সালের জুলাইয়ে সাময়িক অবসায়ক (প্রবেশনাল লিক্যুডেটর) হিসেবে মো. আসাদুজ্জামান খানকে নিয়োগ দেওয়া হয়। তাঁর করা এক আবেদনের ওপর শুনানিকালে পিপলস লিজিং-এর প্রায় ৫০০ জনের বেশি ঋণগ্রহীতার একটি তালিকা হাইকোর্টে দাখিল করা হয়। এর পর পাঁচ লাখ টাকা এবং তার ওপরে নেওয়া ঋণগ্রহীতাদের মধ্যে যারা খেলাপি হয়েছে এমন ২৮০ জনকে তলব করে হাইকোর্ট। তাঁদেরকে হাজির হয়ে ঋণ গ্রহণের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় গত ২১ জুন ২০১ জন আমানতকারী প্রতিষ্ঠানটি অবসায়ন না করে পুনর্জীবিত করার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন। এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট নতুন পরিচালনা পর্ষদ নিয়োগ দিলেন।