দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: বিদায়ী বছরের শেষ দিকে পুঁজিবাজারে কিছুটা মন্দাভাব দেখা গেলেও নতুন বছরের প্রথম থেকেই বাজার চাঙ্গা রয়েছে। নতুন বছরে বাজারকে চাঙ্গা রাখার পেছনে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে সরকারী মালিকানাধীন কিছু কোম্পানি। এই সময়ে সরকারী কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর নজর কাড়া হারে বেড়েছে। এরফলে বাজারও ভালোভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। সরকারী কোম্পানিগুলোর শেয়ারের এমন দাপটে বিনিয়োগকারীরাও শেয়ারগুলোরে শেয়ারে ঝুঁকছে।

প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) গত সপ্তাহের শুরু থেকেই লেনদেনে আধিপত্য বিস্তার করেছে সরকারী কোম্পানি বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন (বিএসসি)। কয়েকদিন পর এর সাথে যুক্ত হয়েছে বিদ্যুৎ খাতের কোম্পানি পাওয়ার গ্রিড লিমিটেড। এছাড়া, লেনদেনে এগিয়ে না থাকলেও গত সপ্তাহ থেকেই মূল্য বৃদ্ধিতে এগিয়ে ছিল সরকারি মালিকানাধীন কোম্পানি বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলস, তিতাস গ্যাস এবং ডেসকো লিমিটেড।

সরকারি কোম্পানির শেয়ার দরে এমন উল্লম্ফনে আগ্রহ জেগেছে বিনিয়োগকারীদের। কিন্তু কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর এমন আলো ছড়ানোর পেছনে কোনো মূল্য সংবেধনশীল তথ্য রয়েছে বলে কোনো স্টক এক্সচেঞ্জ জানায়নি। অথচ কোম্পানিগুলোর এমন অস্বাভাবিক শেয়ারদর বৃদ্ধি এর আগে এভাবে চোখে পড়েনি।

যেসব বিনিয়োগকারীরা শেয়ারগুলোতে সম্পৃক্ত হতে পারেননি, তারা অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে দেখছে-কিভাবে প্রতিদিন কোম্পানিগুলো শেয়ারে চোখ রাঙ্গাচ্ছে। গত কয়েকদিন শেয়ারদর উল্লম্ফনের কয়েকটি সরকারি কোম্পানির দর চিত্র ও আর্থিক দিক আলোচনা করা হলো-

বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন: কোম্পানিটির শেয়ার দর গত ২৩ ডিসেম্বর ২০২১ ছিলো ৪৯ টাকা ৪০ পয়সা। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১১৫ টাকা ৭০ পয়সায়। অর্থাৎ ১২ কাযদিবসে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ৬৬ টাকা ৩০ পয়সা বা ১৩৪ শতাংশের বেশি। সর্বশেষ প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ৪ টাকা ৩৪ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় ছিলো ৫৮ পয়সা।

পাওয়ার গ্রীড: কোম্পানিটির শেয়ারদর গত ২৬ ডিসেম্বর ২০২১ ছিলো ৫৫ টাকা। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৭৪ টাকা ৪০ পয়সায়। অর্থাৎ ১১ কাযদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ১৯ টাকা ৪০ পয়সা বা ৩৫ শতাংশের বেশি।

সর্বশেষ প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ১ টাকা ৮২ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় ছিলো ১ টাকা ২৫ পয়সা।

বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস: কোম্পানিটির শেয়ার দর গত ২৬ ডিসেম্বর ২০২১ ছিলো ১৮৫ টাকা ১০ পয়সা। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৪৩ টাকা ৯০ পয়সায়। অর্থাৎ ১১ কাযদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ৫৮ টাকা ৮০ পয়সা বা ৩২ শতাংশের বেশি।

সর্বশেষ প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ৩ টাকা ২১ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় ছিলো ২ টাকা ১০ পয়সা।

তিতাস গ্যাস: কোম্পানিটির শেয়ার দর গত ২৬ ডিসেম্বর ২০২১ ছিলো ৩৫ টাকা ১০ পয়সা। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৪৫ টাকা ১০ পয়সায়। অর্থাৎ ১১ কাযদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ১০ টাকা বা সাড়ে ২৮ শতাংশের বেশি। সর্বশেষ প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ৬৫ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় ছিলো ৬৭ পয়সা।

ডেসকো: কোম্পানিটির শেয়ার দর গত ২৬ ডিসেম্বর ২০২১ ছিলো ৩৪ টাকা ১০ পয়সা। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৪২ টাকা ৮০ পয়সায়। অর্থাৎ ১১ কাযদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ৮ টাকা ৭০ পয়সা বা সাড়ে ২৫ শতাংশের বেশি। সর্বশেষ প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ১৪ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় ছিলো ২৭ পয়সা।