দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির অর্থ যথাযথভাবে ব্যবহার নিশ্চিতে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এরই অংশ হিসাবে প্রকৌশল খাতের কোম্পানি ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজকে আইপিওর টাকা ব্যবহারের বিষয়ে তলব করেছে বিএসইসি।

কোম্পানিটিকে ডেকে আইপিওর টাকা তুলে ঘোষণা অনুযায়ী তা ব্যয় হচ্ছে কি না সে বিষয়ে জানতে চেয়েছে। আজ বুধবার (১৩ অক্টোবর) বিএসইসিতে কোম্পানিটিকে ডেকে এ বিষয়ে জানতে চাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম।

বিএসইসির এ মুখপাত্র বলেন, বিএসইসি কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদের উপস্থিতিতে সভায় ওয়ালটন তার ভবিষ্যৎ ব্যবসায়ীক পরিকল্পনা, তাদের সহযোগী কোনো প্রতিষ্ঠানের মূলধন সংগ্রহে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হবে কি না, আইপিওর মাধ্যমে যে টাকা তোলা হয়েছে সে টাকা ব্যবহার কীভাবে হচ্ছে, সেসব বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়।

পুঁজিবাজার থেকে কোম্পানিটি যে উদ্দেশ্যে টাকা উত্তোলন করেছে, তারা তা সঠিকভাবে ব্যয় করছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তারই অংশ হিসেবে ওয়ালটন কর্তৃপক্ষকে ডাকা হয়েছিল। কোম্পানিটির পক্ষ থেকে আইপিওর টাকা ব্যবহারের বিষয়ে বিএসইসিকে সন্তোষজনক জবাব দিয়েছে।

২০২০ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটি বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে তালিকাভুক্ত হয়ে ১০০ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে। এর মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক বা যোগ্য বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয় ৬০ কোটি ৯৬ লাখ ৫৭ হাজার ৮০৫ টাকা। ব্যক্তিশ্রেণির বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয় ৩৯ কোটি ৩ লাখ ৪২ হাজার ১৯৫ টাকা।

ঘোষণা অনুযায়ী সংগৃহীত তহবিল থেকে সাড়ে ৬২ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে ব্যবসা সম্প্রসারণে, ৩৩ কোটি টাকায় পরিশোধ করা হবে ঋণ। সাড়ে চার কোটি টাকা আইপিও প্রক্রিয়ায় খরচ করার কথা জানানো হয়।

বিএসইসি জানায়, এভাবে সব কোম্পানিকে ডাকা হবে। কারণ, ইতিপূর্বে দেখা গেছে, কোম্পানিগুলো যে উদ্দেশ্যে শেয়ারবাজার থেকে টাকা উত্তোলন করেছে তা যথাযথভাবে ব্যবহার নিশ্চিত করেনি। ফলে তাদের আর্থিক কোনো অগ্রগতি হয়নি। এতে বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

উল্লেখ্য, পুঁজিবাজারে লেনদেনযোগ্য কম শেয়ার থাকায় গত সেপ্টেম্বরে তিন কোম্পানিকে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে থাকা শেয়ার বিক্রি করে শেয়ার সংখ্যা বাড়াতে চাপ দেয় বিএসইসি। এর মধ্যে একটি ছিল ওয়ালটন।

প্রথম দিকে কোম্পানিগুলোকে প্রতি মাসে ১০ শতাংশ শেয়ার ছাড়তে বলা হয়। পরে আগামী তিন বছরে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে থাকা শেয়ার থেকে পর্যায়ক্রমে ১ কোটি ২০ লাখ ৮৯ হাজার শেয়ার ছাড়ার কথা জানানো হয়। এতে লেনদেনযোগ্য শেয়ার দশমিক ৯৭ শতাংশ থেকে বেড়ে হবে ৫ শতাংশ।

১০ শতাংশ শেয়ার ছাড়ার শর্ত বাস্তবায়নে বাকি ৫ শতাংশ শেয়ার কবে ছাড়া হবে তা তিন বছর পর আবারও বৈঠক করে সময় নির্ধারণ করা হবে বলে জানানো হয়। এমন সিদ্ধান্ত আসার এক মাসেও ওয়ালটনের পক্ষ থেকে শেয়ার বিক্রির ঘোষণা আসেনি।