দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: বিএনপির সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের আপত্তির বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে আপনারা বিশ্বাসী না, আবারও তা প্রমাণ দিলেন। এ জন্যই সোহরাওয়ার্দী উদ্যান আপনাদের জন্য পছন্দ নয়। বলে এটা নাকি অবরুদ্ধ খাঁচার মতো, আর পল্টনের ৩৫ হাজার বর্গফুট ওনাদের পছন্দ।’ শনিবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার সামনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুলকে উদ্দেশ ওবায়দুল কাদের বলেন, ‌‘আপনারা ঢাকা দখল করবেন। আর আমরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ললিপপ খাবো! হায়রে আল্লাহ! কত বড় সাহস! এখন কামাল হোসেনও নাচে। শেখ হাসিনা কাউকে ভয় পান না। আমি চ্যালেঞ্জ করছি কামাল সাহেব, কোথায় অর্থ পাচার করেছে আওয়ামী লীগের মন্ত্রীরা, কোথায় অর্থপাচার করেছেন শেখ হাসিনা? এই অপবাদ কেন দিচ্ছেন?

কাদের হাতে শক্তি দিতে চাচ্ছেন? নিজে তো কিছু হননি! জনগণের ভোটে নির্বাচিত হননি! দলটা এমনই ছোট। মশারির ভেতরে আরেক মশারি! গণফোরাম ভাগ হয়ে গেল। ওইটা লইয়া নাচানাচি করেন। গতবার ঐক্যজোট সংলাপ করে পরে দেখা গেল জগাখিচুড়ি ঐক্যজোট সর্বনাশ।’

১০ ডিসেম্বর বিএনপির বদমতলব রয়েছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ পল্টনকে ভয় পায় না, আওয়ামী লীগ ভয় পায় আপনাদের অগ্নিসন্ত্রাস, লাঠিসোঁটার খেলাকে। সেই বদমতলব আপনাদের আছে। সে জন্য আপনাদের পল্টন দরকার। সব নিয়ে সেখানে মজুত করবে।’

ছাত্রলীগের সম্মেলন ৬ তারিখ নিয়ে আসা হয়েছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আপনাদের ধারেকাছেও ছাত্রলীগ যাবে না। তাহলে ভয় কিসের? তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর হবে না, সংবিধান আর পরিবর্তন হবে না। সংবিধানকে অনেক কচুকাটা করেছেন, আইন করে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার বন্ধ করেছেন; কাজেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে রঙিন দিবাস্বপ্ন দেখে কারও লাভ নেই। জানি, আগুনসন্ত্রাস করবেন, রাস্তা অবরোধ করবেন, লাঠিখেলায় মেতে উঠবেন, কিন্তু আমরা কি চুপ করে বসে থাকবো?’

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘পরাজিত শক্তির সঙ্গে বিজয়ী শক্তির খেলা হবে, সাম্প্রদায়িক শক্তির সঙ্গে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসীদের খেলা হবে, স্বাধীনতাবিরোধীদের সঙ্গে খেলা হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে, লুটপাটের বিরুদ্ধে, হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে খেলা হবে। লন্ডনে বসে নির্দেশনা দেয় আর আপনি তা বাস্তবায়ন করেন। সব মিটিংই তো ফ্লফ। এমনিতেই অনেক হাঁকডাক।’

বিএনপির কিছু মিডিয়া বন্ধু রয়েছে মন্তব্য করে সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘যারা তাদের সমাবেশে বহু লোকসমাগম হবে বলে ঢালাওভাবে প্রচার করে, আজ তো এখানে এত বড় সমাবেশ, কেন প্রচার হবে না? ফখরুল সাহেব এখানে দাঁড়িয়ে বক্তৃতা দিক, ছবি ঢালাওভাবে প্রচার হবে। যারা আমাদের পছন্দ করে না, আমারা ডিউটা (বকেয়া) চাই, বেশি কিছু না।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের জামালপুরসহ বিভিন্ন জায়গায় লক্ষাধিক লোকের ছবি প্রচার হয় না। এখন তো সবাই কাভারেজ দিচ্ছে কিন্তু কারও কারও কেন এত বৈরিতা, আমাদের বুঝে আসে না। আমার ভাইকে নিয়ে প্রথম পাতায় দুই কলামে নিউজ করত। অথচ কোম্পানীগঞ্জে কোনও ঝামেলা নেই, গঠনতান্ত্রিক উপায়ে গতকাল নতুন কমিটি হয়েছে, এই নিউজ তারা দেয় না!’

ছাত্রলীগের কমিটি বিষয়ে প্রধান অতিথি ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কেন্দ্রীয়, মহানগর উত্তর-দক্ষিণ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কমিটি একসঙ্গে ঘোষণা করা হবে। এখন সিভি নেওয়া হচ্ছে। প্রার্থীদের যোগ্যতা-দক্ষতা বিচার করা হচ্ছে।’ ঢাবি শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।