দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: গত ছয় মাসে শেয়ারবাজারে সবচেয়ে বেশি শেয়ার বিক্রি করেছেন এমন ২ হাজার বিনিয়োগকারীর তথ্য চাওয়া হয়েছে। শীর্ষস্থানীয় ২০টি ব্রোকারেজ হাউস ও ২০টি মার্চেন্ট ব্যাংকের কাছে এই ২ হাজার গ্রাহক বা বিনিয়োগকারীর তথ্য চাওয়া হয়। শেয়ারবাজারের সাম্প্রতিক ‘অস্বাভাবিক’ দরপতনের ঘটনা তদন্তে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) গঠিত তদন্ত কমিটি এসব তথ্য চেয়েছে।

দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সদস্যভুক্ত শীর্ষ ২০ ব্রোকারেজ হাউসের গত ছয় মাসে বিক্রির দিক থেকে শীর্ষে থাকা ৫০ জন করে মোট ১ হাজার জনের এবং একইভাবে পোর্টফোলিও বা পত্রকোষে বিনিয়োগ রয়েছে এমন ২০ মার্চেন্ট ব্যাংকের ৫০ জন করে মোট ১ হাজার জনের শেয়ার বিক্রি, টাকা জমা, টাকা উত্তোলনসংক্রান্ত তথ্য চাওয়া হয়েছে।

পাশাপাশি যেসব ব্রোকারেজ হাউসের নিজস্ব বিনিয়োগ বা ডিলার হিসাব রয়েছে, তাদেরও একই ধরনের তথ্য চাওয়া হয়েছে। গত ২১ জানুয়ারি থেকে ২২ জুলাই সময়কালে যেসব ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংক থেকে সবচেয়ে বেশি শেয়ার বিক্রি হয়েছে, মূলত তাদের কাছ থেকেই তথ্য চাওয়া হয়েছে।

বিএসইসি গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান ও সংস্থাটির পরিচালক রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এসব তথ্য চাওয়া হয়। ২২ জুলাই ব্রোকারেজ হাউসগুলোকে এ-সংক্রান্ত চিঠি দেওয়া হয়। আর গতকাল মঙ্গলবার দেওয়া হয়েছে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোকে। চিঠিতেতিন কার্যদিবসের মধ্যে তথ্য সরবরাহের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

গত ২১ জানুয়ারি দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ছিল ৫ হাজার ৮৫৯ পয়েন্টে। আর ২২ জুলাই তা কমে নেমে আসে ৪ হাজার ৯৬৬ পয়েন্টে। এ সময়ে ডিএসইএক্স সূচকটি কমেছে ৮৯৩ পয়েন্ট। এ পতনকে ‘অস্বাভাবিক’ মনে করছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।

তাই এ সময়কালে যেসব প্রতিষ্ঠান ও বড় বিনিয়োগকারী শেয়ার বিক্রি করেছেন সেখানে কোনো অনিয়ম বা কারসাজি রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে মূলত এসব তথ্য চাওয়া হয়েছে। ডিএসইর শীর্ষ পর্যায়ের একাধিক ব্রোকারেজ হাউসের কর্মকর্তা তদন্ত কমিটির চিঠি ও শীর্ষ বিনিয়োগকারীদের তথ্য চাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বিএসইসি সূত্রেও তথ্য চাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত হওয়া গেছে। শীর্ষ ২০টি ব্রোকারেজ হাউস ও ২০টি মার্চেন্ট ব্যাংক মিলিয়ে ৪০ প্রতিষ্ঠানে শেয়ার বিক্রিতে শীর্ষে থাকা বিও হিসাবের তথ্য চেয়েছে তদন্ত কমিটি।

তদন্ত কমিটির চিঠিতে জানুয়ারি থেকে জুলাই সময়কালে বিক্রির দিক থেকে শীর্ষ ৫০ বিনিয়োগকারীর পোর্টফোলিওর তথ্য, আর্থিক খতিয়ান, লেনদেনের প্রতিবেদন, অর্থ স্থানান্তর, জমা ও উত্তোলনের তথ্য চাওয়ার পাশাপাশি বাজারের পতনের প্রধান একটি করে কারণও জানতে চাওয়া হয় ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকের প্রধানদের কাছে।

এ ছাড়া উল্লেখিত সময়ে বাজারে প্রভাব ফেলেছে, সংবাদপত্রে প্রকাশিত এমন কোনো প্রতিবেদন থাকলে তার কপি, সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ, গুজব বা অনিয়মের ঘটনা জানা থাকলে তাও লিখিতভাবে তদন্ত কমিটিকে জানাতে বলা হয়। এর বাইরে ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর গ্রাহকের সমন্বিত ব্যাংক হিসাব এবং গ্রাহকের কাছ দেনা-পাওনার হিসাব সমন্বয় শেষে প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাংক স্থিতির তথ্যও জমা দিতে বলা হয়।