দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিডি ওয়েল্ডিংয়ের উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের সব শেয়ার ফ্রিজ করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এতে তারা এ কোম্পানির শেয়ার কেনাবেচা করতে পারবেন না। সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে বন্ধ কোম্পানিটির উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের সম্মিলিত শেয়ারের পরিমাণ ৩১.০১ শতাংশ। এর মধ্যে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিনিয়োগ সংস্থা ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) শেয়ার ২৫ শতাংশ।

রও পড়ুন…

৯০ দিনের মধ্যে আইপিও অনুমোদনের পরিকল্পনা বিএসইসি’র

কোম্পানির পর্ষদে চেয়ারম্যান ছাড়া পরিচালক পদেও রয়েছেন সংস্থাটির কর্মকর্তারা। ফ্রিজ করা বাকি ৬ শতাংশ শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসএম নুরুল ইসলামের কাছে ৫ শতাংশের বেশি শেয়ার রয়েছে। অন্য উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান ইউরোপিয়ান হোল্ডিংস ইন্টারসিটোর রয়েছে ০.৭২ শতাংশ শেয়ার।

এ বিষয়ে কমিশনের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কোম্পানিটির কাছে কর-ভ্যাটসহ বড় অঙ্কের টাকা পাবে। দীর্ঘদিন ধরে তারা বকেয়া পরিশোধ করছে না। এ অবস্থায় উদ্যোক্তা-পরিচালকদের শেয়ার ও ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করতে রাজস্ব আদায়কারী সংস্থাটি চিঠি দিয়েছে। কমিশন তা আমলে নিয়ে এ পদক্ষেপ নিয়েছে।

উৎপাদনসহ সার্বিক বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও বেশ কিছুদিন থেকে শেয়ারটির দর নিয়ে কারসাজি চলছে বলে বাজার-সংশ্নিষ্টদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা রয়েছে। গত দু’মাসে শেয়ারটির দর ১৪ টাকা থেকে দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে ৩২ টাকা ছাড়ায়। অথচ জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির কারখানা বন্ধ তিন বছর থেকে। চট্টগ্রামে থাকা তাদের মূল কারখানা ভবন জমিসহ ইস্পাত কোম্পানি বিএসআরএমের কাছে বিক্রি করেছে। পরে ঢাকার ধামরাইতে জমি কিনে কারখানা স্থানান্তরের কাজ করছে। প্রায় তিন বছরেও শেষ হয়নি এ কাজ।

এদিকে আইসিবি তাদের কাছে থাকা সব শেয়ার (এক কোটি ৮০ লাখ ৪০ হাজার) আলিফ গ্রুপের কাছে বিক্রির বিষয়ে গত বছর জুলাইয়ে চুক্তি করেছিল। কোম্পানিটি জানিয়েছিল, নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমতিসাপেক্ষে এ শেয়ার হস্তান্তর হবে। কমিশন সূত্র জানিয়েছে, পরিচালক হিসেবে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটির শেয়ার ফ্রিজ করার কারণে তা এখন কেনাবেচা বা হস্তান্তর করা যাবে না।

অন্যদিকে এ শেয়ার হস্তান্তরের চুক্তির ক্ষেত্রে আইনি বিধান মানা হয়নি বলেও কমিশনের কাছে তথ্য আছে। এ ছাড়া অন্য একটি মামলায় আদালতের নিষেধাজ্ঞার পরও কোম্পানিটি গত ৯ আগস্ট পর্ষদ সভা করে ২০১৮ ও ২০১৯ সালের আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন করে। ওই সভায় ২০১৯ সালের জন্য ১ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড দেওয়ার সিদ্ধান্তও নেয়। এমন সিদ্ধান্তের বিষয়ে কোম্পানিটির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমিশনকে যথাযথ ব্যাখ্যা দিতে পারেননি বলে সূত্র জানায়।