দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে বহুল আলোচিত বানকো সিকিউরিটিজ লিমিটেডের সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চলমান যাবতীয় সব ব্যাংক হিসাব তলব করে চিঠি দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। শনিবার (১৭ জুলাই) এনবিআরের জনসংযোগ দফতর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। এনবিআর-এর সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল (সিআইসি) থেকে গত সপ্তাহে বাংলাদেশের সকল তফসিলি ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর এসব তলবি চিঠি পাঠানো হয়েছে।

সিআইসির চিঠিতে বলা হয়, বানকো সিকিউরিটিজ ও এর মালিকানা ব্যক্তিদের নামে থাকা আমানত হিসাব (এফডিআর ও এসটিডি হিসাবসহ যেকোনো ধরনের বা নামের মেয়াদী আমানত হিসাব), যেকোনো ধরনের বা মেয়াদের সঞ্চয়ী হিসাব, চলতি হিসাব, ঋণ হিসাব, ফরেন কারেন্সি হিসাব, ক্রেডিট কার্ড, লকার বা ভল্ট, সঞ্চয়পত্র বা অন্য যেকোনো ধরনের সেভিংস ইনস্ট্রুমেন্ট, ইনভেস্টমেন্ট স্কিম বা ডিপোজিট স্কিম বা অন্য যেকোনো ধরনের কিংবা নামের হিসাব পরিচালিত বা রক্ষিত হয়ে থাকলে জরুরি ভিত্তিতে সরবরাহ করতে অনুরোধ করা গেল।

এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংক গত ৫ জুলাই দুর্নীতির অভিযোগে বানকো সিকিউরিটিজ ও এর পরিচালকদের সংশ্লিষ্ট আরও ১০টি প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- বানকো সিকিউরিটিজ, বানকো ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, সুব্রা সিস্টেমস, সুব্রা ফ্যাশনস, বানকো পাওয়ার, বানকো এনার্জি জেনারেশন, বানকো স্মার্ট সল্যুশন, ক্লাসিক ফুড ল্যাব, অ্যামুলেট ফার্মাসিউটিক্যালস ও সামিট প্রপার্টিজ লিমিটেড।

উল্লেখ্য, বানকো সিকিউরিটিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান আব্দুল মুহিত ও পাঁচ পরিচালকের বিরুদ্ধে গত ২৮ জুন পুঁজিবাজার থেকে ৬৬ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করেছে দুদক। দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ সংস্থাটির উপ-সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নুর আলম সিদ্দিকী বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। ওই দিন পালিয়ে লন্ডনে যাওয়ার সময় আসামি আব্দুল মুহিত গ্রেফতার হন। দুদকের মামলার আসামিরা হলেন: বানকো সিকিউরিটিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান আব্দুল মুহিত, পরিচালক শফিউল আজম, ওয়ালিউল হাসান চৌধুরী, নুরুল ঈশান সাদাত, এ মুনিম চৌধুরী ও পরিচালক জামিল আহমেদ।

দুদকের মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, বানকো আইন লঙ্ঘনের মাধ্যমে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেডের লেনদেন নিষ্পত্তি করতে ব্যর্থ হয়। পরে চলতি বছরের ৭ জুন বিশেষ পরিদর্শনে ডিএসই সম্মিলিত গ্রাহক অ্যাকাউন্টে ৬৬ কোটি ৫৯ লাখ ১৯ হাজার ১৩৩ টাকার ঘাটতির প্রমাণ পায়। বানকো সিকিউরিটিজ লিমিটেডের মালিক পক্ষ বিনিয়োগকারীদের অর্থ ও শেয়ার আত্মসাৎ করেছে বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। বিনিয়োগকারীদের সমন্বিত হিসাবের ৬৬ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গত ১৫ জুন থেকে ডিএসইতে বানকো সিকিউরিটিজ লিমিটেডের লেনদেন কার্যক্রম বন্ধ। একই সঙ্গে ব্রোকার হাউজটির পরিচালক ও পরিবারের সদস্যরা যাতে বিদেশে যেতে না পারেন, সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

বীমা খাত থেকে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন: জুন মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা তালিকাভুক্ত বীমা কোম্পানিগুলো থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বিনিয়োগ প্রত্যাহার করেছেন। টাকার অঙ্কে এর পরিমাণ অন্তত ৫০০ কোটি। ৩০ বীমা কোম্পানির প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ার কমার হিসাব পর্যালোচনায় এ তথ্য মিলেছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তালিকাভুক্ত ৫০ কোম্পানির মধ্যে ৪১ বিনিয়োগকারীর ধরন অনুযায়ী গত জুন শেষে শেয়ার ধারণের তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩০টিতে প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ার কমার তথ্য পাওয়া গেছে।

দেখা গেছে, কোনো প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী জুন মাসে কোনো বীমা কোম্পানির শেয়ার কিনে আবার বিক্রিও করেছে। একইভাবে কোনো প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী যখন কিনেছে, তখন অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান ওই একই কোম্পানির শেয়ার বিক্রি করেছে। এক্ষেত্রে সব কেনা ও বেচার নিট হিসাব থেকে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগের নিট হ্রাস-বৃদ্ধির হিসাব করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, তালিকাভুক্ত সব বীমা কোম্পানির শেয়ার ধারণের হার প্রকাশ করলে দেখা যাবে, বিনিয়োগ প্রত্যাহার করার টাকার অঙ্কের পরিমাণ এর তুলনায় বেশি। শুধু বিক্রির হিসাব করা হলে বিনিয়োগ প্রত্যাহারের অঙ্ক হাজার কোটি টাকা ছাড়াবে। শেয়ার কারসাজির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা অনেক ক্ষেত্রে নিজেদের আড়াল করতে এসব নামসর্বস্ব কোম্পানির নামে শেয়ার কেনাবেচা করছে।

এদের বিনিয়োগও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ হিসেবে গণ্য হয়। বিনিয়োগকারীর ধরণ অনুযায়ী, শেয়ার ধারণের প্রকাশ করা তথ্য অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট কোম্পানির মোট শেয়ার বিবেচনায় সর্বনিম্ন ০.৫২ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ১৭.০২ শতাংশ পর্যন্ত প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ার কমেছে ৩০ বীমা কোম্পানি থেকে।

মোট শেয়ার বিবেচনায় সর্বাধিক ১৭.০২ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ার কমেছে সাধারণ বীমা খাতের নর্দার্ন ইন্স্যুরেন্স থেকে। আর সর্বনিম্ন ০.৫২ শতাংশ কমেছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স থেকে। বিপরীতে মাত্র ৬টি বীমা কোম্পানিতে প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ার বেড়েছে। এ হার সর্বনিম্ন ০.২৭ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ৩.৮৯ শতাংশ।

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, গত জুন শেষে নর্দার্ন ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের ধারণ করা মোট শেয়ারের পরিমাণ কোম্পানিটির মোট শেয়ারের ১৪.৬৯ শতাংশে নেমেছে যা গত মে মাসের শেষেও ছিল ৩১.৭১ শতাংশ। অন্য সব মাসের মতো গত মাসেও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কেউ এ কোম্পানির শেয়ার কিনেছে, আবার কেউ বিক্রি করেছে। এই কেনা ও বেচা শেষে শেয়ার সংখ্যার হিসেবে এ কোম্পানি থেকে নিট প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ার কমেছে ৭২ লাখ ৬২ হাজার যার বাজার মূল্য ছিল কমপক্ষে ৪০ কোটি টাকা।

একইভাবে সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্স থেকে প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ার মোট ২৩.৪৮ শতাংশ থেকে ১১.১১ শতাংশে নেমেছে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের থেকে মোট শেয়ার কমেছে প্রায় ১ কোটি ৩৫ লাখ ৭০ হাজার, যার বাজার মূল্য ছিল অন্তত ৫৬ কোটি টাকা। এছাড়া সংশ্লিষ্ট কোম্পানির মোট শেয়ার বিবেচনায় ৫ থেকে ৮ শতাংশ পর্যন্ত প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ার কমেছে (উচ্চ থেকে নিম্ন) রূপালী লাইফ, ইস্টল্যান্ড, প্রগ্রেসিভ লাইফ, ফিনিপ, গ্রীনডেল্টা, প্রাইম লাইফ এবং ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের।

মোট শেয়ার বিবেচনায় ৩ থেকে সোয়া ৪ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ার কমেছে (উচ্চ থেকে নিম্ন) রিপাবলিক, এক্সপ্রেস, সোনারবাংলা, তাকাফুল, পপুলার লাইফ, মেঘনা লাইফ, ঢাকা, দেশ জেনারেল, সিটি জেনারেল, কন্টিনেন্টাল এবং ক্রীস্টাল ইন্স্যুরেন্স থেকে। এছাড়া পূরবী, প্যারামাউন্ট এবং ফেডারেল ইন্স্যুরেন্স থেকে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির মোট শেয়ার বিবেচনায় প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ার কমেছে ২ থেকে আড়াই শতাংশ পর্যন্ত। ১ থেকে ২ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে ফারইস্ট লাইফ, জনতা, মার্কেন্টাইল, ইস্টার্ন এবং রূপালী লাইফ থেকে।

পিপলস এবং বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স থেকেও কিছুটা করে প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ার কমেছে। বিপরীতে প্রভাতী ইন্স্যুরেন্সে প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ার বেড়েছে বীমা কোম্পানিটির মোট শেয়ার বিবেচনায় ৩.৮৯ শতাংশ। গত মে শেষে বীমা কোম্পানিটিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের মোট শেয়ার ধারণের হার ছিল ১০.৬৯ শতাংশ, যা জুন শেষে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪.৫৮ শতাংশ। টাকার অঙ্কে বিনিয়োগ বেড়েছে প্রায় ২৭ কোটি টাকা।

এছাড়া এশিয়া ও নিটল ইন্স্যুরেন্সে প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ার বেড়েছে মোটের ২ শতাংশ করে। স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্সে ০.৯৫ শতাংশ, ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্সে ০.৩৩ শতাংশ এবং বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্সে ০.২৭ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ার বেড়েছে। টাকার অঙ্কে সর্বাধিক বিনিয়োগ প্রত্যাহার হয়েছে ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স থেকে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কেনা ও বেচা শেষে নিট ৯৪ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রত্যাহার হয়েছে।

একইভাবে নিট অন্তত ৭৫ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রত্যাহার হয়েছে গ্রীনডেল্টা ইন্স্যুরেন্স থেকে। সন্ধানী লাইফ থেকে ৫৬ কোটি টাকার, নর্দার্ন থেকে ৪০ কোটি টাকার, পপুলার লাইফ থেকে ২৫ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রত্যাহার হয়েছে। জুলাই মাসের ১৫ তারিখের পরও যেসব বীমা কোম্পানি এখনো শেয়ার ধারণের সর্বশেষ তথ্য প্রকাশ করেনি, সেগুলো হলো: অগ্রণী, গেতাবাল, ইসলামিক, কর্ণফূলী, পদ্মা লাইফ, প্রগ্রতি লাইফ, প্রাইম এবং সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স। শেয়ার ধারণের হার প্রকাশ করা এশিয়া প্যাসিফিক, সেন্ট্রাল, ন্যাশনাল লাইফ, পাইওনিয়া এবং রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স জানিয়েছে, গত মে মাসের তুলনায় জুনে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ধারণের কোনো পরিবর্তন হয়নি।

প্রসঙ্গত ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ব্রোকার ডিলার, মার্চেন্ট ব্যাংক, মিউচুয়াল ফান্ডসহ প্রথাগত প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের বাইরে দেশের শেয়ারবাজারে নামসর্বস্ব উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠান বর্তমানে শেয়ার কেনাবেচা করছে। শেয়ার কারসাজির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা অনেক ক্ষেত্রে নিজেদের আড়াল করতে এসব নামসর্বস্ব কোম্পানির নামে শেয়ার কেনাবেচা করছে। তাদের বিনিয়োগও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ হিসেবে গণ্য হয়।

১৩ কোম্পানির বোর্ড সভার তারিখ ঘোষণা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ভিন্ন ভিন্ন খাতের ১৩ কোম্পানি পরিচালনা পর্ষদের সভার (বোর্ড সভা) তারিখ জানিয়েছে। কোম্পানিগুলোর সভায় সমাপ্ত সময়ের অনীরিক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনার পাশাপাশি প্রকাশ করবে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

কোম্পানিগুলোর হচ্ছে: গ্রীণডেল্টা ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড: পরিচালনা পর্ষদের সভা আগামী ২৬ জুলাই বিকাল ৪টায় অনুষ্ঠিত হবে। সভায় কোম্পানিটির ৩০ জুন ,২০২১ সমাপ্ত দ্বিতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হবে। পর্ষদ আলোচিত প্রতিবেদন অনুমোদন করলে তা প্রকাশ করবে কোম্পানিটি। আগের প্রান্তিকে কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি আয় করেছিল ১ টাকা ৭৬ পয়সা।

যমুনা ব্যাংক লিমিটেড: পরিচালনা পর্ষদের সভা আগামী ২৮ জুলাই বিকাল ৪টায় অনুষ্ঠিত হবে। সভায় কোম্পানিটির ৩০ জুন ,২০২১ সমাপ্ত দ্বিতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হবে। পর্ষদ আলোচিত প্রতিবেদন অনুমোদন করলে তা প্রকাশ করবে কোম্পানিটি। আগের প্রান্তিকে কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি আয় করেছিল ১ টাকা ৬০ পয়সা।

রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড: পরিচালনা পর্ষদের সভা আগামী ২৮ জুলাই দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে। সভায় কোম্পানিটির ৩০ জুন ,২০২১ সমাপ্ত দ্বিতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হবে। পর্ষদ আলোচিত প্রতিবেদন অনুমোদন করলে তা প্রকাশ করবে কোম্পানিটি। আগের প্রান্তিকে কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি আয় করেছিল ১ টাকা ৩৫ পয়সা।

নাভানা সিএনজি লিমিটেড: পরিচালনা পর্ষদের সভা আগামী ১৯ জুলাই দুপুর ৩টা ৪৫ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে। সভায় কোম্পানিটির ৩১ মার্চ,২০২১ সমাপ্ত তৃতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হবে। পর্ষদ আলোচিত প্রতিবেদন অনুমোদন করলে তা প্রকাশ করবে কোম্পানিটি। আগের প্রান্তিকে কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি আয় করেছিল ০৬ পয়সা।

ওয়ান ব্যাংক লিমিটেড: পরিচালনা পর্ষদের সভা আগামী ২৮ জুলাই বিকাল ৩টায় অনুষ্ঠিত হবে। সভায় কোম্পানিটির ৩০ জুন ,২০২১ সমাপ্ত দ্বিতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হবে। পর্ষদ আলোচিত প্রতিবেদন অনুমোদন করলে তা প্রকাশ করবে কোম্পানিটি। আগের প্রান্তিকে কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি আয় করেছিল ৮৪ পয়সা।

প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড: পরিচালনা পর্ষদের সভা আগামী ১৯ জুলাই দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে। সভায় কোম্পানিটির ৩১ মার্চ ,২০২১ সমাপ্ত প্রথম প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হবে। পর্ষদ আলোচিত প্রতিবেদন অনুমোদন করলে তা প্রকাশ করবে কোম্পানিটি।

আরএকে সিরামিকস লিমিটেড: পরিচালনা পর্ষদের সভা আগামী ২৮ জুলাই সন্ধ্যা ৭টায় অনুষ্ঠিত হবে। সভায় কোম্পানিটির ৩০ জুন ,২০২১ সমাপ্ত দ্বিতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হবে। পর্ষদ আলোচিত প্রতিবেদন অনুমোদন করলে তা প্রকাশ করবে কোম্পানিটি। আগের প্রান্তিকে কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি আয় করেছিল ৫০ পয়সা।

আফতাব অটোমোবাইলস লিমিটেড: পরিচালনা পর্ষদের সভা আগামী ১৯ জুলাই দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে। সভায় কোম্পানিটির ৩১ মার্চ,২০২১ সমাপ্ত তৃতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হবে। পর্ষদ আলোচিত প্রতিবেদন অনুমোদন করলে তা প্রকাশ করবে কোম্পানিটি। আগের প্রান্তিকে কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি আয় করেছিল ০৪ পয়সা।

আইপিডিসি ফিন্যান্স লিমিটেড: পরিচালনা পর্ষদের সভা আগামী ২৭ জুলাই বিকাল ৩টায় অনুষ্ঠিত হবে। সভায় কোম্পানিটির ৩০ জুন,২০২১ সমাপ্ত দ্বিতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হবে। পর্ষদ আলোচিত প্রতিবেদন অনুমোদন করলে তা প্রকাশ করবে কোম্পানিটি। আগের প্রান্তিকে কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি আয় করেছিল ৫৫ পয়সা।

পিপলস ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড: পরিচালনা পর্ষদের সভা আগামী ১৯ জুলাই বিকাল ৩টায় অনুষ্ঠিত হবে। সভায় কোম্পানিটির ৩০ জুন,২০২১ সমাপ্ত দ্বিতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হবে। পর্ষদ আলোচিত প্রতিবেদন অনুমোদন করলে তা প্রকাশ করবে কোম্পানিটি। আগের প্রান্তিকে কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি আয় করেছিল ৫৪ পয়সা।

আইডিএলসি ফিন্যান্স লিমিটেড: পরিচালনা পর্ষদের সভা আগামী ১৯ জুলাই বিকাল ৪টার পরিবর্তে সাড়ে ৫টায় অনুষ্ঠিত হবে। সভায় কোম্পানিটির ৩০ জুন,২০২১ সমাপ্ত দ্বিতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হবে। পর্ষদ আলোচিত প্রতিবেদন অনুমোদন করলে তা প্রকাশ করবে কোম্পানিটি। আগের প্রান্তিকে কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি আয় করেছিল ১ টাকা ২৫ পয়সা।

মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেড: পরিচালনা পর্ষদের সভা আগামী ১৯ জুলাই বিকাল ৩টায় অনুষ্ঠিত হবে। সভায় কোম্পানিটির ৩০ জুন,২০২১ সমাপ্ত দ্বিতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হবে। পর্ষদ আলোচিত প্রতিবেদন অনুমোদন করলে তা প্রকাশ করবে কোম্পানিটি। আগের প্রান্তিকে কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি আয় করেছিল ৬৪ পয়সা।

উত্তরা ব্যাংক লিমিটেড: পরিচালনা পর্ষদের সভা আগামী ১৮ জুলাই দুপুর ২টা ৩৫ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে। সভায় কোম্পানিটির ৩০ জুন,২০২১ সমাপ্ত দ্বিতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হবে। পর্ষদ আলোচিত প্রতিবেদন অনুমোদন করলে তা প্রকাশ করবে কোম্পানিটি। আগের প্রান্তিকে কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি আয় করেছিল ৮৪ পয়সা।

জুন ক্লোজিং কোম্পানির শেয়ারে হঠাৎ আগ্রহ: জুন ক্লোজিং কোম্পানির শেয়াওে গত কিছু দিন ধরে আগ্রহ দেখা গেছে। মুলত দরপতনের শেষ কাটিয়ে এক বছরের বেশি সময়জুড়ে পুঁজিবাজারের সার্বিক পরিস্থিতি ইতিবাচক রয়েছে। বাজার ভালো থাকায় এ সময় যেমন সব শ্রেণির শেয়ারদর বেড়েছে, তেমনি অনেক নতুন বিনিয়োগকারী এখানে যুক্ত হয়েছে। এমন বিনিয়োগকারীর পছন্দের তালিকায় রয়েছে জুন ক্লোজিং কোম্পানির শেয়ার। সামনে লভ্যাংশ মৌসুম থাকায় গত দুই সপ্তাহ ধরে জুন ক্লোজিং কোম্পানি ঘিরে লেনদেনে মগ্ন রয়েছেন তারা। এরই জেরে বাড়ছে এসব কোম্পানির কদর।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, জুন ক্লোজিং কোম্পানিগুলো এরই মধ্যে তাদের তৃতীয় প্রান্তিক প্রতিবেদন প্রকাশ শেষ করেছে। এর মধ্যে বেশিরভাগ কোম্পানিই আগের চেয়ে মুনাফায় রয়েছে। বছর শেষে এটা বহাল থাকবে বলে মনে করছেন তারা। এ কারণে লভ্যাংশ ঘরে তোলার জন্য এসব কোম্পানিতে ঝুঁকছেন তারা। বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তুলনামূলক ভালো ইপিএস দেখানো কোম্পানিগুলোয় ঝুঁকেছেন তারা।

বিনিয়োগকারীদের এ প্রত্যাশা পূরণের বিষয়টি পুরোটাই নির্ভর করে কোম্পানির সর্বশেষ হিসাব-নিকাশের ওপর। শেষ প্রান্তিকে এসে যদি হিসাবে গরমিল হয় তবে বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশার প্রতিফলন নাও পড়তে পারে মুনাফায়।

যদি ধারাবাহিকতা না থাকে, তবে বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা পূরণ হবে না। কারণ তিন প্রান্তিকে ভালো মুনাফা দেখানোর পর শেষ প্রান্তিকে যদি মুনাফা কমে যায়, কিংবা লোকসান হয়, তবে সেই কোম্পানি ভালো লভ্যাংশ দেয়ার ক্ষমতা হারায়।

তবে এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে রয়েছে বস্ত্র খাতের কোম্পানি। এক মাসের বেশি সময় ধরে এ খাতের বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারদর ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। এ সময়ের মধ্যে কিছু শেয়ারদর অস্বাভাবিকহারে বেড়েছে। এ সময়ের মধ্য তমিজ উদ্দীন টেক্সটাইলের শেয়ার ১৩ টাকা থেকে বেড়ে ৬৪ টাকা ৯০ পয়সায় চলে এসেছে। একইভাবে তাল্লু স্পিনিংয়ে শেয়ারদর পাঁচ টাকা থেকে বেড়ে আট টাকা ৪০ পয়সায় চলে এসেছে। সোনারগাঁ টেক্সটাইলের শেয়ারদর ১৯ থেকে ২৮ টাকায় চলে যায়।

অন্যদিকে এ সময় রিজেন্ট টেক্সটাইলের শেয়ার ৯ টাকা থেকে বেড়ে ১১ টাকা ৮০ পয়সায় চলে যায়। একইভাবে আর এন স্পিনিংয়ের শেয়ার চার টাকা ৮০ পয়সা থেকে বেড়ে ছয় টাকা ৫০ পয়সায় চলে এসেছে। এছাড়া এই সময় সায়হাম টেক্সটাইল, তুংইহান নিটিং, সিঅ্যান্ড এ টেক্সটাইল, ফ্যামিলি টেক্সসহ বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারদর উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।

বিষয়টি নিয়ে আলাপ করলে বাজারসংশ্লিষ্টরা বলেন, যেসব কোম্পানির জুন ক্লোজিং সেসব কোম্পানির দর বাড়া স্বাভাবিক। কারণ সামনেই এসব কোম্পানি থেকে লভ্যাংশ ঘোষণা আসবে। তাছাড়া বর্তমানে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারদর খুব কম, অর্থাৎ ক্রয়যোগ্য। এসব কোম্পানির শেয়ারের মূল্য আয় অনুপাতও অনেক কম। ফলে হাতেগোনা কিছু কোম্পানি ছাড়া অন্য কোম্পানির শেয়ারদর বাড়া স্বাভাবিক। তবে বিনিয়োগকারীদের অবশ্যই ভালো কোম্পানির সঙ্গে থাকা উচিত, কারণ বাজারে বিনিয়োগযোগ্য কোম্পানির সংখ্যা কম।

এদিকে জুন ক্লোজিংয়ের কারণে গত সপ্তাহে ব্যাংক, বিমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বহুজাতিক কোম্পানির শেয়ার চাহিদা তুলনামূলক কম দেখা গেছে। ডিসেম্বর ক্লোজিং হওয়ার কারণে এসব কোম্পানির শেয়ারদরও কম। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসব কোম্পানির শেয়ারদর কমার আরও কারণ রয়েছে। সর্বশেষ বছরে বহুজাতিক কোম্পানি ছাড়া ডিসেম্বর ক্লোজিং বেশিরভাগ কোম্পানি বিনিয়োগকারীদের সন্তোষজনক লভ্যাংশ দিতে পারেনি। সেই তুলনায় ভালো লভ্যাংশ দিয়েছে জুন ক্লোজিং কোম্পানি।

এ বিষয় জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) একজন পরিচালক বলেন, ব্যাংক ও বেশিরভাগ আর্থিক প্রতিষ্ঠান কয়েক বছর ধরে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে। এ তালিকায় রয়েছে ব্যাংক। খাতটিতে মন্দা পরিস্থিতি থাকায় প্রায় সব প্রতিষ্ঠান এর সুযোগ নিচ্ছে। ভালো লভ্যাংশ দেয়ার পর মন্দার কথা বলে নামমাত্র লভ্যাংশ দিয়ে ক্যাটেগরি টিকিয়ে রাখছে। ফলে এসব প্রতিষ্ঠান থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। তারা ঝুঁকে পড়েছেন জুন ক্লোজিং কোম্পানিতে।

এ প্রসঙ্গে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, সামনে লভ্যাংশ মৌসুম। বেশিরভাগ বিনিয়োগকারী লভ্যাংশের মাধ্যমে মুনাফা করতে চান। বিনিয়োগকারীদের এই প্রবণতা সঠিক। তবে এ ক্ষেত্রে কোম্পানি বাছাই করতে হবে ভেবেচিন্তে। কারণ সব কোম্পানি থেকে ভালো লভ্যাংশ আসবে না। তাই বিনিয়োগের আগে দেখা দরকার ওই কোম্পানির আগের লভ্যাংশ দেয়ার হার কেমন। সেই সঙ্গে অবশ্যই প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অবস্থার দিকে নজর দিতে হবে।

২৩ বিমা কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির নির্দেশ: দেশের ২৩টি লাইফ ও নন-লাইফ বিমা কোম্পানি ২০১৯ সালের মধ্যে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া নির্দেশনা ছিল। কিন্তু কোম্পানিগুলো সেই নির্দেশনা প্রতিপালন করেনি। কোম্পানিগুলোকে যথাশীঘ্র পুঁজিবাজারে আসার নির্দেশনা দিয়ে সতর্ক করলো নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। গত বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত ভার্চুয়াল বৈঠকে বিমা কোম্পানিগুলোকে সতর্ক করা হয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

বৈঠকে যেসব কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার জন্য এরইমধ্যে বিএসইসি’র শর্তাদি পূরণে এগিয়ে রয়েছে, তাদেরকে জুনের একাউন্ট দিয়ে আবেদন করতে বলা হয়েছে। বাকীদের আগামী সেপ্টেম্বরের একাউন্ট দিয়ে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে কোনভাবেই যাতে ২০২১ সাল পার না হতে হয় সে বিষয়ে সতর্ক করেছে আইডিআরএ।

যদিও বেশ কয়েকটি বিমা কোম্পানি ২০২১ সালের একাউন্ট দিয়েও পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে পারবে না বলে সময় চেয়েছে। তবে বেশিরভাগ কোম্পানি ডিসেম্বরের একাউন্ট দিয়ে আইপিও’তে যেতে পারবে বলে জানিয়েছে। এর আগে ২০১৯ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে একটি সভা হয়। সভায় ১৮টি লাইফ ও ৯টি নন-লাইফ বিমা কোম্পানিকে ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ এর মধ্যে তালিকাভুক্ত হওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়। তবে আজ পর্যন্ত ৪টি বিমা কোম্পানি এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করেছে।

এদিকে অর্থমন্ত্রীর বৈঠকের পর বিমা কোম্পানিগুলোর চেয়ারম্যান ও মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাসহ অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের প্রতিনিধিসহ বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের কার্যালয়ে বেশ কয়েকটি সভাও অনুষ্ঠিত হয়।
কর্তৃপক্ষের অনুরোধের প্রেক্ষিতে বিমা কোম্পানিগুলোকে নির্ধারিত মূল্য পদ্ধতির মাধ্যমে আইপিওতে মূলধন উত্তোলণের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ৩০ কোটি টাকা উত্তোলনের বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি দিয়ে সর্বনিম্ন ১৫ কোটি টাকা বা তার বেশি মূলধন উত্তোলনের মাধ্যমে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির অনুমোদন প্রদান করেছে বিএসইসি।

সপ্তাহের ব্যবধানে পুঁজিবাজারে ফিরেছে আট হাজার কোটি টাকা: মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে সরকার কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করায় নতুন অর্থবছরের (২০২১-২২) প্রথম সপ্তাহের মতো দ্বিতীয় সপ্তাহেও সীমিত লেনদেন হয়েছে দেশের শেয়ারবাজারে। লেনদেন সীমিত হলেও গেল সপ্তাহটি বিনিয়োগকারীদের জন্য বেশ ভালোই গেছে।

সপ্তাহজুড়ে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ায় প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন আট হাজার কোটি টাকার ওপরে বেড়ে গেছে। এই নতুন অর্থবছরের প্রথম দুই সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা। সেইসঙ্গে বেড়েছে সবক’টি মূল্যসূচক। পাশাপাশি বেড়েছে লেনদেনের গতিও।

গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে পাঁচ লাখ ২৫ হাজার ২৭১ কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল পাঁচ লাখ ১৭ হাজার ১৮২ কোটি টাকা। অর্থাৎ গেল সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে আট কোটি ৮৯ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে বাড়ে দুই হাজার ৯০০ কোটি টাকা।

সেই হিসেবে চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ১০ হাজার ৯৮৯ কোটি টাকা। বাজার মূলধন বাড়া বা কমার অর্থ তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের দাম সম্মিলিতভাবে ওই পরিমাণ বেড়েছে বা কমেছে। অর্থাৎ বাজার মূলধন বাড়লে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ করা অর্থের পরিমাণ বেড়ে যায়।

এদিকে, গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৯৪ দশমিক ৫৯ পয়েন্ট বা এক দশমিক ৫২ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৬২ দশমিক ২৯ পয়েন্ট বা এক দশমিক শূন্য এক শতাংশ। প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপাশি গত সপ্তাহজুড়ে বেড়েছে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক। গেল সপ্তাহে এই সূচকটি বেড়েছে ২৬ দশমিক ৬৯ পয়েন্ট বা এক দশমিক ১৯ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৩৯ দশমিক ৮৩ পয়েন্ট বা এক দশমিক ৮০ শতাংশ।

অপরদিকে, ইসলামী শরিয়াহ্ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচকও গত সপ্তাহজুড়ে বেড়েছে। গত সপ্তাহে সূচকটি বেড়েছে ১৭ দশমিক ৮১ পয়েন্ট বা এক দশমিক ৩৩ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ২৬ দশমিক ৭৯ পয়েন্ট বা দুই দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। সবকটি মূল্য সূচকের উত্থানের পাশাপাশি গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন অংশ নেয়া বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ২৬৭টি প্রতিষ্ঠান। বিপরীতে দাম কমেছে ৯৪টির। আর ১৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৬৭৬ কোটি ৬২ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় এক হাজার ৬০২ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ৭৩ কোটি ৯৫ লাখ টাকা বা চার দশমিক ৬১ শতাংশ। আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ছয় হাজার ৭০৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকা।

আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ছয় হাজার ৪১০ কোটি ৭০ লাখ টাকা। সেই হিসাবে মোট লেনদেন বেড়েছে ৩৯৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকা বা চার দশমিক ৬১ শতাংশ। গত সপ্তাহে ডিএসইর মূল বাজারে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া ১০ কোম্পানির মধ্যে রয়েছে: বেক্সিমকো, পাওয়ার গ্রিড, লাফার্জাহোলসিম বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ফাইন্যান্স, সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, সাউথইষ্ট ব্যাংক, আলিফ মেনুফ্যাকচারিং এবং আমান ফিড।

হঠাৎ মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ারে আগ্রহ বেড়েছে: পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতের শেয়ারের প্রতি হঠাৎ আগ্রহ বেড়েছে বিনিয়োগকারীদের। বিনিয়োগকারীদের এমন আগ্রহে খাতটিতে বেড়েছে লেনদেনের পরিমান। স্বল্প মুলধনের এই খাতটি লেনদেনে অনেক খাতকে পেছনে পেলে পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে।

অন্য দিকে দীর্ঘ সময় দর বৃদ্ধি এবং লেনদেনে শীর্ষে থাকা বিমা খাতের প্রতি আগ্রহ কমেছে বিনিয়োগকারীদের। আগ্রহ কম লক্ষ্য করা গেছে ব্যাংক খাতের প্রতিও। বৃহস্পতিবার মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতের ৩৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩৫টিরই বেড়েছে ইউনিটের দর। অপরিবর্তন দুইটি ফান্ডের ইউনিট দর।

মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ২৪টির ইউনিট দর অবস্থান করছে ভিত্তিমূল্যের নিচে। এমন অবহেলিত প্রতিষ্ঠান গুলোর ইউনিটের প্রতি হঠাৎ আগ্রহ বেড়েছে বিনিয়োগকারীদের। কি এমন পরিবর্তন এসেছে এই খাতে? কেনইবা এমন আগ্রহ বিনিয়োগকারীদের?

এ বিষয়ে আজিজুর রহমান নামে এক বিনিয়োগকারী বলেন, জুন ক্লোজিং প্রতিষ্ঠান গুলোর লভ্যাংশ দেয়ার সময় হয়েছে। আর মিউচ্যুয়াল ফান্ডের প্রতিষ্ঠান গুলো জুন ক্লোজিং প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠান গুলো এ বছর ভালো লভ্যাংশ দিবে বলে আনাগোনা শুনা যাচ্ছে বিনিয়োগকারীদের মাঝে। ভালো লভ্যাংশের আসায় প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি ঝুঁকছে বিনিয়োগকারীরা। তাই এই খাতে আগ্রহ বেড়েছে বিনিয়োগকারীদের।

তিনি বলেন, মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার দর অনেক কম হওয়ায় বিনিয়োগকারীরা এই খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী। কারণ কম দর শেয়ার কিনলে সেখানে লোকসানের সম্ভাবনা কম। আর লোকসানের সম্ভবনা কম এবং শেয়ার বিনিয়োগ ঝুঁকি কম থাকায় এই খাতে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ অন্য খাতের তুলোনায় অনেক বেশি।

তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন সময় পুঁজিবাজর নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ আন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম মিউচ্যুয়াল ফান্ড নিয়ে বিনিয়োগকারীদের উদ্বুদ্ধ করেছেন। তিনি বলেছেন, কোন বিনিয়োগকারী ঝুঁকি নিয়ে বিনিয়োগ না করতে চাইলে সে যেন মিউচ্যুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করে।

বিএসইসির চেয়ারম্যান আরও বলেছেন, মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ভবিষৎ খুবই উজ্জল। এই খাত এখন থেকে বিনিয়োগকারীদের ভালো ল্যভাংশ দিতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। বিনিয়োগকারীরা মিউচ্যুয়াল ফান্ড নিয়ে নানা মুখি পজেটিভ মন্ত্য শুনে এবং নিজেরা বুঝে এই খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে সিএপিএম বিডিবিএল মিউচ্যুয়াল ফান্ড ওয়ানের। ফান্ডটির ইউনিট প্রতি দর বেড়েছে ৯.৯২ শতাংশ বা ১.৩০ টাকা। দিনটিতে ফান্ডটির শেয়ার প্রতি দর ১৩ টাকা ১০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ১৪ টাকা ৪০ পয়সায় অবস্থান করছে। এসইএমএল এফবিএসএল গ্রোথ ফান্ডের শেয়ার প্রতি দর বেড়েছে ৭.৫৬ শতাংশ।

এনএলআই ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার প্রতি দর বেড়েছে ৫.৬২ শতাংশ। ফনিক্স ফিন্যান্স ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার প্রতি দর বেড়েছে ৫.৫০ শতাংশ। এসইএমএল লেকচার ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ডের শেয়ার প্রতি দর বেড়েছে ৪.৯১ শতাংশ।

অন্যদিকে বিমা খাতের ৫১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৭টি কোম্পানিরই শেয়ার দর কমেছে। বেড়েছে ২১টির, অপরিবর্তিত রয়েছে ৩টি প্রতিষ্ঠানের। দিনটিতে বিমা ব্যাংক খাতের চেয়ে কমে লেনদেন করে সপ্তম স্থানে অবস্থান করছে। দিনটিতে বিমা খাতে লেনদেন হয়েছে ১৩১ কোটি টাকারও বেশি।
দিনটিতে ব্যাংক খাতে লেনদেন হয়েছে ১০৯ কোটি টাকা। এদিন ব্যাংকের ৩১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ১৪টির, কমেছে ৯টির, অপরিবর্তিত রয়েছে ৮টি প্রতিষ্ঠানের।

সপ্তাহজুড়ে মার্কেট মুভারে নতুন ৩ কোম্পানি: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সাপ্তাহিক মার্কেট মুভার বা টার্নওভার তালিকায় ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড, পাওয়ার গ্রিড, লাফার্জ হোলসিম, বিআইএফসি, সোনালী লাইফ, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, সাউথইস্ট ব্যাংক, আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং এবং আমান ফিড মিল। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সুত্রে এ তথ্য জানা গেছে। আলোচ্য সপ্তাহে টার্নওভার তালিকায় নতুন করে উঠে এসেছে পাওয়ার গ্রিড, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল ও সাউথইস্ট ব্যাংক লিমিটেড।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোম্পানিগুলোর শেয়ারে বড় বিনিয়োগকারীদের বাই প্রেসার বেশি ছিল। সে কারণে কোম্পানিগুলোর শেয়ার লেনদেনে উল্লম্ফন হয়েছে। এ কারণে কোম্পানিগুলো সাপ্তাহিক লেনদেন তালিকায় উঠে এসেছে এবং কোম্পানিগুলোর শেয়ারদরও ছিল ইতিবাচক প্রবণতায়।

পাওয়ার গ্রিড: গেল সপ্তাহে পাওয়ার গ্রিডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৮২ কোটি ১৩ লাখ ২৬ হাজার টাকার। সাপ্তাহিক লেনদেনের তালিকায় এই কোম্পানির অবস্থান ছিলো দ্বিতীয়। বিদায়ী সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে কোম্পানিটির উদ্বোধনী দর ছিল ৪৭ টাকা ৮০ পয়সা। আর শেষ কার্যদিবসে ক্লোজিং দর হয়েছে ৪৮ টাকা ৮০ পয়সা। আগের সপ্তাহের চেয়ে এর দর বেড়েছে ১ টাকা বা ২.০৯ শতাংশ।

প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল: গেল সপ্তাহে প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৮৫ কোটি ৫৪ লাখ ৬২ হাজার টাকার। সাপ্তাহিক লেনদেনের তালিকায় এই কোম্পানির অবস্থান ছিলো সপ্তম। বিদায়ী সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে কোম্পানিটির উদ্বোধনী দর ছিল ৫৩ টাকা ৯০ পয়সা। আর শেষ কার্যদিবসে ক্লোজিং দর হয়েছে ৫৭ টাকা ৭০ পয়সা। আগের সপ্তাহের চেয়ে এর দর বেড়েছে ৪ টাকা ২০ পয়সা বা ৭.০৫ শতাংশ।

সাউথইস্ট ব্যাংক: গেল সপ্তাহে সাউথইস্ট ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৮১ কোটি ৬৫ লাখ ১৭ হাজার টাকার। সাপ্তাহিক লেনদেনের তালিকায় এই কোম্পানির অবস্থান ছিলো অষ্টম। বিদায়ী সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে কোম্পানিটির উদ্বোধনী দর ছিল ১৫ টাকা ৪০ পয়সা। আর শেষ কার্যদিবসে ক্লোজিং দর হয়েছে ১৬ টাকা ৫০ পয়সা। আগের সপ্তাহের চেয়ে এর দর বেড়েছে ১ টাকা ১০ পয়সা বা ৭.১৪ শতাংশ।

ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্সের এমডি হলেন শামসুল ইসলাম: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক খাতের কোম্পানি ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্স এন্ড ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন মোহাম্মদ শামসুল ইসলাম। তিনি ৩ বছরের জন্য প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেলেন।

এর আগে মোহাম্মদ শামসুল ইসলাম প্রতিষ্ঠানটির অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে গত ফেব্রুয়ারি মাসে যোগদান করেন। গত মে মাসে বিগত ব্যবস্থাপনা পরিচালক অবসর গ্রহণ করায় কোম্পানির পর্ষদ শামসুল ইসলামকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিযুক্ত করে। ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্সে যোগদানের আগে তিনি গ্লোবাল ইসলামি ব্যাংকে উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

শামসুল ইসলাম এর ব্যাংকিং সেবায় দীর্ঘ প্রায় ৩৩ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে। তিনি এবি ব্যাংক লিঃ এ প্রবেশনারি অফিসার হিসেবে ১৯৮৯ সালে তার কর্মজীবন শুরু করেন। এবি ব্যাংক এ কর্মরত অবস্থায় তিনি বিভিন্ন শাখার ব্যবস্থাপক এবং প্রধান কার্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি তার কর্মজীবনে দেশে বিদেশে বিভিন্ন সেমিনার এবং ট্রেনিং এ অংশগ্রহণ করেন। ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যাংকিং এর উপর এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন।

সপ্তাহজুড়ে ১২ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ১২ কোম্পানি সপ্তাহজুড়ে অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। কোম্পানিগুলো হলো: লাফার্জহোলসিম, সিঙ্গার বাংলাদেশ, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, গ্রামীণফোন ও ইন্ট্রাকো রি-ফুয়েলিং স্টেশন লিমিটেড, গ্রীণডেল্টা মিউচ্যুয়াল ফান্ড, ডিবিএইচ ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড, প্রগতি ইন্সুরেন্স, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, সোনালী লাইফ, বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক।

লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেড: দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন’২১) সহযোগী প্রতিষ্ঠানের আয়সহ লাফার্জহোলসিমের সমন্বিত শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ৯৬ পয়সা। গত বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে সমন্বিত ইপিএস ২৮ পয়সা ছিল। অন্যদিকে অর্থবছরের প্রথম দুই প্রান্তিক তথা ৬ মাসে (জানুয়ারি-জুন’২১) কোম্পানিটির সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ৮৫ পয়সা। গত বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে সমন্বিত ইপিএস ৭৩ পয়সা ছিল।

দুই প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি ক্যাশ ফ্লো ছিল ২ টাকা ৮২ পয়সা, যা গত বছর ১ টাকা ৬৯ পয়সা ছিল। ৩০ জুন, ২০২১ তারিখে সমন্বিতভাবে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ১৫ টাকা ৮০ পয়সা।

সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেড: দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন’২১) সিঙ্গারের শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ২ টাকা ৮৯ পয়সা। গত বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ইপিএস ৮২ পয়সা ছিল। অন্যদিকে অর্থবছরের প্রথম দুই প্রান্তিক তথা ৬ মাসে (জানুয়ারি-জুন’২১) কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৪ টাকা ৬৯ পয়সা। গত বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ইপিএস ২ টাকা ২ পয়সা ছিল।

দুই প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি ক্যাশ ফ্লো ছিল মাইনাস ৩৬ টাকা ৯২ পয়সা, যা গত বছর মাইনাস ৩৬ টাকা ২০ পয়সা ছিল। ৩০ জুন, ২০২১ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ৩৩ টাকা ৭২ পয়সা।

শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড: দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন’২১) সহযোগী প্রতিষ্ঠানের আয়সহ শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের সমন্বিত শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ১ টাকা ১০ পয়সা। গত বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে সমন্বিত ইপিএস ৪২ পয়সা ছিল। অন্যদিকে অর্থবছরের প্রথম দুই প্রান্তিক তথা ৬ মাসে (জানুয়ারি-জুন’২১) ব্যাংকটির সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ৭২ পয়সা।

গত বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে সমন্বিত ইপিএস ১ টাকা ছিল। দুই প্রান্তিকে ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি ক্যাশ ফ্লো ছিল ১ টাকা ২২ পয়সা, যা গত বছর ৪ টাকা ৭৯ পয়সা ছিল। ৩০ জুন, ২০২১ তারিখে সমন্বিতভাবে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ১৮ টাকা ৫২ পয়সা।

গ্রামীণফোন লিমিটেড: দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন’২১) গ্রামীণফোনের শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ৬ টাকা ৩০ পয়সা। গত বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ইপিএস ৫.৩৮ পয়সা ছিল। অন্যদিকে অর্থবছরের প্রথম দুই প্রান্তিক তথা ৬ মাসে (জানুয়ারি-জুন’২১) কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ১২ টাকা ৮৯ পয়সা। গত বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ইপিএস ১৩ টাকা ৩০ পয়সা ছিল। দুই প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি ক্যাশ ফ্লো ছিল ২১ টাকা ৮৮ পয়সা, যা গত বছর ৬ টাকা ১৩ পয়সা ছিল। ৩০ জুন, ২০২১ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ৩৬ টাকা ৯৮ পয়সা।

ইন্ট্রাকো রি-ফুয়েলিং স্টেশন লিমিটেড: সর্বশেষ বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ’২১)কোম্পানিটির সমন্বিত শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৩০ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ১৩ পয়সা ছিল। অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জুলাই’২০-মার্চ’২১) কোম্পানিটির সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ৫৯ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ৫১ পয়সা ছিল। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি ক্যাশ ফ্লো ছিল ১ টাকা ৫৪ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৮৯ পয়সা। ৩১ মার্চ, ২০২১ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য ছিল ১১ টাকা ৯৬ পয়সা।

গ্রীণডেল্টা মিউচ্যুয়াল ফান্ড: গ্রীণডেল্টা মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ৯ মাসে (জুলাই’২০-মার্চ’২১) ইউনিট প্রতি আয় (ইপিইউ) হয়েছে ৯৭ পয়সা। আগের বছর একই সময় লোকসান ছিল ১ টাকা ২ পয়সা। আলোচ্য সময়ে ফান্ডটির বাজার মূল্য অনুযায়ী এনএভি হয়েছে ১১ টাকা ৩০ পয়সা।

ডিবিএইচ ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড: ডিবিএইচ ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ৯ মাসে (জুলাই’২০-মার্চ’২১) ইউনিট প্রতি আয় (ইপিইউ) হয়েছে ১ টাকা ১০ পয়সা। আগের বছর একই সময় লোকসান ছিল ৯৯ পয়সা। আলোচ্য সময়ে ফান্ডটির বাজার মূল্য অনুযায়ী এনএভি হয়েছে ১০ টাকা ১৯ পয়সা।

প্রগতি ইন্সুরেন্স: প্রগতি ইন্সুরেন্সের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৩ টাকা ১১ পয়সা। আগের বছর ইপিএস ছিল ২ টাকা ৫ পয়সা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি ক্যাশ ফ্লো হয়েছে ৫ টাকা ৩৬ পয়সা। আগর বছর একই সময়ে ছিল ৪ টাকা ৫৬ পয়সা। ৩০ জুন, ২০২১ তারিখে সমন্বিতভাবে ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ৫৮ টাকা ৪৭ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ছিল ৫৩ টাকা ৫৭ পয়সা।

ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক: ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন’২১)সহযোগী প্রতিষ্ঠানের আয়সহ ইউসিবির সমন্বিত শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৬৩ পয়সা। গত বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে সমন্বিত ইপিএস ছিল ৪০ পয়সা। অন্যদিকে চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই প্রান্তিকে তথা ৬ মাসে (জানুয়ারি-জুন’২১) ব্যাংকের সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ২ পয়সা।

গত বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে সমন্বিত ইপিএস ছিল ৭২ পয়সা। দুই প্রান্তিকে ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি ক্যাশ ফ্লো ছিল মাইনাস ৮ টাকা ১৫ পয়সা। গত বছরের একই সময়ে ছিল মাইনাস ৯ টাকা ৮৫ পয়সা। ৩০ জুন, ২০২১ তারিখে সমন্বিতভাবে ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ৩০ টাকা ৩৫ পয়সা।

সোনালী লাইফ: সোনালী লাইফ প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ’২১) ১৪ কোটি ৫৭ লাখ টাকার প্রিমিয়াম আয় বেড়েছে। আর লাইফ ফান্ডের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৬৮ কোটি ২৮ লাখ টাকা। আগের বছর একই সময় যার পরিমাণ ছিল ১০ কোটি ৩ লাখ টাকা। আর লাইফ ফান্ডের পরিমাণ ছিল ১০৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।

বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার: বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সমন্বিত আয় (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ৬৪ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে যা ছিল ১ টাকা ৩৬ পয়সা। অন্যদিকে, প্রথম তিন প্রান্তিক তথা ৯ মাসে (জুলাই’২০-মার্চ’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ৫ টাকা ৫ পয়সা। গত বছর একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৪ টাকা ৭৪ পয়সা।

আইপিও পরবর্তী শেয়ার হিসাবে ৯ মাসে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ২ টাকা ৯০ পয়সা। ৩১ মার্চ, ২০২১ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ২৭ টাকা ০৭ পয়সা। আর আইপিও পরবর্তী শেয়ার হিসাবে কোম্পানির এনএভি হয়েছে ২৮ টাকা ৫৩ পয়সা।

আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক: আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন’২১) কোম্পানির শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ১৭ পয়সা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে শেয়ার প্রতি লোকসান ছিল ২৩ পয়সা।

এদিকে ছয় মাসে (জানুয়ারি-জুন’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ৩২ পয়সা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে শেয়ার প্রতি লোকসান ছিল ৩২ পয়সা। একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সমন্বিত সম্পদ (এনএভি) লোকসান হয়েছে ১৭ টাকা ৮৬ পয়সা।

পুঁজিবাজারের ১১ কোম্পানির চারশ’কোটি টাকার লাপাত্তা: পুঁজিবাজারের ব্যাকরণ অনুযায়ী কোম্পানির উৎপাদন ও আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে শেয়ারে বিনিয়োগ করা উচিত। কিন্তু বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের ১১টি কোম্পানি রয়েছে যেগুলোর অস্তিত্বও নেই, আর্থিক অবস্থায়ও নেই। তারপরও কোম্পানিগুলোতে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ রয়েছে চার শত কোটি টাকার উপরে।

বর্তমানে কোম্পানিগুলো ওভার দ্য কাউন্টার (ওটিসি) মার্কেটে নামেমাত্র বাসিন্দ। প্রকৃতপক্ষে কোম্পানিগুলোর কোথাও কোন অস্তিত্ব নেই, কোম্পানিগুলো লাপাত্তা। বিনিয়োগকারীদের হাতে থাকা কোম্পানিগুলোর শেয়ারই তাদের এখন একমাত্র ভরসা।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওটিসি মার্কেটে অস্তিত্বহীন কোম্পানিগুলো হলো: বাংলাদেশ ইলেকট্রিসিটি মিটার কোম্পানি বেমকো, চিক টেক্সটাইল, রাসপিট ডেটা, রাসপিট ইনকরপোরেশন, এম হোসেন গার্মেন্টস, ফার্মাকো, আমান সি ফুড, জার্মান বাংলা ফুড, মেটালিক্স, রাঙামাটি ফুড ও সালেহ কার্পেট। এসব কোম্পানিতে বিনিয়োগকারীদের প্রায় চার কোটি ৮৭ লাখ শেয়ার রয়েছে, যার আনুমানিক বাজারমূল্য ৪০০ কোটি টাকার বেশি।

এ কারণে এখনও এসব কোম্পানির খোঁজ করেন বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখেন, এসব প্রতিষ্ঠানের কোনো অস্তিত্বই নেই। এর কোথাও আবাসিক বাসা, আবার কোথাও বেসরকারি ক্লিনিক ও অন্য প্রতিষ্ঠান।

কোম্পানির অস্তিত্ব না থাকায় এসব কোম্পানির শেয়ার নিয়ে বেকায়দায় পড়েছেন ভুক্তভোগী বিনিয়োগকারীরা। লাভ লোকসানের হিসাব ভুলে গিয়ে কয়েক বছর ধরে এসব কোম্পানির ঠিকানা খুঁজে হয়রান হচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু সরেজমিনে গেলে মিলছে না কোম্পানির খোঁজ।
এসব কোম্পানির মধ্য ওয়েব সাইটে ফার্মাকোর ঠিকানা দেয়া রয়েছে ৫০/১ পুরানা পল্টন লাইন, ঢাকা। কয়েক বছর আগে এ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার কিনেছিলেন বিনিয়োগকারী আমিনুল হক।

ঠিকানা অনুযায়ী কোম্পানির খোঁজে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেখানে গিয়ে কোম্পানির কোন অফিস পাওয়া যায়নি। আশাহত হয়ে ফিরে আসেন তিনি। তার মতো হাজার বিনিয়োগকারী ঠিকানা খুঁজে পাচ্ছেন না ওটিসিতে থাকা মোট ১১ কোম্পানির অস্তিত্ব। এসব কোম্পানির অস্তিত্ব কেবল কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ রয়েছে। বস্ত্র খাতের এম হোসেন গার্মেন্টেস।

ডিএসইতে দেয়া তথ্য অনুযায়ী, কোম্পানির ঠিকানা রাজধানীর বনানীতে। কিন্তু সেখানে গিয়ে এ কোম্পানির অস্তিত্ব দেখা যায়নি। ভবনের কেয়ারটেকার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, তিনি সাত বছর ধরে এখানে চাকরি করছেন। কিন্তু কখনও এম হোসেন গার্মেন্টসের নামই শোনেননি।

একই অবস্থা সালেহ কার্পেটের। ঠিকানা অনুযায়ী বন্দরনগরী চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে কোম্পানিটির কার্যালয়। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে প্রায়ই সেখানে হাজির হন বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু বর্তমানে সেখানে এ কোম্পানির অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। জানা গেছে, পারিবারিক কলহের জেরে অফিসের আসবাবপত্র বিক্রি করে উধাও হয়ে গেছে কোম্পানিটি। ২০১৪ সালে সর্বশেষ এ কোম্পানির শেয়ার কেনাবেচা হয়।

এ প্রসঙ্গে আলাপ হয় বিনিয়োগকারী হেলাল উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, এসব কোম্পানির শেয়ার নিয়ে আমাদের ভোগান্তির শেষ নেই। এসব কোম্পানির শেয়ার বিক্রি করাও মুশকিল। কারণ বছরের পর বছর অপেক্ষা করেও এর ক্রেতা মেলা ভার। আমরা যদি অভিহিত দরেও এসব শেয়ারের টাকা পেতাম তাহলে নিষ্কৃতি মিলত।

ডিএসইতে রাসপিট ডেটা ও রাসপিট ইনকরপোরেশনের প্রোফাইলের ঠিকানা অনুযায়ী রাজধানীর গ্রিন রোডে ১৯ একে কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে রয়েছে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তানভির জালারের চেম্বার। এছাড়া ওই ভবনের চতুর্থ তলায় অন্য দুটি কোম্পানির অফিস রয়েছে। সেখানে কর্মরত সুজন মিয়া নামে এক কর্মচারি জানান, এ ভবনে তিনি তিন বছরের বেশি সময় চাকরি করছেন। কিন্তু ভবনটিতে কখনও ওই দুই কোম্পানির অফিস দেখেননি।

তিনি জানান, কোম্পানির খোঁজে প্রায় বিনিয়োগকারী ও পুলিশ আসেন। কখনও আবার সাংবাদিকরা এসে কোম্পানির খোঁজখবর জানতে চান। এ কারণে ঝামেলা এড়াতে আগের ভাড়াটিয়া এই ফ্লোর ছেড়ে সাততলায় চলে গেছেন। অন্যদিকে ওয়েবসাইটে দেয়া ঠিকানায় খুঁজে পাওয়া যায়নি বেমকো ও চিক টেক্সটাইল কোম্পানি কর্তৃপক্ষকে। একই অবস্থা অন্য কোম্পানিগুলোর। বিনিয়োগকারী থেকে বিএসইসি, ডিএসই কেউই এসব কোম্পানির অস্তিত্ব খুঁজে পাচ্ছেন না।

বিষয়টি নিয়ে কথা বললে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিএসইর একজন পরিচালক বলেন, এসব কোম্পানির শেয়ার নিয়ে বিনিয়োগকারীদের ঝামলো চলছে দীর্ঘদিন ধরে। বিষয়টি নিয়ে তারা বারবার নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে গিয়েছেন। কিন্তু বিএসইসির আগের কমিশন বিষয়টি নিয়ে উদাসীন থাকায় বিষয়টির সুরাহা হয়নি। তিনি বলেন, আমার জানামতে বর্তমান কমিশন বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে।

এ বিষয়ে বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম সংবাদ মাধ্যমকে দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছেন, আমরা ওটিসিতে থাকা সব কোম্পানি নিয়ে কাজ করছি। কোম্পানিগুলো নানা অজুহাতে ওটিসি মার্কেটে পড়ে থাকতে চায়। কারণ এখানে থাকা তাদের জন্য সুবিধা। তাই বিনিয়োগকারীদের যাতে সুবিধা হয় সে লক্ষে কাজ করছি।

পুঁজিবাজারের দুই কোম্পানি থেকে ২ হাজার কোটি টাকা লুটপাট: সাম্প্রতিককালে আর্থিক খাতে বড় কেলেঙ্কারির হোতা প্রশান্ত কুমার হালদার (পিকে হালদার) ও তার সহযোগীদের যোগসাজশে পুঁজিবাজারের দুই প্রতিষ্ঠান হতে লুটপাট হয়েছে দুই হাজার কোটি টাকা। প্রতিষ্ঠান দুটি হলো-ইন্টারন্যাশনাল লিজিং ও এফএএস ফাইন্যান্স।

শুধুমাত্র একটি কম্পিউটার ব্যবহার করে ৩০টি কাগুজে প্রতিষ্ঠান তৈরি করে মর্টগেজ ছাড়াই ঋণ নিয়ে ওই টাকা আত্মসাৎ করা হয়। আরবি এন্টারপ্রাইজ, জিঅ্যান্ডজি এন্টারপ্রাইজ, তামিম অ্যান্ড তালহা এন্টারপ্রাইজ, ক্রসরোড কর্পোরেশন, মেরিন ট্রাস্ট, নিউটেক, এমএসটি মেরিন, গ্রিন লাইন ডেভেলপমেন্ট, মেসার্স বর্ণসহ প্রায় ৩০টির মতো অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করা হয়েছে। যার রেকর্ডপত্র এখন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধান টিমের কাছে।

আর্থিক খাতে বড় ধরনের এই অনিয়মের সঙ্গে পিকে হালদার, ওইসব প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও এমডিসহ প্রায় ৭৫ জনের সম্পৃক্ততার প্রমাণ মিলেছে। তাদের আসামি করে আরও ৩০টি মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে দুদকের ঊর্ধ্বতন সূত্রে জানা গেছে। পিকে হালদার সিঙ্গাপুর, ভারত এবং কানাডায় চার শতাধিক কোটি টাকা পাচার করেছেন বলে দুদকের অনুসন্ধানে প্রমাণ পাওয়া গেছে।

দুদক পরিচালক ও অনুসন্ধান টিমের তদন্ত কর্মকর্তা বেনজীর আহমেদ এ বিষয়ে বলেন, আমাদের অনুসন্ধান চলমান রয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটন করতে। করোনা মহামারির কারণে অনুসন্ধান কাজের গতি কিছুটা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। অনুসন্ধান টিমের সুপারিশের আলোকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে কমিশন। মামলা হলে জনসংযোগ দফতরের মাধ্যমে তা জানতে পারবেন।

অনুসন্ধান কর্মকর্তা ও উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বিষয়টিতে বলেন, এর আগে পিকে হালদার ইস্যুতে আমাদের টিম ১৫টি মামলা করেছে। অনুসন্ধান পর্যায়ে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করছি। এর বাইরে জানতে হলে ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুদকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং ও এফএএস ফাইন্যান্স প্রায় ৩০টি কাগুজে প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে মর্টগেজ ছাড়াই প্রায় ২০০০ কোটি টাকা জালিয়াতিপূর্ণ ঋণ প্রদানের রেকর্ডপত্র পাওয়া গেছে।

অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ নিয়ে ভিন্ন খাতে ওই অর্থ বের করে নেওয়া হয়। ওই ঋণ পরিশোধ হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। পি কে হালদার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান, এমডিসহ প্রায় ৭৫ জনকে আসামি করার মতো প্রমাণ পাওয়া গেছে।

কনিকা এন্টারপ্রাইজ: অস্তিত্বহীন কাগুজে এক প্রতিষ্ঠান কনিকা এন্টারপ্রাইজ। গুলশান এভিনিউ নর্থ বাণিজ্যিক এলাকায় ঠিকানা ব্যবহার করা কনিকা এন্টারপ্রাইজের মালিক দেখানো হয়েছে রাম প্রসাদ রায়কে। ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহ করার জন্য ওই বছরের ১৩ ডিসেম্বর এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে ৪৫ কোটি টাকার স্বল্পমেয়াদি ঋণ মঞ্জুর করা হয়। অথচ পিকে হালদারের মালিকানাধীন ২৫.৬০ কোটি টাকা মূল্যের ২০০ শতাংশ জমি বন্ধক হিসেবে দেখানো হয়। ঋণের বিপরীতে হিসাবটিতে কোনো আদায় বা বিক্রয় লব্ধ অর্থ জমা প্রদান করার নজির পায়নি দুদকে।

মুন এন্টারপ্রাইজ: ২০১৬ সালের ৬ মার্চ শংখ বেপারীর মালিকানাধীন এ প্রতিষ্ঠানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২২ মার্চ এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের ১৭৬তম পরিচালনা পর্ষদ সভায় ৩৫ কোটি টাকার স্বল্পমেয়াদি ঋণ মঞ্জুর হয়। এখানেও ঋণের বিপরীতে প্রশান্ত কুমার হালদারের মালিকানাধীন প্রায় ১৯.৩৪ কোটি টাকার মূল্যে ১৫০ শতাংশ জমি বন্ধক রাখা হয়। অবাক করার বিষয় এই প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা ও কনিকা এন্টারপ্রাইজের ঠিকানা একই। এখানেও ঋণের বিপরীতে হিসাবটিতে কোনো আদায় বা বিক্রয় লব্ধ অর্থ জমা প্রদান করার নজির ছিল না।

মেসার্স বর্ণ : অনঙ্গ মোহন রায়ের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান বর্ণ। পুরানা পল্টনের ঠিকানা ব্যবহার করা প্রতিষ্ঠানটির ধান, চাল, গম, ভুট্টা, মসুর ডালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য আমদানি ও সরবরাহকারী ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য ২০১৪ সালের ২২ ডিসেম্বর ঋণের জন্য আবেদন করে। এর পরপরই এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের ১৬৩তম পরিচালনা পর্ষদ ছয় বছর মেয়াদি ৩৮ কোটি টাকার ঋণ মঞ্জুর করা হয়।

ঋণের বিপরীতে প্রায় সাড়ে ৩৩ কোটি টাকার ২১.৯০ শতাংশ জমি জামানত রাখা হয়। অনঙ্গ মোহন রায় অরিয়েল লিমিটেডে ও বর্ণ দুটি প্রতিষ্ঠানের মালিক। ঋণের ওই বাংলাদেশ ব্যাংকের চেকের মাধ্যমে ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্সের হস্তান্তর করা হয়। পরবর্তীতে তা অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়।

আনান কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড : আলোচিত উজ্জ্বল কুমার নন্দী ও অনিতা করের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান আনান কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। যদিও ২০১৮ সালের ৩ অক্টোবর তারা পদত্যাগ করলে নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে অভিজিৎ অধিকারী তীর্থ ও এমডি হিসেবে পিকে হালদারের ভাই প্রিতীশ কুমার হালদার দায়িত্ব নেন।

কেমিক্যাল সামগ্রী সরবরাহ ও ব্যবসা সম্প্রসারণের উদ্দেশ্যে নতুন একটি প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে ঋণের আবেদনের বিপরীতে এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের অনুকূলে ৪০ কোটি টাকার স্বলমেয়াদি ঋণ মঞ্জুর করা হয়। ঋণের বিপরীতে পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের ১ কোটি ৪৪ লাখ ৪০ হাজার ৯০০টি শেয়ার জামানত রাখা হয়।

নিউটেক এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড, ন্যাচার এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড, দেয়া শিপিং লি. ও এমটিবি মেরিন লি. নামীয় নামসর্বস্ব ৪টি প্রতিষ্ঠান তৈরি করা হয়। এর মধ্যে নিউটেক এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড ও ন্যাচার এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের রেজিস্টার্ড অফিস ও ব্যবসায়িক অফিস একই। প্রতিষ্ঠান দুটির রেজিস্টার্ড অফিসে কোনো অফিসিয়াল কার্যক্রম খুঁজে পাওয়া যায়নি ও বাড়িটি পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে।

অথচ প্রতিষ্ঠান ৪টির নামে এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড হতে প্রায় ১৭৪ কোটি টাকার ঋণ প্রদান করা হয়েছে। ৪টি ঋণগ্রহীতা প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে বিতরণকৃত ঋণের অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকের চেকের মাধ্যমে অন্য গ্রাহকের হিসাবে স্থানান্তর করা হয়।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, ঋণসমূহের প্রকৃত সুবিধাভোগীকে আড়াল করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের চেকের অপব্যবহার হয়ে হয়েছে। একই প্রক্রিয়ায় অন্যান্য আরও বেশকিছু প্রতিষ্ঠান থেকেও একই প্রক্রিয়ায় অর্থ আত্মসাৎ হয়েছে।

পি কে হালদারের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ: এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি বিভিন্ন কৌশলে নামে-বেনামে অসংখ্য কোম্পানি খুলে শেয়ারবাজার থেকে বিপুল পরিমাণ শেয়ার কেনেন এবং ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ও পরে নিজের আত্মীয়, বন্ধু ও সাবেক সহকর্মীসহ বিভিন্ন ব্যক্তিকে পর্ষদে বসিয়ে অন্তত চারটি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ নেন।

কোম্পানিগুলো হলো : ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (আইএলএফএসএল), পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড এবং বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি (বিআইএফসি)। এসব কোম্পানি থেকে তিনি ঋণের নামে বিপুল অঙ্কের টাকা সরিয়ে বিদেশে পাচার করেছেন।

শুধু জালিয়াতি বা অর্থ আত্মসাৎ করেই থেমে যাননি পিকে হালদার। আত্মসাৎকৃত অর্থে বিলাসী জীবন কাটিয়েছেন তিনি। জমি কিনেছেন। আবার সে অর্থের একটি অংশ পাচার করেছেন সিঙ্গাপুর, ভারত ও কানাডায়। এখন পর্যন্ত দুদকের অনুসন্ধানে তার বিরুদ্ধে ৪০০ কোটির বেশি টাকা পাচারের তথ্য উঠে এসেছে। এছাড়া কানাডায় পিকে হালদারের শপিং কমপ্লেক্স, বিলাসবহুল বাড়িরও তথ্য পেয়েছে দুদক।

পি কে হালদারের বিরুদ্ধে মামলা: ক্যাসিনো অভিযানের ধারাবাহিকতায় প্রায় ২৭৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে প্রথম মামলা করে দুদক। গত ৮ জানুয়ারি দুদকের অনুরোধে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা দিয়ে রেড অ্যালার্ট জারি করে ইন্টারপোল। দুদক উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধানের নেতৃত্বে আরও একটি টিম তার আর্থিক কেলেঙ্কারির বিষয়টি অনুসন্ধান করছে।

ওই টিম এরই মধ্যে ১৫টি মামলা করেছে। ইন্টারন্যাশনাল লিজিং থেকে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা ভুয়া নামে ঋণ উত্তোলন করে আত্মসাতের অভিযোগে ৩৭ জনের বিরুদ্ধে ১০টি মামলা এবং ৩৫০ কোটি ৯৯ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ৩৩ শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পৃথক পাঁচটি মামলা করে দুদক।

গ্রেফতার ও স্বীকারোক্তি: পি কে হালদার কেলেঙ্কারিতে এখন পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছেন ১১ জন। যাদের মধ্যে উজ্জ্বল কুমার নন্দী ছাড়াও পি কে হালদারের সহযোগী শংখ বেপারী, রাশেদুল হক এবং সর্বশেষ অবান্তিকা বড়াল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।