sharebazar lagoশহিদুল ইসলাম দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তিন কারনে বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ। সাধারন বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে বিনিয়োগের অনুকুল থাকায় বিদেশী বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগে আগ্রহ বাড়াচ্ছেণ। এছাড়া অধিকাংশ শেয়ারের দাম যুক্তিকমূল্যের চেয়ে কম দামে শেয়ার কেনাবেচা হওয়ায় দেশের পুঁজিবাজারে ফিরছেন বিদেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীরা।

এর ফলে বাজারে তাদের অংশগ্রহণ বাড়ছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। তাই পুঁজিবাজারের প্রতি আস্থা বাড়ছে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বলে বাজার বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

চলতি বছরের প্রথম আট মাসে (জানুয়ারি-আগস্ট) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বিদেশি বিনিয়োগকারীদের লেনদেনের পাশাপাশি বেড়েছে বিনিয়োগের পরিমাণ। আগস্ট মাস শেষে ডিএসইতে নিট বিনিয়োগ দাঁড়িয়েছে ৪৪৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতার দিকে যাচ্ছে। ফলে বিনিয়োগকারীরা বাজারের দিকে ঝুঁকতে শুরু করেছেন। বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও বাজারে আসছেন। এতে শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ছে।

ডিএসই’র তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম আট মাসে পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা মোট ৫ হাজার ৬৫৬ কোটি ৬২ লাখ টাকার লেনদেন করেছে। এ সময় সিকিউরিটিস বা শেয়ার কিনেছে ৩ হাজার ৫১ কোটি ১৬ লাখ টাকা। এর বিপরীতে শেয়ার বিক্রি করেছে ২ হাজার ৬০৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ আট মাসে পুঁজিবাজারে নীট বিদেশি বিনিয়োগ ৪৪৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা। এ সময় শেয়ার বিক্রির তুলনায় কেনার প্রবণতা বেশি পরিলক্ষিত হয়েছে। অবশ্য বাজারে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়লেও স্থানীয় ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কাক্ষিত হারে হচ্ছে না।

অর্থবছরে (২০১৫-১৬) ডিএসইতে মোট বিদেশি বিনিয়োগকারীদের লেনদেন হয় ৮ হাজার ৮৩ কোটি ৯১ লাখ ৩৬ হাজার ৫৯৮ টাকার শেয়ার। এর আগের অর্থবছরে (২০১৪-১৫) লেনদেন হয়েছিল ৬ হাজার ৯৯১ কোটি ২৯ লাখ ৯৮ হাজার ৯২৫ টাকার শেয়ার। গত ২০১৩-১৪ অর্থবছওে ছিল ২ হাজার ৪৯৩ কোটি ৬৭ লক্ষ ৪০ হাজার ৮৩৭ টাকা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে নিট বিনিয়োগ কমেছে ১ হাজার ১৯৩ হাজার ৮৩ লাখ ৮৭ হাজার ৪৫২ টাকা।

প্রথমত, যৌক্তিকমূল্যের চেয়ে কম দামে শেয়ার কেনাবেচা হওয়ায় দেশের পুঁজিবাজারে ফিরছেন বিদেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীরা। এর ফলে বাজারে তাদের অংশগ্রহণ বাড়ছে।

দ্বিতীয়ত, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম আট মাসে (জানুয়ারি-আগস্ট) প্রবাসী ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মোট লেনদেন হয়েছে ৫ হাজার ৬৫৬ কোটি ৬২ লাখ ৯০ হাজার টাকা। এর মধ্যে ৩ হাজার ৫১ কোটি ১৬ লাখ ৭০ হাজার টাকার শেয়ার কিনেছেন বিদেশিরা। আর এ সময়ে শেয়ার বিক্রি করেছেন ২ হাজার ৬০৫ কোটি ৪৬ লাখ ২০ হাজার টাকা। অর্থাৎ প্রবাসী ও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা এ সময়ে সাড়ে ৪শ’ কোটি টাকার শেয়ার বেশি কিনেছেন।

তৃতীয়ত, বাজারে কম দামে ভালো কোম্পানির শেয়ার কিনতে পারায় বিদেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীরা দীর্ঘমেয়াদী চিন্তা করে দেশের পুঁজিবাজারে ফিরছেন।

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, শেয়ারের দাম ও কোম্পানিগুলোর পিই রেশিও দেখলেই বোঝা যায় যে পুঁজিবাজার বিনিয়োগ উপযোগী হয়েছে। এখনই দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের সময়।

তিনি বলেন, এখন বাজারে সূচক অনেকটা নিচে, যা বাজারে বিনিয়োগ ঝুঁকি কমিয়ে এনেছে। এতে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা নতুন করে বিনিয়োগে আগ্রহী হয়েছেন।

এ বিষয়ে ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী  বলেন, বিদেশিরা সবসময় কম দামে শেয়ার কেনেন। তারপর দাম বাড়লে তা বিক্রি করে দেন। বিদেশিরা সবসময় কোম্পানির সার্বিক অবস্থা ও বর্তমান শেয়ারের দাম দেখে, গবেষণার পর শেয়ার কেনেন। এটা পুঁজিবাজারের জন্য ইতিবাচক। মন্দার বাজারে বিদেশিদের বিনিয়োগ দেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য অনুপ্রেরণা।