দেশ প্রতিক্ষণ, বরিশাল: বরিশালের বিলাসবহুল নৌ-পরিবহন এমভি মানামী লঞ্চের মালিক আব্দুস সালাম বাচ্চুর বিরুদ্ধে পরকীয়া প্রেম করে দুই সন্তানের জননী আপন চাচাতো ভাইয়ের স্ত্রীকে ভাগিয়ে বিয়ে করার অভিযোগ উঠেছে। চাচাতো ভাই প্রভাবশালী হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে বেশিদূর এগোতে পারেনি ভুক্তভোগী ছোট ভাই সাইদুল ইসলাম টিপু। তবে লঞ্চ মালিক চাচাতো ভাইয়ের কু-কীর্তির বিস্তর তুলে ধরে এবং নিজের সন্তানদের বাঁচাতে গত ১১ আগস্ট বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করেছেন ভুক্তভোগী সহিদুল।

রও পড়ুন…

উপকূলীয় এলাকায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা, ৮০ কিমি বেগে ঝড় 

ওই সাধারণ ডায়েরী সূত্রে জানা গেছে, ২০০৫ সালে পটুয়াখালি জেলার বাউফল উপজেলার বাহেরচর গ্রামের বাসিন্দা স্থানীয় কৃষি ব্যাংকের ম্যানেজার খসরু আলম সিকদারের মেয়ে সুরভী আলম সাথীর (৩৩) সাথে সাইদুল ইসলাম টিপুর পারিবারিকভাবে বিবাহ হয়। এরপর প্রায় এক যুগেরও বেশি সময় ধরে তাদের সংসার জীবন বেশ ভালোই চলছিল। এই দম্পতির আবু মাহযুবা নির্ঝর (১৩) নামে একটি ছেলে ও সাফিয়া ইসলাম নিয়ন্তি (৩) নামের একটি কন্যা সন্তানও রয়েছে। এরই মধ্যে হঠাৎ ২০১৮ সালে সুন্দরী গৃহবধূ সাথীর ওপর নজর পড়ে সাইদুলের আপন চাচাতো ভাই মানামি লঞ্চের মালিক প্রায় ষাট বছর বয়সী আব্দুস সালামের। এরপর থেকেই ছোট ভাইয়ের স্ত্রীকে আপন করে পেতে কৌশলি পরিকল্পনা আঁকেন। অবশ্য সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোতে থাকেন ধুরন্দর আব্দুস সালাম।

আরও জানা গেছে, ২০১৮ সালের শেষ দিকে বরিশালে ‘লজিক স্টার’ নামক একটি ডেভেলপার ব্যবসায় চাচতো ভাই টিপু ও তার সুন্দরী স্ত্রী সাথীকে বিনা অর্থায়ানে অংশীদার বানানোর চুক্তিতে ওই দম্পতির সংসার জীবনে প্রবেশ করে সর্বনাশা সালাম। এরপর টিপুর কাছে বিশ্বস্ত-শ্রদ্ধাভাজন বড় ভাই এবং তার সুন্দরী স্ত্রী সাথীকে নিজের বিত্ত বৈভবের প্রতি আকর্ষিত করতে বরিশাল শহরের বাংলাবাজার এলাকায় বসবাসের জন্য এই দম্পতিকে একটি ফ্লাট কিনে দেন মানামী লঞ্চ মালিক সালাম বাচ্চু।

এতে টিপুর মনে শ্রদ্ধার সিংহাসনে বসেন বড় ভাই সালাম। সম্পর্কের গভীরতায় টিপুর বাসায় যাতায়াত শুরু করে জাপান প্রবাসী সু-চতুর সালাম। একই সাথে পরিকল্পনা অনুযায়ী টিপুর সুন্দরী স্ত্রী সাথীকে নিজের অর্থবিত্ত এবং জাপান নিয়ে যাওয়ার প্রলোভন দেখায় সালাম। সেই লোভ সামাল দিতে না পেরে ষাট বছর বয়সী সালামের সাথে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পরে টিপুর স্ত্রী সাথী। এরপর থেকেই সালাম ও সাথীর মধ্যে চলতে থাকে গভীর প্রেমলিলা। যা কোন মতেই ছোট ভাই টিপু বুঝে উঠতে পারেনি। যার কারণে সালামের আঁকা ছকটি আরও শক্ত অবস্থানে পৌঁছায়।

সূত্রে আরও জানা গেছে, লঞ্চ মালিক সালাম বাচ্চুর সাথে পরকীয়ায় জড়ানোর পর সম্পদের লোভে সাথী তার স্বামী টিপুকে তালাকে বাধ্য করতে মরিয়া হয়ে ওঠেন। যার ফলশ্রুতিতে পরকীয়া প্রেমিক সালামের যোগসাজশে স্বামী টিপুর নামে মিথ্যা নাটক সাজিয়ে নারী নির্যাতনের মামলা দেয় স্ত্রী সাথী। এতে বিস্মিত হয়ে মামলার বিষয়টি সম্পর্কে টিপু তার সবচেয়ে কাছের এবং আস্থাভাজন বড় ভাই মানামী লঞ্চ মালিক সালামের কাছে জানিয়ে পরামর্শ চান। তখন বড় ভাই সালাম টিপুকে পরামর্শ দিয়ে বলে, ‘আগে তোমার স্ত্রী সাথীকে তালাক দেও, বাকি ব্যবস্থা আমি করবো’। বড় ভাইয়ের নির্দেশ ও প্রচ্ছন্ন হুমকিতে ভয়ে একপর্যায়ে সহিদুল ইসলাম টিপু তার স্ত্রী সাথীকে তালাক দেয়। আর এতেই বাস্তবায়িত হয় সাথীকে নিয়ে স্বপ্ন দেখে অঙ্কিত সালামের ২০১৮ সালের সেই নীলনকশা।