দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে শেয়ার কেনার চেয়ে বিক্রির চাপে টালমাতাল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এদিন দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট। আর চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) প্রধান সূচক কমেছে ৮১ পয়েন্ট। সূচকের পাশাপাশি কমেছে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দাম ও লেনদেন। এর ফলে চলতি সপ্তাহের প্রথম দুদিন সূচক বৃদ্ধির পর মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার টানা পতন হলো। এই দরপতনে আবারও অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বিনিয়োগকারীরা।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইউক্রেন-রাশিয়া ইস্যু যেতে না যেতেই শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি দেউলিয়ার ঘটনায় দেশের পুঁজিবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। শ্রীলঙ্কার মতই বাংলাদেশের অর্থনীতি দেউলিয়া হতে পারে এমন গুজব ছড়িয়ে পড়েছে পুঁজিবাজারে। ফলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন। এমন হয়েছে যে গত দুই থেকে তিন বছর ধরে বন্ধ থাকা বিও থেকেও শেয়ার বিক্রি করা হয়েছে। আর বিদেশিদের শেয়ার বিক্রির ইস্যুকে কেন্দ্র করে দেশি বিনিয়োগকারীরাও শেয়ার বিক্রি করে অর্থ তুলে নিয়েছেন। তাতেই দরপতন হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, বিদেশিরা কম দামে শেয়ার কেনেন আর বেশি দামে বিক্রি করেন। তারা মুনাফা না হলে শেয়ার বিক্রি করেন না। কারণ পুঁজিবাজারে সবাই লাভ করতে আসেন, লোকসান করতে আসেন না। তবে নিয়মের বাইরে যদি ব্রোকারেজ হাউজ ও কাস্টডিয়ানের কাছ থেকে বন্ধ বিও থেকে শেয়ার কেনা-বেচা হয় তবে জবাব সন্তোষজনক না হলে এ বিষয়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ডিএসইর তথ্য মতে, বৃহস্পতিবারও বাজারটিতে ৩৮১টি প্রতিষ্ঠানের ২০ কোটি ১০ লাখ ৪০ হাজার ৬১৭টি শেয়ার ও ইউনিট কেনাবেচা হয়েছে। এর মধ্যে ৯১টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে, কমেছে ২৪২টির, আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৮টির।

অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমায় এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক আগের দিনের চেয়ে ২৬ দশমিক ৫২ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৫৬৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে কমেছে ১ পয়েন্ট এবং ডিএস-৩০ সূচক কমেছে ১৩ পয়েন্ট।

এদিন ডিএসইতে ৮২৩ কোটি ৩৬ লাখ ১১ হাজার টাকার শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১১৩৫ কোটি ৭০ লাখ ৮৭ হাজার টাকার শেয়ার। অর্থাৎ আগের দিনের চেয়ে লেনদেন কমেছে।

এদিন সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে জেএমআই হসপিটালের শেয়ার। এরপর যথাক্রমে লেনদেন হয় শাইনপুকুর সিরামিক, এসিআই ফরমুলেশন, বেক্সিমকো, আরডি ফুড, ওরিয়ন ফার্মা, সালভো কেমিক্যাল, আইপিডিসি ইস্টার্ন হাউজিং এবং ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টস লিমিটেড।

দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৮১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৯ হাজার ২৪৮পয়েন্টে। এ বাজারে ২৯২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৬৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেড়েছে, কমেছে ১৯৫টির, আর অপরিবর্তিত রয়েছে ২৯টির। এতে ২৯ কোটি ৯৪ লাখ ৯৮ হাজার ১৬৯ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ২৫ কোটি ৮০ লাখ ৪৩ হাজার ৯৮৭ টাকার শেয়ার ।