সাত ইস্যুতে বাংলাদেশে বিনিয়োগের উপযুক্ত স্থান: বিএসইসি চেয়ারম্যান
দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, সাত ইস্যুতে বিনিয়োগের উপযুক্ত স্থান বাংলাদেশ। এর অন্যতম হলো বাংলাদেশের মানবসম্পদ। বাংলাদেশ একটি জনবহুল দেশ। এখানে শ্রমশক্তি বিশাল। প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশের যথেষ্ট শ্রমশক্তি রয়েছে। এ শ্রমশক্তির দক্ষতা বাড়াতে কাজ করছে বাংলাদেশ সরকার। এছাড়া রয়েছে আর্থসামাজিক অবস্থা, সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা, অবকাঠামো ও দেশীয় বাজার, উচ্চ রিটার্ন ও বিদেশে রফতানির সুযোগ। সুইজারল্যান্ডের জুরিখে বাংলাদেশের অর্থনীতিবিষয়ক রোড শোতে দেশটির ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বাংলাদেশের অর্থনীতির নীতিনির্ধারকরা এ কথা বলেন।
সুইজারল্যান্ডে তিনদিনব্যাপী অর্থনীতিবিষয়ক রোড শোর প্রথম দিন ছিল গতকাল। এদিন সুইজারল্যান্ডে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশীদের সন্তানদের জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। দেশটির স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় জুরিখের ডোলডার গ্র্যান্ড হোটেলে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন।
তিনদিনব্যাপী এ রোড শোতে বাংলাদেশের অর্থনীতির সক্ষমতা, বিনিয়োগ, বাণিজ্য, বাংলাদেশী পণ্য ও সেবা, পুঁজিবাজার এবং বন্ড মার্কেটকে তুলে ধরতেই এ আয়োজন করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। অর্থনীতি ও প্রযুক্তির বিবেচনায় ইউরোপের অন্যতম প্রভাবশালী এ দেশে বাংলাদেশকে তুলে ধরে বিদেশী ও অনিবাসী বাংলাদেশীদের বিনিয়োগ আকর্ষণ এ আয়োজনের মূল লক্ষ্য। বিশেষ করে প্রবাসীরা যাতে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করেন, সেই বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। যার নাম দেয়া হয়েছে ‘রেইজ অব বেঙ্গল টাইগার’।
অনুষ্ঠানে সুইজারল্যান্ডের ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন ৬৫ জন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। মার্কুজ স্কিলটার, সিলভান স্টিটলার, এলেক্জান্ডার ক্লিংকম্যান এদের অন্যতম। এ সময় অর্থ মন্ত্রণালয়ের ফাইন্যান্স ডিভিশনের সিনিয়র সচিব আবদুর রউফ তালুকদার, বিএসইসির চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এনএম জিয়াউল আলম, বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেপজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. নজরুল ইসলাম, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য মো. আলমগীর হোসেন ও বিএসইসির কমিশনার শেখ শামসুদ্দীন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে ভূমিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সামষ্টিক ও ব্যষ্টিক অর্থনীতির মধ্যে ভারসাম্য রয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, প্রবাসী আয়, জিডিপি প্রবৃদ্ধি প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় অত্যন্ত উচ্চ। তার মতে, বাংলাদেশ একটি জনবহুল দেশ। এখানে শ্রমশক্তি বিশাল। এ শ্রমশক্তিকে কাজে লাগাতে আমরা গবেষণায় জোর দিয়েছি।
অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, সুনির্দিষ্ট কিছু কারণে বিনিয়োগের জন্য উত্তম জায়গা বাংলাদেশ। এর অন্যতম হলো বাংলাদেশের মানবসম্পদ। প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশের যথেষ্ট শ্রমশক্তি রয়েছে। এ শ্রমশক্তির দক্ষতা বাড়াতে কাজ করছে বাংলাদেশ সরকার। দ্বিতীয়ত আমাদের অর্থনৈতিক অবকাঠামো অত্যন্ত শক্তিশালী। যেসব পণ্য উৎপাদন করবেন বাংলাদেশে তার বড় একটি বাজার রয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশে পণ্য উৎপাদন করে চীন ও ভারতের মতো দেশে রফতানি করা যায়। বিনিয়োগ করে বিনিয়োগের মুনাফা নিয়ে আসার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। সামষ্টিক অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার কারণে বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে উচ্চ রিটার্ন পাওয়া যায়।
অনুষ্ঠানে আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, করোনার পরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে চারটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়েছে সরকার। এগুলো হলো সরকারি ব্যয় বাড়ানো, ব্যবসায়ীদের সহজ শর্তে ঋণ, সামাজিক নিরাপত্তা বাড়ানো এবং বাজারে টাকার প্রবাহ বাড়ানো। এরই মধ্যে সরকার ২৮টি স্টিমুলাস প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। এ প্যাকেজ বাস্তবায়নে ২২ বিলিয়ন ডলার ব্যয় হবে। এ সবকিছুর মূল উদ্দেশ্য অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতা ধরে রাখা। এরই মধ্যে তা সফলতার সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে।