দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: বিশ্বেজুড়ে আবারও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় যে সব করোনা আক্রান্তরা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, তাদের অধিকাংশেরই দেখা গেছিল শ্বাসকষ্টের সমস্যা। শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়ায় তৈরি হয়েছিল জটিল পরিস্থিতি। তাই তৃতীয় ঢেউয়ের শুরুতেই সবাইকে খাদ্যতালিকায় অক্সিজেন সমৃদ্ধ খাবার রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

পুষ্টিবিদদের মতে, অ্যালকালাইন জাতীয় খাবার খাদ্যতালিকায় রাখলে তা রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা যথাযথ রাখতে সাহায্য করে। শুধু তাই নয়, এই ধরনের খাবার শরীরকে সক্রিয় রাখার জন্যও উপকারী। এছাড়া এই খাবারগুলো দেহের পিএইচ মাত্রা স্বাভাবিক রাখে। সঙ্গে শরীরে ভিটামিন ও খনিজের জোগান ঠিক রাখে। করোনাকালে যেসব খাবার অক্সিজেনের ঘাটতি মেটাতে সাহায্য করে:

আঙুর : আঙুর খুবই সহজপাচ্য একটি ফল। ব্রঙ্কাইটিস, অ্যাজমা বা অন্যান্য শ্বাসকষ্ট নিরাময়ে আঙুরের জুড়ি নেই। এতে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট রয়েছে। পিএইচ মাত্রা ৮.৫। যা শুধু রক্ত সরবরাহ বাড়ায় তাই নয়, নিম্ন রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণে রাখে।

তরমুজ : মিষ্টি এই ফলটি রক্তে অক্সিজেনের অভাব পূরণ করতে সাহায্য করে। এই ফলটি ৯ পিএইচ মান-সহ সর্বাধিক ক্ষারক হয়। তরমুজে থাকা ফাইবার এবং পানির কারণে এটি রোগ প্রতিরোধক হিসেবেও কাজ করে।

সাইট্রিক ফল : অক্সিজেন সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে লেবু অন্যতম। সাধারণত এটা অ্যাসিডযুক্ত, তবে খাওয়ার পর, শরীর ক্ষারীয়তে পরিবর্তিত হয়। লেবু কাশি, সর্দি, ফ্লু এবং ভাইরাসজনিত রোগের জন্য এই খুব উপকারী। লেবুকে লিভারের জন্য সেরা টনিক বলে থাকেন বিশেষজ্ঞরা।

আনারস : আনারসের পিএইচ মান ৮.৫। এছাড়াও আনারস ভিটামিন এ, বি এবং সি-এর সঙ্গে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে সমৃদ্ধ। রক্ত সরবরাহ বৃদ্ধির সঙ্গে রক্তচাপ হ্রাস করতেও সাহায্য করে আনারস।

বিট : শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা বাড়াতে বিটের বিকল্প নেই। বিটে থাকা নাইট্রেট শরীরে গিয়ে রূপান্তরিত হয় নাইট্রিক অক্সাইডে। এই নাইট্রিক অক্সাইড হিমোগ্লোবিন বাড়ায়। ফলে শরীরে অক্সিজেন বৃদ্ধি পায়। রক্তের ঘনত্ব ঠিক রেখে হৃৎপিণ্ডের ওপর চাপ কমায়।

বেদানা : বেদানায় জিঙ্ক, কপার, আয়রনের পাশাপাশি ক্যালসিয়াম, ফাইবার আর প্রোটিন রয়েছে। এই ফলটি বি৩, বি ৬ -এ ভরপুর। প্রতি দিন বেদনা খেলে শরীরে নাইট্রিক অক্সাইডের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় রক্ত সরবরাহ বাড়ে। ফলে শরীরের কোষ অক্সিজেন পায়।

কিউই : এই ফলে প্রাকৃতিক চিনি থাকে, যার কারণে খাদ্য হজম হওয়ার পরে অ্যাসিডিক যৌগ তৈরি করে না। এতে আয়রন, কপার, ভিটামিন সি, বি ৩, বি ৫ এবং বি৬ রয়েছে। অ্যালকালাইন জাতীয় এই ফল শরীরকে তাজা রাখে। রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ বাড়ায়।

বেরি : ভিটামিন সি আর অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে ভরপুর বেরি। এই ফলে মিষ্টভাবের পাশাপাশি প্রচুর ফাইবারও থাকে। ইউরিনারি ট্র্যাক্ট সংক্রমণ কমাতে ক্র্যানবেরির বহুল ব্যবহার প্রচলিত। ভিটামিন সি এর অন্যতম উপাদান। যা মানবদেহের প্রতিটি কোষকে আরও শক্তিশালী করে তোলে।