pressদেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: বাংলাদেশ ব্যাংক ঘোষিত নতুন মুদ্রানীতি, ঋণ আমানতের অনুপাত (এডিআর) কমানো এবং বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আসন্ন আদালতের রায়কে কেন্দ্র করে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতংকের গুজব ছড়ানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। এ কারণে বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন। ফলে দেশের শেয়ারবাজারে আজ ধস দেখা দিয়েছে।

বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, এডিআর রেশিও কিংবা ব্যাংক এক্সপোজার ইস্যুতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনে আতংক সৃষ্টি হয়েছে। পরিণতিতে বাজারে লেনদেন ও সূচকে নেতিবাচক প্রভাব দেখা দিয়েছে।

বিশেষ করে রাজনৈতিক অস্থিরতার গুজবে পুঁজিবাজারে পতন হচ্ছে। অথচ শেয়ারবাজারে পতন হওয়ার কোন যৌক্তিক কারন নেই। আজ বুধবার রাজধানীর ফারস হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব খায়রুল বাশার আবু তাহের মোহাম্মদ।

খায়রুল বাশার বলেন, আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার রায়কে কেন্দ্র করে সামনে কি ঘটতে পারে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এমন আতংক তৈরী হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে আতংকিত হওয়ার কিছু নাই। ওই তারিখটা পার হয়ে গেলে, সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।

তিনি আরও বলেন, একটি চক্র গুজব ছড়িয়ে ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছে। ওই চক্রটি এখন কম দামে শেয়ার ক্রয় করে, পরে বেশি দামে বিক্রয় করার চেষ্টা করছে। তাই আতংকিত হয়ে বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রয় করে দেওয়া উচিত হবে না। অন্যথায় এই ভুলের জন্য পরে কান্নাকাটি করতে হবে।

ডিএসই ব্রোকার্স এসোসিয়েশনের (ডিএসই) মোস্তাক আহমেদ সাদেক বলেন, মুদ্রানীতিতে আমানতের বিপরীতে ঋণ প্রদানের রেশিও (এডিআর) কমানো নিয়ে শেয়ারবাজারে গুজব ছড়ানো হয়েছে। তবে মুদ্রানীতিতে এডিআর নিয়ে শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার মতো কিছু করা হয়নি।

এছাড়া মুদ্রানীতিতে শেয়ারবাজারে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ সীমা নিয়েও কিছু বলা হয়নি। বরং দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের ক্ষেত্রে শেয়ারবাজারকে ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে। যা শেয়ারবাজারের জন্য ইতিবাচক। এমতাবস্থায় শেয়ারবাজারে কোন সংকট নাই। যা আছে, তা কৃত্রিম সংকট। যা অচিরেই কেটে যাবে। রাজনৈতিক কারন নিয়ে গুজব ছড়িয়ে শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে।

বিএমবিএ’র প্রথম সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ বলেন, এডিআর এর সঙ্গে শেয়ারবাজারের সরাসরি কোন সর্ম্পক্য নাই। আর মুদ্রানীতির সঙ্গে শেয়ারবাজারে পতনেরও কোন যৌক্তিকতা নাই।

তিনি আরও বলেন, ঘোষিত মুদ্রানীতিতে এডিআর ইস্যু উল্লেখ করা হয়নি। যদিও পরবর্তিতে এডিআর ইস্যু কিঞ্চিৎ কমানো হয়েছে। আগের ব্যাংক কোম্পানি অ্যাক্ট অনুযায়ী টোটাল লাইবিলেটিসের ১০ শতাংশ শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সীমা ছিল। সে ক্ষেত্রে এডিআর ইস্যু বাড়ানো কমানোর সাথে শেয়ারবাজারের সম্পর্ক ছিল।

বর্তমানে ব্যাংক কোম্পানি অনুযায়ী রেগুলেটরি ক্যাপিটালের ২৫ শতাংশ শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। যার সাথে এডিআর ইস্যুর কোন সম্পর্ক নেই। এ বিষয়ে কোনো জ্ঞান না থাকার কারছে এ ধরণের পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে দ্বিতীয় সহ-সভাপতি মো: রফিকুল ইসলাম, কার্যনির্বাহি কমিটির সদস্য মাহবুব হোসেন মজুমদারসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।