দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: টানা আট কার্যদিবস একটানা পতনে পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সেই আতঙ্কে সোমবার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যেও ছিল শেয়ার বিক্রির প্রবণতা। এ কারণে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৯০ শতাংশেরই দরপতন ঘটেছে।

এদিন লেনদেনের দ্বিতীয় ঘণ্টায় (সকাল ১০টা থেকে বেলা ১২টা.৩৫ মিনিটে) প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক আগের দিনের চেয়ে কমেছে ১৬০ পয়েন্ট। আর তাতে বিনিয়োগকারীরা বড় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। তারা আতংকিত হয়ে শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি শীর্ষ ব্রোকারেজ হাউসের শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, বর্তমানে প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ের বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ থেকে বিরত আছেন। অর্থাৎ পতন ঠেকাতে দৃশ্যমান বাস্তব উদ্যোগ নেই। এমনকি সাধারণত দরপতনের সময় বিনিয়োগ করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা থাকলেও এখন রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান আইসিবিসহ সরকারি ব্যাংক সে ভূমিকায় নেই।

নাম প্রকাশে এক ব্রোকারেজ হাউজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, অতীতে এমনটা হয়েছে। হয়তো তার কারণে মানুষ এমনটা ভাবছে। তিনি আরও বলেন, সুশাসন ফেরানোর আশ্বাসে বিনিয়োগকারীরা শেয়ারবাজারে এসেছিলেন। এখন কেউ টাকা লুটের ব্যবস্থা করলে এবং সার্ভিল্যান্স বিভাগ তা না ধরলে মানুষ আবার মুখ ফিরিয়ে নেবে। বিনিয়োগকারীদের টানতে এবং বাজারকে সক্রিয় রাখতে পুঁজিবাজার লেনদেনে সত্যিকারের নজরদারি এবং দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নিতে হবে। নতুবা পতন অব্যাহত থাকবে।

একাধিক ব্রোকারেজ হাউসের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত এপ্রিল থেকে একটানা উত্থানে বাজারে সূচক বেড়েছে প্রায় ২০০০ পয়েন্ট। এতে বেশির ভাগ শেয়ারের দামই বেড়েছে। তার মধ্যে কিছু শেয়ারের দাম কয়েকগুণ বেড়েছে। এখন বাজার পড়তে শুরু করায় সবাই মুনাফা তুলে নেওয়ার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন।

প্রিমিয়ার ব্যাংক সিকিউরিটিজের সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, পুঁজিবাজার নিয়ে বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন। ফলে আতঙ্কে বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করছেন। পৃথিবীর প্রতিটি দেশে বাজার ধসের সময় সরকার ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো পুঁজিবাজারকে সার্পেট দেয়। কিন্তু আমাদের দেশের পুঁজিবাজারে সেই নজির নেই। পুঁজিবাজারকে স্থিতিশীল রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসি দ্রুত যুগান্তকারী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। কারন অধিকাংশ বিনিয়োগকারীদের পুঁজি প্রায় ৫০ শতাংশ নেই।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্নিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, গত কয়েক মাস আগে বাংলাদেশ ব্যাংক মুদ্রাবাজারে কিছু পদক্ষেপ নেয়। এর কিছু নেতিবাচক প্রভাব শেয়ারবাজারেও ছিল। কিন্তু তা অনেক আগেই শেষ হয়েছে। গত কয়েক সপ্তাহে তাদের দিক থেকে তেমন কোনো পদক্ষেপ বা কঠোর নজরদারি নেই। অথচ বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়ে নিত্য নতুন গুজব ছড়ানো হচ্ছে।

দরপতন বিষয়ে বাজারের একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, এ মুহূর্তের বাজারের সবচেয়ে বড় কারসাজির চক্র পরিকল্পিতভাবে শেয়ার বিক্রি করে বাজারের পতনকে ত্বরান্বিত করেছে। চক্রটি গত কয়েকদিনে বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউস থেকে তাদের হাতে থাকা শেয়ার ব্যাপকভাবে বিক্রির আদেশ দেয়। এর প্রভাবে এসব হাউসের অন্য বিনিয়োগকারীরাও শেয়ার বিক্রি করতে শুরু করেন। এর ফলে দরপতন তরান্বিত হয়।

সেনা কল্যান ইন্স্যুরেন্সের আইপিও বরাদ্দের ফলাফল

একমি পেস্টিসাইডসের আইপিও শেয়ার পেল যারা (ক্লিক করুন):