hasina-kaderদেশ প্রতিক্ষন, ঢাকা: গুঞ্জন ছিল নানা নিকেশে। সময়ের ব্যবধানে তা ক্রমশই উত্তেজনায় রূপ নেয়। টান টান উত্তেজনা ছিল দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের মাঝেও। গণমাধ্যমসহ সামাজিক মাধ্যমেও আওয়ামী লীগের নতুন নেতৃত্ব নিয়ে আলোচনার কমতি ছিল না। সেই উত্তেজনা ও জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটল রোববার বিকেল সোয়া ৫টার দিকে।

ঐতিহ্যবাহী দল আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে পুনঃনির্বাচিত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তারই সঙ্গী হিসেবে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন ওবায়দুল কাদের। রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে কাউন্সিল অধিবেশনে কাউন্সিলরদের কণ্ঠভোটে তারা নির্বাচিত হন।

এর আগে গত ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দুই দিনব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধন করেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সভাপতি হিসেবে নাম প্রস্তাব করেন দলটির সভাপতিমন্ডলীর সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। এ সময় উপস্থিত কাউন্সিলররা কণ্ঠভোটে সম্মতি জানান।

অন্যদিকে দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নাম প্রস্তাব করেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। এ সময় কাউন্সিলররা কণ্ঠভোটে তাকেও সম্মতি জানান।  পরে নির্বাচন কমিশনার ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন আনুষ্ঠানিকভাবে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে যথাক্রমে শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরের নাম ঘোষণা করেন।

এছাড়া প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন- সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মোহাম্মদ নাসিম, কাজী জাফর উল্লাহ, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, সাহারা খাতুন, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, নুরুল ইসলাম নাহিদ, ড. আব্দুর রাজ্জাক, ফারুক খান, আবদুল মান্নান খান, রমেশ চন্দ্র সেন, পীযূষ ভট্টাচার্য। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন- মাহাবুব-উল আলম হানিফ, ড. দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আব্দুর রহমান।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার পর প্রায় ছয় বছর নির্বাসনে থাকা শেখ হাসিনা দলের হাল ধরেন এক ক্রান্তিলগ্নে। ১৯৮১ সালের ফেব্রুয়ারিতে আওয়ামী লীগের ত্রয়োদশ জাতীয় সম্মেলনে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তাকে দলের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়।

পরে ১৭ মে দেশে ফিরে দলের দায়িত্ব নেন তিনি। এরপর ১৯৮৭, ১৯৯২, ১৯৯৭, ২০০২, ২০০৯ এবং ২০১২ সালে আওয়ামী লীগের সম্মেলনেও বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় সভাপতি নির্বাচিত হন শেখ হাসিনা। এবারও (২০১৬) বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় সভাপতি নির্বাচিত হলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

অন্যদিকে ওবায়দুল কাদের ২০০২ সালের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন থেকে ২০০৯-এর সম্মেলন পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রথম যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন। ২০০৯ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।

এছাড়া ১৯৭৫ সালের পর দীর্ঘ আড়াই বছর কারাগারে ছিলেন ওবায়দুল কাদের। কারাগারে থাকা অবস্থায় তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন এবং পরপর দুবার ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।