দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রধান বাজারগুলোতে পোশাক রপ্তানিতে ফের ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশি পোশাকের অন্যতম প্রধান বাজার যুক্তরাষ্ট্রে চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে পোশাক রপ্তানি প্রায় ৪৬ শতাংশ বেড়েছে। পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলোতে ১ হাজার ২০০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ বেশি।

তবে পোশাকখাতের রপ্তানির ইতিবাচক ধারা লক্ষ্য করা গেলেও সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা। তারা বলছেন, বিভিন্ন কাঁচামাল ও রাসায়নিক দ্রব্যের বাজার অনেক চড়া। এতে পণ্যের উৎপাদন খরচ বাড়ার সঙ্গে দাম আশানুরূপ পাওয়া যাচ্ছে না।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রকাশিত তথ্যমতে, ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) সারাবিশ্বে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে ১ হাজার ৯৯০ কোটি ৭ লাখ ডলারের, যা আগের অর্থবছরের (২০২০-২১) একই সময়ে ছিল ১ হাজার ৫৫৪ কোটি ৫৫ লাখ ৭ হাজার ডলার। অর্থাৎ ৪৩৫ কোটি ডলারের বেশি রপ্তানি বেড়েছে সারাবিশ্বে।

২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসের (জুলাই-ডিসেম্বর) দেশভিত্তিক পোশাক রপ্তানির তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান বাজার যুক্তরাষ্ট্রে ২০২০-২১ অর্থবছরের তুলনায় এসময়ে পোশাক রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ৪৬ শতাংশ। ২০২১-২২ অর্থবছর যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ৪২৩ কোটি ১৬ লাখ ৫ হাজার ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে, যা তার আগের অর্থবছর ২০২০-২১ সময়ে ছিল ২৯০ কোটি ৮ হাজার ডলার। অর্থাৎ ছয় মাসে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি বেড়েছে প্রায় ৪৬ (৪৫ দশমিক ৯১) শতাংশ। অর্থবছরের প্রথমার্ধে পোশাকের মোট রপ্তানি ২৮ শতাংশ বেড়েছে।

এছাড়া রপ্তানি বেড়েছে ইউরোপ ও কানাডার বাজারে। ইউরোপ ও কানাডার বাজারে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে যথাক্রমে ২৩ দশমিক ৮৩ ও ২৩ দশমিক ৭৮ শতাংশ। স্পেন, পোল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ফ্রান্সসহ ইউরোপের প্রায় সব দেশে রপ্তানি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া এসময়ে অপ্রচলিত বাজারেও রপ্তানি বেড়েছে ২৪ দশমিক ২৬ শতাংশ।

এ বিষয়ে বিজিএমইএর পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, রপ্তানি অনুযায়ী পোশাকখাতের রপ্তানির ইতিবাচক ধারা লক্ষ্য করা গেলেও সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ। বিভিন্ন কাঁচামাল যেমন- টেক্সটাইল, পণ্য জাহাজীকরণ খরচ, রং ও রাসায়নিক দ্রব্যের বাজার অনেক চড়া। পণ্যের উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির অনুপাতে পোশাকের দাম সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে বাড়ছে না।

তিনি বলেন, আমাদের পোশাক রপ্তানির প্রধান বাজারগুলোতে কোভিডের নতুন ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ সুনামির মতো ছড়িয়ে পড়ছে। কোভিডের সংক্রমণ রোধে ও নিজেদের রক্ষার্থে দেশগুলো বিভিন্ন প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে।

ফলে পোশাকের নতুন ও চলমান রপ্তানি আদেশের ওপর প্রভাব পড়ছে। গত কয়েক মাসের উপাত্ত পর্যালোচনায় শিল্পের অগ্রযাত্রার সম্ভাবনা প্রতীয়মান। কিন্তু নিকট ভবিষ্যতের বাজারের পূর্বাভাস দেওয়া কঠিন, যেহেতু বিশ্বব্যাপী মহামারি থেকে পুনরুদ্ধার এখনো নড়বড়ে।