দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংক সকল ব্যাংকে তলব করেছিলো। সেখানে ব্যাংকগুলোকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য তাগাদা দেওয়া হয়েছে। মুলত ২০২০ সালের ফ্রেব্রুয়ারি মাসে পুঁজিবাজারে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ নীতিমালা আংশিক শিথিল করেছিলো বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে প্রতিটি ব্যাংক প্রচলিত নীতিমালার বাইরে গিয়ে পুঁজিবাজারে আরও অতিরিক্ত ২০০ কোটি টাকা করে বিনিয়োগ করার সুযোগ লাভ করে। এই অতিরিক্ত বিনিয়োগ আগামী ২০২৫ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রচলিত নীতিমালার আওতায় আসবে না।

কিন্তু গত দুই বছরেও এই নীতিমালা মেনে ব্যাংকগুলো পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করেনি।মুলত পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৩১টি ব্যাংকের অধিকাংশই এ বিষয়ে ফান্ড গঠনের জন্য বোর্ড গঠন করেনি। আবার বোর্ড গঠন করলেও সেই বোর্ডে ফান্ড গঠনের বিষয়টি পাস হয়নি।

আবার পাস হলেও ফান্ডে টাকা দেওয়া হয়নি। আবার ফান্ডের টাকা দেওয়া হলেও সেটাকা যেসব ব্রোকারেজ হাউজ বা মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করছে না। সে কারণে ফান্ডকে গতিশীল করার জন্যই বাংলাদেশ ব্যাংকের তাগিদের পর বুধবার বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ একচেঞ্জ কমিশন ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

উল্লেখ্য ৫ বছরের জন্য ২০০ কোটি টাকা বিনিয়োগকে নীতিমালা থেকে বিশেষ ছাড় দেয়া হয়। একই সঙ্গে ব্যাংকগুলোকে বলা হয়েছে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য ২০০ কোটি টাকার একটি তহবিল গঠন করতে। ওই তহবিলের অর্থ বিনিয়োগের ব্যাপারে একটি নীতিমালাও ঘোষণা করেছে। এ বিষয়ে ২০২০ সালের ১০ ফ্রেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে তিনটি সার্কুলার জারি করা হয়।

প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য এগুলো পাঠানো হয়েছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে। পুঁজিবাজারকে চাঙ্গা করতে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ওইসব সার্কুলার জারি করেছিলো ।

এ বিষয় এ বিষয় বিএসইসির কমিশনার শেখ মোহাম্মদ শামছুদ্দিন আহমেদ বলেন, পুঁজিবাজারে ব্যাংকগুলোর অতিরিক্ত ২০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ ইস্যুতে বুধবার ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের নিয়ে বৈঠক হবে। প্রতিটি ব্যাংকের অতিরিক্ত ২০০ কোটি টাকা করে বিনিয়োগ করার যে নীতিমালা রয়েছে সেটার কতোটা বাস্তবায়ন হচ্ছে তা জানতে চাইবো। এর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সকল ব্যাংকে তলব করেছিলো। সেখানে ব্যাংকগুলোকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য তাগাদা দেওয়া হয়েছে।

এ সম্পর্কে বাজারবাজার বিশ্লেষকরা বলেছেন, বাজারে তহবিল বাড়ানোর জন্য এ সিদ্ধান্ত ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। তবে তহবিল ব্যবহারের কঠোর নীতিমালা বিনিয়োগকে নিরুৎসাহিত করবে। সার্কুলারে বলা হয়, প্রতিটি ব্যাংককে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের জন্য ২০০ কোটি টাকার একটি তহবিল গঠন করতে হবে। তিনভাবে ব্যাংকগুলো এই তহবিল গঠন করতে পারবে। এর মধ্যে রয়েছে, নিজস্ব উৎস থেকে, ট্রেজারি বিল বা ট্রেজারি বন্ড বাংলাদেশ ব্যাংকে বন্ধক রেখে তার বিপরীতে অর্থ নিয়ে।

ব্যাংকগুলো ২০২৫ সালের ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত যে কোনো কার্যদিবসে ২০০ কোটি টাকার সীমার যে কোনো পরিমাণ অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে তুলতে পারবে। এর সুদের হার হবে ৫ শতাংশ। সাধারণত ট্রেজারি বিল বা ট্রেজারি বন্ড রেপোর মাধ্যমে নিলাম করে টাকা তুলতে হয়। এক্ষেত্রে কোনো নিলামের প্রয়োজন হবে না। ব্যাংকগুলোর অতিরিক্ত তারল্য হতে এ সুবিধা নিতে পারবে।