দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ব্লক মার্কেটে ৩৭টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে ৫ কোম্পানি ব্লক মার্কেটে চমক লেনদেন হয়েছে। ৩৭ টি কোম্পানির ৩৯ কোটি ৮৮ লাখ ৯৪ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

কোম্পানিগুলোর ১ কোটি ১৫ লাখ ৬৩ হাজার ৬৭৫টি শেয়ার ৬৭ বার হাত বদল হয়েছে। এর মাধ্যমে কোম্পানিগুলোর ৩৯ কোটি ৮৮ লাখ ৯৪ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৭ কোম্পানির বড় লেনদেন হয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি শেয়ার লেনদেন হয়েছে ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্সের। কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৬ কোটি ৮৬ লক্ষ ৩৯ হাজার টাকার।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাউথ ইস্ট ব্যাংকের ৬ কোটি ১৯ লক্ষ ৯১ হাজার টাকার, তৃতীয় সর্বোচ্চ ফরচুন সুজের ৪ কোটি ৩৫ লক্ষ ১৪ হাজার টাকার, চতুর্থ সর্বোচ্চ তিতাস গ্যাসের ৩ কোটি ৭৮ লক্ষ টাকার, পঞ্চম সর্বোচ্চ ফুয়াং সিরামিকের ৩ কোটি ৭৬ লক্ষ ১৫ হাজার টাকার, ষষ্ঠ সর্বোচ্চ এইচআর টেক্সটাইলের ২ কোটি ৬৮ লক্ষ ৪০ হাজার টাকার, সপ্তম সর্বোচ্চ এক্সিম ব্যাংকের ২ কোটি ৪ লক্ষ টাকার লেনদেন হয়েছে।

তাছাড়া, ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের ১ কোটি ৯৬ লক্ষ ২২ হাজার টাকার, আইডিএলসির ১ কোটি ৫৩ লক্ষ টাকার, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের ৭৮ লক্ষ টাকার, কেয়া কসমেটিকের ৭২ লক্ষ টাকার, পাওয়ার গ্রীডের ৬০ লক্ষ ৬৯ হাজার টাকার, ফাইন ফুডসের ৫৫ লক্ষ টাকার, ব্রাক ব্যাংকের ৬০ লক্ষ টাকার, জিবিবি পাওয়ারের ৪৮ লক্ষ ৮০ হাজার টাকার, আমান কটনের ৪২ লক্ষ টাকার, কাট্টালি টেক্সটাইলের ৩৪ লক্ষ ৮৮ হাজার টাকার,

ই-জেনারেশনের ৩০ লক্ষ ৯৬ হাজার টাকার, গ্রামীণফোনের ২৮ লক্ষ ৩৩ হাজার টাকার, সিএপিএমআইবিবিএল মিউচুয়াল ফান্ডের ২০ লক্ষ টাকার, বিকনফার্মার ১৭ লক্ষ ২৭ হাজার টাকার, ডাচ বাংলা ব্যাংকের ১৫ লক্ষ ৯৮ হাজার টাকার, ওরিয়ন ফার্মার ১১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার, জেএমআই সিরিঞ্জের ১০ লক্ষ ৬৬ হাজার টাকার, সাইফ পাওয়ারের ১০ লক্ষ ২ হাজার টাকার, প্যারামাউন্টের ৯ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকার,

কনফিডেন্স সিমেন্টের ৯ লক্ষ ৭৯ হাজার টাকার, মারিকোর ৯ লক্ষ ৪৪ হাজার টাকার, সামিট অ্যালায়েন্স পোর্টের ৮ লক্ষ ২৯ হাজার টাকার, পিএইচপি মিউচুয়াল ফান্ডের ৭ লক্ষ ৭৮ হাজার টাকার, এটিসিএসএল গ্রোথ ফান্ডের ৬ লক্ষ ৬০ হাজার টাকার, স্ট্যান্ডার্ড ইন্সুরেন্সের ৬ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকার, কুইন সাউথের ৬ লক্ষ ২৪ হাজার টাকার, জেনেক্স ইনফোসিসের ৫ লক্ষ ৫২ হাজার টাকার, ডোরিন পাওয়ারের ৫ লক্ষ ৩৬ হাজার টাকার, ভিএফএস থ্রেডের ৫ লক্ষ ৩২ হাজার টাকার, ক্রিস্টাল ইন্সুরেন্সের ৫ লক্ষ ৮ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে।

আর্থিক খাতের ৩ কোম্পানিকে সুদের লোভনীয় অফারে শোকজ: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক খাতের ৩ কোম্পানিকে লোভনীয় সুদের অফারে শোকজ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কোম্পানি ৩টি বাংলাদেশ ব্যাংকের আইনকে বৃদ্ধাঙ্গলি দেখিয়ে এ ধরনের আমানক সংগ্রহের প্রতারনা করছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক সুত্রে জানা গেছে। মুলত খেলাপি ঋণে জর্জরিত তারা, গ্রাহকদের জমানো টাকা ফেরতও দিতে পারছে না।

তারপরও সুদের লোভনীয় অফার দেখিয়ে আমানত (অর্থ) সংগ্রহের চেষ্টা করছে দেশের ব্যাংকবহির্ভূত কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এসব প্রতিষ্ঠান এসএমএসের মাধ্যমে আমানতকারীদের দিচ্ছে এমন প্রলোভন! সরকারের পক্ষ থেকে সিঙ্গেল ডিজিট (একক সংখ্যা) সুদহারের কথা বলা হলেও প্রতিষ্ঠানগুলো ১০ শতাংশেরও বেশি সুদে আমানত সংগ্রহ করছে। এসব কারণে ফার্স্ট ফাইন্যান্স, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স এবং প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডকে শোকজ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

ফিক্সড ডিপোজিটে বাৎসরিক সাড়ে নয় শতাংশ সুদের প্রস্তাব দিয়ে গ্রাহকদের কাছে এসএমএস পাঠিয়েছে ফার্স্ট ফাইন্যান্স। এ বিষয়ে জানতে এসএমএসে দেওয়া ফোন নম্বরে যোগাযোগ করা হলে প্রতিষ্ঠানটির এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট (এভিপি) গোলাম মহিউদ্দিন জানান, তিন প্রক্রিয়ায় ইন্টারেস্ট পাওয়া যাবে। প্রতি মাসে, তিন মাস অন্তর এবং এক বছর পর লাভ ও আসল উত্তোলনের সুযোগ।

সরকারের পক্ষ থেকে সিঙ্গেল ডিজিট (একক সংখ্যা) সুদহারের কথা বলা হলেও প্রতিষ্ঠানগুলো ১০ শতাংশেরও বেশি সুদে আমানত সংগ্রহ করছে। এসব কারণে ফার্স্ট ফাইন্যান্স, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স এবং প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডকে শোকজ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এরপরও ফার্স্ট ফাইন্যান্স কীভাবে সাড়ে নয় শতাংশ সুদ দেবে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘ছয়-নয় নির্দেশনা ব্যাংকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য নয়। আমরা (আর্থিক প্রতিষ্ঠান) ব্যাংকের চেয়ে আরও ছয় শতাংশ বেশি সুদে ঋণ দিতে পারি। তাই এ অফার দেওয়া হয়েছে। ২৮ বছর ধরে ফার্স্ট ফাইন্যান্স সুনামের সঙ্গে ব্যবসা করছে। কোনো অনিয়মের সঙ্গে জড়িত নয়।’

এ বিষয়ে জানতে ফার্স্ট ফাইন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ মোশাররফ হোসাইনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু কোনো মাধ্যমে তাকে পাওয়া যায়নি। পরে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান খান মোহাম্মদ মঈনুল হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি বলেন, ‘উচ্চ সুদে আমানত সংগ্রহের বিষয়ে বোর্ডে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এটি ম্যানেজমেন্টের বিষয়, তারা হয়তো সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শোকজের বিষয়টিও আমি জানি না। এমডির সঙ্গে কথা বললে জানতে পারব।’

আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে আমানত সংগ্রহের জন্য কারও মোবাইল ফোনে এসএমএস পাঠানোর ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ২০১৮ সালের ২৬ জুন জারি করা সার্কুলারে বলা হয়, কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান উচ্চ সুদহারে আমানত সংগ্রহের জন্য পেশাজীবীসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের গ্রাহকের মোবাইল ফোনে এসএমএস পাঠাচ্ছে, যা কাঙ্ক্ষিত নয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিব্রতকর।

এ প্রবণতা থেকে বিরত থাকতে সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দেয়া হলো। উচ্চ সুদে আমানত সংগ্রহের বিষয়ে বোর্ডে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এটি ম্যানেজমেন্টের বিষয়, তারা হয়তো সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শোকজের বিষয়টিও আমি জানি না। এমডির সঙ্গে কথা বললে জানতে পারব। তবুও উচ্চ সুদের প্রলোভন দেখিয়ে গ্রাহকের মোবাইল ফোনে এসএমএস পাঠানো বন্ধ হয়নি। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করা হচ্ছে। এ ধরনের এসএমএস কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনেক কর্মকর্তার মোবাইলেও এসেছে। অস্বাভাবিক সুদে আমানতের এসএমএসের বিষয়টি নিয়ে কর্মকর্তারাও বিব্রত।

উচ্চ সুদের প্রলোভনের এমন এসএমএস পাঠিয়েছে প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি ফিক্সড ডিপোজিট রেট (এফডিআর) অফারে ‘সঞ্চয় প্লাস’ নামক মাসিক আয় স্কিমে এক লাখ টাকায় প্রতি মাসে এক হাজার ২২ টাকা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির ফান্ড ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্ট থেকে পাঠানো এসএমএসে এ অফার দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে প্রতিষ্ঠানটির সিনিয়র রিলেশনশিপ অফিসার মাঈনুল হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি বলেন, আগামী ১ আগস্ট অফার শেষ হয়ে যাচ্ছে। যদি এ অফার নিতে চান, দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। চাইলে আপনার অফিস কিংবা বাসায় গিয়ে সব ধরনের কাগজপত্রসহ ফর্ম পূরণ করে আনা হবে। অনলাইন ও চেকে ডিপোজিটের টাকা জমা দিতে পারবেন। প্রতি মাসে আপনার অ্যাকাউন্টে সরাসরি মুনাফার অর্থ চলে যাবে।
উচ্চ সুদে আমানত নিয়ে কীভাবে প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ব্যবসা করবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা এসএমই খাতে ঋণ দিই।

এখনও অনেক এসএমই উদ্যোক্তা ১৪ থেকে ১৫ শতাংশে ঋণ নেওয়ার জন্য বসে আছেন। তাই ১০ শতাংশে আমানত নিলেও আমাদের লোকসান নেই।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে গ্রাহকদের এসএমএস পাঠিয়েছে আরেক আর্থিক প্রতিষ্ঠান লংকাবাংলা ফাইন্যান্স। তারা চালু করেছে ‘কুইক সঞ্চয়’ নামের ডিপোজিট স্কিম। তাদের পাঠানো এসএমএসে বলা হয়েছে, মাত্র ৫৪ মাসে জমার অর্থ তিনগুণ করার সুবিধা দিচ্ছে তারা। নির্দেশনা লঙ্ঘন করে গ্রাহকদের এসএমএস পাঠানোর মাধ্যমে উচ্চ সুদে আমানত সংগ্রহের বিষয়টি নজরে এসেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের।

এজন্য তিন প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে কারণ দর্শাতে (শোকজ) চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। রোববার (২৫ জুলাই) পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘প্রলোভনে আমানত সংগ্রহ কার্যক্রম পরিচালনা করায় আপনাদের বিরুদ্ধে কেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন ১৯৯৩-এর ৪২ ধারায় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে এর কারণ দর্শাতে বলা হলো।’

কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বেশি সুদের অফার দিয়ে গ্রাহকদের এসএমএস দিয়েছে। এটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনার পরিপন্থী। প্রতিষ্ঠানগুলোকে কারণ দর্শানোর জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে। চিঠির উত্তরের পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন ১৯৯৩ এর ৪২ ধারা অনুযায়ী, আইনের কোনো বিধান বা বিধানের অধীন প্রদত্ত কোনো আদেশ বা নির্দেশ অমান্য করলে অনধিক লাখ টাকা অর্থদণ্ড হতে পারে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বেশি সুদের অফার দিয়ে গ্রাহকদের এসএমএস দিয়েছে। এটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনার পরিপন্থী। প্রতিষ্ঠানগুলোকে কারণ দর্শানোর জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে। চিঠির উত্তরের পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত মার্চে ব্যাংকগুলো গড়ে চার দশমিক ৪০ শতাংশ সুদে আমানত নিয়েছে। যেখানে এক বছর আগে আমানতের গড় সুদহার ছিল পাঁচ দশমিক ২৪ শতাংশ। ঋণের গড় সুদহার এক বছর আগে ছিল আট দশমিক ১৮ শতাংশ। গত মার্চে তা কমে দাঁড়ায় সাত দশমিক ৪০ শতাংশে। ভালো প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রভাবে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর গড় সুদহারও কমতির দিকে রয়েছে।

পুঁজিবাজার গতিশীলতার পেছনে অনেক কারণ রয়েছে: রকিবুর রহমান: করোনাভাইরাস অতিমারির প্রভাব মোকাবেলায় শিল্প খাতে দেওয়া সরকারের প্রণোদনার টাকার সিংহভাগ পুঁজিবাজারে চলে গেছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক ও সাবেক প্রেসিডেন্ট মোঃ রকিবুর রহমান।

তিনি দাবি করেছেন, প্রণোদনার কোনো টাকা পুঁজিবাজারে আসেনি। গত রোববার রাতে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি এই দাবি করেন। বিবৃতিতে তিনি বলেন, অনেক দিন পর সবার সম্মিলিত চেষ্টায় দেশের পুঁজিবাজার যখন স্থিতিশীলতার দিকে যাচ্ছে, তখন এই ধরনের বক্তব্য দায়িত্বজ্ঞানহীন ও দুঃখজনক। তিনি এই বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, তারা যেন এতে বিভ্রান্ত ও আতঙ্কিত না হন।

রকিবুর বলেন, মুদ্রাবাজার ও পুঁজিবাজার গভীরভাবে সম্পৃক্ত। তাই বাংলাদেশ ব্যাংকের উচিত পুঁজিবাজারে নেতিবাচক কোনো মন্তব্য না করা, কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া। তিনি বলেন, পুঁজিবাজারের বর্তমান গতিশীলতা প্রণোদনার টাকার কারণে হয়নি। এর পেছনে অনেকগুলো কারণ আছে। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির বর্তমান কমিশনের নানামুখী উদ্যোগের ফলে বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বেড়েছে।

ব্যাংকগুলোতে আমানতের সুদের হার কমতে কমতে ৫ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। তাই ব্যাংকে আমানত রাখা আর লাভজনক নয়। তাই অসংখ্য মানুষ ব্যাংকে মেয়াদী আমানত না রেখে সেই টাকা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করছেন। অন্যদিকে নানা ধরনের বিধিনিষেধের কারণে এখন চাইলেও নির্দিষ্ট সীমার বেশি টাকার সঞ্চয়পত্র কেনা যায় না। সেখানে বিনিয়োগের সুযোগ সংকোচিত হয়ে আসায় উদ্বৃত্ত সঞ্চয় পুঁজিবাজারমুখী হয়েছে।

ডিএসইর সাবেক এই প্রেসিডেন্ট বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক যে প্রতিবেদনে প্রণোদনার টাকা পুঁজিবাজারে এসেছে বলে উল্লেখ করেছে, সেখানে কতগুলো প্রতিষ্ঠানের টাকা এসেছে, কত টাকা এসেছে তার কোনো নির্দিষ্ট পরিসংখ্যান দেওয়া হয়নি।

তিনি দাবি করেন, বাজারে ১০ কোটি, ২০ কোটি বা ৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ রয়েছে, এমন অসংখ্য বিনিয়োগকারীকে চেনেন তিনি। তাদের কেউ প্রণোদনার টাকা পাননি। কারণ এদরে কারোরই কোনো শিল্প-কারখানা নেই। তাই বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনের দাবির ব্যাপারে তিনি ও পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা এত সন্দিহান।

তিনি ক্ষোভের সাথে বলেন, যদি প্রণোদনার কিছু টাকা পুঁজিবাজারে এসেও থাকে, তাহলে তার দায় বাংলাদেশ ব্যাংকের। তাদের মনিটরিং ফাঁকি দিয়ে পুঁজিবাজারে টাকা স্থানান্তরের কোনো সুযোগ থাকার কথা নয়। যথাসময়ে মনিটরিং না করে এতদিন পর এমন দাবি করার বিষয়টি নিজেদের দায়িত্ব পরিপালনে ব্যর্থতার নামান্তর।

ডিএসইর এই পরিচালক বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি আহ্বান জানান, যদি কিছু প্রতিষ্ঠান সত্যিই প্রণোদনার টাকার অংশবিশেষ পুঁজিবাজারে নিয়ে এসে থাকে, তাহলে এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে টাকা ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পরযাপ্ত সময় দিতে হবে, যাতে বাজারে নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে। হার্ড ল্যান্ডিংয়ের পরিবর্তে যেন সফটল্যান্ডিং হয়।

তিনি বলেন, ২০১০ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের গাফিলতি আর উদাসীনতার সুযোগে অনেক ব্যাংক পুঁজিবাজারে সীমার অতিরিক্ত বিনিয়োগ করেছিল। বাজারে যখন বাবল তৈরির আলামত দেখা যাচ্ছিল, তখনই আমরা সবাইকে সতর্ক করেছিলাম। তখন বাংলাদেশ ব্যাংকের টনক নড়েনি। কিন্তু বাবল তৈরি হওয়ার পর হঠাৎ তারা নড়েচড়ে বসে।

ব্যাংকগুলোকে মাত্র ৬ মাস সময় দিয়ে তার মধ্যে বিনিয়োগ নির্ধারিত সীমা নামিয়ে আনতে বলে। অল্প সময়ে বিনিয়োগ সমন্বয়ের জন্য ব্যাংকগুলোকে অল্প সময়ে বিপুল পরিমাণ শেয়ার বিক্রি করতে হয়। কিন্তু এত শেয়ার কেনার মত ক্রেতা না থাকায় বাবল বাস্ট করে। বাজারে বিপরযয় নামে। লাখ লাখ বিনিয়োগকারী ক্ষতিগ্রস্ত হন। অনেকে এখনো সেই ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারেনি। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক যদি তখন ২ বছর সময় দিয়ে প্রতি তিন মাস অন্তর বিনিয়োগ কমিয়ে আনার ধাপ নির্ধারণ করে দিত তাহলে বাজারে ওই বিপরযয় নামতো না।

মোঃ রকিবুর রহমান বলেন, শুধু ২০১০ সালে নয়, এর পরেও বহুবার বাংলাদেশ ব্যাংককে পুঁজিবাজারের স্বার্থ বিরোধী নানা সিদ্ধান্ত নিতে দেখা গেছে। বছরখানেক আগে তারা ব্যাংকগুলোর লভ্যাংশ ঘোষণা করা টাকা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বিতরণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। পরে আমাদের দাবির মুখে সেই অবস্থান থেকে তারা সরে আসে।

তিনি বলেন, পরিশোধিত মূলধন বাড়ানোর অজুহাতে বাংলাদেশ ব্যাংক তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোকে নগদ লভ্যাংশ না দিয়ে বোনাস দিতে উৎসাহ যুগিয়ে গেছে। এতে কিছু সুযোগসন্ধানী অসাধু ব্যাংকের উদ্যোক্তা ক্রমাগত বোনাস দিতে দিতে মূলধনের আকার অস্বাভাবিকরকম বাড়িয়ে ফেলেছে। শেয়ার সংখ্যা অনেক বেশি বেড়ে যাওয়ায় একদিকে শেয়ার প্রতি আয় ডাইলুটেড হয়ে অনেক কমে গেছে, অন্যদিকে বাজার এই শেয়ারে সয়লাব হয়ে যাওয়ায় এর দাম আর বাড়ে না।

তিনি আরও বলেন, তালিকাভুক্ত কোম্পানি হিসেবে ব্যাংকের মালিক এর শেয়ারহোল্ডাররা। তাই ব্যাংকগুলো নগদ লভ্যাংশ দেবে না বোনাস দেবে, মূলধনের আকার কী হবে তা শেয়ারহোল্ডারাই নির্ধারণ করবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো অধিকার নেই এখানে হস্তক্ষেপ করার।
ডিএসইর পরিচালক রকিবুর রহমান বলেন, জাতির জনকের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুঁজিবাজারকে শক্তিশালী করতে নানা নির্দেশনা দিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, শিল্প-উদ্যোক্তারা ব্যাংক থেকে নয়, শিল্পকারখানার জন্য দীর্ঘমেয়াদী অর্থ পুঁজিবাজার থেকে সংগ্রহ করবে। আর এটি করার জন্য একটি স্থিতিশীল ও গতিময় পুঁজিবাজার দরকার। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকাণ্ডে মনে হয়, তারা চায় না পুঁজিবাজার স্থিতিশীল, গতিময় ও বিকশিত হোক। যতই খেলাপি ঋণ বাড়ুক, তবু প্রতিষ্ঠানগুলো পুঁজিবাজারে না এসে, ব্যাংক থেকে ঋণ নিক এটিই বোধহয় চায় তারা। কিন্তু এই চাওয়া প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার বরখেলাপ, দেশ ও অর্থনীতির স্বার্থের পরিপন্থী এটি মনে রাখতে হবে।

ডিএসই দুই খাতের লেনদেনে উল্লম্ফন: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে দরপতন হলেও দুই খাতের লেনদেনে উল্লম্ফন দেখা গেছে। আজ বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর কমেছে। তবে টাকার পরিমাণে লেনদেন আগের দিন থেকে কিছুটা বেড়েছে। আজ ডিএসইতে টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৪২৮ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। যা আগের দিন থেকে ৭৪ কোটি ২৪ লাখ টাকা বেশি।

ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। আজ দুই খাতের লেনদেনে উল্লম্ফন হয়েছে। এই দুই খাতের ওপর ভর করে ডিএসইর লেনদেন বেড়েছে। খাত দুটি হলো-প্রকৌশল ও তথ্যপ্রযুক্তি। আজ প্রকৌশল লেনদেন হয়েছে ১০৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৫৬ কোটি ৭০ লাখ টাকা। আজ খাতটিতে লেনদেন বেড়েছে ৪৮ কোটি ৭০ লাখ টাকা বা ৮৬.০৬ শতাংশ। অন্যদিকে, আজ তথ্যপ্রযুক্তি খাতে লেনদেন হয়েছে ৩৩ কোটি ২০ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা। আজ লেনদেন বেড়েছে ১৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা বা ৭৯.৪৬ শতাংশ।

এছাড়া, আজ ওষুধ ও রসায়ন খাতে এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতেও লেনদেন বেড়েছে। ওষুধ ও রসায়ন খাতে আজ লেনদেন হয়েছে ১২২ কোটি ৮০ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১১১ কোটি ১০ লাখ টাকা। আজ খাতটিতে লেনদেন বেড়েছে ১১ কোটি ৭০ লাখ টাকা বা ১০.৫৩ শতাংশ। অপরদিকে, আজ জ্বালানি খাতে লেনদেন হয়েছে ১১৮ কোটি ১০ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১১১ কোটি টাকা। আজ লেনদেন বেড়েছে ৭ কোটি ১০ লাখ টাকা বা ৬.৩৯ শতাংশ।

পুঁজিবাজার দরপতনে নেপেথ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন: পুঁজিবাজার নিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থার যখন একের পর এক চমকে বাজার স্থিতিশীলতার দিকে যাচ্ছিল ঠিক এই সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে দরপতন হয়েছে। মুলত করোনাকালে প্রণোদনার ঋণ অনুৎপাদনশীল খাতে ব্যয় হচ্ছে এমন বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বাজার বিশ্লেষকদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

করোনাকালে প্রণোদনার ঋণ অনুৎপাদনশীল খাতে ব্যয় হচ্ছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে প্রতিবেদন দিয়েছে, তাতে পুঁজিবাজারে টাকা আসছে, এমন কথা বলা নেই। তবে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন এসেছে যে, এই অর্থ এসেছে এই খাতেও। আর এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর দিন সোমবার বিনিয়োগকারীদের মধ্যে দেখা গেছে অস্থিরতা। প্রধান খাতগুলোতে ঘটেছে দরপতন। আর এ কারণে ছয় কর্মদিবস পর পতন হলো মূল্য সূচকে। তবে বেড়েছে লেনদেন।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক ও সাবেক প্রেসিডেন্ট মোঃ রকিবুর রহমান বলেন, প্রণোদনার কোনো টাকা পুঁজিবাজারে আসেনি। অনেক দিন পর সবার সম্মিলিত চেষ্টায় দেশের পুঁজিবাজার যখন স্থিতিশীলতার দিকে যাচ্ছে, তখন এই ধরনের বক্তব্য দায়িত্বজ্ঞানহীন ও দুঃখজনক। তিনি এই বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, তারা যেন এতে বিভ্রান্ত ও আতঙ্কিত না হন।
রকিবুর বলেন, মুদ্রাবাজার ও পুঁজিবাজার গভীরভাবে সম্পৃক্ত।

তাই বাংলাদেশ ব্যাংকের উচিত পুঁজিবাজারে নেতিবাচক কোনো মন্তব্য না করা, কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া। তিনি বলেন, পুঁজিবাজারের বর্তমান গতিশীলতা প্রণোদনার টাকার কারণে হয়নি। এর পেছনে অনেকগুলো কারণ আছে। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির বর্তমান কমিশনের নানামুখী উদ্যোগের ফলে বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বেড়েছে। ব্যাংকগুলোতে আমানতের সুদের হার কমতে কমতে ৫ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। তাই ব্যাংকে আমানত রাখা আর লাভজনক নয়।

তাই অসংখ্য মানুষ ব্যাংকে মেয়াদী আমানত না রেখে সেই টাকা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করছেন। অন্যদিকে নানা ধরনের বিধিনিষেধের কারণে এখন চাইলেও নির্দিষ্ট সীমার বেশি টাকার সঞ্চয়পত্র কেনা যায় না। সেখানে বিনিয়োগের সুযোগ সংকোচিত হয়ে আসায় উদ্বৃত্ত সঞ্চয় পুঁজিবাজারমুখী হয়েছে। এদিকে পুঁজিবাজারে দ্বিতীয় কার্যদিবসে কিছুটা পতন হয়েছে। এদিন পুঁজিবাজারের সব সূচক কমেছে। একই সাথে কমেছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর। তবে টাকার পরিমাণে লেনদেন আগের দিন থেকে কিছুটা বেড়েছে।

জানা গেছে, আজ ডিএসইএক্স সূচকটি ২০.১৮ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৪০৪.০৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ডিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ৩.৫৮ পয়েন্ট এবং ডিএসই-৩০ সূচক ১৩.৭৪ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ৩৯০.২৬ পয়েন্টে এবং দুই হাজার ৩২২.৭৩ পয়েন্টে। আজ ডিএসইতে টাকার পরিমাণে লেনদেন ১ হাজার ৪২৮ কোটি ৯৪ লাখ টাকার। যা আগের দিন থেকে ৭৪ কোটি ২৪ লাখ টাকা বেশি। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৩৫৪ কোটি ৭০ লাখ টাকার।

ডিএসইতে আজ ৩৭৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ১১১টির বা ২৯.৬৮ শতাংশের, শেয়ার দর কমেছে ২২৯টির বা ৬১.২৩ শতাংশের এবং ৩৪টির বা ৯.০৯ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৪১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৬৩২.২১ পয়েন্টে।

সিএসইতে আজ ৩০৭টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১১৭টির দর বেড়েছে, কমেছে ১৫৪টির আর ৩৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ৫৯ কোটি ৯৩ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।

দুই বীমা কোম্পানির লেনদেন বন্ধ মঙ্গলবার: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত দুই বীমা কোম্পানির শেয়ার লেনদেন ২৭ জুলাই (মঙ্গলবার) বন্ধ থাকবে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জান গেছে। কোম্পানি দুইটি হলো: পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্স এবং সোনারবাংলা ইন্স্যুরেন্স।
জানা গেছে, রেকর্ড ডেট সংক্রান্ত কারণে কোম্পানি দুইটির শেয়ার লেনদেন আগামী মঙ্গলবার বন্ধ থাকবে। আর রেকর্ড ডেটের পর ২৮ জুলাই (বুধবার) কোম্পানিগুলো আবার লেনদেনে ফিরবে।

ডিএসই বিক্রেতা সংকটে তিন কোম্পানি: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৩ কোম্পানি বিক্রেতা সংকট পড়েছে। তালিকাভুক্ত ভিন্ন ভিন্ন খাতের মোট তিন কোম্পানি। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। কোম্পানিগুলোর হচ্ছে: বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার, গ্লোবাল হেভি কেমিক্যাল এবং সোনালী পেপার এন্ড বোর্ড মিলস।

জানা গেছে, রবিবার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ারের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ৪২.৩০ টাকায়। আজ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে ৪৬.৫০ টাকায়। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৪৬.৫০ টাকায়। অর্থাৎ আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর ৪.২০ টাকা বা ৯.৯২ শতাংশ বেড়েছে।
গ্লোবাল হেভি কেমিক্যাল : রবিবার গ্লোবাল হেভি কেমিক্যালের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ৩৭.৭০ টাকায়।

আজ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে ৩৮.৫০ টাকায়। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৪১.৪০ টাকায়। অর্থাৎ আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর ৩.৭০ টাকা বা ৯.৮১ শতাংশ বেড়েছে। এছাড়া, সোনালী পেপার এন্ড বোর্ড মিলসের অসংখ্য ক্রেতা থাকলেও বিক্রেতার ঘর শূণ্য ছিল।

৫ কোম্পানির বোর্ড সভার তারিখ ঘোষণা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৫ কোম্পানির বোর্ড সভার তারিখ ঘোষণা করছে। কোম্পানিগুলোর ভিন্ন ভিন্ন তারিখে এ বোর্ড সভার তারিখ ঘোষণা করে। কোম্পানিগুলো হলো:

সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের বোর্ড সভার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ২৮ জুলাই দুপুর আড়াইটায় এ কোম্পানির বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হবে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, সভায় ৩০ জুন ২০২১ পর্যন্ত কোম্পানিটির দ্বিতীয় প্রান্তিকের অনিরিক্ষীত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে প্রকাশ করা হবে।

ফার্স্ট প্রাইম ফাইন্যান্স মিউচ্যুয়াল ফান্ড: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ফার্স্ট প্রাইম ফাইন্যান্স মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ট্রাস্টি সভার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ২৮ জুলাই দুপুর ২টায় এ ফান্ডের ট্রাস্টি সভা অনুষ্ঠিত হবে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, সভায় ৩০ জুন ২০২১ পর্যন্ত কোম্পানিটির দ্বিতীয় প্রান্তিকের অনিরিক্ষীত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে প্রকাশ করা হবে।

সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্স: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বোর্ড সভার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ২৯ জুলাই বিকাল ৩টায় এ কোম্পানির বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হবে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, সভায় ৩০ জুন ২০২১ পর্যন্ত কোম্পানিটির দ্বিতীয় প্রান্তিকের অনিরিক্ষীত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে প্রকাশ করা হবে।

ইসলামী ব্যাংক: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ইসলামী ব্যাংকের বোর্ড সভার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ৩১ জুলাই দুপুর ১২টায় এ কোম্পানির বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হবে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। জানা যায়, সভায় ৩০ জুন ২০২১ পর্যন্ত কোম্পানিটির দ্বিতীয় প্রান্তিকের অনিরিক্ষীত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে প্রকাশ করা হবে।

ইস্টার্ণ ইন্স্যুরেন্স: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ইস্টার্ণ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের সভার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। কোম্পানিটির পর্ষদ সভা আগামী ২৯ জুলাই দুপুর ২টায় অনুষ্ঠিত হবে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, সভায় কোম্পানিটির ৩০ জুন ,২০২১ সমাপ্ত দ্বিতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হবে। পর্ষদ আলোচিত প্রতিবেদন অনুমোদন করলে তা প্রকাশ করবে কোম্পানিটি। আগের প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় করেছিল ৩৪ পয়সা।

কাঁচামাল তৈরিতে কর অবকাশ সুবিধা পাচ্ছে ওষুধশিল্প: স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে ওষুধ তৈরির কাঁচামাল ও ল্যাবরেটরি স্থাপনে কর অবকাশ সুবিধা দিতে যাচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ফার্মাসিউটিক্যাল শিল্পের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে এ সুবিধা দেওয়ার কথা বিবেচনা করা হচ্ছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে এনবিআরের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র জানায়, সম্প্রতি এনবিআরের আয়কর শাখা ন্যাশনাল অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্ট (এপিআই) নীতিমালা প্রণয়নসহ বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। সাধারণত ১০ থেকে ২০ বছরের জন্য এই ধরনের কর অবকাশ সুবিধা দেওয়া হয়। এপিআই হলো সব ধরনের ওষুধ তৈরির জন্য প্রাথমিক কাঁচামাল।

এনবিআর কর্মকর্তারা বলছেন, প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করার পর এ সংক্রান্ত এসআরও জারি করা হবে। শিল্প উদ্যোক্তারা দীর্ঘদিন ধরে এ দাবি করে আসছিলেন। তারা ২০৩২ সাল পর্যন্ত এ সুবিধা দাবি করেছেন। এর আওতায় ওষুধ শিল্পের কাঁচামাল উৎপাদনকারীরা শতভাগ করপোরেট কর মওকুফসহ অন্যান্য কর সুবিধা ভোগ করবেন। শিল্পের উদ্যোক্তারা বলছেন, সরকারের কাছ থেকে রাজস্ব নীতির সহায়তা পেলে রফতানি প্রতিস্থাপন এবং রফতানি উভয় ক্ষেত্রেই এপিআইয়ের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে।

উল্লেখ্য, বর্তমানে ৯৮ শতাংশ অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ করে থাকে দেশের ওষুধশিল্প। আর বাংলাদেশের ওষুধ ১৬০টিরও বেশি দেশে রফতানি করা হচ্ছে। যদিও স্থানীয় ওষুধ উৎপাদনকারীদের ভারত, চীন এবং কোরিয়ার মতো দেশ থেকে ৯০ শতাংশ কাঁচামাল আমদানি করতে হয়। এপিআই নীতিমালা অনুসারে সরকার প্রয়োজনীয় ৩৭০টি গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামালে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।

প্রাইম ব্যাংকের ছয় মাসে আয় বেড়েছে ২২৯ শতাংশ: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড চলতি হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে অর্ধবার্ষিক অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। আলোচ্য প্রান্তিক শেষে ছয় মাসে ব্যাংকটির সমন্বিত শেয়ারপ্রতি আয় বেড়েছে ২২৯ শতাংশ। কোম্পানি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

তথ্য মতে, চলতি হিসাব বছরের অর্থাৎ ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ছয় মাসে ব্যাংকটির সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ৮১ পয়সা, এককভাবে ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ৭৯ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে সমন্বিত ইপিএস হয়েছিল ৫৫ পয়সা এবং এককভাবে ইপিএস হয়েছিল ৬২ পয়সা। আলোচ্য সময়ে ব্যাংকটির সমন্বিত শেয়ারপ্রতি আয় বেড়েছে ১ টাকা ২৬ পয়সা বা ২২৯ শতাংশ এবং এককভাবে আয় বেড়েছে ১ টাকা ১৭ পয়সা বা ১৮৮ শতাংশ।

এদিকে, শুধু দ্বিতীয় প্রান্তিকে এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত ৩ মাসে ব্যাংকটির সমন্বিত শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ৪৭ পয়সা, এককভাবে ৪২ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে সমন্বিত ইপিএস ছিল ৯ পয়সা, এককভাবে ১৩ পয়সা। গত ৩০ জুন শেষে ব্যাংকটির সমন্বিত শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ২৫ টাকা ১৮ পয়সা।