বরিশাল ব্যুরো, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: বরিশালে বিএনপির সমাবেশ ঘিরে ছাত্রদল-ছাত্রলীগের পাল্টা মহড়ায় উত্তাপ ছড়াচ্ছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বরিশালে পৌঁছালে তাকে নেতাকর্মীরা মোটরসাইকেল বহরে করে নগরের হোটেল গ্র্যান্ড পার্কে নিয়ে আসে। একই সময়ে শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে মিছিল করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

মির্জা ফখরুল বিমান থেকে নামার পর তাকে নিয়ে বরিশাল মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি রেজাউল করিমের নেতৃত্বে বিশাল শোডাউন নিয়ে শহরে প্রবেশ করেন তারা। ঠিক এর আগমুহূর্তে নগরীতে মোটরসাইকেল নিয়ে মহড়া দেয় ছাত্রলীগ। জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাজ্জাদ সেরনিয়াবাতের নেতৃত্বে মহড়াটি নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

সাজ্জাদ সেরনিয়াবাত বলেন, ‘বরিশালে বিএনপি একটি নাটকীয় সমাবেশের আয়োজন করেছে। সেই সমাবেশকে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। নগরীতে যাতে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সন্ত্রাসী দল বিএনপি না করতে পারে সে জন্য আমরা সজাগ রয়েছি।’

এদিকে শুক্রবার বিকেলে সমাবেশস্থল বঙ্গবন্ধু উদ্যান থেকে নগরীতে সমাবেশ সফল করতে মিছিল করেছে ছাত্রদল। কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েলের নেতৃত্বে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা নগরীতে মিছিল করে। ছাত্রদল, ছাত্রলীগ ও বিএনপি নেতাদের এমন অবস্থানে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে বরিশালে।

কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন হিমেল বলেন, ‘আমরা কোনো সহিংসতার পক্ষে নয়। আমরা চাই শান্তিপূর্ণ সমাবেশ। আমাদের বাধা দিয়ে কোনো লাভ হবে না, আমাদের নেতাকর্মীরা জনসভাস্থলে আসবেই।’

জানা গেছে, সন্ধ্যার পর থেকে নগরের সদর রোড, হাসপাতাল রোড, কাঠপট্টি রোড, বাংলাবাজার, জিলা স্কুল মোড় এলাকায় শতাধিক মোটরসাইকেল এবং পেছনে মিছিল নিয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মহড়া দিচ্ছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে মহানগর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা একাধিক দলে ভাগ হয়ে সামনে মোটরসাইকেল বহর এবং পেছনে মিছিল নিয়ে মহড়া শুরু করেন। এ সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ‘হই হই রই রই বিএনপি গেলি কই’, ‘বিএনপির সন্ত্রাসীরা হুঁশিয়ার-সাবধান’, ‘জামায়াত-শিবির রাজাকার এ মুহূর্তে বাংলা ছাড়’ এ রকম নানা স্লোগান দিতে থাকেন। মিছিলটি নগরের অশ্বিনী কুমার হলসংলগ্ন নগর ও জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে এবং বিএনপির সমাবেশস্থল বঙ্গবন্ধু উদ্যানের কাছে বরিশাল জিলা স্কুল মোড়েও যায়।

এ ব্যাপারে বরিশাল মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান ফারুক বলেন, ‘আমরা এমন আশঙ্কা আগে থেকেই করেছিলাম, সেটা এখন বাস্তব রূপ পেতে যাচ্ছে। বাস, লঞ্চ, ছোট যানসহ সব ধরনের যান বন্ধ করে অঘোষিত হরতালে পরিণত করা হয়েছে। গোটা বরিশালকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেও তারা স্বস্তি পাচ্ছে না। এখন মহড়ার নামে আতঙ্ক সৃষ্টি ও সংঘাতের পাঁয়তারা করছে।