আর্থিক খাতের ৩ কোম্পানিতে বিদেশী বিনিয়োগের হিড়িক
দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক খাতের ২৩টি কোম্পানির মধ্যে বিদেশি বিনিয়োগ রয়েছে ১১টিতে। এই ১১টি কোম্পানির মধ্যে তিনটি কোম্পানিতে বিদেশিদের সর্বোচ্চ বিনিয়োগ রয়েছে। কোম্পানি ৩টি হলো: ডেল্টা ব্র্যাক হাউজিং, আইডিএলসি ফাইন্যান্স ও উত্তরা ফাইন্যান্স লিেিম্টড। কোম্পানিগুলোর প্রতি বিদেশিদের আস্থা থাকায় তারা কোম্পানি তিনটিতে সর্বোচ্চ বিনিয়োগ করেছে।
কোম্পানি ৩টিতে বিদেশি বিনিয়োগ রয়েছে ৮ শতাংশ থেকে ১৭ শতাংশ পর্যন্ত। কোম্পানি ৩টির মধ্যে ডেল্টা ব্র্যাক হাউজিং ও আইডিএলসি ফাইন্যান্স থেকে বিদেশিরা কিছু বিনিয়োগ তুলে নিলেও উত্তরা ফাইন্যান্সে তাদের বিনিয়োগ অপরবর্তিত রয়েছে। ডিএসই এবং সিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ডেল্টা ব্র্যাক হাউজিং: আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে সর্বোচ্চ বিদেশি বিনিয়োগ রয়েছে ডেল্টা ব্র্যাক হাউজিংয়ে। ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর কোম্পানিটিতে বিদেশি বিনিয়োগ ছিলো ২১.৯৪ শতাংশ। চলতি বছরের আগষ্ট পর্যন্ত তা কিছুটা কমে অবস্থান করছে ১৭.১৩ শতাংশে। চলতি বছরে কোম্পানিটিতে বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে ৪.৮১ শতাংশ। সর্বশেষ ২০২০ সালে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ১৫ শতাংশ ক্যাশ এবং ১৫ শতাংশ বোনাস দিয়েছে।
আইডিএলসি ফাইন্যান্স : আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে বিদেশি বিনিয়োগে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে আইডিএলসি ফাইন্যান্স। ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর কোম্পানিটিতে বিদেশি বিনিয়োগ ছিলো ৯.৬৪ শতাংশ। চলতি বছরের ৮ মাসে কোম্পানিটিতে বিদেশি বিনিয়োগ ০.২৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯.৮৯ শতাংশে। সর্বশেষ ২০২০ সালে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ শতাংশ ক্যাশ এবং ৫ শতাংশ বোনাস ডিভিডেন্ড দিয়েছে।
উত্তরা ফাইন্যান্স: আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে বিদেশি বিনিয়োগে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে উত্তরা ফাইন্যান্স। ২০২০ সালে ডিসেম্বরে কোম্পানিটিতে বিদেশি বিনিয়োগ ছিলো ৭.৮২ শতাংশ। যা চলতি বছরের আগষ্ট পর্যন্ত অপরিবর্তিত রয়েছে। সর্বশেষ ২০১৯ সালে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ১৫ শতাংশ ক্যাশ এবং ৫ শতাংশ বোনাস ডিভিডেন্ড দিয়েছে। কোম্পানিটি ২০২০ সালের জন্য এখনো ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেনি।
এ বিষয়ে কোম্পানির সচিব বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক কোম্পানিটির আর্থিক প্রতিবেদন অডিট করছে। আগামী এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে অডিট কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে। এরপর কোম্পানিটি ২০২০ সালের জন্য ডিভিডেন্ড ঘোষণা করবে। আর্থিক খাতে বিদেশি বিনিয়োগের বাকি কোম্পানিরগুলোর মধ্যে রয়েছে মাইডাস ফাইন্যান্স, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, আইপিডিসি ফাইন্যান্স, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, বে-লিজিং, ফারইস্ট ফাইন্যান্স, প্রাইম ফাইন্যান্স ও পিপলস লিজিং।
মাইডাস ফাইন্যান্স: ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিদেশি বিনিয়োগ ছিলো ১.৭৩ শতাংশ। চলতি বছরের ৮ মাসে কোম্পানিটির বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে ০.৭৫ শতাংশ। আগস্ট মাসে যা দাঁড়িয়েছে ০.৯৮ শতাংশে। সর্বশেষ ২০১৯ সালে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ২.৫ শতাংশ ক্যাশ এবং ২.৫ বোনাস ডিভিডেন্ড দিয়েছে।
লংকাবাংলা ফাইন্যান্স: ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিদেশি বিনিয়োগ ছিলো ০.৮৫ শতাংশ। চলতি বছরের ৮ মাসে কোম্পানিটির বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে ০.০৫ শতাংশ। আগস্ট মাসে বিদেশি বিনিয়োগ দাঁড়িয়েছে ০.৮০ শতাংশে। সর্বশেষ ২০২০ সালে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের জন্য ১২ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছিলো।
আইপিডিসি ফাইন্যান্স: ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিদেশি বিনিয়োগ ছিলো ২.৮০ শতাংশ। চলতি বছরের ৮ মাসে কোম্পানিটির বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে ২.৫০ শতাংশ। আগস্ট মাসে বিদেশি বিনিয়োগ দাঁড়িয়েছে ০.৩০ শতাংশে। সর্বশেষ ২০২০ সালে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের জন্য ১২ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছিলো।
ইন্টারন্যাশনাল লিজিং: ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিদেশি বিনিয়োগ ছিলো ০.০৭ শতাংশ। চলতি বছরের ৮ মাসে কোম্পানিটির বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে ০.০৯ শতাংশ। আগস্ট মাসে যা দাঁড়িয়েছে ০.১৬ শতাংশে। সর্বশেষ ২০১৮ সালে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ৫ শতাংশ বোনাস দিয়েছে।
বে-লিজিং: ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিদেশি বিনিয়োগ ছিলো ০.১৩ শতাংশ। চলতি বছরের ৮ মাসে কোম্পানিটির বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে ০.১০ শতাংশ। আগস্ট মাসে কোম্পানিটিতে বিদেশি বিনিয়োগ দাঁড়িয়েছে ০.১৪ শতাংশে। সর্বশেষ ২০১৯ সালে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের জন্য ৭.৫ শতাংশ ক্যাশ এবং ২.৫ শতাংশ বোনাস দিয়েছে।
ফারইস্ট ফাইন্যান্স: ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিদেশি বিনিয়োগ ছিলো ০.০৮ শতাংশ। চলতি বছরের ৮ মাসে কোম্পানিটির বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে ০.০৩ শতাংশ। আগস্ট মাসে বিদেশি বিনিয়োগ দাঁড়িয়েছে ০.০৫ শতাংশে। সর্বশেষ ২০১৬ সালে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের জন্য ৫ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে।
প্রাইম ফাইন্যান্স : প্রাইম ফাইন্যান্স ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিদেশি বিনিয়োগ ছিলো ০.০১ শতাংশ। আর চলতি বছরের আগষ্ট পর্যন্ত বিদেশি বিনিয়োগ অপরিবর্তিত রয়েছে। সর্বশেষ ২০১৯ সালে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের জন্য ২ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছিলো। ২০২০ সালে ‘নো ডিভিডেন্ড’ দিয়েছে।
পিপলস লিজিং : কোম্পানিটিতে ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিদেশি বিনিয়োগ ছিলো ১.০২ শতাংশ। এরপর কমে দাঁড়িয়েছে ০.১৯ শতাংশে। দীর্ঘদিন যাবত কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন বন্ধ রয়েছে।