zaheen-spinningদেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: উৎপাদন সক্ষমতা বাড়াতে কারখানা সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বস্ত্র খাতের কোম্পানি জাহিন স্পিনিং মিলস লিমিটেড। ৭৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে বিদ্যমান দুটি ইউনিটের পাশাপাশি নতুন আরো একটি ইউনিট স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ। ঘোষিত রাইট শেয়ার ইস্যুর অর্থ দিয়ে এ প্রকল্পের ব্যয় মেটানোর কথাও জানিয়েছে কোম্পানিটি। তবে নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদনের ওপর বিষয়টি নির্ভর করছে বলে জানিয়েছে এর কর্মকর্তারা।

রোববার স্টক এক্সচেঞ্জে প্রকাশিত তথ্যমতে, শনিবার অনুষ্ঠিত জাহিন স্পিনিংয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভায় অভিহিত মূল্যে ১:১ অনুপাতে রাইট শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে ৯৮ কোটি ৫৫ লাখ ২৭ হাজার টাকা সংগ্রহের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

এর মধ্যে ৭৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা নতুন ইউনিট স্থাপনে ব্যয় করার পরিকল্পনার কথা জানানো হয়েছে। বাকি অর্থের মধ্যে চলতি মূলধন খাতে ১৫ কোটি ও আংশিক ঋণ পরিশোধে ৫ কোটি টাকা ব্যয় করবে কোম্পানিটি। এর আগে গত এপ্রিলে কোম্পানিটি রাইট শেয়ারের মাধ্যমে ৮৫ কোটি ৬৯ লাখ ৮০ হাজার টাকা সংগ্রহের ঘোষণা করেছিল।

জাহিন স্পিনিংয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, বিদ্যমান দুটি ইউনিটের পাশাপাশি আরো একটি ইউনিট চালু করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ ইউনিটটি চালু হলে কোম্পানির উৎপাদন সক্ষমতা দ্বিগুণে উন্নীত হবে। তবে রাইট শেয়ারের মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থের পরিমাণ কিছুটা বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছে নতুন করে রাইট ইস্যুর আবেদন করতে হবে। নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন পেলেই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে।

প্রসঙ্গত, বর্তমানে জাহিন স্পিনিংয়ের বার্ষিক উৎপাদনক্ষমতা ২৯ লাখ ৭৩ হাজার ৬২০ কেজি। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে বেশকিছু যন্ত্রপাতি সংযোজনেরর ফলে উৎপাদন সক্ষমতা নতুন করে আরো ৪ লাখ ২৯ হাজার ৬২০ কেজি বেড়েছে।

এদিকে চলতি বছরের মার্চের প্রথম দিকে আইপিওর টাকায় বাস্তবায়িত গাজীপুরের দ্বিতীয় ইউনিটটি চালুর কথা থাকলেও গ্যাস সংকটের কারণে তা সম্ভব হয়নি। গ্যাসের সে সংকট কাটাতে নতুন বিদ্যুত্ সংযোগের মাধ্যমে আগামী মাসে নতুন ইউনিট চালু করা হবে। এটি চালু হলে কোম্পানির দৈনিক উৎপাদন বাড়বে প্রায় ৪ হাজার ২৪০ কেজি।

এর আগে নতুন ইউনিটের জন্য জাহিন স্পিনিং গত বছর ৩০টি রিং মেশিন আমদানি করে, যাতে ১৫ হাজার ৪৮০টি স্পিন্ডল রয়েছে। এরই মধ্যে যন্ত্রপাতি স্থাপন সম্পন্ন হয়েছে। কোম্পানিটি রিং মেশিন পরিচালনার জন্য কেপটিভ পাওয়ার, বিবিটি, গ্যাস জেনারেটর, ইয়ার্ন কোয়ালিটি মেশিন এবং কম্প্রেসার স্থাপন করা হয়েছে। রিং ইউনিটের বর্জ্য তুলা দিয়ে পুনরায় রোটর সুতা উৎপাদন করা হবে।

৩০ জুন ২০১৬ সমাপ্ত হিসাব বছরের জন্য ১৫ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ পান এ কোম্পানির শেয়ারহোল্ডাররা। ১৮ মাসে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ছিল ১ টাকা ৯৭ পয়সা। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সর্বশেষ ২৭ টাকায় জাহিন স্পিনিংয়ের শেয়ার কেনাবেচা হয়। গত এক বছরে এর দর ১৪ টাকা ৩০ পয়সা থেকে ২৯ টাকা ২০ পয়সার মধ্যে ওঠানামা করে।

২০১৫ সালে তালিকাভুক্ত জাহিন স্পিনিংয়ের অনুমোদিত মূলধন ১০০ কোটি টাকা ও পরিশোধিত মূলধন ৮৫ কোটি ৬৯ লাখ ৮০ হাজার টাকা। রিজার্ভ ২২ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। কোম্পানির মোট শেয়ারের ৩১ দশমিক ১০ শতাংশ এর উদ্যোক্তা-পরিচালকদের কাছে,

প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ২৮ দশমিক ১৫ এবং বাকি ৪০ দশমিক ৭৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে। বোনাস শেয়ার সমন্বয়ের পর নিরীক্ষিত মুনাফা ও বাজারদরের ভিত্তিতে এ শেয়ারের মূল্য-আয় (পিই) অনুপাত ১৫ দশমিক ৫২, হালনাগাদ অনিরীক্ষিত মুনাফার ভিত্তিতে যা ১৭ দশমিক ১২।