দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে সম্প্রতি তালিকাভুক্ত বেক্সিমকো গ্রিন সুকুক ৯০ টাকার বন্ড কিনতে বিনিয়োগকারীদের খরচ পড়ছে সাড়ে ৫২ টাকা। এরমধ্যে রয়েছে স্টক এক্সচেঞ্জের কমিশন ৫০ টাকা এবং সরকারের অগ্রিম আয়কর আড়াই টাকা। এর সঙ্গে ব্রোকারেজ হাউসের কমিশন যোগ করলে খরচ বেড়ে দাঁড়াবে ৬৫ টাকার বেশি।

বিনিয়োগকারীরা বলছেন, কোন কোন ব্রোকারেজ হাউজের কমিশন বেশি হওয়ায় ৯০ টাকার সুকুক কিনতে খরচ ৭৫ টাকা পর্যন্তগড়াচ্ছে। ব্রোকারেজ হাউসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে বিনিয়োগকারীদের এই অভিযোগের সত্যতার প্রমাণও মিলেছে।

এক বিনিয়োগকারী জানান, গত ১৬ জানুয়ারি তিনি বেশ আগ্রহ নিয়ে বাজার থেকে বেক্সিমকো গ্রিন সুকুক বন্ডের ১০টি ইউনিট কেনেন। ওই দিন প্রতিটি ইউনিটের বাজারমূল্য ছিল ১০০ টাকা। তাতে ১০০ টাকায় বন্ডটির ১০টি ইউনিট কিনতে তাঁর খরচ পড়ে ১ হাজার টাকা। আর এই ১০টি ইউনিট কিনতে তাঁকে মাশুল গুনতে হয়েছে ৭৫ টাকা।

এর মধ্যে ৫০ টাকা স্টক এক্সচেঞ্জ নির্ধারিত লেনদেন মাশুল, আড়াই টাকা অগ্রিম কর ও বাকি সাড়ে ২২ টাকা ব্রোকারেজ হাউসের কমিশন। অর্থাৎ সুকুকের দর যাই হোক, প্রতি ইউনিট সুকুক কিনতে বিনিয়োগকারীদের মাশুল গুণতে হবে ৬৫ টাকা থেকে ৭৫ টাকা পর্যন্ত। একইভাবে বিক্রির ক্ষেত্রেও একই মাশুল গুনতে হবে।

জানা যায়, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) নিয়ম অনুযায়ী কোনো বন্ড কেনার ক্ষেত্রে একটি লেনদেনের জন্য ৫০ টাকা মাশুল দিতে হয় বিনিয়োগকারীদের। এক লেনদেনে ১টি বা ১ লাখ যত ইউনিটই কেনা হোক না কেন, মাশুল ওই ৫০ টাকাই।

বেক্সিমকো গ্রিন সুকুকের অভিহিত মূল্য বা ফেসভ্যালু ১০০ টাকা। বুধবার (১৯ জানুয়ারি) ডিএসইতে সুকুকটির বাজারমূল্য ছিল ৯০ টাকা ৫০ পয়সা। এই বাজার মূল্যে কেউ বন্ডটির একটি ইউনিট কিনলে মাশুলসহ তাঁর ন্যূনতম খরচ পড়বে সাড়ে ৫২ টাকা। কিন্তু একই দামে ওই ইউনিট বিক্রি করলে কমপক্ষে সাড়ে ৫২ টাকা খরচ করতে হবে। সেক্ষেত্রে বিনিয়োগকারী পাবেন মাত্র ৩৮ টাকা (শেয়ারের দাম ৯০.৫০ টাকা–মাশুল ৫২.৫ টাকা)। আর ব্রোকারেজ হাউসের কমিশন ধরলে তো টাকা আরও কমবে।

এই বিষয়ে ডিএসইর প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) সাইফুর রহমান মজুমদার বলেন, বন্ডের লেনদেন উৎসাহিত করতে খরচ যাতে কম হয়, সে জন্য ন্যূনতম মাশুল নির্ধারণ করা হয়েছিল। আমাদের বেশির ভাগ বন্ডেরই অভিহিত মূল্য ৫ হাজার টাকার বেশি। এই কারণে এত দিন এই মাশুল নিয়ে কোনো সমস্যা হয়নি।

তিনি বলেন, আমরা যখন এই মাশুল ঠিক করি, তখন পরিকল্পনায় ছিল, যাঁরা বন্ডে বিনিয়োগ করবেন, তাঁরা অন্তত লাখ টাকার ওপরে বিনিয়োগ করবেন। সেটি হলে মাশুল অনেক কম পড়ত। বেক্সিমকোর সুকুক বন্ডটি তালিকাভুক্ত হওয়ার পর দেখা যাচ্ছে, অনেকে শেয়ারের মতো এই বন্ডে কয়েক হাজার টাকাও বিনিয়োগ করছে। এই কারণে মাশুল বাবদ খরচ বেশি পড়ছে। বিষয়টি সমাধানে ডিএসই কাজ করছে বলে জানান তিনি।