দেশ প্রতিক্ষণ, পটুয়াখালী: উত্তাল পায়রা নদী ট্রলার দিয়ে মায়ের সঙ্গে পাড়ি দিতে ভয় পেয়ে ব্রিজের দাবীতে চিঠি লেখে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ছোট শিশু শীর্ষেন্দু। চিঠির জবাবে সেতু করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ফিরতি চিঠি দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রতিশ্রুতির দেয়া ব্রিজ এখন বাস্তবায়নের পথে। ব্রিজ বাস্তবায়নের খবরে পটুয়াখালীসহ দক্ষিণাঞ্চল মানুষের সীমাহীন আনন্দের যেন কোনো কমতি নেই। দাপ্তরিক কাজ শেষ করে অচিরেই সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করতে চায় সেতু কর্তৃপক্ষ।

চিঠি লেখা ছোট্ট শিশু শীর্ষেন্দু বিশ্বাস এখন পটুয়াখালী সরকারি জুবলী উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র। ২০১৬ সালে পটুয়াখালী-মির্জাগঞ্জ পায়রা নদীর পায়রাকুঞ্জ এলাকার সেতুর দাবিতে চিঠি লিখেছিল। সেতু কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, ইতিমধ্যে জমি অধিগ্রহণ, পরামর্শক ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়।

শীর্ষেন্দু বলে, আমার সহপাঠীসহ এলাকার অনেকেই বলতো তোমার চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী যে ব্রিজের কথা বলেছিল সেটা কোথায়। তারা এমনও বলে আশ্বাসের মধ্যই সীমাবদ্ধ থাকবে ব্রিজ, এত বড় নদীতে সরকার ব্রিজ করবে না। আবার অনেকেই ফেসবুকে জানতে চাইতো কিরে শীর্ষেন্দু তোর ব্রিজের খবর কি। এ ধরনের নানা প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে যেতে ফেসবুক একাউন্ট বন্ধ করে রাখতাম। আজ অনেক প্রশ্নের অবসান হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই এজন্য যে, তিনি প্রমাণ করলেন তিনি মানবতার জননী। আমার কথা তিনি রেখেছেন।

এবিষয়ে পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আলমগীর হোসেন বলনে, সেতু নির্মাণ হলে মির্জাগঞ্জ উপজেলার সঙ্গে পটুয়াখালী সদর এবং ঢাকার সঙ্গে সরাসরি নিরবচ্ছিন্ন সড়ক স্থাপিত হবে এবং স্থানীয়দের চলাচলে ফেরি কিংবা ট্রলারের জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হবে না। তাছাড়া মানুষের জীবন জীবিকার আমূল-পরিবর্তন ঘটবে। প্রধানমন্ত্রী দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের আস্থা ও ভালোবাসার প্রতীক। ছোট্ট শিশু শীর্ষেন্দু বিশ্বাসের চিঠির উত্তরে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আজ সেই প্রতিশ্রুতি তিনি বাস্তবে রূপ দিলেন।

সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক মো.আবু বকর ছিদ্দিক বলেন। পায়রাকুঞ্জ নামে ১ হাজার ৬৯০ মিটার দীর্ঘ সেতুটি নির্মাণে প্রাথমিকভাবে এক হাজার ৪২ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। প্রাথমিক ডিজাইন অনুযায়ী সেতুর মোট দৈর্ঘ্য ১ হাজার ৬৯০ মিটার। এর মধ্যে ১০০ মিটা দৈর্ঘ্যর ৯টি স্প্যান এবং উভয়প্রান্তে ৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ২টি স্প্যান ও ৩০ মিটার দৈর্ঘ্যের ২৩টি স্প্যান রাখা হয়েছে।

গত ২০ সালের মার্চ মাসে একনেক সভায় সেতু নির্মাণের ডিপিপি অনুমোদিত হয় এবং সম্পূর্ণ দেশীয় অর্থায়নে ২০২৫ সালের মধ্যে সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান সেতু কর্তৃপক্ষ।