দেশ প্রতিক্ষণ, শেরপুর: গরীব ও অসহায় কৃষকদের আইডি কার্ড ব্যবহার করে কৃষি ঋণের নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয় ঋণ জালিয়াতির প্রমাণ লোপাটে নথিপত্রে পুড়িয়ে ছাই করা হয়েছে। শেরপুরে অগ্রণী ব্যাংকের নালিতাবাড়ী শাখায় ঘটেছে এমন আজব ঘটনা। শেরপুরের নালিতাবাড়ীর অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড শাখার ব্যবস্থাপক সুমন চন্দ্র কর্মকার, সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক আইয়ুব আলী এবং সিনিয়র অফিসার আব্দুর রহমানের বিরুদ্ধে এমন দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগ রয়েছে, গত ৮ মার্চ দুর্নীতি, অনিয়ম ও ব্যাংকের ঋণের টাকা আত্মসাতের নথিপত্রের প্রমাণ লোপাটে ফাইল পোড়ানো হয়। এমন অভিযোগ খতিয়ে দেখতে বুধবার (১৩ অক্টোবর) দুদকের টাঙ্গাইল সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক জিতেন্দ্র নাথের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করে এনফোর্সমেন্ট টিম। দুদকের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মো. শফি উল্লাহ অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, দুদক টিম সরেজমিনে অগ্রণী ব্যাংকের নলিতাবাড়ি শাখা পরিদর্শন করে এবং অভিযোগের বিষয়ে শাখা ব্যবস্থাপকসহ সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ও অভিযোগ সম্পর্কে তাদের বক্তব্য রেকর্ড করে। টিম ভুয়া ঋণ প্রদানের নথিপত্র যাচাই-বাছাই করেছে এবং যাদের নামে ভুয়া ঋণ গ্রহণ করেছে তাদের বক্তব্যও শুনেছে। এ বিষয়ে আরও অনুসন্ধান শেষে কমিশনে প্রতিবেদন দাখিল করবে এনফোর্সমেন্ট টিম। ব্যাংকের ওই শাখার বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে ইতোপূর্বে দুটি মামলা বর্তমানে দুদকের তদন্তাধীন রয়েছে বলে জানা যায়।

বিভিন্ন সূত্রে অভিযোগের বিষয়ে আরও জানা যায়, নালিতাবাড়ী শাখার শাখা ব্যবস্থাপক সুমন চন্দ্র কর্মকার, সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক আইয়ুব আলী এবং সিনিয়র অফিসার আব্দুর রহমান দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে বিভিন্ন ঋণ গ্রহীতার নামে একাধিক ঋণ দিয়েছেন। ভুয়া আইডি কার্ড বানিয়ে গ্রাম ইউনিয়নের ঠিকানা পরিবর্তন করে বিভিন্ন নামে ঋণ বিতরণ করেছেন তারা, যেখানে প্রকৃত কৃষকেরা ঋণ পাচ্ছেন না।

অসহায় গরীব কৃষকদের ঋণের প্রলোভন দেখিয়ে তাদের ছবি ও জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি নেন তারা। যার মাধ্যমে বিভিন্ন নামে ঋণ দেখিয়ে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে কোটি কোটি টাকা। শুধু তাই নয় ব্যবস্থাপক সুমন চন্দ্র কর্মকার অনেক ঋণের ফাইল পুড়িয়ে নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এমন অভিযোগ খতিয়ে দেখতে অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেডের ময়মনসিংহের বিভাগীয় অফিস থেকে তদন্তও করা হয় বলে জানা গেছে।

যাদের নামে ভুয়া আইডি কার্ড বানিয়ে ঋণ দেওয়া হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন- হালিমা, আবু বক্কর, মিয়া, মহির উদ্দিন, মাহমুদা, হামিদা, আকবর আলী, মাসুদ করিম, অলিল মিয়া, রহিম উদ্দিন, আব্দুল করিম, ছামাদ, আব্দুল খালেক, মান্নান, নুরুল ইসলাম, মো. কামাল হোসেন,

মো. খলিল, মনোয়ারা, করিম মিয়া, জয়নাল আবদীন, আজহারুল, আসাদ আলী, মালেক, খায়রুজ্জামান, জনু শেখ, ছোরহাব আলী, হোসেন আলী, মোজাম্মেল, আব্দুল জলিল, ছামাদুল, রমজান, আবেদ আলী, ছাবেদ আলী জহুর উদ্দিন, কাদির, বারুনী রাকসাম, হনুফা,পারুল, রমজান, মোতালেব ও মোশারফ।