দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিতরণযোগ্য আয়ের মিউচ্যুয়াল ফান্ড গ্রামীণ টু তাদের লভ্যাংশ ঘোষণা সংক্রান্ত সভা করার কথা জানিয়েছে। আগামী ২৯ আগস্ট এই ফান্ডটির ট্রাস্টি বোর্ডের সভা হবে বলে বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে জানিয়েছে ফান্ডটির সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি এইমস বাংলাদেশ।

জুনে অর্থবছর শেষ হয়েছে এমন ১৭টি ফান্ড এরই মধ্যে লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। আগামী বুধবার ঘোষণা হবে সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি রেইসের ১০টি ফান্ডের লভ্যাংশ। এখন বাকি আছে কেবল এইমসেরই আরেক ফান্ড রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স মিউচ্যুয়াল ফান্ড।

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ফান্ডগুলোর মধ্যে তৃতীয় প্রান্তিক শেষে সবচেয়ে বেশি আয় আছে গ্রামীণ টুর। গত জুলাই থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ইউনিটপ্রতি তাদের আয় ৩ টাকা ৯১ পয়সা।

গত ১ এপ্রিল থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত পুঁজিবাজারে সূচক ৮৮০ পয়েন্ট বেড়েছে। এই সময়ে এই ফান্ডটি কত আয় করেছে, তার ওপর নির্ভর করে লভ্যাংশ ঘোষণা হবে। তবে মার্চ পর্যন্ত আয় বলে দেয়, এবার লভ্যাংশের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে থাকবে এই ফান্ডটিই। এর কারণ, সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে ফান্ডটির যে আয়, তার পুরোটাই বিতরণযোগ্য।

গত বছর তাদের কোনো লোকসান না থাকায় সঞ্চিতি সংরক্ষণের কোনো দরকার পড়বে না। মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলো তাদের আয়ের কমপক্ষে ৭০ শতাংশ নগদে বিতরণ করতে বাধ্য। এই হিসাবে কেবল তৃতীয় প্রান্তিক পর্যন্ত গ্রামীণ টুর ইউনিটধারীরা পেতে পারেন ২ টাকা ৭৩ পয়সা। এর সঙ্গে তৃতীয় প্রান্তিকের আয় যুক্ত হলে তা ৩ টাকার বেশি হয়ে যেতে পারে।

এখন পর্যন্ত যে ১৭টি ফান্ড লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে, তাতে সবচেয়ে কম আয় করেছে আইসিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট পরিচালিত আটটি মিউচ্যুয়াল ফান্ড। বেসরকারি সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি পরিচালিত ফান্ডগুলোর মধ্যে চতুর্থ প্রান্তিকে সবচেয়ে কম আয় করেছে যে ফান্ডটি, সেটি এই তিন মাসে ইউনিটপ্রতি ১৮ পয়সা আয় করেছে। আর সবচেয়ে বেশি আয় করেছে যেটি, সেটি ইউনিটপ্রতি আয় করেছে ১ টাকা ২৫ পয়সা।

ফান্ডটির বর্তমান মূল্য ১৯ টাকা ৯০ পয়সা। গত এক বছরে ফান্ডটির সর্বনি¤œ মূল্য ছিল ১২ টাকা ৫০ পয়সা আর সর্বোচ্চ দাম ছিল ২১ টাকা ৯০ পয়সা। ২০০৮ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এই ফান্ডটির লভ্যাংশের ইতিহাস সবচেয়ে ভালো। পুঁজিবাজারে চাঙাভাব থাকুক আর মন্দা থাকুক, বিনিয়োগকারীরা কখনও লভ্যাংশ থেকে বঞ্চিত হননি।

গত বছর লোকসানের কারণে তালিকাভুক্ত এবং অতালিকাভুক্ত সিংহভাগ মিউচ্যুয়াল ফান্ড যেখানে লভ্যাংশ দিতে পারেনি, সেখানে এই ফান্ডটির ইউনিটধারীরা পেয়েছেন ৭০ পয়সা করে। সে বছর তাদের ইউনিটপ্রতি আয় ছিল ৭৪ পয়সা। এই ফান্ডটি সর্বোচ্চ লভ্যাংশ এসেছে ২৫ শতাংশ। ২০১৫ সালে এই পরিমাণ লভ্যাংশ পেয়েছেন ইউনিটধারীরা। এর ১০ শতাংশ অর্থাৎ ইউনিটপ্রতি ১ টাকা নগদ আর ১৫ শতাংশ পাওয়া গেছে রিইনভেস্টমেন্ট ইউনিট হিসেবে।

ব্যাংক-আর্থিক ও বস্ত্র খাতের চমকে সূচকের বড় উত্থান: পুঁজিবাজারে টানা দুই কার্যদিবস সংশোধন শেষে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে সূচকের বড় উত্থান ঘটছে। একদিন ব্যাপকভাবে বাড়ার পর দুদিন ব্যাংক খাতের শেয়ারগুলো দর হারানোর পর তৃতীয় কর্মদিবসে আবার ঘুরে দাঁড়াল। বিমা খাত ছাড়া প্রধান প্রায় সব খাতের বিনিয়োগকারীদের মাঝে উৎফুল্ল ভাব বিরাজ করছে। এর মধ্যে ব্যাংক ছাড়া দ্বিতীয় যে খাতটিতে সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে, সেটি হলো বস্ত্র। এই খাতেও ব্যাংকের মতো হাতেগনা এক দুইটি ছাড়া বেড়েছে বাকিগুলোর দাম।

গত মঙ্গলবার ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লেনদেনের পর দুই দিনের সংশোধনে বিনিয়োগকারীরা কেনাবেচা কমিয়ে দিলেও রোববার তারা ছোটখাট সংশোধন কাটিয়ে আবার শেয়ার ক্রয়ের দিকে ঝুঁকছেন। দুই কর্মদিবস পর লেনদেন আবার আড়াই হাজার পয়েন্ট ছাড়াল।

দিন শেষে সূচকের যে অবস্থান, সেটি ২০১১ সালের ৩ ফেব্রুয়ারির পর সর্বোচ্চ। সেদিন সে সময়ের ডিএসই সূচক ছিল ৭ হাজার ১২৫ পয়েন্ট। রোববার সূচক দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৮৪২ পয়েন্টে। আগের দুই দিন ২৬ পয়েন্ট হারানোর পর একদিনেই বেড়েছে ৮১ পয়েন্ট। এই উত্থানের মধ্য দিয়ে সূচকের অবস্থান ২০১১ সালের ৮ ফেব্রুয়ারির ৬ হাজার ৮২২ পয়েন্টের অবস্থানকে অতিক্রম করে গেল।

ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং প্রকৌশলসহ ১৪ খাতের শেয়ারের দাম বাড়ায় সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে দেশের পুঁজিবাজারে বড় উত্থান হয়েছে। রোববার দিনভর সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় চলে লেনদেন। এদিন দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচক বেড়েছে ৮১ পয়েন্ট। অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক বেড়েছে ২০৮ পয়েন্ট।

বুধ ও বৃহস্পতিবার টানা দুদিন দরপতনের পর বড় উত্থানের মধ্যদিয়ে সপ্তাহ শুরু করল দেশের পুঁজিবাজার। আর এ উত্থানে সূচক দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৮৪২ পয়েন্টে, যা এর ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এদিন সূচকের পাশাপাশি বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম ও লেনদেন।

ডিএসইর বাজার মূলধনও আগের দিনের চেয়ে ৪ হাজার ৭১৭ কোটি ৬২ লাখ ১৯ হাজার টাকা বেড়ে ৫ লাখ ৫৪ হাজার ৪৩৯ কোটি ২৪ লাখ ২৩ হাজার টাকায় দাঁড়িয়েছে, যা পুঁজিবাজারের ইতিহাসে আরও একটি মাইলফলক।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, রোববার ব্যাংক খাতে তালিকাভুক্ত ৩২টি কোম্পানির মধ্যে ২৮টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। কমেছে দুটি ব্যাংকের শেয়ারের দাম। আর্থিক খাতের ২৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২০টির শেয়ারের দাম বেড়েছে, কমেছে একটির শেয়ারের দাম। প্রকৌশল খাতের ৪২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেড়েছে। বিপরীতে কমেছে ৫টির শেয়ারের দাম।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ২৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৫টির শেয়ারের দাম বেড়েছে। কমেছে ৭ টির শেয়ারের দাম। বস্ত্র খাতের ৫৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেড়েছে। বিপরীতে ৯ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম কমেছে। একইভাবে টেলিযোগাযোগ খাতের ৩টি কোম্পানির মধ্যে ২টির শেয়ারের দাম।

সব মিলিয়ে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ২২টি খাতের কোম্পানির মধ্যে রোববার ১৪টি খাতের কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। আর তাতে ডিএসইতে মোট লেনদেন হওয়া ৩৭৬টির মধ্যে ২৪৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেড়েছে, কমেছে ৯৬টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৩টির। মোট ৯০ কোটি ৬৪ লাখ ৫৪ হাজার ১৯০টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে। তা থেকে লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৭০৬ কোটি ৩১লাখ ৮১ হাজার টাকা। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ২১৮ কোটি ৮৮ লাখ ৯৪ হাজার টাকা।

অর্থাৎ আগের দিনের চেয়ে লেনদেন বেড়েছে। বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমায় এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৮১ দশমিক ৬১ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৮৪২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। প্রধান সূচকের পাশাপাশি ডিএসইর অন্য সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ১৮ দশমিক ৩৮ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৪৭৯ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ২৮ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ৪৫১ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

এদিন ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে সিমেন্ট খাতের কোম্পানি লাফার্জহোলসিম। এরপর সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে ফার্স্ট সিকিউরিটিজ ব্যাংক লিমিটেডের শেয়ার। এরপর যথাক্রমে ছিল আইএফআইসি ব্যাংক, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, ন্যাশনাল ব্যাংক, ম্যাক্সন স্পিনিং, পাওয়ার গ্রিড, ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্স ও ওরিয়ন ফার্মা লিমিটেড।

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২০৮ পয়েন্ট বেড়ে ১৯ হাজার ৯২১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। সিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩২৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২১৮টির শেয়ারের দাম বেড়েছে। কমেছে ৮৩টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম। এ বাজারে লেনদেন হয়েছে ১০০ কোটি ৮ লাখ ৫১ হাজার ৩৬০ টাকা। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৮৮ কোটি ৯৯ লাখ ২৩ হাজার ৮৮৩ টাকা।

ফারইস্ট ইসলামী লাইফের দুর্নীতি তদন্তে যৌথ কমিটি গঠন বিএসইসি’র: শেয়ারবাজারে বিমা খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বিরুদ্ধে নানা আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতি খতিয়ে দেখতে যৌথ তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। চারটি সংস্থার প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে এ যৌথ তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা, ২০১৯ এর বিধি ৫৪ অনুযায়ী যৌথ অনুসন্ধান ও তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি বিএসইসির কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের নেতৃত্বে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বিরুদ্ধে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অন্যান্য সংস্থার মধ্যে রয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। এ যৌথ তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক রিপন কুমার দেবনাথকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া তদন্ত কমিটিতে বিএসইসির আরো দুজন প্রতিনিধি রাখা হয়েছে। তারা হলেন-বিএসইসির পরিচালক আবু রায়হান মোহাম্মদ মুতাসীম বিল্লাহ ও উপ-পরিচালক মো. শাহনেওয়াজ।

ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইস্যুরেন্সের বিরুদ্ধে নিরীক্ষা ও বিশেষ নিরীক্ষায় ব্যাপক দুর্নীতি, প্রতারণা, জালিয়াতি এবং পুঁজিবাজার সম্পর্কিত অপরাধ সংগঠনের মাধ্যমে মানিলন্ডারিং করা হয়েছে। তাই বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করতে আরো যাচাই-বাচাই করা প্রয়োজন বলে মনে করে বিএসইসি। এরই ধরাবাহিকতায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা, ২০১৯ এর বিধি ৫৪ অনুযায়ী যৌথ অনুসন্ধান ও তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি।

এ বিষয়ে বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইস্যুরেন্সের বিরুদ্ধে বেশি কিছু অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই অভিযোগুলোর সত্যতা নিশ্চিত করতেই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।’

চলতি বছরের গত ২৮ জুন কোম্পানির একজন উদ্যোক্তা পরিচালকসহ আরও বেশ কয়েকজনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বিরুদ্ধে বিএসইসি তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয়। গঠিত তদন্ত কমিটিতে ছিলেন সহকারী পরিচালক মো. শাহনেওয়াজ ও মো. সিরাজুল ইসলাম। তদন্ত কার্যক্রমে গঠিত কমিটি বেশ কিছু অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের ঘটনা চিহ্নিত করেছে। এর আগে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া যায়। এ বিষয়ে প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা পায় বিএসইসি।

প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, এক প্রভাবশালী পরিচালককে আর্থিক সুবিধা দিতে গিয়ে কোম্পানির স্থায়ী আমানত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে কোম্পানির কয়েক বছরের আর্থিক প্রতিবেদন বিশেষ নিরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেয় বিএসইসি। গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হয়।

কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে জানা গেছে, ২০১৬ সালে বিভিন্ন ব্যাংকে কোম্পানির স্থায়ী আমানত ছিল ১ হাজার ৪৩১ কোটি ১০ লাখ টাকা। ২০১৮ সালে তা নেমে এমেছে ২৫১ কোটি টাকায়। আর ২০১৯ সালের জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর সময়কালে, কোম্পানির মোট জীবন বিমা পলিসি ৩ হাজার ২৬৯ কোটি টাকা থেকে ৬৩ কোটি টাকা কমেছে। এছাড়া আর্থিক সক্ষমতা কমে যাওয়ায় গ্রাহকদের দাবি যথাযথভাবে পূরণ করতে পারছে না কোম্পানিটি। এতে করে কোম্পানির গ্রাহক হারানোর পাশাপাশি জীবন বিমা পলিসিও কমে গেছে। একইসঙ্গে ফারইস্ট লাইফের বিনিয়োগের পরিমাণও কমেছে।

শেয়ারবাজারে ২০০৫ সালে তালিকাভুক্ত হওয়া ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানির মোট শেয়ার সংখ্যা ৭ কোটি ৪৭ লাখ ৪২ হাজার ৭৫১টি। এর মধ্যে চলতি বছরের ৩১ জুলাই পর্যন্ত কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে ৩০.৫৫ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৪১.২২ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে ০.৮১ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ২৭.৪২ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। গত ১৯ আগস্ট কোম্পানির শেয়ার সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ৬০.৪০ টাকায়।

আর্থিক খাতের শেয়ারে বড় চমক: পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত ২০ খাতের মধ্যে অন্যতম খাত হিসাবে পরিচিত আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাত। এই খাতে আজ সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ সবচেয়ে বেশি লক্ষ্য করা গেছে। এতে করে আজ আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাত বিনিয়োগকারীদের চমক দেখিয়ে বেড়েছে ২১ কোম্পানির শেয়ার দর। লেনদেন হওয়া ২২টি কোম্পানির মধ্যে মাত্র ১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দর কমতে দেখা গেছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, আজ আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে লেনদেন হয়েছে ডিএসইর মোট লেনদেনের ৮ শতাংশ বা ২০৬ কোটি টাকা। লেনদেনে খাতটি আজ ৬ষ্ঠ স্থানে অবস্থান করছে। এই খাতে আজ সর্বোচ্চ ৮ শতাংশেরও বেশি শেয়ার দর বেড়েছে।

বাজার পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, রবিবার আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে সবচেয়ে বেশি শেয়ার দর বেড়েছে ফাস্ট ফাইন্যান্সের। আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ৭০ পয়সা বা ৮.৫৪ শতাংশ। কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে ৮ টাকা ৩০ পয়সায়। আর লেনদেন শেষ হয়েছে ৯ টাকায়।

আইএলএফএসএল আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের শেয়ার দর বৃদ্ধিতে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে। আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ৬০ পয়সা বা ৬ শতাংশ। কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে ১০ টাকায়। আর লেনদেন শেষ হয়েছে ১০ টাকা ৬০ পয়সায়।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের শেয়ার দর বৃদ্ধিতে তৃতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে ফারইস্ট ফাইন্যান্স। আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ৫০ পয়সা বা ৫.২৬ শতাংশ। কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে আজ ৯ টাকা ৬০ পয়সায়। আর লেনদেন শেষ হয়েছে ১০ টাকা ১০ পয়সায়।
আর্থিক খাতের ২৩টি কোম্পানির মধ্যে পিএলএফএস-এর শেয়ার লেনদেন দীর্ঘ দিন যাবত বন্ধ রয়েছে।

খাতটিতে আজ লেনদেন হওয়া ২২টি কোম্পানির মধ্যে ২১টি কোম্পানিই দর বৃদ্ধিতে চমক দেখিয়েছে। কেবল ন্যাশনাল হাউজিংয়ের শেয়া দরে পতন দেখা গেছে। কোম্পানিটির শেয়ার দর আজ কমেছে ১ টাকা ৮০ পয়সা বা ২.৬৩ শতাংশ। আজ ন্যাশনাল হাউজিংয়ের শেয়ার ডিএসইতে দর পতনের শীর্ষ তালিকায় উঠে এসেছে। উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবারও ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্স ডিএসইতে দর পতনের শীর্ষ তালিকায় শীর্ষ স্থানে ছিল। ওইদিন কোম্পানিটির দর কমেছিল ৩ টাকা ৫০ পয়সা বা ৪.৮৭ শতাংশ।

ডিএসই চার খাতের ওপর ভর করে লেনদেনে উস্ফল্লণ: আগের দুই কার্যদিবসের মন্দাভাব কাটিয়ে পুঁজিবাজারে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস বড় উত্থান হয়েছে। এদিন পুঁজিবাজারের সব সূচক বেড়েছে। পাশাপাশি বেড়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর।

আজ আগের দিনের তুলনায় লেনদেনও বেড়েছে ৪৮৮ কোটি টাকা। চার খাতের ওপর ভর করে আজ লেনদেনে চাঙ্গা ভাব দেখা দিয়েছে। খাতগুলো হলো- বস্ত্র, ব্যাংক, প্রকৌশল এবং জ্বালানি খাত। ডিএসই সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

বস্ত্র খাত: বস্ত্র খাতে আজ লেনদেন হয়েছে ১৬৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা। আগেরদিন লেনদেন হয়েছে ১৩৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা। আজ লেনদেন বেড়েছে ২৮ কোটি ৬০ লাখ টাকা।

ব্যাংক খাত: ব্যাংক খাতে আজ লেনদেন হয়েছে ১৫৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা। আগেরদিন লেনদেন হয়েছে ১২৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা। আজ লেনদেন বেড়েছে ২৫ কোটি টাকা।

প্রকৌশল খাত: প্রকৌশল খাতে আজ লেনদেন হয়েছে ৯৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা। আগেরদিন লেনদেন হয়েছে ৭২ কোটি ৭০ লাখ টাকা। আজ লেনদেন বেড়েছে ২২ কোটি ৬০ লাখ টাকা।

জ্বালানি খাত: জ্বালানি খাতে আজ লেনদেন হয়েছে ৯৬ কোটি ১০ লাখ টাকা। আগেরদিন লেনদেন হয়েছে ৭২ কোটি ৭০ লাখ টাকা। আজ লেনদেন বেড়েছে ১৮ কোটি ৩০ লাখ টাকা।

ব্লক মার্কেটে চার কোম্পানির লেনদেনের শীর্ষে: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ব্লক মার্কেটে ৫৭টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিয়েছে। কোম্পানিগুলোর ৬৩ কোটি ৮ লাখ ৬০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ডিএসই সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে চার কোম্পানির বড় লেনদেন হয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি শেয়ার লেনদেন হয়েছে আল আরাফা ইসলামি ব্যাংকের। কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৯ কোটি ১৮ লাখ ২৪ টাকার।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে বিডি ফাইন্যান্সের ১৬ কোটি ৭৮ লাখ ৫০ হাজার টাকার, তৃতীয় সর্বোচ্চ এসিআই ফর্মুলার ৪ কোটি ৬১ লাখ ৯১ হাজার টাকার, চতুর্থ সর্বোচ্চ জেনেক্স ইনফোসিসের ৩ কোটি ৯৬ লাখ ৭ হাজার টাকার শেয়ার।

এছাড়া, এবি ব্যাংকের ১ কোটি ৩৮ লাখ ৪০ হাজার টাকার, কে এন্ড কিউয়ের ১ কোটি ৩৭ লাখ ৫০ হাজার টাকার, সিটি জেনারেল ইন্সুরেন্সের ১ কোটি ১২ লাখ ৭৪ হাজার টাকার, পাওয়ার গ্রীডের ১ কোটি ৪ লাখ ৪০ হাজার টাকার, কাট্টালি টেক্সটাইলের ৯৭ লাখ ৭ হাজার টাকার, ন্যাশনাল ব্যাংকের ৯১ লাখ ২০ হাজার টাকার, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলের ৯১ লাখ টাকার, ন্যাশনাল ফিড মিলের ৭৫ লাখ ৮১ হাজার টাকার,

এসএস স্টিলের ৬৬ লাখ টাকার, বিকন ফার্মার ৬২ লাখ ৭৩ হাজার টাকার, ফার কেমিক্যালের ৬১ লাখ ৫ হাজার টাকার, জিবিবি পাওয়ারের ৫৭ লাখ ৫৭ হাজার টাকার, ফু-ওয়াং সিরামিকের ৪৮ লাখ ৬৪ হাজার টাকার, সিঙ্গার বিডির ৪৫ লাখ ৪৮ হাজার টাকার, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ৪৪ লাখ ৪০ হাজার টাকার, ইস্টার্ন ইন্সুরেন্সের ৪৪ লাখ ৩৭ হাজার টাকার,

ড্রাগন সোয়েটারের ৪২ লাখ টাকার, ইবিএলএনআরবি মিউচুয়াল ফান্ডের ৪১ লাখ টাকার, সোনালী পেপারের ৩৮ লাখ ৩০ হাজার টাকার, এসবিএসি ব্যাংকের ৩৮ লাখ ২৭ হাজার টাকার, এইচআর টেক্সটাইলের ৩৬ লাখ টাকার, সালভো কেমিক্যালের ২৮ লাখ ৩৫ হাজার টাকার, শাহজিবাজার পাওয়ারের ২৭ লাখ ৩০ হাজার টাকার, জেনারেশন নেক্সটের ২৬ লাখ ৭০ হাজার টাকার, রিং সাইনের ২৬ লাখ ৬৮ হাজার টাকার,

ই-জেনারেশনের ২০ লাখ ৪০ হাজার টাকার, জিপিএইচ ইস্পাতের ১৮ লাখ ৯০ হাজার টাকার, মেঘনা পেট্রোলিয়ামের ১৪ লাখ ১১ হাজার টাকার, লাফার্জ হোলসিমের ১৩ লাখ ৬০ হাজার টাকার, ওয়ান ব্যাংক লিমিটেডর ১৩ লাখ ৬০ হাজার টাকার, সামিট পাওয়ারের ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকার, আলহাজ টেক্সটাইলের ১৩ লাখ ১৪ হাজার টাকার, গ্রামীন টুর ১২ লাখ ২৪ হাজার টাকার,

অ্যাসোসিয়েট অক্সিজেনের ১১ লাখ ৪০ হাজার টাকার, প্রিমিয়ার সিরামিকের ১০ লাখ ৪৬ হাজার টাকার, ইন্টার্নেশনাল লিজিংয়ের ১০ লাখ ১৭ হাজার টাকার, লংকাবাংলা ফাইন্যান্সের ১০ লাখ ৮ হাজার টাকার, ট্রাস্ট ব্যাংক ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ৯ লাখ ৬০ হাজার টাকার, ইসলামিক ফাইন্যান্সের ৮ লাখ ৯৭ হাজার টাকার, রেকিট বেনকিজারের ৮ লাখ ৮৮ হাজার টাকার, অলিম্পিকের ৮ লাখ ৩৪ হাজার টাকার,

মোজাফফর হোসেনের ৮ লাখ ১৬ হাজার টাকার, এনালাইজ ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকার, আলিফের ৭ লাখ ৩০ হাজার টাকার, ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকের ৬ লাখ ৮৮ হাজার টাকার, সি-পার্লের ৬ লাখ ৬৭ হাজার টাকার, রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্সের ৫ লাখ ৬৪ হাজার টাকার, ইন্ডেক্স এগ্রোর ৫ লাখ ৬০ হাজার টাকার, ইফাদ অটোর ৫ লাখ ১৯ হাজার টাকার, মীর আক্তারের ৫ লাখ ১২ হাজার টাকার, যমুনা ব্যাংকের ৫ লাখ ২ হাজার টাকার, ফনিক্স ফাইন্যান্সের ৫ লাখ ১ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে।

অরিজা এগ্রোর আবেদনের তারিখ শুরু ৫ সেপ্টেম্বর: পুঁজিবাজার থেকে অর্থ উত্তোলনের অনুমোদন পাওয়া অরিজা এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কোয়ালিফাইড ইনভেস্টর অফার (কিউআইও) আবেদন আগামী ৫ সেপ্টেম্বর থেকে আবেদন গ্রহণ শুরু হবে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্রমতে, কোম্পানিটির কিউআইওতে আবেদন গ্রহণ ৫ সেপ্টেম্বর শুরু হয়ে চলবে ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। গত ১৪ জুলাই বিএসইসির ৭৮৪তম সভায় অরিজা এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কোয়ালিফাইড ইনভেস্টর অফার বাই স্মল ক্যাপিটাল কোম্পানিজের (কিউআইও) মাধ্যমে অর্থ উত্তোলনের অনুমোদন দিয়েছে। অরিজা এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ কিউআইও এর মাধ্যমে প্রতিটি ১০ টাকা মূলে ১ কোটি শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে ১০ কোটি টাকা উত্তোলন করবে।

উত্তোলিত অর্থ দিয়ে ব্যাংক ঋণ পরিশোধ,কার্যকরী মূলধন এবং ইস্যু ব্যবস্থাপনা খরচ খাতে ব্যয় করবে। কোম্পানিটির ৩০ ডিসেম্বর ২০২০ সমাপ্ত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ১.০২ টাকা এবং পুন:মূল্যায়ন সঞ্চিতি ছাড়া নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১৮.০৯ টাকায়।

এসএমই প্লাটফর্মে লেনদেনের তারিখ থেকে পরবর্তী ৩ বছর ইস্যুয়ার কোম্পানিটি কোনো বোনাস শেয়ার ইস্যু করতে পারবে না। কোম্পানিটির ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে যথাক্রমে ইম্পেরিয়াল ক্যাপিটাল এবং সিটি ব্যাংক রিসোর্সেস।

বস্ত্র খাতের দুই কোম্পানির ডিএসইর সতর্কতা জারি: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পানি মেট্রো স্পিনিং মিলস ও আনলিমা ইয়ার্ন লিমিটেডের অস্বাভাবিক শেয়ার দর বৃদ্ধির পেছনে কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য না থাকায় কোম্পানি দুটি সম্পর্কে সতর্কতা জারি করেছে ডিএসই।

ডিএসই জানায়, সম্প্রতি কোম্পানি দুটির শেয়ার দর অস্বাভাবিকভাবে বাড়ার কারণে কোম্পানি দুটির কর্তৃপক্ষকে নোটিশ প্রেরণ করে ডিএসই। এর জবাবে কোম্পানি দুটির কর্তৃপক্ষ জানায় কোনো অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই কোম্পানি দুটির শেয়ার দর বাড়ছে।

তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত ২৫ জুলাই মেট্রো স্পিনিংয়ের শেয়ার দর ছিল ১৭ টাকা ২০ পয়সা। ২২ আগস্ট কোম্পানিটির শেয়ার দর ৩০ টাকায় উঠেছে। একই সময়ে আনলিমা ইয়ার্নের শেয়ার দর ৩৮ টাকা ১০ পয়সা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৪৯ টাকা ৪০ পয়সায় উঠে। কোম্পানিগুলোর এই দর বাড়াকে অস্বাভাবিক বলে মনে করছে ডিএসই কতৃপক্ষ। সেজন্য কোম্পানি দুটি সম্পর্কে সতর্কতা জারি করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন নতুন ৬টি জাহাজ কিনছে: নতুন ৬টি জাহাজ কিনছে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন (বিএসসি)। জাহাজ সংগ্রহের প্রক্রিয়া এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। এ ব্যাপারে গঠিত একাধিক কমিটি কারিগরি ও বাণিজ্যিক বিষয়গুলো যাচাই-বাছাই করছে।

বিএসসির কর্মকর্তারা বলেছেন, একটি সমৃদ্ধ জাহাজের বহর গড়ে তুলতে চায় শিপিং করপোরেশন। এ লক্ষ্যে বিভিন্ন পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে ৬টি জাহাজ বিএসসির বহরে যুক্ত হচ্ছে। বিএসসির পরিচালনা বোর্ডে অনুমোদনের ভিত্তিতে নতুন ৬ জাহাজ কেনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের নির্বাহী পরিচালক (প্রযুক্তি) মোহাম্মদ ইউসুফ জানান, নতুন ৬ জাহাজের মধ্যে রয়েছে ১ লাখ থেকে ১ লাখ ২৫ হাজার টন ধারণক্ষমতার দুটি মাদার ট্যাংকার, ৮০ হাজার টন ধারণক্ষমতার দুটি প্রোডাক্ট অয়েল ট্যাংকার ও ৮০ হাজার টন ধারণক্ষমতার দুটি বাল্ক ক্যারিয়ার।

তিনি বলেন, ‘বিএসসি নতুন ৬টি জাহাজ কেনার ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বসবে আগামী ২৬ আগস্ট বৃহস্পতিবার। জাহাজগুলো জিটুজি পদ্ধতিতে কোনো বিদেশি সরকার বা অন্য কোনো দেশের সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে তাদের প্রস্তাব অনুযায়ী কেনা সমীচীন হবে কিনা সে ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

‘এ ছাড়া টেকনিক্যাল কমিটির সঙ্গে পরামর্শ করে জাহাজ ক্রয়ের প্রকল্পের মূল্য নির্ধারণ করা হবে, যা চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির কাছে উপস্থাপন করা হবে।’ নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিতে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের ৯ জনকে সদস্য করে এ প্রকল্পের নেগোসিয়েশন কার্যক্রম শেষ করতে কমিটি গঠন করা হয়েছে।

আগামী বৃহস্পতিবারের সভায় কমিটির ৯ সদস্যের মধ্যে সভাপতি হিসেবে রয়েছেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব, সদস্য হিসেবে আছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রতিনিধি, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের প্রতিনিধি, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রতিনিধি এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রতিনিধি। এ ছাড়া অন্য অসদস্যের মধ্যে আছেন অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন),

বিএসসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম প্রধান (পরিকল্পনা)। নতুন ৬টি জাহাজের মধ্যে থাকবে ২টি ক্রুড ওয়েল মাদার ট্যাংকার, যার প্রতিটির ধারণক্ষমতা হবে ১ লক্ষ থেকে ১ লক্ষ ২৫ হাজার টন। দেশের জ্বালানি চাহিদার সঙ্গে ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডের ক্রুড অয়েল পরিশোধন সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। দেশের চাহিদা অনুযায়ী ক্রুড অয়েল বিএসসির নিজস্ব জাহাজের মাধ্যমে পরিবহনের জন্য নতুন এ দুটি মাদার ট্যাংকার কেনা হবে।

এ ছাড়া বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) প্রতিবছর প্রায় ৩৫ লক্ষ টন ডিজেল অয়েল ও প্রায় ৩ লক্ষ টন জেট ফুয়েল আমদানি করে, যা বিদেশি জাহাজের মাধ্যমে পরিবহন করা হয়। ইস্টার্ন রিফাইনারির দুটি ‘সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) উইথ ডাবল পাইপলাইন’ শীর্ষক প্রকল্প সমাপ্ত হলে কমপক্ষে ৮০ হাজার টন ক্ষমতাসম্পন্ন মাদার প্রোডাক্ট অয়েল ট্যাংকার কিনবে।

অন্যদিকে রামপাল, পায়রা ও মাতারবাড়ীতে তিনটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এসব প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় কয়লা আমদানি করা হবে। দেশের জ্বালানি নিরাপত্তার স্বার্থে কয়লা পরিবহনের ‘আনইনটেরাপটেড সাপ্লাই চেইন’ গড়ে তোলার জন্য কমপক্ষে ৮০ হাজার টনের ২টি মাদার বাল্ক ক্যারিয়ার কেনার কার্যক্রম চলছে।

আশির দশকের প্রথমদিকে বিএসসির বহরে একসঙ্গে সর্বমোট ২৮টি জাহাজ ছিল। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় সে সংখ্যা বাড়িয়ে বিএসসিতে মোট ৪৪টি জাহাজ যুক্ত করা হয়। পরে বয়সজনিত কারণে ও বাণিজ্যিকভাবে অলাভজনক বিবেচিত হওয়ায় বিভিন্ন পর্যায়ে ৩৬টি জাহাজ বিক্রি করার পর বর্তমানে করপোরেশনে জাহাজের সংখ্যা মাত্র ৮টি।

যার মধ্যে ৩টি বাল্ক ক্যারিয়ার যুক্ত হয় ২০১৮ সালের ২৭ জুলাই, ১০ অক্টোবর ও ৩০ ডিসেম্বর। এ ছাড়া ৩টি প্রোডাক্ট ওয়েল ট্যাংকার যুক্ত হয় ২০১৯ সালের ২৫ জানুয়ারি, ১ মার্চ ও ২৫ মে । এরপর আর নতুন কোনো জাহাজ বিএসসির বহরে যুক্ত হয়নি। তবে নতুন চলমান প্রকল্পে ৬টি জাহাজ যুক্ত হলে বিএসসির মোট জাহাজের সংখ্যা দাঁড়াবে ১৪টিতে।

ইউনাইটেড এয়ারের ইঞ্জিন নিয়ে লুকোচুরি: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ সম্প্রতি পুনর্গঠন হয়েছে। নতুন বোর্ডের একজন সদস্যও বলেছেন, ইঞ্জিন চুরি যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ২০১৬ সালে হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়ার সময় থেকেই শাহজালাল বিমানবন্দরে পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে ইউনাইটেড এয়ারের ৯টি উড়োজাহাজ। সম্প্রতি কয়েকটি অনলাইন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানানো হয়, এই উড়োজাহাজগুলোর একটির ইঞ্জিন বিমানবন্দর থেকে চুরি হয়েছে।

বিষয়টি জানতে চাইলে শাহজালাল বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক তৌহিদ উল আহসান বলেন, ‘ইঞ্জিনটা এয়ারক্রাফটের সঙ্গে নেই এটা সত্য। কিন্তু এটা চুরি বা গায়েব হয়নি। ইউনাইটেড আমাদের বলেছে, এটা তাদের হেফাজতে আছে। তবে কত দিন আগে হেফাজতে নিয়েছে, এটা আমার জানা নেই।’

তিনি বলেন, ‘ইঞ্জিন তো ছোট কোনো জিনিস নয়, এটা তো ইচ্ছা করলেই নিয়ে যাওয়া যায় না।’ যে বিমানের ইঞ্জিন গায়েব হয়েছে বলে সংবাদ প্রচার হয়েছে, সেটি মার্কিন নির্মাতা প্রতিষ্ঠাতা ম্যাকডোনেল ডগলাসের তৈরি এমডি এইটি থ্রি মডেলের বিমান। এর মোট ওজন ৬৩ হাজার ৩০০ থেকে ৭৩ হাজার কেজি।

এ ধরনের উড়োজাহাজে ইঞ্জিন থাকে দুটি। একেকটি ইঞ্জিন কত ওজনের সে বিষয়ে জানতে চাইলে একজন পাইলট নিউজবাংলাকে বলেন, একেকটি ইঞ্জিনের ওজন ১ হাজার ১৩৬ কেজি।

বিমানবন্দর থেকে দুই টন ওজনের ইঞ্জিন কাউকে না জানিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে, এমন কোনো সুযোগই নেই- বলছেন শাহজালাল বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক তৌহিদ উল আহসান।

তবে ইউনাইটেড এয়ার সেই ইঞ্জিনটি কবে নিয়ে গেছে, সেটি কাজগপত্র না দেখে বলার সুযোগ নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি। ২০১৬ সালে কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর ইউনাইটেড এয়ারের ৯টি উড়োজাহাজ শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফেলে রাখা হয়েছে

দেশি এয়ারলাইনসগুলোর মধ্যে প্রথম পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ। ২০০৭ সালে ব্যবসা শুরু করা এয়ারলাইনসটি হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে যায় ২০১৬ সালে। সে সময় তাদের বহরে ১০টি উড়োজাহাজ ছিল।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে এয়ারলাইনসটির পর্ষদ পুনর্গঠন করে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্চ কমিশন- বিএসইসি। নতুন পর্ষদে ইউনাইটেড এয়ারের আগের পর্ষদের কাউকেই রাখা হয়নি। তবে দায়িত্ব নেয়ার পর এখনও পরিত্যক্ত উড়োজাহাজগুলো পরিদর্শনের অনুমতি পায়নি এয়ারলাইনসটির নতুন পর্ষদ।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) কাছে এয়ারলাইনসটির বকেয়া ২০৩ কোটি ৬ লাখ ৬৯ হাজার ৪৯৩ টাকা। সম্প্রতি বকেয়া আদায়ে এয়ারলাইনসটির পরিত্যক্ত উড়োজাহাজগুলো নিলামে তুলতে চেয়েছিল বেবিচক। কিন্তু পরে নতুন পর্ষদের অনুরোধে আপাতত নিলাম স্থগিত রাখা হয়েছে।

ইউনাইটেড এয়ারের নতুন পরিচালনা পর্ষদের এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমরা তো দায়িত্ব নেয়ার পর এখনও ঢুকতে পারিনি। তাই বলতেও পারছি না। কিন্তু এটা কোথা থেকে কে খবর দিল, তাও জানি না। আমরা মনে করি, এটা হারানোর কোনো উপায় নেই।’

তিনি বলেন, ‘ইঞ্জিন তো আর ছোট জিনিস না। তবে আমরা যতক্ষণ না ভেতরে যেতে পারছি বুঝতে পারছি না। নিশ্চয়ই এটা এয়ারক্রাফট থেকে খুলে রাখা হয়েছে। তবে আমি নিশ্চিত নই। তবে এটা চুরি করে কেউ নিয়ে যাবে, এটাও সম্ভব না।’

দীর্ঘ ১২ বছর পর বাতিল করা হচ্ছে ওটিসি মার্কেট: দীর্ঘ ১২ বছর পর বাতিল করা হচ্ছে দেশের উভয় স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই-সিএসই) আওতাভুক্ত ওভার দ্যা কাউন্টার (ওটিসি) মার্কেট। ওটিসি মার্কেটের কোম্পানিগুলোকে আর্থিক সক্ষমতা ও সম্ভাবনা বিবেচনা করে স্মল ক্যাপিটাল প্ল্যাটফর্ম (এসএমই) ও অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডে (এটিবি) স্থানান্তর করার লক্ষ্যে একটি খসড়া নীতিমালা প্রণয়ন করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

ওই নীতিমালার ওপর মতামত জানাতে ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জকে (ডিএসই ও সিএসই) নির্দেশ দিয়েছে বিএসইসি। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি গত মঙ্গলবার এই সংক্রান্ত একটি চিঠি ডিএসই ও সিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে প্রেরণ করেছে। এছাড়া ইলেক্ট্রনিক শেয়ার সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালককেও বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।

বিএসইসির চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, বিনিয়োগকারী ও পুঁজিবাজারের স্বার্থ রক্ষার্থে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ, ১৯৬৯ এর ধারা ২০এ এর ক্ষমতাবলে এ নির্দেশনা জারি করতে যাচ্ছে। লেনদেন, ক্লিয়ারিং ও সেটেলমেন্ট, মানি অ্যাডজাস্টমেন্ট, মার্জিন, সার্কিট ব্রেকার, ডিপোজিটরি ফি এবং চার্জ এবং অন্যান্য ছোট কোম্পানিগুলোর ট্রেডিং শুরু করার জন্য স্মল ক্যাপিটাল প্ল্যাটফর্ম,

অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ড এবং স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাসঙ্গিক প্ল্যাটফর্ম বা বোর্ড থেকে ওটিসি কোম্পানিগুলোকে তালিকাচ্যুত বা বের করে দেওয়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। খড়সা নীতিমালা অনুযায়ী এ প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হলো। এ চিঠি পাওয়ার ৭ দিনের মধ্যে এ প্রক্রিয়া শুরু করার বিষয়ে যদি কোনো মতামত থাকে তা জানাতে বলা হয়েছে।

২০০৯ সালে দেশের উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে প্রতিষ্ঠিত হয় ওটিসি মার্কেট। মূলত কোম্পানিগুলোর আর্থিক সক্ষমতা ও সম্ভাবনা যাচাই করে এ স্থানান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। এছাড়া উৎপাদনে না থাকা, নিয়মিত বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) না করা, কাগুজে শেয়ার ডিমেট না করা, নিয়ম অনুযায়ী আর্থিক প্রতিবেদন জমা না দেওয়া,

ডিভিডেন্ড প্রদান না করা এবং সিকিউরিটিজ আইন যথাযথভাবে পরিপালন না করা কোম্পানিগুলোকে মূল মার্কেট থেকে ওটিসিতে শাস্তি স্বরূপ স্থানান্তর করা হয়েছে। তবে কোম্পানিটি বা উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের শাস্তি দেওয়ার উদ্দেশ্যে ওটিসি মার্কেটে পাঠানো হলেও কার্যত শাস্তি পাচ্ছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।

জানা যায়, বর্তমানে ডিএসই’র ওটিসি মার্কেটে ৬১টি ও সিএসই’র ওটিসি মার্কেটে ৪৭টি কোম্পানি তালিকাভুক্ত রয়েছে। ওইসব কোম্পানির মধ্যে প্রাথমিকভাবে স্মল ক্যাপিটাল প্ল্যাটফর্মে উৎপাদন ও অনুৎপাদনে থাকা মোট ২৩টি কোম্পানি স্থানান্তরিত হবে।

এর মধ্যে উৎপাদনশীল ৮টি ও অনুৎপাদনশীল ১৩টি কোম্পানি রয়েছে। এছাড়া অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডে ১৯টি কোম্পানিকে স্থানান্তর করা হবে। আর তালিকাচ্যুত বা এক্সিট প্ল্যানের আওতায় রয়েছে ২২টি কোম্পানি। এই বিষয়ে শিগগিরই চূড়ান্ত নির্দেশনা জারি করবে বিএসইসি।

সপ্তাহজুড়ে ১০ কোম্পানির লভ্যাংশ ঘোষণা: সপ্তাহজুড়ে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত কোম্পানি জিএসপি ফাইন্যান্সসহ ৯টি মিউচ্যুয়াল ফান্ড লভাংশ ঘোষণা করেছে। ডিএসই সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

জিএসপি ফাইন্যান্স: ৩০ জুন, ২০২১ অর্থবছরের জন্য ১১ শতাংশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে ৫.৫ শতাংশ ক্যাশ এবং ৫. ৫ শতাংশ বোনাস ডিভিডেন্ড। আগের বছর কোম্পানিটি ১০.৫ শতাংশ বোনাস ডিভিডেন্ড দিয়েছিল। সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ৫৫ পয়সা। ৩০ জুন, ২০২১ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) হয়েছে ৩৩১ টাকা ৫৯ পয়সা। এর জন্য রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ সেপ্টেম্বর।

সিএপিএম আইবিবিএল মিউচ্যুয়াল ফান্ড: ফান্ডটি ইউনিট হোল্ডারদের জন্য সাড়ে ১৩ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। আগের বছর ফান্ডটি ৮ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছিল। আলোচ্য সময়ে ফান্ডটির ইউনিট প্রতি আয় হয়েছে ২ টাকা ৪১ পয়সা। সম্পদ মূল্য হয়েছে ১১ টাকা ৮১ পয়সা। ডিভিডেন্ড প্রাপ্তির যোগ্যতা নির্ধারণে ফান্ডটির রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ সেপ্টেম্বর।

সিএপিএম বিডিবিএল মিউচ্যুয়াল ফান্ড: ফান্ডটি ইউনিট হোল্ডারদের জন্য ১৩.৫ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। আগের বছর ফান্ডটি ৮ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছিলো। আলোচ্য সময়ে ফান্ডটির ইউনিট প্রতি আয় হয়েছে ১ টাকা ৮৯ পয়সা। সম্পদ মূল্য হয়েছে ১১ টাকা ৯৭ পয়সা। ডিভিডেন্ড প্রাপ্তির যোগ্যতা নির্ধারণে ফান্ডটির রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ সেপ্টেম্বর।

আইসিবি থার্ড এনআরবি মিউচ্যুয়াল ফান্ড: ফান্ডটির ট্রাস্টি আলোচ্য বছরে ইউনিট হোল্ডারদের জন্য ১৫ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। আগের বছর ফান্ডটি ৭.৫০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছিল। আলোচ্য সময়ে ফান্ডটির ইউনিট প্রতি আয় হয়েছে ৫২ পয়সা। সমাপ্ত অর্থবছরে বাজার মূল্য অনুযায়ী ফান্ডটির ইউনিট প্রতি প্রকৃত সম্পদ মূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ৯ টাকা ২২ পয়সা। ফান্ডটির ডিভিডেন্ড সংক্রান্ত রেকর্ড ডেট আগামী ৬ সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে।

এশিয়ান টাইগার মিউচ্যুয়াল ফান্ড: ফান্ডটির ট্রাস্টি আলোচ্য বছরে ইউনিট হোল্ডারদের জন্য ১৫ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। আগের বছর ফান্ডটি ৭.৫ ডিভিডেন্ড দিয়েছিলো। আলোচ্য সমূয়ে ফান্ডটির ইউনিট প্রতি আয় হয়েছে ১ টাকা ৯৩ পয়সা। সমাপ্ত অর্থবছরে বাজার মূল্য অনুযায়ী ফান্ডটির ইউনিট প্রতি প্রকৃত সম্পদ মূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ১২ টাকা ৪১ পয়সা। ফান্ডটির ডিভিডেন্ড সংক্রান্ত রেকর্ড ডেট আগামী ৭ সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে।

আইএফআইএল শরীয়াহ ফান্ড : ফান্ডটি ইউনিট হোল্ডারদের জন্য ৪ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। আগের বছর ফান্ডটি ৪ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছিলো। আলোচ্য সময়ে ফান্ডটির ইউনিট প্রতি আয় হয়েছে ৩১ পয়সা। একই সময়ে সম্পদ মূল্য দাড়িয়েছে ৯ টাকা ৫০ পয়সা। ডিভিডেন্ড প্রাপ্তির যোগ্যতা নির্ধারণে ফান্ডটির রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ সেপ্টেম্বর।

আইসিবি এএমসিএল সেকেন্ড ফান্ড: ফান্ডটি ইউনিট হোল্ডারদের জন্য ৮ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। আগের বছর ফান্ডটি ৫ শতাংশ ডিভিডেন্ড দিয়েছিলো। আলোচ্য সময়ে ফান্ডটির ইউনিট প্রতি আয় হয়েছে ৩৭ পয়সা। আলোচ্য সময়ে ইউনিট প্রতি সম্পদ মূল্য দাড়িয়েছে ১০ টাকা ৩৩ পয়সা। ডিভিডেন্ড প্রাপ্তির যোগ্যতা নির্ধারণে রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ সেপ্টেম্বর।

আইসিবি ইপিএম ফাস্ট: ফান্ডটি ইউনিট হোল্ডারদের জন্য ৬ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। আগের বছর ফান্ডটি ইউনিট হোল্ডারদের ৫ শতাংশ ডিভিডেন্ড দিয়েছিলো। আলোচ্য সময়ে ফান্ডটির ইউনিট প্রতি আয় হয়েছে ৪১ পয়সা। আলোচ্য সময়ে সম্পদ মূল্য দাড়িয়েছে ৯ টাকা ৪০ পয়সা। ডিভিডেন্ড প্রাপ্তির যোগ্যতা নির্ধারণে ফান্ডটির রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ সেপ্টেম্বর।

প্রাইম ব্যাংক ফাস্ট আইসিবি: ফান্ডটি ইউনিট হোল্ডারদের জন্য ৭.৫০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। আগের বছর ফান্ডটি ৫ শতাংশ ডিভিডেন্ড দিয়েছিলো। আলোচ্য সময়ে ফান্ডটির ইউনিট প্রতি আয় হয়েছে ৪৭ পয়সা। আগের বছরে ছিলো ৩১ পয়সা। ডিভিডেন্ড প্রাপ্তির যোগ্যতা নির্ধারণে ফান্ডটির রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ সেপ্টেম্বর।

আইসিবি এএমসিএল সোনালী: ফান্ডটি ইউনিটহোল্ডারদের জন্য ৭ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। আগের বছর ফান্ডটি ৫ শতাংশ ডিভিডেন্ড দিয়েছিলো। আলোচ্য সময়ে ফান্ডটির ইউনিট প্রতি আয় হয়েছে ৫৩ পয়সা। আগের বছরে ছিলো ৪১ পয়সা। ডিভিডেন্ড প্রাপ্তির যোগ্যতা নির্ধারণে ফান্ডটির রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ সেপ্টেম্বর।

পাঁচ কোম্পানিকে শোকজ, দর বাড়ার কারন নেই: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৫ কোম্পানির শেয়ারদর কোন মুল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কোম্পানিগুলোর কর্তৃপক্ষকে শোকজ করেছে। পরবর্তীতে কোম্পানিগুলোর কর্তৃপক্ষের মতামতের ভিত্তিতে কোম্পানি ৫টির শেয়ার নিয়ে সতর্কবার্তা জারি করেছে ডিএসই। কোম্পানি ৫টির মধ্যে রয়েছে সাভার রিফ্যাক্ট্ররিজ, শ্যামপুর সুগার মিলস, সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল, স্টাইলক্রাফট এবং এইচআর টেক্সটাইল লিমিটেড। ডিএসই সূত্রে এই তথ্য জানা যায়।

ডিএসই জানায়, স¤প্রতি কোম্পানি ৫টির শেয়ার দর অস্বাভাবিকভাবে বাড়ার কারণে গত ১৮ আগস্ট সাভার রিফ্যাক্টোরিজ এবং শ্যামপুর সুগারকে নোটিশ পাঠায় প্রতিষ্ঠানটি। এর জবাবে কোম্পানি দুইটি জানায়, কোনো অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই শেয়ারগুলোর দর বাড়ছে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ডিএসইতে গত ২ আগস্ট সাভার রিফ্যাক্ট্ররিজের শেয়ার দর ছিল ২০৯ টাকা।

১৮ আগস্ট কোম্পানিটির শেয়ার দর ২৮১ টাকা ৮০ পয়সায় উঠে। একই সময়ে শ্যামপুর সুগারের ৬৭ টাকা ৮০ পয়সা থেকে ৮৫ টাকা ১০ পয়সায় উঠে।কোম্পানিগুলোর এই দর বাড়াকে অস্বাভাবিক বলে মনে করছে ডিএসই কতৃপক্ষ। বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে তাই সতর্কবার্তা জারি করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এর আগে তালিকাভুক্ত তিন কোম্পানির শেয়ার দর অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে বিধায় ডিএসই সতর্কতা জারি করে।

কোম্পানি তিনটি হলো : সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল, স্টাইলক্রাফট এবং এইচআর টেক্সটাইল। এই তিন কোম্পানির শেয়ারের বিষয়ে ১৯ আগস্ট ডিএসই সতর্ক বার্তা দিয়েছে।ডিএসই জানায়, শেয়ার দর অস্বাভাবিক বাড়ার কারণ জানতে চেয়ে স¤প্রতি ডিএসই কোম্পানিগুলোকে নোটিশ পাঠায়। এর জবাবে কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে জানানো হয়, কোনো রকম অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে।

ডিএসইর তথ্যমতে, সিভিও পেট্রোকেমিক্যালের শেয়ার দর গত ০২ আগস্ট ছিল ১১১.৯০ টাকায়। আর ১৭ আগস্ট কোম্পানিটির শেয়ারের দর বেড়ে দাঁড়ায় ১৬২ টাকা ৯০ পয়সায়। অর্থাৎ এই ৮ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দর ৫০ টাকা ১০ পয়সা বা ৪৫ শতাংশ বেড়েছে।

স্টাইলক্রাফটের শেয়ার দর গত ০২ আগস্ট ছিল ১৪৯ টাকা ৭০ পয়সায়। আর ১৮ আগস্ট কোম্পানিটির শেয়ারের দর বেড়ে দাঁড়ায় ১৯৯ টাকা ৩০ পয়সায়। অর্থাৎ এই ৯ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দর ৪৯ টাকা ৬০ পয়সায বা ৩৩ শতাংশ বেড়েছে।

এইচআর টেক্সটাইলের শেয়ার দর গত ১০ আগস্ট ছিল ৬২ টাকা ৮০ পয়সায়। আর ১৮ আগস্ট কোম্পানিটির শেয়ারের দর বেড়ে দাঁড়ায় ৭৫ টাকা ৮০ পয়সায়। অর্থাৎ এই ৫ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দর ১২ টাকা ৫০ পয়সা বা ২০ শতাংশ বেড়েছে।

সপ্তাহজুড়ে ৭ কোম্পানির ইপিএস ঘোষণা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৭ কোম্পানি সপ্তাহজুড়ে অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। কোম্পানিগুলো হলো: রূপালী ব্যাংক, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স, এশিয়া ইন্স্যুরেন্স, তাকাফুল ইন্স্যুরেন্স, ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্স ও কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড। সংশ্লিষ্ট সুত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

রূপালী ব্যাংক লিমিটেড: চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন’২১) প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২৫ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ইপিএস ছিল ১৫ পয়সা। এদিকে অর্থবছরের ৬ মাসে (জানুয়ারি-জুন ’২১) প্রতিষ্ঠানটির ইপিএস হয়েছে ৪৩ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ইপিএস ছিল ৩৭ পয়সা। আলোচ্য সময়ে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) হয়েছে ৪৬ টাকা ৪৯ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ছিল ৪৪ টাকা ১০ পয়সা।

লংকাবাংলা ফাইন্যান্স লিমিটেড: চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন’২১) প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার ইপিএস হয়েছে ৩০ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ইপিএস ছিল ০১ পয়সা। এদিকে অর্থবছরের ৬ মাসে (জানুয়ারি-জুন’২১) প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ৭১ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ইপিএস ছিল ১৪ পয়সা। আলোচ্য সময়ে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) হয়েছে ১৮ টাকা ২৪ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ছিল ১৮ টাকা ৭৩ পয়সা।

বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড: চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন’২১) প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ০৩ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ইপিএস ছিল ১৯ পয়সা। এদিকে অর্থবছরের ৬ মাসে (জানুয়ারি-জুন ’২১) প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ২ টাকা ০৪ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ইপিএস ছিল ৭৫ পয়সা। আলোচ্য সময়ে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) হয়েছে ২০ টাকা ৮৫ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ছিল ২০ টাকা ১৭ পয়সা।

এশিয়া ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড: চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন’২১) প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার ইপিএস হয়েছে ৭৫ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ইপিএস ছিল ৪৪ পয়সা। এদিকে অর্থবছরের ৬ মাসে (জানুয়ারি-জুন ’২১) প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ১ টাকা ৪৮ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ইপিএস ছিল ১ টাকা ০৩ পয়সা। আলোচ্য সময়ে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) হয়েছে ২৫ টাকা ৩০ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ছিল ২০ টাকা ৪৮ পয়সা।

তাকাফুল ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড: চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন’২১) কোম্পানির ইপিএস হয়েছে ৫৬ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ইপিএস ছিল ২৯ পয়সা। এদিকে অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে (জানুয়ারি’২১-জুন’২১)প্রতিষ্ঠানটির ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ১১ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি ইপিএস ছিল ৬৬ পয়সা।

দুই প্রান্তিকে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারপ্রতি ক্যাশ ফ্লো ছিল ১ টাকা ২৪ পয়সা, যা গত বছর একই সময়ে ১ টাকা ৬৪ পয়সা ছিল। আলোচ্য সময়েপ্রতিষ্ঠানটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ১৯ টাকা ১৩ পয়সা। আগের বছর ছিল ১৭ টাকা ৯৭ পয়সা।

ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড: চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন’২১) প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৯৩ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ইপিএস ছিল ৩০ পয়সা। এদিকে অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে (জানুয়ারি’২১-জুন’২১) প্রতিষ্ঠানটির ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ২২ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে এপিএস ছিল ৫৪ পয়সা। দুই প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি ক্যাশ ফ্লো ছিল ৩ পয়সা।

আগের একই সময়ে ছিল ৫৩ পয়সা। আলোচ্য সময়ে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) হয়েছে ৩২ টাকা ৪১ পয়সা। আগের বছর ছিল আগের ছিল ৩৩ টাকা ৪ পয়সা।

কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড: চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন’২১) প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৫৬ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ছিল ২৮ পয়সা।

এদিকে অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে (জানুয়ারি-জুন’২১) প্রতিষ্ঠানটির ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ১ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ইপিএস ছিল ৬৩ পয়সা। দুই প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি ক্যাশ ফ্লো ছিল ১ টাকা ৭০ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ছিল ১ টাকা ৫৮ পয়সা। আলোচ্য সময় প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) হয়েছে ১৯ টাকা ৮৩ পয়সা।

বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরে গাড়ি এসেম্বলিং করবে ইফাদ অটোস: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রকৌশল খাতের কোম্পানি ইফাদ অটোস লিমিটেড বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরে গাড়ি এসেম্বলিং করার লক্ষ্য নিয়ে ৩০ একর জমির ইজারা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) কার্যালয়ে নির্বাহী চেয়ারম্যান জনাব শেখ ইউসুফ হারুন এর উপস্থিতিতে এই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়।

ইফাদ অটোস লিমিটেডের পক্ষে চুক্তি স্বাক্ষর করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব তানভির আহম্মেদ এবং বেজার পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন নির্বাহী সদস্য জনাব মো: আলী আহসান।

জানা যায়, ইফাদ অটোস লিমিটেড গাড়ি এসেম্বলিং ও লুব্রিকেন্ট কারখানা এবং লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প স্থাপন করার লক্ষ্যে ৫১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা করেছে। নতুন এই প্ল্যান্টের মাধ্যমে প্রত্যক্ষভাবে প্রায় ৮৮০ লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান জনাব শেখ ইউসুফ হারুন চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বলেন, দেশে ব্যক্তিগত গাড়ি, বাণিজ্যিক যান ও মোটরসাইকেলশিল্প স্থাপনের একটা সুযোগ তৈরি হয়েছে এবং সুযোগটি বেজার বিনিয়োগকারীগন কাজে লাগাতে চায়। তিনি বলেন, শুধু বাংলাদেশের বাজার নয়, আশপাশের দেশেও গাড়ি, যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ বাংলাদেশে তৈরি করে রপ্তানি করা যেতে পারে।

তিনি আরও বলেন- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরে ইতোমধ্যে প্রায় ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে যার মধ্যে ১৩টি প্রতিষ্ঠান শিল্প নির্মাণ কাজ শুরু করেছে এবং আগামী ০৪ মাসের মধ্যে ০২টি শিল্প উৎপাদনে আসবে । আশা করছি ইফাদ অটোস লিমিটেড খুব দ্রæত তাদের শিল্প নির্মাণের কাজ শুরু করবে।

ইফাদ অটোস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভির আহম্মেদ বলেন, তারা ব্যবসা স¤প্রসারণের জন্য বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরকে বেছে নিয়েছেন, কারন এখানে বেজার যোগ্য নেতৃত্বের মাধ্যমে বিশ্বমানের পরিসেবা প্রদান করা হচ্ছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, খুব দ্রæতই শিল্প কারখানা স্থাপনের কার্যক্রম শুরু করা যাবে।

তিনি বলেন, ‘আমরা জমি হস্তান্তরের ১ মাসের মধ্যে মটর সাইকেল সংযোজনসহ লুব্রিকেন্ট কারখানা ও লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং-সহ একাধিক কারখানা নির্মাণ কাজ শুরু করবো। যেখানে প্রায় ৫১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের মাধ্যমে ৮৮০ লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।’

উল্লেখ্য, সর্বাধুনিক প্রযুক্তি এবং দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরে দেশের সর্বপ্রথম অটোমোবাইল হাব তৈরী হতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে সেখানে দেশের প্রথম বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরির কারখানা স্থাপনের কাজ শুরু করেছে বাংলাদেশ অটো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরে এ কারখানার কাজ অনেকটা এগিয়েছে।  এ বছরের শেষ নাগাদ বাংলাদেশি ব্র্যান্ড নামে বৈদ্যুতিক গাড়ি বাজারে আনতে চায় তারা।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই ও ফেনী জেলার সোনাগাজী উপজেলায় প্রায় ৩০০০০ একর জমির উপর একটি পূর্ণাঙ্গ শিল্প শহর গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছে যার নামকরণ করা হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগর’। শিল্প নগরটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক হতে মাত্র ১০ কিলোমিটার ও বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম হতে মাত্র ৬৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

এ শিল্প নগরে বিশ্বমানের সকল সুবিধাদি থাকবে যেমন বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, সমুদ্র বন্দর, কেন্দ্রীয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা/পানি শোধনাগার, আবাসিক এলাকা, বাণিজ্যিক এলাকা, বিশ্ববিদ্যালয় ও হাসপাতাল ইত্যাদি। এ লক্ষ্যে বেজা সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সহযোগিতায় সংযোগ সড়ক, ভূমি উন্নয়ন এবং প্রতিরক্ষা বাঁধ, ব্রিজ নির্মাণ, গ্যাস সংযোগ লাইন স্থাপন করছে। খবর প্রেস বিজ্ঞপ্তির

পুঁজিবাজারে ফিরল আরও ২ হাজার কোটি টাকা: দুদিন সূচকের পতন আর দুদিন উত্থানের মধ্য দিয়ে আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহ পার করল দেশের পুঁজিবাজার। আলোচিত সপ্তাহে সূচক ও বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। আর তাতে নতুন করে বিনিয়োগকারীদের বাজার মূলধন অর্থাৎ পুঁজি বেড়েছে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা।

আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহে সোম, মঙ্গল বুধ ও বৃহস্পতিবার মোট চার দিন লেনদেন হয়েছে। চারদিনের মধ্যে সোম ও মঙ্গলবার দুইদিন সূচক বেড়েছে। আর বুধ ও বৃহস্পতিবার পুঁজিবাজারে সূচক কমেছে। এর আগের চার কার্যদিবসে তিনদিন সূচকের উত্থান হয়েছিল। আর একদিন দরপতন হয়েছিল।

আলোচিত সপ্তাহে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক (ডিএসইএক্স) আগের সপ্তাহের চেয়ে ৬১ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৭৬০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, যা সূচকটির ইতিহাসে সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছে। এ সূচকের পাশাপাশি ডিএসইর অপর দুই সূচক ডিএসইএস সূচক ২ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৪৬১ পয়েন্ট এবং ডিএস-৩০ সূচক ৪ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৪২৩ পয়েন্ট দাঁড়িয়েছে।

এই দুটি সূচকও ইতিহাসের সেরা স্থানে অবস্থান করছে। বেশিরভাগ শেয়ার ও সূচক বাড়ায় নতুন করে গত সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন অর্থাৎ বিনিয়োগকারীদের পুঁজি ফিরেছে ১ হাজার ৮৫২ কোটি ৯৫ লাখ ১২ হাজার ৮৮৭ টাকা। শুধু তাই নয়, বাজার মূলধনের অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে এখন ৫ লাখ ৪৯ হাজার ৭২১ কোটি ৬২ লাখ ৪ হাজার ৪৫৫ টাকায় অবস্থান করছে, যা এর আগের সপ্তাহে ছিল ৪৭ হাজার ৮৬৮ কোটি ৬৬ লাখ ৯১ হাজার ৫৬৮ টাকা।

বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে চার দিনে মোট ১০ হাজার ৩১১ কোটি ৮৫ লাখ ২৫ হাজার ৫৯৫ টাকা লেনদেন হয়েছে। এর আগের সপ্তাহে মোট চার কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ১০ হাজার ৬৫৪ কোটি ১৭ লাখ ৬৭ হাজার ৯০৭ টাকা। অর্থাৎ এর আগের সপ্তাহের চেয়ে লেনদেন ৩ দশমিক ২১ শতাংশ বেড়েছে। গত সপ্তাহে গড় লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৫২৯ কোটি টাকা।

তার আগের সপ্তাহের গড় লেনদেন ছিল ২ হাজার ৬৬৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ গড় লেনদেন কিছুটা কমেছে। এ সময়ে ডিএসইতে ৩৮২টি প্রতিষ্ঠানের ২২৪টির শেয়ারের দাম বেড়েছে। এছাড়া কমেছে ১৪৩টির, আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১১টির শেয়ারের দাম। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হওয়া ৩৮২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৮৮টি শেয়ারের দাম বেড়েছিল। এছাড়া কমেছিল ১৭৮টির আর অপরিবর্তিত ছিল ১২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম।

অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) চার কার্যদিবসে মোট ৪০৭ কোটি ৩৩ লাখ ৬৯ হাজার ৯৪৬ টাকা লেনদেন হয়েছে। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৪০৮ কোটি ৩৯ লাখ ৩৭ হাজার ২৬২ টাকা। অর্থাৎ লেনদেন কমেছে।

কোম্পানিগুলোর শেয়ারের মধ্যে ১৮০টির শেয়ারের দাম বেড়েছে। কমেছে ১৪৩টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ২১টি কোম্পানির শেয়ারের দাম। বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ায় সিএসইর প্রধান সূচক সিএসইএক্স আগের সপ্তাহের চেয়ে ১৯৮ পয়েন্ট বেড়ে ১৯ হাজার ৭১৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

বস্ত্র খাতের দুই কোম্পানির চমক: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহে দর বৃদ্ধির তালিকায় উঠে এসেছে বস্ত্র খাতের ২ কোম্পানি। বস্ত্র খাতের বি ক্যাটাগরীর আলোচিত দুই কোম্পানি। কোম্পানি দুটি হলো: মেট্রো স্পিনিং এবং আনলিমা ইয়ার্ণ। আলোচিত এই দুই কোম্পানির শেয়ার দর দীর্ঘ বিরতির পর ফের হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় প্রশ্ন জেগেছে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। শেয়ার দরের এমন উত্থানে কোম্পানি দুটির শেয়ার নিয়ে নিয়ে বাজারে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। কোম্পানি দুটির প্রাসঙ্গিক তথ্য নিচে দেওয়া হলো:

মেট্রো স্পিনিং: বস্ত্র খাতের কোম্পানি মেট্রো স্পিনিং গত এক সপ্তাহে শেয়ার দর বেড়েছে ৩ টাকা ৮০ পয়সা বা ১৮.১৮ শতাংশ। গত এক বছরে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ২০ টাকা ১০ পয়সা বা ২৭১ শতাংশ। এক বছরে কোম্পানিটির শেয়ার সর্বনিন্ম দর ছিল ৭ টাকা ৪০ পয়সা এবং সর্বোচ্চ ২৭ টাকা ৫০ পয়সা। সর্বশেষ নয় মাসে (জুলাই’২০-মার্চ’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ৬২ পয়সা।

আগের বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি লোকসান ছিলো ১৭ পয়সা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির সম্পদ মূল্য অবস্থান করছে ১৫ টাকা ৭২ পয়সা। সর্বশেষ কোম্পানিটির বিনিয়োগকারীদের জন্য ২০২০ এবং ২০১৯ সালে ২ শতাংশ করে ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে। অর্থাৎ গত বছর কোম্পানিটির ডিভিডেন্ডের কোন উন্নতি হয়নি। কোম্পানিটির বর্তমানে রিজার্ভ রয়েছে ২৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা।

কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ১০০ কোটি টাকা। আর পরিশোধিত মূলধন ৬১ কোটি ৬৯ লাখ ৮০ হাজার টাকা। বর্তমানে কোম্পানিটির শেয়ার সংখ্যা ৬ কোটি ১৬ লাখ ৯৮ হাজার ২৭৫ টাকা। কোম্পানিটির শেয়ার বর্তমানে স্পন্সরদের কাছে রয়েছে ৩০.০৯ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে ১৮.২৫ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৫১.৬৬ শতাংশ।

আনলিমা ইয়ার্ণ: বস্ত্র খাতের কোম্পানি আনলিমা ইয়ার্ণ গত এক সপ্তাহে শেয়ার দর বেড়েছে ৭ টাকা ৪০ পয়সা বা ১৭.৪১ শতাংশ। গত এক বছরে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ২১ টাকা ৩০ পয়সা বা ৭১ শতাংশ। এক বছর কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিল সর্বনিন্ম ২৯ টাকা ৯০ পয়সা এবং সর্বোচ্চ ৫১ টাকা ২০ পয়সা। সর্বশেষ নয় মাসে (জুলাই’২০-মার্চ’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ২২ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি আয় ছিলো ১১ পয়সা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির সম্পদ মূল্য অবস্থান করছে ১১ টাকা ৪৮ পয়সা।

সর্বশেষ কোম্পানিটির বিনিয়োগকারীদের জন্য ২ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে। এর আগে ২০১৯ সালে ৫ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছিল। অর্থাৎ আগের বছরের তুলনায় গত বছর কোম্পানিটির ডিভিডেন্ড কমেছে। কোম্পানিটির বর্তমানে রিজার্ভ রয়েছে ১ কোটি ২৩ লাখ টাকা।

কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ২০ কোটি টাকা। আর পরিশোধিত মূলধন ১৭ কোটি ৮৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা। বর্তমানে কোম্পানিটির শেয়ার সংখ্যা ১ কোটি ৭৮ লাখ ৬৭ হাজার ৮০০ টাকা। কোম্পানিটির শেয়ার বর্তমানে স্পন্সরদের কাছে রয়েছে ৪৭.২২ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে ৯.৮৯ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৪৩.৮৯ শতাংশ।

ব্লক মার্কেটে আল আরাফাহ ইসলামি ব্যাংকের এ কি চমক: পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত ২০ কোম্পানি সপ্তাহজুড়ে বøক মার্কেটে লেনদেনের শীর্ষে রয়েছে। তবে এর মধ্যে ব্যাংক খাতের কোম্পানি আল আরাফাহ ইসলামি ব্যাংক লেনদেনে বড় চমক দেখিয়েছে। গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবস ব্লক মার্কেটে লেনদেনে শীর্ষে ছিল আল আরাফাহ ইসলামি ব্যাংক। গত সপ্তাহে ডিএসইর ব্লক মার্কেটে লেনদেন ছাড়িয়েছে ৪৪১ কোটি টাকার বেশি। তবে এর মধ্যে ২৬৮ কোটি ৩ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে আল আরাফাহ ইসলামি ব্যাংকের। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস ডিএসইতে ব্লক মার্কেটে ৬০টি কোম্পানি লেনদেনে করেছে। কোম্পানিগুলোর ১৭৬ কোটি ৬ লাখ ৮৬ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। এদিন সবচেয়ে বেশি শেয়ার লেনদেন হয়েছে আল আরাফা ইসলামি ব্যাংকের। কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১০৪ কোটি ৪৫ লাখ টাকার। এরপর জেনেক্স ইনফোসিসের ১৩ কোটি ৮ হাজার টাকার, ব্রাক ব্যাংকের ৯ কোটি ২৩ লক্ষ ৫২ হাজার টাকার, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর ৭ কোটি ৩ লক্ষ ৯৩ হাজার টাকার, ন্যাশনাল ফিড মিলের ৫ কোটি ২ লক্ষ ৬৬ হাজার টাকার, বেক্সিমকো ফার্মার ৪ কোটি ৮৪ লক্ষ ৯০ হাজার টাকার এবং বেক্সিমকো লিমিটেডের ৪ কোটি ৪৭ লক্ষ ২৮ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।

সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস ডিএসইতে ব্লক মার্কেটে ৪৭টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এসব কোম্পানির ১০৩ কোটি ৮ লাখ ৭৭ হাজার টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে- আল আরাফা ইসলামী ব্যাংকের ৫১ কোটি টাকার, পূবালী ব্যাংকের ১৪ কোটি ৪৯ লক্ষ টাকার, আনোয়ার গ্যালভানাইজিংয়ের ৫ কোটি ৬০ হাজার টাকার, এইচআর টেক্সটাইলের ৪ কোটি ২৮ লক্ষ ৩৪ হাজার টাকার এবং ফরচুন সুজের ৩ কোটি ২৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস ডিএসইতে ব্লক মার্কেটে ৪১টি কোম্পানির লেনদেন হয়েছে।

এসব কোম্পানির ৭৮ কোটি ৩৯ লাখ ৯৩ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে-আরাফা ইসলামি ব্যাংকের ৫১ কোটি ৮০ লক্ষ টাকার, পূবালী ব্যাংকের ১৪ কোটি ৪৯ লক্ষ টাকার, এইচআর টেক্সটাইলের ৪ কোটি ২৩ লক্ষ ৮ হাজার টাকার, মেঘনা পেট্রোলিয়ামের ৩ কোটি ২১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকার, ওরিয়ন ফার্মার ৩ কোটি ১৮ লক্ষ ৯ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।

সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস ডিএসইতে ব্লক মার্কেটে ৪০টি কোম্পানির লেনদেন হয়েছে। এসব কোম্পানির ৮৪ কোটি ৩০ লাখ ৪৪ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে-আল-আরাফা ইসলামী ব্যাংকের ৬০ কোটি ৭৮ লাখ ৮৬ হাজার টাকার, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ৫ কোটি ৭৩ লাখ ৯০ হাজার টাকার, এসএস স্টিলের ২ কোটি ৮৬ লাখ ৮০ হাজার টাকার, পাইওনিয়ার ইন্সুরেন্সের ২ কোটি ৬৭ লাখ টাকা এবং বৃটিশ অ্যামেরিকান ট্যোবাকোর ২ কোটি ২৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।