দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বেক্সিমকো গ্রীন সুকুক বন্ড থেকে সুকুকহোল্ডারদের জন্য ট্রাস্টি ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) এর কাছে ১৭৪ কোটি টাকার মুনাফা প্রদান করা হয়েছে। চলতি বছরের ৬ মাসের ব্যবসায় এই মুনাফা জমা দেওয়া হয়েছে। আলোচিত সময়ের জন্য এই বন্ডের বিনিয়োগকারীরা ৫ দশমিক ৮০ শতাংশ হারে রিটার্ন তথা মুনাফা পাবেন শেয়ারহোল্ডারা। এর মধ্যেই মুনাফায় টাকা ইনভেস্টমেন্ট অব কর্পোরেশন আইসিবি’র মাধ্যমে লভ্যাংশ হস্তান্তর করে। মুনাফা প্রাপ্তির যোগ্যতা নির্ধারণে রেকর্ডের তারিখ আজ শেষ হয়েছে। আজ বেক্সিমকো গ্রিন সুকুক বন্ডের ১৭৪ কোটি লভ্যাংশ আইসিবিকে প্রেরণ করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে বেক্সিমকো গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক মো: মোস্তফা জামান বলেন, বেক্সিমকো গ্রিন সুকুক আল ইসতিসনা প্রথম অর্ধবার্ষিকে বিনিয়োগকারীদের প্রাপ্য লভ্যাংশের চেক আজ আইসিবিকে হস্তান্তর করা হয়। তবে ৩ হাজার কোটি টাকার বেক্সিমকো সুকুকের সর্বনিন্ম বাৎসরিক ডিস্ট্রিবিউশন রেট ৯ শতাংশ। এর সঙ্গে আরও ২.৬০% যোগ করে মোট ১১.৬০% হারে সুকুকহোল্ডারদের মুনাফা দিয়েছে বেক্সিমকো সুকুক কর্তৃপক্ষ। এই বিবেচনায় ৬ মাসের ব্যবসায় ৩ হাজার কোটি টাকার উপরে (১১.৬০%/২)= ৫.৮০ শতাংশ হারে এই মুনাফা দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (২২ জুন) বন্ডটির ট্রাস্টি আইসিবির কাছে এই মুনাফা জমা দেওয়া হয়েছে। যা সুকুকহোল্ডারদের মাঝে বিতরন করা হবে।

বেক্সিমকোর গ্রিন সুকুকের ট্রাস্টি ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) সূত্রে জানা গেছে, প্রথম বছরের প্রথম অর্ধবার্ষিকের ৫ দশমিক ৮০ শতাংশ রিটার্ন সুকুকটির অভিহিতমূল্য ১০০ টাকার ওপর দেয়া হবে। ৫ বছর মেয়াদি এ সুকুকটির রিটার্ন ছয় মাস অন্তর অন্তর প্রদান করা হবে। এক্ষেত্রে রিটার্ন নির্ধারণ করা হয়েছে ৯ শতাংশ ভিত্তিমূল্যের সঙ্গে মার্জিন যোগ করে।

বেক্সিমকো লিমিটেডের আগের বছরের বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) ঘোষিত লভ্যাংশ ও ভিত্তিমূল্যের ব্যবধানের ১০ শতাংশ মার্জিন হিসাবে নির্ধারণ করা হবে। যদি লভ্যাংশের হার ভিত্তিমূল্যের সমান বা কম হয়, তাহলে সেক্ষেত্রে ভিত্তিমূল্যের হিসাবে রিটার্ন প্রদান করা হবে। আর লভ্যাংশ ৯ শতাংশের বেশি হলে তার ১০ শতাংশ সুকুকের মুনাফার সঙ্গে যুক্ত হবে।

বেক্সিমকো লিমিটেড সর্বশেষ ৩০ জুন সমাপ্ত ২০২১ হিসাব বছরে ৩৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। এক্ষেত্রে ৩৫ শতাংশ থেকে ভিত্তিমূল্য ৯ শতাংশ বাদ দেয়া হলে থাকে ২৬ শতাংশ। ২৬ শতাংশের ১০ শতাংশ হয় ২ দশমিক ৬০ শতাংশ। এই ২ দশমিক ৬০ শতাংশের সঙ্গে ভিত্তিমূল্য ৯ শতাংশ যোগ করা হলে দাঁড়ায় ১১ দশমিক ৬০ শতাংশ। এটি হচ্ছে এক বছরের রিটার্ন। ফলে অর্ধবার্ষিকের এ হার দাঁড়াবে ৫ দশমিক ৮০ শতাংশে। সুকুকে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের শতভাগ বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ারে রূপান্তরের সুযোগ থাকছে।

এক্ষেত্রে প্রতি বছর সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ হারে সুকুক শেয়ারে রূপান্তর করা যাবে। গুণিতক হারে অর্থাৎ ৫, ১০, ১৫ ও ২০ শতাংশ রূপান্তরের সুযোগ থাকছে। কোনো বছর শেয়ারে রূপান্তরের সুযোগ গ্রহণ না করলে সেটি পরবর্তী বছরে করা যাবে। এ রূপান্তরের মূল্য নির্ধারিত হবে রেকর্ড তারিখের আগের ২০ কার্যদিবসে ডিএসইতে বেক্সিমকোর শেয়ারের ভারিত গড় মূল্যের ৭৫ শতাংশ।

যদি কোনো বিনিয়োগকারী সুকুককে শেয়ারে রূপান্তর করতে না চান, তাহলে পাঁচ বছরে ওই সুকুকের অবসায়ন হবে। বেক্সিমকো গ্রিন-সুকুক আল ইসতিসনা শরিয়াহভিত্তিক বন্ডটির মাধ্যমে সংগৃহীত ৩ হাজার কোটি টাকা বেক্সিমকো লিমিটেডের সাবসিডিয়ারি তিস্তা সোলার লিমিটেড ও করতোয়া সোলার লিমিটেডের নির্মাণকাজে ব্যয় করা হবে।

এছাড়া বেক্সিমকোর বস্ত্র খাতের ব্যবসা সম্প্রসারণে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি কেনা এবং পরিবেশ উন্নয়ন ও সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে এ অর্থ ব্যবহার করা হবে। বেক্সিমকো গ্রিন-সুকুক ট্রাস্ট নামে স্পেশাল পারপাস ভেহিকলের মাধ্যমে এ সুকুক ইস্যু করা হয়।