দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: ‘অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি’ বিশেষ দায়িত্বপালনরত ঊর্ধ্বতন। আদতে তাঁর কোনো কাজ নেই। পোস্টিংটা মূলত শাস্তিমূলক। রাসেল ডমিঙ্গোর যেন এখন সেই মেয়াদ চলছে! পরিচয়ে তিনি বাংলাদেশ জাতীয় দলের হেড কোচ। বিশ্বকাপের মাঠেও বাংলাদেশ দলের অনুশীলন থেকে শুরু করে রণকৌশল সব কিছুরই পুরোধা ছিলেন তিনি। কিন্তু ঢাকায় ফেরার পর অনুশীলনের শুরুর দিন থেকে এই দক্ষিণ আফ্রিকানকে আতিপাতি খুঁজে নিতে হচ্ছে।

গতকাল যেমন মাহমুদ উল্লাহরা প্রস্তুতিতে নামার বেশ পরে ড্রেসিংরুম থেকে বেরিয়ে আসতে দেখা গেছে তাঁকে। তখন পুরো দলকে একত্র করে অনুশীলনের খুঁটিনাটি বোঝাচ্ছিলেন নবনিযুক্ত ফিল্ডিং কোচ মিজানুর রহমান বাবুল। ড্রেসিংরুমের সামনে তখন কম্পিউটার অ্যানালিস্ট শ্রীনিবাস চন্দ্রশেখরনের সঙ্গে গম্ভীর আলোচনায় ব্যস্ত টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ। এমন ভঙ্গিতে ড্রেসিংরুম থেকে মাঠে ঢুকলেন যেন সামনে কাউকে নজরেই পড়েনি ডমিঙ্গোর। মাহমুদও অপসৃয়মাণ কোচের পথে দৃষ্টি ফেলেননি।

বিশ্বকাপের আগে ডমিঙ্গোর এই ‘পথচলা’ থামত মাঠের মাঝখানের উইকেটে গিয়ে। কিন্তু গত দুই দিন অত দূরও যাননি। বুকে হাত বেঁধে একপলক দেখলেন টিম হাডলে কথা বলছেন মিজানুর রহমান। দেখে উল্টো ঘুরে উদ্দেশ্যহীন কয়েক পা এগিয়ে থামলেন ডমিঙ্গো। কিন্তু দলের কাছেও যাননি। সেখানেই স্থাণুর মতো কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে হেড কোচ হেঁটে এগিয়ে যান মাহমুদের কাছে।

কিছু একটা বলে থাকবেন টিম ডিরেক্টরকে। উত্তরে ইশারায় ড্রেসিংরুম দেখিয়েছেন মাহমুদ। কোচকে সেখানে যেতে বললেন মাহমুদ নাকি ড্রেসিংরুমে মুশফিকুর রহিম আছেন বলে জানালেন, অত দূর থেকে অনুমান করাও কঠিন।

তবে পরিস্থিতি দেখে এটা পরিষ্কার যে হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর পাশে এখন আর কেউ নেই। এমনকি বিশ্বকাপের পর একযোগে বিদেশি কোচিং স্টাফদের বিরুদ্ধে আওয়াজ উঠলেও পেস বোলিং কোচ ওটিস গিবসন কিংবা ব্যাটিং কোচ অ্যাশওয়েল প্রিন্সের গতিবিধি দেখে মনে হচ্ছে পায়ের তলায় মাটি খুঁজে পেয়েছেন তাঁরা। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ দলের ছবিটা খুব স্বস্তিদায়ক নয়।

তাসকিন আহমেদের অবশ্য অত কিছু ভাবার সুযোগ নেই। বিশ্বকাপে দলের ফল ভালো হয়নি। ব্যর্থ মিশন থেকে ফেরার পরই মুখোমুখি হতে হবে বিশ্বকাপে দুর্দান্ত ক্রিকেট খেলা পাকিস্তান দলকে। স্বভাবতই সর্বোচ্চ মনোযোগ আসন্ন সিরিজে রাখতে চাচ্ছেন বাংলাদেশ দলের এই পেসার, ‘সত্যি বলতে বিশ্বকাপে আমাদের দলগত পারফরম্যান্স ভালো হয়নি, কিন্তু সেটা এখন অতীত। পাকিস্তান সিরিজে নতুনভাবে শুরু করতে চাই। অবশ্যই কঠিন হবে। তবে সেরাটা দিয়ে ভালো কিছু করতে চাই। দেশকে ভালো কিছু উপহার দিতে চাই।’

বিশ্বকাপের আগে মিরপুরে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে পাকিস্তান সিরিজে সেবারের মতো উইকেট চান না তাসকিন, ‘ফাস্ট বোলাররা সব সময় বোলিং সহায়ক উইকেট চায়, কিন্তু সাদা বলে এমন উইকেটে কমই খেলা হয়। স্পোর্টিং উইকেট বেশি হয়। মিরপুরেও তেমন উইকেট আশা করছি, যেখানে ব্যাটার-বোলাররা সমান সুবিধা পাবে।’