আবুল কাশেম রুমন, দেশ প্রতিক্ষণ, সিলেট : সিলেট অঞ্চলের দুই নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এই অঞ্চলের উজানে ভারতীয় ভূখণ্ডে ভারি বৃষ্টির আশঙ্কায় সিলেট, সুনামগঞ্জ, রেনত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জে চার জেলায় আকস্মিক বন্যার উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে।

শনিবার (১৬ এপ্রিল) বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের হাওর অঞ্চলের নদ-নদীর পরিস্থিতি ও পূর্বাভাস প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা ও হবিগঞ্জ জেলার প্রধান নদ-নদীর পানি বাড়ছে।

সুরমা নদী ও যাদুকাটা নদীর পানি পরশু দুপুর পর্যন্ত সমতলে ছিল। কিন্তু বন্যা পূর্বাভাসের ঘোষণার পর সুরমা নদী ও সুনামগঞ্জের ধনু বাউলাই নদী নেত্রকোনা জেলায় কিছু স্থানে বিপদসীমা অতিক্রম করে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দেয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এছাড়া সিলেটে সারিগোয়াইন নদীর দুটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে বলে কেন্দ্রের তথ্যে দেখা গেছে।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর ও ভারত আবহাওয়া অধিদপ্তরের গাণিতিক মডেলের তথ্য অনুযায়ী, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন ভারতের আসাম, মেঘালয় ও অরুণাচল প্রদেশের কিছু স্থানে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলেও প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভুইয়া বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলার প্রধান নদ-নদীর পানি কয়েকটি স্থানে ভারি বৃষ্টিপাতের পরিপ্রেক্ষিতে দ্রুত বাড়তে পারে। ফলে সুরমা নদী সুনামগঞ্জ জেলায় বিপদসীমার কাছাকাছি অবস্থান করতে পারে। ধনু-বাউলাই নদী নেত্রকোনা জেলার কয়েকটি পয়েন্টে বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে।

এদিকে, উজানে ভারী বর্ষণে হাওর অধ্যুষিত এলাকায় আকস্মিক বন্যার আশঙ্কায় এসব অঞ্চলের পাকা ধান দ্রুত কেটে নেয়ার পরামর্শ দিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। বন্যার ঝুঁকির মধ্যে থাকা বোরো ধান ৮০ শতাংশ পাকলে কেটে ফেলার পরামর্শ দিচ্ছেন কর্মকর্তারা। বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হতে পারে এমন আশঙ্কায় সুনামগঞ্জসহ হাওরাঞ্চলের কৃষকরা কাঁচা-আধাপাকা ধান কাটা শুরু করেছেন।

আকস্মিক বন্যার ক্ষতি থেকে ফসল রক্ষায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে ধান সংগ্রহ নিরাপদ ও শুকনো জায়গায় রাখার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এছাড়া সবজি দ্রুত সংগ্রহ করা, নিষ্কাশন নালা পরিষ্কার রাখা, জমির আইল উঁচু করা, সেচ, সার ও বালাইনাশক দেয়া থেকে বিরত থাকা, পুকুরের চারপাশ উঁচু করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।