দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোস্পানি সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলকে অধিগ্রহণের বিষয়ে আলিফ গ্রুপের প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। তবে সাতটি শর্ত সাপেক্ষে আলিফ গ্রুপকে এ অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিনিয়োগকারীদের বৃহত্তর স্বার্থ বিবেচনা করে বিএসইসি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বৃহস্পতিবার আলিফ গ্রুপ ও সি অ্যান্ড এ টেক্সটাইলের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে অধিগ্রহণ বিষয়ক সম্মতির চিঠি পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মূখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম নিশ্চিত করেছে।

বিএসইসির দেওয়া ৭ শর্তের মধ্যে রয়েছে: মূলধন সংগ্রহের ক্ষেত্রে সকল সিকিউরিটিজ আইন অনুযায়ী অধিগ্রহণকৃত কোম্পানি বা অধিগ্রহণকারী কোম্পানির আগত ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে নতুন শেয়ার ও বন্ড ইস্যু করতে হবে। সংশ্লিষ্ট আইনের বিধি-বিধান পরিপালন করে আলিফ গ্রুপ তাদের প্রস্তাবিত অধিগ্রহণ কার্যক্রম নিষ্পত্তি করতে হবে।

সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলসকে উৎপাদনে ফেরাতে আলিফ গ্রুপ অবিলম্বে কাজ শুরু করবে। একইসঙ্গে সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলসের উৎপাদন সুবিধার জন্য গ্যাস লাইন, অন্যান্য সকল ইউটিলিটিগুলোর সংযোগ স্থানান্তর করতে হবে। সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলসকে অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে আলিফ গ্রুপকে ব্যাংকের দায় পরিশোধ করতে হবে।

এছাড়া আলিফ গ্রুপের কোম্পানি আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ ও আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিংকে সিকিউরিটিজ আইন মেনে প্রক্রিয়াধীন থাকা এজিএম এবং নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন নিয়মিত করতে হবে। সংগৃহীত শেয়ারের টাকা পৃথক ব্যাংক হিসাবে রাখা হবে। ওই টাকা শুধুমাত্র ব্যাংকের দায়বদ্ধতা ও উৎপাদন সুবিধা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যাবে। সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলসকে উৎপাদন শুরু করতে সকল উদ্যোগ এবং দায় গ্রহণ করবে আলিফ গ্রুপ।

সূত্রে জানা গেছে, বিগত পাঁচ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে সি অ্যান্ড এ টেক্সটাইলস। ইতিমধ্যে চট্টগ্রামে অবস্থিত কোম্পানিটি পরিদর্শন করেছে আলিফ গ্রুপ। তারা অধিগ্রহণ সংক্রান্ত পরিকল্পনার প্রস্তাব বিএসইসিতে দাখিল করেছে। এদিকে চলতি বছরের গত ৮ সেপ্টেম্বর বিএসইসি’র কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলিফ গ্রুপ কর্তৃপক্ষের আলোচনা হয়।

২০১৭ সালের ৫ নভেম্বর থেকে সি অ্যান্ড এ টেক্সটাইলস ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে লেনদেন করছে। একইসঙ্গে গত ৩ বছরের বেশি সময় ধরে কোম্পানিটির সব ধরনের ব্যবসায়িক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘ সময় ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে অবস্থান করা কোম্পানিটির আর্থিক অবস্থার উন্নতি করতে ব্যর্থ হয়েছেন স্বতন্ত্র পরিচালকসহ পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা।

এছাড়া, কোম্পানিটি আইন অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) করতেও ব্যর্থ হয়েছে। আর ২০১৫ সালে তালিকাভুক্তির পর থেকে টানা ৫ বছর কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের নগদ লভ্যাংশ দেয়নি। এখন পর্যন্ত স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত থাকা সত্ত্বেও সিকিউরিটিজ আইন যথাযথভাবে পরিপালন করছে না এবং প্রতিনিয়তই আইন লঙ্ঘন করে যাচ্ছে কোম্পানিটি। ২০১৬ সালের পর থেকে কোম্পানিটির ব্যর্থতার কারণে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা লভ্যাংশ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

২০১৫ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলসের পরিশোধিত মূলধন ২৩৯ কোটি ৩১ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ২৩ কোটি ৯৩ লাখ ১৬ হাজারটি। এর মধ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে ৬২.১৯ শতাংশ শেয়ার। প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের ১৫.৬৭ শতাংশ এবং উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে ২২.১৪ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।