দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: ১৯৯৮ সালে অটোমেটেড প্লাটফর্ম চালু করে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। তবে স্বয়ংক্রিয় প্লাটফর্ম চালু করার দীর্ঘ ২২ বছর পরও পুরোপুরি ডিজিটালাইজড হয়নি স্টক এক্সচেঞ্জের কার্যক্রম। ফলে করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে সরকারি সাধারণ ছুটি শুরু হলে স্টক এক্সচেঞ্জের লেনদেনও বন্ধ হয়ে যায়। এতে করে সমালোচনার মুখে পড়ে ডিএসই। এমন পরিস্থিতিতে স্টক এক্সচেঞ্জের কার্যক্রম পূর্ণাঙ্গ ডিজিটালাইজড করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ। গত বৃহস্পতিবার ডিএসইর বোর্ডসভায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী জানান, স্টক এক্সচেঞ্জের লেনদেন পুরোপুরি অটোমেশনে আনতে সাত সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। অটোমেশনে কী ধরনের চ্যালেঞ্জ রয়েছে এবং কতদিনে তা বাস্তবায়ন করা যাবে, সে সম্পর্কে কমিটি আগামী এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবে। ডিএসইর অপর একটি সূত্রে জানা গেছে, আগামী এক বছরের মধ্যে অটোমেশন সম্পন্ন করতে চায় ডিএসই। ডিএসইর স্বাধীন পরিচালক মাসুদুর রহমানকে প্রধান করে কমিটি গঠন করা হয়েছে।

আরও পড়ুন…….

পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ ইস্যুতে হার্ডলাইনে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসি 

ব্যাংকের ডিভিডেন্ড ৩ সেপ্টেম্বরের আগেই বিতরণ করা যাবে 

১৯৯৮ সালে অটোমেটেড প্লাটফর্ম চালু করে ডিএসই। এরপর ২২ বছর পার হলেও স্টক এক্সচেঞ্জটি একটি সমন্বিত লেনদেন ব্যবস্থা চালু করতে ব্যর্থ হয়েছে। এ কারণে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো তাদের মূল্য সংবেদনশীল তথ্যগুলো ম্যানুয়ালি আদান-প্রদান করে থাকে। ব্রোকারেজ হাউজে লেনদেন ব্যবস্থা সচল রাখতে অফিসে তাদের কর্মী উপস্থিতি প্রয়োজন হয়। এমনকি অধিকাংশ ব্রোকারেজ হাউজে শেয়ার কেনাবেচার পর ব্যাংকে অর্থ স্থানান্তরের ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদের সশরীরে উপস্থিত থাকতে হয়।

এমন পরিস্থিতিতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে সরকারি সাধারণ ছুটি শুরু হলে টানা ৬৬ দিন লেনদেন বন্ধ রাখতে হয় ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জকে। যদিও এ সময়ে বিশে^র অন্যান্য দেশের স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন চালু ছিল। দীর্ঘদিন স্টক এক্সচেঞ্জ বন্ধ থাকায় সমালোচনার মুখে পড়ে দেশ। বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও পুঁজিবাজার থেকে বিনিয়োগে আগ্রহ হারান। ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি এড়াতেই ডিএসইর কার্যক্রম পুরোপুরি অটোমেশন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্টক এক্সচেঞ্জটির পরিচালনা পর্ষদ।

আরও পড়ুন…….

এদিকে টানা দুই মাসের বেশি সময় স্টক এক্সচেঞ্জের লেনদেন বন্ধ থাকায় বড় অংকের আয় হারিয়েছে ডিএসই, যার প্রভাবে কর্মীদের বেতন কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে স্টক এক্সচেঞ্জটির পরিচালনা পর্ষদ। গত বৃহস্পতিবারের পর্ষদ সভায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন পুনঃবিবেচনা করতে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এমনিতেই লেনদেন কমে যাওয়ায় ডিএসইর আয় আগের তুলনায় অনেকটাই কমে গেছে।

প্রতিষ্ঠানটির আয়ের বড় অংশই আসে ব্যাংকে রাখা স্থায়ী আমানত থেকে। এখন স্থায়ী আমানতের সুদহার কমে যাওয়ায় ডিএসইর আয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। আবার চলতি বছর স্টক এক্সচেঞ্জটি নতুন নিকুঞ্জের নতুন ভবনে যাওয়ায় অবচয় বাবদ ব্যয়ও অনেক বেড়ে গেছে। সব মিলিয়ে ডিএসইকে ২০১৯-২০ হিসাব বছরে লোকসানের মুখে পড়তে হতে পারে। দীর্ঘ ৬৬ দিন পর স্টক এক্সচেঞ্জের লেনদেন চালুর পর থেকে ডিএসইতে লেনদেন তলানিতে নেমে এসেছে।