দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: সাইবার হামলার আশঙ্কায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মোবাইল অ্যাপ ভিত্তিক লেনদেন প্লাটফর্ম ‘ডিএসই মোবাইল’ রাত ৮ থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। রবিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ডিএসই কর্তৃপক্ষের নেয়া এ সিদ্ধান্ত বিনিয়োগকারীদের জানানো হয়েছে। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ডিএসই মোবাইল অ্যাপ ব্যবহারকারীরা শুধু লেনদেন কার্যদিবসে সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত অ্যাপটি ব্যবহার করতে পারবেন।

রও পড়ুন…

পুঁজিবাজারের টাকা নিয়ে পালানোর দিন শেষ: বিএসইসি চেয়ারম্যান

এক্সচেঞ্জ, বিনিয়োগকারী এবং জাতীয় বৃহৎ স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে ডিএসই কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসলে বিনিয়োগকারীরা আবার ডিএসই মোবাইল অ্যাপ স্বাভাবিক ভাবে ব্যবহার করতে পারবেন বলেও জানিয়েছে ডিএসই।

জানা যায়, সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে তথ্য আসে, বিগল বয়েজ নামে উত্তর কোরিয়ার একটি হ্যাকার গ্রুপ ব্যাংকগুলোতে সাইবার হামলা চালাতে পারে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২৭ আগস্ট ব্যাংকগুলোকে সতর্ক থাকার জন্য চিঠি দেওয়া হয়। একই সঙ্গে আরোপ করা হয় বাড়তি সতর্কতা, যা এখনো অব্যাহত রয়েছে।

এরই অংশ হিসেবে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোনো ব্যাংক রাত ১০টা, কোনো ব্যাংক ১১টা আবার কোনো কোনো ব্যাংক রাত ১২টা থেকে সকাল ৭টা অথবা ৬টা পর্যন্ত তাদের এটিএম সেবা বন্ধ রাখছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে বলেও ব্যাংকগুলোর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে আট কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার চুরি হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই অর্থ চুরিতেও উত্তর কোরিয়ার একটি চক্র জড়িত ছিল বলে এরই মধ্যে এফবিআইয়ের তদন্তে বেরিয়ে আসে।

বিশ্বব্যাপী ব্যাংকগুলো নিজেদের মধ্যে লেনদেন করতে সোসাইটি ফর ওয়ার্ল্ডওয়াইড ইন্টার ব্যাংক ফিন্যানশিয়াল টেলিকমিউনিকেশন বা সুইফট নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে। বিশেষ ধরনের বার্তা প্রেরণের মাধ্যমে এই লেনদেন করা হয়। রিজার্ভ চুরির ক্ষেত্রে চক্রটি ম্যালওয়্যারের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুইফট নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত কম্পিউটারের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল।

জানা গেছে, করোনাভাইরাসের কারণে সুইফট নেটওয়ার্ক বন্ধ আছে মর্মে প্রকৃত কম্পানির ছদ্মবেশ ধরে একই নাম, ওয়েবসাইট, ই-মেইল ঠিকানা ব্যবহার করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার কৌশল অবলম্বন করছে প্রতারকরা। গত এপ্রিলেও একটি বেসরকারি ব্যাংকে তাদের করেসপনডেন্ট ব্যাংকের মাধ্যমে অর্থ পাঠানোর অনুরোধ করে ভুয়া চিঠি পাঠানো হয়।

তবে ব্যাংক সতর্ক থাকায় ভেরিফাই করে নিশ্চিত হয় যে চিঠি পাঠানোর বার্তা ছিল ভুয়া এবং সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি দেশের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বিএফআইইউকে অবহিত করা হয়। তখন বিএফআইইউ থেকে করোনা প্রাদুর্ভাবের সুযোগে প্রতারণামূলক কার্যক্রমের বিষয়ে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দেশের সব তফসিলি ব্যাংকে চিঠি পাঠানো হয়েছিল।